জিজ্ঞাসা ও জবাব
জবাব দিচ্ছেন: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
পিএইচডি (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা),
সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান- ফেকাহ্ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
নং
|
জিজ্ঞাসা ও জবাব
|
প্রশ্ন ১: যারা নিজেদের মুসলিম দাবী
করে, অথচ ইসলামের মৌলিক রোকনসমূহকে নানাভাবে অমান্য করে যাচ্ছে, ইসলামের
দৃষ্টিতে তারা দুনিয়াতে কোন পর্যায়ে পড়ে এবং আখেরাতে তারা কোন পর্যায়ে থাকবে? –আসিফ ইকবাল, পলাশ, নরসিংদি, বাংলাদেশ।
উত্তর: নিজেদের মুসলিম বলে দাবী করা একটি ভাল গুণ। প্রত্যেক
ঈমানদারের উচিত মুসলিম হিসেবে গর্ববোধ করা। কিন্তু মুসলিম হওয়ার দাবী করা আর সত্যিকারের মুসলিম হওয়ার মধ্যে পার্থক্য
রয়েছে। একজন সত্যিকারের মুসলিমের কাজ হবে নিজেকে পুরোপুরি আল্লাহর কাছে, তাঁর নির্দেশের
কাছে আত্মসমর্পণ করা। সুতরাং যিনি মুসলিম দাবী করার পর ইসলামের মৌলিক রোকনসমূহ যেমন, স্বলাত, যাকাত, হজ্জ, সাওম সহ কালেমার
দাবীকে অস্বীকার করবে, তিনি মুসলিম বলে বিবেচিত হবেন না। তবে তাকে এ
বিষয়টি সম্পর্কে জানাতে হবে এবং তার কোন সন্দেহ থাকলে তাও নিরসন করতে হবে। তারপরও যদি তারা
কোন রোকনকে অস্বীকার করে, তবে তারা কাফের বিবেচিত হবে, আর আখেরাতে তারা
হবে জাহান্নামী। কিন্তু শর্ত হচ্ছে তাদেরকে বিষয়টির বিধান আগে জানাতে হবে এবং তাদের কোন
সন্দেহ থাকলে তা দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে।
আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন
করার তৌফিক দিন।
প্রশ্ন ২: যদি কেউ ফজরের স্বলাত কাদ্বা
করে ফেলে এবং যোহর পর্যন্ত আদায় না করে বা আদায় করার সুযোগ না পায় বা ভুলে যায়, আর এ অবস্থায়
যোহর পড়ে ফেললো, তাহলে তার জন্য করনীয় কি? সে কি যোহরের
পর ফজরের কাদ্বা আদায় করতে পারবে? -শেখ রায়হান, নবাবগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
উত্তর: কাদ্বা স্বলাতের নিয়ম হলো, পরবর্তী নামাযের
আগেই তাকে তা আদায় করে নিতে হবে। তারতীব রক্ষা করা ওয়াজিব। খন্দকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও সাহাবীদের পাঁচ ওয়াক্ত স্বলাত কাদ্বা হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীগণকে নিয়ে তা তারতীব তথা ধারাবাহিকতা রক্ষা করে কাদ্বা আদায় করেন।
তবে আলেমরা বলেন, তিন কারণে কাদ্বা
নামাযের তারতীব ত্যাগ করা যায়-
১- যদি কাদ্বা
নামায আদায় করার কারণে ওয়াক্তিয়া নামাযের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা
দেয়।
২- যদি কাদ্বা নামাযের কথা ভুলে যায়, আর ওয়াক্তিয়া
নামায আদায়ের পর তা স্মরণ হয়।
৩- পাঁচ ওয়াক্তের বেশী স্বলাত কাদ্বা হয়ে গেলে।
সুতরাং উপরোক্ত অবস্থায় তিনি যোহরের পর ফজরের
কাদ্বা আদায় করতে পারবেন। কারণ তিনি ভুলে গিয়েছিলেন। বা যোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জামাত দাঁড়িয়ে যাওয়া কোন অজুহাত নয়।
প্রয়োজনে তিনি ইমামের সাথে কাদ্বা নামাযের নিয়ত
করে তা আদায় করে পরে নিজের ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করতে পারেন।
আল্লাহ আমাদের জানার ও বুঝার তৌফিক দিন। আমীন
প্রশ্ন ৩: বাবা মা যদি স্ত্রীর উপর কথা
বা কাজের মাধ্যমে অবিচার কিংবা ছোটখাটো পর্যায়ের যুলুম করে, তবে এক্ষেত্রে
বাবা মাকে সংশোধনের উপায় কি? এবং এসব ক্ষেত্রে স্ত্রীর
পক্ষ নিয়ে বাবা মা'র বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে কি? -মোহাম্মাদ
হানিফ, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদি আরব।
উত্তর: বাবা মা সবসময় সম্মানের পাত্র। তাদের পক্ষ থেকে
কোন অবিচার কিংবা ছোটখাটো পর্যায়ের যুলুম পরিলক্ষিত হলে অত্যন্ত ভদ্রভাবে দৃষ্টি
আকর্ষণ করা যাবে, তবে কোনভাবেই তাদের মনে কষ্ট হয় এমন কিছু করা
যাবে না। এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো হয়, পিতা-মাতা যাদের
কথা শুনেন এবং যাদের কথা পিতা-মাতার মনে আঘাত করবে না, তাদেরকে বিষয়টি
অবহিত করা। তারপরও যদি তাদের সংশোধন না হয়, তবে তাদের কাছ
থেকে স্ত্রীকে দূরে রাখাই শ্রেয়। ভিন্ন ভিন্নভাবে দু'দিক দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে
হবে।
প্রশ্ন ৪: কেউ ইন্টারনেট ক্যাফে দিল, সে হালাল
রোযগার করতে চায়। এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যদি খারাপ ওয়েবসাইট দেখে বা অনৈতিক কার্যকলাপ
করে, তাহলে ক্যাফেতে ইন্টারনেটের ভাড়া বাবদ মালিক যে রোজগার করবে, তা কি হালাল
হবে? না হলে উপায় কি? -বিল্লাল হোসেন, কাপাসিয়া, জয়দেবপুর, বাংলাদেশ।
উত্তর: ইন্টারনেট একটি প্রযুক্তির নাম। যা হালাল বা
হারাম উভয় পদ্ধতিতেই ব্যবহার করা যায়। তাই এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ নয়। তবে
ব্যবহারকারীরা যাতে খারাপ ওয়েবসাইট না দেখতে পায়, সে ব্যাপারে
কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়ে রাখতে হবে। আর প্রয়োজনে কিছু ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করে রাখতে হবে। সুনির্দিষ্ট
ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও যদি কেউ তা অন্যায় কাজে ব্যবহার করে, তবে যে ব্যবহার
করবে সে ব্যক্তিই এর দায়-দায়িত্ব বহন করবে। তবে যখনই এ
বিষয়টি মালিক জানতে পারবে, তার কর্তব্য হবে তা থেকে নিষেধ করা।
প্রশ্ন ৫: কেউ কেউ শেয়ার ব্যবসাকে
জুয়া'র সাথে তুলনা করে, আসলে কি শেয়ার ব্যবসা
জুয়ার মত কিছু? শেয়ার ব্যবসা কি তাহলে
ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ? -আব্দুর রশীদ, কেরালা, ভারত।
উত্তর: শেয়ার ব্যবসার আসল হলো "জায়েয হওয়া"। কিন্তু বর্তমানে
শেয়ার ব্যবসার নামে যা হচ্ছে, তা অনেকটা জুয়ার কাছাকাছি। এ বিষয়ে
বিস্তারিত ব্যাখ্যার আগে এটা জানা আবশ্যক যে,শেয়ার বা
অংশীদার হওয়ার জন্য যে শর্ত আছে সেটা জানা থাকতে হবে।
১- যে ব্যবসার শেয়ার হোল্ডার হচ্ছে সে ব্যবসাটি
হালাল হতে হবে।
২- সে ব্যবসার কর্মকাণ্ডটি সুদভিত্তিক পরিচালিত হতে
পারবে না।
৩- সে ব্যবসায়ী পণ্যটি বাজার দর থাকতে হবে। আর বাজার দর ও
মূল দর আর উঠানামার দরের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে। যাতে জুয়া না
হয়ে যায় তা স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।
সুতরাং মূলত শেয়ার মার্কেট জায়েয; কিন্তু কিছু
শর্ত মেনে তা করতে হবে। যে শর্তগুলো অধিকাংশ সময়েই মানা হয় না বিধায় অনেকেই সেটাকে জুয়ার মধ্যে
শামিল করে থাকেন।
প্রশ্ন ৬: আমরা যারা দীর্ঘকাল প্রবাসে
স্বীয় পরিবার থেকে দূরে থাকি এবং এতে করে স্ত্রী তার কিছু হিস্যা হতে বঞ্ছিত হয়। আর আমরা
অনেকেই এমন সামর্থবান নই যে, প্রতি বছর দেশে যাব। ফলাফলে কিছু
অনাচার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এদিকে আমরা জীবন চালানোর তাগিতে প্রবাসে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। এখন আমার
প্রশ্ন হলো- আমাদের এভাবে দীর্ঘকাল বিদেশে থাকা কি ইসলাম সম্মত? -মোহাম্মাদ
ইসমাঈল ভুঁইয়া, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।
উত্তর: প্রবাস জীবন যাপন করা যদি জীবিকার তাগিদে হয়, তবে সেটা অবশ্যই স্ত্রীর অনুমতিতে হতে হবে। প্রতি চার মাসে
একবার স্ত্রীর কাছে যাওয়া জরুরী। যদি স্ত্রী অনুমতি না দেয় তবে সেক্ষেত্রে প্রবাসে থাকলে স্ত্রীর হক আদায়
না করার গোনাহে পতিত হতে হবে। আর যদি এ কারণে স্ত্রী কোন গোনাহে জড়িয়ে পড়ে তবে তার জন্য স্বামীও
কিছুটা দায়ী হবে। সুতরাং স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত চার মাসের বেশী কেউ দূরে বা প্রবাসে থাকার
অধিকার রাখে না।
প্রশ্ন ৭: সফরের দূরত্ব কত কিলোমিটার
হলে তা শরীয়তে বর্ণিত সফর বলে গণ্য হবে? এছাড়া
আমরা যে শহর থেকে গ্রামে যাওয়া আসা করি কিংবা কিছুদিনের জন্য কোথাও যাই, সেসব ক্ষেত্রে দূরত্ব, দিন ও অবস্থা কিভাবে কত
হিসাব করব? -সারওয়ার আলম, বরাইয়্যার হাট, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।
উত্তর: সফরের দূরত্ব কত কিলোমিটার হবে, এটা খুব বেশী নির্ধারিত আকারে হাদীসে বর্ণিত হয়নি। সাধারণতঃ যেটাকে
মানুষ সফর বলে সেটাই সফর। তবে কোন কোন হাদীসে দেখা যায়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মক্কাবাসীদেরকে উসফান স্থান পর্যন্ত সফর করতে নিষেধ করেছেন। আর মক্কা থেকে
উসফান এর দূরত্ব প্রায় ৪৮ মাইল। সে হিসেবে অধিকাংশ আলেমের মতে, কেউ যদি
৪৮ মাইল দূরত্বের সফর করে তবে সেটা সফর বলে গণ্য হবে। অনুরূপভাবে এক
হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মহিলাদেরকে মাহরাম ব্যতীত একদিন এক রাত, অবার অপর
বর্ণনায় তিন দিন তিন রাত সফর করতে নিষেধ করেছেন, এখান
থেকেও কোন কোন আলেম ৪৮ মাইল নির্ধারণ করেছেন। তবে এগুলোর দলীল
খুব স্পষ্ট নয়। মোটকথা, সাধারণত মানুষের পরিভাষায় যা
সফর, তা-ই সফরের দূরত্ব নির্ধারিত হবে। শহর থেকে গ্রামে
যাওয়া আসার ব্যাপারটি দূরত্ব ও গ্রামে তার বাড়ী আছে কি না সেটার উপর নির্ভরশীল। যদি শহর থেকে
গ্রামের দূরত্ব সফরের দূরত্ব হয়, তবে সে গ্রামে পৌঁছা পর্যন্ত
অবশ্যই মুসাফির। তাই সে পথিমধ্যে কসর নামায আদায় করবে। তারপর গ্রামে
যদি তার বাড়ী থাকে তবে সেখানে সে কসর করবে না। মনে রাখা দরকার
যে, কোন মানুষের কয়েকটি বাড়ী থাকতে পারে। সে কয়েক
স্থানেই অবস্থান করতে পারে। নিজ বাড়ীতে কেউ মুসাফির হবে না, যতই দূর
হোক না কেন। আর যদি গ্রামে নিজ বাড়ী না থাকে, তবে সে
যদি সেখানে মতান্তরে ৪/১৫/১৯ দিন অবস্থানের নিয়ত করে, তবে
তাতেও কসর নেই। আর যদি এর চেয়ে কম অবস্থান করে তবে সেখানে তাকে কসর আদায় করতে হবে।
প্রশ্ন ৮: পুতুল কিংবা প্রাণীর
প্রতিকৃতি বাচ্চাদের খেলনা হিসেবে ব্যবহার করতে পারব কি না? যদি পারি তাহলে সেসবকে শো-কেইস বা ঘরের বিভিন্ন জায়গায় সাজিয়ে রাখা
যাবে কি না? -আসিফ ইকবাল, পলাশ, নরসিংদী,
বাংলাদেশ।
উত্তর: বাচ্চাদের জন্য পুতুল ইত্যাদি একমাত্র খেলনা আকারে
রাখা যাবে যদি পুতুলটি শালীন হয়, কিন্তু সেটা শো-কেইসে সাজিয়ে
রাখলে সেটা আর খেলনার পর্যায়ে পড়বে না। বরং তা হাদীসে
নিষিদ্ধ বস্তুতে পরিণত হবে। অর্থাৎ অত্যন্ত সীমিত আকারে খেলনা হিসেবে ছোট বাচ্চাদের জন্য তা দেয়া যাবে, কিন্তু কোন ক্রমেই সেটা সাজিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
প্রশ্ন ৯: কোন্ কোন্ সম্পদের যাকাত
আদায় করতে হবে এবং কি পরিমাণ করে আদায় করতে হবে? স্বর্ণ, রৌপ্যসহ অন্যান্য যেসব সম্পদের যাকাত
দিতে হবে সেগুলোর ব্যবহার্যটুকুর উপরও কি যাকাত দিতে হবে? যদি না হয়, তাহলে ব্যবহার্য সম্পদের আলাদা
আলাদা পরিমাণ সর্বোচ্চ কতটুকু ধরা যাবে। যেমন কেউ অনেক
গুলো গয়না অদল-বদল করে পরে, এর পরিমাণ অনেক, তাই এর সীমারেখা জানতে চাই। -আহসান
উল্লাহ্, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা,
বাংলাদেশ।
উত্তর: যে সমস্ত সম্পদের যাকাত দিতে হবে, তা চার শ্রেণীর। এক. স্বর্ণ বা রৌপ্য। দুই. ফসল ও ফল। তিন. ব্যবসায়ী অর্জন। চার. যমীন থেকে যা বের হয়। যেমন খনি, ইত্যাদি। তন্মধ্যে স্বর্ণ
ও রৌপ্যের যাকাতের পরিমাণ হচ্ছে, যদি কারও কাছে ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্য
থাকে বা ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ থাকে, তবে তাকে তার জন্য যাকাত
