Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

মুহাম্মাদুর্‌ রাছূলুল্লাহ” এই শাহাদাহ তথা সাক্ষ্যের অর্থ ও তাৎপর্য কি?

 মুহাম্মাদুর্‌ রাছূলুল্লাহ” এই শাহাদাহ তথা সাক্ষ্যের অর্থ ও তাৎপর্য কি?
“মুহাম্মাদ 1 আল্লাহ্‌র রাছূল” এই সাক্ষ্যের প্রকৃত অর্থ হলো:- মুহাম্মাদ 1 মানব ও জিন জাতির প্রতি আল্লাহ্‌র প্রেরিত সর্বশেষ রাছূল, যার কাছে আল্লাহ্‌র পক্ষ হতে একের পর এক বার্তা বা সংবাদ আসে। তিনি ইলাহ বা উপাস্য নন এবং উপাস্য হওয়ার কোন গুণাবলী বা যোগ্যতা তাঁর মধ্যে নেই। তিনি শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র এক বান্দাহ এবং তাঁর প্রেরিত নাবী ও রাছূল।
“محمد الرسول الله” এই শাহাদাহ বা সাক্ষ্য প্রদানের দাবি ও চাহিদা হলো:-
(ক) রাছূল 1 যা কিছুর আদেশ করেছেন তা যথাযথভাবে মেনে চলা।
(খ) তাঁর দেয়া যাবতীয় বার্তা-সংবাদকে নির্দ্ধিধায়-নিঃসন্দেহে সত্য বলে বিশ্বাস করা।
(গ) তিনি যা কিছু করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা।
(ঘ) আল্লাহ্‌র নির্দেশিত এবং রাছূলের (1) অনুসৃত শারী‘য়াত (নিয়ম-নীতি ও বিধান) অনুযায়ী আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করা। শারী‘য়াতের মধ্যে নতুন কিছু যোগ বা সংযোজন না করা এবং নিজের মনগড়া পন্থায় আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত না করা।
ক্বোরআনে কারীমের নিম্নোক্ত আয়াতটি তা-ই প্রমাণ করে। আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন:-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا.
অর্থাৎ- রাছূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা থেকে নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাকো।
“লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ” এবং “মুহাম্মাদুর্‌ রাছূলুল্লাহ” এ দু’টি সাক্ষ্য একইসাথে প্রদানের অত্যাবশ্যকতা থেকে একথাই বুঝা যায় যে, এ বাক্য ও সাক্ষ্য দু‘টি একটি অপরটির সাথে অত্যন্ত নিবিড় ও অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। যেহেতু এখানে প্রথম বাক্যটিতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মা‘বূদ নেই, তাই দ্বিতীয় বাক্যটি থেকে স্পষ্টতঃ বুঝা যায় যে, মুহাম্মাদ 1 কোন মা‘বূদ বা উপাস্য নন, তিনি আল্লাহ্‌র বান্দাহ ও রাছূল।
জিন ও মানবজাতির নিকট আল্লাহ্‌র রিছালাত সুস্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়াই হচ্ছে মুহাম্মাদ 1 এর দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কারো উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা তাকে দেয়া হয়নি, এমনকি নিজেরও কোন কল্যাণ সাধন কিংবা অনিষ্ট থেকে নিজেকে রক্ষার কোন ক্ষমতা তাঁর (মুহাম্মাদ 1 এর) নেই।
তাই কেউ তাঁকে (রাছূলকে) উপাস্যের পর্যায়ে নিয়ে গেলে; তাকে মা‘বূদ মনে করলে তা হবে আল্লাহ্‌কে উপাস্য বা মা‘বূদ বলে অস্বীকার করা এবং মুহাম্মাদকে (1) আল্লাহ্‌র বান্দাহ ও রাছূল বলে অস্বীকার করা। মোটকথা, এটা হবে আল্লাহ্‌র উলূহিয়্যাত এবং মুহাম্মাদ 1 এর রিছালাতের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা।
শাহাদাতাইনের প্রথম বাক্যটি (লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ) দ্বারা যেভাবে ‘ইবাদাতে আল্লাহ্‌র একত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং ‘ইবাদাতের একক হক্ব ও অধিকার আল্লাহ্‌র জন্য নির্দিষ্ট ও সংরক্ষণ করা হয়েছে, তেমনি দ্বিতীয় বাক্যটি (মুহাম্মাদুর্‌ রাছূলুল্লাহ) দ্বারা নিঃশর্তভাবে অনুসরণীয় হওয়ার একক মর্যাদা রাছূলের (1) জন্যে নির্দিষ্ট ও সংরক্ষণ করা হয়েছে। অর্থাৎ বিনা বাক্য ব্যয়ে বিনা শর্তে রাছূলই (1) হলেন একমাত্র অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।
এ কথার প্রমাণ হলো- ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 8 ইরশাদ করেছেন:-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ.
অর্থাৎ- নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহ্‌র রাছূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।
অন্য আয়াতে আল্লাহ b ইরশাদ করেছেন:-
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ.
অর্থাৎ- আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহ্‌কে ভালোবাস তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।
তাই শুধু মুখে “মুহাম্মাদুর্‌ রাছূলুল্লাহ” (মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাছূল) বললে চলবে না, বরং এরই সাথে সাথে রাছূলের (1) যাবতীয় আদেশ-নিষেধ যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে, তাঁর সকল কথাকে নির্দ্ধিধায় সত্য বলে স্বীকার করতে হবে, একমাত্র তাঁর (রাছূলের) নির্দেশিত ত্বরীক্বা অনুযায়ী আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করতে হবে এবং অন্তরে দৃঢ়ভাবে এ বিশ্বাস পোষণ করতে হবে যে, মুহাম্মাদ 1 কোন উপাস্য বা মা‘বূদ নন, বরং তিনি শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র এক বান্দাহ এবং তাঁরই (আল্লাহ্‌র) প্রেরিত সর্বশেষ রাছূল।

১. سورة الحشر- ٧ 
২. ছূরা আল হাশ্‌র -৭ 
৩. سورة الأحزاب- ٢١ 
৪. ছূরা আল আহ্‌যাব- ২১ 
৫. سورة آل عمران- ٣١ 
৬. ছূরা আ-লে ‘ইমরান- ৩১ 
নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন