▌মহিলাদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার শার‘ঈ নীতিমালা
·
আলজেরিয়ার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, ড. মুহাম্মাদ ‘আলী ফারকূস (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৭৪ হি./১৯৫৪ খ্রি.] প্রদত্ত ফতোয়া—
প্রশ্ন: “বাজারে যাওয়ার সময় মহিলার সাথে কি মাহরাম থাকা শর্ত? জাযাকুমুল্লাহু খাইরা।”
উত্তর: ❝যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ’র জন্য। দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর ওপর, যাঁকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ, এবং দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর পরিবার পরিজন, সঙ্গিবর্গ ও কেয়ামত অবধি আসতে থাকা তাঁর ভ্রাতৃমণ্ডলীর ওপর। অতঃপর:
যদি মহিলার এমন কোনো প্রয়োজন থাকে, যার ফলে তার বাড়ির বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়—যেমন: চিকিৎসা নেওয়া, বাজারসদাই করা, মসজিদে যাওয়া প্রভৃতি—তাহলে তার দ্বীন পালনের স্বার্থে ও স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বাড়ির বাইরে বের হওয়া জায়েজ। কেননা নাবী ﷺ সাওদাহ বিনতে যাম‘আহর উদ্দেশে বলেছেন, قَدْ أَذِنَ اللهُ لَكُنَّ أَنْ تَخْرُجْنَ لِحَوَائِجِكُنَّ “আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।” [সাহীহ বুখারী, হা/৫২৩৭; সাহীহ মুসলিম, হা/২১৭০]
তবে প্রয়োজনের কারণে বৈধভাবে বাইরে যেতে হলে অবশ্যই তা শরিয়তের একগুচ্ছ নীতিমালার মাধ্যমে পরিবেষ্টিত হতে হবে। নিম্নে মহিলাদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার শার‘ঈ নীতিমালা ধারাবাহিকভাবে আলোকপাত করা হলো।
প্রথমত, মহিলাকে তার অভিভাবক কিংবা তার স্বামীর অনুমতি নিয়ে বের হতে হবে, এবং তার বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে স্বামীর সন্তুষ্টি থাকতে হবে। মূলত উক্ত শর্ত যাবতীয় ভালোকাজে স্বামীর আনুগত্য করার আওতাভুক্ত। যাতে করে তাদের দাম্পত্যজীবন হয় সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ ও কলহমুক্ত। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন, فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ “পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে ওই বিষয়ের হেফাজত করে, যা আল্লাহ হেফাজত করেছেন।” [সূরাহ নিসা: ৩৪]
নাবী ﷺ বলেছেন, إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَفِظَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ زَوْجَهَا؛ قِيلَ لَهَا: ادْخُلِي الْجَنَّةَ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الجَنَّةِ شِئْتِ “যদি কোনো মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজানের রোজা রাখে, নিজের লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে এবং তার স্বামীর আনুগত্য করে, তাহলে তাকে বলা হবে, তুমি জান্নাতের যে দরজা দিয়ে খুশি সে দরজা দিয়ে তাতে প্রবেশ করো।” [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৬১; সাহীহুল জামি‘, হা/৬৬১; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
নাবী ﷺ আরও বলেছেন, إِذَا اسْتَأْذَنَكُمْ نِسَاؤُكُمْ بِاللَّيْلِ إِلَى المَسْجِدِ فَأْذَنُوا لَهُنَّ “তোমাদের স্ত্রীগণ রাত্রিবেলায় তোমাদের কাছে মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তোমরা তাদের অনুমতি দাও।” [সাহীহুল বুখারী, হা/৮৬৫; সাহীহ মুসলিম, হা/৪৪২]
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, মসজিদে যাওয়ার জন্যই যদি অনুমতির প্রয়োজন হয়, তাহলে বাজারসদাই করা বা অন্যান্য কাজের জন্য বাইরে যেতে হলে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন আরও বেশি, আরও উপযোগী।
