রসুল(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ما من رجلٍ لا يؤدي زكاةَ مالِه إلا جُعل يومَ القيامةِ صفائحُ من نارٍ يُكوى بها جبينُه وجبهتُه وظهرُه في يومٍ كان مقدارُه خمسين ألفَ سنةً
“কোন ব্যক্তি তার সম্পদের জাকাত আদায় না করলে
আল্লাহ উক্ত সম্পদকে আগুণের তক্তা বানিয়ে তার কপাল ও পৃষ্ঠদেশে ছেক দিবেন। আর এই
শাস্তি প্রদান করা হবে এমন এক দিন যা (দুনিয়ার) পঞ্চাশ হাজার দিনের সমান লম্বা।”
[সহিহ মুসলিম]
আরও হাদিস দেখুন..
“কেন আল্লাহওয়ালাগণ
ও আলেমগণ তাদেরকে খারাপ কথা বলতে ও অবৈধ ভক্ষণে নিষেধ করে না? এরা যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট!” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৩)
অতঃপর
আল্লাহ তা‘আলা তাদের
শাস্তির কথা বলেছেন, যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা সত্ত্বেও
যাকাত প্রদান করে না।
আয়াত থেকে
শিক্ষণীয় বিষয়ঃ
১)একশ্রেণির
আলিম, পীর ও ফকির বাবা রয়েছে যারা ধর্মের নামে পেটপূজারী।
৩)নিসাব পরিমাণ সম্পদ হলে যাকাত আদায় না করলে
কী ভয়াবহ শাস্তি দেয়া হবে তা জানতে পারলাম।
হাদিসঃ
যায়েদ বিন ওয়াহ হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি একদা রাবাযা নামক স্থানে
আবূ যার(রাঃ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি(তাকে) জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কেন এ ভূমিতে এসেছেন? তিনি বললেন: আমি সিরিয়ায়
ছিলাম, তখন আমি(মু‘আবিয়া(রাঃ)-কে) এ
আয়াত পাঠ করে শোনালাম: “আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত
করে এবং সেটা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও।”
মুআবিয়া (রাঃ) এ আয়াত শুনে বললেন: এ আয়াত আমাদের ব্যাপারে নাযিল
হয়নি বরং আহলে কিতাবের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আমি বললাম যে, এ
আয়াত আমাদের ও তাদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।
[ সহীহ বুখারী
হাদিস নং- ৪৬৬০]
সুতারাং এই আয়াত
সকলের জন্য প্রযোজ্য
যারা সম্পদের
যাকাত প্রদান করে না তাদের শাস্তির ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে একটি হল- (সহীহ মুসলিম, যাকাত অধ্যায়,
হা: ৯৮৭)
আবূ
হুরায়রাহ্(রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি সোনা রূপার(নিসাব পরিমাণ) মালিক হবে অথচ তার হক(যাকাত) আদায় করবে না তার
জন্য কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন (তা দিয়ে) আগুনের পাত বানানো হবে। এগুলোকে জাহান্নামের আগুনে এমনভাবে গরম করা হবে যেন তা আগুনেরই পাত। সে পাত দিয়ে তার
পাঁজর, কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। তারপর এ
পাত পৃথক করা হবে। আবার আগুনে উত্তপ্ত করে তার শরীরে লাগানো হবে।
আর
লাগানোর সময়ের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। (এ অবস্থা চলবে) বান্দার (জান্নাত
জাহান্নামের) ফায়সালা হওয়া পর্যন্ত।
তারপর
