Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

▌গাইরুল্লাহ’র আইন দিয়ে শাসনকার্য পরিচালনাকারী শাসকের আনুগত্যের বিধান


▌গাইরুল্লাহ’র আইন দিয়ে শাসনকার্য পরিচালনাকারী শাসকের আনুগত্যের বিধান
·
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সাবেক সদস্য, বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ, আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
ﺍﻟﺴﺆﺍﻝ: ﻣﺎ ﺣﻜﻢ ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﺍﻟﺬﻱ ﻻ ﻳﺤﻜﻢ ﺑﻜﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻨﺔ ﺭﺳﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ؟
ﺍﻹﺟﺎﺑﺔ: ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﺍﻟﺬﻱ ﻻ ﻳﺤﻜﻢ ﺑﻜﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻨﺔ ﺭﺳﻮﻟﻪ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ، ﻭﻻ ﺗﺠﺐ ﻣﺤﺎﺭﺑﺘﻪ ﻣﻦ ﺃﺟﻞ ﺫﻟﻚ، ﺑﻞ ﻭﻻ ﺗﺠﻮﺯ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﺼﻞ ﺇﻟﻰ ﺣﺪ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﻓﺤﻴﻨﺌﺬ ﺗﺠﺐ ﻣﻨﺎﺑﺬﺗﻪ، ﻭﻟﻴﺲ ﻟﻪ ﻃﺎﻋﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ .
ﻭﺍﻟﺤﻜﻢ ﺑﻐﻴﺮ ﻣﺎ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻨﺔ ﺭﺳﻮﻟﻪ ﻳﺼﻞ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﺑﺸﺮﻃﻴﻦ :
- ﺍﻷﻭﻝ : ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻋﺎﻟﻤﺎً ﺑﺤﻜﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ، ﻓﺈﻥ ﻛﺎﻥ ﺟﺎﻫﻼً ﺑﻪ ﻟﻢ ﻳﻜﻔﺮ ﺑﻤﺨﺎﻟﻔﺘﻪ .
- ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﺤﺎﻣﻞ ﻟﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺑﻐﻴﺮ ﻣﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﺘﻘﺎﺩ ﺃﻧﻪ ﺣﻜﻢ ﻏﻴﺮ ﺻﺎﻟﺢ ﻟﻠﻮﻗﺖ ﻭﺃﻥ ﻏﻴﺮﻩ ﺃﺻﻠﺢ ﻣﻨﻪ، ﻭﺃﻧﻔﻊ ﻟﻠﻌﺒﺎﺩ، ﻭﺑﻬﺬﻳﻦ ﺍﻟﺸﺮﻃﻴﻦ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺑﻐﻴﺮ ﻣﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻔﺮﺍً ﻣﺨﺮﺟﺎً ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻠﺔ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ﴿ﻭﻣﻦ ﻟﻢ ﻳﺤﻜﻢ ﺑﻤﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﺄﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮﻭﻥ﴾، ﻭﺗﺒﻄﻞ ﻭﻻﻳﺔ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ، ﻭﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻟﻪ ﻃﺎﻋﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ، ﻭﺗﺠﺐ ﻣﺤﺎﺭﺑﺘﻪ، ﻭﺇﺑﻌﺎﺩﻩ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﻜﻢ.
ﺃﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﺤﻜﻢ ﺑﻐﻴﺮ ﻣﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻫﻮ ﻳﻌﺘﻘﺪ ﺃﻥ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺑﻪ ﺃﻱ ﺑﻤﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻫﻮ ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ، ﻭﺃﻧﻪ ﺃﺻﻠﺢ ﻟﻠﻌﺒﺎﺩ، ﻟﻜﻦ ﺧﺎﻟﻔﻪ ﻟﻬﻮﻯ ﻓﻲ ﻧﻔﺴﻪ ﺃﻭ ﺇﺭﺍﺩﺓ ﻇﻠﻢ ﺍﻟﻤﺤﻜﻮﻡ ﻋﻠﻴﻪ، ﻓﻬﺬﺍ ﻟﻴﺲ ﺑﻜﺎﻓﺮ ﺑﻞ ﻫﻮ ﺇﻣﺎ ﻓﺎﺳﻖ ﺃﻭ ﻇﺎﻟﻢ، ﻭﻭﻻﻳﺘﻪ ﺑﺎﻗﻴﺔ، ﻭﻃﺎﻋﺘﻪ ‏( ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ‏) ﻭﺍﺟﺒﺔ، ﻭﻻ ﺗﺠﻮﺯ ﻣﺤﺎﺭﺑﺘﻪ ﺃﻭ ﺇﺑﻌﺎﺩﻩ ﻋﻦ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺑﺎﻟﻘﻮﺓ، ﻭﺍﻟﺨﺮﻭﺝ ﻋﻠﻴﻪ، ﻷﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻧﻬﻰ ﻋﻦ ﺍﻟﺨﺮﻭﺝ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻧﺮﻯ ﻛﻔﺮﺍً ﺻﺮﻳﺤﺎً ﻋﻨﺪﻧﺎ ﻓﻴﻪ ﺑﺮﻫﺎﻥ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ.
