রিজালশাস্ত্রবিদ শাইখ যুবায়ের আলী যাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) এর
জীবন ও কর্ম
নাম ও
বংশপরিচয়:
তিনি হলেন
শাইখ, আল আল্লামা, হাফিজ যুবায়ের আলী যাঈ
(রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি পাঠান বংশের। তাঁর গোত্রের নাম “আলী যাঈ”। বংশসহ তাঁর নামঃ
মুহাম্মাদ
যুবায়ের বিন মুজাদ্দাদ খান বিন দোস্ত মুহাম্মাদ বিন জাহাঙ্গীর খান বিন আমীর খান
বিন শাহবায খান বিন কারাম খান বিন গুল মুহাম্মাদ খান বিন পীর মুহাম্মাদ খান বিন
আযাদ খান বিন আল্লাহদাদ খান বিন উমার খান বিন খোওয়াজাহ মুহাম্মাদ খান বিন জোহা বিন
আখগার বিন হাঙ্গাশ বিন পীরদাদ খান। এটি আফগানের আলী যাঈ বংশ।
জন্ম:
মুহাক্কিক, শাইখ
যুবায়ের আলী যাঈ ১৯৫৭ সালের ২৫ জুন পাকিস্তানের অ্যাটক জেলার হাজরো’র কাছে পীরদাদ
গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপূরুষদের মধ্যে, পীরদাদ
খান গাঁজনি (আফগানিস্তান) থেকে এসে এই গ্রামে উপনিবেশ স্থাপন করেন।
তার শ্রদ্ধেয়
পিতা মুজাদ্দাদ খান (জন্ম ১৯২৬) তাঁর অঞ্চলের একজন প্রখ্যাত ধর্মীয় এবং
সমাজতান্ত্রিক ব্যক্তিত্ব। তিনি জামআতে ইসলামীর মজলিশে শূরার সদস্য। খতমে নবুওয়ত
আন্দোলন এবং দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিবিদ ভুট্টোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কারণে
দু’বার জেল খেটেছেন।
তাঁর শিক্ষা:
শায়েখ
যুবায়ের আলী যাঈ এফ. এ (একসময় ইন্টারমিডিয়েটকে ফার্স্ট আর্ট বা এফ এ. বলা হতো)
পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। এরপর একটা প্রাইভেট প্রতিষ্টান থেকে বি.এ শেষ করেন। ১৯৮৩
সালে তিনি ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে এম.এ. পাশ করেন। লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
১৯৯৪ সালে আরবিতেও এম.এ. শেষ করেন।
ছোটবেলা
থেকেই তিনি বই পড়তে ভালোবাসতেন। ১৯৭২ সালে তিনি সহীহ বুখারি’র প্রথম খণ্ড পড়েন। এরপরে
১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ এর মধ্যে আমিল বিল হাদীস যথা আহলে হাদিস হন। তখন থেকেই হাদীস
শিক্ষা এবং প্রচারই তাঁর জীবনের লক্ষ্যে পরিনত হলো।
তাঁর শিক্ষক:
মহানবী (সা)
এর হাদীস শিক্ষার জন্য তিনি বর্তমান সময়ের অনেক প্রখ্যাত শায়খুল হাদীসের কাছে
পড়াশুনা করেছেন। যাদের কাছে তিনি পড়াশুনা করেছেন তাদের নামগুলো হলো:
– শাইখ আবুল ফাযল ফাইযুর রেহমান সাওরি (মৃত্যু ১৯৯৬)।
– শাইখ
আবু মুহাম্মাদ বাদীউদ্দীন শাহ রাশীদি আস সিন্ধী (১৯৯৬)।
– শাইখ
আবুল কাসিম মুহিবুল্লাহ শাহ রাশীদি আস সিন্ধী (১৯৯৫)।
– শাইখ
আতাইল্লাহ হানিফ ভোযিয়ানী (১৯৮৭)।
– শাইখ
আব্দুল মান্নান বিন আব্দুল হক্ব নুরপুরী (হাফিজাহুল্লাহ)।
– শাইখ
হাফিজ আব্দুস সালাম বিন মুহাম্মদ ভুটওয়ি (হাফিজাহুল্লাহ)।
– শাইখ
হাফিজ আব্দুল হুমায়েদ আযহার (হাফিজাহুল্লাহ)।
– শাইখ
আবু আর রিজালুল্লাহ দিত্তা সোহদারওয়ি (ওনার কাছ থেকে উনি অনেক উপকৃত হয়েছে)।
– শাইখ
আব্দুল গাফফার হাসান।
– শাইখ
মুহাম্মদ আইয়ুব শাইঙ্কওয়ি।
– শাইখ
আবু আয়েশা সাব্বির আশরাফ নাঘারছাওয়ি।
অতিরিক্ত
তথ্য:
এছাড়াও, ১৯৯০
সালে তিনি জামিয়া মুহাম্মাদিয়া, জি.টি. রোড গুজরানওয়ালা
থেকে দাওরায়ে হাদীস পড়েন এবং আল্লাহ’র রহমতে সমগ্র জামাতের মধ্যে প্রথম স্থান
অধিকার করে পাশ করেন। তিনি ফয়সালাবাদ থেকে ওয়াফাকুল মাদারিস আস সালাফিয়া পরীক্ষাও
পাশ করেন।
তিনি পাসতু, হিন্দি,
ইংরেজি, গ্রীক এবং আরবিতে কথা বলা,
লেখা এবং পড়ায় সম্পুর্ণভাবে দক্ষ্য। তিনি ফারসি ভাষা পড়তে এবং
বুঝতে পারতেন।
