- নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন
- এই পর্বে থাকছে ‘আল্লামাহ সুলাইমান আবা খাইল এবং মাদীনাহ’র ফাক্বীহ ‘আল্লামাহ সুলাইমান আর-রুহাইলী’র ফাতাওয়া।
- ৯ম পর্ব ১৮শ অধ্যায়: ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) এবং ১৯শ অধ্যায়: ‘আল্লামাহ সুলাইমান আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ)
- ▌১৮শ অধ্যায়: ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ)
- ·
- শাইখ পরিচিতি:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন হামূদ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) সৌদি আরবের একজন প্রখ্যাত ফাক্বীহ। তিনি ১৩৮১ হিজরী মোতাবেক ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের ক্বাসীম বিভাগের বুকাইরিয়াহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাস্টার্স এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন—ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), ইমাম সালিহ আল-লুহাইদান (হাফিযাহুল্লাহ) প্রমুখ। তিনি বর্তমানে ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সদস্য হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কয়েক মাসের জন্য সৌদি আরবের ধর্মমন্ত্রী হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় আশিটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
- তিনি বড়ো বড়ো ‘আলিমদের কাছে সুপরিচিত। তিনি তাঁদের সাথে খুব ভালোভাবে সংযুক্ত ছিলেন এবং এখনও আছেন। ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁকে নিজের কিতাব সংশোধনের, কিতাবের হাদীস তাখরীজের এবং তা প্রকাশের অনুমতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ)’র কাছে ‘আল্লামাহ আবা খাইলের একটি কিতাবের ব্যাপারে অভিযোগ উত্থাপন করা হলে তিনি ‘আল্লামাহ আবা খাইলের প্রশংসা করেন এবং তাঁর কিতাবটি প্রচার করতে বলেন।
- মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন, “সম্মানিত শাইখ সালিহ আল-ফাওযান এবং সম্মানিত শাইখ সুলাইমান আবা খাইল আমাদের কিবার (বড়ো) ‘আলিমগণের অন্তর্ভুক্ত।” [শাইখের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টের টুইট থেকে সংগৃহীত; টুইটের তারিখ: ৫ই এপ্রিল, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ]
- আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত:abaalkheel.wordpress.com ও wikipedia.org।
- ·
- ১ম বক্তব্য:
- ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) ১৪৩৯ হিজরীর ১৬ই রজব তারিখে মাদীনাহ মুনাওয়্যারাহ’য় অবস্থিত ক্বুবা মাসজিদে “মুসলিম ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াত: প্রকৃতত্ব ও ভয়াবহতা (দা‘ওয়াতুল ইখওয়ানিল মুসলিমীন হাক্বীক্বাতুহা ওয়া খাত্বারুহা)” শিরোনামে একটি গুরুত্বপূর্ণ লেকচার প্রদান করেন। লেকচারটি ‘মীরাসুল আম্বিয়া রেডিয়ো’ সরাসরি সম্প্রচার করে। এই লেকচারে ‘আল্লামাহ ড. আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রকৃতত্ব এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কে খুবই জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছেন। আমরা লেকচারটি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ টেক্সটে রূপান্তর করে অনুবাদ করার প্রয়াস পাব, ইনশাআল্লাহ।
- আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৮১ হি./১৯৬১ খ্রি.] বলেছেন,
- موقف العلماء من تنظيم جماعة الإخوان: ولو أردنا أن نحصر كلّ ما قاله علمائنا المحققون فيما يخص هذه الجماعة لَاحْتَجْنَا إلى وقت طويل، لكن نذكر ما تيسر من أقوالهم، سئل سماحة الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله عن تنظيم جماعة الإخوان المسلمين وجماعة التبليغ وما هم عليه من البدع والشركيات خصوصًا جماعة التبليغ أن جماعة الإخوان ما هي عليه من الخروج على ولي الأمر وكذلك عدم السمع والطاعة للحكام، فأجاب رحمه الله بقوله: إن أيَّ جماعة تخالف منهج أهل السنة والجماعة فهي مرفوضة وغير مقبولة ولا يمكن أن تقر أو تقبل وخصوصًا في المجتمعات المسلمة وعلى وجه الخصوص في المملكة العربية السعودية.
- ثم عاد السائل فقال لسماحة الشيخ رحمه الله: هل تعد جماعة التبليغ وتنظيم جماعة الإخوان من الثنتين وسبعين فرقة، فقال سماحته: نعم، هما من الثنتين وسبعين فرقة، وكذلك المرجئة والخوارج، –ثم قال– بعض العلماء إنهم كفار ولكنهم يدخلون في الثنتين وسبعين فرقة.
- وسئل سماحة الشيخ صالح بن فوزان الفوزان حفظه الله عما نسبه مرشد الإخوان عبر صحيفة من الصحف بأن شيخ الوهابية –يقصدون الشيخ ابن باز رحمه الله تعالى– يدعو إلى الإلتحاق ويحث على الإلتحاق بتنظيم جماعة الإخوان، هل هذا صحيح أم غير صحيح؟ فأجاب الشيخ صالح الفوزان حفظه الله بقوله: إن الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله يدعو إلى التعاون على البر والتقوى والإجتماع تحت لواء جماعة المسلمين في بلدانهم بعيدًا عن التحزب والتنظيمات والجماعات المنحرفة، وإن الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله لم يحث على الإلتحاق والإنتساب إلى تنظيم جماعة الإخوان المسلمين لا في كتبه ولا في دروسه ولا في غير ذلك.
