Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

সৌদিআরব ও আমরা ্‌্‌্‌্‌,


সৌদি অারব ও অামরাঃ
  • স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে থাকে পৃথিবীর যে কটি দেশ তার মধ্যে সৌদি আরব অন্যতম ৷ বর্তমানে সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার দিক থেকে শীর্ষ ১৫টি দেশের মধ্য সৌদি আরব অন্যতম ৷ স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু ব্যয় উপসাগরীয় দেশসমূহের মধ্যে চতুর্থ । বিদেশীসহ সব নাগরিকের জন্য হেলথ ইন্সুরেন্স বাধ্যতামূলক । বর্তমানে সৌদি আরবে হাসপাতাল সংখ্যা : ৩৯৩টি, শয্যা সংখ্যা : ৫৩৮১৯, চিকিৎসকের সংখ্যা : ৪৭৯১৯, নার্স : ৯৩৭৩৫, সহকারী স্বাস্থ্যকর্মী : ৫১২৮৮, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র : ৩১৩০টি (২০০৮ সালের তথ্য অনুযায়ী তন্মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদিত ১৯৮৬)। (দৈনিক জনকন্ঠ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১) ৷

    ২০১০ সালে দেশটিতে প্রতি এক হাজার মানুষের বিপরীতে ডাক্তারের সংখ্যা ছিল মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ । ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশে । অন্যদিকে নার্সের সংখ্য ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ । একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোয় শয্যার সংখ্যা ২ দশমিক ১ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশে । ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী সৌদি আরবের স্বাস্থ্যসেবায় ৭৪ দশমিক ২ শতাংশই ব্যয় করে সরকার । অন্যদিকে এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে মাত্র ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ । তবে ২০২৫ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বেড়ে ২৮ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়াবে বলেও আশা করছে দেশটির সরকার ।

    ২০১৭ সালে সৌদি অ্যারাবিয়ান ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি ঘোষণা দেয়, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে শতভাগ মালিকানায় বিনিয়োগ করতে পারবেন । যদি এ নিয়ম কার্যকর হয়, তাহলে দেশটির বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর বিনিয়োগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে । ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য খাতে দেশটির মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ কোটি ৭০ লাখ সৌদি রিয়াল বরাদ্দ করা হয় । যেখানে ২০১৭ সালে এ খাতে ব্যয় করা হয়েছিল ১৩ কোটি ৩০ লাখ সৌদি রিয়াল । ক্রমেই খাতটি বিস্তৃত হওয়ায় এবং উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছার কারণে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৷ এগুলো হলো বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের সামান্য বিবরণ ৷

    মদীনার 'আল যাহরা হসপিটাল', 'আল দার হসপিটাল', 'আল শিফা পলিক্লিনিক', 'আল আবির হসপিটাল' এই চারটি হাসপাতালে আমার চিকিৎস্যা নেওয়ার সুযোগ হয়েছিলো ৷ সবগুলো হাসাপাতালে সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভিজিট সমান, মাত্র তিরিশ রিয়াল ৷ কোম্পানীর হেলথ ইন্স্যুরেন্স পলিসি অনুযায়ী ২০% খরচ আমাদের বহন করতে হত ৷ একই ডাক্তারের কাছে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার গেলে ভিজিট দেওয়ার প্রয়োজন হত না ৷ অপ্রয়োজনীয় টেস্টের বিড়ম্বনা ছিলো না ৷ অন্যদিকে আমাদের দেশে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর দরিদ্র হচ্ছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ । এই তথ্য সরকারি সংস্থা- হেলথ ইকোনমিক ইউনিটের । প্রতি বছর কিডনি বিকলের শিকার ৬০ হাজার মানুষের প্রয়োজন হয় ডায়ালাইসিস । আর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ১০ লাখ মানুষের । বছর ঘুরতেই এই সংখ্যায় যোগ হয় আরও দুই লাখ । ন্যাশনাল হেলথ একাউন্টের হিসেবে, চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৭ ভাগ বহন করতে হয় ব্যক্তিকে । সার্কভুক্ত দেশে ব্যক্তিপর্যায়ে এটিই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ব্যয় ।

    সৌদি আরবের বাজেটের ২৫ শতাংশ শিক্ষা খাতের জন্য নির্ধারিত । সৌদিতে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২০টি, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২টি, কলেজ ১০৫টি, তন্মধ্যে মহিলা কলেজ ১১টি । বিদ্যালয় ৩৫০০০টি, ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৫৮,০০,০০০ ছাত্রছাত্রী শিক্ষারত, তন্মধ্যে ৬,০৪,০০০ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে, ৫৮,০০০ কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষারত, ৮৮,০০০ ব্যক্তি গণস্বাক্ষরতা শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত । সকল পর্যায়ে শিক্ষকের সংখ্যা ৪,৫৭,৮৯৮ জন । এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১০ শিক্ষাবর্ষে সৌদি আরবের ৫০ হাজারের অধিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষাগ্রহণ করছে । বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছরে বেশসংখ্যক ছাত্র সৌদি আরবে অধ্যয়ন করতে যায় । (দৈনিক জনকন্ঠ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১) ৷

