অনেকেই “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” না লিখে “৭৮৬” লিখে থাকে।

“৭৮৬” দ্বারা কি শুধু “বিসমিল্লাহ….” বুঝায়, নাকি অন্য কিছু বুঝায়। প্রশ্ন: অনেকেই “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” না লিখে “৭৮৬” লিখে থাকে। এটা কি ঠিক?

প্রশ্ন: অনেকেই “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” না লিখে “৭৮৬” লিখে থাকে। এটা কি ঠিক?

কুরআনের প্রতি হরফের জন্য একটি নির্দিষ্ট মান নির্ধারণ করা হয়েছে যাকে বলা হয় ‘আবজাদ’ মান। মাদরাসা পাঠ্য পুস্তক ‘বাকুরাতুল আদব’ এর পঞ্চম পৃষ্ঠায় এবং المعجم الوسيط নামক অভিধানে উল্লেখিত নিম্ন নমুনায় আরবি অক্ষরের গাণিতিক বা ‘আবজাদ’ মানের চিত্রটি লক্ষ্য করুন।
ابجد
ابجد هوز حطى كلمن
سعفص قرشث شخذ ضظغ
ا ب ج د ه و ز ح ط ى ك ل م ن
١ ٢ ٣ ٤ ٥ ٦ ٧ ٨ ٩ ١٠ ٢٠ ٣٠ ٤٠ ٥٠
س ع ف ص ق ر ش ت ث خ
٦٠ ٧٠ ٨٠ ٩٠ ١٠٠ ٢٠٠ ٣٠٠ ٤٠٠ ٥٠٠ ٦٠٠
ذ ض ظ غ
٧٠٠ ٨٠٠ ٩٠٠ ١٠٠٠

আরবি বাক্য লেখার পদ্ধতিতে একটি অক্ষরের সাথে অন্য একটি অক্ষর মিলিয়ে লেখা হলে ঐ শব্দটি পাঠ করার সময় শব্দটির বাম পাশে হরকতবিহীন একটি আলিফ যোগ করে এক আলিফ টেনে পাঠ করতে হয়। আর অক্ষরটি বামের অক্ষরের সাথে মিলিয়ে লিখলে হরকতবিহীন আলিফকে ছোট আকারে ‘যবর’ যোগ করে অক্ষরের উপর দিলেও এক আলিফ টেনে পাঠ করতে হয়। উক্ত ছোট আলিফকে খাড়া যবর বলে। আলিফের গাণিতিক মান হচ্ছে ১। অক্ষরের উপর দেয়া ছোট আলিফের অর্থাৎ খাড়া যবরের মানও হচ্ছে ১।
আরবী অক্ষরের (হরফের) গণিতের মান দিয়ে কোড নম্বর লিখার পদ্ধতিটির আবিষ্কারক হচ্ছেন গ্রিসের প্রখ্যাত গণিত-বিশারদ (জ্যামিতিক) পিথাগোরাস। তিনি ছিলেন ইয়াহুদী। মুসলিমের প্রকাশ্য শত্রু। আরবি অক্ষরের মানের হিসাব কষে বিধর্মী কর্তৃক “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর যে সংখ্যা বা মান নির্ধারণ করা হয়েছে তা হলো ৭৮৬।
অতএব, জানা গেল রসূল (সঃ) তার জীবদ্দশায় “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর সংখ্যা নির্ণয়ক কোন মান লিখে যাননি। এ ছাড়া তিনি তার সাহাবীগণ (রাঃ) এদের কাউকে লিখতে অনুমোদনও দেননি। সুতরাং “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর পরিবর্তে ৭৮৬ সংখ্যাটির ব্যবহার করা নি:সন্দেহে একটি বিদ‘আত।
এবার আসুন, লক্ষ্য করি যে, কেন ৭৮৬ লেখা হচ্ছে। পিথাগোরাসের প্রবর্তিত অক্ষরের মান তথা ‘আবজাদ’ মান বসিয়ে দেখা যাক بِّسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর মান কত হয়?

