মানবতার জন্য ইছলাম> সৃষ্টির সূচনালগ্নে মানুষের ধর্ম কি ছিল ?
What was the religion of man at the beginning of creation?সৃষ্টির সূচনা লগনে মানুষের ধর্ম কি ছিল ?
-:- স্রষ্টা ছাড়া কোন কিছু সৃষ্টি হতে পারে না। সুতরাং এই মহাবিশ্বের একজন সর্বজ্ঞানী পরম প্রজ্ঞাশীল সুমহান স্রষ্টা অবশ্যই রয়েছেন। তিনি অত্যন্ত সুষ্ঠু-সুন্দর, নিখুঁত ও সুশৃঙ্খলভাবে সমগ্র জগত পরিচালনা ও প্রতিপালন করছেন। যেহেতু একাজগুলো একক কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত সম্পাদন করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়, তাই বিবেকই বলে দেয় যে তিনি একক ও লা-শারীক। সুতরাং যিনি সমগ্র বিশ্বের একক সৃষ্টিকর্তা, অধিপতি, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণকারী, তাঁর নিকট পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ ব্যতীত প্রকৃত অর্থে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন করা এবং মানবতার মুক্তি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করা আদৌ সম্ভবপর নয়। তাই কিভাবে এই মহান সৃষ্টিকর্তার পরিচয় পাওয়া যায়, তাঁর নিকট যাওয়া যায়- এসব বিষয় সঠিকভাবে জেনে নেয়া একান্ত অবশ্যক।
<<
সৃষ্টির সূচনালগ্নে মানুষের ধর্ম কি ছিল?
সৃষ্টির শুরুতে মানুষের মধ্যে শির্কের (অংশীবাদের) প্রচলন বা শির্কী চিন্তা-ভাবনা ছিল না বরং তখন সর্বক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে তাওহীদের (আল্লাহ্র একত্ববাদের) প্রচলন এবং তাওহীদী চিন্তা-ভাবনা ও মতধারা বিরাজমান ছিল। যেমন আল্লাহ ইরশাদ করেছেন:-
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ.১
অর্থাৎ- আপনি নিজেকে দ্বীনের উপর একনিষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করুন। এটাই আল্লাহ্র সেই প্রকৃতি যার উপর তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্র সৃষ্টি-কর্মের কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল সঠিক ধর্ম, কিন্তু অধিকাংশ লোকেরা তা জানে না।২
ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ b আরো ইরশাদ করেছেন:-
وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنْفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ.৩
অর্থাৎ- আর স্মরণ করুন সেই সময়ের কথা, যখন আপনার প্রতিপালক বনী আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরকে বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের উপর এই মর্মে সাক্ষী বানালেন যে, “আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই? তারা সকলেই বললো হ্যাঁ, আপনি আমাদের পালনকর্তা”। আমি তোমাদের এ স্বীকারোক্তির উপর সাক্ষ্য হলাম যাতে ক্বিয়ামাতের দিন তোমরা একথা বলতে না পার যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।৪
হাদীছে ক্বোদছীতে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ b ইরশাদ করেছেন:-
إِنِّي خَلَقْتُ عِبَادِي حُنَفَاءَ كُلَّهُمْ، وَإِنَّهُمْ أَتَتْهُمُ الشَّيَاطِينُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِينِهِمْ، وَحَرَّمَتْ عَلَيْهِمْ مَا أَحْلَلْتُ لَهُمْ، وَأَمَرَتْهُمْ أَنْ يُشْرِكُوا بِي مَا لَمْ أُنْزِلْ بِهِ سُلْطَانًا.৫
অর্থাৎ- আমি আমার বান্দাহ্দের সকলকেই তাওহীদে একনিষ্ঠ বিশ্বাসী করেই সৃষ্টি করেছি। শাইত্বান এসে অতঃপর তাদেরকে তাদের ধর্ম থেকে বিচ্যুত করেছে। আমি তাদের জন্য যা হালাল করেছিলাম সে তাদের জন্য তা হারাম করেছে, আমি শিরকের ব্যাপারে কোন দালীল অবতীর্ণ করিনি অথচ শাইত্বান তাদেরকে আমার সাথে শির্ক করার নির্দেশ দিয়েছে।৬
এ সম্পর্কে রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-
كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ.৭
অর্থ- প্রতিটি নবজাতকই ফিত্বরাত তথা আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাসী হিসেবেই জন্মগ্রহণ করে থাকে, অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজকে পরিণত করে।৮
উপরোক্ত ঐশী প্রমাণাদী দ্বারা একথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, সৃষ্টির সূচনাতে প্রতিটি মানুষ আল্লাহ্র এককত্বে (তাওহীদে) একনিষ্ঠ বিশ্বাসী ছিল, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে শির্কী ধ্যান-ধারণার উদ্ভব ঘটে। কিন্তু মূলতঃ তাওহীদই (আল্লাহ্র একত্ববাদের বিশ্বাসই) হলো মানুষের স্বভাব ও সৃষ্টিজাত ধর্ম।
১. سورة الروم- ٣٠ ↩(1 আল-রুম -30 ↩)
২. ছূরা আর রুম- ৩০ ↩
৩. سورة الأعراف- ١٧٢ ↩(3আল আরাফ -17২ ↩)
৪. ছূরা আল আ‘রাফ- ১৭২ ↩
৫. رواه مسلم ↩(মুসলিম)
৬. সাহীহ্ মুছলিম ↩
৭. رواه البخاري ↩(আল বুখারী দ্বারা বর্ণিত)
৮. সাহীহ্ বুখারী ↩ What was the religion of man at the beginning of creation?