    সৌদি আরবের শিক্ষা ব্যবস্থার সুনাম করে এ এন এম সিরাজুল ইসলাম তাঁর "ইসলামে সন্তান গঠন পদ্ধতি" গ্রন্থে বলেন, "মুসলিম দেশগুলোর অনেকেই এখন পর্যন্ত স্বাধীন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি ৷ অধিকাংশ দেশ ছিলো উপনিবেশবাদীদের করতলে ৷ উপনিবেশবাদীরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা দিয়ে গেলেও আদর্শের গোলামীর জিঞ্জির পরিয়ে গেছে ৷ ফলে, পাক- ভারত উপমহাদেশের মুসলিম শিক্ষা ব্যবস্থা মুসলমানদের আদর্শ ও প্রয়োজন পূরণে বিন্দুমাত্র অবদান রাখতে পারেনি ৷ বরং তারা অভিন্ন শিক্ষাকে দু'ভাগে ভাগ করেছে ৷ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় দুনিয়াদার লোক আর মাদ্রাসা শিক্ষায় দ্বীনদার লোক তৈরির হীন ষড়যন্ত্র করে গেছে ৷ পরে স্কুলে ইসলামিয়াত বিষয়টি যোগ করে ধর্মীয় শিক্ষার নামে আংশিক ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ অথচ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান যা আংশিক শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হয় না ৷ ফলে লোকেরা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার সুফলও লাভ করতে পারে না ৷ অথচ আল্লামা ইকবাল বলেছেন, 'স্রষ্টা সম্পর্কে জানা আমার জন্মগত ও নৈতিক অধিকার ৷' কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থায় সে অধিকার পূরণের ব্যবস্থা করা হয়নি ৷

    পাশ্চাত্যের অনুকরণে শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হওয়ায় আমাদের শিশুরা পাশ্চাত্যের ভোগবাদ ও বস্তুবাদী চিন্তার আলোকে গড়ে উঠেছে ৷ অথচ সেটিকে আবার আধুনিক শিক্ষাও বলা হচ্ছে ৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত শিক্ষক ডঃ ইসমাইল রাজী আল ফারুকী বলেন, 'তথাকথিত মানবিক বিষয় হিসেবে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদরা বিভিন্ন দেশে যে শিক্ষা দিচ্ছেন, তা মানবিক বিষয় নয়, বরং পাশ্চাত্য সভ্যতার বিষয়বস্তু ও উপকরণ; যেগুলোর সাথে মুসলমানদের চিন্তাকর্ম, পরিবেশের সঙ্গতি ও সম্পর্ক নেই ৷

    পক্ষান্তরে সৌদি আরবে স্কুল পর্যায়ে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক ৷ সাধারণ বিষয়গুলোর সাথে সাথে কোরআন, হাদীস, ফীকহ, আকীদা ও তাওহীদ- এ পাঁচটি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় ৷ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে যারা লেখাপড়া করে তাদের বাধ্যতামূলক ইসলামী সংস্কৃতি বিষয়টি পড়তে হয় ৷ ফলে সৌদি স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা একজন ছাত্রের দ্বীন সম্পর্কিত ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনা পরিষ্কার ৷ ইসলামী বিষয়ে যারা পড়ে, তারা ইসলামী শিক্ষাবিদ হিসেবে তৈরি হন ৷ নিঃসন্দেহে এটি মুসলিম দেশ হিসেবে এক বিরাট পুঁজি ৷ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার ৷

    বিভিন্ন মুসলিম দেশে ছেলে মেয়ে একসাথে লেখাপড়া করে ৷ এটা পশ্চিমা সভ্যতার ক্ষয়িষ্ণু ধারা ৷ সামাজিক বিপর্যের বিরাট কারন ৷ পক্ষান্তরে, সৌদি আরবে সহ-শিক্ষা নেই ৷ এখানে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা ৷ ছেলে ও মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য পৃথক স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি রয়েছে ৷ সৌদি আরবে শিক্ষা ব্যবস্থার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে দ্বীন ও দুনিয়ার জন্য অনেকটা অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে ৷ পাক-ভারত উপমহাদেশের মতো মোল্লা ও মিষ্টার নামক দু'টি স্বতন্ত গোষ্ঠী তৈরীর ব্যবস্থা রাখা হয়নি ৷"

    জাতিগতভাবে আমরা বাচ্চাদের মত অনুকরণপ্রিয় ৷ অনুকরনের জন্য আমাদের উচ্চ শিক্ষিত সমাজ ইউরোপ এবং আমেরিকাকে আদর্শ হিসেবে বেছে নিয়েছে ৷ রাজনৈতিক নেতারা বেছে নিয়েছে সিংগাপুর, মালেশিয়া, জাপানকে ৷ তথাকথিত ইসলামী দলগুলো বেছে নিয়েছে ইরান, তুরষ্ককে ৷ আলেম ওলামা বেছে নিয়েছে মিশরের আল আজহার কিংবা ভারতের দেওবন্দকে ৷ এই অনুকরণকে আমরা খারাপ বলছি না কিন্তু একই সাথে আমাদের মনে রাখতে, বিশ্বের একেক অঞ্চলের আবহাওয়া একেক রকম ৷ আবহাওয়া এবং জলবায়ুর উপর নির্ভর করে প্রত্যেক অঞ্চলের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য গড়ে উঠে ৷ যেমন-

    আরবের এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলো বিশেষ করে সৌদি আরব, আমিরাত, ওমান, বাহরাইনের খাবার সবাই খেতে পারলেও; আফ্রিকা অঞ্চলের মিশর, লিবিয়া, সুদানের খাবার অনেকের রুচিতে বাধবে ৷ আবার আরবের লোকেরা আমাদের খাবার খেতে চায় না ৷ এমন না যে ওদের খাবার হালাল, আমাদেরটা হারাম; বা আমাদেরটা হালাল, ওদেরটা হারাম ৷ ব্যবধানটা হচ্ছে রন্ধন প্রণালীতে ৷ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের লোকদের মত অত মশলাযুক্ত খাবার আর পৃথিবীর আর কেউ খায় বলে জানা নেই ৷

