স্বলাত স্বলাত বিষয়ক প্রবন্ধ_
উত্তরঃ নিজের কাজ বা সৃষ্টির কাজ আগে করা এবং স্রষ্টার কাজ পিছিয়ে দেয়া বৈধ হতে
পারে না। মহান আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয় স্বলাতকে বিশ্বাসীদের
জন্য নির্ধারিত সময়ে অবশ্য কর্তব্য করা হয়েছে। (নিসাঃ ১০৩)
যুদ্ধ চলাকালেও স্বলাত পিছিয়ে না দিয়ে “সালাতুল খাওফ” পড়ার নির্দেশ আছে। সুতরাং কাজের
ফাঁকেই স্বলাত আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা রাখা জরুরী। কাজের কাপড় নোংরা হলেও পৃথক
কাপড় রেখে স্বলাত পড়তে হবে। মাঠে-ময়দানে ভিজে জায়গায় দাঁড়িয়েও স্বলাত পরে নিতে
হবে। একান্ত কেউ নিরুপায় হলে সে কথা ভিন্ন। যেমন রোগী ও মুসাফির জমা তাকদীম বা তা’খির করতে পারে। বৃষ্টির জন্যও জমা তাকদীম হতে পারে।
✔ ১০৯ প্রশ্নঃ আমার রাত্রে শুতে দেরি হয়। ডিউটি শুরু হয় সকাল
সাতটা থেকে। ফজর হয় চারটায়। ফজরের সময় উঠে জামায়াতে স্বলাত পড়লে এবং তারপর শুলে আর
ঘুম হয় না। সুতরাং আমি যদি ডিউটি শুরুর এক ঘণ্টা আগে এলার্ম লাগিয়ে শুই এবং
ডিউটিতে যাবার আগে ফজরের স্বলাতটা পরে নেই, তাহলে কি
যথেষ্ট হবে না?
উত্তরঃ না, সময় পার করে স্বলাত পড়া যথেষ্ট নয়। ইচ্ছাকৃত সময় পার
করে স্বলাত পড়লে তা নষ্ট করারই শামিল। বহু উলামার মতে এমন ব্যক্তি ‘কাফের’ হয়ে যাবে। ১৪২ (ইবনে বায)
যে স্বলাতীরা
সময় পার করে স্বলাত পড়ে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের ‘গাই’ উপত্যকা। মহান আল্লাহ বলেন, “তাদের পর এল অপদার্থ পরবর্তীগণ তাঁরা স্বলাত নষ্ট করলে ও
প্রবৃত্তিপরায়ণ হল; সুতরাং তাঁরা অচিরেই ‘গাই’ প্রত্যক্ষ করবে।” (মারয়্যামঃ ৫৯)
স্বলাত বিনষ্ট করার অর্থেঃ একেবারে স্বলাত না পড়া; যা মূলতঃ কুফরী, অথবা স্বলাতের সময় বিনষ্ট করা;
যার অর্থ সঠিক সময়ে স্বলাত আদায় না করা, যখন ইচ্ছা পড়া বা বিনা ওযরে দুই বা ততোধিক স্বলাতকে একত্রে পড়া,
অথবা কখনো দুই, কখনো চার, কখনো এক, কখনো পাঁচ অক্তের স্বলাত পড়া। এ
সমস্ত স্বলাত বিনষ্ট করার অর্থে শামিল।
উত্তরঃ স্বলাতে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা স্বলাতকে ভারী মনে করা মুনাফিকদের কাজ।
মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় মুনাফিক (কপট)
ব্যক্তিরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়। বস্তুতঃ তিনিও তাঁদেরকে প্রতারিত করে থাকেন
এবং যখন তাঁরা স্বলাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে নিছক লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায়
এবং আল্লাহকে তাঁরা অল্পই স্মরণ করে থাকে।” (নিসাঃ ১৪২)
“আর তাদের দান খয়রাত গ্রহণযোগ্য না হওয়ার কারণ এ ছাড়া আর
কিছুই নয় যে, তাঁরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে কুফরী
করেছে, আর তাঁরা স্বলাতে শৈথিল্যের সাথেই উপস্থিত হয় এবং
তাঁরা অনিচ্ছাকৃতভাবেই দান করে থাকে।” (তাওবাহঃ ৫৪)
আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, “মুনাফিকদের পক্ষে সবচেয়ে ভারী স্বলাত হল এশা ও ফজরের স্বলাত। ঐ দুই
স্বলাতের কি মাহাত্ন্য আছে, তা যদি তাঁরা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও অবশ্যই তাতে উপস্থিত হত। আমার ইচ্ছা ছিল যে,
কাউকে স্বলাতের ইকামত দিতে আদেশ দিই, অতঃপর
একজনকে স্বলাত পড়তেও হুকুম করি, অতঃপর এমন একদল লোক সঙ্গে
করে নিই; যাঁদের সাথে থাকবে কাঠের বোঝা। তাদের নিয়ে এমন
সম্প্রদায়ের নিকট যাই, যারা স্বলাতে হাজির হয় না। অতঃপর
তাদেরকে ঘরে রেখেই তাদের ঘরবাড়িকে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিই।” ১৪৩ (বুখারী ৬৫৭, মুসলিম ৬৫১ নং)
✔ ১১১ প্রশ্নঃ দেখেছি, অনেক লোক
স্বলাতে সালাম ফিরার পর তাদের ডানে বামের লোকেদের সাথে মুসাফাহাহ করে। এটা কি
সুন্নত?
উত্তরঃ না, বরং এ কাজ বিদআত। তবে যদি তা মুসাফাহাহ প্রথম সাক্ষাতের
জন্য সালাম-সহ হয়, তাহলে তা সুন্নত। অর্থাৎ, স্বলাত শুরু হওয়ার পর পাশে দাঁড়ানোর সময় সালাম-মুসাফাহাহ সুযোগ না
হওয়ার ফলে স্বলাত শেষ হওয়ার পড়ে তা করলে দূষণীয় নয়। ১৪৪ (ইবনে বায)
✔ ১১২ প্রশ্নঃ জামাআত শেষে অনেক সময় মসজিদে সুন্নত পড়ি। এমন সময়
কোন লোক আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমার ইক্তিদা করতে থাকে। এটা কি বৈধ? বৈধ হলে আমার কি করা উচিত?
উত্তরঃ জামায়াতের সওয়াব নেওয়ার উদ্দেশ্যে তা বৈধ। তখন আপনার উচিত ইমামতি নিয়ত করে
তাকবীরাদি সশব্দে পড়া। আপনি সুন্নত পড়ছেন এবং সে নিশ্চয় ফরয পড়ছে। আপনাদের এই
নিয়তের ভিন্নতা স্বলাতের কোন ক্ষতি করবে না। সাহাবী মুআয বিন জাবাল (রঃ) আল্লাহর
রাসুল (ﷺ) এর সাথে স্বলাত
পড়তেন, তারপর নিজের গোত্রে ফিরে গিয়ে তাদের ইমামতি করে ঐ
স্বলাতই পড়তেন। ১৪৫(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১১৫০ নং)তাঁর প্রথম স্বলাত ফরয হতো এবং শেষেরটা নফল।
একদা তিনি সালাম ফিরে দেখলেন, মসজিদের এক প্রান্তে দুই ব্যক্তি জামাআতে স্বলাত পড়েনি। কারণ জিজ্ঞাসা
করলে তাঁরা কাঁপতে কাঁপতে বলল, ‘আমরা আমাদের বাসায় স্বলাত
পড়ে নিয়েছি।’ তিনি বললেন, “এমনটি
আর করো না। বরং যখন তোমাদের কেউ নিজ বাসায় স্বলাত পড়ে নেয়, অতঃপর (মসজিদে এসে) দেখে যে, ইমাম স্বলাত
পড়েনি, তখন সে যেন (দ্বিতীয়বার) তাঁর সাথে স্বলাত পড়ে। আর
এ স্বলাত তাঁর জন্য নফল হবে।” ১৪৬ (আবূ দাঊদ ৫৭৫, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত
১১৫২ নং)
মহানবী (ﷺ) একদা এক
ব্যক্তিকে একাকী স্বলাত পড়তে দেখলে তিনি অন্যান্য সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেন, “এমন কেউ কি নেই, যে এর সাথে স্বলাত পড়ে একে
(জামাআতের সওয়াব)দান করবে?” এ কথা শুনে এক ব্যক্তি উঠে
তাঁর সাথে স্বলাত পড়ল। ১৪৭ (আবূ দাঊদ ৫৭৪, তিরমিযী,
মিশকাত ১১৪৬ নং) অথচ সে মহানবী (ﷺ) এর সাথে ঐ
স্বলাত পূর্বে পড়েছিল। সুতরাং ইমামের ছিল ফরয এবং মুক্তাদীর নফল।
এ থেকে আরো বুঝা যায় যে, জামাআত শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় জামাআত কায়েম করা দোসাবহ নয়।
✔ ১১৩ প্রশ্নঃ কোন ব্যক্তি মসজিদে এসে যদি দেখে যে, ইমাম শেষ তাশাহহুদে আছেন, তাহলে সে কি জামাআতে
শামিল হবে, নাকি শামিল না হয়ে পরবর্তী জামাআতের অপেক্ষা
করবে?
