Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

শিয়া-সুন্নী সংঘাত.........

  • #শি'য়াদের প্রতি মহব্বত থাক বা ঘৃনা থাক, প্রবন্ধটি পড়ে নেওয়া উচিৎ। উষ্ট্রের যুদ্ধ, সিফফিনের যুদ্ধ নিয়ে যারা মিনমিনে অবস্থায় আছেন তারাও পড়ে নিবেন৷ #ইয়ামেনে_সৌদির আক্রমণ নিয়ে যারা বেশী পেরেশানিতে আছেন তারা না পড়লে মিস করবেন। পুরোটা পড়লে বুঝবেন শি'য়া কি জিনিস।

    শিয়া-সুন্নী সংঘাত

    ইয়াহুদী, খৃষ্টান, মুশরিক এবং নাস্তিকেরা মুসলমানের যত ক্ষতি করেছে, তার চেয়ে শতগুণ বেশী ক্ষতি হতে হয়েছে শিয়া মুনাফিকদের হাতে ৷ হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এবং হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফতের স্বর্ণযুগে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে থাকে ইসলাম । এলাকার পর এলাকা, রাষ্ট্রের পর রাষ্ট্র মুসলমানদের অধীনত হতে থাকে । বাড়তে থাকে মুসলমানদের শক্তি ও সমৃদ্ধি । উড়তে থাকে ইসলামের বিজয় পতাকা । ইসলাম ও মুসলমানদের এ দুর্দমনীয় বিজয় অভিযানে সবচেয়ে বেশি হিংসার আগুণে পুড়ছিল ইয়াহুদী সম্প্রদায় । ইয়াহুদীরা অনুধাবন করে, এ বিজয় অভিযানের মূল স্পিরিট হল, মুসলমানদের একতা । যতদিন মুসলমানরা এভাবে একও অভিন্ন থাকবে ততদিন তাদের চুল পরিমাণ ক্ষতি কেউ করতে পারবে না ৷ অস্ত্রের যুদ্ধ নয় মস্তিস্কের ঠান্ডা যুদ্ধে রুখতে হবে মুসলমানদের বিজয়াভিযান ৷

    উমার (রাঃ) এর মৃত্যুর পর উসমান ইবন আফফান (রাঃ) যখন খলিফা, সে সময় কুফায় এসে একজন লোক ঘাঁটি গাড়লো যার নাম আবদুল্লাহ বিন সাবাহ । দুহাতে দান করা থেকে শুরু করে মানুষের মন জয় করার জন্য যা যা করা দরকার তার কিছুই করতে এই লোকটি বাদ রাখেনি । অল্প দিনেই কুফার অগণিত মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় তার আসন নিশ্চিত হলো । তার নামটি মুসলিমের মতো শোনালেও প্রকৃতপক্ষে সে ছিলো ইয়াহুদী আলেম ও গুপ্তচর (তখনকার সময়ে আরবীয় অঞ্চলের মুসলিম, খৃষ্টান, ইয়াহুদী কিংবা মুশরিক সকলের নামই এমন ছিলো) । এক সময় যখন ইবন সাবাহ তার আসন সম্পর্কে নিশ্চিত হলো, তখন সে ধীরে ধীরে মানুষকে উসমান (রাঃ) এর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে লাগলো । তার মূল এজেন্ডা ছিলো এই যে, উসমান (রাঃ) অন্যায়ভাবে আলী (রাঃ) এর প্রাপ্য খিলাফত নিজের অধিকারে নিয়ে নিয়েছেন । রাসুলের পরিবারের উত্তরাধিকারী হিসাবে মূলতঃ আলীরই খলিফা হওয়া উচিৎ ।

    আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা ইয়াহুদী বাহিক্যভাবে ইসলাম গ্রহণ করে, আহলে বায়আত তথা রাসূলের পরিবারের প্রতি মহব্বত ও আলী (রাঃ) এর প্রতি ভালবাসার ব্যাপারে সীমালঙ্ঘনে লিপ্ত হয় এবং আলী (রাঃ)কে খেলাফতের প্রথম হক্বদার দাবি করে । এক পর্যায়ে ইলাহ্-এর স্থানে অধিষ্ঠিত করে । সেখান থেকেই রাফেযী সম্প্রদায়ের উৎপত্তি । এদের হাতেই শহীদ হন হযরত উসমান (রাঃ) ৷ যায়দ ইবনে ওয়াহাব সূত্রে হুযায়ফার বরাতে আ'মাশ বলেন, "প্রথম ফিতনা ছিলো উসমান (রাঃ) এর হত্যা ৷ আর শেষ ফিতনা হলো দাজ্জাল ৷" তিনি আরো বলেন, "যাঁর হাতে আমার জান-প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, কোন ব্যক্তি যদি হযরত উসমান (রাঃ) হত্যার ব্যাপারে অন্তরে সরিষা পরিমাণ ভালোবাসা নিয়েও মৃত্যুবরণ করে তাহলে দাজ্জালকে পেলে সে দাজ্জালের অনুসারী হবে ৷ আর দাজ্জালকে না পেলে সে কবরে দাজ্জালের প্রতি ঈমান আনবে ৷" (তাফসীরে ইবনে কাসীর)

    জঙ্গে জামাল, জঙ্গে সিফফীন এবং কারবালার মত হৃদয় বিদারক যুদ্ধগুলো মূলত শিয়া মুনাফিকদের কূটকৌশলের কারনেই সংঘটিত হয় ৷ ইসলামাবাদ গভঃ ডিগ্রী কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত "Historical sites of Madinah Munawwarah" গ্রন্থে শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দীসে দেহলভী (রহঃ) এর "তারীখে মদীনা" কিতাবের রেফারেন্স দিয়ে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পবিত্র রওজা মুবারককে নিয়ে তিনটি ষড়যন্ত্রের ঘটনা উল্লেখ করেন ৷ এর মাঝে একটিতে ইয়াহুদী এবং অন্য দু'টিতে শিয়া সম্প্রদায় জড়িত ৷

    ৯৩০ সালে আব্বাসিয় খিলাফতের সময় আবু তাহের কারামতী নামক এক শিয়া হজ্বের মৌসুমে মক্কা শরীফ আক্রমন করে হাজরে আসওয়াদ ছিনতাই করে নিয়ে যায় ৷ কাবা শরীফ তাওয়াফ রত মুসলিমদের উপর আক্রমন চালিয়ে প্রায় তিরিশ হাজার হাজীকে হত্যা করে । পবিত্র কাবা শরীফের দরজা ভেঙ্গে তছনছ করে দেয় । লন্ডভন্ড করে দেয় জমজম কূপকেও ৷ আবু তাহের ঐ সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহকে বলেছিলো, কোথায় তোমার আবাবিল পাখি, কোথায়? তার কারনে প্রায় দশ বছর হজ্ব বন্ধ থাকে এবং এগার বছর মুসলমানরা হাজরে আসওয়াদ ছাড়া হজ্ব পালন করেন ৷ (বিস্তারিত: ফেরদাউসে ইবলিশ, এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ)

    ক্রুসেডের সময় বীর মুজাহিদ গাজী সালাহউদ্দিন আইয়্যুবী (রাহিঃ) কে ফেদাইন গুপ্তঘাতকরা অন্তত বিশ বার হত্যার চেষ্টা করে ৷ বরাবরই মহান আল্লাহর সাহায্যে তিনি বেঁচে যান ৷ যে ফেদাইন গোষ্ঠী তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে তাদের গুরু ছিলো হাসান আল সাবাহ এবং সেও একজন শিয়া ৷ বাগদাদের কসাই খ্যাত হালাকু খানের স্ত্রীর নাম ছিলো ডোকুজ বা দোকুজ খাতুন ৷ "খান" এবং "খাতুন" নাম শোনে অনেকেই তাদের মুসলমান ভাবতে পারেন ৷ খান শব্দের অর্থ লিডার বা নেতা ৷ খাতুন শব্দের অর্থ প্রিন্সেস বা রাজকুমারী ৷ হালাকু খান ছিলো বৌদ্ধ এবং তার স্ত্রী ছিলো খৃষ্টান ৷ তার উপদেষ্টা ছিলো ইবনুল আলকেমি এবং নাসিরূদ্দীন তুসী ৷ এ দু'জনেই ছিলো শিয়া এবং এদের প্ররোচনায় হালাকু খান বাগদাদে প্রায় দশ থেকে বিশ লক্ষ নিরীহ মুসলমানকে হত্যা করে ৷ ( তথ্যসূত্র: দ্যা-প্যান্থার রোকনউদ্দীন বাইবার্স, ইমরান আহমেদ)

