❒“তাবলীগ জামআত” সম্পর্কে জগদ্বিখ্যাত উলামায়ে কেরামের ফাতওয়া!

Image may contain: 2 people, text
❒“তাবলীগ জামআত” সম্পর্কে জগদ্বিখ্যাত উলামায়ে কেরামের ফাতওয়া!
-------------------------------------------------------------------
🔸সৌদি আরবের সাবেক ‘গ্র্যান্ড মুফতি, যুগশ্রেষ্ঠ আলিমেদ্বীন, উস্তাযুল আলিম, আশ শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম আবদুল আ’যিয ইবনে বায [রাহিমাহুল্লাহ] "তাবলীগ জামআত" সম্পর্কে বলেন -
" তাবলীগ জামআতের অনুসারী লোকেরা আক্বীদা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখে না, কাজেই তাদের সাথে যাওয়ার (বের হওয়ার) অনুমতি নেই। তবে যে ব্যক্তির শরীয়ত সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে এবং আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের ‘আক্বীদাহ’ সম্পর্কে যার সঠিকতা নির্ণয় করার এবং তা বুঝার ক্ষমতা আছে, সেইব্যক্তি তাবলীগীদের সাথে যেতে পারবে। কেননা সে (কোন আলিম বা ত্বলেবুল ইলম যদি তাদের সাথে যায় তাহলে) তাবলীগীদেরকে সঠিক পথ দেখাতে পারবে, তাদেরকে সুন্দরভাবে উপদেশ দিতে পারবে এবং ভালো কাজে তাদের সাথে সাহায্যও করতে পারবে কারণ তাবলীগীরা খুবই কর্মপরায়ণ। কিন্তু তাবলীগ জামআতের অনুসারীদের আরও অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন এবং ‘তাওহীদ’ ও ‘সুন্নাহ’ সম্পর্কে পথ নির্দেশনা দেবার ক্ষমতা রাখে এমন ব্যক্তিদের দরকার। আল্লাহ ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝার ক্ষমতা দিয়ে আমাদের সবাইকে রহমত দান করুন এবং তা ধরে রাখার কাজে দৃঢ়তা দান করুন। [আমীন]
📚তথ্যসূত্রঃ
[ মাযমু ফাতাওয়া আল শাইখ ইবন বাযঃ ৮/৩৩১।
.
🔸তাবলীগ জামআতের সাথে ‘চিল্লা’ দেওয়া যাবে কিনা এ প্রসংগে সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় আলিমেদ্বীন ও মুফতি, যুগ শ্রেষ্ঠ ফ্বাকীহ,আশ শাইখুল আল্লামাহ ড. সালিহ আল-ফাউঝান [ হা’ফিজাহুল্লাহ] বলেন -
প্রশ্নঃ
আল্লাহ আপনার সাথে ভালো আচরণ করুন হে সম্মানিত শায়খ! এটা কি জায়েজ কোথায় বেরিয়ে পড়া এক মাসের জন্য, এক সপ্তাহের জন্য অথবা একদিনের জন্য যেইভাবে তাবলীগ জামাআতের লোকেরা করে থাকে? এটা কি সুন্নাত নাকি বিদআ’ত? শরীয়তের জ্ঞান অর্জনে অধ্যায়নরত এমন কারো জন্য এটা কি জায়েজ, এই জামাআতের সাথে চিল্লা দেওয়া বা বের হওয়া?
