তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই. আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর
পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে তাফসীর ফাতহুল মাজীদ
উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর তত্ত্বাবধানে
সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱﴾
সুরার নাম- বাকারা,(বকনা- \বাছুর)
2:153 সুরা আল বাকারা ১৫৩ থেকে ১৭৩
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ
الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৩ ও ১৫৪ নং
আয়াতের তাফসীর:
“কৃতজ্ঞতা প্রকাশের” নির্দেশের পর আল্লাহ তা‘আলা সবরের আলোচনা নিয়ে
এসেছেন। আর সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করার নির্দেশনা দিচ্ছেন।
একজন মু’মিন আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে আর বিপদ-আপদে
ধৈর্য ধারণ করবে। তার উভয় অবস্থা কল্যাণকর।
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
عَجَبًا
لِأَمْرِ الْمُؤْمِنِ إِنَّ أَمْرَ الْمُؤْمِنِ كُلُّهُ خَيْرٌ إِنْ أَصَابَتْهُ
سَرَّاءُ فَشَكَرَ كَانَ خَيْرًا لَهُ، وَإِنَّ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ فَصَبَرَ
كَانَ خَيْرًا لَهُ
মু’মিনের সকল কাজ আশ্চর্যজনক। তাদের সকল বিষয় কল্যাণকর। যদি কোন
কল্যাণ পায় তখন শুকরিয়া আদায় করে, এটা তার জন্য কল্যাণকর। আর
যদি কোন মুসিবতে পতিত হয় তখন ধৈর্য ধারণ করে, এটাও তার জন্য
কল্যাণকর। (সহীহ মুসলিম হা: ২২৯৫)
صَبر বা ধৈর্য তিন
ধরনের। যথা:
১. আল্লাহ
তা‘আলার নির্দেশ পালনে ধৈর্য ধারণ করা।
২. আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্য কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার মাধ্যমে ধৈর্য
ধারণ করা।
৩. ভাগ্যের ভাল-মন্দ বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করা। (তাফসীর সা‘দী, পৃঃ ৫৬)
নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অনুগ্রহ, সহযোগিতা
দিয়ে ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিচ্ছেন যারা তাঁর পথে শহীদ হয় তারা মৃত
নয় বরং তারা জীবিত, কিন্তু কিভাবে তা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কেউ
জানে না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَحْيَاءٌ
عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ فَرِحِينَ بِمَا آتَاهُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهِ)
“তারা জীবিত, তারা তাদের প্রতিপালক হতে জীবিকা
প্রাপ্ত হয়। আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ হতে যা দান করেছেন, তাতেই তারা পরিতুষ্ট।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:১৬৯-১৭০)
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
নিশ্চয়ই শহীদের আত্মাসমূহ জান্নাতে সবুজ পাখির মাঝে বিরাজমান আছে। তারা জান্নাতের
নদীনালায় ঘুরে বেড়ায়, জান্নাতের ফলমূল খায় এবং আরশের সাথে
ঝুলন্ত বাসায় ফিরে আসে। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৭২, ২৮১৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ধৈর্য ধারণের
ফযীলত জানলাম। সচ্ছল-অসচ্ছল সর্বাবস্থায় একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার কাছে সাহায্য
চাইতে হবে।
২. সাধারণ মু’মিনদের চেয়ে যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে শাহাদাত বরণ করে
তাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩. আল্লাহ তা‘আলা সৎ বান্দাদেরকে সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে সর্বদাই
তাদের সাথে থাকেন।
2:154
وَ لَا تَقُوۡلُوۡا
لِمَنۡ یُّقۡتَلُ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَمۡوَاتٌ ؕ بَلۡ اَحۡیَآءٌ وَّ لٰکِنۡ
لَّا تَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۵۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৩ ও ১৫৪ নং
আয়াতের তাফসীর:
“কৃতজ্ঞতা প্রকাশের” নির্দেশের পর আল্লাহ তা‘আলা সবরের আলোচনা নিয়ে
এসেছেন। আর সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করার নির্দেশনা দিচ্ছেন।
একজন মু’মিন আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে আর
বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করবে। তার উভয় অবস্থা কল্যাণকর।
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
عَجَبًا
لِأَمْرِ الْمُؤْمِنِ إِنَّ أَمْرَ الْمُؤْمِنِ كُلُّهُ خَيْرٌ إِنْ أَصَابَتْهُ
سَرَّاءُ فَشَكَرَ كَانَ خَيْرًا لَهُ، وَإِنَّ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ فَصَبَرَ
كَانَ خَيْرًا لَهُ
মু’মিনের সকল কাজ আশ্চর্যজনক। তাদের সকল বিষয় কল্যাণকর। যদি কোন
কল্যাণ পায় তখন শুকরিয়া আদায় করে, এটা তার জন্য কল্যাণকর। আর
যদি কোন মুসিবতে পতিত হয় তখন ধৈর্য ধারণ করে, এটাও তার জন্য
কল্যাণকর। (সহীহ মুসলিম হা: ২২৯৫)
صَبر বা ধৈর্য তিন
ধরনের। যথা:
১. আল্লাহ তা‘আলার
নির্দেশ পালনে ধৈর্য ধারণ করা।
২. আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্য কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার মাধ্যমে ধৈর্য
ধারণ করা।
৩. ভাগ্যের ভাল-মন্দ বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করা। (তাফসীর সা‘দী, পৃঃ ৫৬)
নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অনুগ্রহ, সহযোগিতা
দিয়ে ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিচ্ছেন যারা তাঁর পথে শহীদ হয় তারা মৃত
নয় বরং তারা জীবিত, কিন্তু কিভাবে তা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কেউ
জানে না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَحْيَاءٌ
عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ فَرِحِينَ بِمَا آتَاهُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهِ)
“তারা জীবিত, তারা তাদের প্রতিপালক হতে জীবিকা
প্রাপ্ত হয়। আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ হতে যা দান করেছেন, তাতেই তারা পরিতুষ্ট।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:১৬৯-১৭০)
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
নিশ্চয়ই শহীদের আত্মাসমূহ জান্নাতে সবুজ পাখির মাঝে বিরাজমান আছে। তারা জান্নাতের
নদীনালায় ঘুরে বেড়ায়, জান্নাতের ফলমূল খায় এবং আরশের সাথে
ঝুলন্ত বাসায় ফিরে আসে। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৭২, ২৮১৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ধৈর্য ধারণের
ফযীলত জানলাম। সচ্ছল-অসচ্ছল সর্বাবস্থায় একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার কাছে সাহায্য
চাইতে হবে।
২. সাধারণ মু’মিনদের চেয়ে যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে শাহাদাত বরণ করে
তাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩. আল্লাহ তা‘আলা সৎ বান্দাদেরকে সাহায্য সহযোগিতার মাধ্যমে সর্বদাই
তাদের সাথে থাকেন।
2:155
وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ
بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ
الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۵﴾ۙ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৫ ও ১৫৭ নং
আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন সময় মু’মিনদেরকে
বিভিন্ন বালা-মুসিবত দ্বারা পরীক্ষা করবেন। কখনো শত্র“দের ভয়, কখনো ক্ষুধা অর্থাৎ অভাব-অনটন আবার কখনো ধন-সম্পদ ধ্বংস ও প্রিয়
ব্যক্তিদের মৃত্যু এবং বিভিন্ন ফল-ফসলাদী নষ্টের দ্বারা।
এটাই হল আল্লাহ তা‘আলার রীতি। কেননা সবসময় যদি মু’মিনরা
সুখ-সাচ্ছন্দে থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয়েও যেতে পারে এবং
নেয়ামতের মূল্যায়ন নাও করতে পারে। (وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيْنَ) ‘‘তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর” অর্থাৎ যারা এসব
বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য সুসংবাদ। বিপদের শুরুতেই ধৈর্য ধরতে হবে, পরে
ধৈর্য ধরলে এ সুসংবাদ প্রাপ্তদের শামিল নাও হতে পারে। কারণ হাদীসে এসেছে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ধৈর্য হলো বিপদের শুরুতেই।
(সহীহ বুখারী হা: ১৩০২, সহীহ মুসলিম হা: ৯২৬) সুতরাং যারা
বিপদ-আপদের শুরুতেই ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
‘মুসিবত বা বিপদ’বলা হয় প্রত্যেক ঐ বিষয় যা মু’মিনকে কষ্ট দেয়,
তা শারীরিক বা মানসিক অথবা উভয়টা হতে পারে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: একজন মু’মিনকে কোন কষ্ট, ব্যথা, অসুস্থতা, দুশ্চিন্তা
বা উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি আক্রান্ত করলে আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে গুনাহ ক্ষমা করে
দেন। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৩) তবে সবচেয়ে বড় মুসিবত হলো দীনের জন্য বিপদাপন্ন হওয়া।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমাদের কেউ মুসিবতে পতিত
হলে আমার মসিবতের কথা যেন স্মরণ করে, কারণ এটা সবচেয়ে বড়
মুসিবত। (সহীহুল জামে হা: ৩৪৭)
খাব্বাব ইবনু আরাত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এমন এক সময় অভিযোগ করলাম যখন তিনি
কাবা ঘরের ছায়ায় চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম: আমাদের জন্য
কি সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন
না? তিনি বললেন, না। তোমাদের পূর্বেকার
ঈমানদার লোকেদের ধরে এনে জমিনে গর্ত করে তাতে পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তাদের মাথা
বরাবর করাত চালিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হত। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে পৃথক
করা হত। কিন্তু এ নির্মম অত্যাচারও তাদেরকে তাদের দীন থেকে বিরত করতে পারেনি।
আল্লাহ তা‘আলার কসম! এ দীন পূর্ণরূপে বিজয়ী হবে। এমন একদিন আসবে যখন কোন ভ্রমণকারী
নির্বিঘেœ সানআ
থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কাউকে ভয় করবে না।
আর মেষপালের জন্য বাঘের ভয় বাকি থাকবে। কিন্তু তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ
বুখারী হা: ৬৯৪৩)
সুতরাং যারা বিপদ-আপদে বলে-
(اِنَّا
لِلہِ وَاِنَّآ اِلَیْھِ رٰجِعُوْنَ)
তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাদের প্রতি রবের পক্ষ থেকে
প্রশংসা ও রহমত। তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। হাদীসেও এসেছে যে, একজন
মু’মিন বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে দু‘আ করবে:
إِنَّا
لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي
وَاخْلُفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا
আমরা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই এবং তারই দিকে ফিরে যাব। হে
আল্লাহ! আমার এ বিপদে সওয়াব দান করুন এবং এর পরিবর্তে উত্তম কিছু দান করুন। (সহীহ
মুসলিম হা: ৯১৮)
আয়াত হতে
শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা
মু’মিনদের জানে-মালে বিপদ-আপদ দ্বারা পরীক্ষা করেন।
২. বিপদে ধৈর্য ধারণ করাই সফলতা।
৩. (إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ
رَاجِعُونَ)
বলার নিয়ম ও ফযীলত জানলাম।
৪. আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদের প্রতি করুণা ও দয়া করেন।
৫. পূর্ববর্তী উম্মাতের লোকেরা শত বিপদেও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।
2:156
الَّذِیۡنَ اِذَاۤ
اَصَابَتۡہُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا لِلّٰہِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡہِ
رٰجِعُوۡنَ ﴿۱۵۶﴾ؕ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৫ ও ১৫৭
নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন সময় মু’মিনদেরকে
বিভিন্ন বালা-মুসিবত দ্বারা পরীক্ষা করবেন। কখনো শত্র“দের ভয়, কখনো ক্ষুধা অর্থাৎ অভাব-অনটন আবার কখনো ধন-সম্পদ ধ্বংস ও প্রিয়
ব্যক্তিদের মৃত্যু এবং বিভিন্ন ফল-ফসলাদী নষ্টের দ্বারা।
