@@ রাজনিতি, অতীত,বর্তমান,ভবিষ্যৎ >>>>>>>>>>>

@@ রাজনিতি, অতীত,বর্তমান,ভবিষ্যৎ >>>>>>>>>>> 


❒ এক,
বর্তমানে দেশীয় নির্বাচন নিয়ে এক শ্রেণীর অতি-উৎসাহি লোকদের আগ্রহের শেষ নেই!
বিশেষ করে দ্বীনদারদের কলমের গতি যেন অপ্রতিরোধ্য!

যাইহোক, দেশের একজন সু-নাগরিক হিসেবে রাজনীতি সচেতন থাকাটা ভাল, কিন্তু তা যেন ব্যক্তিগত চাওয়া - পাওয়া,পছন্দ - অপছন্দ,লাভ - ক্ষতি কিংবা প্রতিশোধ নির্ভর না হয়! কেননা এসকল বিষয়াদি যখন আপনি "দ্বীনের" চাদরে ঢেকে দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্বারের নিশানা বানাবেন কিংবা মনের ঝাল মেঠানোর চেষ্টারত থাকবেন, ঠিক তখনই আপনি ইতিদ্বাল রক্ষায় ব্যর্থ হবেন!

❒ দুই,
ইদানীং রাজনীতি সচেতন কিছু সালাফী (!) ভাইদেরকে দেখা যাচ্ছে নির্বাচন কেন্দ্রিক ভিবিন্ন ফাতওয়াবাজী করতে!
যেমন ধরুণঃ-

⦁ উমুক দলকে ভোট দেওয়া ফরজ (!)
⦁ উমুক দল ইসলামী দল (!)
⦁ কোন মুসলিম উমুক দলকে ভোট দিতে পারেনা (!) ইত্যাদি।

অল্প বয়স্ক এসকল তরুণরা নিজে নিজে ইজতেহাদ করে, যে হারে ফাতওয়া বিলি করেছে তা আমাদের জন্য অশনিসংকেত বৈ কিছুই নয়!

প্রথমত,
কোন কিছু ফরজ হওয়ার জন্য কোরআন,হাদিসের সুস্পষ্ট "নছ" লাগে!

দ্বিতীয়ত,
আপনি যখন বলবেন আপনার পছন্দের উমুক দলকে ভোট দেওয়া ফরজ (!) তখন স্বাভাবিকভাবেই কেউ যদি উভয়কেই "না ভোট" দেয়, সেও আপনার ফাতওয়া অনুযায়ী ইন্ডাইরেক্টলি ফরজ তরককারীদের কাতারে পড়ে যাচ্ছে!
অতএব, সাধু সাবধান!

❒ তিন,
সাব-কন্টিনেন্টের রাজনৈতিক পরিবেশ এতটাই জটিল যে,এখানে আরব উলামাদের ফাতওয়াগুলোকে যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহারের সুযোগ নেই! আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, এদেশীয় সংবিধান আলজেরিয়া কিংবা পাকিস্তানের সংবিধানের মত নয় যে, আপনি সত্যবাদী উলামাদের ফাতওয়াগুলোকে আপনার মর্জিমত প্রয়োগ করবেন!

❒ চার,
যুগে যুগে গনতন্ত্রপন্থী মডারেট ইসলামী দলগুলো--
সালাফীদের নানানভাবে "হাইজ্যাক " করেছে, যা আজও চলমান! এক্ষেত্রে মিসরের সালাফীদের কথাই স্মরণযোগ্য। ২০১১ সালের কথিত বিপ্লব পরবর্তী মিশরের সালাফীরা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে, যার নাম দেওয়া হয় " আন-নূর পার্টি"! অতপর তারা ভিবিন্ন শর্তের ভিত্তিতে ড.মুহাম্মাদ মুরসির সাথে জোট গঠন করে এবং নির্বাচনে নেমে পড়েন। যদিও সৌদি আরবের উলামাগন সেসময় তাদেরকে বারং করেছিল জোট না করতে! কিন্তু কে শুনে কার কথা!

