▌বৃদ্ধাশ্রম : মানবতার কলঙ্কিত কারাগার পর্ব-১।
__________________________________________
লেখক:মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম।হাফিয্বাহুল্লাহ
[শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।]
পোষ্টার ডিজাইনার:- মুহাম্মাদ ফাহিম।
_____________________________________
.
.
বৃদ্ধ ও আশ্রম শব্দ দু’টি মিলে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। শব্দগতভাবে অর্থ দাঁড়ায় বৃদ্ধনিবাস বা বৃদ্ধের আশ্রয়স্থল। অন্য অর্থে জীবনের শেষ সময়ের আবাসস্থল, বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থে বৃদ্ধাবস্থায় পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের আশ্রয় ব্যতীত সরকারী-বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় লালিত-পালিত হওয়ার স্থানকে বৃদ্ধাশ্রম বলে।
.
.
যে যৌবনকাল ছিল চঞ্চলতায় ভরপুর, যে যৌবনকালের কর্মস্পৃহার বদৌলতে গড়ে উঠল এই সৌন্দর্যময় আবাসস্থল, বিস্তার লাভ করল শিক্ষা, উৎকর্ষ সাধিত হ’ল জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়, সে যৌবনের উচ্ছলতা আজ হারিয়ে গেছে। জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় তারা নিজেরাই আজ অচল, জরাজীর্ণ বার্ধক্যে আক্রান্ত হয়ে চরম অসহায়ত্ব বরণ করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৃদ্ধাশ্রম নামীয় কারাগারে স্থান পেয়েছে। একসময় যারা নামী দামী বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও চাকরিজীবী ছিলেন, বর্ণাঢ্য ছিল যাদের জীবন, বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজ সন্তানদের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারাই।
.
.
পরিবার ও সন্তান থেকেও যেন ‘সন্তানহারা ইয়াতীম’ হয়ে জীবন যাপন করছেন।
বৃদ্ধের এমন সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। সাথে সাথে তাদের প্রতি অবহেলার মাত্রা বেড়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যার ফলে সূচিত হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম নামের কলঙ্কজনক অধ্যায়।
.
.
ছোট বেলায় যে বাবা-মা ছিলেন সন্তানের সবচেয়ে বেশী আপন, যাদের ছাড়া সন্তান কিছুই করতে পারত না, যারা নিজেদের আরাম হারাম করে তাদের মানুষ করেছেন, নিজের সব দুঃখ-কষ্ট বুকে চেপে সন্তানের হাসিমাখা মুখ দেখার জন্য যে মা-বাবা ব্যাকুল থাকতেন, সে না খেলে যিনি থাকতেন অনাহারে, না ঘুমালে থাকতেন নির্ঘুম, অসুস্থ হ’লে ঠায় বসে থাকতেন শিয়রে, যে বাবা-মা তিল তিল করে নিজেদের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন সন্তানকে মানুষ করার জন্য, যে বাবা নিজের পকেট খরচকে বাঁচিয়ে রাখতেন তার সন্তানের টিউশন ফী অথবা টিফিনের টাকার জন্য, যারা নিজের অসুস্থতার কথা না ভেবে কেবল তার সন্তানদের কথা চিন্তা করে প্রত্যুষেই নেমে পড়তেন রূযীর সন্ধানে, সেই বাবা-মায়ের শেষ বয়সের ঠিকানা অবশেষে যদি হয় বৃদ্ধাশ্রম, তবে মানবতার প্রতি এ এক চরম উপহাস বৈ কি?
.
.
বৃদ্ধাশ্রমের ইতিহাস :
___________________
.
.
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় পৃথিবীর প্রথম বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রাচীন চীনে। ঘরছাড়া অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রের এই উদ্যোগ ছিল শান রাজবংশের। খ্রিস্টপূর্ব ২২০০ শতকে পরিবার থেকে বিতাড়িত বৃদ্ধদের জন্য আলাদা এই আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে ইতিহাসে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে শান রাজবংশ। পৃথিবীর প্রথম প্রতিষ্ঠিত সেই বৃদ্ধাশ্রমে ছিল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আরাম-আয়েশের সব রকম ব্যবস্থা। ছিল খাদ্য ও বিনোদন ব্যবস্থা।[1]
.
.
কিন্তু এখন বিষয়টি এমন হয়েছে যে, একবার বাবা-মাকে বৃদ্ধনিবাসে পাঠাতে পারলেই যেন সবকিছু থেকে দায়মুক্তি ঘটে। মূলত অসহায় ও গরীব বৃদ্ধদের প্রতি করুণাবোধ থেকেই হয়ত বৃদ্ধাশ্রমের সৃষ্টি। যেখানে বৃদ্ধদের প্রয়োজনীয় সেবা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রমের সেই ছবি এখন আর নেই।
কয়েক দশক আগেও আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম তেমন একটা ছিল না। সময়ের সাথে সাথে এর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৮.১০.২০১৮ইং তারিখে প্রকাশিত সমাজসেবা অধিদফতরের তথ্য মোতাবেক বর্তমান বাংলাদেশের নিবন্ধনকৃত শান্তি নিবাসের (বৃদ্ধাশ্রমের) সংখ্যা ছয়টি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সারা দেশে প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রমে ৫০টি করে মোট ৩০০টি সিট রয়েছে।[2]
.
.
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আশ্রিত ব্যক্তিদের নিজস্ব অর্থায়নে চলে একটি আশ্রম ‘বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ’ নামে। এটি একজন পরিচালক ও দু’জন কর্মচারীর সহযোগিতায় চলে। প্রায় ৩০/৪০ জন থাকতে পারে এখানে। চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় কাপ্তাই সড়কের দক্ষিণ পাশে ২০১৪ সালের ১লা মে চালু হয় ‘আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র’। মানবতার উন্নয়নের আশায় কেন্দ্রটি চালু করেন শিল্পপতি শামসুল আলম। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের অবহেলিত, অসহায় প্রবীণদের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, বিনোদন ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকুল চৌধুরী ১৯৮৭ সালের গোড়ার দিকে ঢাকার উত্তরায় আজমপুরে গড়ে তোলেন ‘বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র’।
.
.
১৯৯৪ সালে কেন্দ্রটিকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত করা হয় গাযীপুরের মণিপুর বিশিয়া কুড়িবাড়ীতে। ১৯৯৫ সালে ২১শে এপ্রিল শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মাদার তেরেসা কেন্দ্রটির বর্ধিতাংশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এখানে প্রবীণদের থাকার জন্য ১টি বিশাল টিনশেড ভবন ও ৩টি পাঁচতলা ভবন রয়েছে। যা বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রবীণ নিবাস হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কেন্দ্রটি ৭২ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হ’লেও বর্তমানে তা সম্প্রসারিত হয়ে ১০০ বিঘায় উন্নীত হয়েছে। মহিলা-পুরুষদের আলাদা ভবনে মোট ১২০০ মানুষ থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে এই কেন্দ্রে। বর্তমানে ২ শতাধিক বৃদ্ধ সেখানে অবস্থান করছেন। চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য রয়েছে পাঁচতলা ভবনের চিকিৎসা কেন্দ্র। এখানে ২ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক, ২ জন নার্স, একজন কম্পাউন্ডার ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানে নিয়োজিত আছে।[3]
__________________________________________
লেখক:মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম।হাফিয্বাহুল্লাহ
[শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।]
পোষ্টার ডিজাইনার:- মুহাম্মাদ ফাহিম।
_____________________________________
.
.
বৃদ্ধ ও আশ্রম শব্দ দু’টি মিলে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। শব্দগতভাবে অর্থ দাঁড়ায় বৃদ্ধনিবাস বা বৃদ্ধের আশ্রয়স্থল। অন্য অর্থে জীবনের শেষ সময়ের আবাসস্থল, বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থে বৃদ্ধাবস্থায় পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের আশ্রয় ব্যতীত সরকারী-বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় লালিত-পালিত হওয়ার স্থানকে বৃদ্ধাশ্রম বলে।
.
.
যে যৌবনকাল ছিল চঞ্চলতায় ভরপুর, যে যৌবনকালের কর্মস্পৃহার বদৌলতে গড়ে উঠল এই সৌন্দর্যময় আবাসস্থল, বিস্তার লাভ করল শিক্ষা, উৎকর্ষ সাধিত হ’ল জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়, সে যৌবনের উচ্ছলতা আজ হারিয়ে গেছে। জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় তারা নিজেরাই আজ অচল, জরাজীর্ণ বার্ধক্যে আক্রান্ত হয়ে চরম অসহায়ত্ব বরণ করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৃদ্ধাশ্রম নামীয় কারাগারে স্থান পেয়েছে। একসময় যারা নামী দামী বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও চাকরিজীবী ছিলেন, বর্ণাঢ্য ছিল যাদের জীবন, বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজ সন্তানদের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারাই।
.
.
পরিবার ও সন্তান থেকেও যেন ‘সন্তানহারা ইয়াতীম’ হয়ে জীবন যাপন করছেন।
বৃদ্ধের এমন সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। সাথে সাথে তাদের প্রতি অবহেলার মাত্রা বেড়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যার ফলে সূচিত হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম নামের কলঙ্কজনক অধ্যায়।
.