    মিশরের এক টিভিতে লাইভ অনুষ্ঠানে শায়খ জহবি হাম্মাদকে ইরাকের বাগদাদ থেকে একজন সুন্নি মুসলিম ফোন করে নিজের করুন কাহিনী বর্ণণা করে বলেন, “হে শায়খ, আমাদের মেয়েদেরকে বন্দী করা হচ্ছে, আহলুস সুন্নাহর পুরুষদের দাঁড়ি ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, তাঁদেরকে জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে, বৃদ্ধাদের লাঠি দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে । তারা আমাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে কারন তারা চায় আমরা যেন মা আয়েশা (রাঃ) কে গালি দেই (নাউজুবিল্লাহ) । তারা আমার দাড়িতে ময়লা লাগিয়ে আমাকে অপদস্থ করেছে ৷ তারা আমাদের মেয়েদেরকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে; আমাদের মাঝে যাদের নাম আবু বকর, উমর, উসমান আছে তাঁদেরকে তারা জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করছে । আমি একটি মেয়েকে দেখেছি যাকে ধর্ষণ করা হয়েছে, সে মেয়েটি আল্লাহর কসম করে বলেছে- ওয়াল্লাহি, আমি কুমারি ছিলাম! ওয়াল্লাহি আমি কোরআনের হাফিজ ছিলাম! সে চিৎকার করে বলে- কে আমার গল্প রসূল (সাঃ) এর কাছে পৌঁছে দিবে?হে শায়খ! এবার আমার নিজের কাহিনী শুনুন । রাফিজিরা আমার তিন বছরের ছেলেকে ওভেনের ভিতর দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে । কারন তাঁর নাম রেখেছিলাম উমর । এরপর তারা তাঁর পোড়া মৃত দেহ আমার কাছে রেখে যায় ।”(নেট হতে সংগৃহীত)

    যে বাশার আল আসাদের ক্ষমতার বলি হয়ে সিরিয়া আজ ধূলোয় সাথে মিশে যাচ্ছে সে একজন শিয়া ৷ ইয়ামেন-সৌদী যুদ্ধটা হচ্ছে মূলত হুতিদের সাথে ৷ এই হুতিরা শিয়া মতাদর্শী ৷ যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করতে গিয়ে ইয়ামেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ সালেহকে প্রাণ দিতে হয়েছে হুতিদের হাতে ৷ আঠার শতকের রূশ সিংহ ইমাম শামিল (রাহিঃ) যখন জার সৈন্যদের হাতে গ্রেফতার হন, তখন রূশ সম্রাট জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাঁর শেষ ইচ্ছা কি? তিনি বলেছিলেন, তিনি হজ্ব পালন করতে চান ৷ প্রতিটি মুসলমানের সাধারণত এমনই নিয়্যত থাকে, মৃত্যুর পূর্বে যেন একবার হলেও হজ্ব পালন করতে পারেন ৷ কিন্তু ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনী এমনই এক ধর্মীয় নেতা যার সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও হজ্ব পালন করে নি ৷

    অনেকের প্রশ্ন করতে পারেন, খোমেনী হজ্ব না করলে কি হয়েছে? শিয়ারাতো হজ্ব করে ৷ শিয়ারা যখন হজ্ব ও ওমরাহ্ করতে আসে তখন তারা নিজস্ব ইমাম নিয়ে আসে এবং তার পেছনে নামায পড়ে ৷ এরা সাধারণত মক্কা- মদীনার ইমামদের পেছনে নামায পড়ে না ৷ তারা বাইতুল্লাহ এবং মসজিদে নববীতে সিজদা করে না ৷ ক্যারামের গুটির মত গোলাকার মাটির চাকা তাদের সাথে রাখে এবং এটিতে সিজদা করে ৷ তাদের ভাষ্যমতে, এই গোলাকার মাটির চাকাটি কারবালার মাটি দিয়ে তৈরি এবং কারবালা তাদের কাছে মক্কা-মদীনার চেয়েও পবিত্র ৷ আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের দেশের অনেক সুন্নী মুসলমান খোমেনীকে বিশাল বড় ধর্মীয় নেতা মানেন, এবং মনে করে ইরানের নেতৃত্বে আরব থেকে ইয়াহুদীদের বিতাড়িত করে মসজিদ আল আকসা পুনরূদ্ধার করা হবে ৷ তাদের জন্য দুঃসংবাদ হলো ইসরাঈলের পরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ইয়াহুদীর বসত ইরানের ইস্পাহান প্রদেশে ৷