উত্তরঃ যদি সে নিশ্চিতভাবে জানে যে, পরবর্তী
জামাআতের জন্য লোক আছে, তাহলে সে শেষ বৈঠকে শামিল না হয়ে
অপেক্ষা করবে এবং জামাআতের সাথে স্বলাত পড়বে। যেহেতু সঠিক মতে পূর্ণ এক রাকআত না
পেলে জামাআত পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি কোন লোক আসার আশা না থাকে, তাহলে উত্তম জামাআতে শামিল হয়ে স্বলাত আদায় করা; যদিও তা শেষ বৈঠক। কারণ জামাআত সহকারে স্বলাতের কিছু অংশ পাওয়া,
মোটেই কিছু না পাওয়া থেকে উত্তম। অতঃপর সে যদি জামাআতের শেষ
বৈঠকে শামিল হওয়ার পর শুনতে পায় যে, দ্বিতীয় জামাআত খাড়া
হয়েছে, তাহলে সে ঐ স্বলাত (সালাম না ফিরে) বাতিল করে তাদের
সাথে জামাআত সহকারে স্বলাত আদায় করতে পারে। অথবা দু’রাকাআত
হয়ে থাকলে তা নফলের নিয়ত করে সালাম ফিরে স্বলাত শেষ করে ঐ জামাআতে শামিল হতে পারে।
পরন্ত সে একাকী স্বলাত শেষ করলেও তাতে কোন দোষ নেই। সে এই তিনটির মধ্যে একটিকে
এখতিয়ার করতে পারে। ১৪৮ (ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ যেভাবে সম্ভভ, সেভাবেই পড়ে নিতে হবে। কিবলা
মুখে দাঁড়িয়ে, রুকু সিজদা যথা নিয়মে করা সম্ভভ হলে,
তা করতে হবে। নচেৎ বসে ইশারায় রুকু সিজদা করে স্বলাত আদায় করতে
হবে। মহান আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় করে চল।”
(তাগাবুনঃ ১৬)
তিনি ইমারান বিন হুসাইন (রঃ) কে বলেছিলেন, “তুমি দাঁড়িয়ে স্বলাত পড়। না পারলে বসে পড়। তাও না পারলে পার্শ্বদেশে
শুয়ে পড়।” ১৪৯ (বুখারী, আবূ দাঊদ,
আহমাদ, মিশকাত ১২৪৮ নং)
উত্তম হল প্রথম অক্তে স্বলাত পড়ে নেওয়া। অবশ্য
গন্তব্যস্থলে মাটিতে নেমে শেষে অক্তে স্বলাত আদায় করার আশা থাকলে তাও করতে পারে। অনুরূপ
মোটরগাড়ি, ট্রেন ও পানিজাহাজে স্বলাতের সময় হলে একই নিয়ম। ১৫০
(ইবনে বায)
উত্তরঃ যে মসজিদে কবর আছে, সে মসজিদে স্বলাত শুদ্ধ নয়,
চাহে সে কবর স্বলাতীদের পিছনে বা সামনে, ডানে বা বামে হোক। যেহেতু নবী (ﷺ) বলেছেন, “ইয়াহুদী খ্রিস্টানদের উপর
আল্লাহর অভিশাপ, কারণ তাঁরা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ
বানিয়ে নিয়েছে।” ১৫১ (বুখারী ১৩৩০, মুসলিম ৫২৯ নং)
তিনি আরো বলেছেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও নেক লোকেদের কবরকে
মসজিদ বানিয়ে নিত। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়ো না। এরূপ করতে আমি
তোমাদেরকে নিষেধ করেছি।” ১৫২ (মুসলিম ৫৩২নং)
আর যেহেতু কবরের ধারে পাশে স্বলাত পড়া শিরকের
অন্যতম অসীলা এবং তাতে থাকে কবরস্থ ব্যক্তিকে নিয়ে অতিরঞ্জন, সেহেতু উক্ত হাদীসদ্বয় এবং অনুরূপ আরো অন্যান্য হাদীসের উপর আমল করে
শিরকের ছিদ্রপথ বন্ধ করার লক্ষ্যে কবরযুক্ত মসজিদে স্বলাত নিষিদ্ধ হওয়া আবশ্যক।
১৫৩ (ইবা)
উত্তরঃ তাদের জন্য বৈধ নয় ঘরে স্বলাত পড়া। বরং তাদের জন্য ওয়াজেব হল, মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাআত সহকারে স্বলাত আদায় করা। যেহেতু মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি আযান শোনা সত্ত্বেও মসজিদে জামাআতে এসে স্বলাত আদায় করে না,
কোন ওজর না থাকলে সে ব্যক্তির স্বলাত কবুল হয় না।” ১৫৪ (আবূ দাঊদ ৫৫১, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান, হাকেম, সঃ জামে ৬৩০০ নং)
একটি অন্ধ লোক নবী (ﷺ)এর নিকট এসে নিবেদন করল, “হে আল্লাহর রাসুল! আমার কোন পরিচালক নেই, যে
আমাকে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে।” সুতরাং সে নিজে বাড়িতে
স্বলাত পড়ার জন্য আল্লাহর রাসুল (ﷺ) এর নিকট অনুমতি
চাইল। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন। কিন্তু যখন সে পিঠ ঘুরিয়ে রওনা দিল, তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, “তুমি কি আহবান
(আযান)শুনতে পাও?” সে বলল, ‘জি
হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, “ তাহলে
তুমি সাড়া দাও।” (অর্থাৎ মসজিদেই এসে স্বলাত পড়।) ১৫৫
(মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন আছে। আমার ইচ্ছা হচ্ছে যে,
জ্বালানী কাঠ জমা করার আদেশ দিই। তারপর স্বলাতের জন্য আযান
দেওয়ার আদেশ দিই। তারপর কোন লোককে লোকেদের ইমামতি করতে আদেশ দিই। তারপর আমি স্বয়ং
সেই সব (পুরুষ) লোকদের কাছে যাই (যারা মসজিদে স্বলাত পড়তে আসেনি)এবং তাঁদেরকে সহ
তাদের ঘর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিই।”১৫৬ (বুখারী ও মুসলিম)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রঃ) বলেন, “ যাকে এ কথা আনন্দ দেয় যে, সে কাল কিয়ামতের দিন
আল্লাহর সঙ্গে মুসলিম হয়ে সাক্ষাৎ করবে, তাঁর উচিত,
সে যেন এই স্বলাতসমূহ আদায়ের প্রতি যত্ন রাখে, যেখানে তাঁর জন্য আযান দেওয়া হয় (অর্থাৎ মসজিদে)। কেননা, মহান আল্লাহ তোমাদের নবী (ﷺ) এর নিমিত্তে
হিদায়াতের পন্থা নির্ধারণ করেছেন। আর নিশ্চয় এই স্বলাতসমূহ হিদায়েতের অন্যতম পন্থা
ও উপায়। যদি তোমরা (ফরয) স্বলাত নিজেদের ঘরেই পর, যেমন এই পিছিয়ে থাকা লোক নিজ ঘরে স্বলাত পড়ে, তাহলে
তোমরা তোমাদের নবীর তরীকা পরিহার করবে। আর (মনে রেখো) যদি তোমরা তোমাদের নবীর
তরীকা পরিহার কর, তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরা পথহারা হয়ে
যাবে। আমি তোমাদের লোকেদের এই পরিস্থিতি দেখেছি যে, স্বলাত
(জামাতসহ পড়া) থেকে কেবল সেই মুনাফিক (কপট মুসলিম) পিছিয়ে থাকে, যে প্রকাশ্য মুনাফিক। আর (দেখেছি যে, পীড়িত)ব্যক্তিকে
দুজনের (কাঁধের) উপর ভর দিয়ে নিয়ে এসে (স্বলাতের)সারিতে দাঁড় করানো হতো।” ১৫৭ (মুসলিম)
উত্তরঃ যে কাপড় পড়া সত্ত্বেও পুরুষদের নাভির নিচে থেকে হাঁটু পর্যন্ত কোন অংশ খোলা
থাকে অথবা আবছা দেখা যায়, সে কাপড়ে স্বলাত শুদ্ধ হয় না।
অনুরূপ যে শাড়ি বা ওড়নায় মহিলার মাথার চুল, ঘাড়, হাতের রলা, পেট বা পিঠের অংশ খোলা থাকে অথবা
আবছা দেখা যায়, তাতে স্বলাত হয় না। স্বলাতে সতর ঢাকা
জরুরী। তা খোলা গেলে স্বলাত ঘোলা হয়ে যাবে।
উত্তরঃ যে লেবাস পরার পরেও ভিতরের চামড়া ও চুল নজরে আসে, সে লেবাস পরে স্বলাত শুদ্ধ হবে না। ১৫৮(ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি (কাঁচা) রসুন বা পিঁয়াজ খায়, সে
যেন আমাদের নিকট থেকে দূরে অবস্থান করে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে।”
১৫৯ (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যে, “যে ব্যক্তি (কাঁচা) পিঁয়াজ রসুন ও লীক পাতা খায়, সে যেন অবশ্যই আমাদের মসজিদের নিকটবর্তী না হয়। কেননা, ফিরিশতাগণ সেই জিনিসে কষ্ট পান, যাতে আদম
সন্তান কষ্ট পায়।”
কাঁচা পিঁয়াজ রসুন লীক পাতা স্বলাতের আগে খাওয়া
উচিত নয়। খেতে বাধ্য হলে এবং মুখ এর গন্ধ দূরীভূত না করতে পারলে জামাআতে শামিল
হওয়া বৈধ নয়। তবে একাকী ও জামা আতে স্বলাত পড়লে স্বলাত শুদ্ধ হয়ে যায়। অনুরূপ বিড়ি
সিগারেট খাওয়ার ফলে মুখ বা লেবাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।তা খাওয়া হারাম এবং তাঁর
দুর্গন্ধ নিয়ে মসজিদে বা জামাআতে আসাও অবৈধ। একই ভাবে যাঁদের গায়ে কোন প্রকারের
দুর্গন্ধ আছে, তাদের জন্য জামাআতে উপস্থিত
হওয়া মাকরূহ। সকলের জন্য জরুরী, সকল প্রকার দুর্গন্ধমুক্ত
হয়ে জামাআতে উপস্থিত হওয়া। ১৬০ (ইবনে বায)
✔ ১২০ প্রশ্নঃ মহল্লা বা গ্রাম এর মসজিদ ছেড়ে অন্য মহল্লা বা
গ্রাম এর মসজিদে জুমআহ বা তারাবীহ ইত্যাদি স্বলাত পড়তে যাওয়া বৈধ কি? তাতে উদ্দেশ্য থাকে ভাল খতীবের ভাল বক্তব্য শোনা এবং সুমধুর
কণ্ঠবিশিষ্ট ক্বারি ইমামের কুরআন শুনে উপকৃত হওয়া। সাইকেল বা গাড়িযোগে গেলে কি তা
হাদিসে বর্ণিত নিষেধের আওতায় পড়ে, যাতে বলা হয়েছে,
“তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও সফর করা যাবে না; মদিনা শরীফের মসজিদে নববী, মাসজিদুল হারাম (কা’বা শরীফ)ও মসজিদে আকসা (প্যালেষ্টাইনের জেরুজালেমের মসজিদ)।” ১৬১ (বুখারী ১৯৯৫, মুসলিম ১৩৯৭ নং)
উত্তরঃ না। উক্ত সফর নিষিদ্ধ সফরের পর্যায়ভুক্ত নয়। কারণ মসজিদের বরকতলাভের
উদ্দেশ্যে সে সফর করা হয় না।বরং উক্ত সফর ইলম তলবের সফর হিসেবে পরিগণিত। আর ইলমে
তলবের জন্য সফর নিষিদ্ধ নয়। সলফে সালেহীন ইলম তলবের জন্য দূর দূরান্তের পথ সফর
করেছেন। আর মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি এমন পথ অবলম্বন করে চলে, যাতে সে
ইলম (শরয়ী জ্ঞান) অন্বেষণ করে, আল্লাহ তাঁর বিনিময়ে তাঁর
জন্য জান্নাতে যাওয়ার পথ সহজ করে দেন।” ১৬২ (মুসলিম ২৬৯৯
নং, আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে
হিব্বান, হাকেম।)
উত্তরঃ তারাবীহর স্বলাতের দুই বা চার রাকাআত পড়ে অথবা সবশেষে পঠনীয় নির্দিষ্ট কোন
দুআ দরূদ নেই। এ স্থলে নির্দিষ্ট কোন দুআ বা দরূদ সশব্দে বা নিঃশব্দে, একাকী বা সমবেত সুরে পড়লে বিদআত বলে পরিগণিত হবে। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কথা উদ্ভাবন
করল---যা তাঁর মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।” ১৬৩ (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “যে ব্যক্তি এমন কাজ করল, যে ব্যাপারে আমাদের
নির্দেশ নেই তা বর্জনীয়।”
✔ ১২২ প্রশ্নঃ ফজরের আযানের পূর্বে মাইকে কুরআন, দুআ (বা গজল) পড়া, অনুরূপ জুমআর খুতবার পূর্বে
ক্বারীর কুরআন পড়া (বা কারো বক্তৃতা করা) কি শরীয়তসম্মত?