- وقال الإمام الألباني رحمه الله تعالى عندما سئل كذلك عن تنظيم جماعة الإخوان المسلمين: هل هو من أهل السنة والجماعة؟ قال: لا، ليسوا من أهل السنة والجماعة، لأن عندهم مبدأ يقول: نتفق على ما اتفقنا عليه ويعذر بعضنا بعضًا على ما اختلفنا فيه.
- وسئل الشيخ صالح بن محمد اللحيدان حفظه الله عن حكم هذه الجماعة وهل هي من أهل السنة والجماعة؟ فقال: إن جماعة التبليغ وجماعة الإخوان ليست على منهج صحيح.
- وكذلك قرر هذا الأمر الشيخ صالح بن فوزان الفوزان حفظه الله في أكثر من مناسبة ومحاضرة وموقع، وقال بعض العلماء من مصر الشقيقة وذلك عبر فتوى أقرها كبار علماء الأزهر إن هذه الدعوة –يقصدون دعوة الإخوان المسلمين– دعوة منحرفة يجب الحذر منها.
- وأبعد من ذلك قال العلامة المحدث أحمد شاكر رحمه الله تعالى في كتابه «شؤون القضاء والتعليم» الصفحة الثامنة والأربعين: دعوة حسن البنا هي التي قلبت الدعوة الإسلامية إلى دعوة إجرامية تدعم من اليهود والشيوعيين.
- وقال محمد عبد الوهاب البنا: إن أول من شنّ الخروج على ولي الأمر في العصر الحديث هو حسن البنا وذلك عبر المظاهرات والإنقلابات، ونستكمل الحديث بعد الصلاة.
- “ব্রাদারহুডের ব্যাপারে ‘আলিমগণের অবস্থান: এই দলের ব্যাপারে আমাদের মুহাক্বক্বিক্ব ‘আলিমগণ যা বলেছেন, তার সবই যদি আমরা একত্রিত করতে চাই, তাহলে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। কিন্তু আমরা তাঁদের বক্তব্য থেকে সাধ্যমত কিছু উক্তি উল্লেখ করছি।
- সম্মানিত শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) কে মুসলিম ব্রাদারহুড ও তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে এবং তারা যে শির্ক ও বিদ‘আতের উপর আছে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। বিশেষ করে তাবলীগ জামা‘আতের ব্যাপারে। আর মুসলিম ব্রাদারহুড যে আদর্শের উপর আছে সে ব্যাপারে, তথা শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা, অনুরূপভাবে শাসকদের আনুগত্য না করা প্রভৃতি।
- তখন শাইখ (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তর দিয়েছিলেন, “যে দলই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজের বিরোধিতা করে, সে দলই প্রত্যাখ্যাত ও অগ্রহণযোগ্য। এমন দলকে স্বীকৃতি ও অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়, বিশেষ করে মুসলিম সমাজে এবং বিশেষত সৌদি আরবে।”
- প্রশ্নকারী পুনরায় সম্মানিত শাইখকে প্রশ্ন করে বলে, “তাবলীগ জামা‘আত এবং মুসলিম ব্রাদারহুড কি (পথভ্রষ্ট) ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত?” শাইখ জবাবে বলেছেন, “হ্যাঁ। তারা ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে মুরজিয়া ও খারিজী সম্প্রদায়।” তারপর বলেছেন, “কতিপয় ‘আলিম বলেছেন, তারা (খারিজী সম্প্রদায়) কাফির। কিন্তু তারা ৭২ ফিরক্বাহ’র অন্তর্ভুক্ত।”
- সম্মানিত শাইখ সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) কে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, “ব্রাদারহুডের প্রধান (মুরশিদুল ইখওয়ান) এক পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন যে, ওয়াহাবীদের শাইখ –তারা এই কথার দ্বারা শাইখ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) কে উদ্দেশ্য করেছে– ব্রাদারহুডে যোগদান করার দিকে (মানুষকে) আহ্বান করেছেন এবং এতে উৎসাহ প্রদান করেছেন। এই কথাটি কি বিশুদ্ধ, নাকি অশুদ্ধ?”
