কী কারণে পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালী সংস্কৃতি থেকে হিন্দুয়ানী সাংস্কৃতিতে

কী কারণে পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালী সংস্কৃতি থেকে হিন্দুয়ানী সাংস্কৃতিতে পরিবর্তিত হয়েছে সেটা বুঝতে হলে নিচের লেখাটা পড়ুন:👇👇
বর্ষবরণ নয়, এ এক সুস্পষ্ট সাংস্কৃতিক যুদ্ধ:
সম্রাট আকবরের নবরত্ন সভার প্রভাবশালী সদস্য ফতেহ্‌উল্লাহ্‌ সিরাজ বাংলা সনের প্রবর্তক ছিলেন। সেই সনের প্রথম দিনটি বর্ষ বরণের নামে যা করা হয়, তার সকল আয়োজনের উৎপত্তি হল মন্দির। আমি বাঙ্গলাভাষাভাষী হওয়ায় যেমন বাঙ্গালী, ইসলামের অনুসারী হিসেবে মুসলিমও। বাঙ্গালিত্ব টেকানোর সাথে (বিজাতীয়) কৃষ্টি অনুকরণের কোন সম্পর্ক নেই, বরং মুসলমানিত্ব রক্ষার জন্য ভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের অনুকরণ না করাও অপরিহার্য।
বাঙালি উৎসবের লেবাস পরিয়ে হিন্দুদের নানা পূজা-অর্চনাকে সার্বজনীন রূপ দেয়ার অপর নাম হল পহেলা বৈশাখ উদযাপন বা বাংলা নববর্ষ বরণ। ইসলাম বৈরীদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার বদৌলতে ইতোমধ্যে হিন্দুদের বহুমাত্রিক পূজা এখন মুসলিম বাঙালীদের কাছেও নিছক বর্ষবরণ অনুষ্ঠান!!
*নিন্মে বাঙলা বর্ষবরণের নামে পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতি বর্জনের ৬টি কারণ উল্লেখ করা হল:*
🔹 *প্রথম কারণ হল* তথাকথিত বাঙ্গালী চেতনার নামে প্রচারিত পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতির আগাগোড়া হিন্দু ধর্মের আচার অনুষ্ঠানের নকল বা ফটোকপি। গণেশ পূজার ‘মঙ্গল যাত্রা’ থেকে নেওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা, ‘চৈত্র সংক্রান্তি পূজা’ থেকে নেওয়া চৈত্রসংক্রান্তি, হিন্দু-বৌদ্ধদের ‘উল্কি পূজা’ থেকে নেওয়া উল্কি উৎসব, বিভিন্ন হিংস্র-অহিংস্র জীব-জন্তু পূজা থেকে নেওয়া রাক্ষস-খোক্কসের মুখোশ ও পশু-পাখীর প্রতিমা নিয়ে উৎসব, হিন্দুদের ‘আশ্বিনে রান্না কার্তিকে খাওয়া’ প্রথার আদলে চৈত্রের শেষদিনে রান্না করা অন্নে জল ঢেলে পহেলা বৈশাখের সকালে পান্তা খাওয়ার প্রথা এবং পুজোর অপরিহার্য আইটেম ঢোল-তবলা, কুলা ও হিন্দু রমণীর লাল সিঁদুরের অবিকল লাল টিপ-পুজোর লেবাস শাদা শাড়ী ইত্যাদি হল পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রধান উপাদান!! অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি কোন ধর্মের মানুষের (ধর্মীয় আচারের) অনুকরণ বা সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। -সুনানে আবু দাঊদ
🔹 *দ্বিতীয় কারণ*-উল্কি অঙ্কন। নাসাঈর বর্ণনা মতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “উল্কি অঙ্কনকারিনী ও যার গায়ে অঙ্কন করা হয়- উভয়ের প্রতি আল্লাহর লা’নত বর্ষণ হয়।” তাছাড়া এতে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করা হয়, যা কুরআনের নির্দেশনা মতে হারাম। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতেও উল্কি অঙ্কন ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর ইচ্ছাকৃত স্বাস্থ হানী করাও ইসলামে নিষিদ্ধ।
🔹 *তৃতীয় কারণ*-গান-বাদ্য। গান ও ঢোল তবলা ছাড়া পহেলা বৈশাখ হয় না। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আমার উম্মতের কিছু লোক এমন হবে, যারা যেনা, (পুরুষদের জন্য) সিল্ক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।–বোখারী। তাছাড়া পুজোর অন্যতম উপাদান হল গান ও ঢোল তবলা বাজানো।
🔹 *চতুর্থ কারণ*-নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা চর্চা। শালীন মেয়েরাও পহেলা বৈশাখের নামে অর্ধ নগ্ন হয়ে বের হয়। গরমের দিনে তথাকথিত পহেলা বৈশাখের সাদা শাড়ি ঘামে ভিজে শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অত্যন্ত নোংরা ভাবে প্রকাশিত হয়। তাছাড়াও নারী পুরুষ ঢলাঢলির মাধ্যমে ব্যভিচারের সবচে বড় ক্ষেত্র তৈরি হয় পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতিতে। পান্তা-ইলিশের সাথে ইদানীং যোগ হয়েছে, যুবতী মেয়েদের হাতে খেয়ে মনের নোংরা চাহিদা মেটানো। উল্কি অঙ্কনের ক্ষেত্রেও বিপরীত লিঙ্গের হাত ব্যবহার করা হয়।, যা প্রকাশ্য অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতা।
🔹*পঞ্চম কারণ*-পহেলা বৈশাখকে ঈদের মতো মর্যাদা দিয়ে জাতীয়ভাবে নতুন পোশাক ও আকর্ষণীয় খাবার গ্রহণের কালচার সৃষ্টি করা হয়। এমনকি এও বলা হয় যে, এটা নাকি বাঙালীর সবচে বড় জাতীয় উৎসব। তাহলে ঈদ কতো নাম্বার সিরিয়ালে? অথচ মুসলমানের জাতীয় জীবনে দু’টি উৎসব দেওয়া হয়েছে।হিন্দুদের বারো মাসে ১৩ পূজার আদলে কোন মুসলমানের জন্য পহেলা বৈশাখকে আরেকটি বাৎসরিক উৎসবের দিন ধার্য করা জায়েজ নেই। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের অতি তোড়জোড় দেখে মনে হয়, তারা এটাকে এদেশের মানুষের প্রধান উৎসব হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং আজকাল প্রকাশ্যে ঘোষণাও করছে।
🔹 *ষষ্ঠ কারণ*-জীবন থেকে একটি বছর খসে পড়ার মহামূল্যবান ক্ষণে আত্ম জিজ্ঞাসা না করে ফুর্তি করে প্রকারান্তরে পরকালকে ভুলে বসা। আল্লাহকে না ডেকে মুশরিকদের মতো হাস্যকর ভাবে বৈশাখকে ডাকতে থাকা। যার ফলে প্রতিবছরই বৈশাখ আগমন করে কাল বৈশাখের ঝড় নিয়ে। বৈশাখকে আমরা না ডাকলেও সে আসবে। তবুও বৈশাখের রবকে না ডেকে অযথা বৈশাখকে ডাকার ফলে প্রতি বছরই বৈশাখ আসে কাল বৈশাখীর ঝড় নিয়ে! আল্লাহ আমাদের সুবোধ দান করুন। -আহমাদুল্লাহ

Post a Comment

0 Comments