▌কাশ্মীর জ্বলছে অথচ আপনি এখনো ঘুমাচ্ছেন!?

▌কাশ্মীর জ্বলছে অথচ আপনি এখনো ঘুমাচ্ছেন!? 
.
বাংলার কি-বোর্ড মুজাহিদদের সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। এই টাইপের লোকদের ফজরে মসজিদে না পাওয়া গেলেও জিহাদের হাক-ডাক দিয়ে ফেবু গরম করে ফেলেন। উমুক দেশে যুদ্ধে শরিক হবেন , উমুক দেশ স্বাধীন করে ছাড়বেন, এই করে ফেলবেন, - সেই করে ফেলবেন, উম্মাহর কেউ কিছু করছেনা - কেউ কিছু বলছেনা, সবাই কাপুরুষ হেনতেন! দিনশেষে, আপনাকে-আমাকে দুটো গালি দিয়ে লগ আউট করে ঘরের ছেলে ঘরেই ফিরে যায়! এই মুজাহিদরা নিজেদের ঘরেও যদি দাওয়াতি কাজ করতেন, তাহলেও অন্তত এজাতির এত বেহাল দশা হত না। যাইহোক, আমরা পাগড়ির ফজিলতের ধোঁকায় পড়ে
লুংঙ্গী খুলে মাথায় বেঁধে ফেলি না।
.
এবার ইতিহাস থেকে কিছু কথা বলি - দিল্লির সুলতান তখন মোগলরা। সম্রাট বাবর, আকবর, জাহাঙ্গীর...। দিল্লি তো মরুময়। গ্রীষ্মের দাবদাহে দিল্লি ই হলো জ্বলন্ত আগুনের কুণ্ডলি। মোগল শাহীর মসনদ তখন ফুটন্ত কড়াই। তাই তাঁরা অবকাশ অন্বেষণ করতেন সে সময়। কাশ্মীর ছিল মোগল বাদশাহদের অবকাশযাপনেরই প্রমোদবাগান। মূলত গ্রীষ্মকালের অবকাশযাপনের জন্যই মোগল বাদশাহরা আকৃষ্ট হয়েছিল কাশ্মীরের প্রতি। মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গীর কাশ্মীরকে প্রথম তুলনা করেছিলেন স্বর্গের সঙ্গে। তাঁর আকুল আকাঙ্ক্ষা ছিল কাশ্মীরের তৃণভূমিতে মৃত্যুবরণ করার।
তিনি ফার্সি ভাষায় বলেছিলেন ---
"আগার ফেরদৌস বে-রোহী যামীন আস্ত্।
হামীন আস্ত্, হামীন আস্ত্, হামীন আস্ত্।"
"যদি পৃথিবীতে কোনো বেহেশত থেকে থাকে, তাহলে তা এখানে, এখানে, এখানে।"
.
সময় বহুদূর গড়িয়েছে, কাশ্মীর দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। যালিমদের অত্যাচার ও শকুনের ভক্ষণনীতি কাশ্মীরীদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। রক্তে রঞ্জিত ভূখন্ডে সংগ্রাম - আন্দোলন চলছে! এমতাবস্থায়, আজকের কাশ্মীরী নেতা ফারুক আব্দুল্লাহ'র বাবা শেখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ রাজপথ ছেড়ে দিয়ে পাকিস্তান ও কাশ্মীরী জনগণের সাথে ধোঁকাবাজি করে ভারতের সাথে আপোসনীতি অবলম্বন করেছিল, ভারতীয় সংবিধানে ৩৭০ ধারা ও ৩৫ ধারা অন্তর্ভুক্ত করেছিলো
এবং নিজেদের ভুমিকে ভারতভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেদিন থেকেই কাশ্মীরীরা সেচ্ছায় গোলামীর জিঞ্জিরা গলায় পড়ে নিল!

আজকে সব হারিয়ে পাকিস্তানের পরিবর্তে ভারতে যোগ দেয়া ভুল ছিল কিনা তা নিয়ে খোদ কাশ্মীরী জনগণই সন্দিহান। কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি গৃহবন্দী অবস্থায় পাঠানো এক অডিও বার্তায় বলেন, "আমরা ভারতীয় সরকার ও ভারত বর্ষের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। মানুষ এখন ভাবছে পাকিস্তানে যোগ না দেয়াটা ভুল হয়েছে কিনা। ’’

এতোকাল পরে হুঁশ ফিরলো তাহলে!? এক একটা কাশ্মীরী নেতা এক একটা ভারতীয় দালাল, চাটুকার, বিশ্বাসঘাতক। আজকের মোদী সরকারের ইসরায়েল
রূপে আর্বিভাবের জন্য এরাও কম দায়ী নন।
.
এই দূর্বল, দু:সহ যাতনার মুহূর্তে কেবল আল্লাহর কাছে কাশ্মীরীদের মুক্তির জন্য প্রার্থনাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্বল। দুনিয়ায় পরাজিত, মাযলূম এই বান্দারা যেন আখিরাতে শাহাদাতের সুউচ্চ মর্যাদা নিয়ে জান্নাতের সুমহান নে'আমত লাভে সক্ষম হয় কায়মনোবাক্যে সেই দো'আ-ই সর্বক্ষণ করি।

সেই সাথে বিশুদ্ধ দ্বীনের আলোকে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে,পরিবারকে পরিশুদ্ধ করে যতদূর সম্ভব জান্নাতের রাস্তা তালাশ করে যাই। দুনিয়ায় যালিমদের জুলুম থেকে না হোক, অন্তত: আখিরাতে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টায় যেন আমাদের ক্রটি না হয়। সাথে সাথে যুলূমের বিরুদ্ধে নিজ নিজ জায়গা থেকে যার যতদূর সামর্থ রয়েছে তার যথাসাধ্য প্রয়োগ করে যাই। হোক না সেই প্রতিরোধ চরম ঘৃণা প্রকাশের মাধ্যমে কিংবা ছোট্ট হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে! যুলুমের বিরুদ্ধে, যালিমের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঈমানের ঝাণ্ডাটা, ন্যায়ের দণ্ডটা, বিবেকের ঝলকানিটা অক্ষুণ্ন থাকুক প্রতিনিয়ত।
.
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদেরকে ঈমানের উপর টিকিয়ে রাখুন। প্রতিটা মুহূর্ত্ব ঈমানদারদের পক্ষে, ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে এবং সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যায় করার তাওফীক্ব দান করুন _ [আমীন ]।
.
সংকলক :
আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষী,
আখতার বিন আমীর।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬

Post a Comment

0 Comments