উত্তরঃ
এটা জায়েজ নয়, কারণ এটা একটা বিদআ’ত। এভাবে বেরিয়ে যাওয়া ৪০ দিন, ৪ দিন, ৪ মাস এটা হচ্ছে বিদ'আত। এটা প্রমানিত যে, তাবলীগ জামাআ’ত হচ্ছে ভারতীয় দেওবন্দীদের মধ্য থেকে একটা “সূফী” জামআত। তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায় তাদের “সূফীবাদ” প্রচার করার জন্য। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআতের অনুসারী ব্যক্তি, তাওহীদের অনুসারী কোন ব্যক্তির জন্য এটা জায়েজ নয় যে, তাবলীগ জামআতের সাথে তাবলীগে বের হওয়া। কারণ সে যদি তাবলীগীদের সাথে যায়, তাহলে সে তাদেরকে বিদআ’ত প্রচার করতে সাহায্য করলো এবং লোকেরা তাকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করবে। “উমুক (আলেম বা শিক্ষিত লোক) তাদের সাথে তাবলীগে যায়”, অথবা এটা বলবে “সাধারণ মানুষ সবাই আমাদের সাথে যায়” অথবা তারা বলবে “আরে তাবলীগ জামাত এইদেশে (সৌদি আরবে) বৈধ।”
এইজন্য তাদেরকে পরিত্যাগ করা ওয়াজিব, তাদেরকে পরিত্যাগ করা ওয়াজিব এবং তাদের দিকে মনোযোগ দেওয়া যাবেনা (তাদের কথা শোনা যাবেনা)। এটা এজন্যই যে, তাদের কথা না শুনলে বা তাদেরকে কোনভাবে সাহায্য-সহযোগিতা না করলে তারা তাদের বিদআ’ত তাদের দেশে নিয়ে ফিরে যাবে, আমাদের আরব দেশগুলোর মাঝে ছড়াতে পারবেনা। এছাড়া তাদের সাথে গিয়ে তাদেরকে শিক্ষা দেওয়াও জায়েজ নয়। এটা ভুল, কারণ তারা দ্বীনের বিশুদ্ধ জ্ঞান অর্জন করতে চায় না। তারা জ্ঞান অর্জন করতে চায় না কারণ তারা ধোঁকাবাজ লোক, তাদের বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা এসেছে তোমাদেরকে (সূফীবাদ ও ইলিয়াসী তরীকা) শিক্ষা দেওয়ার জন্য, তারা এজন্য আসেনি যে তোমাদের কাছ থেকে কিছু শিখবে। তারা এসেছে তোমাদেরকে তাদের “সূফীবাদ” ও তাদের “মাযহাব” শিক্ষা দেওয়ার জন্য। তারা তোমাদের কাছে শিখতে আসে নাই, তারা যদি শিখতে আসতো তাহলে তারা আরব দেশের উলামাদের সাথে মসজিদে বসতো এবং তাদের কাছ থেকে কিতাব অধ্যায়ন করতো। এসব ভুলের মধ্য থেকে এর দ্বারা ধোঁকায় পড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নাআ’ম।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.youtube.com/watch?v=RsDXXtYsK_U
.
🔸তাবলীগ জামআতের ভ্রান্ত আক্বীদার কারণে তাদেরকে ব্যান করে দেওয়া উচিত এই মর্মে সৌদি আরবের সাবেক ‘গ্র্যান্ড মুফতি’ আশ শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলে-শাইখ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন -
"আমি (তথ্য মন্ত্রনালয়ের প্রধান) মহোদয়ের নিকট এই প্রতিবেদন পেশ করছি যে, তাবলীগ জামআতের কোনই ফায়দা নেই, এটা একটা বিদআ’তী এবং পথভ্রষ্ট সংগঠন। তাদের নিসাব গ্রন্থ (ফাযায়েলে আমাল) পড়ে দেখলাম, তাতে গোমরাহী এবং বিদআ’তে ভরপুর। এতে কবর-মাযার পূজা এবং শিরকের দিকে আহবান করা হয়েছে। বিষয়টি এমনই মারাত্মক যে, এই ব্যাপারে চুপ থাকা যায় না। এজন্যই আল্লাহ যদি চান, তাহলে অবশ্যই আমি এর প্রতিবাদ লিপি পাঠাব যেন এদের বিভ্রান্তি ও বাতিল প্রকাশ হয়ে পড়ে। আল্লাহর নিকট দুআ করি তিনি যেন তাঁর দ্বীনকে সাহায্য করেন এবং কালিমাকে সুউচ্চে রাখেন। [আমীন]