প্রশ্ন: “যে শাসক আল্লাহ’র কিতাব এবং তাঁর রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ অনুযায়ী শাসন করে না, তার আনুগত্য করার বিধান কী?”
উত্তর: “যে শাসক আল্লাহ’র কিতাব এবং তাঁর রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ অনুযায়ী শাসন করে না, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে তার আনুগত্য করা ওয়াজিব। একারণে তার সাথে যুদ্ধ করা ওয়াজিব নয়, বরং তা না-জায়েজ। তবে সে কুফরের সীমানায় পৌঁছে গেলে তার বিরোধিতা করা ওয়াজিব। মুসলিমদের ওপর তার কোনো আনুগত্য (পাওয়ার অধিকার) নেই।
আল্লাহ’র কিতাব এবং তাঁর রাসূলের সুন্নাহ’য় যা আছে, তা ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে শাসন করা কুফরের পর্যায়ে পৌঁছবে দুটি শর্তে—
এক. আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিধান সম্পর্কে তার জানা থাকতে হবে। পক্ষান্তরে সে যদি সেই বিধান সম্পর্কে না জানে, তবে সে এর (এই বিধানের) বিরোধিতা করার দরুন কাফির হবে না।
দুই. আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে শাসন করতে তাকে যখন উদ্বুদ্ধ করে এই বিশ্বাস যে, আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান যুগোপযোগী নয়, বরং অন্য বিধান তার চেয়ে অধিক উপযোগী এবং বান্দাদের জন্য অধিক কল্যাণকর।
এই দুই শর্তের ভিত্তিতে আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে শাসন করা ইসলাম থেকে খারিজকারী কুফর হিসেবে গণ্য হবে। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহ যা নাজিল করেছেন, সে অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না তারাই কাফির।” [সূরাহ মাইদাহ: ৪৪]
এই শাসকের আইনসম্মত কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা বাতিল হয়ে যাবে। লোকদের উপর তার কোনো আনুগত্য (পাওয়ার অধিকার) নেই। তার সাথে যুদ্ধ করা এবং তাকে শাসনক্ষমতা থেকে বিতাড়ন করা ওয়াজিব।
পক্ষান্তরে সে যখন আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে শাসন করে, সাথে সাথে সে এই বিশ্বাসও পোষণ করে যে, আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান দিয়ে শাসন করা ওয়াজিব এবং এই বিধানই (আল্লাহ’র নাজিলকৃত বিধান) বান্দাদের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর। কিন্তু সে স্বীয় প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে বা শাসিতের ওপর জুলুম করার মানসে সেই বিধানের বিরোধিতা করে; তাহলে সে কাফির নয়, বরং সে একজন ফাসিক্ব, কিংবা একজন জালেম।
তার আইনসম্মত কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা বহাল আছে। এমনকি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে তার আনুগত্য করা ওয়াজিব। তার সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া অথবা বলপ্রয়োগ বা বিদ্রোহ করার মাধ্যমে তাকে শাসনক্ষমতা থেকে অপসারণ করা জায়েজ নয়। কেননা নাবী ﷺ শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে নিষেধ করেছেন, যতক্ষণ না আমরা সুস্পষ্ট কুফর দেখতে পাই, যে ব্যাপারে আমাদের কাছে মহান আল্লাহ’র পক্ষ থেকে স্পষ্ট দলিল রয়েছে।”
·তথ্যসূত্র:
ইমাম ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৪৭-১৪৮; দারুল ওয়াত্বান, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৩ (সর্বশেষ প্রকাশ)।
·অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

Post a Comment

0 Comments