মূলঃ যুবাঈর আলী যাঈ
অনুবাদঃ আবু হিশাম মুহাম্মাদ ফুয়াদ
অনুবাদঃ আবু হিশাম মুহাম্মাদ ফুয়াদ
বারী তায়ালা ইরশাদ করেন,
“এবং আমরা প্রত্যেক উম্মতের মাঝে রাসূল প্রেরণ করেছি যেন তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগূত থেকে বেঁচে থাকো।” [1]
আমাদের প্রিয় সাইয়্যেদুনা মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ (সা) যখন সাইয়্যেদুনা মুয়ায বিন জাবাল (রা) কে ইয়ামান পাঠালেন তখন তিনি তাঁকে বললেন, “তুমি তাদের সর্বপ্রথম আল্লাহর একত্ববাদের (তাওহিদের) প্রতি দাওয়াত দিবে।” [2]
সাইয়্যেদুনা হারিস বিন হারিস আল আয়িযী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের সময়ে আমি যখন মক্কায় আসলাম তখন দেখলাম নবি (সা) এর নিকট অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে আছে। আমি আমার বাবা কে জিজ্ঞেস করলাম,এই লোকগুলো কেন একত্রিত হয়েছে? তিনি বললেন, এই লোকগুলো একজন সাবী’র[3] নিকট একত্রিত হয়েছে। আমি কাছে গিয়ে দেখলাম সেখানে রাসূল (সা) আল্লাহর তাওহিদ ও ইমানের দাওয়াত দিচ্ছিলেন। [4]
উপরোল্লিখিত হাদীছদ্বয় দ্বারা রবের একত্ববাদের গুরূত্ব বোঝা যায়। সাথে সাথে এগুলো একজন দাঈ’র জন্য একটি পথ নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে যে, দাওয়াতের ময়দানে কখনোই দাওয়াতে তাওহিদ কে দৃষ্টিগোচর করা ও এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। দ্বীনে ইসলামের মূল ভিত্তি হলো তাওহিদ সুতরাং প্রথম দাওয়াত এর প্রতিই অর্থাৎ তাওহিদের প্রতিই হওয়া উচিত। নামাজ ও জিহাদসহ সকল ইবাদত কেবলমাত্র তখনই কবুলযোগ্য হবে যখন তাওহিদে কোনো প্রকার ভেজাল ও শিরকে মিশ্রণ থাকবে না।
রাসূল (সা) এর আদর্শ ও সালফে সালেহীনদের জীবনী থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দাওয়াতে তাওহিদের স্থান সর্বপ্রথমে সুতরাং প্রত্যেক মানুষের উপর এটা ফরয যে, তাওহিদের রাস্তায় অটল থেকে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে সারা জীবন অতিবাহিত করা এবং নিজের সকল ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই করা। সাথে সাথে এই বিশ্বাসও মনের মাঝে মজবুতভাবে বসিয়ে নিতে হবে যে,
“আমার নামায, আমার কুরবানি, আমার জীবন এবং আমার মরণ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য-ই। তার কোন শরীক নেই, আমাকে এটার-ই হুকুম দেয়া হয়েছে এবং আমি সর্বপ্রথমে আল্লাহর আদেশ মান্যকারী বা মুসলিম।”
যে তাওহিদ ছেড়ে অন্য রাস্তা ধরেছে আল্লাহ তার সকল আমল বরবাদ করে দেবেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
“নিঃসন্দেহে যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করল তার জন্য জান্নাত হারাম এবং তার ঠিকানা জাহান্নাম।” [5]
ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের তাওহিদ ও সুন্নাতের ওপর বেঁচে থাকার রাখুন ও এর ওপর-ই আমাদের মৃত্যু দিন! আমিন!!
——————–¬——————–¬————-
[1] সূরা নাহল;আয়াতঃ ৩৬
[2] সহীহ বুখারি;কিতাবুত তাওহিদ;হা/৭৩৭২
[3] এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মে প্রবর্তনকারীকে সাবী বলা হয়-অনুবাদক
[4] আত তারিখুল কাবির লিল বুখারি ২/২৬২; তারিখু দামেশক লি ইবনে আসাকির ১২/২১৩,২১৪;আবু জার’আহ দামেশকী সহীহ বলেছেন; ইবনে আসিমের বর্ণনায়-আল আহাদু ওয়াল মাছানি ৫/৩৭৪,হা/২৯৭৬
[5] সূরা মায়িদাহ;আয়াতঃ ৭২
মূলঃ মাক্বালাতে তাহক্বিকি ইসলাহি অউর ইলমি, যুবাঈর আলি যাঈ, ২য় খন্ড পৃষ্ঠা ১৩, kitabosunnat.com
0 Comments