সুন্নত পদ্ধতি কি দুই হাতে মুসাফাহা করা ?
<<<প্রশ্ন :--সুন্নত পদ্ধতি কি শুধু ডান হাতে মুসাফাহা করা? যার সাথে সালাম করা হল তার হাতটি সালামদাতার হাতদ্বয়ের মাঝখানে রাখা (দুই হাতের মাঝখানে এক হাত) কেমন?
____উত্তর:--
আলহামদু লিল্লাহ।
এক:
দেখা হলে মুসাফাহা বা করমর্দন করা একটি ইসলামী রীতি ও উত্তম চরিত্র। এটি মুসাফাহাকারী ব্যক্তিদ্বয়ের মাঝে ভালবাসা ও হৃদ্যতার বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে এটি মুসলমানদের পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহ দূর করে দেয়। মুসাফাহা-এর ফজিলতের ব্যাপারে একটি মহান হাদিস উদ্ধৃত হয়েছে। সে হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “কোন মুসলিমদ্বয় যদি সাক্ষাত করে পরস্পর মুসাফাহা করে তাহলে তারা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই তাদের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়।”[সুনানে আবু দাউদ (৫২১২); আলবানী ‘সহিহ সুনানে আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
____উত্তর:--
আলহামদু লিল্লাহ।
এক:
দেখা হলে মুসাফাহা বা করমর্দন করা একটি ইসলামী রীতি ও উত্তম চরিত্র। এটি মুসাফাহাকারী ব্যক্তিদ্বয়ের মাঝে ভালবাসা ও হৃদ্যতার বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে এটি মুসলমানদের পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহ দূর করে দেয়। মুসাফাহা-এর ফজিলতের ব্যাপারে একটি মহান হাদিস উদ্ধৃত হয়েছে। সে হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “কোন মুসলিমদ্বয় যদি সাক্ষাত করে পরস্পর মুসাফাহা করে তাহলে তারা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই তাদের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়।”[সুনানে আবু দাউদ (৫২১২); আলবানী ‘সহিহ সুনানে আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
সাহাবীদের সমাজে মুসাফাহা একটি মশহুর অভ্যাস ছিল। কাতাদা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আনাস বিন মালিক (রাঃ)কে বললেন: “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের মাঝে কি মুসাফাহার প্রথা ছিল? তিনি বলেন: হ্যাঁ।”[সহিহ বুখারী-(তাওহীদ) (৬২৬৩)]
ইবনে বাত্তাল বলেন: “সর্বস্তরের আলেমদের মতে, মুসাফাহা একটি নেক কাজ। নববী বলেন: সাক্ষাতের সময় মুসাফাহা করা সুন্নত মর্মে ইজমা বা আলেমদের ঐক্যমত্য সংঘটিত হয়েছে।”[যেমনটি রয়েছে ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে (১১/৫৫)]
দুই: ঃ-------
মুসাফাহা (مصافحة) সংঘটিত হয় ব্যক্তি তার হাতের তালু (صفح) অপর ব্যক্তির হাতের তালু (صفح) তে রাখার মাধ্যমে— এটাই আরবী ভাষার দাবী; ঠিক যেমনটি উদ্ধৃত হয়েছে ‘মু’জামু মাকায়িসিল লুগাহ’ (৩/২২৯) ও অন্যান্য অভিধানে। মুসাফাহা সম্পর্কে ইতিপূর্বে উল্লেখিত হাদিসগুলোর আপাতঃ মর্ম এভাবেই বুঝতে হবে। এ কারণে অধিকাংশ আলেমের মতে, এক হাতে মুসাফাহা করাই সুন্নত হিসেবে যথেষ্ট এবং এটা ছিল মুসলমানদের মাঝে ও সাহাবায়ে কেরামের মাঝে সাধারণ অভ্যাস। আলবানী তাঁর ‘আস-সিলসিলা আস-সাহিহা’ গ্রন্থে (১/২২) এক হাদিসের শিক্ষার মধ্যে উল্লেখ করেন: “মুসাফাহার ক্ষেত্রে এক হাত দিয়ে ধরা। মুসাফাহার আলোচনা অনেক হাদিসে স্থান পেয়েছে। উল্লেখিত হাদিসটি যা প্রমাণ করছে এ শব্দটির ভাষাগত বুৎপত্তিও সেটাই নির্দেশ করছে। আমি বলব: যে হাদিসগুলোর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে সেগুলোর কোন কোনটি পূর্বোক্ত অর্থের প্রতি নির্দেশ করছে; যেমন- হুযাইফা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত মারফু হাদিস: ‘নিশ্চয় এক মুমিন যখন অপর মুমিনের সাথে সাক্ষাত করে তাকে সালাম দেয় এবং তার হাত (একবচনের শব্দ) ধরে তার সাথে মুসাফাহা করে তখন তাদের দুইজনের গুনাহসমূহ এমনভাবে ঝরে যায় যেভাবে গাছের পাতা ঝরে যায়।”[আল-মুনযিরি (৩/২৭০) বলেন: তাবারানী হাদিসটি ‘আল-আওসাত’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এবং হাদিসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যে কারো ব্যাপারে জারহ (নেতিবাচক মন্তব্য) উদ্ধৃত হয়েছে মর্মে আমি জানি না।” আমি বলব: হাদিসটির কিছু শাহেদ (সমার্থক ভিন্ন হাদিস) রয়েছে। যেগুলোর সহযোগিতায় হাদিসটি ‘সহিহ’ পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। এ সবগুলো হাদিস নির্দেশ করছে যে, মুসাফাহার ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে—এক হাতেই ধরা।”[সমাপ্ত]
