Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

আখেরি জোহর,গ্রামে ও শহরে জুমু‘আহর সালাত আদায় করা সম্পর্কে যেনে নিন_


বিষয়ঃ আখেরি জোহর,গ্রামে ও শহরে জুমু‘আহর সালাত, জুমআর জন্য নিম্নতম নামাযী সংখ্যাঃ

 ইত্যাদি সম্পর্কে

#যে_ব্যক্তি_জুমআর_সালাত_আদায়_করবে_সে_কি_যোহরও_আদায়_করবে?

যে ব্যক্তি জুমআর সালাত আদায় করল সে যোহরের সময়ের ফরযই আদায় করল। তাই সে আর যোহর আদায় করবে না। কিন্তু কিছু লোক জুমআর নামায আদায় করার পর যোহর নামায আদায় করে থাকে। সাধারণ পরিভাষায় এটাকে আখেরী যোহর বলা হয়। এটি একটি বিদআত।

কেননা আল্লাহ্‌র কুরআন ও নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাতে এর কোন প্রমাণ নেই।_অতএব তা পরিত্যাগ করা ওয়াজিব। এমনকি যদিও কয়েক স্থানে জুমআ অনুষ্ঠিত হয়, তবুও জুমআর নামায আদায় করার পর কোন মানুষের জন্য যোহর নামায আদায় করা শরীয়ত সম্মত নয়; বরং তা নিকৃষ্ট বিদআত।

কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা একটি সময়ে একের অধিক ইবাদত ফরয করেননি। আর তা হচ্ছে জুমআর নামায। তা তো আদায় করা হয়েছে।

যারা জুমআ আদায় করার পর যোহর আদায় করতে বলেন, তাদের যুক্তি হচ্ছে, “এক শহরে একাধিক জুমআ আদায় করা জায়েয নয়।

একাধিক জুমআ হলে যে মসজিদে প্রথমে নামায অনুষ্ঠিত হবে সেটাই জুমআ হিসেবে গণ্য হবে। অন্যগুলো বাতিল হবে।

কিন্তু যেহেতু কোন্‌ মসজিদে জুমআ প্রথমে হয় তা জানা নেই। তাই সমস্ত জুমআ বাতিল। ফলে তার বদলে পরবর্তীতে যোহর আদায় করতে হবে।”

তাদেরকে আমি বলবঃ এ দলীল ও যুক্তি আপনারা কোথায় পেলেন? এটার ভিত্তি কি কোন হাদীসে আছে? বা ইহা কি বিশুদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি ও সঠিক যুক্তি সঙ্গত কথা?

উত্তর অবশ্যই না। বরং আমরা বলি, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে যদি একাধিক জুমআ অনুষ্ঠিত হয় তবে সবগুলোই বিশুদ্ধ।

কেননা আল্লাহ্‌ বলেন, “তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্‌কে ভয় কর।”

(সূরা তাগাবুনঃ ১৬)

আর শহর প্রশস্ত হওয়ার কারণে অথবা মসজিদে স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে এই শহরের অধিবাসীগণ প্রয়োজনের তাগিদেই বিভিন্ন স্থানে জুমআ অনুষ্ঠিত করেছে, এতে তারা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্‌কে ভয় করেছে।

আর যে ব্যক্তি সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্‌কে ভয় করেছে সে তার উপর নির্ধারিত ফরয বাস্তবায়ন করেছে। সুতরাং কিভাবে একথা বলা যায় যে তার আমল ফাসেদ বা বাতিল হয়ে গেছে, তাই জুমআর পরিবর্তে যোহর নামায আদায় করতে হবে ?