দিতে হবে। তখন সেটার ২.৫% পারসেন্ট হারে যাকাত দিতে হবে। (অর্থ হোক বা স্বর্ণ বা রৌপ্য)। সাধারণ টাকা-পয়সার হিসেবও স্বর্ণ বা রৌপ্যের দামের উপর হিসেব করে ফকীরদের
জন্য যা উপকারী সে হিসেবে দিতে হবে। ফসল ও ফলের যাকাতের ব্যাপারে সঠিক মত হচ্ছে যে, তা যদি ৬৫৩ কেজি (৩০০ সা') হয় বা তার বেশী
হয়, তবে তাতে যাকাত দিতে হবে। তারপর যদি ফসল
বা ফল এমন হয় যে, তাতে নিজস্ব খরচে পানি বা সেচ
করতে হয়, তবে উৎপন্ন দ্রব্যের ২০ ভাগের এক ভাগ দিতে হবে। আর যদি নিজস্ব
খরচে পানি দিতে না হয়, তবে তাতে ১০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত
হিসেবে দিতে হবে।
ব্যবহার্য স্বর্ণ বা রৌপ্যের অলংকারের ব্যাপারে
সঠিক মত হলো যাকাত দিতে হবে। কারণ, হাদীসে তা-ই স্পষ্ট। সুতরাং কারও
ব্যবহার্য স্বর্ণ বা রৌপ্য যদি নেসাব পরিমাণ হয়, তবে তাতে যাকাত দিতে হবে।
প্রশ্ন ১০: আল্লাহর নির্ধারিত পরিস্থিতি ও অসুস্থতার কারণে
আমি বিগত রমযানের সওম রাখতে পারিনি। বছরের বিগত দিনগুলোতেও সেসব রোযার কাদ্বা আদায় করতে পারিনি, সামনে রমযান মাস আবারো আসছে। এদিকে এখন
আমার কোলে বাচ্চা এসেছে, যদি সওম রাখি তো বাচ্চা দুধ কম
পাবে, এ কারণে এখনো রোযাগুলো আদায় করতে পারছি না। যদি আমি এ
রমযানের আগে আগে বিগত রমযানের রোযাগুলো রাখতে না পারি, তাহলে আমাকে কি করতে হবে? আমি কি এ রমযানের
পরেও রাখতে পারবো? না কি অন্য কোন উপায়? দয়া করে জানাবেন। -নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, বাংলাদেশ।
উত্তর: নিয়ম হচ্ছে, রমযানের
সওম ভঙ্গ হলে তা আগামী রমযানের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কাদ্বা করে দেয়া। যদি কেউ সেটা না
করে তবে সে গোনাহগার হবে। কিন্তু সেটা তাকে রমযানের পর হলেও কাদ্বা করতে হবে। বাচ্চা দুধ না
পেলে যদি
প্রশ্ন ১১: কেউ নামায আদায় করার পর টের
পেল যে, যেখানে নামায আদায় করেছে সেখানে কোন বাচ্চার প্রস্রাব ছিল। অর্থাৎ, স্থানটি নাপাক
ছিল। এক্ষেত্রে কি ঐ নামায পুনরায় আদায় করতে হবে? আর বাচ্চাদের
প্রস্রাবে কাপড় নাপাক হওয়া সম্পর্কিত বিধান কি? -লিটন
পাটোয়ারী, মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা, বাংলাদেশ।
উত্তর: কোন স্থান যদি নাপাক হয়, আর সেটার নাপাকি
স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, তবে সে স্থানে নামায শুদ্ধ হবে না। এ ক্ষেত্রে
নামাযটি পুনরায় আদায় করতে হবে। কিন্তু যদি সে স্থানে নাপাকি আর স্পষ্ট না থাকে, যেমন কোন মাটিতে
পেশাব থাক আর বাতাস বা রোদে তা শুকিয়ে যায় এবং পেশাব ছিল বলে কোন কিছু স্পষ্টভাবে
বোঝা না যায়, তবে সেখানে নামায পড়া যাবে। কিন্তু যদি
জায়গাটি পাকা হয় এবং পানি পড়লে পেশাবের গন্ধ বের হতে থাকে, তবে সে জায়গা
ধুয়ে ফেলতে হবে।
যদি বাচ্চাটি ছেলে হয় এবং এমন হয় যে সে মায়ের দুধ
ছাড়া আর কিছু খায় না, সেক্ষেত্রে তার প্রস্রাবকে হাল্কা ধৌত করলেই চলবে। পক্ষান্তরে যদি
মেয়ে বাচ্ছা হয়, তবে সেটা ভাল করে ধৌত করতে হবে।
উত্তর: জমিন বন্ধক দেয়া ও নেয়া জায়েয। [দেখুন-
লুবাব: ২/৪৫, দুররে মুখতার: ৫/৩৩৯, মাবদুত: ২১/৬৩, মুগনিল মুহতাজ: ২/১২১, মুগানি: ৪/৩২৬, শারহে কাবীর: ৩/৩০৩]
আল্লাহ তা'আলা
পবিত্র কুরআনের সূরা আল বাকারায় বলেন: فَرِهَانٌ
مَقْبُوضَةٌ
অর্থাৎ, "কেউ
যদি কর্জ নেয়, তবে ফরদ্ব করা যায় এমন রেহেন যেন দেয়।" [সূরা আল
বাকারাহ্: ২৮৩] এর ভেতর জমিনও পড়ে বিধায় তা জায়েয হবে।
তবে বন্ধককৃত জমিনের মালিক থাকবে বন্ধকদাতা। যদি বন্ধকদাতা
অনুমতি না দেয় তবে বন্ধক গ্রহীতা এর দ্বারা কোন প্রকার উপকার গ্রহণ করতে পারবে না। [দেখুন-
দুররে মুখতার ও রূহুল মুহতার: ৫/৩৩৯, বাদায়েড়: ৬/১৪৬,
তাবয়ীনুল হাকায়েক: ৬/৬৭, হেদায়া:
৮/২০১(ফাতহুল কাদীরসহ)] কারো কারো মতে অনুমতি দিলেও বন্ধকী জমিনে বন্ধক
গ্রহীতার কোন প্রকার উপকার গ্রহণ করার অধিকার থাকবে না। তবে কেউ কেউ এ
ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন, তা হলো-
যদি রেহেন বা বন্ধক দেয়া-নেয়ার এ শর্ত আরোপ করে যে, বন্ধক
গ্রহীতার এ থেকে লাভবান হওয়ার ক্ষমতা থাকবে, তবে নাজায়েয
হবে। কারণ তা কর্জ দেয়ার পর কর্জ দ্বারা উপকার গ্রহণের মত হওয়াতে সুদের সাথে
সাদৃশ্য হয়, তাই তা হারাম হবে। আর যদি বন্ধক
দেয়া-নেয়ার সময় কোন শর্ত আরোপ না করে থাকে, তারপর
বন্ধকদাতা তাকে বন্ধকী জমি ব্যবহারের অনুমতি দেয় তবে বন্ধকদাতার পক্ষ থেকে দান
হিসেবে বন্ধক গ্রহীতা তা ব্যবহার করতে পারবে। অন্যথা নয়। [দেখুন-পূর্ব বর্ণিত কিতাবসমূহ] যদি বলে যে, আমি জমিন
ঠিক করার বা ঠিক রাখার যে টাকা ব্যয় করেছি তা গ্রহণ করতে চাচ্ছি বা তার বিনিময় ফসল
নিয়ে যাব। তখন তার উত্তর হবে যে, জমিন বন্ধক দিলেও এর যাবতীয়
রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কিন্তু বন্ধকদারাই থাকবে। বন্ধক গ্রহীতা
যদি অনুমতি নিয়ে জমিন ঠিক রাখতে অর্থ ব্যয় করে থাকে, তবে তা বন্ধকদাতার কাছ থেকে চেয়ে নেবে। অন্যথা তার কোন
অধিকার নেই। যদি বলা হয় যে, দেশের বহুল প্রচলন কি এর জায়েয
হওয়ার দলীল নয়? জবাব হবে যে, না। শরীয়তের সাথে
বিরোধ লাগার কারণে এ বহুল প্রচলনকে দলীল হিসেবে নেয়া যাবে না। হাদীসে এসেছে-
রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"রেহেন বা বন্ধকদাতাকে তার সম্পদ থেকে নিষেধ করা যাবে না, সে তার সম্পদের খরচ বহন করবে এবং তার ফল ভোগ করবে।" [দারে কুতনী] তবে সবচেয়ে ভাল হয় যদি বন্ধকদাতা বন্ধক দেয়ার সময় বন্ধক
গ্রহীতাকে বন্ধকী জমিন থেকে উপকৃত হওয়ার অনুমতি দিয়ে দেয় (তবে অবশ্যই বন্ধক
গ্রহীতার পক্ষ হতে শর্ত করে নয়) অথবা যদি বন্ধক দাতা পরেও নিজে থেকে দয়া করে
অনুমতি দিয়ে দেয় তবে তাতে আর কোন ভেজাল থাকে না।
উত্তর: স্ত্রী বিবাহে আবদ্ধ বা ইদ্দতের মাঝে থাকলে তার
বোনের সাথে বিবাহ করা হারাম। দলীল-
(১) কুরআনের সূরা
আন্-নিসার ২৩ নং আয়াতে অন্যান্য বিবাহ নিষিদ্ধ ব্যক্তিবর্গের সাথে বলা হয়েছে- وَأَنْ
تَجْمَعُوا بَيْنَ الْأُخْتَيْنِ অর্থাৎ, "(অনুরূপভাবে হারাম করা
হয়েছে তোমাদের উপর) দুই বোনকে এক সাথে বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে একত্রিত করা।"
(২) হাদীসে এসেছে, রাসূল
সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক লোক ইসলাম
গ্রহণ করার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকে বললেন- "তুমি দুই বোনের একজনকে তালাক দিয়ে দাও।" কারণ, লোকটি জাহেলিয়াত বা মূর্খতার যুগে দুই বোনকে বিয়ে করেছিল এবং এক সাথে
ঘর-সংসার করছিল।
(৩) এ সিদ্ধান্তের উপর সমস্ত উম্মাত একমত হয়েছে।
প্রশ্ন ১৪: স্বামী-স্ত্রী একই সাথে জামা'আতে নামায আদায় করতে পারবে কি না? -জনৈক
ব্যক্তি, ইয়ানবো, সউদি আরব।
উত্তর: হাঁ, এতে
দোষের কিছুই নেই। বরং ইহা রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে
তাহাজ্জুদ আদায়ের পর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু 'আনহাকে নিয়ে
বাকী নামায আদায় করতেন। তবে ফরদ্ব নামায অবশ্য মসজিদে জামা'আতের সাথে
আদায় করা অপরিহার্য।
প্রশ্ন ১৫: যোহর ও আসরের ফরদ্ব স্বলাতে
সূরা উচ্চস্বরে পড়া যায় কি না? -জনৈক ব্যক্তি, ইয়ানবো, সউদি আরব।
উত্তর: না, পড়া যাবে
না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো এ যোহর ও আসরে উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করেছেন বলে
প্রমাণ নেই। বরং তিনি সর্বদা এ দু'নামাযে গোপনে কিরা'আত পড়তেন। মুসনাদে আহমাদ ও মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে, "তিনি (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুই
রাকা'আতের প্রত্যেক রাকা'আতেই ৩০
আয়াতের মত পড়তেন।"এতে বুঝা যায় যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গোপনে
অর্থাৎ, নিরবে পড়তেন, যার কারণে
সাহাবায়ে কেরাম "৩০ আয়াতের মত" আন্দাজ করে নিয়েছেন। বুখারী ও আবু
দাউদের হাদীসে এসেছে, "সাহাবাগণ রাসূল
সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাড়ীর নড়াচড়া থেকে
বুঝতেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কেরা'আত পড়ছেন।" অর্থাৎ তারা
শুনতেন না, তবে বুঝতে পারতেন যে, তিনি
অস্পষ্ট স্বরে কেরা'আত পড়ছেন।
প্রশ্ন ১৬: আমি দেশে বা বিদেশে
থাকাকালীন আমার স্ত্রী অন্য লোকের সাথে খারাপ কাজ করেছে এবং আমি তা জেনেছি। এ অবস্থায়
তাকে কি করা যায়? -নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর: সন্দেহের বশবর্তী হয়ে স্ত্রীর উপর অত্যাচার করা
হারাম। যে পর্যন্ত চারজন সাক্ষী একসাথে কাউকে কুকর্ম অবস্থায় (পুরুষের লিঙ্গ
স্ত্রীর লিঙ্গের ভেতর) না দেখবে, সে পর্যন্ত তাকে শরীয়তের
হুকুমে ফেলা যাবে না। বরং এমতাবস্থায় না দেখে এবং চারজন সাক্ষী একসাথে না দেখলে শুধু শুধু কোন
মহিলার (বা স্ত্রীর) উপর বদনাম আরোপ করলে শরীয়তের দৃষ্টিতে যারা বদনামী করবে
(স্বামী বা অন্য যে কেউ ), তাদেরকে ৮০টি করে বেত্রাঘাত
করার বিধান রয়েছে। কারণ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সময় একজন লোক তার স্ত্রী সম্পর্কে এরূপ মন্তব্য করায় তিনি
(সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: "হয় তুমি
প্রমাণ (চারজন সাক্ষী) নিয়ে আসবে, অন্যথা তোমার পিঠে
চাবুক লাগাবো।" [বুখারী] আর যদি সে নিজে থেকেই স্বীকার করে এবং তাওবা করে তবে নির্দিষ্ট ইদ্দত পার
হওয়ার পর সে আবার স্ত্রী হিসেবে থাকতে শরীয়তের কোন বাধা নেই।
প্রশ্ন ১৭: নামায মূলতঃ কত প্রকার এবং কি কি? শরীয়তের
বর্ণিত প্রকার সমূহের বাইরে যদি কেউ আরো বিভিন্ন উপলক্ষে নামায আদায় করে, তবে তা কি
সঠিক হবে? আমাদের দেশে যোহর ও আসরের আগে যে চার রাকা'আত নামায আদায় করা হয়, তা একবারে চার রাকা'আতের নিয়তে আদায় করা হয়। কিন্তু মক্কা-মদীনায় দেখি লোকেরা আলাদা আলাদা করে দু'দু রাকা'আত করে আদায় করে। এ ব্যাপারে
রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের পদ্ধতি জানতে চাই। -বুলবুল, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।
উত্তর: নামায মূলত: ফরদ্ব ও নফল। তাছাড়া বিতরের
রয়েছে আলাদা মর্যাদা।
ফরদ্ব নামায আবার দু’প্রকার: ফরদ্বে আইন, আর তা হচ্ছে রাত
দিনে পাঁচ ওয়াক্ত স্বলাত। আর ফরদ্বে কেফায়া যেমন জানাযার নামায।
অন্যদিকে নফল নামায আবার দু’ভাগে বিভক্ত। এক. সুন্নাতে
মুআক্কাদাহ (তাগীদ দেয়া) এগুলোকে সুন্নাতে রাতেবাও বলা হয়। এগুলোর ব্যাপারে
হাদীসে বিশেষ বিশেষ প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে এবং সফর অবস্থা ছাড়া সবসময়
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আদায় করতেন। সেগুলো হচেছ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আগে বা পরে ১২ রাকাত সুন্নাত
নামায। ফজরের আগে দুই, যোহরের আগে চার, পরে দুই,মাগরিবের পরে দু্ই, ইশার পরে দুই। তন্মধ্যে ফজরের
স্বলাতের সুন্নাত তিনি সফর অবস্থায়ও ত্যাগ করতেন না।
দুই. সুন্নাতে যায়েদাহ (অতিরিক্ত সওয়াবের আশায়
পালন করা) এগুলো রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আদায় করার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন। যেমন আসরের আগের চার রাক‘আত। অনুরূপ অতিরিক্ত নামাযের মধ্যে রয়েছে, তাহাজ্জুদ, বা তারাবীহ, চাশত বা ইশরাকের