- শাইখ সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) জবাবে বলেছেন, “নিশ্চয় শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) কল্যাণ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করার দিকে এবং দলাদলি ও বিভিন্ন বিপথগামী জামা‘আত থেকে দূরে থেকে মুসলিমদের দেশসমূহে তাদের জামা‘আতের (জামা‘আতুল মুসলিমীনের) পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে আহ্বান করেছেন। শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগদান করতে উৎসাহিত করেননি, না তাঁর গ্রন্থাবলিতে, আর না তাঁর দারসসমূহে, আর না অন্য কিছুতে।”
- ইমাম আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) কে যখন মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, “এই দল কি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত?” তখন তিনি বলেছিলেন, “না। তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা তাদের কাছে একটি মূলনীতি আছে, যে মূলনীতিটি বলে, ‘আমরা যে ব্যাপারে একমত, সে ব্যাপারে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, আর যে ব্যাপারে আমরা একমত নই, সে ব্যাপারে আমরা একে অপরকে মার্জনা করব’।”
- শাইখ সালিহ বিন মুহাম্মাদ আল-লুহাইদান (হাফিযাহুল্লাহ) কে এই দলটির বিধান প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছে। আর জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, “এই দলটি কি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত?” তিনি বলেছেন, “তাবলীগ জামা‘আত এবং ব্রাদারহুড সঠিক মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়।”
- অনুরূপভাবে শাইখ সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) অসংখ্য জায়গায় এবং বক্তব্যে এই বিষয়টির স্বীকৃতি দিয়েছেন। এছাড়াও মিশরের বেশ কিছু ‘আলিম ফাতওয়ার মাধ্যমে বলেছেন, যে ফাতওয়ার স্বীকৃতি দিয়েছেন আল-আযহারের বয়োজ্যেষ্ঠ ‘আলিমগণ, “নিশ্চয় এই দা‘ওয়াত –তাঁরা এর দ্বারা উদ্দেশ্য করেছেন মুসলিম ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াত– একটি বিপথগামী দা‘ওয়াত, এ থেকে সতর্ক থাকা আবশ্যক।”
- আর আল-‘আল্লামাহ আল-মুহাদ্দিস আহমাদ শাকির তাঁর লেখা “শু‘ঊনুল ক্বাদ্বা ওয়াত তা‘লীম” গ্রন্থের ৪৮ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “হাসান আল-বান্না’র দা‘ওয়াত ইসলামী দা‘ওয়াতকে অপরাধমূলক দা‘ওয়াতে পরিবর্তন করেছে। আর এই দা‘ওয়াতের পৃষ্ঠপোষকতা করে ইহুদি ও কমিউনিস্ট সম্প্রদায়।”
- (শাইখ) মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-বান্না বলেছেন, “আধুনিক যুগে শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার বিদ‘আত সর্বপ্রথম চালু করেছেন হাসান আল-বান্না। আর তা বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং বিপ্লবের মাধ্যমে।” আমরা সালাতের পর বাকি কথা শেষ করব।” [“দা‘ওয়াতুল ইখওয়ানিল মুসলিমীন হাক্বীক্বাতুহা ওয়া খাত্বারুহা”– শীর্ষক লেকচার; লেকচারের তারিখ: ১৬ই রজব, ১৪৩৯ হিজরী; অনূদিত অংশের সময়: ১ ঘণ্টা ১২ মিনিট ৫ সেকেন্ড থেকে ১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট ১৭ সেকেন্ড পর্যন্ত; লেকচার লিংক: https://tinyurl.com/
ycj2wyfg(miraath.net এর অডিয়ো লিংক)] - ·
- ২য় বক্তব্য:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) আলোচ্য বক্তব্যে মুসলিম ব্রাদারহুড সম্পর্কে বলেছেন,
- أيها الإخوة الكرام والطلاب النجباء، رأينا وقرأنا وسمعنا أن أحد رموزهم وأعلامهم لمّا كانت الصولة والجولة لغير تنظيمهم، كان يضعّف حديث السمع والطاعة لولي الأمر، ثم لمّا سيطروا ووصلوا إلى الحكم في بعض البلدان راح يصححها ويدعوا إلى نشرها، ثم لمّا أزالهم الله عز وجل عاد يضعفها بل قد يرى أنها أقل من ضعيفة، فهل هذا دين؟! هل يرضى بذلك مسلم؟
- “সম্মানিত ভ্রাতৃমণ্ডলী, আর শ্রেষ্ঠ ছাত্রবৃন্দ, আমরা দেখেছি, পড়েছি এবং শুনেছি যে, যখন তাদের দল ব্যতীত অন্য কোনো দল ক্ষমতাসীন হয়, তখন তাদের এক নেতা শাসকের আনুগত্য সম্পর্কিত হাদীসকে দ্ব‘ঈফ (দুর্বল) বলে। আর যখন তারা (ব্রাদারহুড) কোনো রাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন হয়, তখন তারা ওই হাদীসগুলোকে সাহীহ (বিশুদ্ধ) বলতে শুরু করে এবং হাদীসগুলো প্রচার করার দিকে (লোকদের) আহ্বান করে। তারপর মহান আল্লাহ যখন তাদেরকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেন, তখন তারা পুনরায় হাদীসগুলোকে দ্ব‘ঈফ বলতে শুরু করে। বরং কখনো কখনো মনে করে যে, হাদীসগুলো দ্ব‘ঈফের চেয়েও নিচু স্তরের। এটা কি দ্বীন?! একজন মুসলিম কি এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকতে পারে?!” [প্রাগুক্ত; অনূদিত অংশের সময়: ৫৮ মিনিট ৩২ সেকেন্ড থেকে ৫৯ মিনিট ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত]
- ·
- ৩য় বক্তব্য:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) প্রদত্ত ফাতওয়া—
- السؤال: ما رأي فضيلتكم فيمن يقول: أن خصومتنا لليهود ليست دينية، لأن القرآن الكريم حض على مصافاتهم ومصادقتهم؟
- الجواب: هذا الكلام نقلناه عن مؤسس جماعة تنظيم الإخوان، وهذا الكلام هو من المآخذ التي تؤخذ على هذا التنظيم، ويدل دلالة واضحة على أنهم يخالفون منهج أهل السنة والجماعة وأنهم لا يفرقون بين الملل والنحل والدعوات والأديان، ولذلك لا بد أن ننتبه من مثل هذه التقريرات والمقولات.
- প্রশ্ন: “ওই ব্যক্তির ব্যাপারে আপনার অভিমত কী, যে বলে, ‘আমাদের সাথে ইহুদিদের বিরোধ ধর্মীয় নয়। কেননা ক্বুরআনুল কারীম তাদের সাথে আন্তরিক আচরণ ও বন্ধুত্ব করতে উৎসাহিত করেছে’?”