তিনি ১৯৮২
সালে বিবাহ করেন,
যার থেকে আল্লাহ সুবহানা ওয়াতা’লা তাঁকে তিনটি পুত্র ও চারটি
কন্যা সন্তান দান করেন। তাঁর এক ছেলে, আব্দুল্লাহ কুরআনের
হাফিজ ও অন্য ছেলে, মুয়ায হিফজ করছেন।
তিনি সততা ও
সাহসের সাথে আহলে হাদীসের দাওয়াতি কাজ করেছেন। ১৯৮৩ সালে তাঁর অঞ্চলে আহলে
হাদীসদের কোনো মসজিদ ছিল না আর আজ সেখানেই প্রায় ১১ টি মসজিদ রয়েছে যেখান থেকে
‘ক্বলা আল্লাহ’ এবং ‘ক্বলা রসুলুল্লাহ’ এর ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে। তাকলীদের প্রতি
তাঁর বিরোধী অবস্থান এবং তাহকীকের প্রতি তাঁর ভালোবাসায় তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার
মত কেউ নেই। আর অতি দ্রুত হানাফি দেওবন্দ এবং ব্রেলভী’র অন্ধবিশ্বাসী লোকেরা আহলে
হাদীস হচ্ছেন।
একটা
খ্রীষ্টান দলের সাথে বিতর্ক
সত্যের
প্রকাশ এবং মিথ্যার মুখোশ উন্মোচন করার লক্ষ্যে তিনি বিতর্ক করে গিয়েছেন। ১৯৯৭
সালে জেট.বি.আই. নামে খ্রীষ্টানদের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে একদল খ্রীষ্টানের সাথে
তাঁর বিতর্ক হয়েছিলো। শাইখ আব্দুল হুমায়েদ আযহার, শায়েখ তালিবুর রহমান শাহ এবং
শায়েখ মুহাম্মদ রফিক সালাফিও এতে উপস্থিত ছিলেন।
বিতর্ক
চলাকালীন, খ্রীষ্টান আলোচক বাইবেলের একটা গ্রীক সংস্করণ দেখিয়ে বলেন যে, এটাই প্রকৃত বাইবেল। সাথে সাথে ঐ খ্রীষ্টান বক্তা তাতে ভুল বের করতে
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। শাইখ যুবায়ের আলী যাঈ গ্রীক ভাষায় খুবই দক্ষ্য ছিলেন কিন্তু ঐ
খ্রীষ্টান দলটি তা জানত না। শাইখ তৎক্ষণাৎ বাইবেলটা নিলেন এবং যীশু খ্রীষ্টের (ঈশা
আ) বংশ তালিকার ব্যাপারে বাইবেলের অসংগতি তুলে ধরলেন। এর ফলে ঐ খ্রীষ্টান দলটি
সেখান থেকে চলে গেলেন। আর তাদের মধ্যকার এক খ্রীষ্টান ইসলাম গ্রহণ করলেন, আলহামদুলিল্লাহ।
অন্যান্য
বিতর্ক:
একদা অ্যাটক
শহরে একদল মিরযাঈ’র সাথে তাঁর বিতর্ক হয়। এই বিতর্ক চলাকালীন সময়ে ইমতিয়াজ নামে এক
মিরযাঈ শাহাদাহ (কালিমা) ঘোষণা দিয়ে মুসলিম হয়ে যান। বাকি মিরযাঈ’রা একথা বলে চলে
গেলো যে, তারা তাদের সাহায্যের জন্যে আরো লোক নিয়ে আসবে। কিন্তু তারা আর কখনোই
আসে নি।
কোহাত জংগল
খায়েল নামের এক জায়গায় মাস্টার আমীন ওকারভি নামক এক দেওবন্দ মুনাজির এর সাথে শায়েখ
তালিবুর রেহমান (হাফিজাহুল্লাহ) এর একটা বিতর্ক ছিলো যেখানে শাইখ যুবায়ের তাঁকে
সাহায্য করছিলেন। বিতর্কের পর তাৎক্ষণিকভাবে রুহ রাওয়ান সুলতান নামক এক দেওবন্দ
আহলে হাদীস হয়ে যান।
হারিপুর
হাজারাহ এর তাকলীদের ব্যাপারে হাজরো’র এক মামাতি দেওবন্দীর সাথে তার বিতর্ক হয়। এই
বিতর্কে দেওবন্দী বক্তা, ক্বারি চান মুহাম্মাদ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এই
বিতর্কের ভিডিও রেকর্ড আজও পাওয়া যায়।
করাচী’র এক
প্রখ্যাত তাকফিরি,
ড. মাসুদুদ্দিন উসমানী’র সাথে তাঁরই মসজিদে তাঁর একবার বিতর্ক
হয়। বিতর্কের মাঝ থেকে এই ডক্টর সেখান থেকে পালিয়ে যান। এরপর তার (ডক্টর) গ্রুপের
একটা বিরাট অংশ তাদের বাতিল আক্বীদা থেকে তওবাহ করেন।
এমনকি তিনি
মাসুদিয়া যথা জামআতুল মুসলিমীন গ্রুপের প্রতিষ্টাতা মাসুদ আহমেদ বি.এস.সি. এর সাথে
ইসলামাবাদে মাসুদের পুত্র সুলাইমানের বাড়িতে একটা বিতর্ক করেন। এই বিতর্কে এই নতুন
গ্রুপের প্রতিষ্টাতা মাসুদ কথা হারিয়ে ফেলেন। এরপর, হাজরো’র জামআতুল মুসলিমীন
মাসুদের সাথে তাদের বায়াহ ভঙ্গ করে আহলে হাদীস হয়ে যায়।
বিভিন্ন দলের
লোকেদের সাথে হওয়া তাঁর বিতর্কগুলো থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে, তিনি