তবে বিনা প্রয়োজনে এক শহরে একাধিক জুমআ অনুষ্ঠিত করা নিঃসন্দেহে সুন্নাহ্‌ বিরোধী কাজ। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও খোলাফায়ে রাশেদার নীতি বিরোধী কাজ। তাই অধিকাংশ বিদ্বানের মত এরূপ করা হারাম। তারপরও আমরা বলতে পারি না যে তাদের ইবাদতই বিশুদ্ধ হবে না।

কেননা এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের কোন দায়দায়িত্ব নেই। এ দায়দায়িত্ব বহণ করবে প্রশাসন যাদের অনুমতিতে বিনা প্রয়োজনে একাধিক জুমআ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তাই প্রশাসনের মধ্যে যারা মসজিদ তত্ববধানের দায়িত্বে নিয়োজিত তাদের কাছে আমরা আবেদন করি, প্রয়োজন দেখা না দিলে তারা যেন একাধিক জুমআর মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হতে অনুমতি না দেন।

_কেননা ইসলামী শরীয়তের সুপ্রশস্ত ও সুদূর প্রসারী দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে, ইবাদতের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে একস্থানে সমবেত করে পরস্পরের মাঝে সমপ্রীতি ও ভালবাসা সৃষ্টি করা, অজ্ঞদেরকে দ্বীনের শিক্ষা দান করা। এছাড়া আরো অনেক বড় বড় উপকারিতা রয়েছে।

শরীয়ত সম্মত সমাবেশ সমূহ হচ্ছেঃ কোনটি সাপ্তাহিক, কোনটি বাৎসরিক, কোনটি দৈনিক। দৈনিক সমাবেশ সমূহ হচ্ছে প্রত্যেক গ্রাম ও মহল্লার মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত অনুষ্ঠিত করা। কেননা শরীয়ত প্রণেতা যদি মুসলমানদেরকে প্রতিদিন পাঁচবার শহরের একটি মাত্র স্থানে একত্রিত হওয়ার আদেশ করতেন তবে নিঃসন্দেহে তা কষ্টকর হত। এজন্য তাদের প্রতি সহজতা কল্পে এই সমাবেশকে প্রত্যেক মহল্লার প্রত্যেক মসজিদে বৈধ করে দেয়া হয়েছে।

আর সপ্তাহিক সমাবেশ হচ্ছে জুমআর দিবসে। এলাকার সমস্ত লোক সপ্তাহে একবার একস্থানে সমবেত হবে। এজন্য সুন্নাত হচ্ছে তারা একটি মাত্র মসজিদেই একত্রিত হবে বিভিন্ন স্থানে নয়। কেননা সপ্তাহিক এই সমাবেশে আসা তাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হবে না বা বেশী কষ্টকর হবে না।

তাছাড়া এতে রয়েছে বিশাল উপকারিতা। সমস্ত লোক একজন মাত্র ইমামের খুতবা শুনবে ও তার নেতৃত্বে ইবাদত আদায় করবে। তিনি তাদেরকে নসীহত করবেন নির্দেশনা প্রদান করবেন। তখন লোকেরা একদিকে নসীহত ও অন্যদিকে নামায নিয়ে গৃহে প্রত্যাবর্তন করবে। তাই বিনা প্রয়োজনে জুমআর নামায একাধিক স্থানে অনুষ্ঠিত করা জায়েয নয়।

আর বাৎসরিক সমাবেশ হচ্ছে, দু’ঈদের নামায। সমস্ত শহরবাসীর জন্য বাৎসরিক দু’টি সমাবেশ। এজন্য একান্ত প্রয়োজন দেখা না দিলে একাধিক ঈদগাহ্‌ কায়েম করা জায়েয নয়।

 ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম  সালাত শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ),  (৩১৯)

https://www.hadithbd.com/books/link/?id=851

জুমআর স্থানঃ-

জুমুআহ যেমন শহরবাসীর জন্য ফরয, তেমনি ফরয গ্রামবাসীর জন্যও। এর জন্য খলীফা হওয়া, শহর হওয়া, জামে মসজিদ হওয়া বা ৪০ জন নামাযী হওয়া শর্ত নয়। বরং যেখানেই স্থানীয় স্থায়ী বসবাসকারী জামাআত পাওয়া যাবে, সেখানেই জুমুআহ ফরয।

(মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ২২/৭৫, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্‌, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৪২৪)

পরিচ্ছেদঃ ১১/১১. গ্রামে ও শহরে জুমু’আহর সালাতঃ--

ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মসজিদে জুমু’আহর সালাত অনুষ্ঠিত হবার পর প্রথম জুমু’আহর সালাত অনুষ্ঠিত হয় বাহরাইনে জুওয়াসা নামক স্থানে অবস্থিত আবদুল কায়স গোত্রের মসজিদে।

[ সহীহ বুখারীঃ ৮৯২,(৪৩৭১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৪১ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৮৪৮), ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ১৭২৫) সকলে ইবরাহীম ইবনু ত্বাহমান হতে।

হযরত ইবনে উমার (রাঃ) মক্কা মুকার্রামা ও মদ্বীনা নববিয়ার মধ্যবর্তী পথে অবস্থিত ছোট ছোট জনপদে জুমুআহ প্রতিষ্ঠিত হতে লক্ষ্য করতেন। তিনি তাতে কোন আপত্তি জানাতেন না।

(আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ)

হযরত উমার (রাঃ) বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাক, সেখানেই জুমুআহ পড়।’

(আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, তামামুল মিন্নাহ্‌, আলবানী ৩৩২পৃ:)

পক্ষান্তরে পাড়া-গ্রামে জুমুআহ হবে না বলে হযরত আলী কর্তৃক যে হাদীস বর্ণনা করা হয়, তা সহীহ নয়।

(মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ১৬/৩৫২-৩৫৪, ২২/৭৫)

কোন অমুসলিম দেশে পড়াশোনা বা চাকরী করতে গিয়ে সেখানে মসজিদ না থাকলে বা যথেষ্ট সংখ্যক মুসলিম না থাকলেও ৩ জনেই যে কোন রুমে জুমুআহ কায়েম হবে।

(মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ১৫/৮৫)

একই বড় গ্রাম বা শহরে বিচ্ছন্নতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নয়, বরং মসজিদ সংকীর্ণ হওয়ার কারণে, অথবা দূর হওয়ার কারণে, অথবা ফিতনা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় প্রয়োজনে একাধিক মসজিদে জুমুআহ কায়েম করা যায়।

(মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ১৮/১১১, ১৯/১৬৫-১৬৬)

কোন মসজিদে জুমুআহ পড়ার জন্য নির্মাণের সময় ঐ নিয়ত শর্ত নয়। অক্তিয়ারুপে নির্মাণের পর প্রয়োজনে সেখানে জুমুআহ পড়া যায়।

(মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ১৮/১১০)

https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=19&section=239

►►প্রশ্ন(২৭/১০৭) : জুম’আর দিন আখেরী যোহর পড়তেই হবে, না পড়লে জুম’আ আদায় হবে না। একথার কোন ভিত্তি আছে কি?

উত্তর:-- জুম;আর দিনে আখেরী যোহর নামে কোন ছালাত নেই। বরং জুমআর পরে সুন্নাত ছালাত রয়েছে। তা দুই, চার বা ছয় রাকআত পর্যন্ত পড়া যায়। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন জুমআর ছালাত আদায় করে, তখন সে যেন তারপরে চার রাকাআত (সুন্নাত) ছালাত আদায় করে’

(মুসলিম হা/৮৮১; ইবনু মাজাহ হা/১১৩২)।

রাসূল (ছাঃ) জুম’আর ছালাত আদায় করে তাসবীহ ও যিকির পাঠ করে তারপর বাড়িতে গিয়ে দুই রাকআত সুন্নাত ছালাত আদায় করতেন।

(মুসলিম হা/৮৮২)।

এজন্য ইবনু ওমর (রাঃ) সহ সালাফগণ জুম’আর দিনে মসজিদে সুন্নাত আদায় করলে চার রাক’আত পড়তেন এবং বাড়িতে গিয়ে পড়লে দুই রাক’আত পড়তেন।

