Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

মুফতী কাজি ইব্রাহিমের মিথ্যাচার ও খেয়ানত নিয়ে কিছু কথা...


১>> 🔴আহলে হাদীসদের মধ্যে অনেক শিরকে আকবর আছে- মুফতি কাজী ইব্রাহীম ও আমাদের জবাবঃ সম্প্রতি আমাদের দেশের বিশিষ্ট আলেম মুফতি কাজী ইব্রাহীম সাহেব একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে আহলে হাদীস সম্পর্কে কিছু অভিযোগ করেছেন। প্রশ্নোত্তর পর্বটি দীর্ঘ ২৬ মিনিটের। কাজী ইব্রাহীমসাহেবের উক্ত বক্তব্য স্ববিরোধী এবং হাদীসের মনগড়া ব্যাখ্যায় পরিপূর্ণ। তাছাড়া বিশিষ্ট মুজতাহিদ ও মুহাদ্দিসদের ব্যাপারে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। কাজী সাহেবের পুরো ২৬ মিনিটের বক্তব্যের ভাবার্থ এখানে ২৪টি পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা পেশ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কাজী ইব্রাহীম সাহেবের বক্তব্যের লিঙ্কঃ https://youtu.be/wEosq9nyv3U নিম্নে মুফতি কাজী ইব্রাহীমের ভ্রান্ত বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা পেশ করা হচ্ছে ইনশাআল্লাহঃ ১) আহলে হাদীস ভাইদের মধ্যে অনেক শিরকে আকবার আছে (!) পর্যালোচনাঃ আহলে হাদীসদের মধ্যে বা তাদের অনেকের মধ্যে শিরক আছে মুফতি কাজী ইব্রাহীম সাহেব এটা বলেননি। বরং তিনি বলেছেন আহলে হাদীসদের মধ্যে অনেক ধরনের শিরকে আকবার আছে। উল্লিখিত কথাটার মধ্যেসূক্ষ্ম পার্থক্য আছে, যা হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে। কাজী সাহেবের উক্ত বক্তব্যের সহজ ও সাধারন অর্থ হচ্ছে সমস্ত আহলে হাদীসরা বিভিন্ন প্রকারের শিরকে আকবার বা বড় শিরকে লিপ্ত রয়েছে। ঢালাওভাবে সমস্ত আহলে হাদীসদেরকে বড় শিরকে লিপ্ত হওয়ার যে অভিযোগ কাজী সাহেব করেছেন সে বিষয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। কারন আমাদের দেশসহ সারাবিশ্বের সকলেই জানে আহলে হাদীসদের প্রধান দাওয়াতই হচ্ছে তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা ও শিরক উচ্ছেদ করা। সুতরাং কাজী সাহেবের এই অভিযোগ সত্য নয়। ২) একটা শিরক ইদানীং তাদের মধ্যে ঢুকেছে যেটা আগের আহলে হাদীস ভাইদের মধ্যে ছিল না। পর্যালোচনাঃ ইদানীং আহলে হাদীসদের মধ্যে কী ধরনের শিরক ঢুকেছে সে সম্পর্কে কাজী সাহেব সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই উল্লেখ করেননি। তার উচিৎ ছিল এ ধরনের মস্ত বড় অভিযোগ দালিলিকভাবে উপস্থাপন করা, যেটা তিনি করেননি। তিনি সুস্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন ব্যতিরেকে আহলে হাদীসদের বিরুদ্ধে এ ধরনের মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন যা তার ভ্রান্ত ধারনার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। ৩) আগের আহলে হাদীস ভাইরাই ছিল ফ্রিডম ফাইটার। উপমহাদেশে যতগুলো ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধ হয়েছে, সবগুলোর অগ্রভাগে ছিল আহলে হাদীস। আজকের আহলে হাদীস ভাইয়েরা কিছু মার-টার খেয়ে উল্টো সুরে কথা বলে। পর্যালোচনাঃ আহলে হাদীসদের উপর যুলুম নির্যাতনের ইতিহাস বেশ পুরনো। যুগে যুগেআহলে হাদীসদের উপর নির্যাতন নিপীড়নের ষ্টীম রোলার চালানো হয়েছে। বর্তমান সময়েও আহলে হাদীসদের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও পেশীশক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে শুধু তাদের দাওয়াতি কাজকে বাঁধাগ্রস্ত করা হচ্ছে না বরং বিভিন্ন জায়গায় তাদেরকে হামলা-মামলা, মারধর, মসজিদ ভাঙচুর ও এলাকা থেকে উচ্ছেদও করে দেয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে ভোলা জেলায় আহলে হাদীস মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। প্রায় সর্বত্র আহলে হাদীসদের দাওয়াতি কার্যক্রম ও মাহফিল বন্ধ করার জন্য বিরোধিতাকারীরা পায়তারা করছে। এক্ষেত্রে তারা অনেকাংশেই সফল(!) হয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি আহলে হাদীস দাঈদের প্রাননাশের হুমকি নিয়মিত দিয়ে আসছে। এরপর প্রশাসনের কাছে তাদেরকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হিসাবে উপস্থাপন করে তাদেরকে হেনস্থা করার প্রবনতাও আহলে হাদীসদের বিরোধিতাকারীদের রয়েছে। এতসব প্রতিকুল পরিবেশ ও পরিস্থিতির মধ্যথেকেও আহলে হাদীস একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে, তাঁরই উপর ভরসা করে ধৈর্য ও হিকমার সাথে সাধ্যানুযায়ী স্ব স্ব অবস্থান থেকে কুরআন ও সুন্নাহর বানী সাহাবা তথা সালাফদের রীতি অনুসারে প্রচার-প্রসার করে আসছে। সুতরাং মুফতি সাহেবের এই অভিযোগ সঠিক নয়। ৪)আহলে হাদীসদের ফিতনা ধরে ফেলেছে। পর্যালোচনাঃ ফিতনাকে আমরাও ভয় পাই ও সতর্ক থাকার চেষ্টা করি। তারপরও আমদের মধ্যে কেউ সম্পূর্ণ ফিতনামুক্ত এই দাবী করার সাহস রাখে না। আহলে হাদীসরা ঠিক কী ধরনের ফিতনার মধ্যে নিপতিত তা মুফতি সাহেব সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। যদি তিনি প্রমান সহকারে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন তাহলে আমরা কুরআন সুন্নাহর আলোকে তা সংশোধন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সকল প্রকার ফিতনা থেকে হেফাযত করুন। ৫) ঈমান কেড়ে নিয়েছে। দুনিয়ার সামান্য কিছু মুসিবত টের পেয়ে ঈমান বিক্রি করে দিয়েছে। ঈমান নাই। ঈমান হারিয়ে ফেলেছে। সামান্য কিছু টাকার পিছনে যেভাবে ছুটছে...... পর্যালোচনাঃকাজী সাহেব এখানে আহলে হাদীসদের ঈমান কেউ কেড়ে নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু পূর্বের মতো এখানে তিনি কারা সেই শক্তি বা কোন সেই গোষ্ঠী তা উল্লেখ করেননি। দ্বিতীয়ত তিনি বলেছেন, আহলে হাদীসদের ঈমান নেই, ঈমান হারিয়ে ফেলেছে এবং তারা ঈমান বিক্রি করে দিয়েছে। সুবহানাল্লাহ! আহলে হাদীসদের বিরুদ্ধে ভয়ানক ও মস্ত বড় অভিযোগ। এই অভিযোগ পরোক্ষভাবে আহলে হাদীসদেরকে ‘কাফির’ সাব্যস্ত করে। তিনি আহলে হাদীসদেরকে সত্যি সত্যিই ঈমানহীন কাফির মনে করেনি কিনা সে বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করা প্রয়োজন। ৬)কথা এক থাকবে, নীতি এক থাকবে। ঈমানের চেতনা যারা পরিবর্তন করে তারা ঠিক নেই, বরং তারা ফিতনাগ্রস্ত। তারা গুমরাহ। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, শেষ যামানায় কোনো অগ্নি পরীক্ষা তোমাকে পেয়ে গেছে কিনা, ঈমান কেড়ে নিয়েছে কিনা, যদি এটা জানতে চাও তাহলে পরীক্ষা করো। অতীতে একটা জিনিসকে তুমি হারাম মনে করতে, এখন তা হালাল মনে করছো কিনা? বা অতীতে একটা জিনিসকে বৈধ মনে করতে, এখন সেই জিনিসকে অবৈধ মনে করছো কিনা? যদি এরকম পরিবর্তন তোমার মধ্যে এসে থাকে তাহলে ফিতনা তোমাকে ধরে ফেলেছে। পর্যালোচনাঃ হুযায়ফা (রাঃ)-এর আসারটি কাজী সাহেব আহলে হাদীসদের উপর প্রয়োগ করেছেন। এবং এর মাধ্যমে আহলে হাদীসদেরকেফিতনাগ্রস্ত সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন আহলে হাদীসেরা পূর্বে কোনো জিনিসকে বৈধ বা হালাল মনে করত, কিন্তু বর্তমানে সেই জিনিসকে হারাম বা অবৈধ মনে করে। এর উল্টোটাও তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে পূর্বেকোনো জিনিসকে হারাম বা অবৈধ মনে করত, কিন্তু বর্তমানে হালাল বা বৈধ মনে করে। প্রথমত আমরা বলতে চাই, হুযাইফা (রাঃ)-এর এই আসারের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আমরা এখন পর্যন্ত অবগত নই। যদি এটা শুদ্ধও হয়, তবুও কাজী সাহেব যে ব্যাখ্যা দিলেন তা নিতান্তই একপেশে ও ভ্রান্ত। পূর্বে কোনোজিনিসকে হালাল ও পরবর্তীতে হারাম মনে করা কিংবা পূর্বে কোনো জিনিসকে হারাম ও পরবর্তীতে হালাল মনে করলে তাকে ঢালাওভাবে ফিতনায় লিপ্ত বলা কোনো অবস্থাতেই সঠিক ব্যাখ্যা নয়। আমরা একটি উদাহরন পেশ করে বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করছি। একদা এক সাহাবী রাসুল (সাঃ)-কে সিজদা করলে রাসুল (সাঃ) এরুপ করতে নিষেধ করলেন। ঐ সাহাবী রাসুল (সাঃ)-কে সিজদা করা বৈধ মনে করেছিলেন, পরে নিষেধাজ্ঞা শুনে তা থেকে বিরত হলেন। মুফতি সাহেবের উসুল অনুযায়ী আমরা কি উক্ত সাহাবীকে ফিতনাগ্রস্ত বলবো! তাছাড়া এমন অনেক উদাহরন আমরা দেখতে পাই, যারা তাদের পূর্বের ভ্রান্ত অবস্থান থেকে ফিরে এসেছেন। যেমন কেউ হয়তো সুদী লেনদেনকে হালাল মনে করতেন, পরবর্তীতে তিনি যদি মহান আল্লাহর দয়ায় সঠিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সুদকে হারাম মনে করেন, তাহলে কী আমরা ঐ ব্যক্তিকে ফিতনা গ্রস্ত বলবো। এ ধরনের আরও অনেক উদাহরন দেয়া যেতেপারে। কিন্তু আমরা মনে করি জ্ঞানীদের জন্য এটুকুই যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ। আসল কথা হছে, যে ব্যক্তি তার পূর্বের মত পরিবর্তন করেছে তা কুরআন ও হাদীস তথা ইসলামী শরীয়তের কষ্টিপাথরে যাচাই করতে হবে এবং এই মানদণ্ডেই তার কার্যকলাপ বিবেচনা করে সেই লোক কি আসলেই ফিতনাগ্রস্ত নাকি হিদায়াত প্রাপ্ত তা বলা সম্ভব হবে, নচেৎ নয়। ৭) যুদ্ধ বিগ্রহ করতে পারি আর না পারি, যুদ্ধ বিগ্রহ ইসলামে আছে না নাই? কুরআনের পয়তাল্লিশ পাতা শুধু যুদ্ধ বিগ্রহের পাতা। এই যুদ্ধ রাষ্ট্র করবে। সন্ত্রাসের কোনো স্থান ইসলামে নেই। রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে এগুলি হবে। যেমন নবীজী (সাঃ)-এর নেতৃত্বে হয়েছিল। সামনে ইমাম মাহদী (আঃ) ও ঈসা (আঃ)-এর নেতৃত্বে হবে। ইসলামে খেলাফত আছে না নাই? কুরআন সুন্নাহ দিয়ে রাষ্ট্র চালাতে হবে এই কথা যে বিশ্বাস করে না সে শিরকে আকবারের দ্বারা মুশরিক। ঈমান ধরে রাখা জলন্ত আগুন ধরে রাখার মতো। আহলে হাদীসরা ঈমান ধরে রাখতে না পেরে বলে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামের দরকার নেই, ওখানে ইসলাম লাগে না। একথা বলে আহলে হাদীসরা শিরকে আকবার করেছে। পর্যালোচনাঃ কাজী সাহেব উল্লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে আহলে হাদীসদের কেন সমালোচনা করছেন তা আমাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানে বোধগম্য নয়। আমরা আহলে হাদীসরা জিহাদে বিশ্বাস রাখি, এই জিহাদ পরিচালিত হবে রাষ্ট্রনায়কের অধীনে। রাসুল (সাঃ) ও সাহাবারা জিহাদ করেছেন। এই জিহাদ কিয়ামতপর্যন্ত থাকবে। রাসুল (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পর সাহাবারা খিলাফত কায়েম করেছেন। খিলাফত কায়েমের জন্য চেষ্টা করাঅপরিহার্য বিষয়। কুরআন সুন্নাহ দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে, আমরা এ কথার উপরেও ঈমান রাখি। যারা মনে করে, কুরআন সুন্নাহর আইন এ যুগে অচল অথবা মানব রচিত আইন আল্লাহর আইনের চেয়ে উত্তম এমন বিশ্বাস পোষণকারী ব্যক্তিকে আমরা কাফির ও মুশরিক মনে করি। উল্লিখিত আকীদাসমুহ আমার কিতাবসমুহেই বিদ্যমান। সুতরাং কাজী সাহেবকে প্রমান দিতে হবে কোন আহলে হাদীস এগুলকে অস্বীকার করেছে। আর যদি তিনি প্রমান দিতে না পারেন তাহলে তার উচিৎ হবে আহলে হাদীসদের উপর এহেন মারাত্মক অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়া। তাছাড়া এখানে মুফতি সাহেব সরকারকে পরোক্ষভাবে মুশরিক বলার চেষ্টা করছেন। এবং এর মাধ্যমে কোনো গোষ্ঠীকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। অতীতে দেখা গেছে এরুপ উস্কানির মাধ্যমে যেসব গোষ্ঠীকে খেপিয়ে তোলা হয় পরবর্তীতে তারাই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছে। ৮) কবর আর মাজারের শিরক বর্জন করলে কি হবে, আহলে হাদীসরা আইন-বিধানের ক্ষেত্রে শিরকে আকবারে লিপ্ত হয়ে ঈমান শেষ করে দিয়েছে। পর্যালোচনাঃ আহলে হাদীসেরা আইন-বিধানের ক্ষেত্রে মানব রচিত বিধান দ্বারা শাসন পরিচালনা করাকে বড় শিরক ও বড়কুফর মনে করে। মুফতি সাহেবের কাছে আমাদের দাবী থাকবে আহলে হাদীস আলেমদের এমন কোনো বক্তব্য বা লেখনী পেশ করার জন্যযেখানে বলা হয়েছে আল্লাহর আইনের পরিবর্তে মানব রচিত বিধান দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করা বৈধ। ৯)সামনে একজন মাবুদ আসছে আল্লাহর নাম নিয়ে। এই বাংলাদেশে কোটির মধ্যে হয়তো দু’চারজন মুমিন বাচতে পারবে। পর্যালোচনাঃ দাজ্জাল হচ্ছে পৃথিবীর বুকে সর্ববৃহৎ ফিতনা। মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে তাওফীক দান করবেন একমাত্র সেই দাজ্জালের এই কঠিন ফিতনা হতে নিরাপদ থাকতে পারবে। এখানে কোনো ভৌগলিক সীমারেখা নেই। এখানে একথা বলার সুযোগ নেই বাংলাদেশ থেকে এতো জন, সৌদি থেকে এতজন ইউরোপ থেকে এতো জন। আর এটা সম্পূর্ণ গায়েবী বিষয়। এই গায়েবী বিষয়ে এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত কাজী সাহেবের কাছে আছে যার দ্বারা তিনি ক্যালকুলেশন করে বাংলাদেশের আনুমানিক ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে দু’ চারজন লোক দাজ্জালে ফিতনা হতে মুক্ত থাকতে পারার ঘোষণা করছেন। মুফতি সাহেবের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে আনুমানিক ৩২ থকে ৬৪ জন মানুষ দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। ১০)যে থার্টি ফার্স্ট থেকে বাচবে সে দাজ্জাল থেকে বাচবে। যে থার্টি ফার্স্ট থেকে বাচল না সে কিছুতেই দাজ্জাল থেকে বাচতে পারবে না। ভ্যালেন্টাইন ডে থেকে যে বাঁচতে পারবে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে পারবে। যেসব নারীরা সামান্যকিছু টাকার লোভে চাকরী করছে সেসব নারীরা দাজ্জালের ফিতনা থেকে মোটেও বাঁচতে পারবে না। সেসব নারীরা ঘরে থাকবে তারা দাজ্জাল থেকে বাঁচতে পারবে। পর্যালোচনাঃ এ ধরনের কোনো বক্তব্য কুরআনও সহীহ হাদীসের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়নি। বলা হয়নি অমুক অমুক ফিতনা থেকে বাঁচতে পারলে দাজ্জালের ফিতনা হতে বাঁচতে পারবে। বরং আল্লাহর রাসুল (সাঃ) দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সলাতের মধ্যে ও সলাতের বাইরে বিভিন্ন দু’আ শিক্ষা দিয়েছেন দ্রষ্টব্যঃ বুখারী ৮৩২, ৮৩৩, ২৩৯৭, ৬৩৬৫ ৬৩৬৮, ৬৩৭৫, ৬৩৭৬, ৬৩৭৭; মুসলিম ৯২৫-(১২৯/৫৮৯), ৬৭৬৪-(৪৯/৫৮৯) এছাড়া রাসুল (সাঃ) আরও বলেছেনঃ ‘’যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত রাখবে সে দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাযত থাকবে’’ দ্রষ্টব্যঃ মুসলিম ৭২৬৩-(১১০/২৯৩৭); ইবন মাযাহ ৪০৭৫; তিরমিযি ২২৪০; আবু দাউদ ৪৩২১, ৪৩২৩১১) কেন আহলে হাদীস পরিচয় দিব, কেন হানাফিপরিচয় দিব, কেন সালাফী পরিচয়, কিসের সালাফী, কিসের আহলে হাদীস, কিসের হানাফি?কোনো এগুলি নাম নাই, নাম শুধু মুসলিম, ব্যাস। পর্যালোচনাঃএখানে মুফতি হানাফি, শাফেঈ, হাম্বলি, মালেকি, আহলে হাদীস, সালাফী ইত্যাদি পরিচয় দিতে কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন আমাদের পরিচয় দিতে হবে শুধু মুসলিম। এ বিষয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ নেই। শুধু এটুকু বলতে চাই যে, কোনো সন্দেহ নেই আমরা মুসলিম এবং এটাই আমাদের মৌলিক পরিচয়। তবে আমরা আমাদের মানহায প্রকাশেরক্ষেত্রে আহলুল হাদীস বা সালাফী পরিভাষাব্যবহার করে থাকি। যা পূর্বযুগের বিদ্বানগণও ব্যবহার করেছেন। ১২)কবরে কী প্রশ্ন করা হবে তুমি হানাফি, তুমি আহলুল হাদীস? কবরে প্রশ্ন হবে তোমার দ্বীন কি? জবাব হবে, ইসলাম। পর্যালোচনাঃ কবরে