👉 _বক্তার পেশা_শায়খ আব্দুল হামিদ মাদানী


👉   _বক্তার পেশা_শায়খ আব্দুল হামিদ মাদানী
বক্তার বক্তৃতা চালানোর জন্য হাদীস জাল
বক্তারা ঘন্টার পর ঘন্টা বক্তৃতা করে। ছাঁকা কথা বলতে গেলে অত সময় ধরে বক্তৃতা করা সম্ভব নয়। তাছাড়া তাদের পেশাই হল, মানুষের মন লোটা, নিমেষে কাঁদানো, নিমেষে হাসানো, মানুষের মনে চমক ধরানো, শ্রোতাকে তাক লাগিয়ে অবাক করা, মানুষের মনে নিজের একটি স্থায়ী আসন পেতে নেওয়া। আর সাধারণ মানুষও পছন্দ করে এমন ওয়ায; যাতে থাকবে ঐ শ্রেণীর আজব আজব কথা, গল্প, রূপকথা ও রসিকতা। তাতে লাভ হয় বক্তার। নাম ও ডাক হয় বেশী এবং উপার্জনও। তাদের অবস্থা বলে,
'দিবানিশি পোড়া পেটের লাগিয়া,
কি না করিতেছি ঘুরিয়া ঘুরিয়া।
বাণীরে বানরী করিয়া যতনে,
নাচাইয়া ফিরি ভবনে ভবনে।'
এই শ্রেণীর বক্তারা যে সকল হাদীস তৈরী করেছে তার কিছু উদাহরণ নিম্নরূপঃ-
'জান্নাতে মিসক (কস্তুরী) বা জাফরান দ্বারা সৃষ্ট এমন হূর আছে, যার পাছা হবে এক মাইল লম্বা ও এক মাইল চওড়া।'
'আল্লাহ নিজ অলীকে জান্নাতে এমন শুভ্র মুক্তানির্মিত মহল দান করবেন; যাতে থাকবে ৭০ হাজার কক্ষ, প্রত্যেক কক্ষে থাকবে ৭০ হাজার পালঙ্ক, প্রত্যেক পালঙ্কে থাকবে ৭০ হাজার হূর---।'
'বান্দা যখন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, তখন আল্লাহর আরশের নূরের খুঁটি হিলতে লাগে। আল্লাহ বলেন, ও খুঁটি! তুমি হিলছ কেন? থামো। খুঁটি বলে, তোমার বান্দা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলছে। সে না থামলে, আমি থামব না।'
এই ধরনের মানুষদের ঠোঁটের জোর খুব বেশী। মানুষকে বেওকুফ বানাতে পারে নিমেষে এবং থতমত না খেয়েই মিথ্যা বলতে পারে। এরা ধৃষ্টতা প্রকাশ করতে লজ্জাও পায় না। একদা রুসাফার এক মসজিদে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহয়া বিন মাঈন নামায পড়লেন। নামায শেষে একজন বক্তা উঠে বক্তৃতা শুরু করল। বলতে লাগল, আমাদেরকে আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহয়া বিন মাঈন হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাঁদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন আব্দুর রাযযাক, তিনি ক•াতাদাহ হতে এবং ক•াতাদাহ আনাস হতে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রসূল ﷺ বলেছেন, 'যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে, আল্লাহ তার বিনিময়ে প্রত্যেক শব্দের পরিবর্তে একটি করে এমন পাখী সৃষ্টি করবেন, যার ঠোঁট হবে সোনার এবং ডানা হবে প্রবালের।'
আর এইভাবে অনুরূপ প্রায় ২০ পাতার হাদীস শুনাতে লাগল। তা শুনে আহমাদ ও ইয়াহয়া একে অপরের দিকে তাকাতাকি করে জিজ্ঞাসা করে বললেন, আপনি কি এ হাদীস ওকে বর্ণনা করেছেন? বললেন, আল্লাহর কসম! এ হাদীস তো আমি এই মাত্র শুনলাম। (এ হাদীস তো ইতিপূর্বে কখনো কারো নিকট হতে শুনিনি!)