ب س م ا ل ل ه ا ل ر ح
৮ ২০০ ৩০ ১ ৫ ৩০ ৩০ ১ ৪০ ৬০ ২
م ن ا ل ر ح ى م
৪০ ১০ ৮ ২০০ ৩০ ১ ৫০ ৪০

অর্থাৎ
২+৬০+৪০+১+৩০+৩০+৫+১+৩০+২০০+৮+৪০+৫০+১+৩০+২০০+৮+১০+৪০=৭৮৬
পাঠকবৃন্দ! পিথাগোরাসের আবিষ্কৃত আরবি অক্ষরের গাণিতিক মান বসিয়ে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর কোড নম্বর পাওয়া গেল ৭৮৬ । আবার আপনারা আরবিতে “হরে কৃষ্ণা” هرىكرشنا লিখে উহার আবজাদ মান প্রয়োগ করুন। দেখতে পাবেন যে, এর কোড নম্বর বা আবজাদ মান দাড়াচ্ছে ৭৮৬।
ه ر ى ك ر ش ن ا
১ ৫০ ৩০০ ২০০ ২০ ১০ ২০০ ৫ =৭৮৬
অর্থাৎ ৫+২০০+১০+২০+২০০+৩০০+৫০+১=৭৮৬

এক্ষণে মনে প্রশ্ন জাগবে যে, তাহলে আমাদের দেশের অনেক মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্যাশমেমো, ভাউচার, চাঁদার রসিদ, পোস্টার, সাইনবোর্ড, অফিসিয়াল প্যাড ইত্যাদি নানাবিধ দলীল বা কাগজ-পত্র তথা তাবিজের শিরোনামে যে ৭৮৬ কোড নম্বর লিখা হয়ে আসছে এর অর্থ কি? মুসলিম ভাই বোনেরা আৎকে উঠবেন না!
এবার চিন্তা করে দেখুন, আল্লাহকে স্মরণ করতে গিয়ে না বুঝে বিধর্মীদের সবক নেয়া “আবজাদ” মান ব্যবহার করে আমরা নিজেদের অজান্তে কত বড় পাপের কাজ করে যাচ্ছি। অতএব সাবধান থাকুন এবং যাছাই-বাছাই না করে সংখ্যা তত্ত্বের হিসাব না জেনে দ্বীনি ব্যাপারে সংখ্যার ব্যবহার করবেন না, বরং আরবি শব্দ ব্যবহার করুন নতুবা নিজ ভাষায় লিখুন। মনে রাখবেন, রসূল (সঃ) বলেছেন-
সাওয়াবের উদ্দেশে দ্বীনের মধ্যে সংযোজিত প্রতিটি নতুন বিষয়ই বিদ‘আত, প্রতিটি বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা এবং প্রতিটি ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। (মুসলিম, মিশকাত-১৪১, নাসাঈ-১৫৭৭)
এই একই বিষয় সম্পর্কে ডা. জাকির নায়েকের উত্তরটিও নিচে দেখতে পারেন-


► প্রশ্ন: অনেকেই “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” না লিখে “৭৮৬” লিখে থাকে। এটা কি ঠিক?
•► উত্তর: ডা. জাকির নায়েক:

প্রশ্নটি হচ্ছে অনেক মুসলিম “বিসমিল্লাহ” পুরোপুরি না লিখে ৭৮৬ লিখে থাকে। এটা ঠিক কিনা। কিছু লোক আছে যারা আরবী বর্ণমালাগুলোকে নির্দিষ্ট মান দিয়ে যোগফল বের করে ঐ সংখ্যা দিয়ে আয়াত বা দোয়া বা কোনো নাম নির্দেশ করার চেষ্টা করে।
উদাহরণ দিয়ে বলা যায় “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”-এর ‘বা’, ‘আলিফ’, ‘সিন’ এ বর্ণমালাগুলোর মান বসিয়ে তার বের করেছেন ৭৮৬ আবার ৯২ দিয়ে বুঝান মুহাম্মাদ (সঃ) এভাবে আরো অনেক কিছু। কিন্তু এমন ব্যবহার কোরআন বা সহীহ হাদীসের কোথাও পাওয়া যায় না।
কিছু লোক তর্ক করে যে, আমরা যখন আরবি বর্ণমালা না পাই, তখন দাওয়াতপত্র ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদি ছাপাতে সংখ্যাগুলো লিখি। কিন্তু আমার কথা হলো, আপনি আরবী শব্দটি ইংরেজিতে বানান করে লিখেন। আর যদি মনে করেন সবাই বুঝবেনা তাহলে অনুবাদ লিখতে পারেন। যেমন “পরম করুনাময় দাতা ও দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে”. এত সহজ উপায় থাকতে এমন কঠিন ও বিদঘুটে পদ্ধতির প্রয়োজন কি?