    এই ইস্পাহান প্রদেশ এক সময় হাসান আল সাবাহর গুরু শিয়া জাদুকর আবদুল মালিক আল আতাশের দখলে ছিলো ৷ দুনিয়াতে শয়তানকে প্রথম এখানেই পাঠানো হয় ৷ শিয়ারা শুধু নিজ দেশে ইয়াহুদীদের আশ্রয় দেয়নি ইয়াহুদীদের সুরক্ষার ব্যবস্থাও করেছে ৷ ইসরাঈলী ডিফেন্স ফোর্সের বিরাট একটা অংশ ড্রুজ সম্প্রদায় ৷ এই ড্রুজ সম্প্রদায় হচ্ছে ইসমাঈলী শিয়াদের একটা গ্রুপ ৷ অনেকে এক্ষেত্রে লেবাননের হিজবুল্লাহর (এটিও শিয়াদের একটি গ্রুপ) সাথে ইসরাঈলের বিরোধকে সামনে নিয়ে আসবেন ৷ আপনি যদি শেক্সপিয়রের "মার্চেট অব ভেনিস", চার্লস ডিকেন্সের "অলিভার ট্যুইস্ট" পড়ে থাকেন, সেখানে দেখবেন এক সময় খৃষ্টানদের সাথেও বিরোধ ছিলো ইয়াহুদীদের সাথে ৷ আজকে মুসলিম নিধনে তারা একে অপরের সহযোগী ৷

    শিয়ারা বাইতুল্লাহ এবং মসজিদে নববীতে নামায না পড়ার অন্যতম কারন হলো, এই পবিত্র মসজিদ দু'টিতে শিয়া পন্থী কোন ইমাম নেই ৷ তারা চাইছে মধ্যপ্রাচ্যে যেকোন ভাবে একটা গোলযোগ বাধিয়ে এই পবিত্র মসজিদ দু'টির দখল নিতে ৷ সে লক্ষ্যে দীর্ঘদিন থেকে ইরানের নেতৃত্বে তারা কাজও করে যাচ্ছে ৷ ইতোমধ্যে ইরাক, সিরিয়া, লেবাননের মত দেশগুলো সুন্নীদের হাতছাড়া হয়ে গেছে ৷ বাহরাইনের শিয়ারা মাঝে মধ্যে মাথা ছাড়া দিয়ে উঠে, কিন্তু সৌদী আরবের কারনে পারছে না ৷ সৌদী আরব বাঁধা না দিলে বিনা যুদ্ধে ইয়ামেনও সুন্নীদের হাতছাড়া হয়ে যেত ৷

    মিশর, সুদান, লেবানন সহ আরবের অনেক দেশেই শিয়া-সুন্নী ছাড়াও খৃষ্টান বাস করে ৷ অর্থাৎ পুরো আরবে এখন সুন্নী, শিয়া, ইয়াহুদী, খৃষ্টান এই চার সম্প্রদায়ের বসবাস ৷ এর মাঝে সুন্নীরা বিভক্ত আর এদের দমন করার জন্য বাকিরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ৷ শিয়াদের উত্থান মুসলমানদের জন্য কি রকম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে তা ইতিহাসের দিকে তাকালেই চোখে পড়ে৷ যার কারনে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নী আলেমগণ ইয়াহুদীদের চেয়েও বেশি সতর্ক শিয়াদের ব্যাপারে ৷ আর শিয়াদের সকল স্বপ্ন একমাত্র সৌদী আরবের কারনে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে ৷ তাই যেকোন মূল্যে, যে কোন ভাবেই শিয়ারা সৌদী আরবের বদনাম করতে ব্যস্ত ৷

    কৃতজ্ঞতায় - Sayedur Rahman (আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

Post a Comment

0 Comments