দ্বীন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে, মানহায সম্পর্কে নয়। কবরে প্রশ্ন করা হবে তোমার দ্বীন কি? জবাব হবে, ইসলাম (দ্রষ্টব্যঃ মিশকাতুল মাসাবীহ ১৩৯)। মুফতি সাহেব কবরের সওয়াল-জওয়াবের মাধ্যমে প্রমান করতে চাইছেন আমাদেরকে পরিচয় দিতে হবে মসুলিম। অথচ কবরের প্রশ্নোত্তরে মুসলিম নয় ইসলাম বলতে হবে। সুতরাং আহলে হাদীস পরিচয় না দেয়ার ব্যাপারে কাজী সাহেবের এই যুক্তি অচল ও বাতিল। ১৩)এইসব নামের কারনেই আহলে হাদীস-হানাফি দ্বন্দ্ব, একটা আরেকটার ছায়া দেখতে পারে না। দুটোই জাহান্নামে যাবে, শুধু এই দোষে। পর্যালোচনাঃ মুসলিমদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিভেদ করা কোনো অবস্থাতেই জায়েজ নয়। বিভেদ সৃষ্টিকারী অবশ্যই আল্লাহর শাস্তির হকদার। কিন্তু হক কথা প্রচার করতে আহলে হাদীসরা কক্ষনোই পিছপা হয়না। আহলে হাদীসদের মুল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর একত্ববাদ তথা তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা ও দুনিয়ার বুকে সবচেয়ে বড় জুলুম শিরক উৎখাতে সচেষ্ট হওয়া এবং সুন্নাহের দাওয়াত দেয়া ও বিদ’আত পরিত্যাগ করা। এক্ষেত্রে আহলে হাদীসদের নীতি হচ্ছে আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালোবাসা, আল্লাহর জন্যই কারো প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা। এতে যদি কারো সাথে বিভেদ সৃষ্টি হয় আহলে হাদীসেরা সেদিকে মোটেই ভ্রূক্ষেপ করে না। তথাকথিত ও কপোলকল্পিত ঐক্যের মধ্যে আহলে হাদীসেরা বিশ্বাসী নয়। ঐক্যের ভিত্তি হবে তাওহীদ। ১৪)আহলে হাদীসরা হানাফিদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয় না, আর হানাফিরা আহলে হাদীসদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয় না। উভয়পক্ষই জাহান্নামে যাবে। পর্যালোচনাঃ আহলে হাদীসেরা হানাফিদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয় না ও হানাফিরা আহলে হাদীসের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয় না মুফতি সাহেবের এই অভিযোগ পুরোপুরি সঠিক নয়। বরং আহলে হাদীস ও হানাফিদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক আমরা বৈধ মনে করি। তবে একে অপরের কাছে বিয়ে না দেয়ার কারনে জাহান্নামে যেতে হবে মুফতি সাহেব এটা কেমন কথা বললেন তা বোধগম্য নয়। তাছাড়া বিয়ে করার ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) দ্বীনকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন। বিয়ের ক্ষেত্রে শুধু মুসলিম পরিচয়ই যথেষ্ট নয়। কাজী ইবরাহিম সাহেব কি তাদের কন্যাদেরকে দেওয়ানবাগী, আটরশি, মাইজভাণ্ডারী কারো কাছে বিয়ে দিবেন! কস্মিনকালেও মুফতি সাহেব এরুপ বিভ্রান্তদের কাছে নিজের কন্যাসমূহকে বিবাহ দিতে রাজি হবেন না। অথচ তারা কিন্তু নিজেদেরকে মুসলিম বলেই পরিচয় দেয়। ১৫)উম্মত তেহাত্তর ভাগে বিভক্ত হবে, শুধু একদল জান্নাতে যাবে। আর বাকী সব জাহান্নামে যাবে। ঐ জাহান্নামী দলের পাপকি? কোনো পাপ নেই, শুধু এই ভাগাভাগির কারনেই জাহান্নামে যাবে। যারা জান্নাতে যাবে তারা শুধুমাত্র এক উম্মাহ কনসেপ্টের কারনে জান্নাতে যাবে। পর্যালোচনাঃ উম্মত তেহাত্তর দলে বিভক্ত হবে এবং অন্য কোনো পাপ না থাকা সত্তেও শুধুমাত্র এই ভাগাভাগির কারনেই তারা জাহান্নামে যাবে এটা মুফতি সাহেবের মনগড়া ও কল্পনাপ্রসুত ব্যাখ্যা। উম্মতের মধ্যে ভাগাভাগিটা হচ্ছে কি কারনে? ভাগাভাগি হচ্ছে আকীদায়, ভাগাভাগিহচ্ছে সুন্নাহ পালনে, ভাগাভাগি হচ্ছে তাওহীদের সংজ্ঞায়, ভাগাভাগি হচ্ছে বিদ’আতের পরিভাষায়। এ সবগুলই হচ্ছে আমল। আর মুলত উম্মত ভাগাভাগি হচ্ছে এ সমস্ত আমলের ভিন্নতার মাধ্যমে। সুতরাং আমরা বলতে চাই উম্মত ভাগাভাগি হচ্ছে আকীদা ও আমলের ভিন্নতার মাধ্যমে। আর এই আকীদা ও আমলের ভিন্নতাই মানুষকে জান্নাতে বা জাহান্নামে নিয়ে যাবে। শুধু নামের কারনেই জাহান্নামে যাবে মুফতি সাহেবের এই বক্তব্য ভিত্তিহীন। উক্ত হাদীসের মধ্যে রাসুল (সাঃ) জান্নাতী হিসাবে উল্লেখ করেছেন সেই সব ব্যক্তিকে যারা রাসুল (সাঃ) ও সাহাবীদের অনুসৃত পথ ও মতের অনুসরন করে। যারা রাসুল (সাঃ) ও সাহাবীদের দেখিয়ে যাওয়া পথ অনুসরন করবে না তাদেরকেই উক্ত হাদীসে জাহান্নামী হিসাবে বোঝানো হয়েছে। সুতরাং শুধুমাত্র ভিন্ন নামের কারনেই তারা জাহান্নামে যাবে মুফতি সাহেবের এই ব্যাখ্যা পুরোপুরি ভ্রান্ত। ১৬)আমি তো হানাফি মৌলভি। আমি হাদীস ছাড়া কোনো কথাই বলি না। কুরআন ছাড়া কোনো কথাই বলি না। পর্যালোচনাঃ এই বক্তব্যেই মুফতি সাহেব উল্লেখ করেছেন মুসলিম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নামের মাধ্যমে ভাগাভাগির কারনে মানুষ জাহান্নামে যাবে। অথচ মুফতিসাহেব নিজেকেই হানাফি বলে অভিহিত করলেন! ফতওয়াটা মুফতি সাহেবের নিজের উপরেই পরল কিনা! ১৭)ইমাম আবু হানিফা পাক্কা আহলে হাদীস, ইমাম শাফে’ঈ, ইমাম মালেক, ইমাম আহমদ পাক্কা আহলে হাদীস।