    রন্ধন প্রণালীর মত রাঁধুনীদের সাজ সজ্জাও ভিন্ন ৷ আরবের মেয়েরা আমাদের উপমহাদেশের মেয়েদের মত নাক, কান ফুটো করে না ৷ যদিও ইদানিং আরবের কিছু কিছু দেশে কান ফুটো করার প্রচলণ ঘটেছে ৷ তবে সেটা ব্যাপক নয় ৷ আফ্রিকা অঞ্চলের কিছু দেশে আবার মেয়েদের খতনা করানো হয় ৷ কিছু অঞ্চলে বিয়ের পর এ্যাসিড বা অন্য কোন পদ্ধতিতে স্থায়ী ভাবে মেয়েদের মুখে এক ধরনের বিশেষ চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয় ৷ যাতে সবাই বুঝতে পারে মেয়েটি বিবাহিত ৷ "ভারতবর্ষের বিবাহের ইতিহাস'' বইয়ে ডঃ অতুল সুর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের হিন্দুদের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে বিবাহ, আলাদা চাল চলন, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি বৈষম্য নিয়ে আলোচনা করেছেন ৷ মুসলমানদের মাঝে সাধারণত এমন কোন ভিন্নতা নেই ৷ নেই কোন বৈষম্য৷ গ্র্যান্ড মুফতির জন্য যা বৈধ, আমাদের জন্যও তা বৈধ ৷ ঊনার জন্য যা অবৈধ, আমাদের জন্যও তা অবৈধ ৷ রাজা-প্রজা, আমির-ফকির, সাদা-কালো, বিশ্বের সকল মুসলমানের জন্য এক আইন ৷ মুসলমানদের একেক অ়ঞ্চলে একেক রকম খাদ্যাভ্যাস, ভিন্ন ভিন্ন পোশাক, সামাজিক রীতিনীতি ইত্যাদি আলাদা কেন?

    সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের কারনে একেক অঞ্চলের মানুষের সামাজিক রীতিনীতি একেক রকম, যার কারনে আপনি চাইলেও বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর, জাপান, আমেরিকা বা সৌদি আরবের মত করতে পারবেন না ৷ যে কোন দেশের নীতি নির্ধারকগণ সাধারণত দেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, জনসংখ্যা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিবেচনা করে দেশ পরিচালনা করেন ৷ আর আমরা সেসব বিবেচনা না করেই বোকার মত তাদের অনুসরণ করে থাকি ৷ যেমন- বাচ্চাদের "নিরাপদ সড়ক চাই" আন্দোলনে কানাডার রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে স্কুলের বাচ্চাদের রাস্তা পারাপারের সুযোগ করে দেওয়ার ভিডিও আমরা দেখেছি ৷

    অনেকেই সে ভিডিও ভাইরাল করে বাংলাদেশের আইনের প্রতি নিন্দাজ্ঞাপন এবং কানাডার সরকারকে বাহবা দিয়েছেন ৷ এই ভিডিও ভাইরাল করা জনগণকে আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন, কানাডার আয়তন কত? কানাডার জনসংখ্যা কত? সেখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে কতজন লোক বাস করে? আপনি নিশ্চিত থাকেন ৯৫% লোক তার কোন সঠিক জবাব দিতে পারবে না ৷ কিন্তু ভিডিও ভাইরাল করে ঠিকই বাংলাদেশ সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিয়েছে ৷ একইভাবে সরকারও ডান্ডা মেরে পাল্টা জবাব দিয়েছে ৷ ফলে বিষয়টা জনগণের কল্যান- অকল্যানের ইস্যু না হয়ে সরকার এবং বিরোধী দলের জয় - পরাজয়ের খেলা হয়ে গেছে ৷

    শিক্ষা ব্যবস্থাতেও একই রকম জেনারেল শিক্ষিত লোকেরা চায় মাদ্রাসা পড়ুয়াদের পরাজিত করতে, মাদ্রাসা পড়ুয়ারা চায় জেনারেল শিক্ষিতদের হারিয়ে দিতে ৷ একদল বাংলাদেশকে জাপান বানানোর স্বপ্ন দেখালে, অন্যদল জার্মানী বানানোর স্বপ্ন নিয়ে হাজির হয় ৷ একই রকম ধাপ্পাবাজি চলে তথাকথিত ইসলামী দলের নামে ৷ পীর শব্দটা এসেছে ইরান তথা শিয়া সংস্কৃতি থেকে ৷ এই প্রথার সমর্থকরা এর পক্ষে যুক্তি-তর্ক পেশ করলেও, মক্কা-মদীনার কোন আলেম থেকে এর স্বপক্ষে কোন ফতোয়া পাওয়া যায় না ৷ অন্যদিকে গণতন্ত্রের স্বপক্ষেও আপনি ফতোয়া পাবেন তথাকথিত মডারেট ইসলামী দলগুলোর কাছে ৷ কওমী বা আহলে হাদীসপন্থী আলেমদের মাঝে এর স্বপক্ষে কোন ফতোয়া পাওয়া যায় না ৷ সাময়িকভাবে কোন কোন আলেম ভোট দেওয়ার অনুমতি প্রদান করলেও একে জায়েয বলে ফতোয়া দেন না ৷ এই দলের সমর্থক তথাকথিত আলেমদের কাছেই এর পক্ষে ফতোয়া পাবেন, অন্যদের কাছে না ৷

    আমাদের এসব অজ্ঞতা, অক্ষমতা, বিভক্তির মূল কারন হলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দৈন্যতা ৷ যে যে পরিবেশ এবং যে প্রতিষ্ঠান, যে দল, সে ব্যক্তির সহচর্যে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে সে আর ঐ বৃত্ত থেকে বের হতে পারে না ৷ আবার কেউ যদি ঐ বৃত্ত থেকে বের হতে চায়, তাহলে তার উপর নেমে আসে অপবাদ, অবজ্ঞার পাহাড় ৷ যেমন, অনেক ভাই আরবের দেশগুলোতে গিয়ে সেখানকার মানুষ, আলেমদের সহচর্যে কিছু দ্বীনি জ্ঞান লাভ করেছেন ৷ এক শ্রেণীর আলেম অবজ্ঞার চোখে তাদেরকে "প্রবাসী কামলা", "আবুল" এ জাতীয় সম্বোধন করে সুখ অনুভব করেন ৷ অথচ রাসূল (সাঃ) নিজ হাতে কাজ করতেন এবং অন্যদেরও কাজ করতে উৎসাহিত করেছেন ৷ কোন হালাল কাজই ইসলামের দৃষ্টিতে ছোট নয় ৷ এরা কি সত্যিই আলেম? নাকি শয়তান আলেমের লেবাস ধরে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে? আল্লাহ আ'লাম ৷