দ্বিতীয়ত, মহিলা তার স্বামী বা অভিভাবকের সম্পদ থেকে কেবল ততটুকু নিবে, যতটুকু নেওয়ার অনুমতি তাকে দেওয়া হয়েছে। স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতি ও পরামর্শ না নিয়ে সে সম্পদ খরচে স্বেচ্ছাচারিতা করবে না; এমনকি মহিলা তার নিজের সম্পদ খরচেও স্বেচ্ছাচারিতা করবে না। যাতে করে মহিলার ওপর তার স্বামীর পূর্ণ কর্তৃত্ব বজায় থাকে। কেননা নাবী ﷺ বলেছেন, وَلَيْسَ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَنْتَهِكَ شَيْئًا مِنْ مَالِهَا إِلَّا بِإِذْنِ زَوْجِهَا “কোনো মহিলার জন্য বৈধ নয় যে, সে তার স্বামীর অনুমতি ব্যতীত তার নিজের সম্পদ নষ্ট করবে।” [ত্বাবারানী, মু‘জামুল কাবীর, ২২/৮৩; সাহীহুল জামি‘, হা/৫৪২৪; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
তৃতীয়ত, যদিও সফর ব্যতীত অন্যক্ষেত্রে মহিলার জন্য মাহরাম থাকা ওয়াজিব নয়, তথাপি সে কোনো বিশ্বস্ত সখীর সাথে বাইরে বেরোবে। যাতে তার ইজ্জত-আবরু ও দ্বীন-ধর্ম নিরাপদে থাকে। কেননা নাবী ﷺ বলেছেন, لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ تُسَافِرُ مَسِيرَةَ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ إِلَّا مَعَ ذِي مَحْرَمٍ عَلَيْهَا “আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, এমন মহিলার জন্য বিনা মাহরামে একদিন ও একরাতের পথ সফর করা জায়েজ নয়।” [সাহীহ বুখারী, হা/১০৮৮; সাহীহ মুসলিম, হা/১৩৩৯]
নতুবা একাকী বাজারে বের হলে সে ফেতনা, ফাসাদ ও অনিষ্ট ডেকে আনে—এমন বিষয়ের সম্মুখীন হতে পারে। কেননা নাবী ﷺ বলেছেন, خَيْرُ البِقَاعِ المَسَاجِدُ، وَشَرُّ البِقَاعِ الأَسْوَاقُ “সর্বোত্তম স্থান হলো মসজিদ। আর সর্বনিকৃষ্ট স্থান হলো বাজার।” [ত্বাবারানী, মু‘জামুল কাবীর, হা/১৩৭৯৮, হাকেম, মুস্তাদরাক, হা/৩০৬; সাহীহুল জামি‘, হা/৫৪২৪; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
চতুর্থত, মহিলা বাজারের পানে বাড়ি থেকে বের হলে, নিজের সম্পূর্ণ শরীর পর্দা দিয়ে আবৃত করবে। তার জন্য সৌন্দর্য প্রকাশ করে, সুগন্ধি ব্যবহার করে, নানাবিধ অলঙ্কার দ্বারা সুশোভিত হয়ে, সৌন্দর্যবর্ধক পাউডার ব্যবহার করে, অর্ধনগ্ন পোশাক পরিধান করে, অহংকারী হয়ে, নিজের দেহসৌষ্ঠব ও রূপের ব্যাপারে আত্মগর্বিতা হয়ে, পুরুষদেরকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে বাইরে বের হওয়া না-জায়েজ। তাই পোশাক ও লজ্জার ভূষণে নিজেকে আবৃত করা তার জন্য আবশ্যক। মহান আল্লাহ বলেছেন, وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ “আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে; প্রাক-জাহেলি যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।” [সূরাহ আহযাব: ৩৩]
মহান আল্লাহ আরও বলেন, يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَنْ يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا “হে নাবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। বস্তুত আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরাহ আহযাব: ৫৯]
নাবী ﷺ বলেছেন, وأَيُّمَا امْرَأَةٍ وَضَعَتْ ثِيَابَهَا فِي غَيْرِ بَيْتِ زَوْجِهَا فَقَدْ هَتَكَتْ سِتْرَ مَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللهِ “যে নারী তার স্বামীর বাড়ি ছাড়া অন্য কোথাও তার কাপড় খোলে, সে আল্লাহ ও তার মধ্যকার পর্দা ছিঁড়ে ফেলে।” [সুনানে তিরমিযী, হা/২৮০৩; সাহীহুল জামি‘, হা/২৭১০; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