- উত্তর: “আমরা এই কথা ব্রাদারহুডের প্রতিষ্ঠাতা (হাসান আল-বান্না) থেকে বর্ণনা করেছি। এই কথা ওই সমস্ত ত্রুটিবিচ্যুতির অন্তর্ভুক্ত, যে ত্রুটিবিচ্যুতির অভিযোগ এই দলটির বিরুদ্ধে করা হয়। আর এই কথা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজের বিরোধিতা করে। এবং তারা বিভিন্ন দল, দা‘ওয়াত ও ধর্মের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে না। তাই এ সমস্ত কথাবার্তা ও মূলনীতি থেকে আমাদের সতর্ক থাকা আবশ্যক।” [প্রাগুক্ত; অনূদিত অংশের সময়: ১ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড থেকে ১ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড পর্যন্ত]
- ·
- ▌১৯শ অধ্যায়: ‘আল্লামাহ সুলাইমান আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ)
- ·
- শাইখ পরিচিতি:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) সৌদি আরবের একজন প্রখ্যাত ফাক্বীহ। তাঁর জন্ম ও প্রতিপালন মাদীনাহ মুনাওয়্যারাহ’য়। তিনি মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শারী‘আহ অনুষদ থেকে অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি করেছেন। এখানে তাঁর অন্যতম শিক্ষক ছিলেন ‘আল্লামাহ ‘আলী আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ)। তিনি অনেক বড়ো বড়ো ‘আলিমের তা‘লীমী মজলিসে বসার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। সেসব ‘আলিমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন—ইমাম ইবনু বায, ইমাম আলবানী, ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন, ইমাম ‘আব্দুর রহমান আল-আফরীক্বী, ইমাম ‘উমার ফাল্লাতাহ প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)।
- তিনি বর্তমানে মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হায়ার স্টাডিজের অধ্যাপক এবং মাসজিদে নাবাউয়ীর সম্মানিত মুদার্রিস। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর বেশকিছু গ্রন্থ এবং অডিয়ো ও ভিডিয়ো ক্লিপস রয়েছে। ‘আলিমদের কাছে তিনি একজন বিদ্বান হিসেবে সুপরিচিত। আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: আজুর্রি (ajurry) ডট কম।
- ·
- ১ম বক্তব্য:
- সৌদি আরবের জাযান জেলার অন্তর্গত ‘হারূব’ শহরস্থ শাইখ মাত্বা‘ইন জামে মাসজিদে ১৪৪০ হিজরীর ২রা রাবী‘উল আওয়্যাল তারিখে “সন্ত্রাসী সংগঠন ব্রাদারহুডের কর্মপদ্ধতি এবং সমাজে এই সংগঠনের কুপ্রভাব (আসালীবু তানযীমিল ইখওয়ানিল ইরহাবী ওয়া খাত্বারাহু ‘আলাল মুজতামা‘)” শিরোনামে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এই সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মাসজিদে নাবাউয়ীর সম্মানিত মুদার্রিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) এবং ফাদ্বীলাতুশ শাইখ ‘আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আন-নাজমী (হাফিযাহুল্লাহ)।
- সম্পূর্ণ সেমিনারের আলোচনা “যিদনী আল-‘ইলমিয়্যাহ রেডিয়ো” সম্প্রচার করেছে। সেমিনারটির আলোচনার অডিয়ো “যিদনী আল-‘ইলমিয়্যাহ”-র ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে। এই সেমিনারে ‘আল্লামাহ ড. সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) খুবই জ্ঞানগর্ভ ও তথ্যবহুল আলোচনা পেশ করেছেন। আমরা তাঁর আলোচনা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ টেক্সটে রূপান্তর করে অনুবাদ করার প্রয়াস পাব, ইনশাআল্লাহ।
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন,
- إن هذا التنظيم المتسمى بجماعة الإخوان المسلمين تنظيم له خطر كبير وشره مستطير، فهو تنظيم بدعي تكفيري يقوم على الإغتيالات واستحلال الدماء، قد سمعتم من فضيلة الشيخ عبد الله النجمي وفقه الله شيئًا مما عنده من خطورة هذا التنظيم، وهذا التنظيم ينتهج أساليب خبيثة من وصول إلى قلوب الناس، ومن أساليب هذا التنظيم أنه يعمد إلى القلوب لتُظلِم على ولاة الأمر وعلى العلماء وعلى كبار السن وعلى المجتمع، فهم يعمدون إلى أسلوب التنفير من كل ما يعلمون أنه سيكون عائقًا أمام انتشار فكرهم، فيعمدون إلى التنفير من الحكام، من حكام المسلمين، يكفّرونهم وينشرون عيوبهم ويكذبون عليهم ويضخمون الأخطاء من أجل أن تظلم القلوب على الحكام، ومن أجل أن يكره الناس حكامهم ليكون الناس في شرّ، فإن النبي ﷺ قال: «خيار أئمتكم الذين تحبونهم ويحبونكم وتصلّون عليهم ويصلّون عليكم، وشرار أئمتكم الذين تبغضونهم ويبغضونكم وتلعنونهم ويلعنونكم».
- كما أنهم يعمدون إلى أسلوب التنفير من العلماء الربانيين بوصفهم بالأوصاف المنفرة من أجل ألا يرجع إليهم، وهم يتخذون في ذلك طريقين، الطريق الأولى: السب والشتم للعلماء لمن وجدوا منه أنه يقبل ذلك، فيسبون العلماء الربانيين حتى ينفر الشباب عن العلماء، وأما الطريق الثانية فهي طريق ماكرة، يأتون للشاب ويقولون: هؤلاء علماء كبار، علمهم عالي، وأنت لا تستطيع أن تفهم كلامهم، لا تذهب إليهم مباشرًا، تَعالْ عندنا في الحلقات، تعال عندنا في الإستراحات، تعال مع الشيخ فلان والشيخ فلان، ثم بعد ذلك تنتقل إلى العلماء الكبار، فإذا درس على فلان أو فلان كره العلماءَ ولم يصل إلى العلماء، وهذا طريق خبيث في التنفير من العلماء.
- كما أنهم يعمدون إلى التنفير من كبار السن، يأتون إلى الشاب وينفّرونه من والديه ومن أعمامه ومن أخواله، ويقولون: هؤلاء عوامّ، قد تركوا الدين، وابتعدوا عن الدين، ما ينبغي أن نسمع لهم، لأنهم يعلمون أن كبار السن حتى لو لم يكن عندهم علم فعندهم حكمة، تعلموا من الدنيا وفهموا ما يضر وينفع في هذه الأمور، فيردون الشباب عن التهور، فيكرهون الشاب في والديه، ولذلك تجد الشاب إذا انتظم في طريق هؤلاء إذا جاء إلى البيت لا يكاد يكلّم والديه، يدخل ويسلم ويجلس في غرفته، ينقطع ولا يتصل بأعمامه ولا بأخواله، حتى يظلم قلبه جهة كبار السن.
- أيها الفضلاء، من أساليبهم التنفير من الحكام، التنفير من العلماء الربانيين، التنفير من كبار السن، التنفير من المجتمع، وزعم أن المجتمع أصبح فاسدًا وأنه لا خير فيه من أجل أن يبحث الشاب عن مجتمع بديل، فتظلم القلوب، ولذلك يا أيها الأب ويا أيتها الأم المباركة، إذا رأيتم من إبنكم هذه العلامة فافزعوا واحذروا وانتبهوا واسعوا إلى الإصلاح، إذا وجدتم أنه أصبح يطنطن على الحكام على ولاة أمرنا وعلى كرههم، فاعلم أنه يُدس له السم، إذا رأيت أنه أصبح يطعن في العلماء الربانيين ويدندن حولهم فاعلم أن هناك داءً، إذا رأيته ينفِر منك ومن أمه ومن عمه ومن عمته ومن خاله ومن خالته فاعلم أن هناك مرضًا في قلبه، إذا رأيته يسب المجتمع ويسب القبيلة ويسب المحافظة وينظر نظرة سوداء إلى هذا فاعلم أنه مريض، وانتبه قبل أن تفجع فيه أو تفجع منه.
- “মুসলিম ব্রাদারহুড নামক সংগঠনের বড়ো ভয়াবহতা রয়েছে। এই সংগঠনের অনিষ্ট অনেক বিস্তৃত। এটি একটি বিদ‘আতী ও তাকফীরকারী সংগঠন, যা গুপ্তহত্যা এবং রক্ত হালালকরণের মতো কাজ সংঘটন করে। আপনারা কিছুপূর্বে সম্মানিত শাইখ ‘আব্দুল্লাহ আন-নাজমী’র (আল্লাহ তাঁকে সফলতা দিন) নিকট থেকে এই সংগঠনের কিছু ভয়াবহতা সম্পর্কে শুনেছেন। এই সংগঠন মানুষের অন্তরে পৌঁছার জন্য কিছু অনিষ্টকর কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করে।
- এই সংগঠনের একটি অন্যতম কর্মপদ্ধতি হলো—এরা মানুষের অন্তরে গমন করে, যাতে করে মানুষের অন্তরসমূহ শাসকবর্গ, ‘আলিম-‘উলামা, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ এবং সমাজের ব্যাপারে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। তারা এই পদ্ধতির উপর নির্ভর করে—তাদের আদর্শ প্রচারের ক্ষেত্রে তারা যাকে বাধা মনে করবে, তার নিকট থেকে মানুষকে বিতাড়ন করবে। তারা শাসকবর্গ থেকে মানুষকে বিতাড়ন করে, মুসলিমদের শাসকবর্গ থেকে।
- তারা শাসকদের কাফির ফাতওয়া দেয়, তাদের দোষত্রুটি প্রচার করে, তাদের উপর মিথ্যাচার করে এবং তাদের দোষত্রুটি বড়ো করে প্রদর্শন করে। যাতে করে অন্তরসমূহ শাসকদের ব্যাপারে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। যাতে করে মানুষ তাদের শাসকবর্গকে ঘৃণা করে, আর যাতে মানুষ অনিষ্টের মধ্যে পতিত হয়। কেননা নাবী ﷺ বলেছেন, “তোমাদের সর্বোত্তম নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ভালোবাস, আর তারাও তোমাদেরকে ভালোবাসে। তারা তোমাদের জন্য দু‘আ করে, তোমরাও তাদের জন্য দু‘আ করো। পক্ষান্তরে তোমাদের নিকৃষ্ট নেতা হচ্ছে তারাই যাদেরকে তোমরা ঘৃণা করো, আর তারাও তোমাদেরকে ঘৃণা করে। তোমরা তাদেরকে অভিশাপ দাও, আর তারাও তোমাদেরকে অভিশাপ দেয়।” (সাহীহ মুসলিম, হা/১৮৫৫; ‘প্রশাসন ও নেতৃত্ব’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ১৭)
- অনুরূপভাবে তারা আল্লাহওয়ালা ‘আলিমগণের নিকট থেকে মানুষকে বিতাড়ন করার পদ্ধতি অবলম্বন করে। আর তারা তা (বাস্তবায়ন করে), তাঁদেরকে ‘তাঁদের নিকট থেকে বিতাড়নকারী’ মন্দ বিশেষণে বিশেষিত করার মাধ্যমে। যাতে করে তাঁরা মানুষের প্রত্যাবর্তনস্থল না হন। তারা এ ব্যাপারে দুটি পন্থা অবলম্বন করে।
- প্রথম পন্থা: যারা তাদের কথা গ্রহণ করবে বলে তারা মনে করে, তাদের কাছে তারা ‘আলিমগণকে গালিগালাজ করে। তারা আল্লাহওয়ালা ‘আলিমদের গালিগালাজ করে, যাতে করে যুব-সম্প্রদায় ‘আলিমদের নিকট থেকে দূরে থাকে।