পক্ষান্তরে, কিছু হানাফি আলেম ও মালেকি আলেম মত দিয়েছেন যে, দুই হাতে মুসাফাহা করা মুস্তাহাব; তা এভাবে যে, বাম কব্জির তালু অপর ব্যক্তির কব্জির পিঠের ওপর রাখা—এ পদ্ধতিতে মুসাফাহা করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের অভ্যাসগত সুন্নত বা আদর্শ হিসেবে সাব্যস্ত হয়নি। বরং এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ যা বর্ণিত হয়েছে সেটা হল এক হাদিসে এসেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জনৈক সাহাবীকে শিক্ষা দেওয়া ও দিক-নির্দেশনা দেয়ার সময় গুরুত্বারোপ করার জন্য তার হাতকে তিনি দুই হাত দিয়ে ধরেছিলেন; যেমনটি সহিহ বুখারী (৬২৬৫) ও সহিহ মুসলিম (৪০২)-এ উদ্ধৃত হয়েছে যে, ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন: “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার হাত তার হাতদ্বয়ের মধ্যে রেখে আমাকে তাশাহুদ শিখিয়েছেন।”
কিন্তু, এটি সাধারণ অভ্যাস ছিল না; যেমনটি ইতিপূর্বেই সাব্যস্ত করা হয়েছে যে, মূল পদ্ধতি ছিল— একহাতে মুসাফাহা করা। কোন কোন রেওয়ায়েতে সেটা দ্ব্যর্থহীনভাবে উদ্ধৃত হয়েছে। বরং এ হাদিসেও সে দলিল রয়েছে। কারণ যদি এভাবে দুই হাত দিয়ে মুসাফাহা করাটাই অভ্যাস হত তাহলে ইবনে মাসউদ (রাঃ) এ অবস্থাটির কথা উল্লেখ করতেন না। ইবনে মাসউদ (রাঃ) এ অবস্থাটিকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সাহাবীদের সাথে মুসাফাহা করার ক্ষেত্রে এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভ্যাস ছিল না।
তদুপরি, দুইহাতে মুসাফাহা করাকে বিদাত বলা যাবে না। বরং এটিও জায়েয। তবে, শুধু এক হাতে মুসাফাহা করাটাই সুন্নত পদ্ধতি ও উত্তম। হাম্মাদ বিন যায়েদ থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি আব্দুল্লাহ্ বিন মুবারকের সাথে দুই হাতে মুসাফাহা করেছেন; যেমনটি সহিহ বুখারীতে ‘তালীক’ (পৃষ্ঠা-১২০৬) হিসেবে উদ্ধৃত হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (২৪/১২৫) এসেছে: ---
“দুই হাতে মুসাফাহা করার ব্যাপারে আমরা কোন কিছু জানি না। তবে এভাবে করাটা অনুচিত। উত্তম হল— এক হাতে মুসাফাহা করা।”[সমাপ্ত]
দেখুন: ‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা’ গ্রন্থের ‘মুসাফাহা’ ভুক্তি ও ‘তুহফাতুল আহওয়াযি’ (৭/৪৩১-৪৩৩)।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (২৪/১২৫) এসেছে: ---
“দুই হাতে মুসাফাহা করার ব্যাপারে আমরা কোন কিছু জানি না। তবে এভাবে করাটা অনুচিত। উত্তম হল— এক হাতে মুসাফাহা করা।”[সমাপ্ত]
দেখুন: ‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা’ গ্রন্থের ‘মুসাফাহা’ ভুক্তি ও ‘তুহফাতুল আহওয়াযি’ (৭/৪৩১-৪৩৩)।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
পরিচ্ছদঃ ৭৯/২৮. দু’ হাত ধরে মুসাফাহা করা। ( এই হাদিসটি তাসাহ-হুদ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
وَصَافَحَ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ابْنَ الْمُبَارَكِ بِيَدَيْهِ. (যেমন অন্যান্য হাদিস থেকে বঝা যায় যে এক হাতে মুসাফা করা সুন্নাত)
হাম্মাদ ইবনু যায়দ (রহ.) ইবনু মুবারকের সঙ্গে দু’হস্তে মুসাফাহ করেছেন।
৬২৬৫. ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত তাঁর উভয় হস্তের মধ্যে রেখে আমাকে এমনভাবে তাশাহহুদ শিখিয়েছেন, যেভাবে তিনি আমাকে কুরআনের সূরা শিখাতেনঃ
التَّحِيَّاتُ للهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه
এ সময় তিনি আমাদের মাঝেই অবস্থান করছিলেন। তারপর যখন তাঁর ওফাত হয়ে গেল, তখন থেকে আমরা السَّلاَمُ عَلَيْكَ এ স্থলে السَّلاَمُ عَلَى النَّبِيِّ পড়তে লাগলাম। [৮৩১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৮) সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করেন
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারহতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ? এখানে পাবেন বিভিন্ন রকমের ইসলামিক বই যেমন- হাদিস,কুরান,তাফসীর,বিশয় ভিত্তিক বই,শাইখ ভিত্তিক বই,ইত্যাদি। আর অন্যান্য জিনিস পেতে-sarolpoth.blogspot.com জানা অজানা ইসলামিক আরটিকল এবং শাইখদের-অডিও শাইখদের বই,,বিশয়ভিত্তিক অডিও, কুরান গজল ইত্যাদি নানা রকম বইয়ের সমাহার সার্চ করুন আপনার পছন্দ মত এছাড়াও পেতে পারেন জানা অজানা প্রস্ন উত্তর চোখ রাখুন এই সাইটে- সহী আকিদা ওয়েবসাইটে = http://sahih-akida.simplesite.com অথবা https://godhanpara.blogspot.com/ ইসলামিক বই। লিঙ্ক- আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪] -:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন sahih-akida.simplesite.com jannaterpoth.wildapricot.org