.
ছোট বেলায় যে বাবা-মা ছিলেন সন্তানের সবচেয়ে বেশী আপন, যাদের ছাড়া সন্তান কিছুই করতে পারত না, যারা নিজেদের আরাম হারাম করে তাদের মানুষ করেছেন, নিজের সব দুঃখ-কষ্ট বুকে চেপে সন্তানের হাসিমাখা মুখ দেখার জন্য যে মা-বাবা ব্যাকুল থাকতেন, সে না খেলে যিনি থাকতেন অনাহারে, না ঘুমালে থাকতেন নির্ঘুম, অসুস্থ হ’লে ঠায় বসে থাকতেন শিয়রে, যে বাবা-মা তিল তিল করে নিজেদের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন সন্তানকে মানুষ করার জন্য, যে বাবা নিজের পকেট খরচকে বাঁচিয়ে রাখতেন তার সন্তানের টিউশন ফী অথবা টিফিনের টাকার জন্য, যারা নিজের অসুস্থতার কথা না ভেবে কেবল তার সন্তানদের কথা চিন্তা করে প্রত্যুষেই নেমে পড়তেন রূযীর সন্ধানে, সেই বাবা-মায়ের শেষ বয়সের ঠিকানা অবশেষে যদি হয় বৃদ্ধাশ্রম, তবে মানবতার প্রতি এ এক চরম উপহাস বৈ কি?
.
.
বৃদ্ধাশ্রমের ইতিহাস :
___________________
.
.
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় পৃথিবীর প্রথম বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রাচীন চীনে। ঘরছাড়া অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রের এই উদ্যোগ ছিল শান রাজবংশের। খ্রিস্টপূর্ব ২২০০ শতকে পরিবার থেকে বিতাড়িত বৃদ্ধদের জন্য আলাদা এই আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে ইতিহাসে আলাদা জায়গা দখল করে নিয়েছে শান রাজবংশ। পৃথিবীর প্রথম প্রতিষ্ঠিত সেই বৃদ্ধাশ্রমে ছিল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আরাম-আয়েশের সব রকম ব্যবস্থা। ছিল খাদ্য ও বিনোদন ব্যবস্থা।[1]
.
.
কিন্তু এখন বিষয়টি এমন হয়েছে যে, একবার বাবা-মাকে বৃদ্ধনিবাসে পাঠাতে পারলেই যেন সবকিছু থেকে দায়মুক্তি ঘটে। মূলত অসহায় ও গরীব বৃদ্ধদের প্রতি করুণাবোধ থেকেই হয়ত বৃদ্ধাশ্রমের সৃষ্টি। যেখানে বৃদ্ধদের প্রয়োজনীয় সেবা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু বৃদ্ধাশ্রমের সেই ছবি এখন আর নেই।
কয়েক দশক আগেও আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম তেমন একটা ছিল না। সময়ের সাথে সাথে এর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৮.১০.২০১৮ইং তারিখে প্রকাশিত সমাজসেবা অধিদফতরের তথ্য মোতাবেক বর্তমান বাংলাদেশের নিবন্ধনকৃত শান্তি নিবাসের (বৃদ্ধাশ্রমের) সংখ্যা ছয়টি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সারা দেশে প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রমে ৫০টি করে মোট ৩০০টি সিট রয়েছে।[2]
.
.
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আশ্রিত ব্যক্তিদের নিজস্ব অর্থায়নে চলে একটি আশ্রম ‘বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ’ নামে। এটি একজন পরিচালক ও দু’জন কর্মচারীর সহযোগিতায় চলে। প্রায় ৩০/৪০ জন থাকতে পারে এখানে। চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় কাপ্তাই সড়কের দক্ষিণ পাশে ২০১৪ সালের ১লা মে চালু হয় ‘আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র’। মানবতার উন্নয়নের আশায় কেন্দ্রটি চালু করেন শিল্পপতি শামসুল আলম। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের অবহেলিত, অসহায় প্রবীণদের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, বিনোদন ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকুল চৌধুরী ১৯৮৭ সালের গোড়ার দিকে ঢাকার উত্তরায় আজমপুরে গড়ে তোলেন ‘বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র’।
.
.