নাবী ﷺ আরও বলেছেন, ثَلَاثَةٌ لَا تَسْأَلْ عَنْهُمْ، وفيه: وَامْرَأَةٌ غَابَ عَنْهَا زَوْجُهَا قَدْ كَفَاهَا مُؤْنَةَ الدُّنْيَا فَتَبَرَّجَتْ بَعْدَهُ “তিন ব্যক্তিকে কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না (সরাসরি জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে)। তার মধ্যে রয়েছে ওই নারী, যার স্বামী বাইরে গিয়েছে, তার দুনিয়ার খোরপোশের জোগান দিতে, অথচ সে (স্বামীর অনুপস্থিতিতে) তার সৌন্দর্য প্রকাশ করেছে।” [মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৯৪৩, আদাবুল মুফরাদ, হা/৫৯০; সিলসিলাহ সাহীহাহ, হা/৫৪২; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
নাবী ﷺ অন্যত্র বলেছেন, وَشَرُّ نِسَائِكُمُ المُتَبَرِّجَاتُ المُتَخَيِّلَاتُ وَهُنَّ المُنَافِقَاتُ، لَا يَدْخُلُ الجَنَّةَ مِنْهُنَّ إِلَّا مِثْلُ الْغُرَابِ الأَعْصَمِ “তোমাদের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট নারী তারাই, যারা সৌন্দর্য প্রকাশ করে, আর অহংকার করে। তারা তো মুনাফেক রমনী। ওই নারীদের মধ্য থেকে ‘সাদা পা-বিশিষ্ট কাকের মতো’ অতীব বিরল সংখ্যক নারী জান্নাতে প্রবেশ করবে।” [বাইহাক্বী, সুনানুল কুবরা, হা/১৩৪৭৮; সিলসিলাহ সাহীহাহ, হা/১৮৪৯; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
নাবী ﷺ বলেছেন, أَيُّمَا امْرَأَةٍ اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ عَلَى قَوْمٍ لِيَجِدُوا مِنْ رِيحِهَا فَهِيَ زَانِيَةٌ “কোনো নারী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো সম্প্রদায়ের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে, আর সম্প্রদায়ের লোকেরা তার ঘ্রাণ পায়, তাহলে সে একজন ব্যভিচারিণী।” [সুনানে নাসায়ী, হা/৫১২৬; সাহীহুল জামি‘, হা/২৭০১; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
নাবী ﷺ আরও বলেছেন, صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا، وذَكَر: وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ المَائِلَةِ، لَا يَدْخُلْنَ الجَنَّةَ وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا “দুই শ্রেণির জাহান্নামীকে আমি কখনো দেখিনি। তার মধ্যে এক শ্রেণি হলো—ওই সমস্ত নারী, যারা কাপড় পরিধান করেও উলঙ্গ। তারা পুরুষদের আকর্ষণ করবে এবং নিজেরাও তাদের দিকে আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা হবে উটের পিঠের কুঁজোর মতো। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি এত এত দূর থেকে পাওয়া যায়।” [সাহীহ মুসলিম, হা/২১২৮; ‘পোশাক-পরিচ্ছদ ও প্রসাধনী’ অধ্যায়]
পঞ্চমত, সে যখন বাজারে বা অন্য কোথাও যাবে, তখন সে তার স্বামী অথবা অভিভাবকের আমানত রক্ষা করবে। সে কোনোভাবেই তার স্বামী বা অভিভাবকের সাথে খেয়ানত করবে না। তাই সে কোনো পরপুরুষের দিকে দৃষ্টিপাত করবে না, এমনকি ইতস্তত দৃষ্টিতেও পরপুরুষকে দেখবে না। সে পরপুরুষের সাথে সম্মোহনকারী প্রলোভিত কথা বলবে না এবং নিষিদ্ধ অবাধ মেলামেশায় লিপ্ত হবে না। সে স্বামী বা অভিভাককে ধোঁকা দিয়ে পরপুরুষের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করবে না এবং পাপাচারমূলক সাক্ষাতে লিপ্ত হবে না। বস্তুত এগুলো এমন সব কাজ, যা তার দ্বীন-ধর্ম ও ইজ্জত-আবরুকে কদর্য করে দেয়। সুতরাং স্বীয় চোখের চাহনি অবনমিত করা, গলার আওয়াজ নিচু করা এবং স্বীয় জবান ও হাতকে অন্যায়, অশ্লীলতা ও কদর্যতা থেকে হেফাজত করা তার জন্য অপরিহার্য—ওয়াজিব।
কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ “পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে ওই বিষয়ের হেফাজত করে, যা আল্লাহ হেফাজত করেছেন।” [সূরাহ নিসা: ৩৪]
