*পাপ যত বড়ই হোক মহান আল্লাহর নিকট যথার্থভাবে তওবা করলে নিশ্চয় তিনি ক্ষমা করে দেন*
💠 মানুষ যত বড়াই অন্যায় করুক মহান আল্লাহর দয়া ও ক্ষমা তার চেয়েও অনেক অনেক বড়। বান্দা অপরাধ করার পরে তার দরবারে ফিরে এলে তিনি অত্যন্ত খুশি হন। প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খাদেম আবু হামযা আনাস বিন মালিক রা. বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
اللَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ أَحَدِكُمْ سَقَطَ عَلَى بَعِيرِهِ ، وَقَدْ أَضَلَّهُ فِى أَرْضِ فَلاَةٍ
“কোনও লোক বিজন মরু প্রান্তরে উট হারিয়ে যাবার পর পুনরায় তা ফেরত পেলে যে পরিমাণ আনন্দে উদ্বেলিত হয় মহান আল্লাহ বান্দার তওবাতে তার চেয়েও বেশি আনন্দিত হন।” (সহীহ বুখারী,অনুচ্ছেদ: তওবা, হা/৫৮৩৪, শামেলা)
💠 কোন ব্যক্তি যদি তাওবা করার বা দ্বীন মেনে চলার সুযোগ পায় তাহলে বুঝতে হবে, এটি তার প্রতি দয়াময় আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। তার তওফিক ও শক্তি ছাড়া মানুষ কোন ভালো কাজ করতে পারে না বা মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না।
💠 মনে রাখতে হবে, ভুল করার পর সঠিক পথে ফিরে আসাই হল মানুষের স্বভাব। আর ভুল করার পর ভুল পথে চলতে থাকা শয়তানের স্বভাব।
👉 আরেকটি অত্যন্ত আশা ব্যাঞ্জক হাদীস দেখুন:
আনাস বিন মালেক রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
يا ابن آدم إنك ما دعوتني ورجوتني غفرت لك على ما كان فيك ولا أبالي، يا ابن آدم لو بلغت ذنوبك عنان السماء ثم استغفرتني غفرت لك ولا أبالي، يا ابن آدم إنك لو أتيتني بقراب الأرض خطايا ثم لقيتني لا تشرك بي شيئا لأتيتك بقرابها مغفرة .
“আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে আদম সন্তান! যখনই তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমাকে পাওয়ার আশা করবে, আমি তোমার মধ্যে যে সব দোষ ত্রুটি আছে, সেগুলো নির্বিঘ্নে ক্ষমা করে দেব। হে আদম সন্তান! যদি তোমার গুনাহের স্তুপ আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে, তারপরও তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাইলে আমি নির্বিঘ্নে তোমাকে ক্ষমা করে দেব। হে আদম সন্তান! যদি তুমি জমিন ভর্তি গুনাহ করে থাক, তারপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাইতে আসলে যে অবস্থায় তুমি আমার সাথে কাউকে শরিক করোনি, আমি জমিন ভর্তি ক্ষমা নিয়ে তোমার নিকট উপস্থিত হব”। [তিরমিযি: ৩৫৪০]
🔸 সুতরাং উক্ত বনের জন্য করণীয় হল, অতীত নিয়ে বেশি টেনশন না করে বা জাহেল লোকদের কটু কথায় মন খারাপ না করে দ্বীনের উপর অবিচল থাকা এবং বেশি বেশি নেকির কাজ করা তাহলে আল্লাহ তাআলা অতীতের গুনাহগুলো নেকিতে রূপান্তরিত করে দেয়ার অঙ্গিকার করেছেন।
আল্লাহ বলেন:
إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَـٰئِكَ يُبَدِّلُ اللَّـهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ ۗ وَكَانَ اللَّـهُ غَفُورًا رَّحِيمًا- وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّـهِ مَتَابًا
*“কিন্তু যারা তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহগুলোকে নেকি দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা ফুরকান: ৭০)*
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
_____
*আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল*
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।
0 Comments