স্বলাত ইত্যাদি মনে রাখতে হবে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে স্বলাত পড়েননি বা পড়ার জন্য সহীহ হাদীস দ্বারা তার কোন নির্দেশ আছে বলে
প্রমাণিত হয়নি সে নামায পড়া যাবে না।
যোহরের নামাযের আগে যে সুন্নাত আছে সেটি দু’দু
রাকা‘আত করেও পড়া যায়, আবার চার রাকা‘আত একসাথ করেও পড়া যায়; উভয়ের মতের
সপক্ষে বিশুদ্ধ দলীল আছে। এ ব্যাপারে ইবনুল কাইয়্যেম তার যাদুল মা‘আদ গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনা
করেছেন।
প্রশ্ন ১৮: বদনযর থেকে বাঁচার উপায় কি? বদনযর থেকে
বাচ্চাদের বাঁচাতে মায়েরা সাধারণতঃ তাবিজ, কাইতন(কালো
সূতা), কড়ি(ছোট আকারের শামুক), গাছের শেকড় ইত্যাদি গলায়
ঝুলিয়ে রাখে এবং বিশেষ করে ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে কপালের ডানে-বামে-মাঝখানে কালো
ফোটা লাগিয়ে থাকে। আবার বাচ্চার ব্যাপারে কেউ কোন অনাকাঙ্খিত উক্তি করে ফেললে সাথে সাথে থুথু
দিয়ে দেয়। ইত্যাদি কাজগুলোর মধ্যে কোনটি সঠিক আর কোনটি ঠিক নয় জানাবেন। আমরা ইসলামের
উপর চলতে চাই এবং সন্তানদেরকে চালাতে চাই। -আনোয়ার হোসেন, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।
উত্তর: বদ নযর থেকে বাঁচতে হলে-
১- সকাল-বিকালের দো‘আগুলো পড়তে হবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে প্রতিদিন সকাল ও বিকাল কিছু দো‘আ ও যিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলো
সঠিকভাবে আদায় করা দরকার।সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, কুল আউযু
বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস। কুল হুয়াল্লাহু আহাদ সূরাসমূহ। তাছাড়া সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসীও পড়তে হবে।
২- আর যার বদ নযর লাগে তার উচিত কোন কিছু পছন্দ হয়ে
গেলে তার জন্য বরকতের দো‘আ করা। [মুসনাদে আহমাদ ৪/৪৪৭] যেমন: মাশাআল্লাহ লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ আল্লাহ
তার উপর বরকত দিন। [যাদুল মা‘আদ: ২/১৭০]
৩- যার বদনযর লাগে তার থেকে ভালো কিছু গোপন করে রাখতে
হবে। [যাদুল মা‘আদ: ৪/১৭৩]
আর যদি বদনযর লেগে যায়, তখন করণীয়
হচ্ছে-
১- যার নযর লেগেছে তার ওজুর পানি দিয়ে যার উপর নযর
লেগেছে তাকে গোসল করাতে হবে। [সুনান আবি দাউদ, যাদুল মা‘আদ]
২- আগে বর্ণিত সূরা
ফালাক, নাস ও ইখলাস পড়তে হবে, সূরা ফাতিহা ও আয়াতুল কুরসী ও সূরা বাকারার শেষ
দুটি আয়াত পড়তে হবে।
৩- নিম্নোক্ত হাদীসভিত্তিক দো‘আগুলো পড়তে হবে,
* أَعُوذُُ
بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّات كُلِّهُنَّ، مِنْ شرِّ مَا خَلَقَ “আউযু বি
কালেমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শার্রি মা খালাক” [মুসলিম:
২৭]
* আরও পড়তে হবে, أعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّة،
مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّة، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّة “আউযু বি
কালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিও ওয়াহাম্মাহ, ওয়ামিন কুল্লি
আইনিন লাম্মাহ।”
* আরও পড়বে بِسْمِ اللهِ، أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ
التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ
الشَّيَاطِينِ، وَأَنْ يَحْضُرُونِ “আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাদাবিহী ওয়া ইকাবিহী, ওয়ামিন শাররি
ইবাদিহিী ওয়ামিন হামাযাতিশ শায়াতীন ওয়া আন ইয়াহদুরুন”
* আরও পড়বে, أَعُوذُ بالله السَّمِيعِ العَلِيمِ مِنَ
الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ؛ مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ .
* আরও পড়বে, بِسْمِ
اللهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ
وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ. . তিনবার
* আরও পড়বে, أَعُوذُ بِوَجْه اللهِ الْكَرِيمِ،
وَبِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ اللاَّتِي لا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلا
فَاجِرٌ، مِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وشَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا،
وَشَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الأَرْضِ وَشَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، وَمِنْ فِتَنِ
اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمِنْ َطوارِق اللَّيْلِوَالنَّهَارِ إلاَّ طَارِقًا
يَطْرُقُ بِخَيْرٍ، يَا رَحْمنُ .
* আরও পড়বে, اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِوَجْهِك
الْكَرِيم$ِ وَكَلِمَاتِكَ التَّامَّةِ، مِنْ شَرِّ مَا أَنْتَ آَخِذٌ
بِنَاصِيَتِهِ، اللَّهُمَّ أَنْتَ تَكْشِفُ الْمَغْرَمَ وَالْمَأْثَمَ، اللَّهُمَّ
لا يُهْزَمُ جُنْدُكَ، ولا يُخْلَفُ وَعْدُكَ، وَلا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ
الْجَدُّ،
سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ .
* আরও পড়বে, بسْمِ
الله (তিনবার) তারপর، أَعُوذُ
بِاللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ. . সাতবার
* আরও পড়বে, بِسْمِ
اللهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ
عَيْنِ حَاسِدٍ اللهُ يَشْفِيكَ، بِسْمِ اللهِ أَرْقِيك .
* আরও পড়বে, بِسْمِ اللهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ
دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ .
৪- পানিতে দো‘আগুলো পড়ে ফুঁক দিতে হবে আর তাকে পান
ও গোসল করাতে হবে। [আবুদাউদ]
৫- কুরআনের কিছু আয়াত লিখে সেটার পানি পান করাতেও
দোষ নেই। [যাদুল মা‘আদ, ফাতাওয়া ইবন
তাইমিয়্যাহ]
আর যে সমস্ত কাজ করলে সাধারণত বদ নযর থেকে বাঁচা
যায়-
১- আল্লাহর কাছে বদ
নযর থেকে আশ্রয় চাওয়া।
২- আল্লাহর তাকওয়া
অবলম্বন।
৩-ধৈর্য অবলম্বন
করতে হবে।
৪- আল্লাহর উপর ভরসা করা।
৫- তাওবা ও ইস্তেগফার করা।
মনে রাখবেন, বদ নযর থেকে
বাঁচার জন্য গায়ে তাগা ব্যবহার কিংবা কালো টিপ লাগানো বা গাছের শিকড় লটকানো জায়েয
নেই। বরং শির্কে পরিণত হবে। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে সরাসরি হাদীসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
সম্ভবত: থুথু লাগিয়ে দেয়াটা নিষেধাজ্ঞার ভিতর পড়বে
না।
প্রশ্ন ১৯: আল্লাহ এক, রাসূল
(সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক, কুরআন এক, দ্বীন ইসলামও
এক; তাহলে মুসলিমদের মধ্যে এত দল এত মত কেন? আকীদাগত ভাবে
ও রাজনৈতিক ভাবে মুসলিমরা আসলে কয় ভাগে বিভক্ত, কোন ধারনা দিতে
পারেন? -সজল, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।
উত্তর: মতপার্থক্য ঘটা সাধারণ ব্যাপার। মানুষ তার বিবেক
অনুসারে চলে। সে বিবেক নামক ঘোড়ার লাগাম হচ্ছে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর অনুসরণ। যারাই সালফে
সালেহীন তথা সাহাবা,তাবেয়ী ও তাদের সঠিক অনুসারীদের
মতামত অনুসারে কুরআন ও সুন্নাহ বুঝবে এবং তার অনুসারে চলবে, তারা যেখানেই
থাকুক, যে গোত্রেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন একমত হতে বাধ্য।যাবতীয় বিভক্তির মূলে রয়েছে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহকে অনুসরণ না করা। আর কুরআন ও
সুন্নাহর অনুসরণের দাবী করলেও অনেকেই তা সালফে সালেহীন তথা সাহাবা ও তাবেয়ীদের বুঝ
অনুসারে তা করেন না। বরং কুরআন ও সুন্নাহর মনগড়া ব্যাখ্যা করেন। আর যদি এর মধ্যে
খারাপ উদ্দেশ্য থাকে তবে মতভেদ মতবিরোধে পরিণত হয়। নাউযুবিল্লাহ।
সাধারণত: আকীদাগতভাবে দু’ভাগে বিভক্ত: সুন্নী ও
শিয়া। আর রাজনৈতিকভাবে তাদের বিভক্তির কোন পরিসংখ্যান দেয়া কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। কারণ এতে
মানুষের প্রবৃত্তির বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
প্রশ্ন ২০: অনলাইনে পুরুষ শিক্ষকের কাছ থেকে
মুসলিম নারীরা ইসলাম বিষয়ে শিক্ষা নিতে পারবে কি না ? ভিডিও থাকবে না , শুধু অডিও
অর্থাৎ একজন শিক্ষক তার ছাত্রীর সাথে শুধু ধর্ম নিয়ে কথা বলবেন । -মুসলিমাহ্, বাংলাদেশ।
উত্তর: হাঁ, একজন মহিলা
অনলাইনে পুরুষ শিক্ষকের কাছে উপর্যুক্ত পদ্ধতিতে দ্বীন শিখতে পারবে। তবে কথা বলার
সময় অবশ্যই সাবধানে বলতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদেরকে পর-পুরুষের সাথে নরম-মিহি স্বরে কথা বলতে নিষেধ
করেছেন [দেখুন, সূরা আল-আহযাব: ৩২] পুরুষেরও উচিত বিষয়টির প্রতি
বিশেষ নজর রাখা।
উত্তর: অসমর্থ লোকের হজ্জ অন্যজন করতে পারে। সুতরাং আপনিও
আপনার বাবার হজ্জ করতে পারবেন। তবে আগে নিজের হজ্জ করতে হবে। এবং যদি আপনার বাবার উপর হজ্জ ফরজ হয় তবে অবশ্যই আপনার বাবার অনুমতি লাগবে। আর যদি আপনার
বাবার উপর হজ্জ ফরজ না হয়, তবে আপনার বাবার অনুমতি ছাড়াই হজ্জ করতে পারবেন। (দেখুন-
ফাতহুল ক্বাদীর: ২/৩০৮, বাদায়ে': ২/২১২, দুররে মুখতার: ২/৩২৬, মুগনি: ৩/২২৭-২৩০, শারহে ছগীর: ২/১৫, বিদায়তুল মুজতাহিদ: ১/৩০৯, মগনিল মহতাজ:
১/৪৬৮)
এর প্রমাণ হলো-
১) ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন: খাস'আম গোত্রের এক মহিলা রাসূল
সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, হে আল্লাহর
রাসূল! আমার আব্বার উপর হজ্জ ফরজ হয়েছে খুব বৃদ্ধ অবস্থায় অথচ তিনি উটের উপর সোজা
হয়ে বসতে পারেন না। রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্জ করে নিও। [দেখুন-
বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ্, তিরমিযী, আবু দাউদ, আহমাদ]
২) আবু দাউদ শরীফে
এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, 'শুবরামা থেকে হজ্জ'। তিনি বললেন: শুবরামা কে? লোকটি বললো: আমার ভাই বা আমার নিকট আত্মীয়। রাসূল
সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আগে নিজের হজ্জ কর তারপর শুবরামার হজ্জ করো। [নাইলুল
আওতার: ৪/২৯২ পৃষ্ঠা]
প্রশ্ন২২: বাবার মৃত্যুর পর সৎমাকে
বিবাহ করা যায় কি না?
উত্তর: না; তা সম্পূর্ণ হারাম। পিতা, দাদা, পরদাদা যতজনের সাথেই বিবাহ করে থাকুক না কেন সন্তানগণ তাদেরকে বিবাহ করতে পারবে না। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনের সূরা আন্-নিসায় বলেন: وَلَا تَنكِحُوا مَا نَكَحَ آبَاؤُكُم مِّنَ النِّسَاءِ "নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃপুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে, তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না।" [আয়াত: ২২] আরো দেখুন: তাবয়ীনুল হাকায়েক: ২/১০১-১০৫, ফাতহুল কাদীর: ২/৩৫৭-৩৯০, বিদায়াহ্: ২/৩১-৫৯।
উত্তর: না; তা সম্পূর্ণ হারাম। পিতা, দাদা, পরদাদা যতজনের সাথেই বিবাহ করে থাকুক না কেন সন্তানগণ তাদেরকে বিবাহ করতে পারবে না। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনের সূরা আন্-নিসায় বলেন: وَلَا تَنكِحُوا مَا نَكَحَ آبَاؤُكُم مِّنَ النِّسَاءِ "নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃপুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে, তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না।" [আয়াত: ২২] আরো দেখুন: তাবয়ীনুল হাকায়েক: ২/১০১-১০৫, ফাতহুল কাদীর: ২/৩৫৭-৩৯০, বিদায়াহ্: ২/৩১-৫৯।
প্রশ্ন ২৩: পিতা এক, মা দুই; এ অবস্থায় সৎবোনকে বিবাহ করা যায় কি না?
উত্তর: কখখোনো না; বরং তা সম্পূর্ণরূপে হারাম। অনুরূপভাবে মা এক, পিতা দুই হলেও। কারণ, আল্লাহ তা'আলা সূরা আন্-নিসার ২৩ নং আয়াতে বোনদের বিবাহ করতে নিষেধ করেছেন।শরীয়তে বোন বলতে বুঝায় এমন দু'জন যাদের পিতার বা মাতার দিক থেকে একই সূত্রে গ্রথিত। প্রশ্নের মাসআলায় পিতার দিক থেকে তারা একই সূত্রে আবদ্ধ। আল্লাহ বলেন: حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ وَبَنَاتُكُمْ وَأَخَوَاتُكُمْ... "তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, কন্যা, বোন..."। আরো দেখুন: দুররে মুখতার: ২/৩৮০-৪০৫, মুগনিল মুহতাজ: ৩/১৭৪-১৯০, মুগনি: ৬/৫৪৩-৬৫০।
প্রশ্ন ২৪: ইমামতির দো'আ না জানা সত্ত্বেও ইমামতি করা যায় কি না?
উত্তর: ইমামতির দো'আ বলতে কিছু নেই। শুধু মনে মনে নিয়্যত করতে হবে যে, আমি সবার ইমামতি করছি। এ ব্যতীত যত দো'আই লেখা হোক না কেন সেসব বলা বিদ'আত বা মনগড়া কাজ হেতু শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বরং কেউ এরূপ দো'আ পড়লে গোনাহগার হবে। দেখুন: যাদুল মা'আদ: ১/২০১।
প্রশ্ন ২৫: পানি নেই অদ্বূ করা অসম্ভব, এমন কি নামাযের এক্বামত দিয়েছে; এই মুহূর্তে
আমি নামায পড়তে পারবো কি না?
উত্তর: এ প্রশ্নটির দু'টি দিক আছে-
(১) যদি পানি না পাওয়া যায়, তাহলে নামাযের শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং পানি খুঁজতে হবে। যদি তাতেও না পাওয়া যায় তখন তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নিতে হবে। অন্যথা নয়, নামাযের এক্বামত দিলেও নয়।
(২) যদি অসুস্থ হয়, অনুরূপভাবে সে মনে করে যে, নামাযের শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত সে সুস্থ হবে না, তাহলে তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবে। দেখুন: বাদায়েড়: ১/৪৬, ফাতহুল কাদীর: ১/৮৪-৯৮, দুররে মুখতার: ১/২২৭, আল্-লুবাব: ১/৩৬, আল-মুহাজ্জাব: ১/২২, ক্বাওয়ানীন ফিকহ্: ৩৭।
আল্লাহ তা'আলা বলেন: فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا "যদি তোমরা পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও" [সূরা আল মায়েদাহ্: ৬]। তায়াম্মুম হলো- মাটিতে দু'হাত জোরে মেরে তা দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ্ করে নেয়া।
উত্তর: এ প্রশ্নটির দু'টি দিক আছে-
(১) যদি পানি না পাওয়া যায়, তাহলে নামাযের শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং পানি খুঁজতে হবে। যদি তাতেও না পাওয়া যায় তখন তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নিতে হবে। অন্যথা নয়, নামাযের এক্বামত দিলেও নয়।
(২) যদি অসুস্থ হয়, অনুরূপভাবে সে মনে করে যে, নামাযের শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত সে সুস্থ হবে না, তাহলে তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবে। দেখুন: বাদায়েড়: ১/৪৬, ফাতহুল কাদীর: ১/৮৪-৯৮, দুররে মুখতার: ১/২২৭, আল্-লুবাব: ১/৩৬, আল-মুহাজ্জাব: ১/২২, ক্বাওয়ানীন ফিকহ্: ৩৭।
আল্লাহ তা'আলা বলেন: فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا "যদি তোমরা পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও" [সূরা আল মায়েদাহ্: ৬]। তায়াম্মুম হলো- মাটিতে দু'হাত জোরে মেরে তা দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ্ করে নেয়া।
প্রশ্ন ২৬: ইসলামের আইনানুযায়ী কয়টি
বিয়ে করা যায়?
উত্তর: ইসলামের আইনানুযায়ী প্রত্যেক পুরুষ এক সাথে চারজন স্ত্রীর সাথে ঘর-সংসার করতে পারেন। তবে এদের মাঝে হক আদায় (সঙ্গম থেকে শুরু করে ভালবাসা, খরচাদী সমান ভাবে) করতে হবে। যদি কেউ চারজনকে বিয়ে করার পর কাউকে তালাক দেয়, তাহলে ইচ্ছা করলে তদস্থলে অন্য একজনকে বিবাহ করতে পারবে। মোটকথা, চারের অধিক এক সাথে ঘর করতে পারবে না।
আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন: "সুতরাং তোমরা বিয়ে কর যা তোমাদের মন চায়- দুইটা, তিনটা, চারটা। তবে যদি ইনসাফ না করার সম্ভাবনা থাকে তো একটিতে সীমাবদ্ধ রাখ।"[সূরা আন্-নিসা ৩] অনুরূপভাবে এ বিষয়টি বহু হাদীসেও এসেছে।
উত্তর: ইসলামের আইনানুযায়ী প্রত্যেক পুরুষ এক সাথে চারজন স্ত্রীর সাথে ঘর-সংসার করতে পারেন। তবে এদের মাঝে হক আদায় (সঙ্গম থেকে শুরু করে ভালবাসা, খরচাদী সমান ভাবে) করতে হবে। যদি কেউ চারজনকে বিয়ে করার পর কাউকে তালাক দেয়, তাহলে ইচ্ছা করলে তদস্থলে অন্য একজনকে বিবাহ করতে পারবে। মোটকথা, চারের অধিক এক সাথে ঘর করতে পারবে না।
আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন: "সুতরাং তোমরা বিয়ে কর যা তোমাদের মন চায়- দুইটা, তিনটা, চারটা। তবে যদি ইনসাফ না করার সম্ভাবনা থাকে তো একটিতে সীমাবদ্ধ রাখ।"[সূরা আন্-নিসা ৩] অনুরূপভাবে এ বিষয়টি বহু হাদীসেও এসেছে।
প্রশ্ন ২৭: স্ত্রী সহবাসের পর পানি নেই, ফরদ্ব গোসল করা অসম্ভব; এ অবস্থায় তায়াম্মুম
করলে শরীর পাক হবে কি না?
উত্তর: যদি দেখেন যে, পানি পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলে নামাযের ওয়াক্ত পাবেন না; তাহলে অবশ্যই তায়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে। তবে পানি পাওয়া মাত্রই গোসল করতে হবে। আর যদি নামাযের শেষ ওয়াক্তের পূর্বেই পানি পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে তবে জায়েয হবে না। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন: "যদি তোমরা স্ত্রী সঙ্গমের পর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও।" [সূরা আল মায়েদা: ৬]
উত্তর: যদি দেখেন যে, পানি পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলে নামাযের ওয়াক্ত পাবেন না; তাহলে অবশ্যই তায়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে। তবে পানি পাওয়া মাত্রই গোসল করতে হবে। আর যদি নামাযের শেষ ওয়াক্তের পূর্বেই পানি পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে তবে জায়েয হবে না। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন: "যদি তোমরা স্ত্রী সঙ্গমের পর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও।" [সূরা আল মায়েদা: ৬]
প্রশ্ন ২৮: রমাদ্বানের সেহরী খাওয়ার সময়
প্রায় শেষ অথচ আমার শরীর নাপাক; এ অবস্থায় আমি সেহরী খেয়ে সওম
পালন করতে পারবো কি না?
উত্তর: হাঁ পারবেন। কারণ, শরীর পবিত্র হওয়ার সাথে খাবার গ্রহণের বা সওম সাধনার কোন সম্পর্ক নেই। বরং হাদীস শরীফে এসছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে স্ত্রী সহবাসের পর গোসল না করেই ঘুমাতেন এবং সকালে গোসল করতেন ও সওম সাধনা করতেন। সহীহ্ বুখারীতে এ ধরনের বর্ণনা রয়েছে।
উত্তর: হাঁ পারবেন। কারণ, শরীর পবিত্র হওয়ার সাথে খাবার গ্রহণের বা সওম সাধনার কোন সম্পর্ক নেই। বরং হাদীস শরীফে এসছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে স্ত্রী সহবাসের পর গোসল না করেই ঘুমাতেন এবং সকালে গোসল করতেন ও সওম সাধনা করতেন। সহীহ্ বুখারীতে এ ধরনের বর্ণনা রয়েছে।
প্রশ্ন ২৯: আকিকা কি এবং কিভাবে তা পালন
করতে হয়?
উত্তর: আকীকা হলো সন্তানপ্রাপ্তির কারণে আল্লাহ তা‘আলার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ একটি প্রাণী যবেহ করা। সহীহ হাদীস অনুসারে,
* প্রাণীটি হবে ছাগল— ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল।
* সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকীকা করা সুন্নত। কোনো কারণে সম্ভব না হলে চৌদ্দতম বা একুশতম দিবসেও করা যায়। এর পরে গেলে তা কাদ্বা হয়ে যাবে।
* কুরবানির গোশ্তের হুকুমের মতোই আকীকার গোশ্তের হুকুম; অর্থাৎ নিজে খেতে পারবেন এবং সবাইকে খাওয়াতে পারবেন।
* আকীকার গোশ্তের টুকরো বড় বড় রাখা সুন্নাত।
* কুরবানির প্রাণীর সাথে আকীকার অংশ দেওয়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
উত্তর: আকীকা হলো সন্তানপ্রাপ্তির কারণে আল্লাহ তা‘আলার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ একটি প্রাণী যবেহ করা। সহীহ হাদীস অনুসারে,
* প্রাণীটি হবে ছাগল— ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল।
* সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকীকা করা সুন্নত। কোনো কারণে সম্ভব না হলে চৌদ্দতম বা একুশতম দিবসেও করা যায়। এর পরে গেলে তা কাদ্বা হয়ে যাবে।
* কুরবানির গোশ্তের হুকুমের মতোই আকীকার গোশ্তের হুকুম; অর্থাৎ নিজে খেতে পারবেন এবং সবাইকে খাওয়াতে পারবেন।
* আকীকার গোশ্তের টুকরো বড় বড় রাখা সুন্নাত।
* কুরবানির প্রাণীর সাথে আকীকার অংশ দেওয়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
প্রশ্ন ৩০: ইসলামে জীবন বীমার হুকুম কি? জীবন বীমা কি কোন ভাবে জায়েয হবে? বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামের নামে বিভিন্ন জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারা এটাকে ইসলাম সম্মত বলে প্রচার করে থাকে। আমরা কি বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী জীবন বীমাগুলো করতে পারি? দিকনির্দেশনা আশা করছি।
উত্তর: ইসলামে ‘জীবন-বীমা’ অবৈধ। জীবনের বীমা বা নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা আল্লাহ ব্যতীত কারও নেই। বাংলাদেশে ইসলামের নামে প্রচলিত যে সমস্ত বীমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলো শরীয়তসম্মত কাজ করছে না। কেননা, বীমাকে ব্যবসা হিসেবে পরিচালনা করা ইসলাম সমর্থিত নয়। তাই সেসব প্রচলিত জীবন-বীমায় অংশগ্রহণ করা যাবে না। তবে ইসলাম একধরনের‘বীমা’ (জীবন-বীমা নয়) -এর অনুমতি দেয়, যার মূলকথা পারস্পরিক সহযোগিতা। যেমন, একই শ্রেণিভুক্ত একদল ব্যবসায়ী (যাদের ক্ষতির সম্ভাবনা সমপরিমাণের), তারা তাদের মধ্য থেকে কেউ বিপদগ্রস্ত হলে অন্যরা তাকে সহযোগিতা করবে— এ-ধরনের ‘বীমা’ বৈধ। এটি সম্পূর্ণ সাহায্য-সহযোগিতামূলক, ব্যবসায়ী অংশীদারিত্ব থাকা-না থাকার উপর নির্ভর করবে না। আর বর্তমানের প্রচলিত ‘ইসলামী’(?) বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র তাদের সাথে ব্যবসায়-অংশীদারিত্বে থাকা ব্যক্তিদের জন্য সদকা/তাবাররু ফাণ্ড করে তা থেকে প্রদান করে থাকে। আর এর ফলে সেসব প্রতিষ্ঠানের অংশীদাররা নিজের সদকা নিজেই গ্রহণ করছে— যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের বীমার সমর্থনে তারা যেসব দলীল-প্রমাণ উল্লেখ করে, মূলতঃ তার সাথে বীমার কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রশ্ন ৩১: আসরের নামাযের পর শুনেছি আর
কোন নামায নাই। আবার মসজিদে প্রবেশ করার পর দু'রাকাত নামায পড়ার গুরুত্ব অনেকেই জোর দিয়ে বলে থাকেন। কোনটি বেশী সুন্নাতের
নিকটবর্তী- আসরের পর মসজিদে প্রবেশ করার পর দু'রাকাত
স্বলাত পড়বো? না কি না পড়েই বসে পড়তে পারবো?
উত্তর: আসরের পর কোনো নামায নেই— এটি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত; আবার মসজিদে প্রবেশ করলে দু‘রাকা‘আত পড়ার কথাও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আলেমরা এখানে দু‘ধরনের মত দিয়ে থাকেন:
১. নিষেধ করার হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে তাহিয়্যাতুল মসজিদ না পড়ে বসে যাওয়া।
২. নিষেধ করার হাদীসকে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ার হাদীস দ্বারা বিশেষায়িত করে একে ব্যতিক্রম হিসেবে গণ্য করা এবং দু‘রাকা‘আত পড়া।
প্রথমটি ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালেক রাহিমাহুমাল্লাহ্ এবং দ্বিতীয়টি ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ রাহিমাহুমাল্লাহ্ -এর মত।
তবে দ্বিতীয় মতটি আমার নিকট প্রাধান্যপ্রাপ্ত।
উত্তর: আসরের পর কোনো নামায নেই— এটি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত; আবার মসজিদে প্রবেশ করলে দু‘রাকা‘আত পড়ার কথাও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আলেমরা এখানে দু‘ধরনের মত দিয়ে থাকেন:
১. নিষেধ করার হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে তাহিয়্যাতুল মসজিদ না পড়ে বসে যাওয়া।
২. নিষেধ করার হাদীসকে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ার হাদীস দ্বারা বিশেষায়িত করে একে ব্যতিক্রম হিসেবে গণ্য করা এবং দু‘রাকা‘আত পড়া।
প্রথমটি ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালেক রাহিমাহুমাল্লাহ্ এবং দ্বিতীয়টি ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম আহমদ রাহিমাহুমাল্লাহ্ -এর মত।
তবে দ্বিতীয় মতটি আমার নিকট প্রাধান্যপ্রাপ্ত।
প্রশ্ন ৩২: আলেমগণ বলেন যে, রমাদ্বান মাসে
শয়তানকে শৃংখলাবদ্ধ করে রাখা হয়। প্রশ্ন হলো তারপরও মুসলিমগণ এ মাসে অন্যায়, অবাধ্যতা ও
পাপাচারে লিপ্ত হয় কেন?