পর্যালোচনাঃযেহেতু মুফতি সাহেব নিজেই বলেছেন মুসলিম বাদে অন্য কোনো পরিচয় দেয়া যাবে না। অন্য পরিচয় দেয়ার মাধ্যমে উম্মতের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা, দলাদলি ও বিভেদ সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে আহলে হাদীস পরিচয় দেয়ার ব্যাপারে মুফতি সাহেব চরম আপত্তি জানিয়েছেন। এমনকি এ সমস্ত নামের কারনে তাদেরকে জাহান্নামীও বলেছেন। অথচ পরক্ষনেই সম্মানিত চার ইমামকে আহলে হাদীস হিসাবে সম্বোধন করছেন। আমরা বুঝতেপারছিনা মুফতি সাহেব তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করলেন নাকি তাদেরকে জাহান্নামী বানালেন! (আউজুবিল্লাহ) ১৮)আগের দিন বাঘে খাইছে, ঐসব বাদ দেন। কে আমিন আস্তে বলল, আর কে জোরে বলল এটা সেই যুগ না। এটা ফিতনার যুগ। ঈমান হারাবার যুগ। ছোটখাটো মাস’আলা নিয়ে লাফালাফি কইরেন না। প্রশ্ন করলে ঈমানের মাস’আলা দেন। পর্যালোচনাঃ পূর্বযুগ থেকে চলে আসা বিভিন্ন মাস’আলা নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনাপরিহার করে তিনি সামনে দিকে এগিয়ে যেতে বলেছেন। সামনে আমরা এগিয়ে যাব ঠিকই কিন্তু পূর্বসুরীদের পথ অনুসরন করেই। সালাফদের রীতিনীতি বাদ দেয়ার তিনি যে পরোক্ষ আহবান জানিয়েছেন, তা আমরা চরমভাবে প্রত্যাখ্যান করি। আর রাসুল (সাঃ)-এর আনীত কোনো বিধানকে ছোট-বড়, অগুরুত্বপূর্ণ হিসাবে দেখার ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কোনো অবকাশ নেই। নাম নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি না করার প্রবক্তা সম্মানিত মুফতি সাহেব কোন উসুলের আলোকে রাসুল (সাঃ)-এর সুন্নাহকে গুরুত্বপূর্ণ ও কম গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে ভাগাভাগি করছেন! বড়ই আশ্চর্যজনক!!!উল্লিখিত আলোচনায় মুফতি সাহেবের ‘ঈমান’ সম্পর্কে জ্ঞানের বহর সম্মানিত পাঠকেরা হয়তো সামান্য কিছু আঁচ করতে পেরেছেন। যিনি নিজেই ঈমান, কুফর, আকীদা, মানহাযে মিসকিন তিনি নিজেই আবার শ্রোতাদের কাছে ঈমান সম্পর্কিত প্রশ্ন চাইছেন। বড়ই হাস্যকর বিষয়! ১৯)এরা অলী, এরা মুহাদ্দিস, এরা মুহাদ্দিস, এরা বড় বড় মুজতাহিদ, তারপরও এদেরকে জাহান্নামে যেতে হয়েছে। কারন এরাভাগাভাগি করেছে। উম্মতকে টুকরা করেছে। মুহাম্মাদ (সাঃ) উম্মতকে রেখে গেছেন ঐক্যবদ্ধ, আর এরা করেছে টুকরা টুকরা। পর্যালোচনাঃ লা হাওলা ওয়ালা কু-ওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ! আল্লাহর অলী, হাদীস বিশেষজ্ঞ মুহাদ্দিস যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা ১৪০০ বছর ধরে হাদীস শুনে আসছি, ইসলামী শরীয়তের যিনি ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ প্রদান করেন এমন বিজ্ঞ মুজতাহিদ সবাই জাহান্নামী!!! এরা যদি জাহান্নামী হয়, তাহলে জান্নাতী কারা হবে তা আমরা জানি না। ২০)এই যুগে রাষ্ট্রীয় শিরকে বিরুদ্ধে আহলে হাদীস আলেমদের বক্তব্য নেই, আগের যুগে ছিল। পর্যালোচনাঃ এটা মুফতি সাহেবের মনগড়া অভিযোগ। যুগে যুগে আহলে হাদীসেরা সমস্ত শিরকে বিরুদ্ধেই সোচ্চার ছিল এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। তবে শিরকের বিরুদ্ধে কথা বলা ও মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা এক নয়। মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা আমরা কোনো অবস্থাতেই জায়েজ মনে করিনা। এটা সর্বতভাবে হারাম। ২১)কোনো মেয়ে বেপর্দা চলাফেরা করলে, ঐ মেয়েরও ঈমান নেই তার বাবারও ঈমান নেই। এইবাবাও বেঈমান, মেয়েও বেঈমান, কারোই ঈমান নেই। পর্যালোচনাঃ এটা মুফতি সাহেবের সুস্পষ্ট তাকফীরি ও খারেজী মানহাযের বহিঃপ্রকাশ। কবিরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিকে ঈমানহারা ঘোষণা করা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের বৈশিষ্ট্য নয়। ২২)বাসে তিনি একজন নারীকে দেখলেন বোরখা পরিহিত অবস্থায় উঠতে কিন্তু নামার সময় সেই বোরখা পরিহিতা নারীকে দেখতে পেলেন না। পরে তিনি আবিস্কার করলেন, সেই বোরখা পরিহিতা নারী বাসে বোরখা খুলে ব্যাগের মধ্যে রেখে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় বের হয়েছে। পর্যালোচনাঃ মহান আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে চক্ষু অবনমিত রাখতে বলেছেন। কোনো নারীর প্রতি অসতর্কভাবে হঠাৎ দৃষ্টি পরে গেলে রাসুল (সাঃ) দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে বলেছেন। তো মুফতি সাহেব নিজেই একজন নারীর বাসে আগমন, বোরখা পরিবর্তন করে বাস থেকে নির্গমন এতো কিছু লক্ষ্য করলেন কিভাবে!!! যদিওবা শয়তানের ওয়াসওয়াসায় তিনি উক্ত নারীকে লক্ষ্য করছিলেন সেটা আবার পাবলিক প্লেস তথা ওয়াজ মাহফিলে কিভাবে রসিয়ে রসিয়ে গল্প করেন কিভাবে! মুফতি সাহেবের বুদ্ধিশুদ্ধি লোপ পেয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখা দরকার। ২৩)লাল উটের সাথে বিল গেটসের সম্পদের তুলনা! পর্যালোচনাঃ কেউ যদি কারো মাধ্যমে হিদায়াত লাভ করে তাহলে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) সেটা ১০০টি লাল উটের চেয়েও উত্তম বলে গণ্য করেছেন। আমরা সেটাকেই বিশ্বাস করি। কোথাকার কোন বিল গেটস অথবা অন্য কোনো ধনকুবের সম্পদের সাথে রাসুল (সাঃ)-এর দেয়া উপমার সাথে তুলনা করা কোনোমুসলিমের জন্য দৃষ্টিকটু বলে মনে করি। ২৪)আবু হুরায়রাহ (রাঃ)-এর গোপন হাদীসের বর্ণনা যেসব কিতাবে পাওয়া যাবে!