উত্তরঃ না। এমন কাজ শরীয়তসম্মত নয়। কুরআন পড়া ভাল কাজ হলেও উক্ত সময়ে পড়া বিদআত
হবে। কারণ, তাঁর কোন দলীল নেই। কাজ ভাল বলেই তা শরীয়ত কর্তৃক
নির্ধারিত সময়, পরিমাণ বা পদ্ধতির বাইরে তা করলে বিদআত
হয়। পক্ষান্তরে কাজ খারাপ হলে তো তাকে ‘হারাম’ বলা হয়। পরন্ত বিদআতের ‘ভাল-মন্দ’ (হাসানাহ-সাইয়িআহ) বলে কোন প্রকার নেই। যেহেতু ‘কুল্লু বিদআতিন য্বালালাহ’। অর্থাৎ প্রত্যেকটি
বিদআতই ভ্রষ্টতা। ১৬৪ (লাজনাহ দায়েমাহ)
✔ ১২৩ প্রশ্নঃ জামাআত চলাকালে ইমাম রুকূ অবস্থায় থাকলে অনেক
স্বলাতী বিভিন্ন আচরণের মাধ্যমে রুকুতে দেরি করতে বলে। যাতে সে রুকু বা রাকআত পেয়ে
যায়। কেউ দৌড়ে আসে, কেউ সজোরে পদক্ষেপ করে,
কেউ গলা-সারা দেয়, কেউ ‘ইন্নাল্লাহা মাআস স্বাবেরীন’ বলে। শরীয়তের
দৃস্টিতে এমন কাজ বৈধ কি?
উত্তরঃ তাদের এমন কাজ বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (ﷺ) বলেন, “স্বলাতের ইকামত হয়ে গেলে তোমরা দৌড়ে এসো না। বরং তোমরা স্বাভাবিকভাবে
চলে এসো। আর তোমাদের মাঝে যেন স্থিরতা থাকে। অতঃপর যেটুকু স্বলাত পাও, তা পড়ে নাও এবং যা ছুটে যায়, তা পুরা করে নাও।”
১৬৫ (বুখারী ৬৩৫, মুসলিম ৬০২ নং)
আভাষে-ইঙ্গিতে ইমামকে অপেক্ষা করতে বলায় রয়েছে
বেআদবি। তাতে সকল স্বলাতীর ডিস্টার্ব হয় এবং তাদের মনোযোগ ও বিনয় বিনষ্ট হয়ে যায়।
১৬৬ (ইবনে জিবরীন)
উত্তরঃ এতটুকু সময় অপেক্ষা করা বৈধ, যাতে
স্বলাতরত স্বলাতীদের মনে বিরক্তি না আসে। কারণ বাইরে থেকে আগন্তক ব্যক্তি অপেক্ষা
তাদের অবস্থার খেয়াল রাখা অধিক জরুরী। বিশেষ করে শেষ রাকাআতে রুকু পাইয়ে দেওয়ায়
লাভ এই হয় যে, তাঁর স্বলাত ও জামাআত পাওয়া হয়ে যায়। নবী (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি স্বলাতের এক রাকাআত পেল, সে স্বলাত
পেয়ে গেল।” ১৬৭ (বুখারী ৫৮০, মুসলিম
৬০৭ নং)
অনুরূপ শেষ তাশাহহুদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কিঞ্চিৎ
দেরি করায় দোষ নেই। ১৬৮ (ইবনে বায)
উত্তরঃ প্রত্যেক বিষয়ের ব্যাতিক্রম অবস্থা থাকে। রুকু পেলে রাকাআত গণ্য হওয়ার
ব্যাপারটাও সেই রকম। কিয়াম স্বলাতের রুকন। কিন্তু অসুবিধার ক্ষেত্রে কিয়াম ছাড়া
স্বলাত হয়ে যায়। আবূ বাকরাহ (রঃ) একদা মসজিদে প্রবেশ করতেই দেখলেন, নবী (ﷺ) রুকুতে চলে
গেছেন। তিনি তারাহুড়ো করে কাতারে শামিল হওয়ার আগেই রুকু করলেন। অতঃপর রুকুর
অবস্থায় চলতে চলতে কাতারে গিয়ে শামিল হলেন। এ কথা নবী (ﷺ) কে বলা হলে তিনি
তাঁর উদ্দেশ্যে বললেন, “আল্লাহ তোমার আগ্রহ আর বৃদ্ধি
করুক। আর তুমি দ্বিতীয় বার এমনটি করো না। (অথবা আর তুমি ছুটে এসো না। অথবা তুমি
স্বলাত ফিরিয়ে পড়ো না।)” ১৬৯ (বুখারী, আবূ দাঊদ, মিশকাত ১১১০ নং )
✔ ১২৬ প্রশ্নঃ স্বলাত ছুটে গেলে কাযা পড়ব কখন? আগামী ওয়াক্ত বা আগামী দিনের ঐ স্বলাতের সময় পর্যন্ত কি পিছিয়ে দেওয়া চলে?
উত্তরঃ আগামীতে যখনই সময় পাওয়া যাবে, তখনই তা
পড়ে নিতে হবে। নিষিদ্ধ সময়েও তা পড়া যাবে। আগামী ওয়াক্ত পর্যন্ত বিলম্ব করা যাবে
না। মহানবী (ﷺ) বলেন, “নিদ্রা অবস্থায় কোন শৈথিল্য নেই। শৈথিল্য তো জাগ্রত অবস্থায় হয়। সুতরাং
যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোন স্বলাত পড়তে ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তাঁর উচিত, স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে
নেওয়া।” কেননা, আল্লাহ তাআলা
বলেন, “আর আমাকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে তুমি স্বলাত কায়েম
কর।” ১৭০ (ত্বহাঃ ১৪, মুসলিম,
মিশকাত ৬০৪ নং)
✔ ১২৭ প্রশ্নঃ স্বলাত কাযা রেখে মারা গেলে অনেক হিসাব করে ছেড়ে
দেওয়া স্বলাতের ‘কাফফারা’ আদায় করে, তা কি বিধেয়?