১৯৯৪ সালে কেন্দ্রটিকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত করা হয় গাযীপুরের মণিপুর বিশিয়া কুড়িবাড়ীতে। ১৯৯৫ সালে ২১শে এপ্রিল শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মাদার তেরেসা কেন্দ্রটির বর্ধিতাংশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এখানে প্রবীণদের থাকার জন্য ১টি বিশাল টিনশেড ভবন ও ৩টি পাঁচতলা ভবন রয়েছে। যা বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রবীণ নিবাস হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কেন্দ্রটি ৭২ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হ’লেও বর্তমানে তা সম্প্রসারিত হয়ে ১০০ বিঘায় উন্নীত হয়েছে। মহিলা-পুরুষদের আলাদা ভবনে মোট ১২০০ মানুষ থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে এই কেন্দ্রে। বর্তমানে ২ শতাধিক বৃদ্ধ সেখানে অবস্থান করছেন। চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য রয়েছে পাঁচতলা ভবনের চিকিৎসা কেন্দ্র। এখানে ২ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক, ২ জন নার্স, একজন কম্পাউন্ডার ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানে নিয়োজিত আছে।[3]
এছাড়াও সারাদেশে নিবন্ধনহীন আরও অনেক বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে কেন এই বৃদ্ধাশ্রম? আসুন! এর জবাব খুঁজি।
_________________
কেন এই বৃদ্ধাশ্রম :
.
.
আমি গত ২৬শে ডিসেম্বর’১৮ ঢাকার অদূরে গাযীপুরের মণিপুরে অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বৃদ্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করে বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধদের অবস্থানের বহুবিধ কারণ লক্ষ্য করলাম। সফরসঙ্গী ছিলেন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ গাযীপুর যেলার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম। কথা বললাম, ম্যানেজার আবু শরীফের সাথে। বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধদের অবস্থানের কারণ হিসাবে উল্লেখযোগ্য বহুমূখী পরিস্থিতি বুঝতে তিনি সাহায্য করলেন। তিনি বলেন, এখানে অনেকে আসেন সেচ্ছায়, আবার অনেকে আসেন অনিচ্ছায়।
.
.
১. স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধদের অবস্থানের কিছু কারণ :
______________________________________
ক) পরিবার জনশূণ্য :
.
.
অনেকের পরিবারের সকল সদস্য একের পর এক মৃত্যুবরণ করায় পরিবার জনশূণ্য হয়ে পড়েছে। আবার অনেকের সন্তান উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে বিদেশে পড়তে গিয়ে আর স্বদেশে ফিরেনি। তাই অসহায়ত্ব থেকে বাঁচতে স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কিছু বৃদ্ধের সন্ধান মিলে। যেমন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত প্রবীণ নিবাসের বৃদ্ধা মিরা চৌধুর (ছদ্মনাম)। বয়স পঁয়ষট্টি পেরিয়েছে। জন্ম রাজধানীর পুরান ঢাকার মালিটোলায়। ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ ও এম.এ সম্পন্ন করেন তিনি।
.
.
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাঠ চুকিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন খুলনা কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষিকা হিসাবে। এরপর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে কাছের প্রিয়বন্ধু জোসেফ চৌধুরীর সঙ্গে। স্বামী ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)-এর ডিরেক্টর পদে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। জীবন সংসারের আলো যখন উদ্ভাসিত, ঠিক তখনই ছন্দপতন। স্বামীর মৃত্যুই জীবনযুদ্ধেপরাজিত সৈনিকের রূপ দেয় মিরাকে। জীবনের অর্জিত সম্পদ দিয়ে একমাত্র ছেলে অপূর্ব হাসান চৌধুরীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগ থেকে পাশ করার পর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান উচ্চতর ডিগ্রী নিতে। সমস্ত স্বপ্নসাধের কবর রচনা করে মিরা চৌধুরী আজ ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রমের ৪১৫ নম্বর কক্ষে। পাশে কাউকে না পেয়ে নিজের সম্বল বলতে রাজধানীর বাংলামোটরের দিলু রোডে ছয়তলা একটি বাড়ী বিক্রি করে দেন ২ কোটি টাকায়।
.
.
বাড়ী বিক্রির টাকা ব্যয় হয়েছে ছেলের শিক্ষা খরচে। তবে নিজের নামেও কিছু টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে। সেখান থেকেই আশ্রমের খরচ চালানো হয়। ছেলে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেরই একটি ব্যাংকে চাকুরী নিয়েছেন। বেতনও বেশ ভাল। দেশে ফেরা অনেকটাই অনিশ্চিত। মিরা চৌধুরী স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, ‘ছেলে বাংলাদেশে আসবে এমন আশা দিনে দিনে ক্ষীণ হচ্ছে। আর আসবেই বা কেন? কিসের আশায় আসবে? বাংলাদেশে এসেই বা কি করবে? এ দেশে তো জীবনের নিরাপত্তাও নেই। মিরা বলেছিলেন, ‘আর কয় দিনইবা বাঁচব। এখন আর ছেলেকে বিরক্ত করি না। কষ্টেই তো আমার জীবন গড়া। অসময়ে স্বামীকে হারালাম।
.
