Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

ত্বাগুত কী এবং ত্বাগুতকে অস্বীকার করার অর্থ কী?


ত্বাগুত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো:- “সীমালঙ্ঘনকারী” “পথভ্রষ্টকারী” বা “বাত্বিল উপাস্য”।
শারী‘য়াতের পরিভাষায়- একমাত্র আল্লাহ b ব্যতীত অন্য যা কিছুর উপাসনা করা হয়, সে সবকে ত্বাগুত বলা হয়।
ত্বাগুতকে অস্বীকার করার অর্থ হলো- “আল্লাহ 0 ভিন্ন সকল উপাস্য বাত্বিল, আর আল্লাহ্‌ই (7) হলেন একমাত্র সত্য ও সত্যিকার উপাস্য” এই বিশ্বাস অন্তরে দৃঢ়ভাবে পোষণ করা, সাথে সাথে সকল বাত্বিল উপাস্যের (যেমন- মূর্তি, প্রতিমা, দেব-দেবী, জিন, মানুষ, গাছ, পাথর, আগুন, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদির) উপাসনা ও তাদের উপাসনাকারীদেরকে পুরোপুরি বর্জন করে সে সব থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ও নিরাপদ দূরে থাকা। কেননা ক্বোরআনে ‘আযীমে আল্লাহ 8ইরশাদ করেছেন:-
فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىَ لاَ انفِصَامَ لَهَا.
অর্থাৎ- যে ব্যক্তি ত্বাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ্‌তে বিশ্বাস স্থাপন করে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় রজ্জু যা ছিন্ন হওয়ার নয়।
অন্য আয়াতে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন:-
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ.
অর্থাৎ- আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যেই রাছূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করো এবং ত্বাগুত থেকে দূরে থাকো।
যে ব্যক্তি আল্লাহ 7 ব্যতীত যা কিছুর উপাসনা করা হয়, সে সকল উপাস্যকে বাত্বিল বলে অস্বীকার না করবে এবং আল্লাহ্‌কে (0) একমাত্র সত্য ও সত্যিকার উপাস্য বলে বিশ্বাস ও স্বীকার না করবে, এবং বাত্বিল উপাস্যসমূহের উপাসনাকারীদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন না করবে, সে মুছলমান বলে গণ্য হবে না।
মুছলমান হতে হলে অবশ্যই এই বিশ্বাস পোষণ করতে হবে যে, আল্লাহ্ই  হলেন ‘ইবাদাত বা উপাসনার একমাত্র যোগ্য ও হক্বদার। ত্বাগুত তথা জিন, দেব-দেবী, প্রতিমা এবং আল্লাহ ব্যতীত যে নিজেকে উপাস্য বলে দাবি করে কিংবা নিজের উপাসনা করার প্রতি মানুষকে আহবান জানায়, অথবা নিজে উপাস্য হতে পছন্দ করে বা উপাস্য হওয়াতে সন্তুষ্টিবোধ করে, সেসব কিছুই হলো ত্বাগুত তথা বাত্বিল ‍উপাস্য এবং এগুলোর উপাসনা হলো বাত্বিল উপাসনা।
তাই প্রত্যেক মানুষের জন্য এসব বাত্বিল উপাস্যকে অস্বীকার করা, তাদের উপাসনা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা এবং যারা এসব বাত্বিল উপাস্যের উপাসনা করে তাদের থেকেও নিরাপদ দূরে থাকা অত্যাবশ্যক।
শারী‘য়াতের পরিভাষা অনুযায়ী মূর্তি, দেব-দেবী, গাছ, পাথর, জিন, আগুন, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি যা কিছুর উপাসনা করা হয়, এগুলো যেমন ত্বাগুত তথা বাত্বিল উপাস্য, তেমনি মানুষের মধ্যে যারা নিজেকে উপাস্য বলে দাবি করে কিংবা যে ব্যক্তি লোকজনকে তার ‘ইবাদাত করার বা তাকে পূজো করার জন্য আহবান জানায়, অথবা নিজে উপাস্য হওয়া পছন্দ করে বা তাতে সন্তুষ্টিবোধ করে, তারাও হলো ত্বাগুত।
তবে নাবী-রাছূল m এবং ঈমানদার-নেক্‌কার অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ ও ফিরিশতা- যাদের উপাসনা অনেকে করে থাকে, তারা ত্বাগুতের পর্যায়ভুক্ত নন। কেননা তারা কাউকে তাদের উপাসনা করার প্রতি আহবান জানান নি, কিংবা তারা নিজেকে কখনো উপাস্য বলে দাবি করেননি, এমনিভাবে তারা নিজে উপাস্য হওয়াকে প্রাণভরে ঘৃণা করেছেন, এটাকে আদৌ পছন্দ করেননি এবং তাতে বিন্দুমাত্র সন্তুষ্টিবোধ করেননি। তারা সবসময় মানবজাতিকে এক আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাতের প্রতি এবং অন্য সকল উপাস্যকে পরিহার ও বর্জন করার প্রতি আহবান জানিয়েছেন। সুতরাং তাদের আদেশ, নির্দেশ ও আহবানকে উপেক্ষা বা লঙ্ঘন করে তাদের নিষেধ ও পূর্ণ অসন্তুষ্টি সত্ত্বেও কেউ যদি তাদের ‘ইবাদাত করে থাকে, তাহলে তজ্জন্য তারা আল্লাহ্‌র নিকট দায়ী হবেন না এবং তারা ত্বাগুতের পর্যায়ভুক্ত বলে কখনো গণ্য হবেন না।

১. سورة البقرة- ٢٥٦ 
২. ছূরা আল বাক্বারাহ- ২৫৬ 
৩. سورة النحل- ٣٦ 
৪. ছূরা আন্‌ নাহল- ৩৬ 

Post a Comment

0 Comments