উত্তর: রমাদ্বান মাসে শয়তানকে শৃংখলিত রাখার পরও মুসলিমরা অপরাধ কেনো করে থাকে এ প্রশ্নের কয়েকটি উত্তর রয়েছে।
একঃ এক হাদীসে রয়েছে, শয়তানদেরকে শৃংখলিত করা হয়, কিন্তু অপর হাদীসে এসেছে, ভীষণ দুষ্ট শয়তানদেরকে শৃংখলিত করা হয়। আর উসূলীগণ বলে থাকেন যে, মূলতঃ দ্বিতীয় হাদীসটি প্রথম হাদীসের জন্য ব্যাখ্যাস্বরূপ। সুতরাং সব শয়তানকে শৃংখলিত করা হয় না, কেবল ভীষণ দুষ্ট প্রকৃতির শয়তানকে শৃংখলিত করা হয়, তাই ছোট ছোট শয়তান মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করতে পারে।
দুইঃ শয়তানকে শৃংখলিত করে রাখার পরও অপরাপর ১১ মাস শয়তান যে প্ররোচনা দিয়ে রেখেছিল সেটার প্রভাব অবশিষ্ট থাকার কারণে সে রমাদ্বান মাসেও অন্যায় করে বসে।
তিনঃ শয়তান ছাড়াও মানুষের কুপ্রবৃত্তিমূলক আত্মা মানুষকে অন্যায়কাজে প্ররোচিত করে থাকে। সুতরাং শয়তানরা শৃংখলিত থাকলেও নাফসে আম্মারা তাকে খারাপ কাজে প্রবৃত্ত করে।
উত্তর: রমাদ্বান মাসে শয়তানকে শৃংখলিত রাখার পরও মুসলিমরা অপরাধ কেনো করে থাকে এ প্রশ্নের কয়েকটি উত্তর রয়েছে।
একঃ এক হাদীসে রয়েছে, শয়তানদেরকে শৃংখলিত করা হয়, কিন্তু অপর হাদীসে এসেছে, ভীষণ দুষ্ট শয়তানদেরকে শৃংখলিত করা হয়। আর উসূলীগণ বলে থাকেন যে, মূলতঃ দ্বিতীয় হাদীসটি প্রথম হাদীসের জন্য ব্যাখ্যাস্বরূপ। সুতরাং সব শয়তানকে শৃংখলিত করা হয় না, কেবল ভীষণ দুষ্ট প্রকৃতির শয়তানকে শৃংখলিত করা হয়, তাই ছোট ছোট শয়তান মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করতে পারে।
দুইঃ শয়তানকে শৃংখলিত করে রাখার পরও অপরাপর ১১ মাস শয়তান যে প্ররোচনা দিয়ে রেখেছিল সেটার প্রভাব অবশিষ্ট থাকার কারণে সে রমাদ্বান মাসেও অন্যায় করে বসে।
তিনঃ শয়তান ছাড়াও মানুষের কুপ্রবৃত্তিমূলক আত্মা মানুষকে অন্যায়কাজে প্ররোচিত করে থাকে। সুতরাং শয়তানরা শৃংখলিত থাকলেও নাফসে আম্মারা তাকে খারাপ কাজে প্রবৃত্ত করে।
প্রশ্ন ৩৩: সিয়াম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেয়া
যাবে কি না? সিয়াম অবস্থায় যদি ইচ্ছাকৃত
বা অনিচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা এসে যায় এবং তার ফলে মজী বের হয়, তাহলে কি
সিয়ামের ক্ষতি হবে?আর যদি স্ত্রী
সহবাস হয়ে যায়, অথবা কোনরূপ মৈথুনের ফলে
উত্তেজনাসহ বীর্য বের হয়ে পড়ে, তাহলে রোযার অবস্থা কি হবে এ
বং সেক্ষেত্রে করণীয় কি হবে? এতে করে কি শুধু
কায্বা আদায় করতে হবে না কি কাফফারা দিতে হবে?
উত্তর: সিয়াম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেওয়া জায়েয, তবে শর্ত হচ্ছে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এজন্য কোন কোন আলেম বলেন, যুবকদের উচিত এ কাজ থেকে বিরত থাকা। কারণ এর কারণে ফেতনায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবন রয়েছে।
সিয়াম অবস্থায় মযী বের হলে সিয়াম নষ্ট হয় না।
কিন্তু সিয়াম রত থেকে জাগ্রত অবস্থায় যদি কোনো কারণে উত্তেজনাসহ বীর্য বের হয়ে যায়, তবে:
একঃ তার সাওম নষ্ট হয়ে যাবে,
দুইঃ কিন্তু সে দিনের বাকী অংশ সাওম নষ্ট হয় (যেমন পানাহার ও সহবাস) এমন অন্য কোনো কাজ করতে পারবে না।
তিনঃ রমাদ্বানের পরে সে একটি সওম কাদ্বা করতে হবে।
আর যদি স্ত্রী সহবাস করে ফেলে তবে তার উপর কয়েকটি বিধান আপতিত হবে:
একঃ তার সাওম নষ্ট হয়ে যাবে।
দুইঃ তাকে দিনের বাকী অংশ সাওম নষ্ট হয় (যেমন পানাহার ও সহবাস) এমন কিছু থেকে দূরে থাকতে হবে।
তিনঃ তাকে সেটার কাদ্বা করতে হবে।
চারঃ তাকে সেটার জন্য কাফফারা দিতে হবে। আর তা হচ্ছে, অনবরত ষাটদিন সাওম রাখতে হবে, অথবা ষাটজন মিসকীনকে (স্বাভাবিক) খাবার খাওয়াতে হবে বা দিতে হবে।
উত্তর: সিয়াম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেওয়া জায়েয, তবে শর্ত হচ্ছে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এজন্য কোন কোন আলেম বলেন, যুবকদের উচিত এ কাজ থেকে বিরত থাকা। কারণ এর কারণে ফেতনায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবন রয়েছে।
সিয়াম অবস্থায় মযী বের হলে সিয়াম নষ্ট হয় না।
কিন্তু সিয়াম রত থেকে জাগ্রত অবস্থায় যদি কোনো কারণে উত্তেজনাসহ বীর্য বের হয়ে যায়, তবে:
একঃ তার সাওম নষ্ট হয়ে যাবে,
দুইঃ কিন্তু সে দিনের বাকী অংশ সাওম নষ্ট হয় (যেমন পানাহার ও সহবাস) এমন অন্য কোনো কাজ করতে পারবে না।
তিনঃ রমাদ্বানের পরে সে একটি সওম কাদ্বা করতে হবে।
আর যদি স্ত্রী সহবাস করে ফেলে তবে তার উপর কয়েকটি বিধান আপতিত হবে:
একঃ তার সাওম নষ্ট হয়ে যাবে।
দুইঃ তাকে দিনের বাকী অংশ সাওম নষ্ট হয় (যেমন পানাহার ও সহবাস) এমন কিছু থেকে দূরে থাকতে হবে।
তিনঃ তাকে সেটার কাদ্বা করতে হবে।
চারঃ তাকে সেটার জন্য কাফফারা দিতে হবে। আর তা হচ্ছে, অনবরত ষাটদিন সাওম রাখতে হবে, অথবা ষাটজন মিসকীনকে (স্বাভাবিক) খাবার খাওয়াতে হবে বা দিতে হবে।
প্রশ্ন ৩৪: রমাদ্বানে মেয়েদের মাসিক
সমস্যা হয়ে যাওয়ার ফলে যে রোযাগুলো বাদ পড়ে, সেগুলো যদি
অবহেলায় বা কোন কারণ বশতঃ বছরের মধ্যে কায্বা করতে না পারে, তাহলে করণীয়
কি? পরের বছর কি এগুলো আদায় করা যাবে? আর দেরী হওয়ার
জন্য কি গোনাহগার হবে?
উত্তর: মাসিকের কারণে যে সওম বাদ পড়ে যাবে সেটা পরবর্তী রমাদ্বান আসার আগেই রেখে শেষ করতে হবে। যদি না রাখা হয়, তবে পরের রমাদ্বানের পরে হলেও রাখতে হবে, তবে এমতাবস্থায় সে গোনাহগার হবে।
উত্তর: মাসিকের কারণে যে সওম বাদ পড়ে যাবে সেটা পরবর্তী রমাদ্বান আসার আগেই রেখে শেষ করতে হবে। যদি না রাখা হয়, তবে পরের রমাদ্বানের পরে হলেও রাখতে হবে, তবে এমতাবস্থায় সে গোনাহগার হবে।
প্রশ্ন ৩৫: আমি একটি পাঁচতারা হোটেলে চাকুরী করি। এখানে মদ পরিবেশনের অনুমতি নেই। তবে নববিবাহিত দম্পতির মধুচন্দ্রিমা উপলক্ষে তারা যে রুম ভাড়া নেয়, তা সাজানো এবং এ মধুচন্দ্রিমার আয়োজনে আঙ্গুরের রস থেকে তৈরী এক ধরনের পানীয় ব্যববার করে থাকে হোটেল কর্তৃপক্ষ। যার নাম Sparklink Drink। যারা ক্রয় করে তারা বলে এটি আঙ্গুরের রস থেকে তৈরী। কিন্তু কেউ কেউ বলে যে, এগুলোতে হালকা এলকোহল ব্যবহার হয়। ঠিক যেমন সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে Mussi নামক যে বীরা বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যাপারটি পুরোপুরি নিশ্চিত নয় যে, এগুলোতে এলকোহল আছে। এ অবস্থায় উক্ত হোটেলে কি আমার চাকুরী করা ঠিক হবে?
উত্তর: যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত না হবে যে, তাতে কোনো মদ নেই, ততক্ষণ সেটা সাধারণ পানীয় হিসেবেই ধর্তব্য হবে, আর সেখানে চাকুরী করাতে কোনো বাধা নেই। আর যখন প্রমাণিত হবে যে, সে পানীয়ের মধ্যে মদ আছে তখন তাকে পরিবেশনকারী পদে চাকুরী করা জায়েয হবে না। অন্য সেকশনে চাকুরী করা জায়েয হবে।
প্রশ্ন ৩৬: গরীব মেয়ের বিয়ের জন্য কোন্
কোন্ খাত থেকে দান করা যাবে? যেমন যাকাত, উশর, ফিৎরা, সাধারণ সদাকা
ইত্যাদি। আবার কেউ কেউ সুদী ব্যাংকে টাকা রাখে এবং বলে যে, সুদের টাকা
আমি নেব না; বরং তা দিয়ে সেবামূলক কাজ
করবো। এক্ষেত্রে কি গরীব মেয়েদের বিয়ের জন্য সেসব সুদের টাকা ব্যবহার করা যাবে?
উত্তর: গরীব মেয়ের বিয়ের জন্য সাধারণ সাদকা থেকে দান করা যাবে, অনুরূপভাব যাকাত, উশর থেকেও ফুকারা ও মাসাকীনদের হিস্যা থেকে প্রদান করা যাবে। তবে ফেতরা থেকে টাকা হিসেবে প্রদান করা যাবে না। তাকে ফেতরা হিসেবে খাবার দেওয়া যাবে, তারপর যদি সে গরীর সেটাকে অন্য কাজে লাগায় তার জন্য ফেতরা দাতা দায়ী হবে না। জেনে-শুনে সুদী ব্যাংকে টাকা রাখা জায়েয নয়। সুতরাং সুদের টাকা গরীবদেরকে প্রদান করবে এ ধরণের কথা আগে থেকে বলে অন্যায় করলে সেটা গ্রহণযোগ্য বক্তব্য হয় না। সে অবশ্যই হারাম খেলো। এটা অনেকটা গান-বাদ্য গেয়ে (কনসার্ট করে) টাকা রোযগার করে বন্যা দুর্গতদের দেওয়ার মত কাজ। যা পুরোপুরিই হারাম। তাই সুদি ব্যাংকে কোনো ক্রমেই টাকা রাখা যাবে না। যদি না জেনে রাখা হয়, আর তার মাধ্যমে কোনো সুদের টাকা অর্জিত হয়ে যায়, তবে সেটা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য সওয়াবের আশা ব্যতীত জনকল্যাণমূলক কাজ, যেমন গরীব মেয়েদের বিয়ের জন্য দেওয়া যাবে। আল্লাহই ভালো জানেন।
উত্তর: গরীব মেয়ের বিয়ের জন্য সাধারণ সাদকা থেকে দান করা যাবে, অনুরূপভাব যাকাত, উশর থেকেও ফুকারা ও মাসাকীনদের হিস্যা থেকে প্রদান করা যাবে। তবে ফেতরা থেকে টাকা হিসেবে প্রদান করা যাবে না। তাকে ফেতরা হিসেবে খাবার দেওয়া যাবে, তারপর যদি সে গরীর সেটাকে অন্য কাজে লাগায় তার জন্য ফেতরা দাতা দায়ী হবে না। জেনে-শুনে সুদী ব্যাংকে টাকা রাখা জায়েয নয়। সুতরাং সুদের টাকা গরীবদেরকে প্রদান করবে এ ধরণের কথা আগে থেকে বলে অন্যায় করলে সেটা গ্রহণযোগ্য বক্তব্য হয় না। সে অবশ্যই হারাম খেলো। এটা অনেকটা গান-বাদ্য গেয়ে (কনসার্ট করে) টাকা রোযগার করে বন্যা দুর্গতদের দেওয়ার মত কাজ। যা পুরোপুরিই হারাম। তাই সুদি ব্যাংকে কোনো ক্রমেই টাকা রাখা যাবে না। যদি না জেনে রাখা হয়, আর তার মাধ্যমে কোনো সুদের টাকা অর্জিত হয়ে যায়, তবে সেটা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য সওয়াবের আশা ব্যতীত জনকল্যাণমূলক কাজ, যেমন গরীব মেয়েদের বিয়ের জন্য দেওয়া যাবে। আল্লাহই ভালো জানেন।
প্রশ্ন ৩৭: আমি আম্মা-আব্বার একমাত্র
মেয়ে। আমার তিন ভাই আছে। আমার আব্বার উইল মোতাবেক আমি আমার ভাইদের সমান সম্পত্তি অর্থাৎ সমমূল্যের একটি ফ্ল্যাট পেয়েছি যার
মূল্য কমপক্ষে ৮০ লাখ, উর্ধ্ব এক কোটি। এখন যদি আমার
আম্মা তার নামের ফ্ল্যাট আমার তিন ভাইয়ের নামে দেন (যার মূল্য কমপক্ষে ৮০ লাখ, উর্ধ্ব এক কোটি) ও
আমাকে শুধু ব্যাংকে গচ্ছিত ৫ লাখ টাকা দেন, তাহলে কি ঠিক
হবে? না কি আমাকে আমার ফ্ল্যাটের একটি অংশ ভাইদের নামে লিখে দিতে হবে?