একজন সফল মুনাজির (বিতারকিক)। তিনি তাঁর প্রতিপক্ষদের কুরআন এবং হাদীসে ভর্তি তীর
দিয়ে আঘাত করেন। ফলে তাঁর বিরোধীদের কাছে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকে না।
আর এটাই বাতিলের নিয়তি। আল্লাহ্ সুবহানা ওয়াতালা কুরআন আল কারীমে বলেনঃ
“বরং আমি সত্যকে মিথ্যার উপর নিক্ষেপ করি, অতঃপর সত্য মিথ্যার মস্তক চুর্ণ-বিচূর্ণ করে
দেয়, অতঃপর মিথ্যা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।”
সূরা আল
আম্বিয়া: সূরা-২১: আয়াত-১৮
“বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত
হওয়ারই ছিল।”
সূরা আল ইসরা: সূরা-১৭: আয়াত-৮১
তাঁর
অর্জনসমূহ
যেহেতু তিনি
মুহাদ্দিসীনদের মাসলাকের অনুসারী ছিলেন, সেহেতু আহলে হাদীস মাসলাকের
লোকেদের সাথে তিনি ভালো সম্পর্ক রাখতেন। তিনি নির্দিষ্ট কোনো দল বা রাজনৈতিক
পার্টির সাথে যুক্ত ছিলেন না। অথচ তাঁকে আহলে হাদীসের ইজতিমায় ছয়টি ভিন্ন সংগঠনের
আমীর নির্বাচন করা হয়েছিল। সংগঠনগুলো হচ্ছেঃ
১) মারকায এ
জামিআত আহলে হাদীস,
২) গুরাবা
আহলে হাদীস,
৩) জামআতে
আহলে হাদিস,
হাজরো,
৪) আহলে
হাদীস সুপ্রিম কাউন্সিল,
৫) মারকাযুদ
দাওয়াহ,
৬)
হিজবুল্লাহ।
প্রখর
স্মৃতিশক্তির পাশাপাশি আল্লাহ তা’লা তাঁকে তাহকীকের প্রতি উচ্চমানের আগ্রহ
দিয়েছিলেন। এই আগ্রহ বড় মানের লাইব্রেরির দাবি রাখে। এই কারণে, শাইখ
তাঁর সম্পদের একটা বড় অংশ খরচ করে একটা বড় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছেন যার নাম
“মাকতাবাতুয যুবাঈরিয়া”। কুরআন, উলুমুল কুরআন, হাদীস, উলুমুল হাদীস, মাতনুল হাদীস, শুরুহাতুল হাদীস, আসমাউর রিজাল, ফিকহুল মাযাহিব, কুতুবুল ফারাক এবং লুগাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর বই এখানে পাওয়া যায়।
বিশেষত, এখানে হাদিসের সকল মাসাদির এবং মারাজিহ এখানে
পাওয়া যায়। শাইখ অধ্যয়ন এবং গবেষণার কাজে তাঁর অধিকাংশ সময় এই লাইব্রেরিতেই
কাটাতেন।
যাই হোক, ইতোপূর্বে
তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছরকাল দারুসসালাম রিয়াদ/লাহোরের সাথে যুক্ত ছিলেন। এই কারণে
প্রকাশনীর লোকদের দাবির প্রেক্ষিতে কিছু সময় রিয়াদ এবং লাহোরে অবস্থান করেন। এই
সময়ে তিনি হজ্জ্ব ও উমরাহ করার সুযোগ পান। সৌদিতে অবস্থানকালে তিনি অনেক শাইখের
সাথেও সাক্ষাত করেন। এদের মধ্যে রয়েছেন শাইখ সফিউর রহমান মুবারকপুরি, শায়েখ আজিজ শামস এবং আবুল আসবাল সাগিফ বাহারি প্রমুখ।
শাইখ খুবই
সহজ সরল এবং স্পষ্টভাষী মানুষ। তাঁর মধ্যে কোনো দিনই ফ্যাশনপ্রিয়তা, কপটতা,
ধোঁকাবাজি, জ্ঞানের ঔদ্ধত্য কিংবা
ন্যায়পরায়ণতার অহংকার দেখা যায় নি। অত্যধিক পড়াশুনার শক্তি এবং চমৎকার
মন-মানসিকতার মতই আল্লাহ তা’লা তাঁকে একটা মহৎ হৃদয় দান করেছেন। অত্যন্ত
দয়া-উদারতার সাথে অন্যদের শিক্ষাদান করেন। যারা তাঁর কাছে কোনো বিষয়ে জানতে চান
তাদের সামনে তিনি সমস্ত দলিল ও তাহকীক তুলে ধরেন। এমন কি তিনি অপ্রকাশিত বইয়ের
ফটোকপি পর্যন্ত তাদের হাতে খোলা মনে দিয়ে দেন।
কর্মজীবনঃ