.
বাবা-মা চলে গেছেন অনেক আগে। একমাত্র ভাই, সেও চলে গেল ছয় মাস হয়। আপন বলতে আর তো কেউ নেই। কলকাতায় স্বামীর ঘরের আত্মীয়-স্বজন আছে। কে আর কার খবর রাখে? চাচাতো বোনের মেয়ে মিরপুরে থাকে। ও মাঝে মধ্যে এসে খবর নেয়। আছি তো। আশ্রমেই বেশ আছি। শুরু থেকেই মৃদু ভাষায় কথা বলছিলেন। নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলেন না। গলা ধরে এলো। নিমিষেই চোখের কোণ বেয়ে দু’ফোটা অশ্রু গালে গড়ালো। বয়সের ভারে কুচকানো গাল। তাতে বেদনার স্পষ্ট ছাপ। চশমা খুলে ওড়নায় চোখের পানি মুছতে মুছতে শোনালেন সংক্ষিপ্ত জীবনকথা।[4]
.
.
খ) পরিবারের বোঝা :
_____________________
.
.কিছু পরিবার তাদের বৃদ্ধদের পরিবারের বোঝা মনে করে। তাদের ধারণা সন্তান লালন পালনে ভবিষ্যত রয়েছে। তাদের পিছনে খরচ করলে তারা বড় হয়ে আবার তাদের দেখাশুনার ভার গ্রহণ করবে। অপরদিকে বৃদ্ধরা জরাগ্রস্ত, অসহায়, নিষ্কর্মা দুর্বল হয়ে যাবে। তাদের দ্বারা ভবিষ্যতে কোন উপকার পাওয়া যাবে না। তাদের লালন পালন করে লাভ হবে না। এমন বৃদ্ধদের পেছনে অর্থ ব্যয় করা অনর্থক ভেবে, পরিবারের বোঝা মনে করে, অবহেলা ভরে তাদের সাথে অন্যায় আচরণ করে বলে অনেকে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেন।
.
.
গাযীপুরের বিশিয়া বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষিত সন্তানের মা পঁচাত্তর বছর বয়সোর্ধ ময়মনসিংহের আলিমুন্নেসা তাদের একজন। এক সময় যাদের তরে বুক ভরা ভালোবাসা ছিল, তারা এক বুক ব্যথা ঢেলে আজ তিক্ত করেছে এ অন্তর। স্বপ্নের পরিবর্তে উপহার দিয়েছে চোখ ভরা লোনাপানি।
লক্ষ্মীপুরের আব্দুল হামীদ মোল্লা। মানুষ করার তাকীদে হোমিও ঔষধ বিক্রি করে শিক্ষিত করেছেন তিন ছেলে, তিন মেয়ে এবং মানুষ করেছেন বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীতে কর্মরত ছোট দুই ভাইকেও।
.
.
বুক ভরা আহাজারী আর চোখ ভরা কান্না নিয়ে দিনাতিপাত করেন বৃদ্ধাশ্রমে। এ দু’জনেরই শিক্ষিত পরিজন দেখার সুযোগ পায় না তাদের। যেন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে তারা। নিজেদের প্রবোধ দেয় এখানেই ভালো আছি, বেশ আছি।
কুষ্টিয়ার বাজিতপুর গ্রামের এক কৃষকের চার মেয়ে, এক ছেলে। ছেলের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবার ঠাঁই হয়নি। মেয়েরা পালা করে তাকে রাখতেন। ব্যাপারটা জামাইদের পসন্দ হ’ত না। সেজ মেয়ের বাড়িতে এক রাতে খাবারের জন্য অনেক্ষণ বসে থেকেও শেষ পর্যন্ত কেউ খাবার না দেওয়ায় ট্রেনে চেপে চলে এলেন ঢাকায়। অবশেষে তিনি স্বেচ্ছায় বেছে নিলেন বৃদ্ধাশ্রম।[5]
.
_________________
কেন এই বৃদ্ধাশ্রম :
.
.
আমি গত ২৬শে ডিসেম্বর’১৮ ঢাকার অদূরে গাযীপুরের মণিপুরে অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বৃদ্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করে বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধদের অবস্থানের বহুবিধ কারণ লক্ষ্য করলাম। সফরসঙ্গী ছিলেন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ গাযীপুর যেলার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম। কথা বললাম, ম্যানেজার আবু শরীফের সাথে। বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধদের অবস্থানের কারণ হিসাবে উল্লেখযোগ্য বহুমূখী পরিস্থিতি বুঝতে তিনি সাহায্য করলেন। তিনি বলেন, এখানে অনেকে আসেন সেচ্ছায়, আবার অনেকে আসেন অনিচ্ছায়।
.