এটাই হল আল্লাহ তা‘আলার রীতি। কেননা সবসময় যদি মু’মিনরা
সুখ-সাচ্ছন্দে থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয়েও যেতে পারে এবং
নেয়ামতের মূল্যায়ন নাও করতে পারে। (وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيْنَ) ‘‘তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর” অর্থাৎ যারা এসব
বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য সুসংবাদ। বিপদের শুরুতেই ধৈর্য ধরতে হবে, পরে
ধৈর্য ধরলে এ সুসংবাদ প্রাপ্তদের শামিল নাও হতে পারে। কারণ হাদীসে এসেছে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ধৈর্য হলো বিপদের শুরুতেই।
(সহীহ বুখারী হা: ১৩০২, সহীহ মুসলিম হা: ৯২৬) সুতরাং যারা
বিপদ-আপদের শুরুতেই ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
‘মুসিবত বা বিপদ’বলা হয় প্রত্যেক ঐ বিষয় যা মু’মিনকে কষ্ট দেয়,
তা শারীরিক বা মানসিক অথবা উভয়টা হতে পারে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: একজন মু’মিনকে কোন কষ্ট, ব্যথা, অসুস্থতা, দুশ্চিন্তা
বা উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি আক্রান্ত করলে আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে গুনাহ ক্ষমা করে
দেন। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৩) তবে সবচেয়ে বড় মুসিবত হলো দীনের জন্য বিপদাপন্ন হওয়া।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমাদের কেউ মুসিবতে পতিত
হলে আমার মসিবতের কথা যেন স্মরণ করে, কারণ এটা সবচেয়ে বড়
মুসিবত। (সহীহুল জামে হা: ৩৪৭)
খাব্বাব ইবনু আরাত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এমন এক সময় অভিযোগ করলাম যখন তিনি
কাবা ঘরের ছায়ায় চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম: আমাদের জন্য
কি সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন
না? তিনি বললেন, না। তোমাদের পূর্বেকার
ঈমানদার লোকেদের ধরে এনে জমিনে গর্ত করে তাতে পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তাদের মাথা
বরাবর করাত চালিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হত। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে
পৃথক করা হত। কিন্তু এ নির্মম অত্যাচারও তাদেরকে তাদের দীন থেকে বিরত করতে পারেনি।
আল্লাহ তা‘আলার কসম! এ দীন পূর্ণরূপে বিজয়ী হবে। এমন একদিন আসবে যখন কোন ভ্রমণকারী
নির্বিঘেœ সানআ
থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কাউকে ভয় করবে না।
আর মেষপালের জন্য বাঘের ভয় বাকি থাকবে। কিন্তু তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ
বুখারী হা: ৬৯৪৩)
সুতরাং যারা বিপদ-আপদে বলে-
(اِنَّا
لِلہِ وَاِنَّآ اِلَیْھِ رٰجِعُوْنَ)
তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাদের প্রতি রবের পক্ষ থেকে
প্রশংসা ও রহমত। তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। হাদীসেও এসেছে যে, একজন
মু’মিন বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে দু‘আ করবে:
إِنَّا
لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي
وَاخْلُفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا
আমরা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই এবং তারই দিকে ফিরে যাব। হে
আল্লাহ! আমার এ বিপদে সওয়াব দান করুন এবং এর পরিবর্তে উত্তম কিছু দান করুন। (সহীহ
মুসলিম হা: ৯১৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা
মু’মিনদের জানে-মালে বিপদ-আপদ দ্বারা পরীক্ষা করেন।
২. বিপদে ধৈর্য ধারণ করাই সফলতা।
৩. (إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ
رَاجِعُونَ)
বলার নিয়ম ও ফযীলত জানলাম।
৪. আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদের প্রতি করুণা ও দয়া করেন।
৫. পূর্ববর্তী উম্মাতের লোকেরা শত বিপদেও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।
2:157
اُولٰٓئِکَ عَلَیۡہِمۡ
صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ رَحۡمَۃٌ ۟ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُہۡتَدُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৫ ও ১৫৭ নং
আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন সময় মু’মিনদেরকে
বিভিন্ন বালা-মুসিবত দ্বারা পরীক্ষা করবেন। কখনো শত্র“দের ভয়, কখনো ক্ষুধা অর্থাৎ অভাব-অনটন আবার কখনো ধন-সম্পদ ধ্বংস ও প্রিয়
ব্যক্তিদের মৃত্যু এবং বিভিন্ন ফল-ফসলাদী নষ্টের দ্বারা।
এটাই হল আল্লাহ তা‘আলার রীতি। কেননা সবসময় যদি মু’মিনরা
সুখ-সাচ্ছন্দে থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয়েও যেতে পারে এবং
নেয়ামতের মূল্যায়ন নাও করতে পারে। (وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيْنَ) ‘‘তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর” অর্থাৎ যারা এসব
বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য সুসংবাদ। বিপদের শুরুতেই ধৈর্য ধরতে হবে, পরে
ধৈর্য ধরলে এ সুসংবাদ প্রাপ্তদের শামিল নাও হতে পারে। কারণ হাদীসে এসেছে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ধৈর্য হলো বিপদের শুরুতেই।
(সহীহ বুখারী হা: ১৩০২, সহীহ মুসলিম হা: ৯২৬) সুতরাং যারা
বিপদ-আপদের শুরুতেই ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
‘মুসিবত বা বিপদ’বলা হয় প্রত্যেক ঐ বিষয় যা মু’মিনকে কষ্ট দেয়,
তা শারীরিক বা মানসিক অথবা উভয়টা হতে পারে। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: একজন মু’মিনকে কোন কষ্ট, ব্যথা, অসুস্থতা, দুশ্চিন্তা
বা উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি আক্রান্ত করলে আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে গুনাহ ক্ষমা করে
দেন। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৩) তবে সবচেয়ে বড় মুসিবত হলো দীনের জন্য বিপদাপন্ন হওয়া।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমাদের কেউ মুসিবতে পতিত
হলে আমার মসিবতের কথা যেন স্মরণ করে, কারণ এটা সবচেয়ে বড় মুসিবত।
(সহীহুল জামে হা: ৩৪৭)
খাব্বাব ইবনু আরাত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এমন এক সময় অভিযোগ করলাম যখন তিনি
কাবা ঘরের ছায়ায় চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম: আমাদের জন্য
কি সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন
না? তিনি বললেন, না। তোমাদের পূর্বেকার
ঈমানদার লোকেদের ধরে এনে জমিনে গর্ত করে তাতে পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তাদের মাথা
বরাবর করাত চালিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হত। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে
পৃথক করা হত। কিন্তু এ নির্মম অত্যাচারও তাদেরকে তাদের দীন থেকে বিরত করতে পারেনি।
আল্লাহ তা‘আলার কসম! এ দীন পূর্ণরূপে বিজয়ী হবে। এমন একদিন আসবে যখন কোন ভ্রমণকারী
নির্বিঘেœ সানআ
থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কাউকে ভয় করবে না।
আর মেষপালের জন্য বাঘের ভয় বাকি থাকবে। কিন্তু তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ
বুখারী হা: ৬৯৪৩)
সুতরাং যারা বিপদ-আপদে বলে-
(اِنَّا
لِلہِ وَاِنَّآ اِلَیْھِ رٰجِعُوْنَ)
তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাদের প্রতি রবের পক্ষ থেকে
প্রশংসা ও রহমত। তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। হাদীসেও এসেছে যে, একজন
মু’মিন বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে দু‘আ করবে:
إِنَّا
لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي
وَاخْلُفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا
আমরা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই এবং তারই দিকে ফিরে যাব। হে
আল্লাহ! আমার এ বিপদে সওয়াব দান করুন এবং এর পরিবর্তে উত্তম কিছু দান করুন। (সহীহ
মুসলিম হা: ৯১৮)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা
মু’মিনদের জানে-মালে বিপদ-আপদ দ্বারা পরীক্ষা করেন।
২. বিপদে ধৈর্য ধারণ করাই সফলতা।
৩. (إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ
رَاجِعُونَ)
বলার নিয়ম ও ফযীলত জানলাম।
৪. আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদের প্রতি করুণা ও দয়া করেন।
৫. পূর্ববর্তী উম্মাতের লোকেরা শত বিপদেও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।
2:158
اِنَّ الصَّفَا وَ
الۡمَرۡوَۃَ مِنۡ شَعَآئِرِ اللّٰہِ ۚ فَمَنۡ حَجَّ الۡبَیۡتَ اَوِ اعۡتَمَرَ
فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡہِ اَنۡ یَّطَّوَّفَ بِہِمَا ؕ وَ مَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا ۙ
فَاِنَّ اللّٰہَ شَاکِرٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۵۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৮ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
এ আয়াতের শানে নুযূল সম্পর্কে কয়েকটি বর্ণনা পাওয়া যায়। দু’টি সহীহ
বুখারী ও মুসলিমে এবং একটি মুসতাদরাক হাকিমে রয়েছে।
সাহাবী উরওয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি আশিয়াহ (রাঃ)-কে
জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কি লক্ষ করেছেন-
(إِنَّ
الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ اللّهِ ............أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا
وَمَن تَطَوَّعَ خَيْراً فَإِنَّ اللّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ)
আমি এ আয়াত দ্বারা বুঝেছি, যদি কেউ তাওয়াফ না
করে তাহলে তার কোন দোষ নেই। তখন আয়িশাহ (রাঃ) বললেন- হে আমার ভাগনে! তুমি কতই না
খারাপ কথা বললে। তুমি যা বুঝেছ সেরূপ হলে আয়াতটি এমন হত
فلا
جناح عليه أن لا يطاف بها
(তওয়াফ না করলে গুনাহ হবে না), কিন্তু
বিষয়টি হল, আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে আনসারদের ব্যাপারে। ইসলাম
গ্রহণের পূর্বে তারা মানাতের (মূর্তি) পূজা করত। আর মানাত ছিল কুদায়েদের পথে
অবস্থিত। আনসারগণ সাফা ও মারওয়াহর মাঝে সাঈ করা খারাপ জানত। ইসলাম আগমনের পর তারা
এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে এ
আয়াত নাযিল হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৬৪৩, ৪৪৯৫, সহীহ মুসলিম হা: ৩১৩৮, ৩১৪২)
সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা‘আলার অন্যতম নিদর্শন। شعائر শব্দটি شعيرة এর
বহুবচন, অর্থ হল: নিদর্শন, প্রতীক। এখানে
নিদর্শনসমূহ বলতে হজ্জ আদায়ের সময় ইবাদতের বিভিন্ন স্থান যেমন- মিনা, আরাফা, মুযদালিফা, সাঈ ও
কুরবানীর স্থান বুঝায়।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা এসব নিদর্শনকে সম্মান করতে বলেছেন:
(وَمَنْ
يَّعَظِّمْ شَعَا۬ئِرَ اللّٰهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَي الْقُلُوبِ)
“আর কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে সম্মান করলে এটা তো তার হৃদয়ের
তাক্বওয়ার পরিচয়।”(সূরা হজ্জ ২২:৩২)
সাফা ও মারওয়া হজ্জের অন্যতম রুকন। যা বাদ পড়লে হজ্জ বা উমরা হবে
না। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন সৎ আমল করবে এটা তার জন্য উত্তম। আল্লাহ তা‘আলা তার
প্রতিদান দেবেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সাফা ও মারওয়া
সাঈ করা হজ্জ ও উমরার রুকন।
২. গীর্জা, পূজামণ্ডপ বা কাফিরদের ইবাদাতের
স্থান মাসজিদে পরিণত হলে সেথায় সালাতসহ সকল ইবাদত পালন করতে কোন অসুবিধা নেই।
৩. কল্যাণকর কাজে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।
2:159
اِنَّ الَّذِیۡنَ
یَکۡتُمُوۡنَ مَاۤ اَنۡزَلۡنَا مِنَ الۡبَیِّنٰتِ وَ الۡہُدٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا
بَیَّنّٰہُ لِلنَّاسِ فِی الۡکِتٰبِ ۙ اُولٰٓئِکَ یَلۡعَنُہُمُ اللّٰہُ وَ
یَلۡعَنُہُمُ اللّٰعِنُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾ۙ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৯ থেকে ১৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযুল: ইবনু জারীর আত-তাবারী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে
বর্ণনা করেন তিনি বলেন, মুয়ায বিন জাবাল, সা‘দ বিন মু‘য়ায, খারেজা বিন যায়েদ তাওরাতের কিছু
বিষয় সম্পর্কে ইয়াহূদী পণ্ডিতদের জিজ্ঞাসা করল। তখন তারা জিজ্ঞাসিত বিষয় গোপন করল
এবং জানাতে অস্বীকার করল। তখন
(اِنَّ
الَّذِیْنَ یَکْتُمُوْنَ مَآ اَنْزَلْنَا مِنَ الْبَیِّنٰتِ وَالْھُدٰی مِنْۭ
بَعْدِ مَا بَیَّنّٰھُ لِلنَّاسِ فِی الْکِتٰبِﺫ اُولٰ۬ئِکَ یَلْعَنُھُمُ اللہُ
وَیَلْعَنُھُمُ اللّٰعِنُوْنَ)
নাযিল হয়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃ:
৩৪)
যারা জেনে শুনে রাসূলদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা গোপন করে
তাদেরকে অত্র আয়াতে কঠিন ধমক দেয়া হয়েছে। এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে তাদের ওপর
লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূরা বাকারাহ ১৪৬ নং আয়াতে, সূরা নিসার ১৬৭ নং আয়াতে এদের ওপর লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়াতটি যদিও আহলে কিতাবের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে কিন্তু ঐ সকল
ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যারা সত্য গোপন করে। যেমন মুসলিম সমাজের অনেকে
স্বীয় দল ও মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের বিপক্ষে কুরআন-সুন্নাহর সঠিক বিষয়গুলো
গোপন করে থাকে, তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مَنْ
سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ أَلْجَمَهُ اللَّهُ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ
যে ব্যক্তি শরীয়তের কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হল এবং সে তা গোপন করে,
কিয়ামাতের দিন তাকে আগুনের লাগাম পরানো হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮,
তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)
তবে তারা লা‘নতপ্রাপ্ত নয় যারা তাওবাহ করে নিজেদের আমল সংশোধন করে
নেয়। যারা কুফরী করে কুফরী অবস্থায় মারা যায় তাদের ওপরও লা‘নত। তারা জাহান্নামে
স্থায়ী থাকবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জেনেশুনে সত্য
গোপন করা হারাম, পরকালে
এর জন্য ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে।
২. কাফিররা আজীবন জাহান্নামে থাকবে।
2:160
اِلَّا الَّذِیۡنَ
تَابُوۡا وَ اَصۡلَحُوۡا وَ بَیَّنُوۡا فَاُولٰٓئِکَ اَتُوۡبُ عَلَیۡہِمۡ ۚ وَ
اَنَا التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۶۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৯ থেকে ১৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযুল: ইবনু জারীর আত-তাবারী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে
বর্ণনা করেন তিনি বলেন, মুয়ায বিন জাবাল, সা‘দ বিন মু‘য়ায, খারেজা বিন যায়েদ তাওরাতের কিছু
বিষয় সম্পর্কে ইয়াহূদী পণ্ডিতদের জিজ্ঞাসা করল। তখন তারা জিজ্ঞাসিত বিষয় গোপন করল
এবং জানাতে অস্বীকার করল। তখন
(اِنَّ
الَّذِیْنَ یَکْتُمُوْنَ مَآ اَنْزَلْنَا مِنَ الْبَیِّنٰتِ وَالْھُدٰی مِنْۭ
بَعْدِ مَا بَیَّنّٰھُ لِلنَّاسِ فِی الْکِتٰبِﺫ اُولٰ۬ئِکَ یَلْعَنُھُمُ اللہُ
وَیَلْعَنُھُمُ اللّٰعِنُوْنَ)
নাযিল হয়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃ:
৩৪)
যারা জেনে শুনে রাসূলদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা গোপন করে
তাদেরকে অত্র আয়াতে কঠিন ধমক দেয়া হয়েছে। এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে তাদের ওপর
লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূরা বাকারাহ ১৪৬ নং আয়াতে, সূরা নিসার ১৬৭ নং আয়াতে এদের ওপর লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়াতটি যদিও আহলে কিতাবের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে কিন্তু ঐ সকল
ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যারা সত্য গোপন করে। যেমন মুসলিম সমাজের অনেকে
স্বীয় দল ও মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের বিপক্ষে কুরআন-সুন্নাহর সঠিক বিষয়গুলো
গোপন করে থাকে, তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مَنْ
سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ أَلْجَمَهُ اللَّهُ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ
যে ব্যক্তি শরীয়তের কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হল এবং সে তা গোপন করে,
কিয়ামাতের দিন তাকে আগুনের লাগাম পরানো হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮,
তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)
তবে তারা লা‘নতপ্রাপ্ত নয় যারা তাওবাহ করে নিজেদের আমল সংশোধন করে
নেয়। যারা কুফরী করে কুফরী অবস্থায় মারা যায় তাদের ওপরও লা‘নত। তারা জাহান্নামে
স্থায়ী থাকবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জেনেশুনে সত্য
গোপন করা হারাম, পরকালে
এর জন্য ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে।
২. কাফিররা আজীবন জাহান্নামে থাকবে।
2:161
اِنَّ الَّذِیۡنَ
کَفَرُوۡا وَ مَاتُوۡا وَ ہُمۡ کُفَّارٌ اُولٰٓئِکَ عَلَیۡہِمۡ لَعۡنَۃُ اللّٰہِ
وَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ وَ النَّاسِ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۶۱﴾ۙ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৯ থেকে ১৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযুল: ইবনু জারীর আত-তাবারী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে
বর্ণনা করেন তিনি বলেন, মুয়ায বিন জাবাল, সা‘দ বিন মু‘য়ায, খারেজা বিন যায়েদ তাওরাতের কিছু
বিষয় সম্পর্কে ইয়াহূদী পণ্ডিতদের জিজ্ঞাসা করল। তখন তারা জিজ্ঞাসিত বিষয় গোপন করল
এবং জানাতে অস্বীকার করল। তখন
(اِنَّ
الَّذِیْنَ یَکْتُمُوْنَ مَآ اَنْزَلْنَا مِنَ الْبَیِّنٰتِ وَالْھُدٰی مِنْۭ
بَعْدِ مَا بَیَّنّٰھُ لِلنَّاسِ فِی الْکِتٰبِﺫ اُولٰ۬ئِکَ یَلْعَنُھُمُ اللہُ
وَیَلْعَنُھُمُ اللّٰعِنُوْنَ)
নাযিল হয়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃ:
৩৪)
যারা জেনে শুনে রাসূলদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা গোপন করে
তাদেরকে অত্র আয়াতে কঠিন ধমক দেয়া হয়েছে। এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে তাদের ওপর
লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূরা বাকারাহ ১৪৬ নং আয়াতে, সূরা নিসার ১৬৭ নং আয়াতে এদের ওপর লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়াতটি যদিও আহলে কিতাবের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে কিন্তু ঐ সকল
ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যারা সত্য গোপন করে। যেমন মুসলিম সমাজের অনেকে
স্বীয় দল ও মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের বিপক্ষে কুরআন-সুন্নাহর সঠিক বিষয়গুলো
গোপন করে থাকে, তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مَنْ
سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ أَلْجَمَهُ اللَّهُ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ
যে ব্যক্তি শরীয়তের কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হল এবং সে তা গোপন করে,
কিয়ামাতের দিন তাকে আগুনের লাগাম পরানো হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮,
তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)
তবে তারা লা‘নতপ্রাপ্ত নয় যারা তাওবাহ করে নিজেদের আমল সংশোধন করে
নেয়। যারা কুফরী করে কুফরী অবস্থায় মারা যায় তাদের ওপরও লা‘নত। তারা জাহান্নামে
স্থায়ী থাকবে।
আয়াত থেকে
শিক্ষণীয় বিষয়:
১. জেনেশুনে সত্য
গোপন করা হারাম, পরকালে
এর জন্য ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে।
২. কাফিররা আজীবন জাহান্নামে থাকবে।
2:162
خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ۚ لَا
یُخَفَّفُ عَنۡہُمُ الۡعَذَابُ وَ لَا ہُمۡ یُنۡظَرُوۡنَ ﴿۱۶۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৫৯ থেকে ১৬২ নং
আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযুল: ইবনু জারীর আত-তাবারী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে
বর্ণনা করেন তিনি বলেন, মুয়ায বিন জাবাল, সা‘দ বিন মু‘য়ায, খারেজা বিন যায়েদ তাওরাতের কিছু
বিষয় সম্পর্কে ইয়াহূদী পণ্ডিতদের জিজ্ঞাসা করল। তখন তারা জিজ্ঞাসিত বিষয় গোপন করল
এবং জানাতে অস্বীকার করল। তখন
(اِنَّ
الَّذِیْنَ یَکْتُمُوْنَ مَآ اَنْزَلْنَا مِنَ الْبَیِّنٰتِ وَالْھُدٰی مِنْۭ
بَعْدِ مَا بَیَّنّٰھُ لِلنَّاسِ فِی الْکِتٰبِﺫ اُولٰ۬ئِکَ یَلْعَنُھُمُ اللہُ
وَیَلْعَنُھُمُ اللّٰعِنُوْنَ)
নাযিল হয়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃ:
৩৪)
যারা জেনে শুনে রাসূলদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা গোপন করে
তাদেরকে অত্র আয়াতে কঠিন ধমক দেয়া হয়েছে। এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে তাদের ওপর
লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সূরা বাকারাহ ১৪৬ নং আয়াতে, সূরা নিসার ১৬৭ নং আয়াতে এদের ওপর লা‘নতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়াতটি যদিও আহলে কিতাবের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে কিন্তু ঐ সকল
ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যারা সত্য গোপন করে। যেমন মুসলিম সমাজের অনেকে
স্বীয় দল ও মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের বিপক্ষে কুরআন-সুন্নাহর সঠিক বিষয়গুলো
গোপন করে থাকে, তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مَنْ
سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ أَلْجَمَهُ اللَّهُ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ يَوْمَ
الْقِيَامَةِ
যে ব্যক্তি শরীয়তের কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হল এবং সে তা গোপন করে,
কিয়ামাতের দিন তাকে আগুনের লাগাম পরানো হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮,
তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)
তবে তারা লা‘নতপ্রাপ্ত নয় যারা তাওবাহ করে নিজেদের আমল সংশোধন করে
নেয়। যারা কুফরী করে কুফরী অবস্থায় মারা যায় তাদের ওপরও লা‘নত। তারা জাহান্নামে
স্থায়ী থাকবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয়
বিষয়:
১. জেনেশুনে সত্য গোপন করা হারাম, পরকালে এর
জন্য ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে।
২. কাফিররা আজীবন জাহান্নামে থাকবে।
2:163
وَ اِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ
وَّاحِدٌ ۚ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ الرَّحۡمٰنُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۶۳﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৩ নং আয়াতের
তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিজের উলুহিয়াত সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন।
তিনি তাঁর স্বত্ত্বা, নাম, গুণাবলী ও
কার্যপ্রণালীসহ সকল দিক দিয়ে একক মা‘বূদ। তার কোন অংশীদার নেই, সাদৃশ্য নেই, উপমা নেই, সমতুল্য
ও সমকক্ষ কেউ নেই।
রহমান ও রহীম এ দু’টি নাম সম্পর্কে সূরা ফাতিহায় আলোচনা করা হয়েছে।
আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
اسْمُ
اللّٰهِ الْأَعْظَمُ فِي هَاتَيْنِ الْآيَتَيْنِ<
আল্লাহ তা‘আলার ‘ইসমে আজম’বা মহান নাম এ দু’টি আয়াতে:
১. (وَاِلٰھُکُمْ اِلٰھٌ وَّاحِدٌﺆ لَآ
اِلٰھَ اِلَّا ھُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِیْمُ)
২. (اللّٰهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ
الْحَيُّ الْقَيُّومُ)
(আবূ দাঊদ হা: ১৪৯৮, ইবনে মাযাহ হা: ৩৮৫৫,
হাসান)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র
মা‘বূদ। তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদত পাওয়ার হকদার নয়।
২. আল্লাহ তা‘আলার ‘রহমান ও রহীম’দু’টি নাম এবং এর দ্বারা তাঁর দয়া
গুণ সাব্যস্ত হয়।
2:164
اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ
السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ وَ الۡفُلۡکِ
الَّتِیۡ تَجۡرِیۡ فِی الۡبَحۡرِ بِمَا یَنۡفَعُ النَّاسَ وَ مَاۤ اَنۡزَلَ
اللّٰہُ مِنَ السَّمَآءِ مِنۡ مَّآءٍ فَاَحۡیَا بِہِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَا
وَ بَثَّ فِیۡہَا مِنۡ کُلِّ دَآبَّۃٍ ۪ وَّ تَصۡرِیۡفِ الرِّیٰحِ وَ السَّحَابِ
الۡمُسَخَّرِ بَیۡنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۶۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৪ নং আয়াতের
তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আবি হাতিম, আতা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, মদীনায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)-এর ওপর
(وَاِلٰھُکُمْ
اِلٰھٌ وَّاحِدٌﺆ لَآ اِلٰھَ اِلَّا ھُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِیْمُ)
এ আয়াতটি নাযিল হয়। তখন মক্কার কাফির কুরাইশগণ বলতে লাগল, কিভাবে একজন মা‘বূদ সমগ্র বিশ্বের বন্দোবস্তু করবেন? তখন
(إِنَّ
فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ)
আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (লুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃঃ ৩৪, ইবনু কাসীর, ১/৪৩২)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা একত্ববাদের প্রমাণস্বরূপ সাতটি নিদর্শনের আলোকপাত
করেছেন। যা তাওহীদে রুবুবিয়্যার ওপর প্রমাণ বহন করে। এসব নিদর্শন কেবল তারাই ঝুঝতে
পারবে যারা বিবেকসম্পন্ন।
এরূপ অন্য আরেকটি আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ
فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ الَّیْلِ وَالنَّھَارِ لَاٰیٰتٍ
لِّاُولِی الْاَلْبَابِ)
“নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টির মধ্যে এবং দিবস ও রাত্রির
পরিবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য স্পষ্ট নিদর্শনাবলী রয়েছে।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:১৯০)
১ম নিদর্শন: خَلْقُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির মধ্যে লক্ষণীয় দিকসমূহ:
* আল্লাহ তা‘আলা আকাশকে সৃষ্টি করেছেন খুঁটি ছাড়া-
(اَللہُ
الَّذِیْ رَفَعَ السَّمٰوٰتِ بِغَیْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَھَا)
“আল্লাহই ঊর্ধ্বদেশে আকাশমণ্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত- তোমরা
এটা দেখছ।”(সূরা রা‘দ ১৩:২) অনুরূপ সূরা লুকমানের ১০ নং আয়াতে বলা হয়েছে।
* সাতটি আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন-
(الَّذِیْ
خَلَقَ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا)
“তিনি সাতটি আকাশ ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে।”(সূরা মুলক
৬৭:২)
* দুনিয়ার আকাশকে তারকারাজি দ্বারা সুশোভিত করেছেন-
(وَلَقَدْ
زَیَّنَّا السَّمَا۬ئَ الدُّنْیَا بِمَصَابِیْحَ)
“আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা (তারকারাজী)
দ্বারা।”(সূরা মুলক ৬৭:৫)
* আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী আল্লাহ তা‘আলার আদেশে স্থির থাকা-
(وَمِنْ
اٰیٰتِھ۪ٓ اَنْ تَقُوْمَ السَّمَا۬ئُ وَالْاَرْضُ بِاَمْرِھ۪)
“আর তার দৃষ্টান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে যে, তারই
আদেশে আসমান ও জমিন স্থির আছে।”(সূরা রুম ৩০:২৫)
* আকাশকে ছাদস্বরূপ ও সুউচ্চ করেছেন-
(وَالسَّمَاء
بِنَاء)
“আকাশকে ছাদস্বরূপ করেছেন।”(সূরা বাকারাহ ২:২২)
(وَإِلَي
السَّمَآءِ كَيْفَ رُفِعَتْ)
“এবং আকাশের দিকে যে, কিভাবে ওটাকে সমুচ্চ করা
হয়েছে?” (সূরা গাশিয়াহ ৮৮:১৮)
* জমিনকে বিছানাস্বরূপ বানিয়েছেন-
(الَّذِي
جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ فِرَاشًا)
“যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে বিছানা স্বরূপ করেছেন।”(সূরা বাকারাহ
২:২২)
* জমিনকে চলার উপযোগী করে দিয়েছেন-
(ھُوَ
الَّذِیْ جَعَلَ لَکُمُ الْاَرْضَ ذَلُوْلًا فَامْشُوْا فِیْ مَنَاکِبِھَا
وَکُلُوْا مِنْ رِّزْقِھ۪ﺚ وَاِلَیْھِ النُّشُوْرُ)
“তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে চলাচলের উপযোগী করেছেন; অতএব তোমরা ওর দিক-দিগন্তে ও রাস্তাসমূহে বিচরণ কর এবং তাঁর দেয়া রিযিক
হতে আহার কর, তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।”(সূরা মুলক
৬৭:১৫)
* মৃত জমিনকে বৃষ্টি দিয়ে সফল ফলানোর উপযোগী করেছেন-
(وَاٰیَةٌ
لَّھُمُ الْاَرْضُ الْمَیْتَةُﺊ اَحْیَیْنٰھَا وَاَخْرَجْنَا مِنْھَا حَبًّا
فَمِنْھُ یَاْکُلُوْنَﭰوَجَعَلْنَا فِیْھَا جَنّٰتٍ مِّنْ نَّخِیْلٍ وَّاَعْنَابٍ
وَّفَجَّرْنَا فِیْھَا مِنَ الْعُیُوْنِﭱﺫلِیَاْکُلُوْا مِنْ ثَمَرِھ۪ﺫ وَمَا
عَمِلَتْھُ اَیْدِیْھِمْﺚ اَفَلَا یَشْکُرُوْنَ)
“আর তাদের জন্য একটি নিদর্শন মৃত জমিন। আমি তাকে সজীব করি এবং তা
থেকে উৎপন্ন করি শস্য, ফলে তা থেকে তারা খেয়ে থাকে। আমি তাতে
সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান এবং প্রবাহিত করি তাতে ঝরণাসমূহ।”(সূরা ইয়াসিন
৩৬:৩৩-৩৪)
২য় নিদর্শন: وَاخْتِلَافُ الَّیْلِ وَالنَّھَارِ: রাত ও দিনের আবর্তন এবং লক্ষণীয় দিকসমূহ:
* আল্লাহ তা‘আলা রাতকে করেছেন আরামের জন্য, দিনকে
করেছেন কাজ করার জন্য-
(وَجَعَلْنَا
اللَّيْلَ لِبَاسًا وَّجَعَلْنَا النَّهَارَ مَعَاشًا)
“এবং রাত্রিকে করেছি আবরণ। আর আমিই দিবসকে জীবিকা অর্জনের সময় করে
দিয়েছি।”(সূরা নাবা ৭৮:১০-১১)
* আল্লাহ তা‘আলার দয়া শুধু রাত বা শুধু দিনকে কিয়ামত পর্যন্ত বহাল
রাখেননি-
(قُلْ
أَرَأَيْتُمْ إِنْ جَعَلَ اللّٰهُ عَلَيْكُمُ اللَّيْلَ سَرْمَدًا إِلَي يَوْمِ الْقِيَامَةِ)
“বল, ‘তোমরা ভেবে দেখছ কি, আল্লাহ যদি রাতকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন।”(সূরা কাসাস ২৮:৭১)
(قُلْ
اَرَءَیْتُمْ اِنْ جَعَلَ اللہُ عَلَیْکُمُ النَّھَارَ سَرْمَدًا اِلٰی یَوْمِ
الْقِیٰمَةِ مَنْ اِلٰھٌ غَیْرُ اللہِ یَاْتِیْکُمْ بِلَیْلٍ تَسْکُنُوْنَ فِیْھِﺚ
اَفَلَا تُبْصِرُوْنَ)
“বল, ‘তোমরা ভেবে দেখছ কি, আল্লাহ যদি দিনকে কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন, আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন ইলাহ আছে, যে তোমাদের জন্য
রাতের আবির্ভাব ঘটাবে যাতে তোমরা বিশ্রাম করতে পার? তবুও কি
তোমরা ভেবে দেখবে না?” (সূরা কাসাস ২৮:৭২)
৩য় নিদর্শন: মানুষের কল্যাণে সমুদ্র নৌকা, জাহাজ
ইত্যাদি চলাচলের উপযোগী করা:
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَللہُ
الَّذِیْ سَخَّرَ لَکُمُ الْبَحْرَ لِتَجْرِیَ الْفُلْکُ فِیْھِ بِاَمْرِھ۪)
“একমাত্র আল্লাহই তো সমুদ্রকে তোমাদের জন্য নিয়োজিত করেছেন, যাতে তাঁর আদেশে তাতে নৌযানসমূহ চলাচল করতে পারে।”(সূরা জাসিয়া ৪৫:১২)
অপর আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(اَلَمْ
تَرَ اَنَّ الْفُلْکَ تَجْرِیْ فِی الْبَحْرِ بِنِعْمَةِ اللہِ لِیُرِیَکُمْ مِّنْ
اٰیٰتِھ۪)
“তুমি কি দেখ না যে, নৌযাহানসমূহ আল্লাহর
অনুগ্রহে সমুদ্রে চলাচল করে, যেন তিনি তোমাদেরকে তাঁর
নিদর্শনাবলীর কিছু দেখান?” (সূরা লুকমান ৩১:৩১)
৪র্থ নিদর্শন: আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করা:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَنَزَّلْنَا
مِنَ السَّمَاءِ مَاءً مُبَارَكًا فَأَنْبَتْنَا بِهِ جَنَّاتٍ وَحَبَّ الْحَصِيدِ)
“আকাশ হতে আমি কল্যাণকর বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তদ্দ্বারা আমি সৃষ্টি
করি উদ্যান ও পরিপক্ক শস্যরাজি।”(সূরা ক্বাফ ৫০:৯)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
( اَلَمْ
تَرَ اَنَّ اللہَ اَنْزَلَ مِنَ السَّمَا۬ئِ مَا۬ئًﺑ فَتُصْبِحُ الْاَرْضُ
مُخْضَرَّةًﺚ اِنَّ اللہَ لَطِیْفٌ خَبِیْرٌ)
“তুমি কি লক্ষ করো না যে, আল্লাহ বারি বর্ষণ
করেন আকাশ হতে যাতে সবুজ শ্যামল হয়ে ওঠে পৃথিবী? নিশ্চয়ই
আল্লাহ সম্যক সূক্ষ্মদর্শী, পরিজ্ঞাত।”(সূরা হজ্জ ২২:৬৩)
আল্লাহ তা‘আলা যে বৃষ্টিপাত করেন তা পবিত্র-
(وَأَنْزَلْنَا
مِنَ السَّمَآءِ مَآءً طَهُورًا)
“আমি আকাশ হতে পবিত্র পানি বর্ষণ করি।”(সূরা ফুরকান ২৫:৪৮)
৫ম নিদর্শন:
প্রত্যেক জীব-জন্তুর বিচরণ বিভিন্ন আকার আকৃতি, রং, ছোট-বড় ইত্যাদি সকল জীব-জন্তু সম্পর্কে আল্লাহ
তা‘আলা অবগত আছেন, তিনি তাদের রিযিক দেন-
( وَمَا
مِنْ دَا۬بَّةٍ فِی الْاَرْضِ اِلَّا عَلَی اللہِ رِزْقُھَا وَیَعْلَمُ
مُسْتَقَرَّھَا وَمُسْتَوْدَعَھَاﺚ کُلٌّ فِیْ کِتٰبٍ مُّبِیْنٍ )
“ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহরই। তিনি তাদের
স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থিতি সম্বন্ধে অবহিত; সুস্পষ্ট কিতাবে
সব কিছুই আছে।”(সূরা হুদ ১১:৬)
জীব-জন্তুরাও আল্লাহ তা‘আলাকে সিজদা করে-
( وَلِلہِ
یَسْجُدُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الْاَرْضِ مِنْ دَا۬بَّةٍ
وَّالْمَلٰ۬ئِکَةُ)
“আল্লাহকেই সাজদাহ্ করে যা কিছু আছে আকাশসমূহে, পৃথিবীর সমস্ত জীবজন্তু এবং ফেরেশতাগণও।”(সূরা নাহল ১৬:৪৯)
৬ষ্ঠ নিদর্শন:
বায়ূরাশির গতি পরিবর্তন: বাতাস কখনো রহমতের হয়, আবার কখনো আযাবের হয়। পবিত্র কুরআনে যেসকল স্থানে বাতাস বহু বচন হিসেবে
এসেছে তা রহমতের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন-
(وَمِنْ
اٰیٰتِھ۪ٓ اَنْ یُّرْسِلَ الرِّیَاحَ مُبَشِّرٰتٍ وَّلِیُذِیْقَکُمْ مِّنْ
رَّحْمَتِھ۪)
“আর তার দৃষ্টান্তগুলোর মধ্যে একটি এই যে, তিনি
বাতাস পাঠান সুখবর দানকারীরূপে এবং যেন তোমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহের স্বাদ ভোগ
করান।”(সূরা রূম ৩০:৪৬) এরূপ সূরা রূমের ৪৮ নং আয়াতে উল্লেখ আছে।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَاللہُ
الَّذِیْٓ اَرْسَلَ الرِّیٰحَ فَتُثِیْرُ سَحَابًا فَسُقْنٰھُ اِلٰی بَلَدٍ
مَّیِّتٍ)
“আর তিনিই আল্লাহ যিনি বাতাস প্রেরণ করেন, তারপর
তা মেঘমালাকে পরিচালিত করে। অতঃপর আমি তা পরিচালিত করি মৃত ভূখণ্ডের দিকে।”(সূরা
ফাতির ৩৫:৯)
আর যখন বাতাস শব্দটি একবচন হিসেবে এসেছে তখন আযাবের জন্য ব্যবহৃত
হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَفِیْ
عَادٍ اِذْ اَرْسَلْنَا عَلَیْھِمُ الرِّیْحَ الْعَقِیْمَ)
“এবং (নিদর্শন রয়েছে) ‘আদ জাতির ঘটনায়, যখন
আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম অকল্যাণকর বাতাস।”(সূরা যারিয়াত ৫১:৪১)
( کَمَثَلِ
رِیْحٍ فِیْھَا صِرٌّ اَصَابَتْ حَرْثَ قَوْمٍ ظَلَمُوْٓا اَنْفُسَھُمْ )
“উদাহরণ হচ্ছে- ঐ বাতাসের সাথে যাতে রয়েছে অতি ঠাণ্ডা তা আঘাত করল
এমন এক কওমের শস্যক্ষেতে যারা নিজেদের ওপর অন্যায় করেছিল।”(সূরা আলি ইমরান ৩:১১৮)
৭ম নিদর্শন:
আকাশ ও পৃথিবীমধ্যস্থ নেয়ামত মেঘমালা এবং বৃষ্টি বর্ষণ-
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلَمْ
تَرَ اَنَّ اللہَ یُزْجِیْ سَحَابًا ثُمَّ یُؤَلِّفُ بَیْنَھ۫ ثُمَّ یَجْعَلُھ۫
رُکَامًا فَتَرَی الْوَدْقَ یَخْرُجُ مِنْ خِلٰلِھ۪)
“তুমি কি দেখ না, আল্লাহ সঞ্চালিত করেন
মেঘমালাকে, তৎপর তাদেরকে একত্র করেন এবং পরে পুঞ্জীভূত করেন,
অতঃপর তুমি দেখতে পাও, সেটার মধ্য হতে নির্গত
হয় বারিধারা।”(সূরা নূর ২৪:৪৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
( حثج
اِذَآ اَقَلَّتْ سَحَابًا ثِقَالًا سُقْنٰھُ لِبَلَدٍ مَّیِّتٍ فَاَنْزَلْنَا
بِھِ الْمَا۬ئَ )
“যখন তা ঘন মেঘ বহন করে তখন আমি তা নির্জীব ভূখণ্ডের দিকে চালনা করি,
পরে তা হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি।”(সূরা আ‘রাফ ৭:৫৭)
এতসব নেয়ামত দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে ধন্য করেছেন। এসব কিছু
প্রমাণ করে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র জাহানের একক রব বা প্রতিপালক। তিনি
সবকিছুর প্রতিপালক হবার কারণে সবকিছুর মা‘বূদও এককভাবে তিনিই। কেননা, যিনি প্রতিপালক হবেন তিনি ব্যতীত আর কেউ মা‘বূদ হতে পারে না। সুতরাং
আল্লাহ তা‘আলাই একমাত্র মা‘বূদ, তাঁর রুবুবিয়্যাতেও কোন শরীক