    ইসলামের ইতিহাসে এমন কোন বাঙ্গালী বীর বা আলেমের কথা আমার জানা নেই যিনি বাংলার বাইরে ইসলাম প্রচার এবং প্রসারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন ৷ অথচ বাংলার ঘরে ঘরে ইসলামী বিশেষজ্ঞ ৷ এই ইসলামী বিশেষজ্ঞরা আবার সবকিছুতে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানীর ভক্তদের মত বিভক্ত ৷ সৌদি ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করার পরেও তাদের মাঝে এসব নিয়ে তেমন কোন উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা আমার চোখে পড়েনি ৷ আর আমরা ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত লাফালাফি করতে করতে একজন আরেকজনের রক্ত ঝরাতেও দ্বিধা করি না ৷ সৌদিতে অপর ভাইয়ের রক্ত ঝরানোর কথা ভুলেও চিন্তা করা যায় না ৷

    আমরা বলি না যে, সৌদি আরবকে আমাদের অাদর্শ মানতে হবে, কারন আমাদের জন্য কোরআন এবং সুন্নাহই একমাত্র আদর্শ ৷ কিন্তু আমরাতো অন্য দেশকে অনুসরণ করছি ৷ পাশ্চাত্য আইন ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনুসরণ করতে গিয়ে তাদের মতই আমাদের দেশে জারজ সন্তান উৎপাদন হচ্ছে ৷ ইরানের সংস্কৃতি আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে রূপান্তর হয়েছে ৷ মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরষ্ক সততার দিক দিয়ে আমাদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি এগিয়ে থাকলেও ধর্মীয় অনুভূতির দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে ৷ আমি মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরষ্কে শেভ করা ইমাম দেখেছি, যেটা আমাদের দেশে কল্পনাও করা যায় না ৷ তুরষ্কের অনেক মেয়েকে দেখেছি সিগারেট টানতে ৷

    আমাদের দেশের যেসব ভাই সারাদিন সৌদি বিরোধী প্রচারণা চালায়, এদেরকে যদি প্রশ্ন করেন, এমন একটা মুসলিম দেশের নাম বলেন যারা সৌদি আরবের চেয়ে ভালো, এদের অনেকের কাছে কোন সদুত্তর পাবেন না ৷ কেউ কেউ বলবেন, সৌদি আগে ভালো ছিলো এখন ভালো নাই ৷ ঠিক আছে, এখন সৌদি আরবের চেয়ে ভালো হয়েছে এমন কোন ইসলামী রাষ্ট্রের নাম বলেন? তখন আবার ইনিয়ে-বিনিয়ে প্রসঙ্গ বদল শুরু করবে ৷ এই লোকগুলো নিজেরাও জানে না, তারা কেমন দেশ চায়? কেমন ইসলাম চায়? এরা চায় সব কিছু নিজের মনের আবেগ দিয়ে সাজাতে ৷ আর এসব আবেগী লোককে দিয়েই লেখক, কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, বক্তা, ধার্মিক, পেশাজীবিদের পেট চলে ৷

    সরকার যদি জয়-পরাজয়ের চিন্তা না করে জনগণের কল্যানের চিন্তা করে তাহলেই এ অবস্থার উত্তরণ ঘটবে ৷ যেমন, ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করে সরকার একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে পারে ৷ ডাক্তারদের নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ধার্য্য করে দিতে পারে ৷ কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারকে বাড়তি কিছু ঝামেলায় পড়তে হবে ৷ যেমন, শিক্ষা ব্যবস্থা যদি ইসলাম বিরোধী হয় তাহলে মুসলমানদের সমালোচনায় পড়তে হবে ৷ আবার পাশ্চাত্য সভ্যতা বিরোধী হলে পশ্চিমা সমাজ এবং তাদের পেইড এজেন্টদের সমালোচনায় পড়তে হবে ৷ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা হলে কোন ইসলামী হবে? জামায়েতে ইসলামী? চরমোনাইয়ের ইসলামী? তাবলীগী ইসলামী? ব্রেলভী ইসলামী? হানাফী ইসলামী? আহলে হাদীসের ইসলামী?

    অন্যদিকে ডাক্তার, উকিল এজাতীয় পেশাজীবিদের যদি ফি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় তাহলে সরকারের বিরূদ্ধে তাদের স্বাধীন পেশায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনবে ৷ যেভাবে মাশরাফির বিরূদ্ধে ডাক্তাররা অভিযোগ এনেছিলো ৷ ভালো কাজে ঐক্যবদ্ধ না হলেও আমরা খারাপ কাজে ঐক্যবদ্ধ হতে জানি ৷ আমরা যদি ভালো কাজে ঐক্যবদ্ধ থাকতাম, তাহলে সরকারও জনকল্যানে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পিছ পা হত না ৷ এখন সরকারকে ভোটের কথাও মাথায় রাখতে হয় ৷ ফলে জনকল্যানের চেয়ে ভোটের রাজনীতিই এখানে মূখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ যার কারনে আমাদের কারো প্রতি কারো কোন ভক্তি, শ্রদ্ধা নেই ৷ নেতা মানে আমাদের কাছে ভন্ড, ডাক্তার মানে কসাই, শিক্ষা মানে ব্যবসা, ধর্ম মানে আমি ছাড়া সবাই বাতিল ৷ যেখানে নিজ দেশের কাছের মানুষের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ জন্মায়নি, সেখানে হাজার হাজার মাইল দূরের সৌদি আরবের প্রতি শ্রদ্ধা জন্ম নিবে এ ধরনের আকাংখা অনেকটা উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মতই ৷