.
১. স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধদের অবস্থানের কিছু কারণ :
______________________________________
ক) পরিবার জনশূণ্য :
.
.
অনেকের পরিবারের সকল সদস্য একের পর এক মৃত্যুবরণ করায় পরিবার জনশূণ্য হয়ে পড়েছে। আবার অনেকের সন্তান উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে বিদেশে পড়তে গিয়ে আর স্বদেশে ফিরেনি। তাই অসহায়ত্ব থেকে বাঁচতে স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কিছু বৃদ্ধের সন্ধান মিলে। যেমন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত প্রবীণ নিবাসের বৃদ্ধা মিরা চৌধুর (ছদ্মনাম)। বয়স পঁয়ষট্টি পেরিয়েছে। জন্ম রাজধানীর পুরান ঢাকার মালিটোলায়। ১৯৮৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ ও এম.এ সম্পন্ন করেন তিনি।
.
.
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাঠ চুকিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন খুলনা কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষিকা হিসাবে। এরপর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে কাছের প্রিয়বন্ধু জোসেফ চৌধুরীর সঙ্গে। স্বামী ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)-এর ডিরেক্টর পদে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। জীবন সংসারের আলো যখন উদ্ভাসিত, ঠিক তখনই ছন্দপতন। স্বামীর মৃত্যুই জীবনযুদ্ধেপরাজিত সৈনিকের রূপ দেয় মিরাকে। জীবনের অর্জিত সম্পদ দিয়ে একমাত্র ছেলে অপূর্ব হাসান চৌধুরীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগ থেকে পাশ করার পর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান উচ্চতর ডিগ্রী নিতে। সমস্ত স্বপ্নসাধের কবর রচনা করে মিরা চৌধুরী আজ ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রমের ৪১৫ নম্বর কক্ষে। পাশে কাউকে না পেয়ে নিজের সম্বল বলতে রাজধানীর বাংলামোটরের দিলু রোডে ছয়তলা একটি বাড়ী বিক্রি করে দেন ২ কোটি টাকায়।
.
.
বাড়ী বিক্রির টাকা ব্যয় হয়েছে ছেলের শিক্ষা খরচে। তবে নিজের নামেও কিছু টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে। সেখান থেকেই আশ্রমের খরচ চালানো হয়। ছেলে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেরই একটি ব্যাংকে চাকুরী নিয়েছেন। বেতনও বেশ ভাল। দেশে ফেরা অনেকটাই অনিশ্চিত। মিরা চৌধুরী স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, ‘ছেলে বাংলাদেশে আসবে এমন আশা দিনে দিনে ক্ষীণ হচ্ছে। আর আসবেই বা কেন? কিসের আশায় আসবে? বাংলাদেশে এসেই বা কি করবে? এ দেশে তো জীবনের নিরাপত্তাও নেই। মিরা বলেছিলেন, ‘আর কয় দিনইবা বাঁচব। এখন আর ছেলেকে বিরক্ত করি না। কষ্টেই তো আমার জীবন গড়া। অসময়ে স্বামীকে হারালাম।
.
.
বাবা-মা চলে গেছেন অনেক আগে। একমাত্র ভাই, সেও চলে গেল ছয় মাস হয়। আপন বলতে আর তো কেউ নেই। কলকাতায় স্বামীর ঘরের আত্মীয়-স্বজন আছে। কে আর কার খবর রাখে? চাচাতো বোনের মেয়ে মিরপুরে থাকে। ও মাঝে মধ্যে এসে খবর নেয়। আছি তো। আশ্রমেই বেশ আছি। শুরু থেকেই মৃদু ভাষায় কথা বলছিলেন। নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলেন না। গলা ধরে এলো। নিমিষেই চোখের কোণ বেয়ে দু’ফোটা অশ্রু গালে গড়ালো। বয়সের ভারে কুচকানো গাল। তাতে বেদনার স্পষ্ট ছাপ। চশমা খুলে ওড়নায় চোখের পানি মুছতে মুছতে শোনালেন সংক্ষিপ্ত জীবনকথা।[4]
.
.
খ) পরিবারের বোঝা :
_____________________
.
