Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

▌একজন জান্নাতী মহিলার জীবন কাহিনী।



▌একজন জান্নাতী মহিলার জীবন কাহিনী।
______________________________________
.
.
তিনি হলেন মর্যাদাবান সাহাবী আনাস রাযিয়াল্লাহুর আনহুর মা এবং অন্যতম মহিলা সাহাবী উম্মে সুলাইম রুমাইসা বিনতে মিলহান। কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে অগমণকারী প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের জন্যই তার জীবনীতে বিরাট শিক্ষা রয়েছে।
.
.
মক্কার যমীনে যখন ইসলামের সুশীতল ছায়ান নামলো, তখন তিনি সর্বাগ্রে ইসলাম গ্রহণকারীদের সাথে সাথেই ইসলাম কবুল করেন। তার স্বামী মালিক বিন নযরের কাছে যখন রুমাইসার ইসলাম গ্রহণের খবর পৌঁছে গেল, তখন সে রুমাইসাকে লক্ষ্য করে বলল, তুমি কি বে-দ্বীন হয়ে গেছো? জবাবে তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি বে-দ্বীন হইনি; বরং ইসলাম গ্রহণ করেছি। অতঃপর তিনি মালিক বিন নযরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। কিন্তু সে ইসলামের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলো।
.
.
ইসলাম গ্রহণ করার তিনি তার একমাত্র শিশু পুত্র আনাসকে অত্যন্ত গুরুত্বে সাথে ইসলামের উপর প্রতিপালন করতে লাগলেন। তিনি তার আদরের পুত্রকে খেলা-ধুলা করানোর সময় বলতেন, বলো বাবা لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ বলো বাবা, لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ ।
.
.
তার স্বামী মালিক বিন নযর আনাসকে শাহাদাতের কালেমা পাঠ করতে শুনে রাগান্বিত হয়ে যেতো এবং রুমাইসাকে বলতো, তুমি আমার পুত্রকে নষ্ট করোনা। তিনি বলতেন আল্লাহর কসম! আমি তাকে নষ্ট করছিনা।
.
.
বর্ণিত আছে যে, তার স্বামী একদা সিরিয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে তার শত্র“রা সেখানে তাকে হত্যা করে ফেলে। এবার উম্মে রুমাইসা তার শিশু পুত্রকে নিয়ে বিধবা হয়ে গেলেন। এবার তিনি তার একমাত্র শিশুকে দুধ পান করানোর সাথে ঈমান ও ইলম শিখাতে থাকলেন।
.
.
পরবর্তীতে মুসলিমগণ যখন মদীনায় হিজরত করলেন, তখন রমাইসাও শিশু পুত্র আনাসসহ মদীনায় হিজরত করলেন। তখন আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহুর বয়স ছিল মাত্র দশ বছর। আনাসকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে নিয়ে গেলেন এবং বললনে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই তো আমি আনাসকে আপনার খেদমতের জন্য নিয়ে এসেছি। আপনি তাকে গ্রহণ করুন।
.
.
তিনি আনাসকে কবুল করলেন। সেদিন থেকেই আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু নবীজির খেদমতে আত্ননিয়োগ করলেন। তিনি একটানা দশ বছর তাঁর খেদমত করেছেন।
.
.
ঐদিকে আনসারী সাহাবী আবু তালহা রমাইসাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিল। আবু তালহা তখন ছিল মুশরিক। তাই তিনি আবু তালহার সাথে বিবাহের প্রস্তা প্রত্যাখ্যান করলেন। আবু তালহা দ্বিতীয়বার প্রস্তাব দিল। তিনি যখন আবু তালহার আগ্রহ দেখলেন, তখন তার কথার জবাব এভাবে দিলেন যে, তোমার মত পুরুষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার মত নয়, তবে কথা হলো তুমি তো মুশরিক। আমার পক্ষে কোনো মুশরিক পুরুষের সাথে বিবাহ বসা সম্ভব নয়। আবু তালহা ধন-সম্পদের প্রলোভন দেখালো। কিন্তু তিনি বললেন, আমি তোমার ধন-সম্পদের লোভ করিনা। তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ করো তাহলে ইসলামই হবে তোমার সাথে আমার বিবাহের মহর।
.
.
অতঃপর রুমাইসা বললেন, হে আবু তালহা! তুমি কি জানো না, তোমার যেই মাবুদকে পূজা কারো তা কারো উপকার করতে পারেনা এবং ক্ষতিও করতে পারেনা? তোমার মাবুদকে বানানো হয়েছে কাঠের এক অংশ দিয়ে এবং অন্য অংশ চুলায় আগুন জ্বালিয়ে রান্না করা হয়েছে।
.
.
কথাগুলো শুনে আবু তালহা বললেন, আচ্ছা, আমি তোমার কথায় চিন্তা-ভাবনা করে দেখবো। পরবর্তীতে আবু তালহা এসে বললেন, হে রুমাইসা! তোমার কথা আমার অন্তরের গভীরে প্রবেশ করেছে। অতঃপর তিনি বললেন,
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ.
অতঃপর আবু তালহার সাথে রুমাইসার রুমাইসার বিবাহ সম্পাদিত হলো। ইসলামের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত মহিলার বিবাহ হয়েছে তার মধ্যে রুমাইসার বিবাহের মহর ছিল সর্বোচ্চ। ইসলামই ছিল তার বিবাহের মহর।
.
.
রুমাইসার অন্তর ছিল আল্লাহর ভালোবাসা, রাসূলের ভালোবাসা এবং ইসলামের ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। সেই সঙ্গে রুমাইসা স্ত্রী হিসাবে পৃথিবীর প্রতিটি স্ত্রীর জন্যই কিয়ামত পর্যন্ত আদর্শ হয়ে থাকবেন। তিনি তার স্বামী আবু তালহার সাথে অত্যন্ত গভীর ভালোসার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। তার স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনে তিনি বিন্দু মাত্র ত্রুটি করতেন না।
.
.
সহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, আবু তালহার একটি শিশু পুত্র অসুস্থ ছিল। আবু তালহা তখন সফরে ছিলেন। তিনি যেদিন ঘরে ফিরলেন, ঐদিনই শিশু পুত্রটি মৃত্যু বরণ করল। রুমাইসা বাড়ির সকলকে বললেন, আমার আগে যেন আবু তালহাকে শিশুর মৃত্যু সংবাদ প্রদান না করে। আবু তালহা ঘরে প্রবেশ করে শিশুটির কথা জিজ্ঞাসা করলেন। রমাইসা বললেন, শিশুটি খুব আরামে আছে। এতে আবু তালহা মনে করলেন, অসুস্থ শিশুটি ভালো হয়ে গেছে এবং আরামে ঘুমাচ্ছে। রুমাইসা তার স্বামীকে খাবার দিলেন।

