১০. ছালাতুল হাজত (صلاة الحاجة)
- বিশেষ কোন বৈধ চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা হয়, তাকে ‘ছালাতুল হাজত’ বলা হয়।[1] সঙ্গত কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য বান্দা স্বীয় প্রভুর নিকটে ছবর ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবে’ (বাক্বারাহ ২/১৫৩)। এজন্য শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বে আশু প্রয়োজনীয় বিষয়টির কথা নিয়তের মধ্যে এনে নিম্নোক্ত সারগর্ভ দো‘আটি পাঠ করবে। اَللَّهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ- (আল্লা-হুম্মা রববানা আ-তিনা ফিদ্দুন্ইয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আ-খেরাতে হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা আযা-বান্না-র)। ‘হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দিন ও আখেরাতে মঙ্গল দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব হ’তে রক্ষা করুন’। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অধিকাংশ সময় এ দো‘আটিই পড়তেন’।[2]
- দো‘আটি সিজদায় পড়লে বলবে, اَللَّهُمَّ آتِنَا... আল্লা-হুম্মা আ-তিনা...। কেননা রুকূ-সিজদায় কুরআনী দো‘আ পড়া চলে না। [3]
- হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا حَزَبَهُ أَمْرٌ صَلَّى ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন ছালাতে রত হ’তেন’।[4]
- উক্ত বিষয়ে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর স্ত্রী সারা’র ঘটনা স্মরণ করা যেতে পারে। যখন তিনি অপহৃত হয়ে মিসরের লম্পট সম্রাটের নিকটে নীত হলেন ও অত্যাচারী সম্রাট তার দিকে এগিয়ে গেল, তখন তিনি ওযূ করে ছালাতে রত হয়ে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করে বলেছিলেন,اَللَّهُمَّ لاَ تُسَلِّطْ عَلَىَّ هَذَا الْكَافِرَ ‘হে আল্লাহ! এই কাফেরকে তুমি আমার উপর বিজয়ী করোনা’। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন এবং উক্ত লম্পটের হাত-পা অবশ হয়ে পড়েছিল। তিন-তিনবার ব্যর্থ হয়ে অবশেষে সে বিবি সারা-কে সসম্মানে মুক্তি দেয় এবং বহুমূল্যবান উপঢৌকনাদি সহ তার খিদমতের জন্য হাজেরাকে তার সাথে ইবরাহীমের নিকট পাঠিয়ে দেয়।[5]
[1]
. ইবনু মাজাহ হা/১৩৮৫, ছালাত অধ্যায়-২ অনুচ্ছেদ-১৮৯।
[2]
. বুখারী হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; ঐ, মিশকাত হা/২৪৮৭, মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩।
[3]
. মুসলিম, মিশকাত হা/৮৭৩, ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘রুকূ’ অনুচ্ছেদ-১৩; নায়ল ৩/১০৯।
[4]
. আবুদাঊদ হা/১৩১৯ ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-৩১২; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৭০৩; ঐ, মিশকাত হা/১৩১৫।
[5]
. বুখারী হা/২২১৭ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-৩৪, অনুচ্ছেদ-১০০; আহমাদ হা/৯২৩০, সনদ ছহীহ।
0 Comments