অতঃপর কর্মজীবনের শুরুতে বেশ কয়েক বছর জাহাযের নাবিক হিসেবেও তিনি চাকুরী করেন। নাবিক জীবনে বিশ্বের বহু দেশ সফরের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এবং বেশ কয়েকটি ভাষায় পারদর্শী হয়ে উঠেন। তিনি প্রসিদ্ধ লাইব্রেরী দারুসসালামের রিয়াদ এবং লাহোর অফিসে প্রায় ৫ বছর নিযুক্ত ছিলেন। এ সময় তিনি দারুসসালাম থেকে প্রকাশিত হাদীছ গ্রন্থ সমূহের তাখরীজ ও তাহক্বীক্বের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি দাদারুসসালাম থেকে প্রকাশিত কুতুবে সিত্তাহ’র একক সংকলনটি প্রাচীন পান্ডুলিপির সাথে মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিভিউ করেন। পরবর্তীতে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে হাদীছ গবেষণায় পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করেন এবং জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে নিজ বাড়ীতেই ‘মাকতাবাতুয যুবায়রিয়া’ নামে একটি বিশাল লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি কোন মাদরাসাতেও শিক্ষকতা করতেন না। তাঁর লাইব্রেরীই ছিল তাঁর কর্মস্থল।
অতঃপর কর্মজীবনের শুরুতে বেশ কয়েক বছর জাহাযের নাবিক হিসেবেও তিনি চাকুরী করেন। নাবিক জীবনে বিশ্বের বহু দেশ সফরের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এবং বেশ কয়েকটি ভাষায় পারদর্শী হয়ে উঠেন। তিনি প্রসিদ্ধ লাইব্রেরী দারুসসালামের রিয়াদ এবং লাহোর অফিসে প্রায় ৫ বছর নিযুক্ত ছিলেন। এ সময় তিনি দারুসসালাম থেকে প্রকাশিত হাদীছ গ্রন্থ সমূহের তাখরীজ ও তাহক্বীক্বের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি দাদারুসসালাম থেকে প্রকাশিত কুতুবে সিত্তাহ’র একক সংকলনটি প্রাচীন পান্ডুলিপির সাথে মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিভিউ করেন। পরবর্তীতে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে হাদীছ গবেষণায় পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করেন এবং জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে নিজ বাড়ীতেই ‘মাকতাবাতুয যুবায়রিয়া’ নামে একটি বিশাল লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি কোন মাদরাসাতেও শিক্ষকতা করতেন না। তাঁর লাইব্রেরীই ছিল তাঁর কর্মস্থল।
তাখরিজ, তালিক
এবং মহানবী (সা.) এর হাদীসের রাবি অর্থাৎ আসমাউর রিজাল বিষয়ে তাঁর প্রচন্ড দক্ষতা
রয়েছে। এই পর্যন্ত তিনি উর্দু ও আরবি ভাষায় প্রচুর বই এবং তাহকীকি মাকালাত রচনা
করেছেন। নিচে তাঁর কিছু বইয়ের নাম দেওয়া হচ্ছে যার কিছু তিনি লিখেছেন আর কিছু
তাহকীক করেছেন:
উর্দু বই:
০১। নুরউল
আইনাইন ফি ইসবাত রাফউল ইয়াদাইন। (প্রকাশিত)
এটি এমন একটি
বই যেটি পড়ে বহুসংখ্যক হানাফি আহলে হাদীস হয়েছেন। এই বইয়ে রুকুতে এবং রুকুর পরে
রাফউল ইয়াদাইনের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে।
০২। আল
ক্বওলুস সাহিহ ফি মা তাওয়াতুর ফি নুযুলিল মাসীহ। (প্রকাশিত)
০৩। তাখরিজ
নামায নববী। (প্রকাশিত)
০৪। তাসীল আল
উসূল ফি তাখরীজ আহাদীস সালাতুর রাসূল। (প্রকাশিত)
০৫। নুরুল
কামরাইন। (প্রকাশিত)
এটি মূলতঃ
দেওবন্দের “হাদীস অর আহলে হাদীস” নামক বইয়ের একটা অধ্যায়ের জবাব।
০৬। আল
কাওয়াকিবুদ দারিয়া ফি উজুবিল ফাতিহা খলফাল ইমাম ফি জাহরিয়া। (প্রকাশিত)
এই বইয়ে
ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা পড়ার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে।
০৭। জান্নাত
কা রাস্তা। (প্রকাশিত)
০৮। হাদিয়াতুল
মুসলিমীন। (প্রকাশিত)
এটি চল্লিশটি
হাদিসের একটি সংকলন।
০৯। তা’দাদ
রাকা’আত কিয়াম রমাদান কা তাহকীকি জাইযা। (প্রকাশিত)
এই বইয়ে
রমযানের রাতে সালাতের রাকা’আত সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১০। নুরুল
মাসাবীহ। (প্রকাশিত)
এই বইয়েও
তারাবীহ’র রাকা’আত সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১১। তাখরীজ
রিয়াযুস সালেহীন। (প্রকাশিত)
এই বইয়ে তিনি
ইমাম নববীর রিয়াযুস সালেহীন এর হাদীসগুলোর তাখরীজ করেছেন।
১২। তাখরীজ
ফাত’ওয়া ইসলামিয়া (২য়, ৩য় ও ৪র্থ খণ্ড)।
১৩। তাখরীজ
আহাদীস: আর রাসুল কানাক তারাহ। (প্রকাশিত)
১৪। আল
বাওয়ারিকুল মুরসালাহ আলা যুলুমাতিত তাবসারাহ।
১৫। মাস্টার
আমীন ওকারভি কা তা’আক্কুব। (প্রকাশিত)
এই বইয়ে তিনি
দেওবন্দী আলেম আমীন ওকারভি কর্তৃক শাইখ যুবায়ের আল যাঈ এর উপর করা অভিযোগগুলো
খণ্ডন করেছেন। বইটি লেখার পর শাইখ এর একটা কপি আমীন ওকারভি’র কাছেও পাঠান। কিন্তু
আমীন ওকারভি তাঁর কোনো উত্তর দিতে পারেন নি।
১৬। আকাযীব
আহলে দেওবন্দ। (প্রকাশিত)
১৭। আল
ক্বওলুল মুতিন ফিল জাহের বিত তা’মীন। (প্রকাশিত)
এটি একটি
বিস্তারিত বই যেখানে প্রমাণ করা হয়েছে যে, সূরা ফাতিহা শেষে ইমামের পিছনে
জোরে আমীন বলতে হবে। আহলে হাদীসদের দলীল প্রমাণ করার পাশাপাশি বিরোধীদের দলীলেরও
খণ্ডন করা হয়েছে বইটিতে।
১৮। নাসারুল
মা’বুদ ফির রাদ আলা সুলতান মাহমুদ। (প্রকাশিত)
সুলতান
মাহমুদ হাজরো শহরের একজন ব্রেলভী। এই বইয়ে শাইখ হানাফি ফিকহের কিছু
মাসলা-মাসায়েলের খণ্ডন করেছেন। সাথে সাথে এটাও প্রমাণ করেছেন যে, এগুলো
কুরআন, হাদীস এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের বিরোধী।
১৯। আস সুনান
ওয়াল মুবতাদা’ত।
এটি উমর বিন
আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মান’আম এর লেখা আরবি বইয়ের অনুবাদ।
২০। তালখিসুল
আহাদিস আল মুতাওয়াতিরাহ মা’শারহ।
২১। আসর এ
হাযির কে চান্দ কাযীবীন কা তাযকিরাহ।
এই বইতে তিনি
এই যুগের কিছু মিথ্যাবাদীদের উল্লেখ করেছেন।
২২। আল
তা’সীস ফি মাস’লা আল তাদলীস। (প্রকাশিত)
একটা
পূর্ণাংগ কর্ম যেখানে তাদলীসের সংজ্ঞা, নিয়ম এবং প্রকারভেদের পাশাপাশি
কিছু বিখ্যাত মুদাল্লীসীনদের উল্লেখ করা হয়েছে।
২৩। তারজুমাহ
আল আনওয়ার ফি শুমাইল আন নাবী আল মুখতার।
মহানবী (সা)
এর শুমাইল এর উপর ইমাম বাঘবির লিখিত বইয়ের অনুবাদ।
২৪। তারজুমাহ
জুজ রাফা শা’আর আসহাবুল হাদীস।
ইমাম হাকিম
লিখিত গ্রন্থের অনুবাদ
২৫। তাওযীহুল
আহকাম। (প্রকাশিত)
জীবন এবং
ইসলাম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে শাইখ যুবায়ের আলী যাঈ এর মূল্যবান ফাতাওয়া নিয়ে এটি
একটি মহৎ কর্ম।
২৬। তাহকীক
জুযউল কির’আত।
এটি ইমাম
বুখারি রচিত জুয আল কিরাআত, নামাযে কিরাআত পড়ার উপর অন্যতম একটি বই। শাইখ যুবায়ের আলী যাঈ বইটির অনুবাদ, তাহকীক,
তাখরীজ, এবং ছোট ব্যাখ্যা করেছেন।
২৭। তাহকীক
জুয রাফউল ইয়াদাইন।
এটি ইমাম
বুখারি রচিত নামাযে রুকুর আগে এবং পরে রাফউল ইয়াদাইন করার ব্যাপারে অন্যতম একটি বই। শাইখ যুবায়ের আলী যাঈ বইটির
অনুবাদ, তাহকীক, তাখরীজ, এবং
ছোট ব্যাখ্যা করেছেন।
২৮। তাহকীক
মুয়াত্তা ইমাম মালিক।
এটি ইমাম
মালিকের হাদীসের সংকলন মুয়াত্তা ইমাম মালিকের অনুবাদ, তাহকীক,
তাখরীজ এবং ফাওয়াইদ। মুয়াত্তা ইমাম মালিকের উপর এটি শাইখের একটি
চমৎকার বই।
২৯। তাহকীক
শুমাইল আত তিরমিযী। (প্রকাশিত)
এটি ইমাম
তিরমিযী রচিত মুহাম্মাদ (সা) এর ব্যাপারে গ্রন্থের অনুবাদ, তাহকীক,
তাখরীজ এবং ফাওয়াইদ।
৩০। ছেয়
ইখতিলাফি মাসাইল।
এই বইটি ছয়টি
বিতর্কিত ইস্যুর উপর লিখা।
৩১। ইসবাত আত
তাদীল।
৩২। হাজী কি
শাব ও রোয। (প্রকাশিত)
এটি খালিদ
বিন আব্দুল্লাহ আন নাসির রচিত হাজীদের দিন-রাত নিয়ে বইয়ের অনুবাদ, তাহকীক
এবং ব্যাখ্যা।
৩৩। আযওয়াউল
মাসাবীহ ফি তাহকীক মিসকাতুল মাসাবীহ। (প্রকাশিত)
এতে শাইখ
কর্তৃক মিসকাতুল মাসাবীহ এর অনুবাদ, তাহকীক, তাখরিজ
এবং ফাওয়াইদ রয়েছে।
৩৪। শরহে
হাদীস জিবরীল। (প্রকাশিত)
এটি শাইখ
আব্দুল মুহসিন আল আব্বাদ রচিত গ্রন্থের অনুবাদ এবং তাহকীক। সম্পুর্ণ বইটি সহীহ