(তিরমিযী হা/৫২৩-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।

‘আখেরী যোহর’ নামে জুম’আর ছালাতের পরে পুনরায় যোহরের চার রাক’আত একই ওয়াক্তে পড়ার যে রেওয়াজ চালু আছে, তা নিঃসন্দেহে বিদ’আত।

কারণ জুম’আ হল যোহরের স্থলাভিষিক্ত। এক্ষণে যে ব্যক্তি জুম’আ আদায়ের পর যোহর পড়ে, তার পক্ষে কুরআন, সুন্নাহ এবং কোন বিদ্বানের সমর্থন নেই (ফিক্বহুস সুন্নাহ)। গ্রামে জুম’আ হবে কি হবে না, এই সন্দেহে পড়ে কিছু লোক দু’টিই পড়ে থাকে।

লিঙ্ক- আত্ততাহরিকঃ https://at-tahreek.com/article_details/11816 

 ►►জুমআর জন্য নিম্নতম নামাযী সংখ্যাঃ

জুমআর নামায যেহেতু জামাআত সহকারে ফরয, সেহেতু যে কয় জন লোক নিয়ে জামাআত হবে, সে কয় জন লোক নিয়ে জুমআহও প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু তার জন্য নির্দিষ্ট লোক সংখ্যা হাদীস থেকে প্রমাণিত নয়।

প্রশ্নঃ-

জুমার নামাজের ক্ষেত্রে, ইমামের পিছনে জামাতে নামাজ পড়ার জন্য সর্বনিম্ন কতজন লোক বাধ্যতামূলক? আমি এই বিষয়ে বিভিন্ন মতামত শুনেছি, যেমন কিছু ভাই আমাকে বলেছেন যে কমপক্ষে ৪০ জন লোক বাধ্যতামূলক, আবার অন্যরা বলেছেন ২ জন। অন্য একটি সূত্রও বলেছে যে জুমার নামাজের জন্য মাত্র ২ জন লোক একটি জামাত গঠন করতে পারে। দয়া করে আপনি কি আমাকে এই প্রশ্নটি স্পষ্ট করতে পারবেন?

উত্তরের সারাংশ:

জুমুআর নামাযের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা আবশ্যক বলে কোন প্রমাণ নেই; নামায শুদ্ধ হওয়ার জন্য তিন বা ততোধিক লোক থাকাই যথেষ্ট।

উত্তর: আল্লাহর প্রশংসা।

#ফতোয়া প্রদানকারী স্থায়ী কমিটিকে নিম্নলিখিত প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল:

 জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য কতজন পুরুষের সংখ্যা প্রয়োজন? কিছু লোক বলেন যে চল্লিশজনের কম পুরুষের ক্ষেত্রে শুদ্ধ হবে না, এবং যদি এর চেয়ে কম একজন থাকে তবে তাদের যোহরের নামাজ আদায় করা উচিত।

তারা উত্তর দিল: মুসলিমদের উপর তাদের গ্রামের মুসলমানদের উপর শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়া ফরজ, এবং জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য সেখানে জামাত থাকা আবশ্যক। এমন কোন প্রমাণ নেই যা নির্দিষ্ট সংখ্যার প্রয়োজন বলে প্রমাণিত হয়; নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য তিন বা ততোধিক লোকের উপস্থিতি যথেষ্ট।

সঠিক আলেমদের মতে, জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ ব্যক্তির জন্য চল্লিশের কম লোক উপস্থিত থাকলে জোহরের নামাজ আদায় করা জায়েজ নয়।

আর আল্লাহ হলেন শক্তির উৎস। আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার এবং সাহাবীদের উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তাদের উপর শান্তি বর্ষণ করুন।আর আল্লাহই ভালো জানেন।

সূত্র: ফাতাওয়া আল-লাজনাহ আল-দাইমাহ, খণ্ড 8, পৃ. 178 (https://islamqa.info/en/answers/7718/minimum-number-for-jumuah-prayer )

 pdf link 

Shared_Rasikulindia

ইসলামিক ফ্রীতে PDF বই পেতে_ salafi-pdfbooks.blogspot.com  

 

 

Post a Comment

0 Comments