তারিখঃ ২৯/০১/১৩৮২ হিঃ।
📚তথ্যসূত্রঃ
[ফাতওয়া ও চিঠিপত্র, শাইখ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলে শাইখ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২৬৭-২৬৮। [সাবেক গ্রান্ড মুফতী, সৌদী আরব তাঁর রাজকীয় তথ্য মন্ত্রনালয়ের প্রধানকে লেখা পত্র]
🔸আশ শাইখুল আল্লামাহ হামুদ আত-তুওাইজিরি [ রাহিমাহুল্লাহ] তাঁর “কওয়াল আল-বালিগ” নামক কিতাবে বলেছেন,
“তাবলীগীদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই হচ্ছে “তাবলীগ ই নিসাব” (ফাযায়েলে আমাল নামেও পরিচিত), যেই বইটি তাদের একজন নেতা লিখেছেন যার নাম মুহাম্মাদ যাকারিয়া কান্দলভী। তারা এই বইটাকে এতটাই গুরুত্ব দেয় যেমনটা আহলুস সুন্নাহ “সহিহ-হাইন” (বুখারী ও মুসলিম) এবং অন্যান্য হাদিসের বইকে গুরুত্ব দেয়। তাবলীগীরা এই বইটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স বই হিসেবে ভারতীয় এবং অন্যান্য অনারব মানুষের নিকট তুলে দিয়েছে, যারা এই দলটিকে সমর্থন দেয়। এই বইটিতে পরিপূর্ণভাবে রয়েছে শিরক, বিদায়াত, কিচ্ছা-কাহিনী এবং জাল ও দুর্বল হাদিস। আসলে এই বইটি হচ্ছে এমন একটি বই যা মন্দ, পথহারা এবং ফিতনার সমষ্টি।
.
🔸বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস,উস্তাযুল আলিম, আশ শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম মুহা’ম্মদ নাসির উদ্দীন আল আলবানী [রাহিমাহুল্লাহ্‌] যাকে ইমাম ইবনে বাজ এবং ইমাম মুক্ববিল সহ অন্যান্য উলামারা বর্তমান যামানার ‘মুজাদ্দিদ’ বলে ফাতওয়া দিয়েছেন, তাঁর নিকট প্রশ্ন করা হয়েছিলোঃ
প্রশ্নঃ তাবলীগ জামআত সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? এদের সাথে কোন তালিমে ই’লম বা অন্য কেউ আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে বের হতে পারে কি?
উত্তরে ইমাম আলবানী [ রাহিমাহুল্লাহ ] বলেনঃ “তাবলীগ জামাত আল্লাহর ক্বুরআন এবং রাসূলের সুন্নাহর তরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং আমাদের সালফে সালিহীনদের পন্থার উপর নয়। তাদের অবস্থা যখন এই, তখন তাদের সাথে বের হওয়া জায়েজ হবে না। কেননা এটা আমাদের সালফে সালিহীনদের (সাহাবাদের) তাবলীগের পদ্ধতির পরিপন্থী।
দাওয়াতের কাজে বের হবেন আলেম বা বিদ্বান ব্যক্তি। আর এরা যারা বের হচ্ছে, তাদের উপর অবশ্য করণীয় হচ্ছে, প্রথমে নিজের দেশে জ্ঞান শিক্ষা করা, মসজিদে মসজিদে জ্ঞানার্জনের ব্যবস্থা করা, যাতে করে যারা দাওয়াতের কাজ করবে এমন আলিম তৈরী হয়। এই অবস্থায় ত্বালেবে ইলমদের উচিত যেন এদেরকে তাদের দেশেই কুরআন-হাদীস শিক্ষার জন্য আহবান জানায়। মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে তাবলীগীরা কুরআন ও সুন্নাহ-কে তাদের মূলনীতি হিসাবে গণ্য করে না বরং তারা এই দাওয়াতকে বিভক্ত করে ফেলেছে। এরা যদিও মুখে বলে যে, তাদের দাওয়াত কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক তা নিছক মুখের কথা, তাবলীগীদের একক কোন ‘আক্বীদা’ (বিশ্বাস) নেই যা তাদেরকে একত্রিত করতে পারে। এজন্যই দেখা যায় তাবলীগ জামআতের লোকেরা হল সূফী ও মাতুরিদী - আশআরী আর আশাআরী-মাতুরিদীরা তো কোন মাযহাবেই নেই। এর কারণ হচ্ছে তাদের আক্বীদাহ বিশ্বাস হচ্ছে জট পাকানো।