  • ২০১০ সালে দেশটিতে প্রতি এক হাজার মানুষের বিপরীতে ডাক্তারের সংখ্যা ছিল মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ । ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশে । অন্যদিকে নার্সের সংখ্য ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ । একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোয় শয্যার সংখ্যা ২ দশমিক ১ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশে । ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী সৌদি আরবের স্বাস্থ্যসেবায় ৭৪ দশমিক ২ শতাংশই ব্যয় করে সরকার । অন্যদিকে এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে মাত্র ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ । তবে ২০২৫ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বেড়ে ২৮ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়াবে বলেও আশা করছে দেশটির সরকার । 

  • ২০১৭ সালে সৌদি অ্যারাবিয়ান ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি ঘোষণা দেয়, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে শতভাগ মালিকানায় বিনিয়োগ করতে পারবেন । যদি এ নিয়ম কার্যকর হয়, তাহলে দেশটির বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর বিনিয়োগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে । ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য খাতে দেশটির মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ কোটি ৭০ লাখ সৌদি রিয়াল বরাদ্দ করা হয় । যেখানে ২০১৭ সালে এ খাতে ব্যয় করা হয়েছিল ১৩ কোটি ৩০ লাখ সৌদি রিয়াল । ক্রমেই খাতটি বিস্তৃত হওয়ায় এবং উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছার কারণে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৷ এগুলো হলো বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের সামান্য বিবরণ ৷ 

  • মদীনার 'আল যাহরা হসপিটাল', 'আল দার হসপিটাল', 'আল শিফা পলিক্লিনিক', 'আল আবির হসপিটাল' এই চারটি হাসপাতালে আমার চিকিৎস্যা নেওয়ার সুযোগ হয়েছিলো ৷ সবগুলো হাসাপাতালে সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভিজিট সমান, মাত্র তিরিশ রিয়াল ৷ কোম্পানীর হেলথ ইন্স্যুরেন্স পলিসি অনুযায়ী ২০% খরচ আমাদের বহন করতে হত ৷ একই ডাক্তারের কাছে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার গেলে ভিজিট দেওয়ার প্রয়োজন হত না ৷ অপ্রয়োজনীয় টেস্টের বিড়ম্বনা ছিলো না ৷ অন্যদিকে আমাদের দেশে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর দরিদ্র হচ্ছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ । এই তথ্য সরকারি সংস্থা- হেলথ ইকোনমিক ইউনিটের । প্রতি বছর কিডনি বিকলের শিকার ৬০ হাজার মানুষের প্রয়োজন হয় ডায়ালাইসিস । আর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ১০ লাখ মানুষের । বছর ঘুরতেই এই সংখ্যায় যোগ হয় আরও দুই লাখ । ন্যাশনাল হেলথ একাউন্টের হিসেবে, চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৭ ভাগ বহন করতে হয় ব্যক্তিকে । সার্কভুক্ত দেশে ব্যক্তিপর্যায়ে এটিই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ব্যয় ।

  • সৌদি আরবের বাজেটের ২৫ শতাংশ শিক্ষা খাতের জন্য নির্ধারিত । সৌদিতে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২০টি, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২টি, কলেজ ১০৫টি, তন্মধ্যে মহিলা কলেজ ১১টি । বিদ্যালয় ৩৫০০০টি, ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৫৮,০০,০০০ ছাত্রছাত্রী শিক্ষারত, তন্মধ্যে ৬,০৪,০০০ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে, ৫৮,০০০ কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষারত, ৮৮,০০০ ব্যক্তি গণস্বাক্ষরতা শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত । সকল পর্যায়ে শিক্ষকের সংখ্যা ৪,৫৭,৮৯৮ জন । এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১০ শিক্ষাবর্ষে সৌদি আরবের ৫০ হাজারের অধিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষাগ্রহণ করছে । বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছরে বেশসংখ্যক ছাত্র সৌদি আরবে অধ্যয়ন করতে যায় । (দৈনিক জনকন্ঠ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১) ৷

  • সৌদি আরবের শিক্ষা ব্যবস্থার সুনাম করে এ এন এম সিরাজুল ইসলাম তাঁর "ইসলামে সন্তান গঠন পদ্ধতি" গ্রন্থে বলেন, "মুসলিম দেশগুলোর অনেকেই এখন পর্যন্ত স্বাধীন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি ৷ অধিকাংশ দেশ ছিলো উপনিবেশবাদীদের করতলে ৷ উপনিবেশবাদীরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা দিয়ে গেলেও আদর্শের গোলামীর জিঞ্জির পরিয়ে গেছে ৷ ফলে, পাক- ভারত উপমহাদেশের মুসলিম শিক্ষা ব্যবস্থা মুসলমানদের আদর্শ ও প্রয়োজন পূরণে বিন্দুমাত্র অবদান রাখতে পারেনি ৷ বরং তারা অভিন্ন শিক্ষাকে দু'ভাগে ভাগ করেছে ৷ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় দুনিয়াদার লোক আর মাদ্রাসা শিক্ষায় দ্বীনদার লোক তৈরির হীন ষড়যন্ত্র করে গেছে ৷ পরে স্কুলে ইসলামিয়াত বিষয়টি যোগ করে ধর্মীয় শিক্ষার নামে আংশিক ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ অথচ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান যা আংশিক শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হয় না ৷ ফলে লোকেরা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার সুফলও লাভ করতে পারে না ৷ অথচ আল্লামা ইকবাল বলেছেন, 'স্রষ্টা সম্পর্কে জানা আমার জন্মগত ও নৈতিক অধিকার ৷' কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থায় সে অধিকার পূরণের ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ 

