ইবনুল কাইয়েম রহ. এর ‘কিতাবুর রূহ’ সম্পর্কে মূল্যায়ন ও সতর্কতা

ইবনুল কাইয়েম রহ. এর ‘কিতাবুর রূহ’ সম্পর্কে মূল্যায়ন ও সতর্কতা
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
প্রশ্ন: ইবনুল কাইয়েম রাহ. রচিত ‘কিতবুর রূহ’ সম্পর্কে জানতে চাই। এই বইটিকি গ্রহনযোগ্য না কি এতে আলেমদের কোনো আপত্তি আছে?

উত্তর:

ইবনুল কাইয়েম জাওযিয়া রহ. (জন্ম: ৬৯১ হি:/১২৯২ খৃ:। মৃত্যু: ৭৫১ হি:/১৩৫০ খৃ:) রচিত ‘কিতাবুর রূহ’ কিতাবটি অত্যন্ত মূল্যবান একটি গ্রন্থ তাতে কোন সন্দেহ নাই। ইতোমধ্যে এর বাংলা অনুবাদ ’রূহের রহস্য’ নামে প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে সম্মানিত লেখক জীবিত ও মৃত মানুষের আত্মার রহস্য, কবরের প্রশ্নোত্তর, কবরের শান্তি, শাস্তি, দেহের সাথে আত্মার সংযোগ, মৃত্যু বরণ করে আত্মা না কি দেহ, মৃত ব্যক্তিদের পরষ্পর দেখা-স্বাক্ষাৎ, ঘুমন্ত ব্যক্তির আত্মা, বেহুশ ব্যক্তির আত্মা, আত্মার অবস্থান স্থল ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক-বিস্তর আলোচনা করেছেন।

কিন্তু এই বইটির ব্যাপারে আধুনিক যুগের বড় বড় আলেমগণ মন্তব্য করেছেন। যেমন:
তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, এর মধ্যে কিছু মাসআলায় অগ্রাধিকার যোগ্য নয় এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। 
কোনো কোনো আলেম বলেন, এই বইটি তার ইলম চর্চার প্রথম পর্যায়ের লিখা। যার কারণে এতে ত্রুটিপূর্ণ ও অগ্রাধিকার যোগ্য নয় এমন অভিমত ও মাসআলা রয়েছে।
তাই তারা সাধারণ মানুষকে এটি না পড়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। তবে কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি এটি পড়তে পারেন।

এটি আল্লামা বিন বায, আলবানী, উসাইমীন, আব্দুল মুহসিন আব্বাদ প্রমুখদের বক্তব্যের সার সংক্ষেপ।

শাইখ আলবানী রা. বলেন, “ইবনুল কাইয়েম রহঃ এর দিকে এ কিতাবটির সম্বন্ধ সঠিক হলে (অর্থাৎ এটি তার রচিত কিতাব বলে প্রমাণিত হলে) কথা হল, এটি তার প্রথম পর্যায়ের লিখা কিতাব। অর্থাৎ তাকলীদ (অন্ধ অনুসরণ), চিন্তার স্থবিরতা, মাহযাবী ও বিদআতি ধ্যান-ধারণা থেকে মুক্তি পাওয়ার পূর্বের লেখা।”

আরেকটি কথা হল, দুনিয়ার কোন মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। আমাদের কর্তব্য কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক কথাগুলো গ্রহণ করা আর কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কথাগুলো বর্জন করা। এটাই প্রকৃত হক পন্থীদের পরিচয়। আল্লাহু আলাম।

আরও পড়ুন: 
▌"কিতাবুর রূহ" নিয়ে বিদ'আতীীদের বিভ্রান্তির অপনোদন! 
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সেন্টার।