নেই এবং উলূহিয়্যাতেও কোন শরীক নেই। তাই আমরা সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার
জন্য সম্পাদন করব অন্য কারো জন্য নয়।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সব নিদর্শন
আল্লাহ তা‘আলার রুবুবিয়াহর ওপর প্রমাণ বহন করে এবং রুবুবিয়্যাহ উলূহিয়্যাহ এর
প্রমাণ বহন করে।
২. নিদর্শনাবলী দ্বারা আল্লাহ তা‘আলাকে চেনা যায়।
2:165
وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ
یَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَنۡدَادًا یُّحِبُّوۡنَہُمۡ کَحُبِّ اللّٰہِ ؕ وَ
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ ؕوَ لَوۡ یَرَی الَّذِیۡنَ
ظَلَمُوۡۤا اِذۡ یَرَوۡنَ الۡعَذَابَ ۙ اَنَّ الۡقُوَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ۙ وَّ
اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعَذَابِ ﴿۱۶۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৫ থেকে ১৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা নিজের এককত্বের অকাট্য দলিল পেশ করার পরও এক শ্রেণির
মানুষ রয়েছে যারা তাঁর সাথে মনগড়া মা‘বূদের শরীক স্থাপন করে। তাদের সাথে ঐরূপ
ভালবাসা পোষণ করে যেমন ভালবাসা আল্লাহ তা‘আলার সাথে হওয়া উচিত। এখানে তাদের কথাই
তুলে ধরেছেন।
এ শির্কের ছড়াছড়ি কেবল তৎকালীন আরব সমাজেই বিদ্যমান ছিল না বরং
বর্তমানেও অনেক নামধারী মুসলিম এ রোগে আক্রান্ত। গায়রুল্লাহ, পীর, ফকীর, মাজারগুলোকে কেবল
নিজেদের ইবাদতখানা বানিয়েই নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, বরং তাদেরকে
আল্লাহ তা‘আলার চেয়ে বেশি ভালবাসে। সেই সাথে তাদের সম্মান ও আনুগত্য এমনভাবে করে-
যা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার হকদার নয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاِذَا
ذُکِرَ اللہُ وَحْدَھُ اشْمَاَزَّتْ قُلُوْبُ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ
بِالْاٰخِرَةِﺆ وَاِذَا ذُکِرَ الَّذِیْنَ مِنْ دُوْنِھ۪ٓ اِذَا ھُمْ
یَسْتَبْشِرُوْنَ)
“এক আল্লাহর কথা বলা হলে যারা আখিরাতকে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর
ঘৃণায় ভরে যায় এবং আল্লাহর পরিবর্তে (তাদের দেবতাগুলোর) উল্লেখ করা হলে তারা
আনন্দিত হয়।” (সূরা যুমার ৩৯:৪৫)
কিন্তু মু’মিনদের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা আল্লাহ তা‘আলা-কে
সর্বাধিক ভালবাসে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
(ثَلَاثٌ
مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ، أَنْ يَكُونَ اللّٰهُ
وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا)
যে ব্যক্তির মাঝে তিনটি গুণ রয়েছে সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে,
তার মধ্যে একটি হল- কেবল আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল তার নিকট সবচেয়ে
বেশি ভালবাসার পাত্র হওয়া। (সহীহ বুখারী হা: ১৬)
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ
তা‘আলা ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন: আমি বললাম, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান না করে
মারা যায় সে জান্নাতে যাবে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৯৭, সহীহ
মুসলিম হা: ৯২)
(الَّذِیْنَ
ظَلَمُوْٓا)
‘এবং যারা যুলুম করেছে’আয়াতে “যালিম” হল কাফিরগণ। আল্লাহ তা‘আলা
বলেন:
(وَالْكَافِرُونَ
هُمُ الظَّالِمُونَ)
কাফিররাই হলো যালেম। (সূরা বাকারাহ ২:২৫৪) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড,
৯২]
লুকমান (আঃ) তাঁর ছেলেকে বলেন-
(لَا
تُشْرِكْ بِاللّٰهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ)
“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয়ই শির্ক তো মহা জুলুম।”
(সূরা লুকমান ৩১:১৩)
যারা শির্ক করে নিজেদের প্রতি জুলুম করেছে তারা যদি জানত যখন শাস্তি
প্রত্যক্ষ করবে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বশক্তিমান ও কঠোর
শাস্তিদাতা তাহলে আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যান্য বাতিল মা‘বূদের ইবাদত করত না।
(إِذْ
تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوْا)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামীদের পরস্পরে বিবাদের বিষয়ের
দিকে ইশারা করেছেন। অন্যত্র তাদের বিবরণ তুলে ধরে বলেন:
(وَلَوْ
تَرٰٓی اِذِ الظّٰلِمُوْنَ مَوْقُوْفُوْنَ عِنْدَ رَبِّھِمْﺊ یَرْجِعُ بَعْضُھُمْ
اِلٰی بَعْضِ اۨلْقَوْلَﺆ یَقُوْلُ الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ
اسْتَکْبَرُوْا لَوْلَآ اَنْتُمْ لَکُنَّا مُؤْمِنِیْنَﭮقَالَ الَّذِیْنَ
اسْتَکْبَرُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْٓا اَنَحْنُ صَدَدْنٰکُمْ عَنِ الْھُدٰی
بَعْدَ اِذْ جَا۬ءَکُمْ بَلْ کُنْتُمْ مُّجْرِمِیْنَﭯوَقَالَ الَّذِیْنَ
اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا بَلْ مَکْرُ الَّیْلِ وَالنَّھَارِ
اِذْ تَاْمُرُوْنَنَآ اَنْ نَّکْفُرَ بِاللہِ وَنَجْعَلَ لَھ۫ٓ اَنْدَادًا)
“তুমি যদি দেখতে যালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান
করা হবে, তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম।
অহংকারীরা দুর্বলদেরকে বলবেঃ তোমাদের নিকট সৎ পথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে
ওটা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।
দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবা-রাত্র চক্রান্তে লিপ্ত
ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য
করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি।”(সূরা সাবা ৩৪:৩১-৩৩) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড,
৯২]
আর সেদিন কারো সাথে কোন সম্পর্ক বহাল থাকবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یَوْمَ
یَفِرُّ الْمَرْئُ مِنْ اَخِیْھِﭱﺫ وَاُمِّھ۪ وَاَبِیْھِﭲﺫ وَصَاحِبَتِھ۪
وَبَنِیْھِ)
“সেদিন মানুষ পলায়ন করবে তাঁর নিজের ভাই হতে, এবং
তার মাতা, পিতা, স্ত্রী ও সন্তান
হতে।”(সূরা আবাসা ৮০:৩৪-৩৬)
তবে যারা দুনিয়াতে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলত তাদের সম্পর্ক বহাল
থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلْاَخِلَّا۬ئُ
یَوْمَئِذٍۭ بَعْضُھُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِیْنَ)
“বন্ধুরা সে দিন হয়ে যাবে একে অপরের শত্র“, তবে
মুত্তাকীরা ব্যতীত।”(সূরা যুখরুফ ৪৩:৬৭)
কিয়ামত দিবসে খাজা, পীর, ফকীর ও কবরপূজারীদের অপারগতা ও বিশ্বাসঘাতকতা দেখে মুশরিকরা আফসোস করবে,
কিন্তু সে আফসোস ও অনুতাপ কোন কাজে আসবে না। সকল আমল বরবাদ হয়ে
যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ
الَّذِیْنَ کَفَرُوْا بِرَبِّھِمْ اَعْمَالُھُمْ کَرَمَادِ اۨشْتَدَّتْ بِھِ
الرِّیْحُ فِیْ یَوْمٍ عَاصِفٍ)
“যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের কর্মসমূহের উপমা
ভস্মসদৃশ যা ঝড়ের দিনের বাতাস প্রচণ্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়।”(সূরা ইবরাহীম ১৪:১৮)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. উম্মাতে
মুহাম্মাদীর কিছু লোক মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়ে যাবে।
২. আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসা অন্যকে দেয়া শির্ক।
৩. কিয়ামাতের দিন অমুসলিমদের কোন সম্পর্ক উপকারে আসবে না।
৪. যারা শির্কযুক্ত আমল করবে তাদের আমল বিফলে যাবে।
2:166
اِذۡ تَبَرَّاَ
الَّذِیۡنَ اتُّبِعُوۡا مِنَ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡا وَ رَاَوُا الۡعَذَابَ وَ
تَقَطَّعَتۡ بِہِمُ الۡاَسۡبَابُ ﴿۱۶۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৫ থেকে ১৬৭ নং
আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা নিজের এককত্বের অকাট্য দলিল পেশ করার পরও এক শ্রেণির
মানুষ রয়েছে যারা তাঁর সাথে মনগড়া মা‘বূদের শরীক স্থাপন করে। তাদের সাথে ঐরূপ
ভালবাসা পোষণ করে যেমন ভালবাসা আল্লাহ তা‘আলার সাথে হওয়া উচিত। এখানে তাদের কথাই
তুলে ধরেছেন।
এ শির্কের ছড়াছড়ি কেবল তৎকালীন আরব সমাজেই বিদ্যমান ছিল না বরং
বর্তমানেও অনেক নামধারী মুসলিম এ রোগে আক্রান্ত। গায়রুল্লাহ, পীর, ফকীর, মাজারগুলোকে কেবল
নিজেদের ইবাদতখানা বানিয়েই নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, বরং তাদেরকে
আল্লাহ তা‘আলার চেয়ে বেশি ভালবাসে। সেই সাথে তাদের সম্মান ও আনুগত্য এমনভাবে করে-
যা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার হকদার নয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاِذَا
ذُکِرَ اللہُ وَحْدَھُ اشْمَاَزَّتْ قُلُوْبُ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ
بِالْاٰخِرَةِﺆ وَاِذَا ذُکِرَ الَّذِیْنَ مِنْ دُوْنِھ۪ٓ اِذَا ھُمْ
یَسْتَبْشِرُوْنَ)
“এক আল্লাহর কথা বলা হলে যারা আখিরাতকে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর
ঘৃণায় ভরে যায় এবং আল্লাহর পরিবর্তে (তাদের দেবতাগুলোর) উল্লেখ করা হলে তারা
আনন্দিত হয়।” (সূরা যুমার ৩৯:৪৫)
কিন্তু মু’মিনদের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা আল্লাহ তা‘আলা-কে
সর্বাধিক ভালবাসে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
(ثَلَاثٌ
مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ، أَنْ يَكُونَ اللّٰهُ
وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا)
যে ব্যক্তির মাঝে তিনটি গুণ রয়েছে সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে,
তার মধ্যে একটি হল- কেবল আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল তার নিকট সবচেয়ে
বেশি ভালবাসার পাত্র হওয়া। (সহীহ বুখারী হা: ১৬)
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ
তা‘আলা ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন: আমি বললাম, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান না করে
মারা যায় সে জান্নাতে যাবে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৯৭, সহীহ
মুসলিম হা: ৯২)
(الَّذِیْنَ
ظَلَمُوْٓا)
‘এবং যারা যুলুম করেছে’আয়াতে “যালিম” হল কাফিরগণ। আল্লাহ তা‘আলা
বলেন:
(وَالْكَافِرُونَ
هُمُ الظَّالِمُونَ)
কাফিররাই হলো যালেম। (সূরা বাকারাহ ২:২৫৪) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড,
৯২]
লুকমান (আঃ) তাঁর ছেলেকে বলেন-
(لَا
تُشْرِكْ بِاللّٰهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ)
“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয়ই শির্ক তো মহা জুলুম।”
(সূরা লুকমান ৩১:১৩)
যারা শির্ক করে নিজেদের প্রতি জুলুম করেছে তারা যদি জানত যখন শাস্তি
প্রত্যক্ষ করবে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বশক্তিমান ও কঠোর
শাস্তিদাতা তাহলে আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যান্য বাতিল মা‘বূদের ইবাদত করত না।
(إِذْ
تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوْا)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামীদের পরস্পরে বিবাদের বিষয়ের
দিকে ইশারা করেছেন। অন্যত্র তাদের বিবরণ তুলে ধরে বলেন:
(وَلَوْ
تَرٰٓی اِذِ الظّٰلِمُوْنَ مَوْقُوْفُوْنَ عِنْدَ رَبِّھِمْﺊ یَرْجِعُ بَعْضُھُمْ
اِلٰی بَعْضِ اۨلْقَوْلَﺆ یَقُوْلُ الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ
اسْتَکْبَرُوْا لَوْلَآ اَنْتُمْ لَکُنَّا مُؤْمِنِیْنَﭮقَالَ الَّذِیْنَ
اسْتَکْبَرُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْٓا اَنَحْنُ صَدَدْنٰکُمْ عَنِ الْھُدٰی
بَعْدَ اِذْ جَا۬ءَکُمْ بَلْ کُنْتُمْ مُّجْرِمِیْنَﭯوَقَالَ الَّذِیْنَ
اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا بَلْ مَکْرُ الَّیْلِ وَالنَّھَارِ
اِذْ تَاْمُرُوْنَنَآ اَنْ نَّکْفُرَ بِاللہِ وَنَجْعَلَ لَھ۫ٓ اَنْدَادًا)
“তুমি যদি দেখতে যালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান
করা হবে, তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম।