  • পাশ্চাত্যের অনুকরণে শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হওয়ায় আমাদের শিশুরা পাশ্চাত্যের ভোগবাদ ও বস্তুবাদী চিন্তার আলোকে গড়ে উঠেছে ৷ অথচ সেটিকে আবার আধুনিক শিক্ষাও বলা হচ্ছে ৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত শিক্ষক ডঃ ইসমাইল রাজী আল ফারুকী বলেন, 'তথাকথিত মানবিক বিষয় হিসেবে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদরা বিভিন্ন দেশে যে শিক্ষা দিচ্ছেন, তা মানবিক বিষয় নয়, বরং পাশ্চাত্য সভ্যতার বিষয়বস্তু ও উপকরণ; যেগুলোর সাথে মুসলমানদের চিন্তাকর্ম, পরিবেশের সঙ্গতি ও সম্পর্ক নেই ৷ 

  • পক্ষান্তরে সৌদি আরবে স্কুল পর্যায়ে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক ৷ সাধারণ বিষয়গুলোর সাথে সাথে কোরআন, হাদীস, ফীকহ, আকীদা ও তাওহীদ- এ পাঁচটি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় ৷ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে যারা লেখাপড়া করে তাদের বাধ্যতামূলক ইসলামী সংস্কৃতি বিষয়টি পড়তে হয় ৷ ফলে সৌদি স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা একজন ছাত্রের দ্বীন সম্পর্কিত ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনা পরিষ্কার ৷ ইসলামী বিষয়ে যারা পড়ে, তারা ইসলামী শিক্ষাবিদ হিসেবে তৈরি হন ৷ নিঃসন্দেহে এটি মুসলিম দেশ হিসেবে এক বিরাট পুঁজি ৷ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার ৷ 

  • বিভিন্ন মুসলিম দেশে ছেলে মেয়ে একসাথে লেখাপড়া করে ৷ এটা পশ্চিমা সভ্যতার ক্ষয়িষ্ণু ধারা ৷ সামাজিক বিপর্যের বিরাট কারন ৷ পক্ষান্তরে, সৌদি আরবে সহ-শিক্ষা নেই ৷ এখানে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা ৷ ছেলে ও মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য পৃথক স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি রয়েছে ৷ সৌদি আরবে শিক্ষা ব্যবস্থার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে দ্বীন ও দুনিয়ার জন্য অনেকটা অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে ৷ পাক-ভারত উপমহাদেশের মতো মোল্লা ও মিষ্টার নামক দু'টি স্বতন্ত গোষ্ঠী তৈরীর ব্যবস্থা রাখা হয়নি ৷"

  • জাতিগতভাবে আমরা বাচ্চাদের মত অনুকরণপ্রিয় ৷ অনুকরনের জন্য আমাদের উচ্চ শিক্ষিত সমাজ ইউরোপ এবং আমেরিকাকে আদর্শ হিসেবে বেছে নিয়েছে ৷ রাজনৈতিক নেতারা বেছে নিয়েছে সিংগাপুর, মালেশিয়া, জাপানকে ৷ তথাকথিত ইসলামী দলগুলো বেছে নিয়েছে ইরান, তুরষ্ককে ৷ আলেম ওলামা বেছে নিয়েছে মিশরের আল আজহার কিংবা ভারতের দেওবন্দকে ৷ এই অনুকরণকে আমরা খারাপ বলছি না কিন্তু একই সাথে আমাদের মনে রাখতে, বিশ্বের একেক অঞ্চলের আবহাওয়া একেক রকম ৷ আবহাওয়া এবং জলবায়ুর উপর নির্ভর করে প্রত্যেক অঞ্চলের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য গড়ে উঠে ৷ যেমন-

  • আরবের এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলো বিশেষ করে সৌদি আরব, আমিরাত, ওমান, বাহরাইনের খাবার সবাই খেতে পারলেও; আফ্রিকা অঞ্চলের মিশর, লিবিয়া, সুদানের খাবার অনেকের রুচিতে বাধবে ৷ আবার আরবের লোকেরা আমাদের খাবার খেতে চায় না ৷ এমন না যে ওদের খাবার হালাল, আমাদেরটা হারাম; বা আমাদেরটা হালাল, ওদেরটা হারাম ৷ ব্যবধানটা হচ্ছে রন্ধন প্রণালীতে ৷ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের লোকদের মত অত মশলাযুক্ত খাবার আর পৃথিবীর আর কেউ খায় বলে জানা নেই ৷

  • রন্ধন প্রণালীর মত রাঁধুনীদের সাজ সজ্জাও ভিন্ন ৷ আরবের মেয়েরা আমাদের উপমহাদেশের মেয়েদের মত নাক, কান ফুটো করে না ৷ যদিও ইদানিং আরবের কিছু কিছু দেশে কান ফুটো করার প্রচলণ ঘটেছে ৷ তবে সেটা ব্যাপক নয় ৷ আফ্রিকা অঞ্চলের কিছু দেশে আবার মেয়েদের খতনা করানো হয় ৷ কিছু অঞ্চলে বিয়ের পর এ্যাসিড বা অন্য কোন পদ্ধতিতে স্থায়ী ভাবে মেয়েদের মুখে এক ধরনের বিশেষ চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয় ৷ যাতে সবাই বুঝতে পারে মেয়েটি বিবাহিত ৷ "ভারতবর্ষের বিবাহের ইতিহাস'' বইয়ে ডঃ অতুল সুর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের হিন্দুদের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে বিবাহ, আলাদা চাল চলন, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি বৈষম্য নিয়ে আলোচনা করেছেন ৷ মুসলমানদের মাঝে সাধারণত এমন কোন ভিন্নতা নেই ৷ নেই কোন বৈষম্য৷ গ্র্যান্ড মুফতির জন্য যা বৈধ, আমাদের জন্যও তা বৈধ ৷ ঊনার জন্য যা অবৈধ, আমাদের জন্যও তা অবৈধ ৷ রাজা-প্রজা, আমির-ফকির, সাদা-কালো, বিশ্বের সকল মুসলমানের জন্য এক আইন ৷ মুসলমানদের একেক অ়ঞ্চলে একেক রকম খাদ্যাভ্যাস, ভিন্ন ভিন্ন পোশাক, সামাজিক রীতিনীতি ইত্যাদি আলাদা কেন? 

  • সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের কারনে একেক অঞ্চলের মানুষের সামাজিক রীতিনীতি একেক রকম, যার কারনে আপনি চাইলেও বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর, জাপান, আমেরিকা বা সৌদি আরবের মত করতে পারবেন না ৷ যে কোন দেশের নীতি নির্ধারকগণ সাধারণত দেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, জনসংখ্যা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিবেচনা করে দেশ পরিচালনা করেন ৷ আর আমরা সেসব বিবেচনা না করেই বোকার মত তাদের অনুসরণ করে থাকি ৷ যেমন- বাচ্চাদের "নিরাপদ সড়ক চাই" আন্দোলনে কানাডার রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে স্কুলের বাচ্চাদের রাস্তা পারাপারের সুযোগ করে দেওয়ার ভিডিও আমরা দেখেছি ৷ 

  • অনেকেই সে ভিডিও ভাইরাল করে বাংলাদেশের আইনের প্রতি নিন্দাজ্ঞাপন এবং কানাডার সরকারকে বাহবা দিয়েছেন ৷ এই ভিডিও ভাইরাল করা জনগণকে আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন, কানাডার আয়তন কত? কানাডার জনসংখ্যা কত? সেখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে কতজন লোক বাস করে? আপনি নিশ্চিত থাকেন ৯৫% লোক তার কোন সঠিক জবাব দিতে পারবে না ৷ কিন্তু ভিডিও ভাইরাল করে ঠিকই বাংলাদেশ সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিয়েছে ৷ একইভাবে সরকারও ডান্ডা মেরে পাল্টা জবাব দিয়েছে ৷ ফলে বিষয়টা জনগণের কল্যান- অকল্যানের ইস্যু না হয়ে সরকার এবং বিরোধী দলের জয় - পরাজয়ের খেলা হয়ে গেছে ৷

  • শিক্ষা ব্যবস্থাতেও একই রকম জেনারেল শিক্ষিত লোকেরা চায় মাদ্রাসা পড়ুয়াদের পরাজিত করতে, মাদ্রাসা পড়ুয়ারা চায় জেনারেল শিক্ষিতদের হারিয়ে দিতে ৷ একদল বাংলাদেশকে জাপান বানানোর স্বপ্ন দেখালে, অন্যদল জার্মানী বানানোর স্বপ্ন নিয়ে হাজির হয় ৷ একই রকম ধাপ্পাবাজি চলে তথাকথিত ইসলামী দলের নামে ৷ পীর শব্দটা এসেছে ইরান তথা শিয়া সংস্কৃতি থেকে ৷ এই প্রথার সমর্থকরা এর পক্ষে যুক্তি-তর্ক পেশ করলেও, মক্কা-মদীনার কোন আলেম থেকে এর স্বপক্ষে কোন ফতোয়া পাওয়া যায় না ৷ অন্যদিকে গণতন্ত্রের স্বপক্ষেও আপনি ফতোয়া পাবেন তথাকথিত মডারেট ইসলামী দলগুলোর কাছে ৷ কওমী বা আহলে হাদীসপন্থী আলেমদের মাঝে এর স্বপক্ষে কোন ফতোয়া পাওয়া যায় না ৷ সাময়িকভাবে কোন কোন আলেম ভোট দেওয়ার অনুমতি প্রদান করলেও একে জায়েয বলে ফতোয়া দেন না ৷ এই দলের সমর্থক তথাকথিত আলেমদের কাছেই এর পক্ষে ফতোয়া পাবেন, অন্যদের কাছে না ৷

  • আমাদের এসব অজ্ঞতা, অক্ষমতা, বিভক্তির মূল কারন হলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দৈন্যতা ৷ যে যে পরিবেশ এবং যে প্রতিষ্ঠান, যে দল, সে ব্যক্তির সহচর্যে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে সে আর ঐ বৃত্ত থেকে বের হতে পারে না ৷ আবার কেউ যদি ঐ বৃত্ত থেকে বের হতে চায়, তাহলে তার উপর নেমে আসে অপবাদ, অবজ্ঞার পাহাড় ৷ যেমন, অনেক ভাই আরবের দেশগুলোতে গিয়ে সেখানকার মানুষ, আলেমদের সহচর্যে কিছু দ্বীনি জ্ঞান লাভ করেছেন ৷ এক শ্রেণীর আলেম অবজ্ঞার চোখে তাদেরকে "প্রবাসী কামলা", "আবুল" এ জাতীয় সম্বোধন করে সুখ অনুভব করেন ৷ অথচ রাসূল (সাঃ) নিজ হাতে কাজ করতেন এবং অন্যদেরও কাজ করতে উৎসাহিত করেছেন ৷ কোন হালাল কাজই ইসলামের দৃষ্টিতে ছোট নয় ৷ এরা কি সত্যিই আলেম? নাকি শয়তান আলেমের লেবাস ধরে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে? আল্লাহ আ'লাম ৷