▌"কিতাবুর রূহ" নিয়ে বিদ'আতীীদের বিভ্রান্তির অপনোদন! 
.
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি।
যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য। যিনি বলেছেন, “বরং আমি সত্যকে মিথ্যার উপর নিক্ষেপ করি, অতঃপর সত্য মিথ্যার মস্তক চুর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়, অতঃপর মিথ্যা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়...।” --- [সূরাহ আম্বিয়া: ১৮ ]
.
এবং অসংখ্য সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ-এর প্রতি, যিনি বলেছেন,,
"তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আমার পরে জীবিত থাকবে সে বহু ধরনের মতানৈক্য দেখতে পাবে। অতএব সে সময় তোমাদের অবশ্য কর্তব্য হবে আমার সুন্নাত ও আমার সুপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে চোয়ালের দাঁত দ্বারা মযবুতভাবে অাঁকড়ে ধরা। আর সাবধান! তোমরা (দ্বীনের ব্যাপারে) নতুন কাজ হতে বেঁচে থাকবে। কেননা প্রত্যেক নতুন কাজই বিদ‘আত’।
--- [আবুদাউদ হা/৪৬০৭; তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ হা/৪২; মিশকাত হা/১৬৫, ‘সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ, বঙ্গানুবাদ (এমদাদিয়া) ১/১২২ পৃঃ; আলবানী, সনদ ছহীহ]
.
⦁ প্রারাম্ভিকা,
আল্লাহ কর্তৃক নাযিলকৃত অহি-র বিধান তথা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান না থাকাই সমাজে বিদ‘আত সৃষ্টির প্রধান কারণ। সঠিক পথ না চেনার কারণে মানুষ যেমন পথ ভুল করে, তেমনি ক্বুরআন ও ছহীহ হাদীছের যথার্থ জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষ শরী‘আত বহির্ভূত কাজকে ইবাদত হিসাবে গ্রহণ করে। আর এজন্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জ্ঞানার্জনকে ফরয বলে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রিয়নবী মুহাম্মদূর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমের উপর জ্ঞানার্জন করা ফরয’।
----- [ইবনু মাজাহ হা/২২৪; মিশকাত হা/২১৮; আলবানী, সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৯১৩]
.
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমল ব্যতীত ইলমের দিকে আহবান করে সে পথভ্রষ্ট। আর যে ব্যক্তি ইলম বিহীন আমলের দিকে আহবান করে সেও পথভ্রষ্ট। এদের চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট সে ব্যক্তি, যে বিদ‘আতীদের পথে ইলম অন্বেষণ করে। ফলে সে কুরআন ও সন্নাত বহির্ভূত কর্মের অনুসরণ করে এবং ধারণা করে যে, ইহা ইলম; অথচ ইহা অজ্ঞতা। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি বিদ‘আতীদের পন্থায় ইবাদত করে সে ইসলামী শরী‘আত বহির্ভূত আমল করে এবং ধারণা করে যে, সে ইবাদত করছে; অথচ ইহা ভ্রষ্টতা’। 
--- [মাজমূ‘ঊ ফাতাওয়া ১১/২৭ পৃঃ]
অতএব জ্ঞান এমন এক আলোকবর্তিকা, যার মাধ্যমে মানুষ জান্নাতের পথ সুস্পষ্টভাবে দেখতে পায়।
নিজেকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে এবং অন্যকেও রক্ষা করতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে অজ্ঞতা এমন এক অন্ধকার, যার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে নিজে জান্নাতের পথের দিশা হারিয়ে ফেলে এবং অপরকেও সে পথের সন্ধান দিতে পারে না। আর এরূপ অজ্ঞ ব্যক্তিরাই নিজে বিদ‘আতী হয় এবং ছহীহ, যঈফ ও জাল হাদীছের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণে অক্ষম হওয়ায় ভুল ফাতওয়া দেয়। সাথে সাথে মানব রচিত কিচ্ছা-কাহিনী ও স্বপ্নবৃত্তান্তের মাধ্যমে মানুষকে ভ্রষ্টতার শেষ সীমানায় নিক্ষেপ করে। ফলে নিজেরা পথভ্রষ্ট হয় এবং অপরকে পথভ্রষ্ট করে এবং পরকালে জাহান্নামের খড়ি হয়। এমতাবস্থায় কুরআন ও ছহীহ হাদীছ শুনতে তার কর্ণ বধির এবং সরল ও সঠিক পথ দেখতে তার চক্ষু অন্ধ হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন,