মিশরীয় জনগণের মধ্যে সালাফীদের গ্রহণযোগ্যতা আগে থেকেই ছিল। ফলে তারা এককভাবে ১১১টি ও জোটগতভাবে ১২৩টি আসন লাভ করে। সেই সাথে মুরসির দলের ২৩৮টি মিলে তারা সরকারের বড় পার্টনার হয়ে যায়। তাদের এই তাক লাগানো সাফল্যে চমকে যায় সবাই।

কিন্তু ক্ষমতার বয়স ১ বছর অতিবাহিত হলেও মুরসি তার যাবতীয় ওয়াদাসমুহ বরখেলাফ করেন এবং ভিবিন্ন ছলচাতুরির মাধ্যমে তা এড়িয়ে যান!
মাত্র এক বছরের মাথায়ই সংবিধান সংশোধন করে স্পেশাল ডিক্রি জারির মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী এবং কুক্ষিগত করেন যা বিরোধীদের রাস্তায় নামার রসদ জুগিয়েছিল! সেইসাথে সুন্নি আরব শাসকদের বুড়ো আংগুল দেখিয়ে রাফেজী শিয়াদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করেন! এমনকি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা "কায়রো টু তেহরান" ফ্লাইট তিনিই প্রথমবারের মত উড়িয়েছেন! যারফলে সালাফীদের আর বুঝতে বাকি রইল না যে,তারা ব্ল্যাকমেইলের শিকার! দ্বীন কায়েম,আল্লাহর বিধান জারির বুলি গুলা শুধুমাত্র লোক দেখানো "তাকিআ নীতি" বৈ কিছুই নয়!
তাই, মুরসির পতনকালীন সময়ে নিরবতার পথ বেছে নিয়েছিল তারা!
এভাবেই "হাইজাকারের" খপ্পরে পড়ে সালাফীরা একূল-ওকূল দু’কূল হারিয়ে এখন নিঃস্ব- সর্বশান্ত!

❒ পাঁচ,
আপনি যদি দেশীয় কোন রাজনৈতিক দলকে দেশ ও জাতীর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অধিক যোগ্য মনে করেন তাহলে শর্তসাপেক্ষে (উলামাগন সুনিদিষ্ট কিছু শর্তের ভিত্তিতে ভোট দেওয়াকে জায়েজ বলেছেন) নিরবে ভোট দিতে পারেন কিন্তু তাই বলে আপনার এই অধিকার নেই যে আমার উপর নতুন করে কোন "ফরজ" চাপিয়ে দিবেন!
আপনাকে বুঝতে হবে এদেশে সালাফীদের কোন রাজনৈতিক দল নেই যেমনটা পাকিস্তান/মিশরসহ ভিবিন্ন দেশে রয়েছে! তাই এখানে গনতন্ত্রপন্থী কোন একটি দলের পক্ষে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো কিংবা নিজেকে তাদের দলের একজনে পরিনত করার অর্থই হল নিজের স্বকীয়তাকে জলাঞ্জলি দেওয়া!

তাছাড়া সেকুলারিজমের দোহাই দিয়ে যে দলের পক্ষে তুমুল প্রচারণা চালানো হচ্ছে (অনলাইনে অথবা অফলাইনে) সেদলেই অলরেডি ১৯ জন সেকুলার প্রার্থী রয়েছেন! ২০ জনের অধিক বিধর্মী প্রার্থী, এমনকি একজন নামকরা বেশ্যাও এবার নমিনেশন পেয়েছেন!
আরও আশ্চর্যজনক হল, দু'চারজন ছাড়া তাদের জোটের নেতৃত্বদানকারী মেইন লিডারগন প্রায় সকলেই বামপন্থী / সেকুলার রাজনীতিবিদ!

এখন আপনি ই বলুন, মুল দলের কথা বিবেচনায় এনে এসকল স্থানীয় প্রতিনিধিকে ভোট দেওয়া কি আমার উপর ওয়াজিব? যদি "না ভোট" দেই তাতে কি আমি কবিরা গুনাহগার?

অতএব, "মন্দের ভাল" বেছে নিতে গিয়ে গু'য়ের উভয় পিঠের গন্ধের কথা ভুলে যাইয়েন না!
❒ বিনীত,
আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষী,
✍ আখতার বিন আমীর।

Overview