পর্যালোচনাঃ মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই দ্বীন প্রদান করেছেন। এবং তিনি নিজেই তা হেফাযত করবেন। উম্মতের জন্য করনীয় ও বর্জনীয় সবকিছুই মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলের মাধ্যমে আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। রাসুল (সাঃ) আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ দ্বীন কোনো কিছু গোপন করা ব্যাতিরেকে আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। রাসুল (সাঃ)-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত সকল নির্দেশনা সাহাবীরা কেউই গোপন করেননি। কেউ যদি মনে করে সাহাবীরা রাসুল (সাঃ)-এরকোনো হাদীস গোপন করেছেন তবে তা রাসুল (সাঃ)-এর সহচরদের উপর মস্ত বড় অপবাদ। মহান আল্লাহ তায়ালা উম্মতের জন্য কল্যাণকর ও উপকারী শিক্ষা বহাল বহাল রেখেছেন। আর যেটার মধ্যে উম্মতের তেমন কোনো ফায়দা নেই সেগুলো ভুলিয়ে দিয়েছেন, যেমন লাইলাতুল কদরের তারিখ। কেউ কেউ সন্দেহ করতো রাসুল (সাঃ) আলী (রাঃ)-কে গোপন কিছু শিক্ষা দিয়েছেন। অথচ আলী (রাঃ)এর কঠোর প্রতিবাদ করেছেন। আল্লাহর রাসুল(সাঃ)-এর মহান সাহাবী আবু যার (রাঃ) বলেনঃ ‘’আকাশে যে পাখি তার দু’ ডানা ঝাপটায়, তার জ্ঞান সম্পর্কেও নবী করীম (সাঃ) আমাদের নিকট আলোচনা করেছেন’’ (মুসনাদ আহমাদ ২১৩৯৯, ২১৬৮৯, ২১৭৭০; সাহীহাহ ১৮০৩) পরিশেষে আমরা আশা করি যে, আহলে হাদীস বিদ্বেষী ও আহলে হাদীসদের প্রতি কুধারনাপোষণকারী মুফতি কাজী ইব্রাহীম সাহেব তারভ্রান্ত বক্তব্য থেকে ফিরে আসবেন। যে সমস্ত আহলে হাদীস মসজিদে তিনি নিয়মিত খুৎবা প্রদান করে আসছেন সে সমস্ত মসজিদ কর্তৃপক্ষেরও আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন অবিলম্বে আহলে হাদীসদের প্রতি বিদ্বেষী এই আলেমকে আহলে হাদীস মসজিদে খুৎবা ও বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ না দেয়া হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ও কাজী ইব্রাহীম সাহেবকে হিদায়াত দান করুন এবং সমস্ত ফিতনা থেকে হেফাযত করুন। ⇨ সংগ্রহীত দ্বীনি ভাই Anisur Rahman এর থেকে। জাযাকাল্লাহ খাইর, ভাই। অর

মুফতী কাজি ইব্রাহিমের মিথ্যাচার ও খেয়ানত নিয়ে কিছু কথা...
.(আসসালামু আলাইকুম বই লিঙ্ক গুলি দেওয়া হবে অপেক্ষা করুন বা সার্চ করে খুজে নিতে পারেন)
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি।
যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। যিনি বলেছেন, “তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।” [সূরাহ বাক্বারাহ: ৪২]
অন্যত্র বলেছেন, ধ্বংস প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপিষ্ঠের জন্য।” [সূরাহ জাছিয়াহ: ৭]
শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহর প্রতি। যিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষ এমন কথাও বলে, যাতে সে কোন ক্ষতি আছে বলে মনে করেনা; অথচ এর জন্যই সে ৭০ বছরের পথ জাহান্নামে অধঃপতিত হয়।” [তিরমিযী, হা/২৩১৪]
.
🔸প্রারাম্ভিকা,
আহলুস সুন্নাহর উলামা- মাশায়েখ ,দ্বায়ীগণের প্রতি শত্রুতা ও বিদ্বেষ পোষণ এবং বাতিলপন্থী কর্তৃক
বিভিন্ন মিথ্যাচার, তোহমত লাগানোর বিষয়টি বেশ পুরনো! এতদসত্ত্বেও যুগ যুগ ধরে হক্ব ও বাত্বিলের লড়াই চলমান রয়েছে! বলা বাহুল্য যে, দুই শ্রেণীর লোক তাদের জবান ও কলম দ্বারা সুন্নাহপন্থীদের কুৎসা রটায়! প্রথম শ্রেণী হল বিদ'আতপন্থী আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল ছুপা রুস্তম!
জনসাধারণ প্রথম শ্রেণী তথা "বাত্বিল পূজারী,উলামায়ে ছু"দের অপচেষ্টা বুঝতে সক্ষম হলেও দ্বিতীয় শ্রেণী তথা ছুপা রুস্তমদের কুটিলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। কেননা এরা প্রথমে মনভোলানো কিছু ভাল কথার দ্বারা সুন্নাহপন্থীদের মিম্বার দখলে নেয়, এরপর কিছু ভক্ত ও সমর্থক যোগাড় করে, অত:পর নিজেদের বিষ মাখানো মানহাজের দিকে আহবান করে !
.
পর-সমাচার এই যে, গতকাল মুফতী কাজি ইব্রাহিম [ হাদাহুল্লাহ ]-র প্রশ্নোত্তর সম্বলিত একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো প্রকাশ পেয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়! উক্ত ভিডিয়োতে তিনি এদেশীয় "আহলে হাদিস, সালাফীদের উপর মারাত্মক কিছু অপবাদ চাপিয়ে দিয়েছেন, সেই সাথে একাধিক মিথ্যাচারও করেছেন!
মুফতী সাহেবের কাছে কোনো এক নাদান বালক প্রশ্ন করেন যে "কোনো মুসলিম ইসলাম ব্যাতিত অন্য কোনো মতাদর্শ, যেমন: ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদ, জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা করতে পারেনা। তাহলে আহলে হাদিস ভায়েরা কেন ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির সাথে জড়িত?