- দ্বিতীয় পন্থা: এটি একটি ধোঁকাবাজী পন্থা। তারা তরুণের কাছে এসে বলে, “তাঁরা অনেক বড়ো মাপের ‘আলিম। তাঁদের ‘ইলম অনেক উঁচু পর্যায়ের। তুমি তাঁদের কথা বুঝতে পারবে না। তাই তুমি সরাসরি তাঁদের কাছে যেয়ো না। তুমি আমাদের মজলিসে আসো, আমাদের আসরে আসো। তুমি অমুক শাইখের কাছে যাও, অমুক শাইখের কাছে যাও। এরপর তুমি বড়ো ‘আলিমদের কাছে যেয়ো।” তারপর ওই তরুণ যখন অমুক আর অমুকের কাছে পড়াশুনা করে, তখন সে ‘আলিমদের ঘৃণা করতে শুরু করে। সে ‘আলিমদের কাছে পৌঁছতে পারে না। এটা ‘আলিমদের নিকট থেকে মানুষকে বিতাড়ন করার একটা খবিস তরিকা।
- অনুরূপভাবে তারা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের নিকট থেকে তরুণদের বিতাড়ন করে। তারা তরুণের কাছে আসে এবং তরুণের পিতামাতা, চাচা-জ্যাঠা ও মামাদের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। তারা বলে, “তারা আম পাবলিক, তারা দ্বীনকে বর্জন করেছে, দ্বীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাদের কথা আমাদের শোনা উচিত নয়।” কেননা তারা জানে যে, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের যদি ‘ইলম নাও থাকে, তবুও তাঁদের হিকমাহ (প্রজ্ঞা) আছে। তাঁরা দুনিয়া থেকে শিখেছেন এবং বুঝেছেন এই বিষয়াদির ক্ষেত্রে কোনটা কল্যাণকর আর কোনটা ক্ষতিকর। তাঁরা তরুণদেরকে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া থেকে ফিরিয়ে আনবেন। তাই তারা তরুণের মধ্যে তার পিতামাতার প্রতি ঘৃণার উদ্রেক করে।
- একারণে তুমি দেখবে, যে তরুণ ওদের পথে যোগদান করেছে, সে যখন বাড়ি আসে তখন নিজের পিতামাতার সাথে কথা বলে না। সে বাড়িতে ঢুকে, সালাম দেয়, তারপর নিজের রুমে বসে থাকে। সে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সে তাঁর চাচা-জ্যাঠা ও মামাদের সাথে যোগাযোগ করে না। ফলে তার অন্তর বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের ব্যাপারে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়।
- সম্মানিত উপস্থিতি, তাদের অন্যতম একটি কর্মপদ্ধতি হলো—শাসকবর্গ, আল্লাহওয়ালা ‘আলিমবৃন্দ, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ ও সমাজ থেকে তরুণদের বিতাড়ন করা। তরুণ ধারণা করে, সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে, এতে কোনো কল্যাণ নেই। যাতে করে তরুণ একটি বিকল্প সমাজব্যবস্থা তালাশ করে। ফলে অন্তরসমূহ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়।
- তাই হে পিতা! হে বরকমতময় জননী! যখন আপনারা আপনাদের সন্তানের মধ্যে এই আলামত দেখবেন, তখন আপনারা সতর্ক ও সচেতন হবেন, তাকে সতর্ক করবেন এবং সংশোধনের পথ দেখাবেন। যখন দেখবেন যে, সে শাসনকর্তার বিরুদ্ধে কথা বলছে, আমাদের শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলছে এবং তাদের প্রতি ঘৃণা ব্যক্ত করছে, তখন আপনি জানবেন যে, তাকে বিষ গেলানো হয়েছে।
- আপনি যখন দেখবেন যে, সে আল্লাহওয়ালা ‘আলিমদের নিন্দা করছে, তাদের ব্যাপারে মন্দ কথা বলছে, তখন আপনি জানবেন যে, তার রোগ আছে। আপনি যখন দেখবেন যে, সে আপনার নিকট থেকে, তার মা, চাচা-চাচী এবং মামা-মামীর নিকট থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তখন আপনি জানবেন যে, তার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে।
- আপনি যখন দেখবেন যে, সে সমাজকে গালি দিচ্ছে, গোত্রকে গালি দিচ্ছে, জেলাকে গালি দিচ্ছে, এসবের দিকে কুদৃষ্টিতে তাকাচ্ছে, তখন আপনি জানবেন যে, সে অসুস্থ। আপনি তাকে হারানোর পূর্বেই এবং তার দ্বারা যন্ত্রণাক্লিষ্ট হওয়ার পূর্বেই সতর্ক হোন।” [“আসালীবু তানযীমিল ইখওয়ানিল ইরহাবী ওয়া খাত্বারাহু ‘আলাল মুজতামা‘”– সেমিনার; সেমিনারের তারিখ: ২রা রাবী‘উল আওয়্যাল, ১৪৪০ হিজরী; অনূদিত অংশের সময়: ৫০ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড থেকে ৫৭ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড পর্যন্ত; সেমিনারের অডিয়ো লিংক: https://m.youtube.com/
watch?v=0XAZTt4E_Bw.] - ·
- ২য় বক্তব্য:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন,
- من أساليبهم السيطرة على جمعية تحفيظ القرآن، وتحفيظ القرآن نور عظيم، ولكنهم لا يريدون تحفيظ القرآن، ولكن يريدون أن يسيطروا على الشباب الذين يحضر لحلق تحفيظ القرآن، ولا يهتمون بتعليمهم القرآن، وإنما يجعلون ذلك غطاءً، ويمررون لهم كتب سيد قطب وكتب المفكرين لهذه الجماعة، ويأخذونهم إلى الرحلات ويدربونهم على السلاح كما ثبت هذا عندنا، وليس العيب في جمعية تحفيظ القرآن، ولكن العيب في هؤلاء الخباث الذين يستعملون الخير لتحقيق مقاصدهم.