উত্তরঃ রোগী ব্যক্তির জন্য স্বলাত মাফ নয়। যতক্ষণ জ্ঞান থাকে, ততক্ষণ তাকে স্বলাত পড়তে হবে। ছুটে গেলে কাযা পড়ে নিতে হবে। এটাই তাঁর
কাফফারা। মহানবী(ﷺ) বলেছেন, “যখন কেউ কোন স্বলাত পড়তে ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তাঁর কাফফারা হল স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেওয়া।” অন্য এক বর্ণনায় আছে, “(এই কাযা আদায় করা
ছাড়া) এর জন্য আর অন্য কোন কাফফারা নেই।”
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত স্বলাত ছেড়ে মারা
গেছে, তাঁর তরফ থেকে চাল বা টাকার কাফফারা আদায় করলেও কোন
কাজের নয়। কাজের নয় তাঁর নামে দান খয়রাত বা অন্য কোন ঈসালে সওয়াব করা।
উত্তরঃ না। কারণ স্বলাতে নায়েবি চলে না। কেউ আদায় করে দিলেও তা উপকারী হবে না। ১৭২
(লাজনাহ দায়েমাহ)আর সে ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃত স্বলাত ত্যাগ না করে থাকে, তাহলে কোন ক্ষতি হবে না।
উত্তরঃ সামনে আগুন রেখে স্বলাত পড়তে উলামাগন নিষেধ করেন। কারণ তাতে অগ্নিপূজকদের
সাদৃশ্য সাধন হয়। পক্ষান্তরে জলন্ত কেরোসিন বা মোমবাতি, ইলেকট্রিক বাল্ব বা হিটার অথবা ধূপ ইত্যাদি সামনে থাকলে স্বলাত পড়া
অবৈধ নয়। কারণ অগ্নিপূজকরা এভাবে অগ্নিপুজা করে না এবং সে সব জ্বলন্ত জিনিস তা’যীমের জন্যও সামনে রাখা হয় না। ১৭৩ (ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ যে ইমাম শুদ্ধভাবে কুরআন পড়তে পারে না এবং এমনভাবে কুরআন পড়ে, যাতে তাঁর মানেই বদলে যায়, সে ইমামের পিছনে
স্বলাত শুদ্ধ নয়। বিশেষ করে সেই জামা আতে যদি শুদ্ধ করে কুরআন পরার মতো কোন লোক
থাকে। ১৭৪ ((ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ না। সুতরাং তাঁর সামনে দিয়ে পার হওয়া বৈধ নয় এবং কেউ পার হতে চাইলে তাঁর
বাধা দেওয়া জরুরী। ১৭৫ ((ইবনে উষাইমীন)
উত্তরঃ এ ব্যাপারে একটি সাধারণ নীতি হলঃ যার নিজের স্বলাত শুদ্ধ, তার পিছনে স্বলাত শুদ্ধ। কাফের বা মুশারিকের স্বলাত শুদ্ধ নয়, তার পিছনে স্বলাত শুদ্ধ নয়। ফাসেকের স্বলাত শুদ্ধ, তার পিছনে স্বলাত শুদ্ধ। তবে তাকে ইমাম বানানো উচিত নয়। ১৭৬ ((ইবনে
উষাইমীন) সুতরাং যে ইমাম দাড়ি চাঁছে বা ছোট করে ছাঁটে, গাঁটের
নিচে কাপড় ঝোলায়, বিড়ি-সিগারেট খায়, ব্যাংকের সুদ খায়, বউ-বেটিকে শরয়ী পর্দা করে
না, কোন অবৈধ মেয়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে, মিথ্যা বলে, গীবত করে, অথবা আরো কোন কাবীরা গোনাহর কাজ করে, তার
পিছনে স্বলাত হয়ে যাবে। তবে এমন লোককে ইমাম বানানো উচিত নয় জামাআতের। কিন্তু
জামাআতের মধ্যে সেই যদি সবার চাইতে ভাল লোক হয়, তাহলে ‘যেমন হাঁড়ি তেমনি শরা, যেমন নদী তেমনি চরা।’
✔ ১৩৩ প্রশ্নঃ স্বলাত পড়তে দাঁড়ানোর পর যদি বাসার কলিং বেল
বারবার বেজে ওঠে এবং বাসায় ঐ স্বলাতী ছাড়া অন্য কেউ না থাকে, তাহলে সে কী করতে পারে?
উত্তরঃ নফল স্বলাত হলে তো সহজ। কিন্তু ফরয স্বলাত হলে পুরুষ ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে এবং মহিলা হাতের চেটো
দ্বারা শব্দ করে জানিয়ে দেবে যে, সে স্বলাত পড়ছে। তাতেও
যদি বেল বেজেই যায় এবং বুঝতে পারে আগন্তক বা ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে স্বলাত ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে এসে পুনরায় স্বলাত শুরু করবে। ১৭৭
(ইবনে বায)
✔ ১৩৪ প্রশ্নঃ যোহরের স্বলাত পড়ার কিছু পরে আমার স্মরণ হল, আমি তিন রাকআত স্বলাত পড়েছি। এখন আমি কি করব? আর
এক রাকাআত পোঁরে নিয়ে নিয়মিত সহু সিজদা করব, নাকি পুনরায়
নতুন করে চার রাকাআত পড়ব?
উত্তরঃ অল্প সময় (যেমন পাঁচ মিনিটের) ভিতরে মনে পড়লে এবং তখনও মসজিদে অথবা নিজ
মুসাল্লায় থাকলে আরও এক রাকাআত পরে নিয়মিত সহু সিজদা করে নেবেন। পক্ষান্তরে সময়
লম্বা হয়ে গেলে এবং মসজিদ অথবা মুসাল্লা ছেড়ে চলে গেলে পুনরায় নতুন করে চার রাকাআত
পড়বেন। যেহেতু তখন রাকাআতগুলির ধারাবাহিকতা বিছিন্ন হয়ে যায়। ১৭৮(ইবনে জিবরীন)
উত্তরঃ প্রাণী, মূর্তি, ত্রিশূল, ক্রুশ ইত্যাদির ছবিযুক্ত অথবা
বিভিন্ন লেখাযুক্ত পোশাক পরে স্বলাত বৈধ নয়। এমন ছবিযুক্ত পোশাক পরে স্বলাত বৈধ নয়,
যাতে নিজের অথবা অপরের দৃষ্টি ও মন আকৃষ্ট হয়। ১৭৯ (ইবনে জিবরীন)
উত্তরঃ একা স্বলাতীর জন্য ইকামত দেওয়া জরুরী নয়। যেমন জেহরী স্বলাত সশব্দে কিরাআত
পড়াও জরুরী নয়। এ শুধু জামাআতের স্বলাতের ক্ষেত্রে জরুরী। ১৮০ (ইবনে জিবরীন)
✔ ১৩৭ প্রশ্নঃ অনেক সময় একা দাঁড়িয়ে স্বলাত পড়ি, তখন কেউ এসে আমার ডান পাশে দাঁড়িয়ে গেলে আমার কী করা উচিত?
উত্তরঃ ইমামতির নিয়ত করে সশব্দে তকবীর বলা এবং জেহরী স্বলাত হলে সশব্দে কিরাআত করা
উচিত। কেউ বাম দিকে দাঁড়িয়ে গেলে তাকে ডান দিকে করে নেওয়া উচিত। এমনটি করেছিল
রাসুল (ﷺ) ইবনে আব্বাসের
সাথে। ১৮১ (বুখারী ১১৭, মুসলিম ৭৬৩ নং)
এ ক্ষেত্রে আপনি সুন্নত আর সে ফরয পড়লে অথবা এর
বিপরীত হলেও কোন ক্ষতি হবে না। মুআয বিন জাবাল (রঃ) মহানবী (ﷺ) এর সাথে তাঁর
মসজিদে (নবাবীতে) স্বলাত পড়তেন। অতঃপর নিজ গোত্রে ফিরে এসে ঐ স্বলাতেরই ইমামতি
করতেন।১৮২ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১১৫০ নং)পরবর্তী ইমামতির স্বলাতটি তাঁর নফল হত। অনুরূপ পূর্বে
স্বলাত পড়ে পুনরায় মসজিদে এলে এবং সেখানে জামাআত চলতে থাকলে সে স্বলাতও নফল স্বরূপ
পড়তে বলা হয়েছে। ১৮৩ (আবূ দাঊদ ৫৭৫, তিরমিযী ২১৯, নাসাঈ, মিশকাত ১১৫২, সঃ
জামে ৬৬৭ নং)
মহানবী (ﷺ) একদা এক
ব্যক্তিকে একাকী স্বলাত পড়তে দেখলেন তিনি অন্যান্য সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেন, “এমন কেউ কি নেই, যে এর সাথে স্বলাত পড়ে একে
(জামাআতের সওয়াব) ডান করে?” এ কথা শুনে এক ব্যক্তি উঠে
তাঁর সাথে স্বলাত পড়ল। ১৮৪ (আবূ দাঊদ ৫৭৪, তিরমিযী,
মিশকাত ১১৪৬ নং)অথচ সে মহানবী (ﷺ) এর সাথে ঐ
স্বলাত পূর্বে পড়েছিল।
উত্তরঃ সেখানকার অধিকাংশ উলামা মনে করেন, তা
সুন্নত নয়। কারণ নবী (ﷺ) এর স্বলাত
পদ্ধতির অধিকাংশ হাদীসে তা বর্ণিত হয়নি। কেবল মালেক বিন হুয়াইরিসের একটিমাত্র
হাদিসে তা বর্ণিত হয়েছে। ১৮৫ (বুখারী ৮১৮ নং) আর তাঁর মনে করেন, নবী (ﷺ) বার্ধক্য অথবা
অন্য কারণে উক্ত (দ্বিতীয় বা চতুর্থ রাকাআতে ওঠার পূর্বে)বৈঠকে বসেছেন। তবে সঠিক
এই যে উক্ত ‘জালসাহ’ সর্বদা মুস্তাহাব। আর অন্য বর্ণনায় উল্লেখ না হওয়া এ কথার দলীল নয় যে,
তা সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। যেহেতু নবী (ﷺ) যে কাজ করেন, সাধারণতঃ তা অনুসরনীয় তারিকা হিসেবেই করেন। তাছাড়া আবূ হুমাইদ সায়েদীর
হাদীসেও উক্ত জালসার কথা উল্লেখ হয়েছে। তিনি দশজন সাহাবীর সামনে ঐ জলসাহ করে নবী (ﷺ) এর স্বলাতের
পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন এবং সকলেই তা সমর্থন করেছেন। ১৮৬(আহমাদ ৫/৪২৪, আবূ দাঊদ ৭০৩ নং)(লাজনাহ দায়েমাহ)
✔ ১৩৯ প্রশ্নঃ অধিকাংশ বাঙ্গালী মহিলারা শাড়ি পড়ে স্বলাত পড়ে।
তাতে অনেক সময় তাঁর হাতের বাজু বের হয়ে যায়। সুতরাং তাঁর স্বলাত কি শুদ্ধ হবে?