উত্তরে মুফতী সাহেব [ হাদাহুল্লাহ ] বলেন,
"হ্যাঁ আহলে হাদিস ভাইদের মধ্যে শিরকে আকবর রয়েছে! তারা কবর পূজা করেনা, তারা মাঝার পূজা করেনা, তাদের মধ্যে তাবিজ তুমারের শির্ক নেই, বিদ'আতী জিকির আজগর নেই, কিন্তূ একটা শির্ক ইদানীং ঢুকছে যেটা আগের [ যুগের ] আহলে হাদিস ভাইদের মধ্যে ছিলোনা, আগের আহলে হাদিস ভাইয়েরাই ছিল স্বাধীনতার ফ্রিডম ফাইটার! উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিরোধী যত যুদ্ধ হয়েছে সবগুলোর অগ্রভাগের নেতৃত্বে ছিল আহলে হাদিসরা! আজকের আহলে হাদিস ভাইয়েরা কিছু মাইর খাইয়া এখন উল্টো সুরে কথা বলছে! এদেরকে ফিতনা ধরে ফেলছে! আহা! ঈমান কেড়ে নিচ্ছেরে, দুনিয়ার সামান্য মসিবত টের পাইয়া ঈমান বিক্রি করে দিছে! ঈমান নাই"! আল ইয়াযু বিল্লাহ [ মুলভাব সংক্ষেপিত ]
► লিংকঃ
পর্যালোচনা :
সর্বকালে , সর্ব যুগেই একদল লোক আহলে হাদিসদের
দ্বীনদ্বারিত্ব, আমানতদ্বারিতার ব্যাপারে জনমনে সন্দেহ, সংশয় ঢুকিয়ে দিতে মিথ্যাচারে লিপ্ত ছিল এবং তা আজ অব্দি চলমান রয়েছে !
আহলেহাদীসদেরকে ‘"সেক্যুলারদের সমর্থক" তকমা দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। ইতঃপূর্বে এসব ভয়ানক মিথ্যা তকমা দেওয়া হয়েছে। আসলে যারা আহলে হাদিসদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তারাই মূলত এসব মিথ্যা কথা বলে পাবলিক টেরিটোরিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। ছুপা আহলে হাদিস বিদ্বেষীরাও সুযোগ বুঝে এ জাতীয় উদ্ধত কথাবার্তা প্রকাশ করে। অথচ বর্হিরবিশ্বে আহলেহাদীসরাই সেক্যুলারদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি তৎপর। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি ও বক্তৃতার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা আহলেহাদীসদেরই বেশি।
ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী যুগ থেকেই আমাদের‘ আলিমগণ বক্তব্য দিয়ে আসছেন। যেহেতু মুফতী সাহেব দেশীয় আহলে হাদিসদের উপর এই জঘন্য অপবাদ দিয়েছেন তাই আমরা দেশীয় আহলে হাদিস দাঈদের কিছু লেকচার ও বইয়ের কথাই আলোচনা করি।
.
বাংলাদেশে আহলেহাদীস আন্দোলনের অগ্রবর্তী সেনানায়ক প্রথিতযশা সাহিত্যিক সাবেক পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) জমঈয়তে আহলে হাদীসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আশ-শাইখ আল-‘আল্লামাহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কুরায়শী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৯৬০ খ্রি.] প্রণীত একটি ঐতিহাসিক পুস্তিকার নাম—‘ আল ইসলাম বনাম কম্যুনিজম"। এই পুস্তিকায় ‘আল্লামাহ কুরাইশী
ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ, সেক্যুলারিজম এবং কমিউনিস্টদের মতাদর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এছাড়াও আরেক কিংবদন্তি আলিমেদ্বীন আল্লামাহ আবূ মুহাম্মদ আলিমুদ্দিন [ রাহিমাহুল্লাহ'র ] রচিত "মুসলিম বিশ্বে ইয়াহুদী চক্রান্ত ও সমাজতন্ত্রের রূপরেখা" শীর্ষক বিখ্যাত বইটিতেও এসকল কুফুরি বিশ্বাসের 'কবর' রচনা করা হয়েছে! আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন।
.
এবার বর্তমান সময়কার বাংলা ভাষায় কিছু মৌলিক রচনার কথা যদি বলি, তাহলে এদেশীয় স্বনামধন্য দাঈ ড. আসাদুল্লাহ আল গালিব [ হাফিয্বাহুল্লাহ'] কর্তৃক রচিত ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের ব্যাপারে চমৎকার দুটি মৌলিক গ্রন্থ "ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ" ও "তিনটি মতবাদ" বইগুলোর কথা বলতেই হয়! এছাড়াও ড. মুযাফফর বিন মুহসিন [হাফিয্বাহুল্লাহ'র ] ‘ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন’ বইটিতেও ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে!
.
আহলেহাদীস দা‘ঈগণ অনেক আগে থেকেই বক্তব্য ও সেমিনারের মাধ্যমে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের মত কুফরি মতবাদের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করে আসছেন। এখন কথা হলো, কেউ নিজেকে আহলে হাদিস দাবী করল আর ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের দিকে মানুষকে আহবান করল তাতে কি ঢালাওভাবে একথা বলা সমীচীন হবে যে, আহলে হাদিসরা ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসী বা আহলে হাদিসরা শিরকে আকবরে লিপ্ত রয়েছে! আল-‘ইয়াযু বিল্লাহ।
.
সম্মানিত পাঠকদের জেনে রাখা আবশ্যক যে,
এদেশীয় আহলে হাদিসরাই যুগ যুগ ধরে বাত্বিল মতবাদ ও ভিবিন্ন ফিরক্বার পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ইত্যাদি কুফুরী মতবাদগুলোর রদ করার পাশাপাশি এসকল বিভ্রান্ত মতবাদ ও ফিরক্বার ব্যাপারে জাতিকে সর্তক ও সংশোধনের চেষ্টা করে করছেন, যা আজ অব্দি চলমান রয়েছে। এ মর্মে আহলে হাদীস আলিমদের লিখিত বই-পুস্তক, আহলে হাদিস আন্দোলন এবং জমঈয়তে আহলে হাদিস এর সাংগঠনিক কর্মপদ্ধতি, গঠনতন্ত্র ইত্যাদি সহ অসংখ্য বই-পুস্তক, লিখনী ও বক্তৃতায় তার প্রমাণ বহন করে! ছোট বড় মিলিয়ে উলামাদের বহু লেকচার রয়েছে! আমি নিন্মে মাত্র কয়েকজন দাঈর দীর্ঘ আলোচনা সম্বলিত কয়েকটি লেকচার এর লিংক দিচ্ছি যা শ্রবণ করলে সম্মানিত পাঠকগন সহজেই বুঝতে পারবেন যে, আমাদের আলিমগণ এসকল মতবাদের ব্যাপারে কতটা কঠোরতা অবলম্বন করেন!
.⦁ তিনটি মতবাদঃ [ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ,সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ]
উস্তায মতিউর রাহমান মাদানী হাফিয্বাহুল্লাহ।
1► লিংকঃ ⦁ ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ।
উস্তায মতিউর রাহমান মাদানী হাফিয্বাহুল্লাহ।
2► লিংকঃ -
⦁ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ!