‘তুমি কি তাকে লক্ষ্য করেছ? যে তার খেয়াল-খুশীকে নিজ ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনেশুনেই তাকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং তার কর্ণ ও হৃদয়ে মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তার চক্ষুর উপর রেখেছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পরে কে তাকে পথনির্দেশ করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?’
----- [সুরাহ জাছিয়া ৪৫/২৩]।
.
বিদ'আতীদের একটা কুটকৌশল হল, তার নিজের মতকে বলবৎ করার জন্য কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অপব্যাখ্যায় লিপ্ত হয়। কখনো বা কুরআনের একটিমাত্র আয়াত অথবা হাদীছের কোন অংশকে নিজের মতের উপর দলীল হিসাবে পেশ করে নিজেকে কৃতার্থ মনে করে। অথচ পূর্ণ হাদীছ ও আয়াতের ব্যাখ্যা জানার প্রয়োজন মনে করে না। আর এর ফলেই সমাজে সৃষ্টি হয় নানা বিদ‘আত।
.
বিদ'আতীদের অন্যতম আরেকটি কুটকৌশল হল সালাফী উলামাদের কিতাবাদি থেকে দলিল পেশ করে নিজেদের বিদ'আতকে সমাজে সু-প্রতিষ্ঠিত করা। অতি সাম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি, কথিপয় বিদ'আতী দাঈগন নিজেদের শিরকী আক্বীদাহর পক্ষে দলিলস্বরূপ ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম [ রাহিমাহুল্লাহ ] বি'রচিত "কিতাবুর রূহ" বইটি থেকে হাওয়ালা দিচ্ছেন। 
যারফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃস্টি হচ্ছে।
পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম [রাহিমাহুল্লাহ-র] "কিতাবুর রূহ" কিতাবটিতে বেশকিছু ভাল কথা রয়েছে যা থেকে যেকেউ উপকৃত হতে পারেন। পাশাপাশি কিছু জাল-দ্বইফ হাদিসও রয়েছে। ইতিহাসবিদদের মতে,শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ [ রাহিমাহুল্লাহ -র] ছাত্রত্ব গ্রহণ করার পূর্বে তিনি এই বইটি সংকলন করেন।
.
⦁ "কিতাবুর রূহ" - এর উপর এক নজর :
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ [ রাহিমাহুল্লাহ'র] বিখ্যাত ছাত্র ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম [ রাহিমাহুল্লাহ ]-বি'রচিত “কিতাবুর রূহ” কিতাবটি সূফীদের পছন্দের কিতাবগুলোর একটি । এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম সূফীরাই বইটির অনুবাদ করে ছাপিয়েছেন।
শাইখের লিখিত এই কিতাবে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা উনার অন্য কিতাবাদির সাথে সাংঘর্ষিক ও বিপরীতমুখী। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, সূফীরা নিজেদের ভ্রান্ত আক্বীদাহকে শক্তিশালী করার জন্য উনার এই কিতাবটির ঘটনাবলী প্রচার করে সালাফী যুবকদের ধোঁকা দেয়! এক্ষেত্রে শাইখের রচিত অন্যান্য কিতাবগুলোতে উনার সর্বশেষ অবস্থান কি ছিল তা অপ্রকাশ্য রেখে দেয়।
পাঠকদের জ্ঞাতার্থে আমরা আরো জানাতে চাই যে, উক্ত কিতাবে অলৌকিক ঘটনা সম্বলিত কিছু দূর্বল হাদিস স্থান পেয়েছে যার বিশুদ্ধতা প্রমানিত নয়!
আলোচ্য কিতাব সম্পর্কে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ আশ শাইখুল আল্লামাহ ইমাম মুহাম্মদ বিন ছলেহ আল উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ )-কে জিজ্ঞাস করা হয়েছিল, উত্তরে তিনি বলেন -
“এই কিতাবে ভাল এবং মূল্যবান বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেকেউ কিতাবটি পড়বে সে জানতে পারবে যে এটা ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ )-র লিখিত। যতদূর জানা যায় উক্ত কিতাবে যেসকল ঘটনাবলি (যেগুলি কিছু মৃত মানুষ সংক্রান্ত) উল্লেখ করা হয়েছে, উক্ত ঘটনাগুলির বিশুদ্ধতা সুনিশ্চিত নয়।
ঘটনাগুলো এতই মন গলানো (হৃদয় নরম করে দেয়) বিষয় এবং মনের মধ্যে কবরের আযাবের ভয়কে পুনঃজীবিত করে, পাঠককে কবরের সুখ সম্পর্কে আকুলভাবে আহ্বান করে। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ ) ঘটনাগুলোর বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করতে কঠোরতা কম দেখিয়েছেন। এইসকল বিষয়ে ঘটনাগুলো খুবই কার্যকর কিন্তু ঘটনাগুলোর বিশুদ্ধতা প্রমানিত নয়। 