মুসলিমের একটামাত্র হাদিসের ব্যাখ্যা যেই হাদীসটিতে ফেরেসতা জিবরাইল মানুষের বেশে
মহানবী (সা) এর নিকটে আসেন এবং মুসলিমদের শিক্ষাদানের জন্য ইসলাম সম্পর্কে কিছু
প্রশ্ন করেন।
৩৫। দ্বীন মে
তাকলীদ কা মাসলা। (প্রকাশিত)
তাকলীদের
যুক্তিখণ্ডনের ব্যাপারে এটি একটি বিস্তারিত বই।
৩৬। তোওফিকুল
বারি ফি তাতবীউল কুরআন ওয়া সহীহুল বুখারি। (প্রকাশিত)
৩৭। আনওয়ারুত
তারীক ফির রাদ যুলুমাত ফাইসাল আল হালিক। (প্রকাশিত)
ফইসাল নামে
ক্লিন শেভ করা এক ব্রেলভী আলেম তার নুরুল আইনাইন নামক বইয়ে শাইখ যুবায়ের এর কিছু
যুক্তির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন। শাইখ এই বইয়ে তার পাল্টা উত্তর দেন। কিন্তু এর
পর ঐ ব্রেলভী আলিমের কাছ থেকে আর কোনো উত্তর আসে নি।
৩৮। ফাযায়েল
আদ দুরুদ। (প্রকাশিত)
দুয়া, দুরুদের
বিষয়ে শাইখের রিসালাহ নিয়েই এই বইটি।
৩৯। বিদআতি
ইমাম এর পিছনে নামায কি বৈধ? (প্রকাশিত)
৪০। সাইফুল
জব্বার ফী জওয়াব যাহুর ওয়া নিসার। (প্রকাশিত)
যাহুর এবং নিসার নামে দুই ব্যক্তি শাইখের রিসালাহ “বিদআতি ইমাম এর পিছনে নামায কি বৈধ?” এ প্রদত্ত কিছু যুক্তির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে এবং শাইখ তার উত্তর লিখে তাদেরকে চিঠি পাঠান। এভাবে শাইখের সাথে তাদের কিছু সময় চিঠি বিনিময় চলে। আর ঐ চিঠিগুলোরই সমন্বিত রুপ এই বইটি।
যাহুর এবং নিসার নামে দুই ব্যক্তি শাইখের রিসালাহ “বিদআতি ইমাম এর পিছনে নামায কি বৈধ?” এ প্রদত্ত কিছু যুক্তির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে এবং শাইখ তার উত্তর লিখে তাদেরকে চিঠি পাঠান। এভাবে শাইখের সাথে তাদের কিছু সময় চিঠি বিনিময় চলে। আর ঐ চিঠিগুলোরই সমন্বিত রুপ এই বইটি।
৪১। আহলে
দেওবন্দ সে ২১০ সাওয়ালাত। (প্রকাশিত)
এই বইটিতে তিনি দেওবন্দীদের নিকট প্রতি ২১০ টি প্রশ্ন করেছেন।
এই বইটিতে তিনি দেওবন্দীদের নিকট প্রতি ২১০ টি প্রশ্ন করেছেন।
এসব ছাড়াও
শাইখ মাসিক ম্যাগাজিন “আল হাদীস” এর পরিচালক যে ম্যাগাজিনটির মাধ্যমে লোকেরা প্রতি
মাসে শাইখের চমৎকার তাহকীক এবং ফাতাওয়া জানতে পারে। এগুলো ছাড়াও শাইখের আরো কিছু
সৃষ্টিকর্ম রয়েছে যেগুলো কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় উল্লেখ করা হচ্ছে না।
আরবি বই:
০১।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ মুসনাদ আল হুমাইদী।
শাইখ সপ্তম
শতাব্দীর পুরোনো দুটি কলমি নুসখা’র সাহায্যে মুসনাদ আল হুমাইদীর তাহক্বীক্ব এবং
তাখরীজ করেছেন। এছাড়াও তিনি তাঁর তাহকীকে হাবিবুর রহমান আল আযমী দেওবন্দির নুসখার
চারশ ভুল তুলে ধরেছেন। তিনি অন্যান্য হাদীসের বই থেকে ইমাম হুমাইদীর বর্ণনার
তাখরীজ এবং ফাওয়াইদ করেছেন।
০২। নায়লুল
মাকসুদ ফি তাহক্বীক্ব ওয়া তালীক আ’লা আবি দাউদ ওয়া তাখরীজুল আহাদীস।
এটা সুনানে
আবু দাউদের ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এতে মতনের তাসহীহ এবং তাহক্বীক্ব এবং হাদীসের
তাহক্বীক্ব,
তাখরীজ, সত্যতা ও দুর্বলতার ব্যাপারে
বিধান, এর ব্যাখ্যা, ফিকহি
ফাওয়াইদ ও বিপথগামী দলগুলোর যুক্তিখণ্ডন এবং আবু দাঊদের তারীক থেকে আবু দাঊদের
বর্ণনার তাহক্বীক্ব ও তাখরীজ।
০৩। তাসহীলুল
মুজতাবা
এটি ইমাম
নাসাঈর গ্রন্থ সূনান আস সুগারা, যেটি সূনান আন নাসাঈ নামে খ্যাত তাঁর
তাসহীল।
০৪।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ সূনান আত তিরমিযী
এতে সূনান আত
তিরমিযীর অধ্যায়ে বর্ণনার রাখরীজ, শুমাই এ তিরমিযী এবং কিতাবুল ইল্লাল এর
তাখরীজ রয়েছে।
০৫। তাখরীজ
আন নিহায়া ফিল ফিতান ওয়াল মালাহিম।
০৬।
