নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন https://rasikulindia.blogspot.com/
- আজ থেকে প্রায় ১৪শ বছর পূর্বে কেউ একজন আপনার জন্য খুব কেঁদেছিলেন ! আপনাকে “ভাই” বলে ডেকেছিলেন! প্রতি ওয়াক্তে আপনার জন্য দোয়া জারি রেখেছিলেন ! আপনার খুব হিতাকাঙ্ক্ষী ছিলেন!
- আপনার সাথে সাক্ষাতের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেছিলেন! জানেন তিনি কে ছিলেন!?
- তিনি ছিলেন আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদূর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
- .
- একদিন মুমিনগণের মা, আম্মাজান আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা প্রিয়নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে বসা ছিলেন! রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বেশ উৎফুল্ল দেখে তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোআ করুন!
- প্রিয়নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ﷺ তার প্রিয়তমা স্ত্রী আম্মাজান আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহু৷ আনহা )-র জন্য দোআ করলেন :
- “হে আল্লাহ! আমার আয়েশাকে মাফ করে দাও। তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দাও, তার আগামীর গুনাহ মাফ করে দাও, তার গোপনে করা গুনাহ মাফ করে দাও, তার প্রকাশ্যে করা গুনাহও মাফ করে দাও।”
- রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দোআ শুনে আম্মাজান আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা খুব হাসলেন! এতই হাসলেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কোলে ঢলে পড়লেন।
- আল্লাহর রাসূল ﷺ আম্মাজান আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা-কে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আয়েশা! আমার এই দোয়া কি তোমাকে আনন্দিত করেছে”?’
- জবাবে আম্মাজান আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল!’কি করে এমন দোআ কাউকে সন্তুষ্ট করতে না পারে”!?
- আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ﷺ তখন
- বললেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি আমার উম্মতের জন্য আমার প্রতিটি নামাযে এই একই দোআ করি।’
- — [সিলসিলাহ সাহীহাহ : ২২৫৪ ]
- .
- যে দোয়া রাসূলুল্লাহ ﷺ উনার প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য করেছেন, সেই একই দোয়া প্রতি নামাজে তিনি আপনার জন্য করেছেন, আমার জন্য করেছেন। ভাবতে পারেন, তিনি আপনার, আমার কতটা হিতাকাঙ্ক্ষী ছিলেন!?
- .
- আবু জুম‘আহ আনছারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সঙ্গে দুপুরের খানা খাচ্ছিলাম। এমন সময় আবু ওবায়দাহ ইবনুল জাররাহ আমাদের সঙ্গে ছিলেন।
- তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের চাইতে উত্তম কেউ আছে কি? আমরা আপনার কাছে ইসলাম কবুল করেছি এবং আপনার সাথে জিহাদ করেছি। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন,
- ﻗَﻮْﻡٌ ﻳَﻜُﻮْﻧُﻮْﻥَ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻯْ
- ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮْﻥَ ﺑِﻰْ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮَﻭْﻧِﻰْ
- ‘হ্যাঁ। তারা হ’ল আমার পরবর্তী লোকেরা, যারা আমার উপরে বিশ্বাস স্থাপন করবে অথচ তারা আমাকে দেখেনি’।
- —[আহমাদ হা/১৭০১৭; মিশকাত হা/৬২৮২ ]
- .