---- [ফাতওয়া নুর ‘আলা আদ-দারব فتاوى نور على الدرب للعثيمين ]
.
আলোচনা দীর্ঘায়িত না করে, আমরা উপরিউক্ত কিতাব থেকে দু'একটি উদাহরণ পেশ করব [ ওয়া বিল্লাহীত তাওফীক্ব ]।
► মৃতব্যক্তি যিয়ারতকারীকে চিনতে পারে এবং সালাম দেয় :
حَدثنَا مُحَمَّد بن عون حَدثنَا يحيى بن يمَان عَن عبد الله بن سمْعَان عَن زيد بن أسلم عَن عَائِشَة رضى الله تَعَالَى عَنْهَا قَالَت قَالَ رَسُول الله مَا من رجل يزور قبر أَخِيه وَيجْلس عِنْده إِلَّا استأنس بِهِ ورد عَلَيْهِ حَتَّى يقوم
আম্মাজান আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ [ সাঃ] বলেন, কোন ব্যক্তি যখন তার ভাইয়ের কবর যিয়ারত করে এবং তার পাশে গিয়ে বসে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে সেখান থেকে উঠে না আসে, কবরবাসী তার সানিধ্য লাভে আনন্দিত হয় এবং তার সালামের জবাব দেয়।
--- [ কিতাবুর রূহ, এমদাদিয়া লাইব্রেরী থেকে প্রকাশিত। পৃষ্ঠা : ২ ]
► তাহক্বীক্ব ::
⦁ সানাদের রাবী 'عبد الله بن سمعان' মাজহুল (অজ্ঞাত)।
⦁ ইমাম ইবনু হাজার আসক্বালানী রাহিমাহুল্লাহ উক্ত বর্ণনা পেশ করে বলেন,
"سنده عبد الله بن سمعان لا أعرف حاله"
'আব্দুল্লাহ ইবন সাম'আন এর (হাল) অবস্থা সম্পর্কে জানি না'।
--- [ লিসানুল মিযান,রাবী নং : ৪২৬৮ ]
.
⦁ সানাদের আরেক রাবী 'يحيى بن يمان' এর পুরো নাম হচ্ছে 'يحيى بن يمان العجلي الكوفي'
সে হাদিস বর্ণনায় শক্তিশালী নয়। জমহুর মুহাদ্দিসগণ তার ব্যাপারে জারাহ (সমালোচনা) করেছেন।
قال أحمد: ليس بحجة.
وقال ابن المديني: صدوق، فلج فتغير حفظه.
وقال ابن معين والنسائي: ليس بالقوى.
قال البخاري: فيه نظر.
---- [ মিযানুল ই'তিদাল রাবী নং : ৯৬৬১ ]
.
একই পৃষ্ঠায় আরেকটি হাদিস রয়েছে!
► হাদীছ :
حَدثنَا مُحَمَّد بن قدامَة الجوهرى حَدثنَا معن بن عِيسَى الْقَزاز أخبرنَا هِشَام بن سعد حَدثنَا زيد بن أسلم عَن أَبى هُرَيْرَة رضى الله تَعَالَى عَنهُ قَالَ إِذا مر الرجل بِقَبْر أَخِيه يعرفهُ فَسلم عَلَيْهِ رد عَلَيْهِ السَّلَام وعرفه وَإِذا مر بِقَبْر لَا يعرفهُ فَسلم عَلَيْهِ رد عَلَيْهِ السَّلَام
--- [ কিতাবুর রূহ, পৃষ্ঠা : ২ ]
► তাহক্বীক্ব :
⦁ সানাদের রাবী 'محمد بن قدامة اجوهري' এর ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণ জারাহ (সমালোচনা) করেছেন।
⦁ ইমাম ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন বলেন "সে হাদিস বর্ণনায় কিছুই না"
⦁ ইমাম আবু দাউদ বলেন তাকে 'দ্বঈফ' বলেছেন। ইমাম আবু দাউদ এই রাবী থেকে কিছুই লিখেন নাই।
---- [ তাহযীবুত তাহযীব,৯/৪১০-৪১১ ]
⦁ সানাদের আরেক রাবী 'زيد بن أسلم' কে ইমাম ইবনু হাজার আসক্বালানী তার 'ত্বাবাক্বাত আল মুদাল্লিসীন' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।
---- [ ত্বাবাক্বাত আল মুদাল্লিসীন,রাবী নং, ১১ ]
⦁ আইশাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) থেকে 'زيد بن أسلم' এর বর্ণনা মুরসাল হয়ে থাকে।
--- [ আল মারাসিল লি ইবনু আবী হাতীম,রাবী নং ৯৭; ১/৬৪ ]
সুতরাং এই হাদিসের সানাদ দ্বঈফ জিদ্দান (খুবই দূর্বল)।
.
এমন অনেক অ-প্রসিদ্ধ ঘটনা উপরিউক্ত কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে যা বিশুদ্ধ সুত্রে প্রমাণিত নয়।
►"কিতাবুর রূহ" গ্রন্থটি নিয়ে উস্তায আখতারুল আমান বিন আব্দুস সালাম [ হাফিয্বাহুল্লাহ'র] - বিশ্লেষণধর্মী আলোচনাটি শুনতে পারেন :
লিংক : https://youtu.be/kr7F6595dz
.আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বিদ'আতীদের কুটিলতা থেকে ধোঁকাগ্রস্থ ভাইদের হিফাযত করূন। আ-মীন।
.⦁ সংকলক :
আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষী, আখতার বিন আমীর।
admin by rasikul islam

Post a Comment

0 Comments