উত্তর: বাবা কিংবা মা যদি ওয়ারিশের জন্য কোনো উইল করে যান, তবে সেটা অবৈধ উইল। হাদীসে স্পষ্টভাবে ওয়ারিশের জন্য উইল করতে নিষেধ করা হয়েছে। আপনার বাবা যে উইল করেছেন সেটি শরী‘আত গর্হিত কাজ। আপনি শরী‘আত মোতাবেক অংশ গ্রহণ করে বাকী অংশ অপরাপর ওয়ারিশদেরকে ফেরৎ দিন, যাতে করে আপনার পিতার গোনাহ ক্ষমা করা হয়। আপনার কথা মোতাবেক আপনার পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে আপনার মা পাবেন, ৮/১ (এক অষ্টমাংশ), বাকী অংশ সাত ভাগ হবে, প্রতি ভাই দু অংশ, আর আপনি পাবেন এক অংশ। সুতরাং আপনি সেভাবেই তা গ্রহণ করতে পারেন। অন্যথা হলে আপনি যেমন গুণাহগার হবেন তেমনি আপনার পিতাও অন্যায় করার কারণে গোনাহগার হবেন। কবরে শাস্তি পাবেন। আর আপনার মায়ের সম্পত্তিতে আপনার অংশ হবে, ৭/১ বা (এক সপ্তমাংশ)। যদি আপনার মাতা ইচ্ছা করে তা না দেন, তবে তিনি গোনাহগার হবেন। কবরে শাস্তি পাবেন।
উত্তর: বাবা কিংবা মা যদি ওয়ারিশের জন্য কোনো উইল করে যান, তবে সেটা অবৈধ উইল। হাদীসে স্পষ্টভাবে ওয়ারিশের জন্য উইল করতে নিষেধ করা হয়েছে। আপনার বাবা যে উইল করেছেন সেটি শরী‘আত গর্হিত কাজ। আপনি শরী‘আত মোতাবেক অংশ গ্রহণ করে বাকী অংশ অপরাপর ওয়ারিশদেরকে ফেরৎ দিন, যাতে করে আপনার পিতার গোনাহ ক্ষমা করা হয়। আপনার কথা মোতাবেক আপনার পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে আপনার মা পাবেন, ৮/১ (এক অষ্টমাংশ), বাকী অংশ সাত ভাগ হবে, প্রতি ভাই দু অংশ, আর আপনি পাবেন এক অংশ। সুতরাং আপনি সেভাবেই তা গ্রহণ করতে পারেন। অন্যথা হলে আপনি যেমন গুণাহগার হবেন তেমনি আপনার পিতাও অন্যায় করার কারণে গোনাহগার হবেন। কবরে শাস্তি পাবেন। আর আপনার মায়ের সম্পত্তিতে আপনার অংশ হবে, ৭/১ বা (এক সপ্তমাংশ)। যদি আপনার মাতা ইচ্ছা করে তা না দেন, তবে তিনি গোনাহগার হবেন। কবরে শাস্তি পাবেন।
প্রশ্ন ৩৮: কোন ব্যক্তি যদি তার জীবনে
কখনোই ফিতরাহ আদায় না করে ও যাকাত আদায় না করে এবং সে মনে করে যে, এগুলো আদায় করলে তার সম্পদ কমে যাবে। সে এটাও বুঝে
না যে, তার এটা আদায় করা উচিৎ। পরবর্তীতে তার
সন্তানদের থেকে কেউ এ বিষয়টি বোঝে এবং ফিতরাহ ও যাকাত আদায় করতে বললে তিনি আদায় করেন। হয় চাপে পড়ে
আদায় করে অথবা কিছুটা আদায় করে কিছুটা বাকি রাখে। প্রশ্ন হলো
বিগত জীবনে যে আদায় করেনি সেজন্য এবং পরবর্তী সময়ে আংশিক আদায় করে; এখন এজন্য তার কি করণীয়। তার সন্তানেরা কি কোন উপায়ে তা আদায় করতে চেষ্টা করতে পারবে? তার দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য কি এখনো কিছু সম্বল সঞ্চয় করতে পারবে?
উত্তর: যাকাত ও ফেতরা দু’টোই অবশ্য পালণীয় বিষয়। তা আদায় করা হয়েছে তা দেরীতে হলেও আদায় হবে। যদিও যাকাতের ফিতর দেরীতে আদায় করলে যাকাতুল ফিতর হিসেবে সেটা ধর্তব্য হবে না, তবুও সেটা আদায় করতে হবে। আর যাকাত সেটা তো গরীবের হক ও তার জিম্মায় বাকী রয়েছে। যা আদায় হয়নি তা আদায় করতে হবে। তিনি যদি তা আদায় করেন তো ভালো কথা, নতুবা তার সন্তানরা তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায়ের মত তাও আদায় করার পর সম্পদ বন্টন করবে। আর যদি সম্পদ না রেখে যায়, তবে পিতাকে গোনাহ থেকে মুক্ত করতে হলে সন্তানরা তা প্রদান করবে।
উত্তর: যাকাত ও ফেতরা দু’টোই অবশ্য পালণীয় বিষয়। তা আদায় করা হয়েছে তা দেরীতে হলেও আদায় হবে। যদিও যাকাতের ফিতর দেরীতে আদায় করলে যাকাতুল ফিতর হিসেবে সেটা ধর্তব্য হবে না, তবুও সেটা আদায় করতে হবে। আর যাকাত সেটা তো গরীবের হক ও তার জিম্মায় বাকী রয়েছে। যা আদায় হয়নি তা আদায় করতে হবে। তিনি যদি তা আদায় করেন তো ভালো কথা, নতুবা তার সন্তানরা তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায়ের মত তাও আদায় করার পর সম্পদ বন্টন করবে। আর যদি সম্পদ না রেখে যায়, তবে পিতাকে গোনাহ থেকে মুক্ত করতে হলে সন্তানরা তা প্রদান করবে।
প্রশ্ন ৩৯: কোন ব্যক্তি যদি আপন
সন্তান-সন্তুতির জন্য খরচ করতে কৃপনতা করে এবং আত্মীয় স্বজনের জন্যও তেমন খরচ করতে
না চায়। যদিও খরচ করে, তবে তা সুনামের আশায় করে। এ অবস্থায়
দুনিয়ার ও আখেরাতে তার কি কি ক্ষতি হতে পারে? নাকি
কিছুই হবেনা। জানালে উপকৃত হবো।
উত্তর: নিঃসন্দেহে কৃপণতা একটি খারাপ গুণ। সন্তান-সন্তুতির জন্য খরচ করাও সদকা করার মত সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। যদি কেউ তা না করে, তবে সন্তান-সন্ততিরা তাদের একান্ত প্রয়োজন মেটাতে যা দরকার হবে তা প্রচলিত নিয়ম অনুসারে নিতে পারবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাকে তা-ই বলেছেন। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “কোনো মানুষের জন্য যাদের ভরণপোষন তার উপর ওয়াজিব তাদের ভরণ পোষণ না করে ক্ষতিগ্রস্ত করাই তার গুনাহ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। [সুনান আবি দাউদ: ১৬৯২]
উত্তর: নিঃসন্দেহে কৃপণতা একটি খারাপ গুণ। সন্তান-সন্তুতির জন্য খরচ করাও সদকা করার মত সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। যদি কেউ তা না করে, তবে সন্তান-সন্ততিরা তাদের একান্ত প্রয়োজন মেটাতে যা দরকার হবে তা প্রচলিত নিয়ম অনুসারে নিতে পারবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাকে তা-ই বলেছেন। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “কোনো মানুষের জন্য যাদের ভরণপোষন তার উপর ওয়াজিব তাদের ভরণ পোষণ না করে ক্ষতিগ্রস্ত করাই তার গুনাহ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। [সুনান আবি দাউদ: ১৬৯২]
প্রশ্ন ৪০: শরীয়তে কুরবানীর হুকুম কি? কুরবানী কি সবাইকেই করতে হবে নাকি পরিবারের প্রধান করলেই হবে? কুরবানী করার জন্য কতটুকু সম্পদের মালিক হওয়া জরুরী? কুরবানী না দিলে কি গোনাহ্ হবে? আর যদি ভুলে
অথবা অজ্ঞানতা বশতঃ কুরবানী না করে তাহলে পরবর্তীতে কি করণীয়?
উত্তর: কুরবানীর মাস‘আলাটিতে আলেমদের মধ্যে মতভেদ আছে। ইমাম আবু হানিফা র. এর মতে কুরবানী করা ওয়াজিব। অধিকাংশ ইমামের নিকট সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। উভয় পক্ষেই প্রমাণাদি রয়েছে। তবে সাবধানতা হচ্ছে কুরবানী আবশ্যক হওয়া।
ইমাম আবু হানিফা র. এর মতে সামর্থবান সবাইকে কুরবানী করতে হবে। পক্ষান্তরে ইমাম আহমদ এর মতে এক পরিবারে পরিবার প্রধান কুরবানী করলেই সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য ইমাম আবু হানিফা র. এ নিকট নেসাব পরিমাণ সম্পদ (২০০ দিরহাম বা ২০ দীনার) হওয়া জরুরী। অন্য ইমামদের নিকট যেহেতু কুরবানী ওয়াজিব নয়, তাই ঈদের দিন-রাত আর আইয়ামে তাশরীকের দিন-রাতগুলোর খরচ মিটানোর পর কুরবানী পশু ক্রয় করার সামর্থ থাকলেই কুরবানী করা সুন্নাত। যদি অজ্ঞতাবশত কুরবানী না করে তবে সেটার জন্য ক্ষমা চাইত হবে এবং তাওবা করতে হবে। যদি মারা যায়, তবে মৃত্যুর সময় ওয়াসিয়ত করতে হবে। আর যদি না দেওয়া হয়, তবে যেন সেটার দাম সাদকা করা হয়।
উত্তর: কুরবানীর মাস‘আলাটিতে আলেমদের মধ্যে মতভেদ আছে। ইমাম আবু হানিফা র. এর মতে কুরবানী করা ওয়াজিব। অধিকাংশ ইমামের নিকট সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। উভয় পক্ষেই প্রমাণাদি রয়েছে। তবে সাবধানতা হচ্ছে কুরবানী আবশ্যক হওয়া।
ইমাম আবু হানিফা র. এর মতে সামর্থবান সবাইকে কুরবানী করতে হবে। পক্ষান্তরে ইমাম আহমদ এর মতে এক পরিবারে পরিবার প্রধান কুরবানী করলেই সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে। কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য ইমাম আবু হানিফা র. এ নিকট নেসাব পরিমাণ সম্পদ (২০০ দিরহাম বা ২০ দীনার) হওয়া জরুরী। অন্য ইমামদের নিকট যেহেতু কুরবানী ওয়াজিব নয়, তাই ঈদের দিন-রাত আর আইয়ামে তাশরীকের দিন-রাতগুলোর খরচ মিটানোর পর কুরবানী পশু ক্রয় করার সামর্থ থাকলেই কুরবানী করা সুন্নাত। যদি অজ্ঞতাবশত কুরবানী না করে তবে সেটার জন্য ক্ষমা চাইত হবে এবং তাওবা করতে হবে। যদি মারা যায়, তবে মৃত্যুর সময় ওয়াসিয়ত করতে হবে। আর যদি না দেওয়া হয়, তবে যেন সেটার দাম সাদকা করা হয়।
প্রশ্ন ৪১: কোন ব্যক্তি বিগত সময়ে
কুরবানী করতো। মাঝে ব্যবসায় নানা সমস্যা দেখা দিলে কয়েক বছর কুরবানী করতে পারেনি। আগে যখন
কোরবানী করতো তখন গরুই কুরবানী করতো। কিন্তু এখন কুরবানীর ঈদ এলে যখনই তাকে কুরবানীর কথা বলা হয়, তখনই তিনি বলেন আগে বড় বড় গরু কুরবানী করেছি এখন ছোটটা করতে পারবোনা। এ অযুহাত
দেখিয়ে এখন তিনি আর কুরবানী করছেন না। এমতাবস্থায় তার কি করণীয় এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদেরই বা কি করণীয়?
উত্তর: তাকে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে যে কুরবানী বড় ছোট হওয়ার চেয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সামর্থ্য অনুযায়ী যা-ই দেবে তা-ই আল্লাহ কবুল করবেন। বড়টি দেওয়ার মধ্যে যদি আত্মপ্রশংসা কিংবা লোক দেখানো মানসিকতা কাজ করে, কিংবা আল্লাহ তার রিযিক কেন কমিয়ে দিল সে ব্যাপারে তার মনে কোনো প্রকার বিতৃষ্ণা কাজ করে তবে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, আল্লাহ ধন-সম্পদ কম-বেশ করে মানুষকে পরীক্ষা করেন। সে এ ধরনের কাজ করার অর্থ আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে নি।
মোটকথা, তাকে বোঝাতে হবে। প্রয়োজনে কোনো ভালো আলেমের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ভালো মানুষদের সঙ্গে উঠা-বসা করা শেখাতে হবে। গরীবদের অবস্থা সম্পর্কে জানাতে হবে। তার চেয়ে যারা খারাপ অবস্থায় আছে তাদের বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
উত্তর: তাকে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে যে কুরবানী বড় ছোট হওয়ার চেয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সামর্থ্য অনুযায়ী যা-ই দেবে তা-ই আল্লাহ কবুল করবেন। বড়টি দেওয়ার মধ্যে যদি আত্মপ্রশংসা কিংবা লোক দেখানো মানসিকতা কাজ করে, কিংবা আল্লাহ তার রিযিক কেন কমিয়ে দিল সে ব্যাপারে তার মনে কোনো প্রকার বিতৃষ্ণা কাজ করে তবে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, আল্লাহ ধন-সম্পদ কম-বেশ করে মানুষকে পরীক্ষা করেন। সে এ ধরনের কাজ করার অর্থ আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে নি।
মোটকথা, তাকে বোঝাতে হবে। প্রয়োজনে কোনো ভালো আলেমের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ভালো মানুষদের সঙ্গে উঠা-বসা করা শেখাতে হবে। গরীবদের অবস্থা সম্পর্কে জানাতে হবে। তার চেয়ে যারা খারাপ অবস্থায় আছে তাদের বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
প্রশ্ন ৪২: কোন স্ত্রীলোক যদি তার স্বামীকে না জানিয়ে কোন টাকা জমা করে বা একাউন্ট করে এবং তার নমিনী স্বামীকেই দেয়। কিন্তু সাময়িক সময়ের জন্য তা গোপন রাখে এ ভয়ে যে, সে হয়ত ভেঙে ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কি ঐ স্ত্রীলোকের গোনাহ্ হবে? আর হলে কোন পর্যায়ের গোনাহ্ হবে। জানালে উপকৃত হবো।
উত্তর: যদি তিনি স্বামীর টাকা থেকে তাকে না জানিয়ে জমা করেন, তাহলে সেটা জায়েয হবে না। কারণ, স্বামীর টাকার আমানতদার সে, আমানতে খেয়ানত করার অধিকার সে রাখে না। এ ধরনের কাজ কবীরা গোনাহ হতে পারে। আর যদি স্বামী তাকে যা কিছু হাত খরচের জন্য দেয়, সে সেটা খরচ না করে বা কিছু করে কিছু জমা করে রাখে তবে তাতে গোনাহ হবে না। কারণ সেটা তারই টাকা।
প্রশ্ন ৪৩: এক ব্যক্তি যা কিছু ইনকাম
করে ভালই করে। তার থেকে পিতা/মাতা এবং স্ত্রীর জন্যও খরচ করে। কিন্তু কোন
সম্পদ খরিদ করলে তা ভাইদের সাথে একত্রে করে এবং তার ভাইয়েরা পরবর্তীতে সেই সম্পদ
নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। আর তাকে ধোঁকা দেয়। এমতাবস্থায় কি ঐ লোকের কোন গোনাহ হবে? মানে
নিজের সন্তানদের জন্য যে কিছূই সঞ্চয় করেনি সে জন্য? এবং
উপরোক্ত কারণে তার অবর্তমানে তার সন্তানদের জন্য যদি সে কিছুই রেখে যেতে না পারে
তবে কি সে গোনাহগার হবে?