- “তাদের একটি কর্মপদ্ধতি হলো—ক্বুরআন হিফয করানোর সংস্থা করায়ত্ত করা। ক্বুরআন হিফয করানো এক মহান নূর (জ্যোতি)। কিন্তু তারা ‘ক্বুরআন হিফয’ চায় না। বরং তারা ক্বুরআন হিফয করানোর মজলিসে যেসব যুবক উপস্থিত হয়, তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তারা ক্বুরআন হিফযের ব্যাপারটিকে স্রেফ ক্যামোফ্লাজ হিসেবে ব্যবহার করে। মূলত তারা তাদেরকে সাইয়্যিদ ক্বুত্বুবের বইপুস্তক এবং এই দলের চিন্তাবিদদের লেখা বইপুস্তক অনুশীলন করায়। তারা তাদেরকে ভ্রমণে নিয়ে যায় এবং তাদেরকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়। যেমনটি আমাদের কাছে প্রমাণিত হয়েছে। ক্বুরআন হিফয করানোর সংস্থায় কোনো দোষ নেই। কিন্তু অপরাধ ও দোষ তো ওই সকল খবিসদের, যারা ভালো বিষয়কে তাদের নিজেদের অভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহার করে।” [প্রাগুক্ত; অনূদিত অংশের সময়: ৫৯ মিনিট ৮ সেকেন্ড থেকে ১ ঘণ্টা ৩ সেকেন্ড পর্যন্ত]
- ·
- ৩য় বক্তব্য:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
- ومن أساليبهم الماكرة يا إخوة، العمل على تشويه صورة كل من يخالفهم، ولا سيما إذا كان يقف في وجه دعوتهم بكشف خطورتها وأساليبها بوصفه بالأوصاف المنفرة، كقولهم: فلان مباحث ورتبة، قالوا عن أحد مشايخنا له مكتب بجوار مكتب الأمير نايف رحمه الله يعنى رتبة كبيرة في الداخلية، وعميل وذيل بغلة السلطان وفلان جيد في الفقه لكنه مسكين مغفل في الواقع، ما يفقه الواقع، مدخلي، جامي. وكذلك الدولة التي تقف في وجه الجماعة تهاجم وتنظم حملة ضدها ويلصق بها كل شرّ، كما يعملون مع دولتنا اليوم، لمّا قام الأسد سمو الأمير محمد بن سلمان ولي العهد حفظه الله في وجههم وكشفهم ووصفهم قاموا يرمونه بنبل واحدة، يشوهونه ويكذبون عليه يلصقون به التّهم مستعملين من يوافقهم من أهل السياسة ونحوها.