What was the religion of man at the beginning of creation?সৃষ্টির সূচনা লগনে মানুষের ধর্ম কি ছিল ?
-:- স্রষ্টা ছাড়া কোন কিছু সৃষ্টি হতে পারে না। সুতরাং এই মহাবিশ্বের একজন সর্বজ্ঞানী পরম প্রজ্ঞাশীল সুমহান স্রষ্টা অবশ্যই রয়েছেন। তিনি অত্যন্ত সুষ্ঠু-সুন্দর, নিখুঁত ও সুশৃঙ্খলভাবে সমগ্র জগত পরিচালনা ও প্রতিপালন করছেন। যেহেতু একাজগুলো একক কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত সম্পাদন করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়, তাই বিবেকই বলে দেয় যে তিনি একক ও লা-শারীক। সুতরাং যিনি সমগ্র বিশ্বের একক সৃষ্টিকর্তা, অধিপতি, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণকারী, তাঁর নিকট পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ ব্যতীত প্রকৃত অর্থে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন করা এবং মানবতার মুক্তি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করা আদৌ সম্ভবপর নয়। তাই কিভাবে এই মহান সৃষ্টিকর্তার পরিচয় পাওয়া যায়, তাঁর নিকট যাওয়া যায়- এসব বিষয় সঠিকভাবে জেনে নেয়া একান্ত অবশ্যক।
<<
সৃষ্টির সূচনালগ্নে মানুষের ধর্ম কি ছিল?
সৃষ্টির শুরুতে মানুষের মধ্যে শির্কের (অংশীবাদের) প্রচলন বা শির্কী চিন্তা-ভাবনা ছিল না বরং তখন সর্বক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে তাওহীদের (আল্লাহ্র একত্ববাদের) প্রচলন এবং তাওহীদী চিন্তা-ভাবনা ও মতধারা বিরাজমান ছিল। যেমন আল্লাহ ইরশাদ করেছেন:-
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ.১
অর্থাৎ- আপনি নিজেকে দ্বীনের উপর একনিষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করুন। এটাই আল্লাহ্র সেই প্রকৃতি যার উপর তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্র সৃষ্টি-কর্মের কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল সঠিক ধর্ম, কিন্তু অধিকাংশ লোকেরা তা জানে না।২
ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ b আরো ইরশাদ করেছেন:-
وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنْفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ.৩
অর্থাৎ- আর স্মরণ করুন সেই সময়ের কথা, যখন আপনার প্রতিপালক বনী আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরকে বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের উপর এই মর্মে সাক্ষী বানালেন যে, “আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই? তারা সকলেই বললো হ্যাঁ, আপনি আমাদের পালনকর্তা”। আমি তোমাদের এ স্বীকারোক্তির উপর সাক্ষ্য হলাম যাতে ক্বিয়ামাতের দিন তোমরা একথা বলতে না পার যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।৪
হাদীছে ক্বোদছীতে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ b ইরশাদ করেছেন:-
إِنِّي خَلَقْتُ عِبَادِي حُنَفَاءَ كُلَّهُمْ، وَإِنَّهُمْ أَتَتْهُمُ الشَّيَاطِينُ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِينِهِمْ، وَحَرَّمَتْ عَلَيْهِمْ مَا أَحْلَلْتُ لَهُمْ، وَأَمَرَتْهُمْ أَنْ يُشْرِكُوا بِي مَا لَمْ أُنْزِلْ بِهِ سُلْطَانًا.৫
অর্থাৎ- আমি আমার বান্দাহ্দের সকলকেই তাওহীদে একনিষ্ঠ বিশ্বাসী করেই সৃষ্টি করেছি। শাইত্বান এসে অতঃপর তাদেরকে তাদের ধর্ম থেকে বিচ্যুত করেছে। আমি তাদের জন্য যা হালাল করেছিলাম সে তাদের জন্য তা হারাম করেছে, আমি শিরকের ব্যাপারে কোন দালীল অবতীর্ণ করিনি অথচ শাইত্বান তাদেরকে আমার সাথে শির্ক করার নির্দেশ দিয়েছে।৬
এ সম্পর্কে রাছূলুল্লাহ 1 বলেছেন:-
كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ.৭
অর্থ- প্রতিটি নবজাতকই ফিত্বরাত তথা আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাসী হিসেবেই জন্মগ্রহণ করে থাকে, অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজকে পরিণত করে।৮
উপরোক্ত ঐশী প্রমাণাদী দ্বারা একথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, সৃষ্টির সূচনাতে প্রতিটি মানুষ আল্লাহ্র এককত্বে (তাওহীদে) একনিষ্ঠ বিশ্বাসী ছিল, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে শির্কী ধ্যান-ধারণার উদ্ভব ঘটে। কিন্তু মূলতঃ তাওহীদই (আল্লাহ্র একত্ববাদের বিশ্বাসই) হলো মানুষের স্বভাব ও সৃষ্টিজাত ধর্ম।
১. سورة الروم- ٣٠ ↩(1 আল-রুম -30 ↩)
২. ছূরা আর রুম- ৩০ ↩
৩. سورة الأعراف- ١٧٢ ↩(3আল আরাফ -17২ ↩)
৪. ছূরা আল আ‘রাফ- ১৭২ ↩
৫. رواه مسلم ↩(মুসলিম)
৬. সাহীহ্ মুছলিম ↩
৭. رواه البخاري ↩(আল বুখারী দ্বারা বর্ণিত)
৮. সাহীহ্ বুখারী ↩ What was the religion of man at the beginning of creation?
আপনি চাইলে Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]