আসলে বিভিন্ন সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন ধারনা আমাদের সমাজে দেখা যায়। যেমন পশ্চিমা সমাজে ১৩ সংখ্যাটিকে অপয়া ভাবা হয়। তারা বলে ‘আনলাকি থার্টিন’. আবার তারা ৬৬৬ দ্বারা বুঝায় শয়তান।
আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে চোর, বাটপার, ফটকাবাজদের ৪২০বলা হয়। এর অবশ্য কারণ আছে, ভারতীয় উপমহাদেশের সবদেশেই যদি কোন চোর বাটপার ধরা হয় তাহলে তাকে যে ধারায় শাস্তি দেয়া হয় সেটি পেনাল কোডের ৪২০ নং ধারায় বর্ণীত। তাই যদিও কারণ আছে তবুও অনেকে না বুঝেই বলে।

যারা বলেন যে বিভিন্ন বর্ণের অবস্থানগত মান যোগ করে ঐ শব্দের প্রতিনিধিত্বকারী সংখ্যা বের করেছেন, তাদের আমি সমর্থন করি না।
কারন, একই মান দিতে পারে এমন সংখ্যা দুটি শব্দের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। যার একটি ভালো অন্যটি খারাপ। সে ক্ষেত্রে আপনি কোনটি গ্রহন করেবেন?
উদাহরণ দেই, যদি বলি ইংরেজি বর্ণ B এর মান ১ এবং A এর মান৭ আর ধরুন D এর মান ৪/ এখন যোগ করলে আমরা পাই ১২/ অর্থাৎ BAD (খারাপ)এর সংখ্যাগত মান পেলাম ১২/ এখন G এর মান ২, O এর মান ৩, D এর মান ৪ ধরলে GOOD এর মান কত?দেখুন ২+৩+৩+৪=১২. অর্থাৎ (GOOD)ভালো এর সংখ্যাগত মান পেলাম ১২ ।
এখন আমি ১২ কে ভালো বা মন্দ কোনটা নির্দেশক বলব? যদি প্রথমটি মেনে বলি ১২ একটি মন্দ নির্দেশক তখন পরে আবার দেখলাম সংখ্যাটি যে মান ধরে নেয়া হয়েছে তা ভালকেও নির্দেশ করে।
তাই যারা ‘বিসমিল্লাহ্‌’ কে ৭৮৬ দ্বারা প্রকাশ করেন তাদেরকে বলি, এমন অনেক শব্দ পাবেন যেগুলোর বর্ণের মান যোগ করলে ৭৮৬ পাওয়া যাবে। সেশব্দ বা বাক্যগুলোর কিছু হতে পারে ভালো আবার কিছু হতে পারে খারাপ নির্দেশক।

তাই কোনো মুসলমানকেই সমর্থন করিনা যখন সে ৭৮৬ দ্বারা বিসমিল্লাহ প্রকাশ করে। আশাকরি সবাই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
Video Link
Reality of 786 instead of Bismillah উত্তর দিচ্ছেন -Dr. Zakir Naik Answers
Reality of 786 instead of Bismillah - - Dr. Zakir Naik Answers
Dr. Zakir Naik Answers
                                               শাইখ মোতিউর রহমান মাদানী
        ৭৮৬ মানে বিসমিল্লাহ নয় হরে কৃষ্ণা। দেখুন প্রমান সহ । হাসিবুর রহমান বুখারি।
786 অর্থ কি?

৭৮৬ কি? ৭৮৬ কেন বলা হয়? -উত্তর দিচ্ছেন: শায়খ আবু জায়েদ জামীর (হাফিজাহুল্লাহ)
 
৮৬=হরে কৃষ্ণ,এলাহি ভরসা 786 =HORE KRISHNA,elahi vorosha এলাহি ভরসা। 5 আলেম

আপনি চাইলে Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪] -:-নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন sahih-akida.simplesite.com
নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন sahih-akida.simplesite.com jannaterpoth.wildapricot.org
http://www.waytojannah.com/blog/2017/01/27/786-instead-of-bismillah/