- “হে ভ্রাতৃমণ্ডলী, তাদের একটি চক্রান্তমূলক কর্মপদ্ধতি হলো—যেই তাদের বিরোধী, তারই দুর্নাম করতে প্রবৃত্ত হওয়া। বিশেষত কেউ যখন তাদের দা‘ওয়াতের ভয়াবহতা ও কর্মপদ্ধতি উন্মোচন করেন, তখন তারা ‘তাঁর নিকট থেকে মানুষকে দূরীভূত করে এমন’ বিশেষণের মাধ্যমে তাঁকে বিশেষিত করে। যেমন তারা বলে, অমুক ব্যক্তি গুপ্তচর, পদলোভী ইত্যাদি। তারা আমাদের এক শাইখ সম্পর্কে বলেছে, “আমীর নায়িফ (রাহিমাহুল্লাহ)’র অফিসের পাশে তাঁরও অফিস আছে”। অর্থাৎ, আভ্যন্তরীণ বিভাগে তাঁর বড়ো পদ আছে। এছাড়াও তারা বলে, “সে একজন দালাল, শাসকের খচ্চরের লেজ। অমুক ব্যক্তি ফিক্বহশাস্ত্রে বেশ ভালো, কিন্তু সে একজন মিসকীন, সে বাস্তবতা সম্পর্কে গাফিল, সে বাস্তবতা সম্পর্কে জানে না।” তারা বলে, “সে একজন মাদখালী, জামী।”
- অনুরূপভাবে যে রাষ্ট্র এই দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে, সে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে (এদের পক্ষ থেকে) আক্রমণ চালানো হবে, ওই রাষ্ট্রের সাথে সমস্ত অনিষ্টতা জুড়ে দেওয়া হবে। যেমনটি তারা বর্তমানে আমাদের রাষ্ট্রের সাথে করছে। যখন সিংহপুরুষ ক্রাউন প্রিন্স আমীর মুহাম্মাদ বিন সালমান (আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করুন) তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন এবং তাদের গোমর ফাঁস করে দিলেন, তখন তারা তাঁকে ‘একটি তির’ বলে অপবাদ দিতে শুরু করল। তারা তাদের সাথে একমত পোষণ করে এমন রাজনীতিবিদদের ব্যবহার করে তাঁর দুর্নাম করল, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করল এবং তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করল।” [প্রাগুক্ত; অনূদিত অংশের সময়: ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৪১ সেকেন্ড থেকে ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিট ১৯ সেকেন্ড পর্যন্ত]
- ·
- ৪র্থ বক্তব্য:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
- من أساليبهم تحميس الشباب وحصر الإسلام في الجهاد بزعمهم هم وفهمهم هم، فلا طريق إلى الجنة إلا بما يسمونه الجهاد، الصلاة ليست طريقًا للجنة، بر الوالدين ليس طريقًا للجنة، طريق الجنة ما يسمونه الجهاد، ويحمسون الشباب ويذكرون فضائل الجهاد، ولا يذكرون حقيقة الجهاد ولا يذكرون شروط الجهاد، وإنما يذكرون فضائل الجهاد من أجل أن يتحمس الشاب، أما ما هو حقيقة الجهاد في الشرع الذي هو ذروة سنام الإسلام ما يذكرونه، ما هي شروط الجهاد الشرعي ما يذكرونه، ثم ماذا يا إخوة؟ يأخذون الشباب إلى مناطق الصراع الساخن التي يسمونها مناطق الجهاد، من أجل أن يجاهدوا في سبيل الله؟ لا واللهِ، من أجل أن تغسل أدمغتهم.
- “তাদের আরেকটি কর্মপদ্ধতি হলো—তাদের নিজেদের ধারণা এবং নিজেদের বুঝ অনুযায়ী যুবকদেরকে জিহাদের ব্যাপারে উত্তেজিত করা এবং ইসলামকে জিহাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা। তারা যেটাকে জিহাদ বলছে, সেটা ছাড়া জান্নাতে যাওয়ার আর কোনো রাস্তা নেই। সালাত জান্নাতের রাস্তা নয়। পিতামাতার সাথে সদাচারণ করা জান্নাতের রাস্তা নয়। জান্নাতের রাস্তা হলো সেটা, যেটাকে তারা জিহাদ বলছে। তারা যুবকদের উত্তেজিত করে, আর জিহাদের ফজিলত বর্ণনা করে।
- তারা জিহাদের হকিকত বর্ণনা করে না, জিহাদের শর্তাবলি বর্ণনা করে না। তারা কেবল জিহাদের ফজিলত বর্ণনা করে, যুবকদের উত্তেজিত করার জন্য। পক্ষান্তরে শরিয়তে ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া জিহাদের হকিকত কী—এটা তারা বর্ণনা করে না। শার‘ঈ জিহাদের শর্তাবলি কী—এটাও তারা বর্ণনা করে না। হে ভ্রাতৃমণ্ডলী, তারপর কী? তারপর তারা যুবকদেরকে উত্তপ্ত যুদ্ধের ময়দানে পাঠায়, যেগুলোকে তারা ‘জিহাদের ময়দান’ বলে অভিহিত করে। এগুলো কি আল্লাহ’র রাস্তায় জিহাদ করার জন্য করে? আল্লাহ’র কসম, না! তারা এগুলো যুবকদের মগজ ধোলাই করার জন্য করে।” [প্রাগুক্ত; অনূদিত অংশের সময়: ১ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট ৪ সেকেন্ড থেকে ১ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট ১৪ সেকেন্ড পর্যন্ত]
- ·৫ম বক্তব্য:
- ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) অন্যত্র বলেছেন,
- الإخوان كالجرب، أبعدوا عنهم، لا تقربوا منهم، لو تدعون واحدًا بواحد خير لكم من أن تنتسبوا إلى جماعة الإخوان.
- لا يجوز الإنتماء إلى جماعة الإخوان ولا أن يعمل معهم في شيء ينسب إليهم.
- “ব্রাদারহুড খোঁচপাচড়ার মতো। তোমরা তাদের থেকে দূরে থাক। তোমরা তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। তোমরা যদি একজন একজন করেও দা‘ওয়াত দাও, তবুও সেটা তোমাদের জন্য ব্রাদারহুডের দিকে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার চেয়ে উত্তম হবে। আর ব্রাদারহুডে যোগদান করা এবং তাদের সাথে সম্পৃক্ত—এমন কিছুতে কাজ করা বৈধ নয়।” [দ্র.: https://m.youtube.com/
watch?v=udMx8Af6acQ (অডিয়ো ক্লিপ)] - ·
- অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
- পরিবেশনায়: www.facebook.com/
SunniSalafiAthari(সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে) - ৯ম পর্ব ১৮শ অধ্যায়: ‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন ‘আব্দুল্লাহ আবা খাইল (হাফিযাহুল্লাহ) এবং ১৯শ অধ্যায়: ‘আল্লামাহ সুলাইমান আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ)
0 Comments