- প্রায় একই মর্মে মু‘আয বিন জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, যেখানে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন :
- ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ
- ﺍﻟﻠﻪِ، ﻫَﻞْ ﻣِﻦْ ﻗَﻮْﻡٍ ﺃَﻋْﻈَﻢُ ﺃَﺟْﺮًﺍ ﻣِﻨَّﺎ؟ ﺁﻣَﻨَّﺎ ﺑِﻚَ ﻭَﺍﺗَّﺒَﻌْﻨَﺎﻙَ
- ‘আমাদের চাইতে অধিক পুরস্কারের অধিকারী কেউ
- আছে কি? আমরা আপনার উপরে বিশ্বাস স্থাপন
- করেছি এবং আপনার পদাংক অনুসরণ করেছি’।
- জবাবে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
- ﻣَﺎ ﻳَﻤْﻨَﻌُﻜُﻢْ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ
- ﻭَﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑَﻴْﻦَ ﺃَﻇْﻬُﺮِﻛُﻢْ ﻳَﺄْﺗِﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﻮَﺣْﻲِ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ، ﺑَﻞْ ﻗَﻮْﻡٌ
- ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻛُﻢْ ﻳَﺄْﺗِﻴْﻬِﻢْ ﻛِﺘَﺎﺏٌ ﺑَﻴْﻦَ ﻟَﻮْﺣَﻴْﻦِ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮْﻥَ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﻌْﻤَﻠُﻮْﻥَ ﺑِﻤَﺎ
- ﻓِﻴْﻪِ، ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺃَﻋْﻈَﻢُ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺃَﺟْﺮًﺍ ﻣَﺮَّﺗَﻴْﻦِ ‘ ঐ
- মহাপুরষ্কার থেকে তোমাদের কে বাধা দিবে?
- এমতাবস্থায় যে, আল্লাহর রাসূল ﷺ তোমাদের মধ্যে আছেন, যিনি তোমাদের নিকটে আসমান থেকে ‘অহী’ নিয়ে আসছেন। বরং অধিক পুরষ্কারের মালিক হবে তারাই, যারা তোমাদের পরে আসবে। যাদের
- নিকটে দুই মলাটে মোড়ানো কিতাব (কুরআন) আসবে, যার উপরে তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে। তারা তোমাদের চাইতে দ্বিগুণ পুরস্কারের মালিক হবে’।
- — [ ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ; হাকেম ৪/৮৫;
- বুখারী, তারীখ কাবীর ২/৩১১, ত্বাবারাণী,
- মু‘জামুল আওসাত্ব, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৩১০]
- .
- আপনার, আমার মর্যাদা কোথায় উন্নিত করেছে দেখেছেন!? কতটা সৌভাগ্যবান আপনি যে, আপনার জন্য দ্বিগুণ পুরস্কারের আগাম ঘোষনা করা হয়েছে!
- .
- একদিন চলার পথে রাসূল ﷺ কেঁদে উঠে বলেন,
- ﻭَﺩِﺩْﺕُ ﺃَﻧِّﻲْ ﻟَﻘِﻴْﺖُ ﺇِﺧْﻮَﺍﻧِﻲْ
- ‘আমি আমার ভাইদের সাথে সাক্ষাতের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করছি।’ ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আপনার ভাই নই?
- জবাবে রাসূল ﷺ বললেন,
- ﺃَﻧْﺘُﻢْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻲْ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺇِﺧْﻮَﺍﻧِﻲْ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮْﺍ ﺑِﻲْ ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺮَﻭْﻧِﻲْ
- ‘তোমরা আমার সাথী। আমার ভাই হল তারা, যারা আমাকে না দেখেই আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে’।
- — [আহমাদ হা/১২৬০১; ছহীহাহ হা/২৮৮৮]
- .
- তিনি আপনাকে প্রতিনিয়ত মিস করেছেন, আপনি করেন তো!? তিনি আপনার জন্য কেঁদেছেন, আপনি কাঁদেন তো!? তিনি আপনার সাক্ষাৎ লাভে ব্যাকুল ছিলেন, আপনি ব্যাকুল তো!? তিনি আপনাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসেছিলেন, আপনি বাসেন তো!?
- হে প্রিয় ভাই! মনে রাখবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার নিজের চাইতে, নিজের স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন এমনকি দুনিয়ার সকল কিছুর চাইতে রাসূল ﷺ-কে অধিক প্রিয় এবং অধিক ভালবাসার হক্বদার মনে না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি ইমানদার হতে পারবেন না! আসুন রাসূলের ভালোবাসায় নিজেকে সঁপে দেই।
- আল্লাহুম্মা সাল্লি আলাইহি,
- আল্লাহুম্মা বারিক্ব আলাইহি।
- আখতার বিন আমীর ভাই এর ফেইসবুক পেজ থেকে
0 Comments