.কিছু পরিবার তাদের বৃদ্ধদের পরিবারের বোঝা মনে করে। তাদের ধারণা সন্তান লালন পালনে ভবিষ্যত রয়েছে। তাদের পিছনে খরচ করলে তারা বড় হয়ে আবার তাদের দেখাশুনার ভার গ্রহণ করবে। অপরদিকে বৃদ্ধরা জরাগ্রস্ত, অসহায়, নিষ্কর্মা দুর্বল হয়ে যাবে। তাদের দ্বারা ভবিষ্যতে কোন উপকার পাওয়া যাবে না। তাদের লালন পালন করে লাভ হবে না। এমন বৃদ্ধদের পেছনে অর্থ ব্যয় করা অনর্থক ভেবে, পরিবারের বোঝা মনে করে, অবহেলা ভরে তাদের সাথে অন্যায় আচরণ করে বলে অনেকে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেন।
.
.
গাযীপুরের বিশিয়া বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষিত সন্তানের মা পঁচাত্তর বছর বয়সোর্ধ ময়মনসিংহের আলিমুন্নেসা তাদের একজন। এক সময় যাদের তরে বুক ভরা ভালোবাসা ছিল, তারা এক বুক ব্যথা ঢেলে আজ তিক্ত করেছে এ অন্তর। স্বপ্নের পরিবর্তে উপহার দিয়েছে চোখ ভরা লোনাপানি।
লক্ষ্মীপুরের আব্দুল হামীদ মোল্লা। মানুষ করার তাকীদে হোমিও ঔষধ বিক্রি করে শিক্ষিত করেছেন তিন ছেলে, তিন মেয়ে এবং মানুষ করেছেন বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীতে কর্মরত ছোট দুই ভাইকেও।
.
.
বুক ভরা আহাজারী আর চোখ ভরা কান্না নিয়ে দিনাতিপাত করেন বৃদ্ধাশ্রমে। এ দু’জনেরই শিক্ষিত পরিজন দেখার সুযোগ পায় না তাদের। যেন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে তারা। নিজেদের প্রবোধ দেয় এখানেই ভালো আছি, বেশ আছি।
কুষ্টিয়ার বাজিতপুর গ্রামের এক কৃষকের চার মেয়ে, এক ছেলে। ছেলের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবার ঠাঁই হয়নি। মেয়েরা পালা করে তাকে রাখতেন। ব্যাপারটা জামাইদের পসন্দ হ’ত না। সেজ মেয়ের বাড়িতে এক রাতে খাবারের জন্য অনেক্ষণ বসে থেকেও শেষ পর্যন্ত কেউ খাবার না দেওয়ায় ট্রেনে চেপে চলে এলেন ঢাকায়। অবশেষে তিনি স্বেচ্ছায় বেছে নিলেন বৃদ্ধাশ্রম।[5]
.
গ) পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অভাব :
_______________________________________
.
.
পরিবারের সদস্য একাধিক থাকা সত্ত্বেও তাদের কর্মক্ষম বা উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় স্বেচ্ছায় একশ্রেণীর বৃদ্ধরা মাথাগুজার ঠাঁই করে নিয়েছে বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগারে। এমনই একজন সিলেটের অধিবাসী মুহাম্মাদ ছবির খাঁন। বৃদ্ধ বয়সে বাবা হয়েছেন এক মেয়ের। এই বয়সে কেউ নেই দেখাশুনা করার মত। তাই স্ত্রী-কন্যা ফেলে রেখে স্বেচ্ছায় ঠাঁই করে নিয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে।
.
.
ঘ) পরিবারের সদস্যদের বনিবনার অভাব :
________________________________________
.
.
সন্তানাদি বা ছেলের বউদের সাথে অমিল। সেকারণ তারা পায় না সদাচরণ, বেঁচে থাকার মত পায় না আহার, পায় না উপযুক্ত পরিধেয় বস্ত্র এবং নানাবিধ রোগের যাতাকলে পিষ্ট হয়েও পায় না চিকিৎসার জন্য পারিবারিক সহযোগিতা। অর্থের অভাবে ব্যক্তিগত চাহিদার সকল অংশ থাকে অপূরণীয়। ফলে কষ্ট-ক্লেশে জর্জরিত হয়ে অনেকেই স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমকে জীবনের শেষ ঠিকানা বানিয়ে নেয়। এমনই একজন চট্টগ্রামের পটিয়া উপযেলার মুখপাড়া এলাকার ৭৭ বছর বয়সী অরুণ ভট্টাচার্য। একমাত্র ছেলের বউয়ের লাথি ঘুষি খেয়ে হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে এখন আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আছেন।[6]
.
_______________________________________
.
.