উত্তরঃ সামনে কোন বেগানা পুরুষ না থাকলে মহিলা তাঁর স্বলাতে কেবল চেহারা ও কব্জি
পর্যন্ত দুই হাত বের করে রাখবে।এ ছাড়া অন্য কোন অঙ্গ বের হবে গেলে তাঁর স্বলাত
বাতিল হয়ে যাবে। তা ফিরিয়ে পড়তে হবে। এমনকি পায়ের পাতাও বের হয়ে গেলে স্বলাত শুদ্ধ
হবে নয়।১৮৭ (ইবাঃ)
উত্তরঃ যোহরের পূর্বে ও পরে এবং আসরের পূর্বে ৪ রাকাআত সুন্নত ২ রাকাআত করে পড়ে
সালাম ফিরা উত্তম। কারণ মহানবী (ﷺ) বলেন, “রাত ও দিনের স্বলাত দুই রাকাআত করে।” ১৮৮ (আবূ
দাঊদ) তবে একটানা ৪ রাকাআত এক সালামেও পড়া বৈধ। মহানবী (ﷺ) বলেন, “ যোহরের পূর্বে ৪ রাকাআত; (যার মাঝে কোন সালাম
নেই,) তাঁর জন্য আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়।”
১৮৯ (আমি দাঊদ ১২৭০, ইবনে মাজাহ ১১৫৭,
ইবনে খুযাইমা ১২১৪, সাহীহুল জামে ৮৮৫
নং)
আল্লামা আলবানীর শেষ তাহক্বীকে বন্ধনীর মাঝেই
শব্দগুলি সহীহ নয়। কিন্তু অন্য বর্ণনা দ্বারা ৪ রাকাআত এক সালামে পড়ার সমর্থন
মেলে। আবূ আইয়ুব আনসারী (রঃ) বলেন, নবী (ﷺ) সূর্য ঢলার সময়
৪ রাকাআত স্বলাত প্রত্যহ পড়তেন। একদা আমি বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সূর্য ঢলার সময় এই ৪ রাকাআত প্রত্যহ পড়ছেন?”
তিনি বললেন, “সূর্য ঢলার সময় আসমানের
দরজাসমূহ খোলা হয় এবং যোহরের স্বলাত না পড়া পর্যন্ত বন্ধ করা হয় না। অতএব আমি
পছন্দ করি যে, এই সময় আমার নেক আমল(আকাশে আল্লাহর নিকট)
উঠানো হোক।” আমি বললাম, “তাঁর
প্রত্যেক রাকাআতেই কি কিরাআত আছে?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ।” আমি বললাম, “তাঁর
মাঝে কি পৃথককারী সালাম আছে?” তিনি বললেন, “না।” ১৯০ (মুখতাসারুশ শামাইলিল
মুহাম্মাদিয়্যাহ, আলবানী ২৪৯ নং)
আলী (রঃ) বলেন, “নবী (ﷺ) আসরের পূর্বে ৪
রাকাআত স্বলাত পড়তেন এবং প্রত্যেক দুই রাকাআতে আল্লাহর নিকটবর্তী ফিরিশতা, আম্বিয়া ও তাঁদের আনসারী মুমিন-মুসলিমদের প্রতি সালাম (তাশাহহুদ)দিয়ে
পৃথক করতেন। আর সর্বশেষে সালাম ফিরতেন।” ১৯১ (আহমাদ,
তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, সিঃ সহীহাহ ২৩৭ নং)
✔ ১৪১ প্রশ্নঃ কোন কোন মহিলা ঋতু বন্ধের পরেও গোসল করতে দেরি
করে। অতঃপর যখন গোসল করে, তারপর থেকে স্বলাত পড়তে শুরু
করে। তাঁদের এমন কাজ কি বৈধ? যেমন এক মহিলার আসরের সময়
খুন বন্ধ হল। অতঃপর নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায় থেকে রাত্রে র গোসল করল না। পরদিন
দুপুরে গোসল করে যোহরের স্বলাত পড়ল। গোসল করার পূর্বে যে স্বলাতগুলো ছেড়ে দিল,
সেগুলি কি মাফ?
উত্তরঃ অবশ্যই মাফ নয়। তাঁর উচিত, যথাসময়ে গোসল করে স্বলাত শুরু
করা। কোন বৈধ কারণে যদি গোসল করতে দেরিও হয়, খুন বন্ধ
হওয়ার পর থেকে যে স্বলাত ছুটে গেছে, সেগুলো ক্বাযা পড়তে
হবে। স্বলাত নিজের ইচ্ছামতো পড়ার জিনিস নয়। মিথ্যা ওজর দিয়ে এড়িয়ে গিয়ে সন্মান
বাঁচানোর জিনিস নয়। মহান আল্লাহর কাছে হিসাব লাগবে। মানুষকে ঠকানো গেলেও, তাকে ঠকানো যাবে না। তিনি বলেছেন, “তাঁদের পর
এল অপদার্থ পরবর্তীগন, তাঁরা স্বলাত নষ্ট করল ও
প্রবৃত্তিপরায়ণ হল; সুতরাং তাঁরা অচিরেই অমঙ্গল প্রত্যক্ষ
করবে।”(মারয়্যামঃ ৫৯)
“সুতরাং পরিতাপ সেই স্বলাত আদায়কারীদের জন্য; যারা তাঁদের স্বলাতে অমনোযোগী। যারা লোক প্রদর্শন (করে তা আদায়) করে।”
(মাঊনঃ ৪-৬)
✔ ১৪২ প্রশ্নঃ কিছু স্বলাতী জামাআত শুরু হওয়ার পড়ে আসে। কিন্তু
তাঁরা রাকআত বা রুকু পাওয়ার জন্য দৌড়ে আসে। ফলে তাঁদের পায়ের শব্দে অন্য
স্বলাতীদের বড় ডিস্টার্ব হয়। এ কাজ কি তাঁদের জন্য বৈধ?
উত্তরঃ জামাআতে শামিল হওয়ার জন্য দৌড়ে আসা বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (ﷺ) বলেন, “স্বলাতের ইকামত হয়ে গেলে তোমরা দৌড়ে এসো না। বরং তোমরা স্বাভাবিকভাবেই
চলে এসো। আর তোমাদের মাঝে যেন স্থিরতা থাকে। অতঃপর যেটুকু স্বলাত পাও তা পড়ে নাও
এবং যা ছুটে যায় তা পুরা করে নাও।” ১৯২ (বুখারী ৬৩৬,
মুসলিম ৬০২ নং)
উত্তরঃ কোন কোন স্বলাতী মসজিদে এসে দেখে যে, জামাআত
শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু কিছু মুসবূক (যাঁদের কিছু স্বলাত
ছুটে গেছে তাঁরা) উঠে একাকী স্বলাত পূর্ণ করছে, তাহলে
জামাআতের সওয়াব লাভের আশায় ঐ স্বলাতীর কোন এক মসবূকের ডাইনে তাঁর ইক্তিদা করে
স্বলাত পড়া বৈধ। ১৯৩ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ১/২৬৬)কিন্তু যেহেতু সঠিক প্রমাণ নেই
এবং অনেক এরূপ শুদ্ধ নয় বলেছেন, সেহেতু তা না করাই উত্তম।
আর মহানবী (ﷺ) বলেন, “যে বিষয়ে সন্দেহ আছে সে বিষয় বর্জন করে তাই কর যাতে সন্দেহ নেই।”১৯৪ (তিরমিযী ২৫১৮, সহীহ জামে ৩৩৭৮ নং) “সুতরাং যে সন্দিহান বিষয়াবলী থেকে দূরে থাকবে, সে তাঁর দ্বীন ও ইজ্জতকে বাঁচিয়ে নেবে।” ১৯৫
(বুখারী ৫২, মুসলিম ১৫৯৯ নং)
বলা বাহুল্য, অনেকে তা
জায়েয বললেও না করাটাই উত্তম। ১৯৬ (ফাতাওয়া উষাইমীন ১/৩৭১)
উত্তরঃ একাকী স্বলাতীদের জন্য ইকামত দেওয়া এবং রাতের স্বলাত সশব্দে পড়া জরুরী নয়।
এ কেবল জামাআতের জন্য জরুরী। ১৯৭ (ইবনে জিবরীন)
উত্তরঃ কাতারে জায়গা না পাওয়ার কথা যদি বাস্তব হয় এবং সঙ্গে দাঁড়াবার মতো কাউকে না
পাওয়া যায়, তাহলে একা দাঁড়িয়ে স্বলাত হয়ে যাবে। কাতারের পিছনে একা
দাঁড়িয়ে স্বলাত হবে না তখন, যখন সামনের কাতারে জায়গা খালি
থাকবে। সুতরাং এটি হবে ব্যাতিক্রমধর্মী ব্যাপার। যেহেতু কাতারে কেউ কাউকে টেনে
নেওয়ার হাদীস সহীহ নয়। আর সে টানাতে অনেক স্বলাতীর স্বলাতের একাগ্রতায় ব্যাঘাত
সৃষ্টি করে।১৯৮ (ইবনে উষাইমীন) নাক থেকে রক্ত পড়তে শুরু করলে অথবা উযু নষ্ট হয়ে
গেলে তা বাধ্য হয়ে যেতেই হয়। আর তাঁর ফলে সৃষ্ট ব্যাঘাত সামনে থেকে কাউকে টেনে
নেওয়ার মতো নয়। যেহেতু একটি ব্যাপার বদলীল এবং অপরটি বেদলীল।
✔ ১৪৬ প্রশ্নঃ কাতারের পিছে একা স্বলাতীর স্বলাত হয় না। কিন্তু
আগের কাতারে জায়গা না পেলে কি করবে? সামনে
থেকে কি কাউকে টেনে নেবে?