মহান আল্লাহ আরও বলেছেন, وَقُل لِّلْمُؤْمِنَٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَٰرِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَاۖ “আপনি মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।” [সূরাহ নূর: ৩১]
মহান আল্লাহ বলেছেন, يَٰنِسَآءَ ٱلنَّبِىِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ ٱلنِّسَآءِۚ إِنِ ٱتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِٱلْقَوْلِ فَيَطْمَعَ ٱلَّذِى فِى قَلْبِهِۦ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا “হে নাবীপত্নীরা, তোমরা অন্য নারীদের মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাক, তাহলে পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বল না, যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয়। বরং তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে।” [সূরাহ আহযাব: ৩২]
মহান আল্লাহ আরও বলেছেন, لَّا يُحِبُّ ٱللَّهُ ٱلْجَهْرَ بِٱلسُّوٓءِ مِنَ ٱلْقَوْلِ إِلَّا مَن ظُلِمَۚ وَكَانَ ٱللَّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا “আল্লাহ কোনো মন্দকথার প্রচারণা ভালোবাসেন না, তবে কেউ অত্যাচারিত হয়ে থাকলে তার কথা স্বতন্ত্র; বস্তুত আল্লাহ শ্রবণকারী মহাজ্ঞানী।” [সূরাহ নিসা: ১৪৮]
ষষ্ঠত, মহিলার জন্য বাইরে বের হওয়ার সময় পরপুরুষদের সাথে অবাধ মেলামেশায় লিপ্ত হওয়া জায়েজ নয়। যেমনভাবে তার জন্য বৈধ নয়—কোনো পরপুরুষের ব্যবসাকেন্দ্রে বা অন্য কোনো জায়গায় একাকী সেই পরপুরুষের কাছে প্রবেশ করে তার সাথে হারাম নির্জনতা অবলম্বন করা। ফিতনার রাস্তা রুদ্ধ করার জন্যই তা বৈধ নয়। যেহেতু সে কুনজর, কুকথা ও কুকর্মের বেষ্টন থেকে নিরাপদ নয়। কেননা অন্তর যে কাজের প্রতি প্ররোচিত করে, আর শয়তান যে কাজ করার কুমন্ত্রণা দেয়, সে কাজের পুরো পরিণামই কেবল ক্ষতি আর ক্ষতি, নিন্দা আর নিন্দা! তাইতো নাবী ﷺ বলেছেন, أَلَا لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا كَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ “কোনো মহিলা পরপুরুষের সাথে একাকী মিলিত হলেই, তাদের তৃতীয়জন হিসেবে সেখানে উপস্থিত হয় শয়তান।” [সুনানে তিরমিযী, হা/২১৬৫; সাহীহুল জামি‘, হা/২৫৪৬; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: আলবানী)]
সপ্তম ও সর্বশেষ মূলনীতি হলো—মহিলা যদি তার দ্বীন ও দুনিয়ার প্রয়োজনে বাইরে বেরও হয়, তথাপি তার স্কন্ধে যে আমানত অর্পিত হয়েছে, তার দাবি অনুযায়ী তার জন্য স্বেচ্ছাচারিতা করে এমন কাজ করা জায়েজ নয়, যা আল্লাহ’র কাছে পছন্দনীয় নয়। তাই সে এমন জায়গায় যাবে না, যেখানে অসার ক্রিয়াকলাপ ও পাপাচার সংঘটিত হয়। সে এমন জায়গায় যাবে না, যেসব জায়গা অশ্লীল কর্মকাণ্ডে ভরপুর, অথবা যেসব জায়গায় মন্দ ও অকল্যাণ ছড়ানো হয়; সাধারণত যে জায়গাগুলোতে অসভ্য ও ইতর শ্রেণির লোকেরাই যেয়ে থাকে। কেননা সন্দেহাতীতভাবে এ ধরনের স্বেচ্ছাচারমূলক পদচারণা আমানতের খেয়ানত, নিজের বিনাশ এবং ধ্বংস ও দুর্যোগে নিপাতিত হওয়ার অসিলা।
বস্তুত প্রকৃত ‘ইলম আল্লাহ’র নিকট রয়েছে। সর্বোপরি যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের জন্য। হে আল্লাহ, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার পরিজন, সাহাবীবর্গ ও কেয়ামত অবধি আসতে থাকা তাঁর ভ্রাতৃবর্গের ওপর আপনি দয়া ও শান্তি বর্ষণ করুন।❞
·
তথ্যসূত্র:
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothecholi.in , comming soon my best world websaiteতথ্যসূত্র:
0 Comments