অহংকারীরা দুর্বলদেরকে বলবেঃ তোমাদের নিকট সৎ পথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে
ওটা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।
দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবা-রাত্র চক্রান্তে লিপ্ত
ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য
করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি।”(সূরা সাবা ৩৪:৩১-৩৩) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড,
৯২]
আর সেদিন কারো সাথে কোন সম্পর্ক বহাল থাকবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یَوْمَ
یَفِرُّ الْمَرْئُ مِنْ اَخِیْھِﭱﺫ وَاُمِّھ۪ وَاَبِیْھِﭲﺫ وَصَاحِبَتِھ۪
وَبَنِیْھِ)
“সেদিন মানুষ পলায়ন করবে তাঁর নিজের ভাই হতে, এবং
তার মাতা, পিতা, স্ত্রী ও সন্তান
হতে।”(সূরা আবাসা ৮০:৩৪-৩৬)
তবে যারা দুনিয়াতে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলত তাদের সম্পর্ক বহাল
থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلْاَخِلَّا۬ئُ
یَوْمَئِذٍۭ بَعْضُھُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِیْنَ)
“বন্ধুরা সে দিন হয়ে যাবে একে অপরের শত্র“, তবে
মুত্তাকীরা ব্যতীত।”(সূরা যুখরুফ ৪৩:৬৭)
কিয়ামত দিবসে খাজা, পীর, ফকীর ও কবরপূজারীদের অপারগতা ও বিশ্বাসঘাতকতা দেখে মুশরিকরা আফসোস করবে,
কিন্তু সে আফসোস ও অনুতাপ কোন কাজে আসবে না। সকল আমল বরবাদ হয়ে
যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ
الَّذِیْنَ کَفَرُوْا بِرَبِّھِمْ اَعْمَالُھُمْ کَرَمَادِ اۨشْتَدَّتْ بِھِ
الرِّیْحُ فِیْ یَوْمٍ عَاصِفٍ)
“যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের কর্মসমূহের উপমা
ভস্মসদৃশ যা ঝড়ের দিনের বাতাস প্রচণ্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়।”(সূরা ইবরাহীম ১৪:১৮)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. উম্মাতে
মুহাম্মাদীর কিছু লোক মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়ে যাবে।
২. আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসা অন্যকে দেয়া শির্ক।
৩. কিয়ামাতের দিন অমুসলিমদের কোন সম্পর্ক উপকারে আসবে না।
৪. যারা শির্কযুক্ত আমল করবে তাদের আমল বিফলে যাবে।
2:167
وَ قَالَ الَّذِیۡنَ
اتَّبَعُوۡا لَوۡ اَنَّ لَنَا کَرَّۃً فَنَتَبَرَّاَ مِنۡہُمۡ کَمَا تَبَرَّءُوۡا
مِنَّا ؕ کَذٰلِکَ یُرِیۡہِمُ اللّٰہُ اَعۡمَالَہُمۡ حَسَرٰتٍ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَ مَا
ہُمۡ بِخٰرِجِیۡنَ مِنَ النَّارِ ﴿۱۶۷﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৫ থেকে ১৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা নিজের এককত্বের অকাট্য দলিল পেশ করার পরও এক শ্রেণির
মানুষ রয়েছে যারা তাঁর সাথে মনগড়া মা‘বূদের শরীক স্থাপন করে। তাদের সাথে ঐরূপ
ভালবাসা পোষণ করে যেমন ভালবাসা আল্লাহ তা‘আলার সাথে হওয়া উচিত। এখানে তাদের কথাই
তুলে ধরেছেন।
এ শির্কের ছড়াছড়ি কেবল তৎকালীন আরব সমাজেই বিদ্যমান ছিল না বরং
বর্তমানেও অনেক নামধারী মুসলিম এ রোগে আক্রান্ত। গায়রুল্লাহ, পীর, ফকীর, মাজারগুলোকে কেবল
নিজেদের ইবাদতখানা বানিয়েই নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, বরং তাদেরকে
আল্লাহ তা‘আলার চেয়ে বেশি ভালবাসে। সেই সাথে তাদের সম্মান ও আনুগত্য এমনভাবে করে-
যা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার হকদার নয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاِذَا
ذُکِرَ اللہُ وَحْدَھُ اشْمَاَزَّتْ قُلُوْبُ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ
بِالْاٰخِرَةِﺆ وَاِذَا ذُکِرَ الَّذِیْنَ مِنْ دُوْنِھ۪ٓ اِذَا ھُمْ
یَسْتَبْشِرُوْنَ)
“এক আল্লাহর কথা বলা হলে যারা আখিরাতকে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর
ঘৃণায় ভরে যায় এবং আল্লাহর পরিবর্তে (তাদের দেবতাগুলোর) উল্লেখ করা হলে তারা
আনন্দিত হয়।” (সূরা যুমার ৩৯:৪৫)
কিন্তু মু’মিনদের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা আল্লাহ তা‘আলা-কে
সর্বাধিক ভালবাসে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
(ثَلَاثٌ
مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ، أَنْ يَكُونَ اللّٰهُ
وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا)
যে ব্যক্তির মাঝে তিনটি গুণ রয়েছে সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে,
তার মধ্যে একটি হল- কেবল আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল তার নিকট সবচেয়ে
বেশি ভালবাসার পাত্র হওয়া। (সহীহ বুখারী হা: ১৬)
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ
তা‘আলা ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন: আমি বললাম, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান না করে
মারা যায় সে জান্নাতে যাবে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৯৭, সহীহ
মুসলিম হা: ৯২)
(الَّذِیْنَ
ظَلَمُوْٓا)
‘এবং যারা যুলুম করেছে’আয়াতে “যালিম” হল কাফিরগণ। আল্লাহ তা‘আলা
বলেন:
(وَالْكَافِرُونَ
هُمُ الظَّالِمُونَ)
কাফিররাই হলো যালেম। (সূরা বাকারাহ ২:২৫৪) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড,
৯২]
লুকমান (আঃ) তাঁর ছেলেকে বলেন-
(لَا
تُشْرِكْ بِاللّٰهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ)
“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয়ই শির্ক তো মহা জুলুম।”
(সূরা লুকমান ৩১:১৩)
যারা শির্ক করে নিজেদের প্রতি জুলুম করেছে তারা যদি জানত যখন শাস্তি
প্রত্যক্ষ করবে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বশক্তিমান ও কঠোর
শাস্তিদাতা তাহলে আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যান্য বাতিল মা‘বূদের ইবাদত করত না।
(إِذْ
تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوْا)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামীদের পরস্পরে বিবাদের বিষয়ের
দিকে ইশারা করেছেন। অন্যত্র তাদের বিবরণ তুলে ধরে বলেন:
(وَلَوْ
تَرٰٓی اِذِ الظّٰلِمُوْنَ مَوْقُوْفُوْنَ عِنْدَ رَبِّھِمْﺊ یَرْجِعُ بَعْضُھُمْ
اِلٰی بَعْضِ اۨلْقَوْلَﺆ یَقُوْلُ الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ
اسْتَکْبَرُوْا لَوْلَآ اَنْتُمْ لَکُنَّا مُؤْمِنِیْنَﭮقَالَ الَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا
لِلَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْٓا اَنَحْنُ صَدَدْنٰکُمْ عَنِ الْھُدٰی بَعْدَ اِذْ
جَا۬ءَکُمْ بَلْ کُنْتُمْ مُّجْرِمِیْنَﭯوَقَالَ الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا
لِلَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا بَلْ مَکْرُ الَّیْلِ وَالنَّھَارِ اِذْ
تَاْمُرُوْنَنَآ اَنْ نَّکْفُرَ بِاللہِ وَنَجْعَلَ لَھ۫ٓ اَنْدَادًا)
“তুমি যদি দেখতে যালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান
করা হবে, তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম।
অহংকারীরা দুর্বলদেরকে বলবেঃ তোমাদের নিকট সৎ পথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে
ওটা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।
দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবা-রাত্র চক্রান্তে লিপ্ত
ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য
করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি।”(সূরা সাবা ৩৪:৩১-৩৩) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড,
৯২]
আর সেদিন কারো সাথে কোন সম্পর্ক বহাল থাকবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یَوْمَ
یَفِرُّ الْمَرْئُ مِنْ اَخِیْھِﭱﺫ وَاُمِّھ۪ وَاَبِیْھِﭲﺫ وَصَاحِبَتِھ۪
وَبَنِیْھِ)
“সেদিন মানুষ পলায়ন করবে তাঁর নিজের ভাই হতে, এবং
তার মাতা, পিতা, স্ত্রী ও সন্তান
হতে।”(সূরা আবাসা ৮০:৩৪-৩৬)
তবে যারা দুনিয়াতে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলত তাদের সম্পর্ক বহাল
থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلْاَخِلَّا۬ئُ
یَوْمَئِذٍۭ بَعْضُھُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِیْنَ)
“বন্ধুরা সে দিন হয়ে যাবে একে অপরের শত্র“, তবে
মুত্তাকীরা ব্যতীত।”(সূরা যুখরুফ ৪৩:৬৭)
কিয়ামত দিবসে খাজা, পীর, ফকীর ও কবরপূজারীদের অপারগতা ও বিশ্বাসঘাতকতা দেখে মুশরিকরা আফসোস করবে,
কিন্তু সে আফসোস ও অনুতাপ কোন কাজে আসবে না। সকল আমল বরবাদ হয়ে
যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ
الَّذِیْنَ کَفَرُوْا بِرَبِّھِمْ اَعْمَالُھُمْ کَرَمَادِ اۨشْتَدَّتْ بِھِ
الرِّیْحُ فِیْ یَوْمٍ عَاصِفٍ)
“যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের কর্মসমূহের উপমা
ভস্মসদৃশ যা ঝড়ের দিনের বাতাস প্রচণ্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়।”(সূরা ইবরাহীম ১৪:১৮)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. উম্মাতে
মুহাম্মাদীর কিছু লোক মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়ে যাবে।
২. আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসা অন্যকে দেয়া শির্ক।
৩. কিয়ামাতের দিন অমুসলিমদের কোন সম্পর্ক উপকারে আসবে না।
৪. যারা শির্কযুক্ত আমল করবে তাদের আমল বিফলে যাবে।
2:168
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ
کُلُوۡا مِمَّا فِی الۡاَرۡضِ حَلٰلًا طَیِّبًا ۫ۖ وَّ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ
الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّہٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۶۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৮ ও ১৬৯ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা হালাল খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ও শয়তানের
কার্যক্রম কী তার বর্ণনা দিয়েছেন।
‘طيب‘ যা পবিত্র; অপবিত্র নয়। যেমন- মৃত, রক্ত, শুকরের গোশত ইত্যাদি অপবিত্র। (তাফসীর সাদী
পৃঃ ৬৩)
তাফসীরে মুয়াসসারে বলা হয়েছে, যা পবিত্র
অপবিত্র নয়; যা উপকারী, ক্ষতিকর নয়।
(তাফসীর মুয়াসসার: পৃঃ ৬৩) খাদ্য ও পানীয় শরীয়তসম্মত হবার জন্য দু’টি বৈশিষ্ট্য
থাকা জরুরী। ১. হালাল হতে হবে ২. তা পবিত্র হতে হবে। কোন জিনিস পবিত্র হলেই হালাল
হবে এমন নয়, বরং প্রত্যেক হালাল জিনিস পবিত্র, কিন্তু প্রত্যেক পবিত্র জিনিস হালাল নয়। যেমন সুদ, ঘুষ,
চুরি করা টাকা বা বস্তু হিসেবে পবিত্র কিন্তু উপার্জন পদ্ধতি হারাম।
তাই এটা হালাল নয়। অপরপক্ষে শুকর যদি টাকা দিয়েও কিনে আনে তাহলেও তা শরীয়তসম্মত
খাদ্য নয়, কারণ তা হালাল পন্থায় কিনলেও স্বয়ং বস্তুটি
অপবিত্র। সুতরাং এটাও খাদ্যের উপযোগী নয়। আর যে সকল জন্তু যবেহ করে খেতে হয় তা
আল্লাহ তা‘আলার নামে যবেহ করতে হবে, অন্যথায় তা শরীয়তের
দৃষ্টিতে হালাল খাদ্য নয়। কারণ তা শরীয়তসম্মত পন্থায় যবেহ না হওয়ায় অপবিত্র ও
হারাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قُلْ
لَّآ اَجِدُ فِیْ مَآ اُوْحِیَ اِلَیَّ مُحَرَّمًا عَلٰی طَاعِمٍ یَّطْعَمُھ۫ٓ
اِلَّآ اَنْ یَّکُوْنَ مَیْتَةً اَوْ دَمًا مَّسْفُوْحًا اَوْ لَحْمَ خِنْزِیْرٍ
فَاِنَّھ۫ رِجْسٌ اَوْ فِسْقًا اُھِلَّ لِغَیْرِ اللہِ بِھ۪ﺆ فَمَنِ اضْطُرَّ
غَیْرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَاِنَّ رَبَّکَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)
“বল: ‘আমার প্রতি যে ওয়াহী হয়েছে, তাতে লোকে যা খায় তার মধ্যে আমি
কিছুই হারাম পাইনি, মৃত জন্তু, প্রবাহমান
রক্ত ও শুকরের মাংস ব্যতীত। কেননা এগুলো অবশ্যই অপবিত্র অথবা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করার কারণে।’তবে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং
সীমালঙ্ঘন না করে নিরুপায় হয়ে তা খেলে তোমার প্রতিপালক তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা আন‘আম ৬:১৪৫)
মোটকথা আল্লাহ তা‘আলা যা হালাল করেছেন তা-ই পবিত্র আর যা হারাম
করেছেন তা-ই অপবিত্র।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে বারণ করেছেন এবং
উল্লেখ করেছেন-