উত্তরঃ যদি কোন ব্যক্তি জামাআতে এসে দেখে যে, কাতার
পরিপূর্ণ, তাহলে সে কাতারে কোথাও ফাঁক থাকলে সেখানে
প্রবেশ করবে। নচেৎ সামান্যক্ষণ কারো অপেক্ষা করে কেউ এলে তাঁর সাথে কাতার বাধা
উচিত। সে আশা না থাকলে বা জামাআত ছুটার ভয় থাকলে (মিহরাব ছাড়া বাইরে স্বলাত পড়ার
সময়) যদি ইমামের পাশে জায়গা থাকে এবং সেখানে যাওয়া সম্ভভ হয়, তাহলে তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এবং এ সব উপায় থাকতে পিছনে একা দাঁড়াবে
না।
পরন্ত কাতার বাধার জন্য সামনের কাতার থেকে কাউকে
টেনে নেওয়া ঠিক নয়। এ ব্যাপারে যে হাদিস এসেছে তা সহীহ ও শুদ্ধ নয়। ১৯৯ (জয়ীফুল
জামে ২২৬১ নং) তাছাড়াএ কাজে একাধিক ক্ষতিও রয়েছে। যেমন; যে মুসল্লীকে টানা হবে তাঁর স্বলাতের একাগ্রতা নষ্ট হবে, প্রথম কাতারের ফযীলত থেকে বঞ্চিত হবে, কাতারের
মাঝে ফাঁক হয়ে যাবে, সেই ফাঁক বন্ধ করার জন্য পাশের
মুসল্লী সরে আসতে বাধ্য হবে, ফলে তাঁর জায়গা ফাঁক হবে এবং
শেষ পর্যন্ত প্রথম বা সামনের কাতারের ডান অথবা বাম দিককার সকল মুসল্লীকে নড়তে-সরতে
হবে। আর এতে তাঁদের সকলের একাগ্রতা নষ্ট হবে। অবশ্য হাদীস সহীহ হলে এত ক্ষতি
স্বীকার করতে বাধা ছিল না। যেমন নাক থেকে রক্ত পড়তে শুরু হলে কিংবা ওযূ ভেঙ্গে
গেলে কাতার ছেড়ে আসতে বাধা নেই। যেহেতু নবী (ﷺ) বলেন, “যখন তোমাদের কেউ স্বলাতে বেওযূ হয়ে যায়, তখন
সে যেন নাক ধরে স্বলাত ত্যাগ করে বেরিয়ে আসে।” ২০০(আবূ
দাঊদ ১১১৪ নং)
তদনুরূপ ইমামের পাশে যেতেও যদি অনুরূপ ক্ষতির
শিকার হতে হয়, তাহলে তাও করা যাবে না।
ঠিক তদ্রূপই জায়গা না থাকলেও কাতারের মুসল্লীদেরকে
এক এক করে ঠেলে অথবা সরে যেতে ইঙ্গিত করে জায়গা করে নওয়াতেও ঐ মুসল্লীদের স্বলাতের
একাগ্রতায় বড় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। সুতরাং এ কাজও বৈধ নয়।
বলা বাহুল্য, এ
ব্যাপারে সঠিক ফয়সালা এই যে, সামানে কাতারে জায়গা না পেলে
পিছনে একা দাড়িয়েই স্বলাত হয়ে যাবে। কারণ, সে নিরুপায়। আর
মহান আল্লাহ কাউকে তাঁর সাধ্যের বাইরে ভার দেন না। ২০১ (লিক্বাউ বাবিল মাফতূহ ২২৭
পৃঃ)
প্রকাশ থাকে যে, মহিলা জামাআতের মহিলা কাতারে জায়গা থাকতে যে মহিলা পিছনে একা দাঁড়িয়ে
স্বলাত পড়বে তারও স্বলাত পুরুষের মতই হবে না। ২০২ (মুমতে ৪/৩৮৭)পক্ষান্তরে
পুরুষদের পিছনে একা দাঁড়িয়ে মহিলার স্বলাত হয়ে যাবে।
উত্তরঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন ইবাদতে অন্য কোন সৃষ্টিকে শরীক করে, যেমন মাযার পূজা করে, মাযারে গিয়ে সিদজা,
নযর-নিয়ায, মানত, কুরবানি, তাওয়াফ প্রভৃতি নিবেদন করে, যে ব্যক্তি গায়েবী (অদৃশ্যের খবর জানার) দাবি করে ও লোকেরা হাত বা
ভাগ্য-ভবিষ্যৎ বলে দেয়, যে (কোন পশু বা পাখীর চামড়া,
হাড়, লোম বা পালক দিয়ে, কোন গাছপালার শিকড় বা ফুল-পাতা দিয়ে, কারো
কাপড়ের কোন অংশ দিয়ে, ফিরিশতা, জিন,
নবী, সাহাবী, অলী
বা শয়তানের নাম লিখে অথবা বিভিন্ন সংখ্যার নকশা বানিয়ে, অথবা
তেলেসমাতি বিভিন্ন কারসাজি করে, নোংরা ও নাপাক কোন জিনিস
দিয়ে)শিরক তাবীয লিখে, যে ব্যক্তি দুই জনের মাঝে (বিশেষ
করে স্বামী স্ত্রীর মাঝে) প্রেম বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করার জন্য তাবীয করে, যোগ বা যাদু করে, ঐ শ্রেণীর ইমামের স্বলাত
সুদ্ধ নয়, ইমামতি সুদ্ধ নয় এবং তাঁর পশ্চাতে নামাজও সুদ্ধ
নয়। ২০৩(মাজাল্লাতুল বুহূষ ১৯/১৫৯,২২/৮২, ২৪/৭৮, ৮৯,২৬/৯৭,২৮/৫৫)
তদনুরূপ বিদআতী যদি বিদআতে মুফাফফিরাহ বা এমন
বিদআত করে যাতে মানুষ কাফের হয়ে যায়, তাহলে সে
বিদআতীর পিছনে স্বলাত সুদ্ধ নয়।
উত্তরঃ ফাসেক হল সেই ব্যক্তি, যে অবৈধ, হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ করে এবং ফরয বা ওয়াজেব কাজ ত্যাগ করে; অর্থাৎ কবীরা গুনাহ করে। যেমন, ধূমপান করে,
বিড়ি-সিগারেট খায়, জর্দা-তামাক প্রভৃতি
মাদকদ্রব্য ব্যবহার করে, গাঁটের নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে,
অথবা সূদ বা ঘুস খায়, অথবা মিথ্যা বলে,
অথবা (অবৈধ প্রেম) ব্যাভিচার করে, অথবা
দাড়ি চাঁছে বা (এক মুঠির কম) ছেঁটে ফেলে, অথবা মুশারিকদের
যবেহ (হালাল মনে না করে) খায়, (হালাল মনে করে খেলে তাঁর
পিছনে স্বলাত হবে না।) অথবা স্ত্রী কন্যাকে বেপর্দা রেখে তাঁদের ব্যাপারে ঈর্ষাহীন
হয়, অথবা মা বাপকে দেখে না বা তাঁদেরকে ভাত দেয় না
ইত্যাদি।
উক্ত সকল ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুরূপ অন্যান্য
ব্যক্তির পিছনে স্বলাত মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। বিধায় তাকে ইমামরূপে নির্বাচন ও নিয়োগ
করা বৈধ ও উচিত নয়।
কিন্তু যদি কোন কারণে বা চাপে পরে বাধ্য হয়েই তাঁর
পিছনে স্বলাত পড়তেই হয়, তাহলে স্বলাত হয়ে যাবে।২০৪
(মাজাল্লাতুল বুহূষিল ইসলামীয়্যাহ ৫/২৯০, ৩০০, ৬/২৫১, ১৫/৮০, ১৮/৯০,
১১১, ১৯/১৫২, ২২/৭৫,
৭৭, ৯২, ২৪/৭৮)
সাহাবাগণের যামানায় সাহাবাগণ ফাসেকের পিছনে স্বলাত
পরেছেন। আব্দুল্লাহ বিন উমার (রঃ) হাজ্জাজ্জের পিছনে স্বলাত পড়েছেন। ২০৫
(বুখারী)আবূ সাঈদ খুদরী (রঃ) মারওআনের পিছনে স্বলাত পড়েছেন। ২০৬ (মুসলিম, আবূ দাঊদ, তিরমিযী)
দ্বিতীয় খলীফা উষামান (রঃ) ফিতনার সময় যখন স্বগৃহে
অবরুদ্ধ ছিলেন, তখন উবাইদুল্লাহ বিন আদী বিন
খিয়ার তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘আপনি জনসাধারণের
ইমাম। আর আপনার উপর যে বিপদ এসেছে, তা তো দেখতেই পাচ্ছেন।
ফিতনার ইমাম আমাদের স্বলাতের ইমামতি করছে; অথচ তাঁর
পশ্চাতে স্বলাত পড়তে আমারা দ্বিধাবোধ করি।’ তিনি বললেন,
“ স্বলাত হল মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। সুতরাং লোকে ভাল ব্যবহার
করলে তাঁদের সাথেও ভাল ব্যবহার কর। আর মন্দ ব্যবহার করলে তাঁদের সাথে মন্দ ব্যবহার
করা থেকে দূরে থাক।” ২০৭ (বুখারী ৬৯৫, মিশকাত ৬২৩ নং)
✔ ১৪৯ প্রশ্নঃ আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব ফজরের আযানের পূর্বে
মাইকে কুরআন পাঠ করেন, কিছু দুআ-দরুদ পড়েন, তারপর আযান দেন, এটা কি শরীয়তসম্মত?