  • ইসলামের ইতিহাসে এমন কোন বাঙ্গালী বীর বা আলেমের কথা আমার জানা নেই যিনি বাংলার বাইরে ইসলাম প্রচার এবং প্রসারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন ৷ অথচ বাংলার ঘরে ঘরে ইসলামী বিশেষজ্ঞ ৷ এই ইসলামী বিশেষজ্ঞরা আবার সবকিছুতে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানীর ভক্তদের মত বিভক্ত ৷ সৌদি ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করার পরেও তাদের মাঝে এসব নিয়ে তেমন কোন উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা আমার চোখে পড়েনি ৷ আর আমরা ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত লাফালাফি করতে করতে একজন আরেকজনের রক্ত ঝরাতেও দ্বিধা করি না ৷ সৌদিতে অপর ভাইয়ের রক্ত ঝরানোর কথা ভুলেও চিন্তা করা যায় না ৷ 

  • আমরা বলি না যে, সৌদি আরবকে আমাদের অাদর্শ মানতে হবে, কারন আমাদের জন্য কোরআন এবং সুন্নাহই একমাত্র আদর্শ ৷ কিন্তু আমরাতো অন্য দেশকে অনুসরণ করছি ৷ পাশ্চাত্য আইন ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনুসরণ করতে গিয়ে তাদের মতই আমাদের দেশে জারজ সন্তান উৎপাদন হচ্ছে ৷ ইরানের সংস্কৃতি আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে রূপান্তর হয়েছে ৷ মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরষ্ক সততার দিক দিয়ে আমাদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি এগিয়ে থাকলেও ধর্মীয় অনুভূতির দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে ৷ আমি মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরষ্কে শেভ করা ইমাম দেখেছি, যেটা আমাদের দেশে কল্পনাও করা যায় না ৷ তুরষ্কের অনেক মেয়েকে দেখেছি সিগারেট টানতে ৷ 

  • আমাদের দেশের যেসব ভাই সারাদিন সৌদি বিরোধী প্রচারণা চালায়, এদেরকে যদি প্রশ্ন করেন, এমন একটা মুসলিম দেশের নাম বলেন যারা সৌদি আরবের চেয়ে ভালো, এদের অনেকের কাছে কোন সদুত্তর পাবেন না ৷ কেউ কেউ বলবেন, সৌদি আগে ভালো ছিলো এখন ভালো নাই ৷ ঠিক আছে, এখন সৌদি আরবের চেয়ে ভালো হয়েছে এমন কোন ইসলামী রাষ্ট্রের নাম বলেন? তখন আবার ইনিয়ে-বিনিয়ে প্রসঙ্গ বদল শুরু করবে ৷ এই লোকগুলো নিজেরাও জানে না, তারা কেমন দেশ চায়? কেমন ইসলাম চায়? এরা চায় সব কিছু নিজের মনের আবেগ দিয়ে সাজাতে ৷ আর এসব আবেগী লোককে দিয়েই লেখক, কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, বক্তা, ধার্মিক, পেশাজীবিদের পেট চলে ৷

  • সরকার যদি জয়-পরাজয়ের চিন্তা না করে জনগণের কল্যানের চিন্তা করে তাহলেই এ অবস্থার উত্তরণ ঘটবে ৷ যেমন, ত্রিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করে সরকার একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে পারে ৷ ডাক্তারদের নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ধার্য্য করে দিতে পারে ৷ কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারকে বাড়তি কিছু ঝামেলায় পড়তে হবে ৷ যেমন, শিক্ষা ব্যবস্থা যদি ইসলাম বিরোধী হয় তাহলে মুসলমানদের সমালোচনায় পড়তে হবে ৷ আবার পাশ্চাত্য সভ্যতা বিরোধী হলে পশ্চিমা সমাজ এবং তাদের পেইড এজেন্টদের সমালোচনায় পড়তে হবে ৷ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা হলে কোন ইসলামী হবে? জামায়েতে ইসলামী? চরমোনাইয়ের ইসলামী? তাবলীগী ইসলামী? ব্রেলভী ইসলামী? হানাফী ইসলামী? আহলে হাদীসের ইসলামী?

  • অন্যদিকে ডাক্তার, উকিল এজাতীয় পেশাজীবিদের যদি ফি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় তাহলে সরকারের বিরূদ্ধে তাদের স্বাধীন পেশায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনবে ৷ যেভাবে মাশরাফির বিরূদ্ধে ডাক্তাররা অভিযোগ এনেছিলো ৷ ভালো কাজে ঐক্যবদ্ধ না হলেও আমরা খারাপ কাজে ঐক্যবদ্ধ হতে জানি ৷ আমরা যদি ভালো কাজে ঐক্যবদ্ধ থাকতাম, তাহলে সরকারও জনকল্যানে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পিছ পা হত না ৷ এখন সরকারকে ভোটের কথাও মাথায় রাখতে হয় ৷ ফলে জনকল্যানের চেয়ে ভোটের রাজনীতিই এখানে মূখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ যার কারনে আমাদের কারো প্রতি কারো কোন ভক্তি, শ্রদ্ধা নেই ৷ নেতা মানে আমাদের কাছে ভন্ড, ডাক্তার মানে কসাই, শিক্ষা মানে ব্যবসা, ধর্ম মানে আমি ছাড়া সবাই বাতিল ৷ যেখানে নিজ দেশের কাছের মানুষের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ জন্মায়নি, সেখানে হাজার হাজার মাইল দূরের সৌদি আরবের প্রতি শ্রদ্ধা জন্ম নিবে এ ধরনের আকাংখা অনেকটা উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মতই ৷

  • 🖋 Sayedur Rahman
  •  — with Wasim Akram. 

Post a Comment

0 Comments