ড.আসাদুল্লাহ আল গালিব [ হাফিয্বাহুল্লাহ ]
3► লিংকঃ
⦁ সেক্যুলারিজম ও ইসলাম।
ড.মুজাফফার বিন মহসীন হাফিয্বাহুল্লাহ।
4► লিংকঃ -
⦁ সেক্যুলারিজম,জাতীয়তাবাদ ও গনতন্ত্র।
ড.মুজাফফার বিন মহসীন হাফিয্বাহুল্লাহ।
5► লিংকঃ ba -
.সুতরাং, সতর্ক হোন। আহলে হাদিসদের উপর এমনসব মিথ্যা অপবাদ সুন্নাহপন্থী কোন দাঈ দিতে পারেনা কেবলমাত্র বিদ'আতী ব্যক্তিবর্গ ছাড়া! তাইতো বহুদিন পূর্বে হাদীছশাস্ত্রের হাফিয্ব ইমাম আবূ হাতিম (রহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ২৭৭ হি.] বলেছেন,
«علامة أهل البدع الوقيعة في أهل الأثر».
“বিদ‘আতীদের নিদর্শন হল আহলুল আছার তথা সালাফীদের আক্রমণ করা (বা তাদের নামে কুৎসা রটানো)।”
[📚ইমাম আবূ ‘উছামান আস্ব-স্ববূনী (রহিমাহুল্লাহ), ‘আক্বীদাতুস সালাফি ওয়া আস্বহাবিল হাদীছ; পৃষ্ঠা: ৩০৪]
.
ইমাম আহমাদ বিন সিনান আল-ক্বত্বত্বান (রহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ২৫৯ হি.] বলেন,
«ليس في الدنيا مبتدع، إلا وهو يبغض أهل الحديث».
“দুনিয়ায় এমন কোনো বিদ‘আতী নেই, যে আহলুল হাদীছদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে না।”
[📚ইমাম যাহাবী (রহিমাহুল্লাহ), সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা; খণ্ড: ১২; পৃষ্ঠা: ২৪৬; ইমাম হাকিম (রহিমাহুল্লাহ), মা‘রিফাতু ‘উলূমিল হাদীছ; পৃষ্ঠা: ৪]
.
অতএব, মুফতী সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলবো - ঢালাওভাবে আহলে হাদিসরা ধর্ম-নিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসী কিংবা সেক্যুলারদের সাথে আপোষকামী অথবা ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে আর তাই আহলে হাদিসরা শিরকে আকবরে লিপ্ত রয়েছেন, ইত্যাদি অপবাদ লাগিয়ে দিয়ে অন্তরিস্থ বিদ্বেষ জাহির করার মাধ্যমে নিজেকে বিদ‘আতী বলে প্রদর্শন করবেন না।
.
আমরা সকলের জ্ঞাতার্থে সুস্পষ্টভাবে একথা জানিয়ে দিতে চাই যে, এদেশীয় আহলে হাদিসদের বার্ষিক অনুষ্ঠানগুলোতে দু'একজন রাজনৈতিক দলের নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং দু'একজনকে উপদেষ্টা পরিষদের "সদস্য" হিসেবে রাখা হয়েছে! তবে তা কেবল দেশীয় বৈরি পরিবেশের কথা চিন্তা করে কৌশলগত কারণে ও দাওয়াতি কাজের স্বার্থে রাখা হয়েছে! তাছাড়া কোন রাজনৈতিক নেতাকে "সদস্য" কিংবা মেহমান হিসেবে রাখলেই যে গোটা একটি জামআত তাদের মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে গেল, এমন দাবি কোন সুস্থ মানুষ করতে পারেনা!
এছাড়াও প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিটি সদস্য বা সকল নেতাকর্মীই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসী নয়! যেমন ধরুন, ঢাকার এম পি রহমতুল্লাহ'র কথাই বলি! এই লোকটা আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থেকেও দ্বীনের বহুমুখী খেদমতের আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন! হয়ত দুনিয়াবী স্বার্থের কারণে এসব দলের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন কিন্তু সেক্যুলারিজমকে মনে প্রাণে ঘৃনা করেন! তেমনিভাবে আরেকজন হলেন ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফ! এই মানুষটি তার জীবনের শেষ সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ইসলাম ও বিশুদ্ধ আক্বীদাহ নিয়ে অনেক লেখালেখি করতেন।
ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে তার একটি সাক্ষাৎকার রয়েছে যেখানে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, সেক্যুলারিজমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে কেউ যদি আমাকে মৌলবাদী ট্যাগ দেয়, তাতেও আমার আপত্তি নেই! তার সেই চমৎকার সাক্ষাৎকারটি শুনতে পারেন -

► লিংকঃ https://youtu.be/dA2YDLZlrOQ

.যদি এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে মুফতী সাহেব আহলে হাদিসদের উপর এই অপবাদ দেন যে, আহলে হাদিসরা শিরকে আকবরে লিপ্ত রয়েছেন তাহলে আমরা বলবো - এদেশীয় সকল দল, সংগঠনই এই শিরকে লিপ্ত রয়েছেন! এমনকি স্বয়ং মুফতী সাহেবের একাধিক মাহফিলের প্রধান অতিথির আসনে ছিলেন রাজনৈতিক দলের নেতাগণ! তারমানে কি মুফতী সাহেব নিজেও শিরকে আকবরে লিপ্ত!?
আমরা মুফতী সাহেবকে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই হাদিসটি একটু স্বরণ করিয়ে দিতে চাই! যেখানে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إِنَّ اللّٰهَ لَيُؤَيِّدُ هٰذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ» ‘
‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা পাপী ব্যক্তিদের মাধ্যমেও তাঁর দ্বীনকে শক্তিশালী করেন’’। [ সহীহুল বুখারী হাঃ ৩০৬২ ]
.
🔸উপসংহার:
পরিশেষে আবারও বলছি আহলে হাদিস মসজিদে খুতবা দিয়ে, আহলে হাদিসদের সম্মেলনে বিশেষ মেহমানের আসনে বসে উল্টো আহলে হাদিসদের নামেই মিথ্যাচার করে পাপের বোঝা ভারী করিয়েন না । নতুবা আল্লাহপ্রদত্ত কঠিন শাস্তির জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। ঐ শুনুন, মহান আল্লাহর হুশিয়ারি— “যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের (অর্থাৎ, সালাফদের) পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরিয়ে দিব, যে পথে সে ফিরে যায় এবং তাকে দগ্ধ করব জাহান্নামে। আর তা কতই না মন্দ আবাসস্থল!” [সূরাহ নিসা: ১১৫]
হে আল্লাহ, আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে সালাফী মানহাজ অনুসরণ করার তাওফীক্ব দিন এবং অসাধু বক্তাদের বক্তব্যের ফিতনাহ থেকে আমাদের হিফাযত করুন। আমীন, ইয়া রব্বাল ‘আলামীন।
.
আপনাদের স্নেহের দ্বীনী ভাই -
আখতার বিন আমীর।

Post a Comment

0 Comments