অতঃপর ওয়ায শেষে আহমাদের ইঙ্গিতে ইয়াহয়া তার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনাকে কে হাদীস বর্ণনা করেছেন বললেন? বলল, আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহয়া বিন মাঈন। ইয়াহয়া বললেন, আমিই হলাম ইয়াহয়া, আর ইনি হলেন আহমাদ। আমরা তো আল্লাহর রসূলের এ ধরনের হাদীস কখনো শুনিনি। আপনাকে যদি এই শ্রেণীর হাদীস বর্ণনা করতেই হয়, তাহলে আমাদের নাম ছাড়া অন্যের নামে করুন। বক্তা বলল, এতদিন আমি শুনে আসছিলাম যে, ইয়াহয়া বিন মাঈন আহমক। আজ সে কথার বাস্তব প্রমাণ পেলাম। ইয়াহয়া বললেন, তা কি করে? বলল, দুনিয়াতে কি তোমরা দুজন ছাড়া আর কোন ইয়াহয়া বিন মাঈন ও আহমাদ বিন হাম্বল নেই? আমি ১৭ জন আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহয়া বিন মাঈন থেকে এসব হাদীস লিখেছি!! (তা'বীলু মুখতালাফিল হাদীস ৩৫৭পৃঃ, আসসুন্নাহ অমাকানাতুহা ফিত তাশরীইল ইসলামী ৮৬পৃঃ)
কিন্তু তা হলে কি হয়? সাধারণ মানুষ তো এই শ্রেণীর বক্তাদের অন্ধভক্ত। তাদের বিরুদ্ধে কোন হক্কানী আলেম কিছু মন্তব্য করলেই জাহেল লোকেরা ক্ষেপে উঠবে এবং বক্তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করে ঐ আলেমকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে ছাড়বে।
একদা বাগদাদে এক বক্তা ওয়ায করতে গিয়ে
{عَسَى أَن يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُودًا} (79) سورة الإسراء
অর্থাৎ, আশা করা যায়, তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রেরিত করবেন মাক•ামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে)। (সূরা ইসরা ৭৯ আয়াত)
এই আয়াতের তফসীর বর্ণনা করে বলল, নবী ﷺ আল্লাহর সাথে তাঁর আরশে বসবেন!
এ খবর গেল (বড় মুফাসসির) মুহাম্মাদ বিন জারীর ত্বাবারীর কাছে। তিনি বক্তার ঐ তফসীর শুনে রাগান্বিত হয়ে ঘোর প্রতিবাদ জানালেন। আর অধিক তাকীদের জন্য তিনি তাঁর বাড়ির দরজায় লিখে দিলেন, 'পবিত্র সেই আল্লাহ; যাঁর কোন সান্ত্বনাদাতা সাথী নেই এবং তাঁর আরশে বসার কোন সঙ্গী নেই।'
কিন্তু বাগদাদের জনতা তাঁর উপর ক্ষেপে গিয়ে তাঁর বাড়ির উপর পাথর মারতে শুরু করল। পরিশেষে পাথরের নিচে তাঁর বাড়ির দরজা চাপা পড়ে বন্ধ হয়ে গেল! (তফসীর ত্বাবারীর ভূমিকা ১১পৃঃ, আল-ইসলামু অল-হাযারাহ ২/৫৫৯, আসসুন্নাহ অমাকানাতুহা ফিত তাশরীইল ইসলামী ৮৬-৮৭পৃঃ)
বলাই বাহুল্য যে, বর্তমানেও ঐ শ্রেণীর বক্তাদেরই আসন রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। যারা উয বিন উনুকের কাহিনী, নূহের তুফানের সময় গু' মেখে বুড়ির যুবতী হওয়া কথা, তুফানের সময় নূহের কিশতী কা'বা তওয়াফ করে দু' রাকআত নামায পড়ার কথা, তুফানে কিশ্তীতে উঠে আসা প্রাণী ছাড়া সকলের ধ্বংস হওয়া কিন্তু কিশ্তীতে না চড়েও এক বুড়ির বেঁচে থাকার কথা, মি'রাজের সময় বুরাকের কথা বলার কাহিনী, এক ইয়াহুদীর মি'রাজ অবিশ্বাসের ফলে বউকে মাছ কাটতে দিয়ে নাইতে গিয়ে যুবতী হয়ে বিবাহ করে সন্তান দেওয়া ও পরে আবার পুরুষ হয়ে ফিরে এসে বউকে সেই মাছ কাটতেই দেখার কাহিনী ইত্যাদি শুনিয়ে সাদা মানুষের মন এমন লুটে নিয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে কোন মন্তব্যই শুনতেই রাযী নয় জনসাধারণ। যেমন স্রোতা, তেমনি বক্তা। ফাল্লাহুল মুস্তাআ'ন।
(হাদীস ও সুন্নাহর মূল্যমান)
আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী

আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite

Post a Comment

0 Comments