উত্তর: প্রথমতঃ পিতা-মাতার জন্য খরচ করা তার কর্তব্য।
দ্বিতীয়তঃ ভাইদের সাথে মিলে মিশে ক্রয় করা তার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এটা করার মধ্যে কোনো সওয়াবও নেই।
তৃতীয়তঃ সে ইচ্ছা করলে নিজের টাকায় নিজেই ভিন্নভাবে সবকিছু কিনতে পারে।
চতুর্থতঃ সন্তানের জন্য রেখে যেতে হবে এমন কোনো কথা বা বাধ্য বাধকতাও নেই।
পঞ্চমতঃ সে নিজের টাকা থেকে নিজের জীবনের জন্য, পরিবারের জন্য, আখেরাতের জন্য শরীয়ত মোতাবেক খরচ করবে, এটাই ইসলাম চায়।
ষষ্টতঃ নিঃসন্দেহে সন্তানদেরকে মানুষের মুখাপেক্ষী করে রাখার চেয়ে স্বাবলম্বী রেখে যাওয়া উত্তম।
তবে সেজন্য অন্যায় কাজে, বা কৃপণতা করে না খেয়ে, না পরে, দান-সাদকা না করে শুধু জমা করে অন্যের জন্য রেখে যাওয়া গুনাহের কাজ।
উত্তর: প্রথমতঃ পিতা-মাতার জন্য খরচ করা তার কর্তব্য।
দ্বিতীয়তঃ ভাইদের সাথে মিলে মিশে ক্রয় করা তার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এটা করার মধ্যে কোনো সওয়াবও নেই।
তৃতীয়তঃ সে ইচ্ছা করলে নিজের টাকায় নিজেই ভিন্নভাবে সবকিছু কিনতে পারে।
চতুর্থতঃ সন্তানের জন্য রেখে যেতে হবে এমন কোনো কথা বা বাধ্য বাধকতাও নেই।
পঞ্চমতঃ সে নিজের টাকা থেকে নিজের জীবনের জন্য, পরিবারের জন্য, আখেরাতের জন্য শরীয়ত মোতাবেক খরচ করবে, এটাই ইসলাম চায়।
ষষ্টতঃ নিঃসন্দেহে সন্তানদেরকে মানুষের মুখাপেক্ষী করে রাখার চেয়ে স্বাবলম্বী রেখে যাওয়া উত্তম।
তবে সেজন্য অন্যায় কাজে, বা কৃপণতা করে না খেয়ে, না পরে, দান-সাদকা না করে শুধু জমা করে অন্যের জন্য রেখে যাওয়া গুনাহের কাজ।
প্রশ্ন ৪৪: যাকাত সম্পর্কিত প্রশ্ন নিয়ে
আপনার শরনাপন্ন হলাম, আশা করি উত্তর দিযে বাধিত
করবেন। আমার স্ত্রীর কাছে প্রায় ৭ ভরি স্বর্নালংকার আছে, প্রতিবছর আমি এর যাকাত দিই, কিন্তু এ বছর আমি
প্রায় ৬ লক্ষ টাকা দেনা আছি, এ অবস্থায় আমাকে স্বর্নের
যাকাত দিতে হবে কিনা?
উত্তর: স্ত্রীর কাছে যে স্বর্ণালঙ্কার আছে তা যদি বিবাহের সময়ে দেওয়া দেন-মাহরের অলংকার হয়ে থাকে, তবে সেটার মালিক আপনি নন। সেটার মালিক স্ত্রী। সে-ই সেটার যাকাত দিবে।আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেন, তবে সেটা ভালো কথা। নতুবা তাকে স্বর্ণ বিক্রয় করে হলেও সেটার যাকাত দিতে হবে, অথবা নেসাবের নীচে নিয়ে আসবে।
আর যদি সে স্বর্ণালঙ্কার আপনি নিজের জন্যই গচ্ছিত হিসেবে রেখেছেন, যখন ইচ্ছা তা বিক্রি করার জন্য টাকা জমানোর মত করে রেখে থাকেন, তবে সেটার যাকাত আপনাকেই দিতে হবে।আর তখন ঋণের টাকা বাদ দিলে যদি নেসাব পরিমান স্বর্ণ না থাকে, তবে আপনার উপর যাকাত নেই।
আর আপনার ঋনের ভার আপনাকেই বহন করতে হবে। যদি আপনার কাছে যে সম্পদ আছে তা থেকে আপনার ঋনের পরিমান দেওয়ার পরে আর অবশিষ্ট সম্পদ নেসাব পরিমান না হয়, তবে আপনার উপর যাকাত নেই।
উত্তর: স্ত্রীর কাছে যে স্বর্ণালঙ্কার আছে তা যদি বিবাহের সময়ে দেওয়া দেন-মাহরের অলংকার হয়ে থাকে, তবে সেটার মালিক আপনি নন। সেটার মালিক স্ত্রী। সে-ই সেটার যাকাত দিবে।আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেন, তবে সেটা ভালো কথা। নতুবা তাকে স্বর্ণ বিক্রয় করে হলেও সেটার যাকাত দিতে হবে, অথবা নেসাবের নীচে নিয়ে আসবে।
আর যদি সে স্বর্ণালঙ্কার আপনি নিজের জন্যই গচ্ছিত হিসেবে রেখেছেন, যখন ইচ্ছা তা বিক্রি করার জন্য টাকা জমানোর মত করে রেখে থাকেন, তবে সেটার যাকাত আপনাকেই দিতে হবে।আর তখন ঋণের টাকা বাদ দিলে যদি নেসাব পরিমান স্বর্ণ না থাকে, তবে আপনার উপর যাকাত নেই।
আর আপনার ঋনের ভার আপনাকেই বহন করতে হবে। যদি আপনার কাছে যে সম্পদ আছে তা থেকে আপনার ঋনের পরিমান দেওয়ার পরে আর অবশিষ্ট সম্পদ নেসাব পরিমান না হয়, তবে আপনার উপর যাকাত নেই।
প্রশ্ন ৪৫: প্রবাসে দু’টি সমবায় সমিতি
কাছে আমি প্রায় ৬/৭ লক্ষ বিনিয়োগ হিসেবে দিয়েছি; যারা বাংলাদেশে দীর্ঘ্য মেয়াদি ভুমি কেনা বেচার ব্যাবসা বা অন্য যে কোন
হালাল ব্যবসা করবে, বছরান্তে তারা কাগজে কলমে সামান্য
লভ্যাংশও ঘোষনা করে, তবে কোন ক্যাশ এখনই পাচ্ছিনা,
উক্ত মূলধনের যাকাত আমাকে দিতে হবে কিনা? এ বিনিয়োগের কোন টাকার উপরই কি আমার প্রকৃত মালিকানা প্রতিষ্ঠিত আছে?
উত্তর: ব্যাপারটি সম্পর্কে আপনি ভালে জানেন, যদি বুঝতে পারেন যে সত্যি সত্যিই টাকাটা ব্যবসায় খাটছে, আর চাইলেই টাকা সম্পর্কে পূর্ণ হিসাব দিতে পারবে ও আপনি সেটার অংশ গ্রহণ করতে পারবেন, তাহলে আপনি সেটার যাকাত দিতে বাধ্য। আর যদি সন্দেহ হয় যে, জানি না তারা সেটা আমাকে পরিশোধ করবে কি না বা এ টাকা আর কোনো দিন পাওয়া যাবে কি না জানেন না, তাহলে সেটার উপর এখন যাকাত আসবে না। যখন হাতে আসবে, তখন সেটার যে বছর হাতে পেয়েছেন সেই এক বছরের যাকাত দিতে হবে।
মালিকানার প্রশ্নটিও আপনার ব্যবসায়ী পার্টনারের সততা ও ন্যায়নিষ্ঠতা সম্পর্কে জানার উপর নির্ভরশীল।
উত্তর: ব্যাপারটি সম্পর্কে আপনি ভালে জানেন, যদি বুঝতে পারেন যে সত্যি সত্যিই টাকাটা ব্যবসায় খাটছে, আর চাইলেই টাকা সম্পর্কে পূর্ণ হিসাব দিতে পারবে ও আপনি সেটার অংশ গ্রহণ করতে পারবেন, তাহলে আপনি সেটার যাকাত দিতে বাধ্য। আর যদি সন্দেহ হয় যে, জানি না তারা সেটা আমাকে পরিশোধ করবে কি না বা এ টাকা আর কোনো দিন পাওয়া যাবে কি না জানেন না, তাহলে সেটার উপর এখন যাকাত আসবে না। যখন হাতে আসবে, তখন সেটার যে বছর হাতে পেয়েছেন সেই এক বছরের যাকাত দিতে হবে।
মালিকানার প্রশ্নটিও আপনার ব্যবসায়ী পার্টনারের সততা ও ন্যায়নিষ্ঠতা সম্পর্কে জানার উপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন ৪৬: দেশের একটি ইসলামি
ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে আমার ৪ লক্ষ টাকার ১০ বছর মেয়াদি একটি বীমা আছে, ইতোমধ্যে গত ৮
বছরে আমি তাদের প্রায় ৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছি,আগামী দু’বছরে বাকি ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ
সাপেক্ষে ৩য় বছরের মাথায় গিয়ে আমার বীমার টাকা লাভসহ পাবার কথা। এখন পরিশোধিত
মূলধনের যাকাত দিতে হবে কিনা? এ বিনিয়োগের কোন টাকার উপরই
কি আমার প্রকৃত মালিকানা প্রতিষ্ঠিত আছে?
উত্তর: ইসলাম ইন্সুরেন্সগুলোর লাভ-লোকসান সন্দেহজনক। তবে এটা ঠিক যে, আপনি যে টাকা পরিশোধ করেছেন তা আপনার নিজস্ব টাকা। সেটার উপর যাকাত আসবে। যদি সে টাকা নিসাব পরিমাণ হয়ে থাকে, তবেই কেবল তাতে যাকাত আসবে। নতুবা নয়।
উত্তর: ইসলাম ইন্সুরেন্সগুলোর লাভ-লোকসান সন্দেহজনক। তবে এটা ঠিক যে, আপনি যে টাকা পরিশোধ করেছেন তা আপনার নিজস্ব টাকা। সেটার উপর যাকাত আসবে। যদি সে টাকা নিসাব পরিমাণ হয়ে থাকে, তবেই কেবল তাতে যাকাত আসবে। নতুবা নয়।
প্রশ্ন ৪৭: পাগলের উপর যাকাত
ফরদ্ব কি না? পাগলের সম্পদের তো কেউ না কেউ অবশ্যই
তত্ত্বাবধায়ক থাকে। সেক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ককে পাগলের পক্ষ হতে তার সম্পদ হতে যাকাত আদায় করতে হবে কি
না?
উত্তর: পাগল ও বাচ্চার সম্পদের উপর ইমাম আবু হানিফার মতে যাকাত নেই। তবে অন্যান্য ইমামদের নিকট তাদের সম্পদেও যাকাত আছে। তার তত্ত্বাবধায়ক সেটা থেকে যাকাত আদায় করে দিবে। আর এটাই অধিক শক্তিশালী মত।
উত্তর: পাগল ও বাচ্চার সম্পদের উপর ইমাম আবু হানিফার মতে যাকাত নেই। তবে অন্যান্য ইমামদের নিকট তাদের সম্পদেও যাকাত আছে। তার তত্ত্বাবধায়ক সেটা থেকে যাকাত আদায় করে দিবে। আর এটাই অধিক শক্তিশালী মত।
প্রশ্ন ৪৮: ব্যবহারিক স্বর্ণ ও
রৌপ্যের উপর যাকাত ফরদ্ব কি না? কি পরিমাণ অলংকার ব্যবহারিক হিসেবে
ধর্তব্য হবে? ব্যবহারিক অলংকার সহ যদি
নেসাব পূর্ণ হয়, তাহলে কি সে হিসেবে যাকাত
দিতে হবে? আর যদি ব্যবহারিক অলংকার বাদ দেয়ার পর এমন পরিমাণ অলংকার থাকে
যাতে নেসাব পূর্ণ হয় না, তাহলে কি ঐ অতিরিক্ত
অলংকারের উপর কোনভাবে যাকাত আসবে?
উত্তর: সে অলংকারই ব্যবহারিক অলঙ্কার বলে বিবেচিত হবে যা বেশির ভাগ সময় পরা হয়। আর যদি মাঝে মধ্যে বছরে বা কালে-ভদ্রে কোনো অলঙ্কার ব্যবহার করে থাকে,ার তবে সেটা ব্যবহারিক অলংকার নয়। সুতরাং যে সকল অলঙ্কার সম্পদ হিসেবে রাখবে, তা নেসাব পরিমান হলে যাকাত দিতে হবে। আর যে সকল অলঙ্কার অধিকাংশ সময় পরিধান করা হয়, সেটাতে অধিকাংশ আলেমের নিকট যাকাত নেই। ইমাম আবু হানিফা ও বর্তমান সময়ে শাইখ ইবন বায, শাইখ উসাইমীন সেটাতেও যাকাত দিতে হবে বলেছেন। তাই যদি আপনি মনে করেন যে,ব্যবহার্য স্বর্ণের যাকাত দেওয়াটাই অধিক যুক্তিযুক্ত, তবে আপনাকে ব্যবহারিক ও অব্যবহারিক সবগুলো মিলিয়ে নেসাব হলে সেটার যাকাত দিতে হবে। আর যদি মনে করেন যে, ব্যবহারিক স্বর্ণের যাকাত দেওয়া লাগবে না, তবে সেটা বাদ দিয়ে নেসাব পূর্ণ না হলে আপনার উপর যাকাত নেই।
এ মাসআলায় দু’টি মত যেহেতু রয়েছে, সেহেতু আপনার দ্বীনদারীর উপর ছেড়ে দেওয়া হলো। যদিও আমি মনে করি, ব্যবহার্য ও অব্যবহার্য সকল সম্পদেরই যাকাত দিতে হয়। আর এটাই বেশী শক্তিশালী অভিমত।
প্রশ্ন ৪৯: ব্যবসার পুঁজি বা সরঞ্জামের উপর যাকাত ফরদ্ব হবে কি না? হলে তার কোন পরিমাণ নির্ধারিত আছে কি? অথবা সরঞ্জামেরই বা কোন সীমা পরিসীমা আছে কি? দয়া করে জানাবেন। তেমনিভাবে যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি কিনে রাখা হয় অর্থাৎ, জমি কেনাবেচার ব্যবসা, তাহলে কি সে জমির উপর যাকাত ফরদ্ব হবে? আর যদি একটা জমি শুরুতে নিজের বাড়ী তৈরীর জন্য কেনা হলো, বেশ ক'বছর পরে দেখলে যে, ভালোই দাম উঠেছে, তাই বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করলো। এক্ষেত্রে জমির উপর যাকাত ফরদ্ব হবে? হলে কিভাবে আদায় করতে হবে?