আল-উক্বদুত তামাম ফী তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ সীরাত ইবনে হিশাম।
০৭। তুহফাতুল
উলামা ফি তাখরীজ কিতাবুদ দুয়াফা লিল বুখারী
এটা ইমাম
বুখারীর বইয়ের একটা চমৎকার তাখরীজ যাতে হাদীসের দুর্বল রাবিদের উল্লেখ রয়েছে।
বইটির সবচেয়ে ভালো কলমি নুসখা থেকে শাইখ এই বইটির তাখরীজ এবং তাহক্বীক্ব করেছেন।
তিনি জারহ এবং তাদীল অনুযায়ী প্রত্যেক বর্ণনাকারীর হুকুমও তুলে ধরেছেন। এই বইয়ের
ইমাম বুখারীর কথাগুলোরও তিনি তাখরীজ করেছেন। কলমি নুসখায় অনেক বর্ণনাকারী ছিলেন
যাদের উল্লেখ প্রকাশিত নুসখায় করা হয়নি।
০৮। তাখরীজ
আহাদীস মিনহাজুল মুসলিম।
০৯। আস
সিরাজুল মুনীর ফি তাখরীজুল আহাদীস ওয়াল আসার তাফসীর ইবনে কাসীর।
এই বইয়ে শাইখ
ইমাম ইবনে কাসীরের বিশাল সৃষ্টিকর্ম তাফসীর ইবনে কাসীরের হাদীসগুলোর তাখরীজ করেছেন।
১০। আল
আসানীদুস সহীহা ফি আখবারিল ইমাম আবী হানীফাহ।
এই বইয়ে শাইখ
ইমাম আবু হানীফার প্রশংসা এবং সমালোচনা সম্পর্কিত বিভিন্ন ইমাম ও মুহাদ্দীসদের
কথাগুলো সংকলন করেছেন। বইটি শাইখুল আরব ওয়াল আজম মাওলানা আবু মুহাম্মদ বাদীউদ্দীন
শাহ রাশীদি আস সিন্ধী (রহঃ) পছন্দ করেছিলেন।
১১।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ আহাদীস: ইসবাত আযাব আল কবর লিল বায়হাকি।
এই বইয়ের ভুমিকা
লিখেছিলেন বিখ্যাত শাইখ মাওলানা আবুল কাসিম মুহিব্বুল্লাহ শাহ রাশিদি আস সিন্ধী
(রহঃ)।
১২। তাখলীসুল
কামিল ইবনে আদী।
১৩। কালামুদ
দারাকুৎনি ফি আসমাউর রিজাল ফি সুনানিহি।
১৪।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ জুযউ আলী বিন মুহাম্মাদ আল হুমায়রী।
১৫। তাখরীজ
ওয়া তাহক্বীক্ব মুয়াত্তা ইমাম মালিক।
১৬। তাখরীজ
ওয়া তাহক্বীক্ব বুলুগুল মারাম।
১৭। তাখরীজ
ওয়া তাহক্বীক্ব মিসকাতুল মাসাবীহ।
১৮। সিহাহ
সিত্তাহ কামিল ফি মুজলাদ তাসহীহ নুসখা সূনান আবু দাঊদ ওয়া সূনান ইবনে মাজাহ।
১৯। ফি
যিলালিস সুন্নাহ/ আল-হাদীছ ওয়া ফিক্বহুহূ।
২০।
আন’ওয়ারুস সাহীফাহ ফি আহাদীস আয জয়ীফা মিনাল সুনানিল আরবা মা’আল আদিল্লাহ।
এই বিশাল
কর্মে শাইখ সুনানে আরবা (আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ,
ইবনে মাযাহ) এর সমস্ত দুর্বল হাদীস একত্রিত করেছেন এবং
প্রত্যেকটা হাদীসের দুর্বলতার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
২১। আনওয়ারুস
সূনান ফী তাখরীজ ওয়া তাহক্বীক্ব আসারুস সূনান।
এটা নিমবি
হানাফি’র “আসারুস সূনান” বইয়ের যুক্তিখণ্ডন।
২২। কিতাবুস
সিকাত ওয়ায যুয়াফা ওয়াল মাত্রকিন মিনাল মা’আসিরীন ওয়া গইরুহা।
এই বইয়ে, শাইখ
যথাসম্ভব বিশ্বস্ত আলেমদের জারহ এবং তাদীল অনুযায়ী বর্তমান শতাব্দির আলেমদের
শ্রেণিবিভাগ করেছেন ঠিক যেমনিভাবে মুহাদ্দীসীনরা অতীতে বর্ণনাকারীদের যঈফ, মাতরুক, সিকাহ ইত্যাদিতে বিভক্ত করতেন।
২৩। আযওয়াউল
মাছাবীহ ফী তাহক্বীক্ব মিশকাতুল মাছাবীহ।
২৪। আনওয়ারুস
সাবীল ফী মীযানিল জারহি ওয়াত তাদীল।
২৫। আনওয়ারুস
সূনান ফী তাখরীজ ওয়া তাহক্বীক্ব আছারিস সুনান।
২৬। আনওয়ারুস
ছহীফাহ ফী আহাদীছ আয-যঈফাহ।
২৭। তুহফাতুল
আক্ববিয়াহ ফী তাহক্বীক্ব কিতাবিয যু‘আফা।
২৮।
তাহক্বীক্ব মাসায়েলে মুহাম্মাদ বিন উছমান বিন আবী শায়বাহ।
২৯।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ আহাদীছ ইছবাতিল আযাবিল কবরি লিল-বায়হাক্বী।
৩০।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ কিতাবিল আরবাঈন লি-ইবনে তায়মিয়াহ।
৩১।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ মানাক্বিবে
আলী ওয়াল হুসাইন ওয়া উম্মুহুমা ফাত্বিমাতুয যাহরা।