তাবলীগ জামআতের লোকদের রয়েছে স্বচ্ছ জ্ঞানের অভাব। এদের জামআত প্রতিষ্ঠার প্রায় অর্ধশত বছর পার হয়ে গেল, কিন্তু এত লম্বা সময়ের পরও তাদের মাঝে কোন আলিম তৈরী হলো না। আমরা এজন্যই বলি আগে নিজেরা জ্ঞানার্জন করো, তারপর একত্রিত হও, যেন একত্রিত হওয়া যায় নির্দিষ্ট ভিত্তির উপর, যাতে কোন মতভেদ থাকবে না ।
তাবলীগ জামআত বর্তমান যুগে সূফী মতবাদের ধারক ও বাহক একটি জামআত। এরা মানুষের চরিত্র সংশোধনের দাওয়াত দেয় কিন্তু মানুষের আক্বীদা [বিশ্বাস] সংস্কার ও সংশোধনের জন্য দাওয়াত দেয় না। শিরক বিদাত মুক্ত আক্বীদা সংশোধনের ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। কেননা তাদের ধারণা মতে, মানুষকে বিশুদ্ধ আক্বীদার দাওয়াত দিলে মানুষের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি হবে।
জনাব সাআ’দ আল-হুসাইন ভাই এবং ভারত-পাকিস্তানের তাবলীগ জামআতের মুরব্বীদের মাঝে বেশ কিছু পত্র যোগাযোগ হয়। এর দ্বারা এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তাবলীগ জামআতের লোকেরা ওয়াসীলা, উদ্ধারকারী (ইস্তিগাছা) এবং এ ধরনের অনেক (শিরকি) ধারণাকে সমর্থন করে।
প্রত্যেক তাবলীগীকে চারটি তরীকার যেকোন একটি ভিত্তিতে বাইয়াত গ্রহণ করতে হয়। কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে, এদের প্রচেষ্টায় অনেক মানুষই আল্লাহর পথে ফিরে এসেছে। বরং এদের সাথে বের হবার জন্য কেউ কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করার জন্য কি এটা যথেষ্ট নয়?
এ ব্যাপারে আমি বলছি যে, এ ধরণের কথা আমরা অনেক শুনেছি এবং জানি, সূফীদের কাছে থেকে অনেক ঘটনাই জানি। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যদি কোন শাইখের আক্বীদাহ ফাসিদ হয়, হাদীস জানে না বরং লোকজনের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এতদ্বসত্ত্বেও অনেক ফাসিক লোক তার হাতে তাওবাহ করে। যে দলই ভাল বা কল্যাণের দিকে ডাকবে অবশ্যই তার কিছুনা কিছু অনুসারী পাওয়া যাবেই। কিন্তু আমরা দৃষ্টি দিবো যে, সে কিসের দিকে আহবান করছে? সে কি মানুষকে কুরআন, সুন্নাহ এবং সালফে সালিহীনের আক্বীদার দিকে ডাকছে এবং কোন মাযহাবের ব্যাপারে কোন রকম গোঁড়ামী করে না এবং যেখানেই সুন্নাত পায় সেখান থেকেই তার উপর আমল করে।
তাবলীগ জামআতের কোন ইলমী তরীকা বা পন্থা নেই। তাদের পন্থা হল স্থানের পরিপ্রেক্ষিতে যেখানে তার জন্ম হয়েছে। এরা সব রঙেই রঙ্গীন হয়।”
📚তথ্যসুত্র:
[ ইমারতী ফতওয়া, শায়খ আলবানী, পৃষ্ঠাঃ ৩৮]
#সুন্নাহর___পথযাত্রী____৯৪

Post a Comment

0 Comments