.
.
অতঃপর স্বামীর জন্য সৌন্দর্য গ্রহণ করলেন। অতঃপর তার স্বামীর সাথে রাত্রি যাপন করলেন। স্বামী-স্ত্রীতে সাধারণত যা হয়ে থাকে তাই হলো। সকাল হলে রুমাইসা বললেন, হে আবু তালহা তোমার কাছে যদি অমুক গোত্রের কেউ কিছু আমানত রাখে। আর সে যদি তোমার কাছে সেই আমানত ফেরত নিতে চায়, তাহলে কি তুমি উহা আটকিয়ে রাখতে পারবে? তিনি বললেন, না অবশ্যই আমানত ফিরিয়ে দিতে হবে। তখন রুমাইসা বললেন, তুমি ধৈর্যধারণ করো। তোমার পুত্র আল্লাহর নিকট চলে গেছে।
.
.
এই কথা শুনে মন খারাপ করে আবু তালহা সরাসরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে চলে গিয়ে রাতের ঘটনা সম্পর্কে জানালেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, “আল্লাহ তাআলা আজ রাতে তোমাদের দুইজনের মধ্যে প্রচুর বরকত দান করেছেন। অতঃপর উম্মে সুলাইম ও আবু তালহার এই কাজে আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে অনেকগুলো পুত্র সৎসন্তান দান করেছেন। তাদের মধ্য থেকে দশজন কুরআনের হাফেয হয়েছিলেন।
.
.
রুমাইসার কৃতিত্ব এখানেই শেষ নয়। ইতিহাসের কিতাবগুলোতে লিখা হয়েছে, উম্মে সুলাইম নারিত্বের সীমার মধ্যে থেকেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে একাধিক জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। ইসলামের প্রতি অগাধ ভালোবাসাই এর একমাত্র কারণ।
.
.
উপরোক্ত গুণাবলী তার চরিত্রের ভূষণ হওয়ার সাথে সাথে তিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী ও মেধাবী মহিলা। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তিনি একাধিক হাদীছ বর্ণনা করেছেন। তাঁর থেকে তাঁর পুত্র আনাস, ইবনে আব্বাস এবং অন্যান্য সাহাবীগণ হাদীছ বর্ণনা করেছেন। তিনি প্রকৃতপক্ষেই সত্য ও ন্যায়ের একটি প্রতিষ্ঠান ছিলেন। তাই আল্লাহ তাআলা তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তার জন্য জান্নাত তৈরী করে রেখেছেন।
.
.
আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে মারফু হিসাবে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা বলেছেন আমি জান্নাতে প্রবেশ করে আবু তালহার স্ত্রী রুমাইসাকে দেখতে পেয়েছি। [সহীহ বুখারী।]
.
.
_____________________________
তথ্যসূত্রঃ (১) আল-ইসাবা ফী তামঈযিস-সাহাবা, (২) উসুদুল গাবাহ, (৩) আল-ইস্তিআব এবং অন্যান্য।
.
______________________________________________
লেখক:-শায়খ আ'ব্দুল্লাহ আল-কাফী হা'ফিজাহুল্লাহ।
ফেসবুক আইডি লিংক-https://www.facebook.com/kafi.abdullah12
__________________________________
পোষ্টার ডিজাইনারঃ- রাজভির হোসেন।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

► আপনার যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন ও পরবর্তী আপডেট পেতে পেজটি লাইক দিয়ে রাখুন। কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।” [সহীহ মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪]

► আমাদের পোস্টগুলি কপিরাইট মুক্ত! সুতরাং আপনি চাইলে পেজের কনটেন্টগুলো হুবহু কপি করে ফেসবুক বা যেকোন মাধ্যমে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে পারেন বিনা অনুমতিতে।
জায্বাকুমুল্লাহ।

►আলিমদের সাথে,সালাফদের পথে।
►বার্তা-The Massage Of Allah S.W.T
► https://www.facebook.com/Barta.4u
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite

Post a Comment

0 Comments