৩২।
তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ মুয়াত্বা ইমাম মালেক -রেওয়াতে ইয়াহ্ইয়া বিন ইয়াহ্ইয়া।
৩৩। তাখরীজ
আল-আনওয়ার ফী শামায়িলিন নাবী আল-মুখতার।
৩৪। তাখরীজ
জুযউ রফ‘ইল ইদায়েন লিল-বুখারী।
৩৫। তাখরীজু
শি‘আরি আছহাবিল হাদীছ লি-আবী আহমাদ আল-হাকিম।
৩৬। তাখরীজ
কিতাবিল জিহাদ লি ইবনে তায়মিয়া।
৩৭। তাখরীজ
ওয়া তাহক্বীক্ব আল-মু‘জামুছ ছগীর লিত-ত্বাবারাণী।
৩৮। তাসহীলুল
হাজাতি ফী তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ সুনানে ইবনে মাজাহ।
৩৯।
আত-তাক্ববীলু ওয়াল মু‘আনাক্বা লি ইবনিল আ‘রাবী, তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ।
৪০। ছহীহুত
তাফাসীর।
৪১। উমদাতুল
মাসাঈ ফী তাহক্বীক্ব ওয়া তাখরীজ সুনান আন নাসাঈ।
৪২।
আল-ফাতহুল মুবীন ফী তাহক্বীক্ব ত্বাবাক্বাতিল মুদালিস্নসীন।
৪৩। তাখরীজ
ফাযলুল ইসলাম লিশ-শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব।
৪৪। তাখরীজ
ওয়া তাহক্বীক্ব হিছনুল মুসলিম।
মৃত্যুঃ
গত ১০
নভেম্বর’ ১৩ রবিবার সকাল ৭-টায় রাওয়ালপিন্ডির এক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না
লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৬ বছর।
তিনি স্ত্রী,
৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গত ১৯
সেপ্টেম্বর তিনি নিজ বাড়িতে হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়ে প্যারালাইজড হয়ে যান
এবং ব্রেন হেমোরেজে আক্রান্ত হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। পরে তাকে ইসলামাবাদের
‘আশ-শিফা ইন্টারন্যাশনাল’ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার কোন উন্নতি না
হলে রাওয়ালপিন্ডির এক হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়। অবশেষে দীর্ঘ ৫৭ দিন
যাবৎ অচেতন থাকার পর সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। একই দিন দিবাগত রাত
৮-টায় তাঁর নিজ গ্রাম ও কর্মস্থল ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ৮০ কিঃমিঃ দূরে
রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের আটোক জেলার হাযরো তহসিলের পীরদাদ গ্রামে পীরদাদ বাজার
সংলগ্ন ময়দানে তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন তাঁরই সাবেক শিক্ষক,
রাওয়ালপিন্ডিস্থ ‘মসজিদে মুহাম্মাদী’র খতীব মাওলানা আব্দুল হামীদ
আযহার। জানাযায় স্থানীয়রা ছাড়াও পেশাওয়ার, ইসলামাবাদ,
রাওয়ালপিন্ডি, লাহোর, সারগোধা প্রভৃতি এলাকা থেকে প্রায় দশ হাজার মুছল্লী অংশগ্রহণ করেন।
জানাযায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পেশোয়ারের জামে‘আ সালাফিয়ার
প্রিন্সিপ্যাল আব্দুর রশীদ নূরিস্থানী, জামে‘আ আছারিয়া
পেশাওয়ারের প্রিন্সিপ্যাল আব্দুল আযীয নূরিস্থানী, ইসলামাবাদের
ড. ফযলে ইলাহী যহীর, ড. সুহায়েল আহমাদ, ড. মুহাম্মাদ ইদ্রীস যুবায়ের, শামশাদ সালাফী,
লাহোরের হাফেয সালাহুদ্দীন ইউসুফ, শায়খ
মুবাশ্শির রব্বানী, শায়খ ইয়াহ্ইয়া আরীফী, পেশোয়ারের হারাকাতুশ শাবাব আস-সালাফিয়ার প্রধান রূহুলস্নাহ তাওহীদী
প্রমুখ আহলেহাদীছ ওলামায়ে কেরাম।
সংকলনঃ
প্রফেসর ডক্টর খালিদ জাফরুল্লাহ ও রাজা হাসান
অনুবাদঃ
মুজাহিদুল ইসলাম স্বাধীন
সম্পাদনাঃ মোহাম্মদ ওমর ফারুক (মিল্কি)
পরিবেশনা ও
পুনঃ নিরীক্ষনঃ সত্যান্বেষী রিসার্চ টীম
প্রবন্ধটি
পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)<> -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothecholi.in , comming soon my best world websaite
0 Comments