(إِنَّه۫
لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِيْنٌ)
নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“।”
পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন:
(اِنَّمَا
یَاْمُرُکُمْ بِالسُّوْ۬ئِ وَالْفَحْشَا۬ئِ وَاَنْ تَقُوْلُوْا عَلَی اللہِ مَا
لَا تَعْلَمُوْنَ)
“সে তো কেবল তোমাদেরকে মন্দ ও অশ্লীল কার্যের এবং আল্লাহ সম্বন্ধে
তোমরা যা জান না সে বিষয়ে কথা বলার নির্দেশ দেয়।”(সূরা বাকারাহ ২:১৬৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ
یَّتَّبِعْ خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ فَاِنَّھ۫ یَاْمُرُ بِالْفَحْشَا۬ئِ
وَالْمُنْکَرِ)
“যে কেউ শয়তানের পদাংক অনুসরণ করলো শয়তান তো অশ্লীলতা ও মন্দ
কার্যের নির্দেশ দেয়।”(সূরা নূর ২৪:২১)
শয়তানের অনুসরণ করে হালালকে হারাম কর না। যেমন মুশরিকরা করেছিল।
তারা মূর্তির নামে উৎসর্গ করে নিজেদের ওপর হারাম করে নিত। (আহসানুল বায়ান, পৃঃ ৭২)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ
তা‘আলা বলেন: আমি আমার সমস্ত বান্দাদেরকে একনিষ্ঠ (মুসলিম) হিসেবে সৃষ্টি করেছি।
তারপর তাদের নিকট শয়তান এসে তাদেরকে দীন থেকে বিচ্যুত করে দেয়। আমি যে সমস্ত জিনিস
তাদের জন্য হালাল করেছিলাম সেসব জিনিস তাদের ওপর হারাম করে দেয়। (সহীহ মুসলিম হা:
২৮৬৫)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সকল প্রকার
খাদ্য ও পানীয় পবিত্র ও হালাল হতে হবে।
২. হালাল উপার্জন খাওয়া আবশ্যক।
৩. শয়তানের অনুসরণ করা হারাম।
৪. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্র“।
৫. শয়তান মানুষকে খারাপ কাজের দিকে পথ দেখায়।
৬. আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যা হালাল করেছেন তা-ই হালাল এবং যা হারাম করেছেন তা-ই হারাম। এর বাইরে হালাল-হারাম
করে নেয়ার অধিকার কারো নেই।
2:169
اِنَّمَا یَاۡمُرُکُمۡ
بِالسُّوۡٓءِ وَ الۡفَحۡشَآءِ وَ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ مَا لَا
تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۶۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৬৮ ও ১৬৯ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা হালাল খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ও শয়তানের
কার্যক্রম কী তার বর্ণনা দিয়েছেন।
‘طيب‘ যা পবিত্র; অপবিত্র নয়। যেমন- মৃত, রক্ত, শুকরের গোশত ইত্যাদি অপবিত্র। (তাফসীর সাদী
পৃঃ ৬৩)
তাফসীরে মুয়াসসারে বলা হয়েছে, যা পবিত্র
অপবিত্র নয়; যা উপকারী, ক্ষতিকর নয়।
(তাফসীর মুয়াসসার: পৃঃ ৬৩) খাদ্য ও পানীয় শরীয়তসম্মত হবার জন্য দু’টি বৈশিষ্ট্য
থাকা জরুরী। ১. হালাল হতে হবে ২. তা পবিত্র হতে হবে। কোন জিনিস পবিত্র হলেই হালাল
হবে এমন নয়, বরং প্রত্যেক হালাল জিনিস পবিত্র, কিন্তু প্রত্যেক পবিত্র জিনিস হালাল নয়। যেমন সুদ, ঘুষ,
চুরি করা টাকা বা বস্তু হিসেবে পবিত্র কিন্তু উপার্জন পদ্ধতি হারাম।
তাই এটা হালাল নয়। অপরপক্ষে শুকর যদি টাকা দিয়েও কিনে আনে তাহলেও তা শরীয়তসম্মত
খাদ্য নয়, কারণ তা হালাল পন্থায় কিনলেও স্বয়ং বস্তুটি
অপবিত্র। সুতরাং এটাও খাদ্যের উপযোগী নয়। আর যে সকল জন্তু যবেহ করে খেতে হয় তা
আল্লাহ তা‘আলার নামে যবেহ করতে হবে, অন্যথায় তা শরীয়তের
দৃষ্টিতে হালাল খাদ্য নয়। কারণ তা শরীয়তসম্মত পন্থায় যবেহ না হওয়ায় অপবিত্র ও
হারাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قُلْ
لَّآ اَجِدُ فِیْ مَآ اُوْحِیَ اِلَیَّ مُحَرَّمًا عَلٰی طَاعِمٍ یَّطْعَمُھ۫ٓ
اِلَّآ اَنْ یَّکُوْنَ مَیْتَةً اَوْ دَمًا مَّسْفُوْحًا اَوْ لَحْمَ خِنْزِیْرٍ
فَاِنَّھ۫ رِجْسٌ اَوْ فِسْقًا اُھِلَّ لِغَیْرِ اللہِ بِھ۪ﺆ فَمَنِ اضْطُرَّ
غَیْرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَاِنَّ رَبَّکَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)
“বল: ‘আমার প্রতি যে ওয়াহী হয়েছে, তাতে লোকে যা খায় তার মধ্যে আমি
কিছুই হারাম পাইনি, মৃত জন্তু, প্রবাহমান
রক্ত ও শুকরের মাংস ব্যতীত। কেননা এগুলো অবশ্যই অপবিত্র অথবা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করার কারণে।’তবে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং
সীমালঙ্ঘন না করে নিরুপায় হয়ে তা খেলে তোমার প্রতিপালক তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা আন‘আম ৬:১৪৫)
মোটকথা আল্লাহ তা‘আলা যা হালাল করেছেন তা-ই পবিত্র আর যা হারাম
করেছেন তা-ই অপবিত্র।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে বারণ করেছেন এবং
উল্লেখ করেছেন-
নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“।”
পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন:
(اِنَّمَا
یَاْمُرُکُمْ بِالسُّوْ۬ئِ وَالْفَحْشَا۬ئِ وَاَنْ تَقُوْلُوْا عَلَی اللہِ مَا
لَا تَعْلَمُوْنَ)
“সে তো কেবল তোমাদেরকে মন্দ ও অশ্লীল কার্যের এবং আল্লাহ সম্বন্ধে
তোমরা যা জান না সে বিষয়ে কথা বলার নির্দেশ দেয়।”(সূরা বাকারাহ ২:১৬৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَمَنْ
یَّتَّبِعْ خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ فَاِنَّھ۫ یَاْمُرُ بِالْفَحْشَا۬ئِ
وَالْمُنْکَرِ)
“যে কেউ শয়তানের পদাংক অনুসরণ করলো শয়তান তো অশ্লীলতা ও মন্দ
কার্যের নির্দেশ দেয়।”(সূরা নূর ২৪:২১)
শয়তানের অনুসরণ করে হালালকে হারাম কর না। যেমন মুশরিকরা করেছিল।
তারা মূর্তির নামে উৎসর্গ করে নিজেদের ওপর হারাম করে নিত। (আহসানুল বায়ান, পৃঃ ৭২)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ
তা‘আলা বলেন: আমি আমার সমস্ত বান্দাদেরকে একনিষ্ঠ (মুসলিম) হিসেবে সৃষ্টি করেছি।
তারপর তাদের নিকট শয়তান এসে তাদেরকে দীন থেকে বিচ্যুত করে দেয়। আমি যে সমস্ত জিনিস
তাদের জন্য হালাল করেছিলাম সেসব জিনিস তাদের ওপর হারাম করে দেয়। (সহীহ মুসলিম হা:
২৮৬৫)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সকল প্রকার
খাদ্য ও পানীয় পবিত্র ও হালাল হতে হবে।
২. হালাল উপার্জন খাওয়া আবশ্যক।
৩. শয়তানের অনুসরণ করা হারাম।
৪. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্র“।
৫. শয়তান মানুষকে খারাপ কাজের দিকে পথ দেখায়।
৬. আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
যা হালাল করেছেন তা-ই হালাল এবং যা হারাম করেছেন তা-ই হারাম। এর বাইরে হালাল-হারাম
করে নেয়ার অধিকার কারো নেই।
2:170
وَ اِذَا قِیۡلَ لَہُمُ
اتَّبِعُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ قَالُوۡا بَلۡ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلۡفَیۡنَا
عَلَیۡہِ اٰبَآءَنَا ؕ اَوَ لَوۡ کَانَ اٰبَآؤُہُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ شَیۡئًا
وَّ لَا یَہۡتَدُوۡنَ ﴿۱۷۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৭০ ও ১৭১ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়াহূদীদেরকে
ইসলামের দিকে দাওয়াত দিলেন, তার প্রতি উৎসাহিত করলেন এবং
আল্লাহ তা‘আলার শাস্তির ভয় দেখালেন। তখন রাফী বিন হুরাইমালা ও মালিক বিন আউফ দু’জন
ইয়াহূদী বলল: আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে যে ধর্মের ওপর পেয়েছি তারই অনুসরণ করব। তারা
আমাদের চেয়ে বেশি জানতেন এবং আমাদের চেয়ে ভাল ছিলেন। তখন উক্ত আয়াতটি নাযিল হয়।
(লুুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃঃ ৩৫)
কাফির-মুশরিকদেরকে যখন বলা হত- আল্লাহ তা‘আলা যা অবতীর্ণ করেছেন তার
অনুসরণ কর। তখন তারা বলত- আমরা আমাদের বাপ-দাদার কাছ থেকে যা পেয়েছি তা-ই অনুসরণ
করব।
কুরআনে এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, কাফির-মুশরিকদেরকে যখনই ইসলামের দাওয়াত দেয়া হত তখনই তারা এ কথা বলত। যেমন
সূরা মায়েদার ১০৪ নং আয়াতে, সূরা লুকমানের ২১ নং আয়াতে বলা
হয়েছে। এমনকি যদি কোন খারাপ কাজ করত তখনও তারা বলত, এটাও
আমাদের বাপ-দাদার কাছ থেকে পেয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذَا
فَعَلُوا فَاحِشَةً قَالُوا وَجَدْنَا عَلَيْهَا آبَآءَنَا)
“যখন তারা কোন অশ্লীল কাজ করে তখন বলে, ‘আমরা
আমাদের পূর্বপুরুষকে এটা করতে দেখেছি।”(সূরা আ‘রাফ ৭: ২৮)
এটা যে শুধু তৎকালীন কাফির মুশরিকদের মাঝে ছিল তা নয়, বরং আজও এক শ্রেণির মুসলিম রয়েছে যাদের কাছে কুরআন ও সহীহ হাদীসের দাওয়াত
দেয়া হলে তারা বলে, আমাদের বাপ-দাদারা কি বুঝেনি, তারা কি ভুল করেছেন, তারা কি কম জানতেন? আপনারা এখন নতুন নতুন হাদীস নিয়ে আসছেন।
যারা কাফির ও মুশরিকদের মত বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের মতাদর্শে
অটল থাকতে চায় তাদেরকে জানাতে চাই কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে আসুন। বাপ-দাদার
দোহাই দিয়ে যেমন মক্কার কাফির-মুশরিকরা রেহাই পায়নি, তেমনি
যারাই বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে চলবে তাদেরও পরিণতি শুভ হবে না। প্রকৃত পক্ষে এটা কখনও
মুসলিমদের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।
মানুষ যাতে বাপ-দাদার দোহাই না দিতে পারে সেজন্য দুনিয়াতে প্রেরণ
করার পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা তাদের কাছ থেকে শপথ নিয়েছেন। যেমন উল্লেখ করা হয়েছে
সূরা আ‘রাফ: ১৭২ ও ১৭৩ নং আয়াতে-
(وَاِذْ
اَخَذَ رَبُّکَ مِنْۭ بَنِیْٓ اٰدَمَ مِنْ ظُھُوْرِھِمْ ذُرِّیَّتَھُمْ
وَاَشْھَدَھُمْ عَلٰٓی اَنْفُسِھِمْﺆ اَلَسْتُ بِرَبِّکُمْﺚ قَالُوْا بَلٰیﹱ
شَھِدْنَاﹱ اَنْ تَقُوْلُوْا یَوْمَ الْقِیٰمَةِ اِنَّا کُنَّا عَنْ ھٰذَا
غٰفِلِیْنَ)
“স্মরণ কর, তোমার প্রতিপালক আদম সন্তানের
পৃষ্ঠদেশ হতে তার বংশধরকে বের করেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে স্বীকারোক্তি গ্রহণ
করেন এবং বলেন, ‘আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?’তারা বলে, ‘হ্যাঁ অবশ্যই আমরা সাক্ষী রইলাম।’এটা
এজন্য যে, তোমরা যেন কিয়ামতের দিন না বল, ‘আমরা তো এ বিষয়ে গাফিল ছিলাম।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭২)
বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে যে পার হওয়া যাবে না, সে
কথা এ আয়াতের শেষাংশেই বলে দেয়া হয়েছে-
(أَوَلَوْ
كَانَ آبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ)
“অথচ যদিও তাদের পিতৃপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিল না এবং তারা হিদায়াত
প্রাপ্ত ছিল না। তবুও কি (তারা তাদের অনুসরণ করবে)।”(সূরা বাকারাহ ২:১৭০)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَوَلَوْ
كَانَ آبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ)
“যদিও তাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানত না এবং সৎ পথপ্রাপ্তও ছিল না,
তবুও কি?” (সূরা মায়িদা ৫:১০৪)
তাই সকল মু’মিন-মুসলিমদের উচিত বাপ-দাদার দোহাই বর্জন করে কুরআন ও
সহীহ সুন্নাহর অনুসরণ করা। এর মধ্যে রয়েছে নাজাত। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে
তাওফীক দান করুন। (আমীন)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা সেসব লোকের দৃষ্টান্ত পেশ করছেন, যারা পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ করে নিজেদের বিবেক বুদ্ধিকে অকেজো করে
রাখে। তারা হল ঐসব পশুর মত যাদেরকে রাখাল ডাকে ও আওয়াজ দেয়, আর
তারা সে ডাক ও আওয়াজ শোনে কিন্তু বুঝে না যে তাদেরকে কী জন্য ডাকা হচ্ছে।
যারা অন্ধ অনুসারী তারা বধির, সত্যের ডাক শুনে
না, তারা বাকশক্তিহীন, সত্যের কথা মুখ
দিয়ে প্রকাশ করতে পারে না। তারা অন্ধ, সত্যের পথ দেখতে পায়
না। তাই তারা সত্যের দাওয়াত, তাওহীদ ও সুন্নাহ বুঝতে পারে
না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হক শুধু কুরআন
ও সহীহ সুন্নাহর অনুসরণে। বাপ-দাদার অনুসরণে নয়।
২. পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ নাজাতের কারণ হতে পারে না।
৩. কথায় কথায় পূর্বপুরুষদের দোহাই দেয়া ইয়াহূদী-কাফির-মুশরিকদের
স্বভাব।
৪. যারা সত্যবিচ্যুত তাদেরকে সত্যের দাওয়াত দিলেও সত্য জিনিস বুঝতে
পারে না বা বুঝতে চায় না।
2:171
وَ مَثَلُ الَّذِیۡنَ