উত্তরঃ ফজরের আযানের পূর্বে মাইকে কুরআন পাঠ করা, কিছু দুআ-দরূদ পড়া, তারপর আযান দেওয়া
শরীয়তসম্মত নয়, বরং তা বিদআত। ২০৮ (লাজনাহ দায়েমাহ)
✔ ১৫০ প্রশ্নঃ জুমআর দিন মিম্বরে চড়ে খতীবের খুতবা দেওয়ার পূর্বে
একজন ক্বারি কুরআন তিলাওয়াত করে(অথবা বক্তৃতা করে) শোনায়। এটা কি শরীয়তসম্মত?
উত্তরঃ এ কাজের কোন দলীল আমাদের জানা নেই। আর মহানবী (ﷺ) বলেনা, “যে ব্যক্তি আমাদের এ (দ্বীন) ব্যাপারে নতুন কিছু আবিষ্কার করে, সে ব্যক্তির সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।” ২০৯
(বুখারী ও মুসলিম) “যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করে,জার উপর আমাদের কোন নির্দেশ নেই, সে ব্যক্তির
সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।”২১০ (মুসলিম, লাদা)
আমাদের আদর্শ নবী মুহাম্মদ (ﷺ)। তিনি মিম্বারে খুতবা দেওয়ার
আগে নিচে দাঁড়িয়ে খুতবা দেন নি। তিনি উম্মতকে নির্দেশ করে বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমাআর দিন নাপাকির গোসলের ন্যায় গোসল করল এবং (সূর্য ঢলার
সঙ্গে সঙ্গে) প্রথম অক্তে মসজিদে এল, সে যেন একটি উট দান
করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় সময় এল, সে যেন একটি গাভী ডান
করল। যে ব্যক্তি তৃতীয় সময় এল, সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট
দুম্বা দান করল। যে ব্যক্তি চতুর্থ সময়ে এল, সে যেন একটি
মুরগী দান করল। আর যে ব্যক্তি পঞ্চম সময়ে এল, সে যেন একটি
ডিম দান করল। তারপর ইমাম যখন খুতবাহ প্রদানের জন্য বের হন, তখন(লেখক) ফিরিশতাগণ যিকর শোনার জন্য হাজির হয়ে যায়।” ২১১ (বুখারী ও মুসলিম)
তিনি আর বলেছেন, “যে কোন ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল ও সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করল, নিজেস্ব তেল গায়ে লাগায় অথবা নিজ ঘরের সুগন্ধি (আতর) ব্যবহার করে,
অতঃপর (মসজিদে) গিয়ে দুজনের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করেই
(যেখানে স্থান পায় বসে যায়)এবং তাঁর ভাগ্যে যত রাতাআত স্বলাত জোটে, আদায় করে তারপর ইমাম খুতবাহ আরাম্ভ করলে নীরব থাকে, সে ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট জুমাআহ থেকে পরবর্তী জুমআহ পর্যন্ত কৃত সমুদয়
(সাগীরা) গুনাহরাশিকে মাফ করে দেওয়া হয়।” ২১২ (বুখারী)
সুতরাং মসজিদে গিয়ে স্বলাত পড়া কর্তব্য
মুসল্লীদের। অতঃপর ইমাম খুতবা দিলে নীরব হয়ে বসে খুতবা শুনবে। সুতরাং তাঁর আগে
আবার খুতবা শোনার অবসর কোথায়? মিম্বারে খুতবা শুরু হওয়ার আগে
কেউ না কেউ আসতেই থাকবে। সুতরাং তাঁদেরকে স্বলাত পড়তে না দিয়ে লেকচার শুনিয়ে
ডিস্টার্ব করা কীভাবে বৈধ হতে পারে?
অথচ রাসুল (ﷺ) সাহাবাগণকে
সশব্দে কুরআন পড়তে নিষেধ করে বলেন, “তোমরা
একে অপরকে কষ্ট দিয়ো না এবং একে অপরের উপর কিরাআতে শব্দ উঁচু করো না।” ২১৩ (আহমাদ ৩/৯৪, আবূ দাঊদ ১২৩২ নং, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রমুখ)
পরন্ত তিনি জুমাআর দিন স্বলাতের পূর্বে দার্সের
জন্য হালকা বাঁধতে নিষেধও করেছেন। ২১৪ (আবূ দাঊদ ৯৯১, নাসাঈ ৭১৪, ইবনে মাজাহ ১১৩৩ নং)
তাহলে জুমআর খুতবার পূর্বে স্বলাতের সময় অতিরিক্ত
লেকচার কীভাবে বৈধ হতে পারে?
আসলে স্থানীয় ভাষায় খুতবা ‘হারাম’ করে উক্ত ‘লেকচারের
বিদআত’ আবিষ্কৃত হয়েছে।
উত্তরঃ একজন খুতবা দিলে এবং অপরজন ইমামতি করলে কোন দোষের নয়। যেহেতু যিনি খতীব, তিনিই ইমাম হবেন---এমন কোন বাধ্যবাধ্যকতা নেই। অবশ্য উত্তম হল, যিনি খুতবা দেবেন, তিনিই স্বলাত পড়াবেন।
যেহেতু এটাই নবী (ﷺ) এর আমল। ২১৫
(ইবনে বায)আর কোন অসুবিধার কারণ হলে তা কোন প্রশ্নই নেই। যেমন খতীব খুতবায় ভাল, কিন্তু ইমাম ইমামতির বেশি হকদার হলে--- সে ক্ষেত্রেও তাকে ইমামতির জন্য
বাড়িয়ে দিলে সুন্নাহর উপরই আমল হয়।
✔ ১৫২ প্রশ্নঃ অনেক স্বলাতী স্বলাতরত অবস্থায় নাক, দাড়ি বা কাপড় ইত্যাদি নিয়ে খেলা করে। এদের ব্যাপারে কিছু বলার আছে কি?
উত্তরঃ স্বলাতরত অবস্থায় নাক, দাড়ি ইত্যাদি নিয়ে উদাস হওয়া
উচিত নয়। যেহেতু তা স্বলাতের একাগ্রতায় পরিপন্থী। আর মহান আল্লাহ বলেছেন, “অবশ্যই বিশ্বাসীগণ সফলকাম হয়েছে। যারা নিজেদের স্বলাতে বিনয়-নম্র।”(মু’মিনূনঃ ১-২)
উত্তরঃ অনেক উলামার মতে বৈধ নয়। যেহেতু স্বলাত আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ভাষায়, সুতরাং সেই ভাষাতেই দুআ হওয়া উচিত। সে সব কুরাআনী ও হাদীসী দুআ জানা
আছে, তাই পড়া উচিত। যা জানা নেই, তা স্বলাতের বাইরে অন্য সময় নিজের ভাষায় করা উচিত। অনেকে ‘ইচ্ছামত দুআ’ বলতে ‘ইচ্ছামত
ভাষা’য় দুআ বলেছেন। সুতরাং নিজের ভাষায় দুআ করা যাবে।
আমরা বলি, না করাই উচিত। যেহেতু ইবাদত প্রমাণসাপেক্ষ। আর
নবী (ﷺ) এর বানী, “যখন তোমাদের মধ্যে কেউ (শেষ) তাশাহহুদ সম্পন্ন করবে, তখন সে যেন আল্লাহর নিকট চারটি জিনিস থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে। এরপর
সে ইচ্ছামতো দুআ করবে।” এ ব্যাপারে ইমাম আহমাদ
(রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “বর্ণিত ও বিদিত দুআ করবে।”
যেহেতু নিজের ভাষায় দুআ হল সাধারণ মানুষের কথা। আর তা স্বলাতে
বলা বৈধ নয়। ২১৬ (আল-মুগনী ১/৬২০)
উত্তরঃ সিজদায় কুরআনের আয়াত পড়া নিষেধ। কিন্তু মুনাজাতের দুআ হিসেবে পড়লে তাতে দোষ
নেই। ২১৭ (ইবনে ঊষাইমীন) ‘আমাকে সিজদায় কুরআন পড়তে নিষেধ
করা হয়েছে’ যেমনি আম, তেমনি ‘তোমরা সিজদায় বেশি বেশি দুআ কর’ নির্দেশও আম।
তাতে কুরআনী ও হাদিসী সব রকম দুআই করা যাবে। যারকাশী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
“সিজদায় কুরআন পড়া মাকরূহ তখন, যখন
কিরাআতের উদ্দেশ্যে তা পড়া হবে। পক্ষান্তরে তা যদি দুআ অথবা (আল্লাহর) প্রশংসা হিসেবে পড়া
হয়, তাহলে তা কুরআনী আয়াত দিয়ে কুনূত পড়ার মত হওয়া উচিত।”২১৮ (হাশিয়াতু ইবনিল আবেদীন ১/৪৪০, হাশিয়াতুদ
দুসূক্বী আলাশ শারহিল কাবীর ১/২৫৩, মাজমূ ৩/৪১৪)
✔ ১৫৫ প্রশ্নঃ কর্মক্ষেত্রে পানি নেই। বাসায় পানি আছে। স্বলাতের
ওয়াক্ত যাওয়ার আগে বাসায় পৌঁছে যাবে। স্বলাতের সময় হলে তায়াম্মুম করে আওয়াল
ওয়াক্তে স্বলাত
পরে নেবে, নাকি বাসায় ফিরে শেষ ওয়াক্তে উযূ করে স্বলাত
পড়ব?
উত্তরঃ সময় পার হওয়ার আশংকা থাকলে এবং তাঁর আগে পানি না পাওয়ার কথা নিশ্চিত হলে
তায়াম্মুম করে আওয়াল অক্তেই স্বলাত পড়ে নেবেন। পক্ষান্তরে বাসায় ফিরে ওয়াক্ত বাকি
থাকার কথা নিশ্চিত হলে বাসায় ফিরে উযূ করেই স্বলাত পড়বেন।
✔ ১৫৬ প্রশ্নঃ কাঁচা পিঁয়াজ-রসুন খেলে মুখের দুর্গন্ধের ফলে
মসজিদে বা জামাআতে আসা নিষেধ। কিন্তু যাঁদের মুখে প্রাকৃতিকভাবেই দুর্গন্ধ থাকে, তাঁদের জন্যও কি নিষেধ?