পরিবারের সদস্য একাধিক থাকা সত্ত্বেও তাদের কর্মক্ষম বা উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় স্বেচ্ছায় একশ্রেণীর বৃদ্ধরা মাথাগুজার ঠাঁই করে নিয়েছে বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগারে। এমনই একজন সিলেটের অধিবাসী মুহাম্মাদ ছবির খাঁন। বৃদ্ধ বয়সে বাবা হয়েছেন এক মেয়ের। এই বয়সে কেউ নেই দেখাশুনা করার মত। তাই স্ত্রী-কন্যা ফেলে রেখে স্বেচ্ছায় ঠাঁই করে নিয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে।
.
.
ঘ) পরিবারের সদস্যদের বনিবনার অভাব :
________________________________________
.
.
সন্তানাদি বা ছেলের বউদের সাথে অমিল। সেকারণ তারা পায় না সদাচরণ, বেঁচে থাকার মত পায় না আহার, পায় না উপযুক্ত পরিধেয় বস্ত্র এবং নানাবিধ রোগের যাতাকলে পিষ্ট হয়েও পায় না চিকিৎসার জন্য পারিবারিক সহযোগিতা। অর্থের অভাবে ব্যক্তিগত চাহিদার সকল অংশ থাকে অপূরণীয়। ফলে কষ্ট-ক্লেশে জর্জরিত হয়ে অনেকেই স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমকে জীবনের শেষ ঠিকানা বানিয়ে নেয়। এমনই একজন চট্টগ্রামের পটিয়া উপযেলার মুখপাড়া এলাকার ৭৭ বছর বয়সী অরুণ ভট্টাচার্য। একমাত্র ছেলের বউয়ের লাথি ঘুষি খেয়ে হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে এখন আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আছেন।[6]
.
ঙ) একাকিত্ব ঘোচাতে বৃদ্ধাশ্রমে :
______________________________
.
.
অনেকে আবার বাড়িতে সঙ্গ দেওয়ার মত কেউ না থাকায় একাকিত্ব ঘোচাতে স্থান করে নিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমে। তাছাড়া নিরাপত্তার অভাবেও অনেকে এই পথ বেছে নেন৷ দেখা গেছে রং মিস্ত্রি বা কলের মিস্ত্রি, এমনকি গৃহ পরিচারিকার হাতেও খুন হচ্ছেন তাঁরা৷ তাই নিরাপত্তার অভাবেও অনেকে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা যায়।
.
.
[চলবে....]
____________________________________
______________________________
.
.
অনেকে আবার বাড়িতে সঙ্গ দেওয়ার মত কেউ না থাকায় একাকিত্ব ঘোচাতে স্থান করে নিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমে। তাছাড়া নিরাপত্তার অভাবেও অনেকে এই পথ বেছে নেন৷ দেখা গেছে রং মিস্ত্রি বা কলের মিস্ত্রি, এমনকি গৃহ পরিচারিকার হাতেও খুন হচ্ছেন তাঁরা৷ তাই নিরাপত্তার অভাবেও অনেকে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা যায়।
.
.
[চলবে....]
____________________________________
[1]. প্রথম আলো, ১৭ই জানুয়ারী’১৪।
[2]. সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন ডটকম, ২৮শে অক্টোবর’১৮।
[3]. ভোরের কাগজ ১০ই নভেম্বর’১৪।
[4]. দৈনিক যুগান্তর, ২৫শে সেপ্টেম্বর’১৮, জাগো নিউজ ডটকম, ৭ই মে’১৬।
[5]. প্রথম আলো, ২৮শে জুন’১৯।
[6]. সিটিজিবার্তা ডটকম, ৬ই মে ’১৯।
___________________
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
[2]. সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন ডটকম, ২৮শে অক্টোবর’১৮।
[3]. ভোরের কাগজ ১০ই নভেম্বর’১৪।
[4]. দৈনিক যুগান্তর, ২৫শে সেপ্টেম্বর’১৮, জাগো নিউজ ডটকম, ৭ই মে’১৬।
[5]. প্রথম আলো, ২৮শে জুন’১৯।
[6]. সিটিজিবার্তা ডটকম, ৬ই মে ’১৯।
___________________
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
► আপনার যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন ও পরবর্তী আপডেট পেতে পেজটি লাইক দিয়ে রাখুন। কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।” [সহীহ মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪]
► আমাদের পোস্টগুলি কপিরাইট মুক্ত! সুতরাং আপনি চাইলে পেজের কনটেন্টগুলো হুবহু কপি করে ফেসবুক বা যেকোন মাধ্যমে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে পারেন বিনা অনুমতিতে।
জায্বাকুমুল্লাহ।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaiteজায্বাকুমুল্লাহ।
0 Comments