کَفَرُوۡا کَمَثَلِ الَّذِیۡ یَنۡعِقُ بِمَا لَا یَسۡمَعُ اِلَّا دُعَآءً وَّ
نِدَآءً ؕ صُمٌّۢ بُکۡمٌ عُمۡیٌ فَہُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۷۱﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৭০ ও ১৭১ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়াহূদীদেরকে
ইসলামের দিকে দাওয়াত দিলেন, তার প্রতি উৎসাহিত করলেন এবং
আল্লাহ তা‘আলার শাস্তির ভয় দেখালেন। তখন রাফী বিন হুরাইমালা ও মালিক বিন আউফ দু’জন
ইয়াহূদী বলল: আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে যে ধর্মের ওপর পেয়েছি তারই অনুসরণ করব। তারা
আমাদের চেয়ে বেশি জানতেন এবং আমাদের চেয়ে ভাল ছিলেন। তখন উক্ত আয়াতটি নাযিল হয়।
(লুুবাবুন নুকূল ফী আসবাবে নুযূল, পৃঃ ৩৫)
কাফির-মুশরিকদেরকে যখন বলা হত- আল্লাহ তা‘আলা যা অবতীর্ণ করেছেন তার
অনুসরণ কর। তখন তারা বলত- আমরা আমাদের বাপ-দাদার কাছ থেকে যা পেয়েছি তা-ই অনুসরণ
করব।
কুরআনে এরূপ অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, কাফির-মুশরিকদেরকে যখনই ইসলামের দাওয়াত দেয়া হত তখনই তারা এ কথা বলত। যেমন
সূরা মায়েদার ১০৪ নং আয়াতে, সূরা লুকমানের ২১ নং আয়াতে বলা
হয়েছে। এমনকি যদি কোন খারাপ কাজ করত তখনও তারা বলত, এটাও আমাদের
বাপ-দাদার কাছ থেকে পেয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذَا
فَعَلُوا فَاحِشَةً قَالُوا وَجَدْنَا عَلَيْهَا آبَآءَنَا)
“যখন তারা কোন অশ্লীল কাজ করে তখন বলে, ‘আমরা
আমাদের পূর্বপুরুষকে এটা করতে দেখেছি।”(সূরা আ‘রাফ ৭: ২৮)
এটা যে শুধু তৎকালীন কাফির মুশরিকদের মাঝে ছিল তা নয়, বরং আজও এক শ্রেণির মুসলিম রয়েছে যাদের কাছে কুরআন ও সহীহ হাদীসের দাওয়াত
দেয়া হলে তারা বলে, আমাদের বাপ-দাদারা কি বুঝেনি, তারা কি ভুল করেছেন, তারা কি কম জানতেন? আপনারা এখন নতুন নতুন হাদীস নিয়ে আসছেন।
যারা কাফির ও মুশরিকদের মত বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে নিজেদের মতাদর্শে
অটল থাকতে চায় তাদেরকে জানাতে চাই কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে আসুন। বাপ-দাদার
দোহাই দিয়ে যেমন মক্কার কাফির-মুশরিকরা রেহাই পায়নি, তেমনি
যারাই বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে চলবে তাদেরও পরিণতি শুভ হবে না। প্রকৃত পক্ষে এটা কখনও
মুসলিমদের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।
মানুষ যাতে বাপ-দাদার দোহাই না দিতে পারে সেজন্য দুনিয়াতে প্রেরণ
করার পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা তাদের কাছ থেকে শপথ নিয়েছেন। যেমন উল্লেখ করা হয়েছে
সূরা আ‘রাফ: ১৭২ ও ১৭৩ নং আয়াতে-
(وَاِذْ
اَخَذَ رَبُّکَ مِنْۭ بَنِیْٓ اٰدَمَ مِنْ ظُھُوْرِھِمْ ذُرِّیَّتَھُمْ
وَاَشْھَدَھُمْ عَلٰٓی اَنْفُسِھِمْﺆ اَلَسْتُ بِرَبِّکُمْﺚ قَالُوْا بَلٰیﹱ
شَھِدْنَاﹱ اَنْ تَقُوْلُوْا یَوْمَ الْقِیٰمَةِ اِنَّا کُنَّا عَنْ ھٰذَا
غٰفِلِیْنَ)
“স্মরণ কর, তোমার প্রতিপালক আদম সন্তানের
পৃষ্ঠদেশ হতে তার বংশধরকে বের করেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে স্বীকারোক্তি গ্রহণ
করেন এবং বলেন, ‘আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?’তারা বলে, ‘হ্যাঁ অবশ্যই আমরা সাক্ষী রইলাম।’এটা
এজন্য যে, তোমরা যেন কিয়ামতের দিন না বল, ‘আমরা তো এ বিষয়ে গাফিল ছিলাম।” (সূরা আ‘রাফ ৭:১৭২)
বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে যে পার হওয়া যাবে না, সে
কথা এ আয়াতের শেষাংশেই বলে দেয়া হয়েছে-
(أَوَلَوْ
كَانَ آبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ)
“অথচ যদিও তাদের পিতৃপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিল না এবং তারা হিদায়াত
প্রাপ্ত ছিল না। তবুও কি (তারা তাদের অনুসরণ করবে)।”(সূরা বাকারাহ ২:১৭০)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَوَلَوْ
كَانَ آبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ)
“যদিও তাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানত না এবং সৎ পথপ্রাপ্তও ছিল না,
তবুও কি?” (সূরা মায়িদা ৫:১০৪)
তাই সকল মু’মিন-মুসলিমদের উচিত বাপ-দাদার দোহাই বর্জন করে কুরআন ও
সহীহ সুন্নাহর অনুসরণ করা। এর মধ্যে রয়েছে নাজাত। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে
তাওফীক দান করুন। (আমীন)
তারপর আল্লাহ তা‘আলা সেসব লোকের দৃষ্টান্ত পেশ করছেন, যারা পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ করে নিজেদের বিবেক বুদ্ধিকে অকেজো করে
রাখে। তারা হল ঐসব পশুর মত যাদেরকে রাখাল ডাকে ও আওয়াজ দেয়, আর
তারা সে ডাক ও আওয়াজ শোনে কিন্তু বুঝে না যে তাদেরকে কী জন্য ডাকা হচ্ছে।
যারা অন্ধ অনুসারী তারা বধির, সত্যের ডাক শুনে
না, তারা বাকশক্তিহীন, সত্যের কথা মুখ
দিয়ে প্রকাশ করতে পারে না। তারা অন্ধ, সত্যের পথ দেখতে পায়
না। তাই তারা সত্যের দাওয়াত, তাওহীদ ও সুন্নাহ বুঝতে পারে
না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয়
বিষয়:
১. হক শুধু কুরআন
ও সহীহ সুন্নাহর অনুসরণে। বাপ-দাদার অনুসরণে নয়।
২. পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ নাজাতের কারণ হতে পারে না।
৩. কথায় কথায় পূর্বপুরুষদের দোহাই দেয়া ইয়াহূদী-কাফির-মুশরিকদের
স্বভাব।
৪. যারা সত্যবিচ্যুত তাদেরকে সত্যের দাওয়াত দিলেও সত্য জিনিস বুঝতে
পারে না বা বুঝতে চায় না।
2:172
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا کُلُوۡا مِنۡ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِلّٰہِ اِنۡ
کُنۡتُمۡ اِیَّاہُ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۱۷۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৭২ ও ১৭৩ নং আয়াতের তাফসীর:
১৬৮ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র মানব জাতিকে হালাল খাওয়ার নির্দেশ
দিয়েছেন। অত্র আয়াতেও বিশেষভাবে মু’মিনদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন। তারপর এসব
নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
১৭৩ নং আয়াতে হালাল খাওয়ার নির্দেশের সাথে সাথে বর্জনীয় হারামগুলোর
বর্ণনাও আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন। এ আয়াতের তাফসীরস্বরূপ সূরা মায়িদার ৩ নং আয়াতে
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত,
শূকরের-মাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে
যবেহকৃত পশু আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত জন্তু এবং
হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু; তবে যা তোমরা যবেহ করতে পেরেছ তা
ছাড়া, আর যা মূর্তি পূজার বেদীর ওপর বলি দেয়া হয় তা এবং তীর
দ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করা- এসব পাপ কাজ। আজ কাফিররা তোমাদের দীনের বিরুদ্ধাচরণে
হতাশ হয়েছে; সুতরাং তাদেরকে ভয় কর। আজ তোমাদের জন্য তোমাদের
দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে
তোমাদের দীন মনোনীত করলাম। তবে কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে
তখন আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৩)
الْمَیْتَةَ ‘মৃত’মৃত দ্বারা সেসব জন্তুকে বুঝানো হয়েছে যা শরীয়তসম্মতভাবে জবেহ করা
হয়নি যদিও তা হালাল প্রাণী হয়, তবে মাছ মৃত হলেও তা হালাল।
(আবূ দাঊদ হা: ৮৩, সহীহ)
الدَّمَ ‘রক্ত’রক্ত দ্বারা ঐ রক্ত হারাম বুঝানো হয়েছে যা জবেহ করার সময় প্রবাহিত
হয়।
(وَلَحْمَ
الْخِنْزِيرِ)
‘শুকরের গোশত’শুকরের গোশত, তা থেকে উপকার
নেয়াসহ তার সব কিছু হারাম।
وَمَا
أُهِلَّ لِغَيْرِ اللّٰهِ بِهِ)
‘যা আল্লাহ ব্যতীত অপরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত’অর্থাৎ যেসব প্রাণী
আল্লাহ তা‘আলার নাম ছাড়া অন্যের নামে জবেহ করা হয়। চাই মূর্তি হোক, ওয়ালী-আওলিয়া হোক।
যে ব্যক্তি নিরুপায় অথচ অন্যায়কারী কিংবা সীমালংঘনকারী নয় তার কোন
পাপ হবে না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَمَنِ
اضْطُرَّ فِیْ مَخْمَصَةٍ غَیْرَ مُتَجَانِفٍ لِّاِثْمٍﺫ فَاِنَّ اللہَ غَفُوْرٌ
رَّحِیْمٌ)
“তবে কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তখন আল্লাহ
তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৩) অর্থাৎ হারাম
প্রাণী বা খাদ্য ছাড়া কোন কিছু না পেলে প্রাণ রক্ষার্থে ততটুকু বৈধ যতটুকু হলে
জীবন বাঁচানো যাবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হালাল রিযিক
খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।
২. আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা ওয়াজিব।
৩. বর্ণিত হারাম প্রাণী ও খাদ্য খেতে কেউ বাধ্য হলে প্রাণ রক্ষার্থে
খাওয়া জায়েয।
2:173
اِنَّمَا حَرَّمَ
عَلَیۡکُمُ الۡمَیۡتَۃَ وَ الدَّمَ وَ لَحۡمَ الۡخِنۡزِیۡرِ وَ مَاۤ اُہِلَّ بِہٖ
لِغَیۡرِ اللّٰہِ ۚ فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَلَاۤ اِثۡمَ
عَلَیۡہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۷۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
১৭২ ও ১৭৩ নং
আয়াতের তাফসীর:
১৬৮ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র মানব জাতিকে হালাল খাওয়ার নির্দেশ
দিয়েছেন। অত্র আয়াতেও বিশেষভাবে মু’মিনদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন। তারপর এসব
নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
১৭৩ নং আয়াতে হালাল খাওয়ার নির্দেশের সাথে সাথে বর্জনীয় হারামগুলোর
বর্ণনাও আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন। এ আয়াতের তাফসীরস্বরূপ সূরা মায়িদার ৩ নং আয়াতে
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত,
শূকরের-মাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে
যবেহকৃত পশু আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত জন্তু এবং
হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু; তবে যা তোমরা যবেহ করতে পেরেছ তা
ছাড়া, আর যা মূর্তি পূজার বেদীর ওপর বলি দেয়া হয় তা এবং তীর
দ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করা- এসব পাপ কাজ। আজ কাফিররা তোমাদের দীনের বিরুদ্ধাচরণে
হতাশ হয়েছে; সুতরাং তাদেরকে ভয় কর। আজ তোমাদের জন্য তোমাদের
দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে
তোমাদের দীন মনোনীত করলাম। তবে কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে
তখন আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৩)
الْمَیْتَةَ ‘মৃত’মৃত দ্বারা সেসব জন্তুকে বুঝানো হয়েছে যা শরীয়তসম্মতভাবে জবেহ করা
হয়নি যদিও তা হালাল প্রাণী হয়, তবে মাছ মৃত হলেও তা হালাল।
(আবূ দাঊদ হা: ৮৩, সহীহ)
الدَّمَ ‘রক্ত’রক্ত দ্বারা ঐ রক্ত হারাম বুঝানো হয়েছে যা জবেহ করার সময় প্রবাহিত
হয়।
(وَلَحْمَ
الْخِنْزِيرِ)
‘শুকরের গোশত’শুকরের গোশত, তা থেকে উপকার
নেয়াসহ তার সব কিছু হারাম।
(وَمَا
أُهِلَّ لِغَيْرِ اللّٰهِ بِهِ)
‘যা আল্লাহ ব্যতীত অপরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত’অর্থাৎ যেসব প্রাণী
আল্লাহ তা‘আলার নাম ছাড়া অন্যের নামে জবেহ করা হয়। চাই মূর্তি হোক, ওয়ালী-আওলিয়া হোক।
যে ব্যক্তি নিরুপায় অথচ অন্যায়কারী কিংবা সীমালংঘনকারী নয় তার কোন
পাপ হবে না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَمَنِ
اضْطُرَّ فِیْ مَخْمَصَةٍ غَیْرَ مُتَجَانِفٍ لِّاِثْمٍﺫ فَاِنَّ اللہَ غَفُوْرٌ
رَّحِیْمٌ)
“তবে কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তখন আল্লাহ
তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৩) অর্থাৎ হারাম
প্রাণী বা খাদ্য ছাড়া কোন কিছু না পেলে প্রাণ রক্ষার্থে ততটুকু বৈধ যতটুকু হলে
জীবন বাঁচানো যাবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হালাল রিযিক
খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।
২. আল্লাহ তা‘আলার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা ওয়াজিব।
৩. বর্ণিত হারাম প্রাণী ও খাদ্য খেতে কেউ বাধ্য হলে প্রাণ রক্ষার্থে
খাওয়া জায়েয।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite
0 Comments