উত্তরঃ যাঁদের মুখে প্রাকৃতিকভাবে দুর্গন্ধ থাকে, তাঁদের জন্যও মসজিদে বা জামাআতে আসা নিষেধ বলা যায় না। যেহেতু এটা তাঁর
ইখতিয়ারভুক্ত নয়। ২১৯ (আলবানী)
স্বলাত বিষয়ে প্রশ্নোত্তর
নং
|
স্বলাত বিষয়ে প্রশ্নোত্তর
|
১০৮
|
কাজের চাপে সময় পার করে স্বলাত পিছিয়ে দেয়া কি বৈধ?
|
১০৯
|
আমার রাত্রে শুতে দেরি হয়। ডিউটি শুরু হয় সকাল সাতটা থেকে। ফজর হয় চারটায়।
|
১১০
|
স্বলাতে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা স্বলাতকে ভারী মনে করা কাদের কাজ?
|
১১১
|
দেখেছি, অনেক লোক স্বলাতে সালাম ফিরার পর তাদের ডানে বামের লোকেদের সাথে মুসাফাহাহ করে। এটা কি সুন্নত?
|
১১২
|
জামাআত শেষে অনেক সময় মসজিদে সুন্নত পড়ি। এমন সময় কোন লোক আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমার ইক্তিদা করতে থাকে। এটা কি বৈধ?
|
১১৩
|
কোন ব্যক্তি মসজিদে এসে যদি দেখে যে, ইমাম শেষ তাশাহহুদে আছেন, তাহলে সে কি জামাআতে শামিল হবে,
|
১১৪
|
প্লেনে কীভাবে স্বলাত পড়া যাবে?
|
১১৫
|
যে মসজিদে কবর আছে, সে মসজিদে স্বলাত শুদ্ধ কি?
|
১১৬
|
অনেক স্বলাতী ঘরে স্বলাত পড়ে, মসজিদে আসে না। তাদের ব্যাপারে বিধান কী?
|
১১৭
|
পাতলা কাপড়ে স্বলাত পড়লে স্বলাত শুদ্ধ কি?
|
১১৮
|
পাতলা শাড়ি বা ওড়না পড়ে মেয়েদের স্বলাত কি শুদ্ধ হবে?
|
১১৯
|
কাঁচা পিঁয়াজ রসুন খেয়ে কি স্বলাত শুদ্ধ হয়?
|
১২০
|
মহল্লা বা গ্রাম এর মসজিদ ছেড়ে অন্য মহল্লা বা গ্রাম এর মসজিদে জুমআহ বা তারাবীহ ইত্যাদি স্বলাত পড়তে যাওয়া বৈধ কি?
|
১২১
|
তারাবীহর স্বলাতের মাঝে মধ্যে পঠনীয় কোন নির্দিষ্ট দুআ বা দরূদ আছে কি?
|
১২২
|
ফজরের আযানের পূর্বে মাইকে কুরআন, দুআ (বা গজল) পড়া, অনুরূপ জুমআর খুতবার পূর্বে ক্বারীর কুরআন পড়া (বা কারো বক্তৃতা করা) কি শরীয়তসম্মত?
|
১২৩
|
ইমাম রুকূ অবস্থায় থাকলে কেউ দৌড়ে আসে, কেউ সজোরে পদক্ষেপ করে, কেউ গলা-সারা দেয়, কেউ ‘ইন্নাল্লাহা মাআস স্বাবেরীন’ বলে। এমন কাজ বৈধ কি?
|
১২৪
|
রুকু অবস্থায় আর আসা বুঝতে পারলে ইমামের জন্য রুকু লম্বা করা কি বিধেয়?
|
১২৫
|
সূরা ফাতিহা না পড়লে যদি স্বলাত না হয়, তাহলে রুকু পেলে রাকআত গণ্য হয় কীভাবে?
|
১২৬
|
স্বলাত ছুটে গেলে কাযা পড়ব কখন? আগামী ওয়াক্ত বা আগামী দিনের ঐ স্বলাতের সময় পর্যন্ত কি পিছিয়ে দেওয়া চলে?
|
১২৭
|
স্বলাত কাযা রেখে মারা গেলে অনেক হিসাব করে ছেড়ে দেওয়া স্বলাতের ‘কাফফারা’ আদায় করে, তা কি বিধেয়?
|
১২৮
|
কোন ব্যক্তি স্বলাত রেখে মারা গেলে তার তরফ থেকে তা আদায় করে দেওয়া যায় কি না?
|
১২৯
|
সামনে আগুন অথবা জ্বলন্ত বাতি বা ধূপ থাকলে স্বলাত পড়া বৈধ কি?
|
১৩০
|
যে ইমাম ঠিকভাবে কুরআন পড়তে জানে না, তাঁর পিছনে স্বলাত কি শুদ্ধ?
|
১৩১
|
ইমামের সালাম ফিরার পর তিনি কি মসবূকের সুতরাহ থাকেন?
|
১৩২
|
যে স্বলাতী দাড়ি চাঁছে অথবা গাঁটের নিচে কাপড় ঝোলায়, তার পিছনে স্বলাত পড়া কি শুদ্ধ ?
|
১৩৩
|
স্বলাত পড়তে দাঁড়ানোর পর যদি বাসার কলিং বেল বারবার বেজে ওঠে এবং বাসায় ঐ স্বলাতী ছাড়া অন্য কেউ না থাকে, তাহলে সে কী করতে পারে?
|
১৩৪
|
যোহরের স্বলাত পড়ার কিছু পরে আমার স্মরণ হল, আমি তিন রাকআত স্বলাত পড়েছি। এখন আমি কি করব?
|
১৩৫
|
ছবিযুক্ত পোশাক পরে স্বলাত বৈধ কি?
|
১৩৬
|
কারণবশতঃ একা স্বলাত পড়তে হলে ইকামত দেওয়ার মানে কি?
|
১৩৭
|
অনেক সময় একা দাঁড়িয়ে স্বলাত পড়ি, তখন কেউ এসে আমার ডান পাশে দাঁড়িয়ে গেলে আমার কী করা উচিত?
|
১৩৮
|
সাঊদী আরবের অধিকাংশ লোকেরা স্বলাতে ‘জালসায়ে ইস্তিরাহাহ’ করে না কেন?
|
১৩৯
|
অধিকাংশ বাঙ্গালী মহিলারা শাড়ি পড়ে স্বলাত পড়ে। তাতে অনেক সময় তাঁর হাতের বাজু বের হয়ে যায়। সুতরাং তাঁর স্বলাত কি শুদ্ধ হবে?
|
১৪০
|
যোহরের পূর্বে ৪ রাকাআত সুন্নত এক সালামে পড়া চলে কি?
|
১৪১
|
কোন কোন মহিলা ঋতু বন্ধের পরেও গোসল করতে দেরি করে।...
|
১৪২
|
কিছু স্বলাতী জামাআত শুরু হওয়ার পড়ে আসে। কিন্তু তাঁরা রাকআত বা রুকু পাওয়ার জন্য দৌড়ে আসে।...
|
১৪৩
|
মসবূক স্বলাতীর ইক্তিদা করে জামাআত করা কি বৈধ?
|
১৪৪
|
অনেক সময় একাকী স্বলাত পড়তে হলে ইকামত দেওয়া এবং রাতের স্বলাত সশব্দে পড়া জরুরী কি?
|
১৪৫
|
কাতারে জায়গা না পেলে একা দাঁড়িয়ে স্বলাত হবে কি?
|
১৪৬
|
কাতারের পিছে একা স্বলাতীর স্বলাত হয় না। কিন্তু আগের কাতারে জায়গা না পেলে কি করবে? সামনে থেকে কি কাউকে টেনে নেবে?
|
১৪৭
|
মুশরিক ও বিদআতী ইমামের পিছনে স্বলাত শুদ্ধ কি?
|
১৪৮
|
ফাসেক ইমামের পিছনে স্বলাত কি সুদ্ধ?
|
১৪৯
|
আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব ফজরের আযানের পূর্বে মাইকে কুরআন পাঠ করেন, কিছু দুআ-দরুদ পড়েন, তারপর আযান দেন, এটা কি শরীয়তসম্মত?
|
১৫০
|
জুমআর দিন মিম্বরে চড়ে খতীবের খুতবা দেওয়ার পূর্বে একজন ক্বারি কুরআন তিলাওয়াত করে(অথবা বক্তৃতা করে) শোনায়। এটা কি শরীয়তসম্মত?
|
১৫১
|
জুমআর সময় একজন খুতবা দিলে এবং অন্যজন স্বলাত পড়লে ক্ষতি আছে কি?
|
১৫২
|
অনেক স্বলাতী স্বলাতরত অবস্থায় নাক, দাড়ি বা কাপড় ইত্যাদি নিয়ে খেলা করে। এদের ব্যাপারে কিছু বলার আছে কি?
|
১৫৩
|
স্বলাতের শেষ তাশাহহুদে কি নিজের ভাষায় দুআ করা যায়?
|
১৫৪
|
সিজদায় কি কুরআনী দুআ করা যায়?
|
১৫৫
|
কর্মক্ষেত্রে পানি নেই। বাসায় পানি আছে। স্বলাতের ওয়াক্ত যাওয়ার আগে বাসায় পৌঁছে যাবে। স্বলাতের সময় হলে তায়াম্মুম করে আওয়াল ওয়াক্তে স্বলাত পরে নেবে, নাকি ...
|
১৫৬
|
কাঁচা পিঁয়াজ-রসুন খেলে মুখের দুর্গন্ধের ফলে মসজিদে বা জামাআতে আসা নিষেধ। কিন্তু যাঁদের মুখে প্রাকৃতিকভাবেই দুর্গন্ধ থাকে, তাঁদের জন্যও কি নিষেধ?
|
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite
0 Comments