উত্তর: ব্যবসার পুঁজি ও লাভ উভয়টিরই যাকাত দিতে হবে। যদি না সেটা সরঞ্জাম হয়ে যায়। ধরুন আপনার কাছে দশ লক্ষ টাকার পুঁজি রয়েছে, আর আপনার লাভ হয়েছে, দুল লক্ষ্ টাকা,এমতাবস্থায় আপনাকে দু’টিরই যাকাত দিতে হবে। কিন্তু যদি পুঁজি অন্য কিছুতে পরিণত হয়ে যায়, যেমন আপনি যদি দশ লক্ষ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছেন ভাড়া দেওয়ার জন্য, তখন আপনার উপর শুধু ভাড়ার টাকার উপর যাকাত আসবে, যদি সেটা নেসাব পরিমাণ হয়। অনুরূপভাবে দোকানে যদি দশ লক্ষ টাকা খরচ করে ডেকোরেশন বা বিল্ডিং তোলে থাকেন, তবে সেটার যাকাত আসবে না, শুধু লাভের উপর আসবে, যখন লাভ নেসাব পরিমান হবে। তদ্রূপ কল-কারখানায় যদি ২০ লাখ টাকা দিয়ে কল-কবজা কিনে থাকেন, তবে সেটার উপর যাকাত আসবে না, আসবে শুধু লাভের উপর । কিন্তু যদি সেটা টাকা হিসেবে থাকে যেমন আপনি দশ লক্ষ টাকার পুঁজি দিয়ে কাপড়ের দোকানে কাপড় উঠালেন, তখন দশ লক্ষ+লাভ পুরোটার উপরই যাকাত আসবে। মনে রাখবেন, ব্যবাসয়ী সরঞ্জামের কোনো সীমা নেই। যে জমি ব্যবসার জন্য খরিদ করা হয়েছে সে জমিনের উপর যাকাত আসবে। আর যে জমি বাড়ী করার জন্য খরিদ করা হয়েছে সে জমিনের উপর যাকাত আসবে না। এমনকি যদি লাভ দেখলে পরবর্তীতে বিক্রয় করাও হয়, তবুও তাতে যাকাত আসবে না। অবশ্য বিক্রি করার পর নেসাব পরিমাণ হলে এবং বছর পূর্ণ হলে সে টাকাতে যাকাত আসবে।
উত্তর: সে অলংকারই ব্যবহারিক অলঙ্কার বলে বিবেচিত হবে যা বেশির ভাগ সময় পরা হয়। আর যদি মাঝে মধ্যে বছরে বা কালে-ভদ্রে কোনো অলঙ্কার ব্যবহার করে থাকে,ার তবে সেটা ব্যবহারিক অলংকার নয়। সুতরাং যে সকল অলঙ্কার সম্পদ হিসেবে রাখবে, তা নেসাব পরিমান হলে যাকাত দিতে হবে। আর যে সকল অলঙ্কার অধিকাংশ সময় পরিধান করা হয়, সেটাতে অধিকাংশ আলেমের নিকট যাকাত নেই। ইমাম আবু হানিফা ও বর্তমান সময়ে শাইখ ইবন বায, শাইখ উসাইমীন সেটাতেও যাকাত দিতে হবে বলেছেন। তাই যদি আপনি মনে করেন যে,ব্যবহার্য স্বর্ণের যাকাত দেওয়াটাই অধিক যুক্তিযুক্ত, তবে আপনাকে ব্যবহারিক ও অব্যবহারিক সবগুলো মিলিয়ে নেসাব হলে সেটার যাকাত দিতে হবে। আর যদি মনে করেন যে, ব্যবহারিক স্বর্ণের যাকাত দেওয়া লাগবে না, তবে সেটা বাদ দিয়ে নেসাব পূর্ণ না হলে আপনার উপর যাকাত নেই।
এ মাসআলায় দু’টি মত যেহেতু রয়েছে, সেহেতু আপনার দ্বীনদারীর উপর ছেড়ে দেওয়া হলো। যদিও আমি মনে করি, ব্যবহার্য ও অব্যবহার্য সকল সম্পদেরই যাকাত দিতে হয়। আর এটাই বেশী শক্তিশালী অভিমত।
প্রশ্ন ৪৯: ব্যবসার পুঁজি বা সরঞ্জামের উপর যাকাত ফরদ্ব হবে কি না? হলে তার কোন পরিমাণ নির্ধারিত আছে কি? অথবা সরঞ্জামেরই বা কোন সীমা পরিসীমা আছে কি? দয়া করে জানাবেন। তেমনিভাবে যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি কিনে রাখা হয় অর্থাৎ, জমি কেনাবেচার ব্যবসা, তাহলে কি সে জমির উপর যাকাত ফরদ্ব হবে? আর যদি একটা জমি শুরুতে নিজের বাড়ী তৈরীর জন্য কেনা হলো, বেশ ক'বছর পরে দেখলে যে, ভালোই দাম উঠেছে, তাই বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করলো। এক্ষেত্রে জমির উপর যাকাত ফরদ্ব হবে? হলে কিভাবে আদায় করতে হবে?
উত্তর: ব্যবসার পুঁজি ও লাভ উভয়টিরই যাকাত দিতে হবে। যদি না সেটা সরঞ্জাম হয়ে যায়। ধরুন আপনার কাছে দশ লক্ষ টাকার পুঁজি রয়েছে, আর আপনার লাভ হয়েছে, দুল লক্ষ্ টাকা,এমতাবস্থায় আপনাকে দু’টিরই যাকাত দিতে হবে। কিন্তু যদি পুঁজি অন্য কিছুতে পরিণত হয়ে যায়, যেমন আপনি যদি দশ লক্ষ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছেন ভাড়া দেওয়ার জন্য, তখন আপনার উপর শুধু ভাড়ার টাকার উপর যাকাত আসবে, যদি সেটা নেসাব পরিমাণ হয়। অনুরূপভাবে দোকানে যদি দশ লক্ষ টাকা খরচ করে ডেকোরেশন বা বিল্ডিং তোলে থাকেন, তবে সেটার যাকাত আসবে না, শুধু লাভের উপর আসবে, যখন লাভ নেসাব পরিমান হবে। তদ্রূপ কল-কারখানায় যদি ২০ লাখ টাকা দিয়ে কল-কবজা কিনে থাকেন, তবে সেটার উপর যাকাত আসবে না, আসবে শুধু লাভের উপর । কিন্তু যদি সেটা টাকা হিসেবে থাকে যেমন আপনি দশ লক্ষ টাকার পুঁজি দিয়ে কাপড়ের দোকানে কাপড় উঠালেন, তখন দশ লক্ষ+লাভ পুরোটার উপরই যাকাত আসবে। মনে রাখবেন, ব্যবাসয়ী সরঞ্জামের কোনো সীমা নেই। যে জমি ব্যবসার জন্য খরিদ করা হয়েছে সে জমিনের উপর যাকাত আসবে। আর যে জমি বাড়ী করার জন্য খরিদ করা হয়েছে সে জমিনের উপর যাকাত আসবে না। এমনকি যদি লাভ দেখলে পরবর্তীতে বিক্রয় করাও হয়, তবুও তাতে যাকাত আসবে না। অবশ্য বিক্রি করার পর নেসাব পরিমাণ হলে এবং বছর পূর্ণ হলে সে টাকাতে যাকাত আসবে।
প্রশ্ন ৫০: উমরী কাদ্বা নামে কোন নামায
আছে কি? যদি থাকে তাহলে তার তাহলে তার দলীল প্রমাণ জানাবেন। এবং আদায়ের
পদ্ধতিও জানাবেন। আর না থাকলে এ নামযের উদ্ভব কিভাবে হলো জানিয়ে বাধিত
করবেন। এবং বিগত দিনে আদায় না করা নামাযগুলোর জন্য করণীয় কি?
উত্তর: উমরী কাদ্বা বলতে কোনো নামায নেই। সুতরাং সেটার পদ্ধতিও নেই। কিছু কিছু মানুষ রোযার কাফফারার উপর কিয়াস করে নামাযের কাফফারা নির্ধারণ করেছেন। অথচ এটা ভুল।কারণ;
* যে নামায পড়ে না সে ঈমানদার নয়। বেঈমানের কাছ থেকে কিছু্ই গ্রহণ করা হয় না।
* কাফফারার উপর কোনো কিয়াস হয় না। এ ব্যাপারে সকল আলেম একমত।
* সর্বাবস্থায় নামায বাধ্যতামূলক। যদি দাঁড়িয়ে পড়তে না পারে তো বসে পড়বে, তাও না পারলে পার্শ্ব দেশে, তাও না পারলে শুয়ে চিত হয়ে, তাও না পারলে চোখের ইশারায়। সুতরাং নামায ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিগত দিনের নামায যাদের ছুটে গেছে, তারা যদি মনে রাখতে পারেন যে, তার সুনির্দিষ্ট অল্প সংখ্যক নামায ছুটে গেছে তবে সেটাকে তিনি কাদ্বা করবেন। আর যদি জীবনের এক বিরাট সময় তিনি নামায আদায় না করে থাকেন, তবে সেটার জন্য তিনি তাওবা ইস্তেগফার করবেন। আর বেশি বেশি করে নফল পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। কারণ, তখন তিনি ঈমানদার ছিলেন না। যদি তিনি সে অবস্থায় মারা যেতেন তবে তিনি ঈমানহারা হয়ে চলে যেতেন।
উত্তর: উমরী কাদ্বা বলতে কোনো নামায নেই। সুতরাং সেটার পদ্ধতিও নেই। কিছু কিছু মানুষ রোযার কাফফারার উপর কিয়াস করে নামাযের কাফফারা নির্ধারণ করেছেন। অথচ এটা ভুল।কারণ;
* যে নামায পড়ে না সে ঈমানদার নয়। বেঈমানের কাছ থেকে কিছু্ই গ্রহণ করা হয় না।
* কাফফারার উপর কোনো কিয়াস হয় না। এ ব্যাপারে সকল আলেম একমত।
* সর্বাবস্থায় নামায বাধ্যতামূলক। যদি দাঁড়িয়ে পড়তে না পারে তো বসে পড়বে, তাও না পারলে পার্শ্ব দেশে, তাও না পারলে শুয়ে চিত হয়ে, তাও না পারলে চোখের ইশারায়। সুতরাং নামায ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিগত দিনের নামায যাদের ছুটে গেছে, তারা যদি মনে রাখতে পারেন যে, তার সুনির্দিষ্ট অল্প সংখ্যক নামায ছুটে গেছে তবে সেটাকে তিনি কাদ্বা করবেন। আর যদি জীবনের এক বিরাট সময় তিনি নামায আদায় না করে থাকেন, তবে সেটার জন্য তিনি তাওবা ইস্তেগফার করবেন। আর বেশি বেশি করে নফল পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। কারণ, তখন তিনি ঈমানদার ছিলেন না। যদি তিনি সে অবস্থায় মারা যেতেন তবে তিনি ঈমানহারা হয়ে চলে যেতেন।
প্রশ্ন ৫১: পবিত্র হাদীস শরীফে আছে, হযরত ফাতেমাh তার
ইন্তেকালের আগে পানি চেয়ে বলেছিলেন: আমার গোসল আমি নিজেই করবো।আমার প্রশ্ন হলো; ওনার ইন্তেকালের পর ওনাকে
আবার গোসল করানো হয়েছিলো কিনা? করানো হয়ে থাকলে গোসলটা কে
করিয়েছিলেন?
উত্তর: যে হাদীসে বলা হয়েছে যে ফাতেমা h মারা যাওয়ার আগে নিজেই গোসল করে তাকে গোসল করাতে নিষেধ করেছেন, সে হাদীসটি বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। ইমাম ইবনুল জাওযী, ইমাম যাহাবী, ইবন কাসীর, ইবন হাজার সহ অনেকেই বলেছেন যে এ বর্ণনাটি শুদ্ধ নয়।
বরং বিশুদ্ধ বর্ণনা হচ্ছে যে, আলী h, আসমা বিনতে উমাইস, (আবু বকরের স্ত্রী), ফাতেমার ধাত্রী সালমা (উমমে রাফে‘) ও আব্বাস h এর সহযোগিতায় তাঁকে গোসল দিয়েছেন। দেখুন, মুসান্নাফ আবদির রাযযাক; ৩/৪১০; অনুরূপভাবে দারা কুতনী, মুস্তাদরাকে হাকিম, বাইহাকী, প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ যা তাদের গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।
সুতরাং আপনি যা শুনেছেন তা শিয়াদের অপপ্রচার। ফাতেমা h ছিলেন ফকীহা, জ্ঞানী, তিনি ভালো করেই জানতেন যে, মৃত্যুর আগের গোসল মৃত্যুর পরের গোসলের জন্য যথেষ্ট নয়।সুতরাং এ জাতীয় কিছু তিনি কখনও করেন নি। শিয়ারা সব সময় মিথ্যুক। এখানেও মিথ্যাচার করে থাকে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্ত্রী ফাতেমাকে গোসল দিয়েছে এ সত্যটি মানলে তাদের শত্রুতা করার আর সুযোগ থাকে না, তাই -তারা মিথ্যা কথা - তৈরী করেছে।
উত্তর: যে হাদীসে বলা হয়েছে যে ফাতেমা h মারা যাওয়ার আগে নিজেই গোসল করে তাকে গোসল করাতে নিষেধ করেছেন, সে হাদীসটি বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। ইমাম ইবনুল জাওযী, ইমাম যাহাবী, ইবন কাসীর, ইবন হাজার সহ অনেকেই বলেছেন যে এ বর্ণনাটি শুদ্ধ নয়।
বরং বিশুদ্ধ বর্ণনা হচ্ছে যে, আলী h, আসমা বিনতে উমাইস, (আবু বকরের স্ত্রী), ফাতেমার ধাত্রী সালমা (উমমে রাফে‘) ও আব্বাস h এর সহযোগিতায় তাঁকে গোসল দিয়েছেন। দেখুন, মুসান্নাফ আবদির রাযযাক; ৩/৪১০; অনুরূপভাবে দারা কুতনী, মুস্তাদরাকে হাকিম, বাইহাকী, প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ যা তাদের গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।
সুতরাং আপনি যা শুনেছেন তা শিয়াদের অপপ্রচার। ফাতেমা h ছিলেন ফকীহা, জ্ঞানী, তিনি ভালো করেই জানতেন যে, মৃত্যুর আগের গোসল মৃত্যুর পরের গোসলের জন্য যথেষ্ট নয়।সুতরাং এ জাতীয় কিছু তিনি কখনও করেন নি। শিয়ারা সব সময় মিথ্যুক। এখানেও মিথ্যাচার করে থাকে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্ত্রী ফাতেমাকে গোসল দিয়েছে এ সত্যটি মানলে তাদের শত্রুতা করার আর সুযোগ থাকে না, তাই -তারা মিথ্যা কথা - তৈরী করেছে।
0 Comments