তাকে নেয়া হবে জান্নাত অথবা জাহান্নামে। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! উটের বিষয়টি(যাকাত না দেবার পরিণাম) কি? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উটের
মালিক যদি এর হক(যাকাত) আদায় না করে- যেদিন উটকে পানি খাওয়ানো হবে সেদিন তাকে
দুহানোও তার একটা হক- কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তিকে সমতল ভূমিতে উটের সামনে মুখের উপর উপুড় করে। তার
সবগুলো উট গুণে গুণে (আনা হবে) মোটা তাজা একটি বাচ্চাও কম হবে না। এসব উট মালিককে
নিজেদের পায়ের নীচে ফেলে পিষতে থাকবে, দাঁত
দিয়ে কামড়াবে। এ উটগুলো চলে গেলে, আবার আর একদল উট আসবে।
যেদিন এমন ঘটবে, সে দিনের মেয়াদ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। এমনকি
বান্দার হিসাব-নিকাশ শেষ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা জাহান্নামের দিকে
অগ্রসর হবে।
সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের যাকাত আদায় না
করলে (মালিকদের) কি অবস্থা হবে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি গরু-ছাগলের মালিক হয়ে এর হক (যাকাত) আদায় করে না কিয়ামতের
(কিয়ামতের) দিন তাকে সমতল ভূমিতে উপুড় করে ফেলা হবে। তার সব গরু ও ছাগলকে (ওখানে
আনা হবে) একটুও কম-বেশি হবে না। গরু-ছাগলের শিং বাঁকা কিংবা ভঙ্গ হবে না। শিং
ছাড়াও কোনটা হবে না। এসব গরু ছাগল শিং দিয়ে মালিককে গুতো মারতে থাকবে, খুর দিয়ে পিষবে। এভাবে একদলের পর আর একদল আসবে। এ সময়ের মেয়াদও হবে পঞ্চাশ
হাজার বছর। এর মধ্যে বান্দার হিসাব-নিকাশ হয়ে যাবে। তারপর ঐ ব্যক্তি জান্নাত অথবা
জাহান্নামে তার গন্তব্য দেখতে পাবে।
সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়ার অবস্থা কি হবে? রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঘোড়া তিন প্রকারের।
প্রথমতঃ যা মানুষের জন্য গুনাহের কারণ হয়। দ্বিতীয়তঃ যা মানুষের জন্য পর্দা। আর তৃতীয়তঃ মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ।
গুনাহের
কারণ ঘোড়া হলো ঐ মালিকের, যেগুলোকে সে
মুসলিমদের ওপর তার গৌরব, অহংকার ও শৌর্যবীর্য দেখাবার জন্য
পালন করে। আর যেগুলো মালিক-এর জন্য পর্দা হবে, সেগুলো ঐ ঘোড়া,
যে সবের ঘোড়ার মালিক আল্লাহর পথে লালন পালন করে। সেগুলোর পিঠ ও
গর্দানের ব্যাপারে আল্লাহর হক ভুলে যায় না। মানুষের জন্য সাওয়াবের কারণ ঘোড়া
ব্যক্তির যে মালিক আল্লাহর পথের মুসলিমদের জন্য তা’ পালে।
এদেরকে সবুজ মাঠে রাখে। এসব ঘোড়া যখন আসে ও চারণ ভূমিতে সবুজ ঘাস খায়, তখন ওই (ঘাসের সংখ্যার সমান) সাওয়াব তার মালিক-এর জন্য লিখা হয়। এমনকি
এদের গোবর ও পেশাবের পরিমাণও তার জন্য সাওয়াব হিসেবে লিখা হয়। সেই ঘোড়া রশি ছিঁড়ে
যদি এক বা দু’টি ময়দান দৌড়ে ফিরে, তখন
আল্লাহ তা’আলা এদের কদমের চিহ্ন ও গোবরের (যা দৌড়াবার সময়
করে) সমান সাওয়াব তার জন্য লিখে দেন। এসব ঘোড়াকে পানি পান করাবার জন্য নদীর কাছে
নেয়া হয়, আর এরা নদী হতে পানি পান করে, তাহলে আল্লাহ তা’আলা ঘোড়াগুলোর পান করা পানির পরিমাণ
সাওয়াব ওই ব্যক্তির জন্য লিখে দেন। যদি মালিক-এর পানি পান করাবার ইচ্ছা নাও থাকে।
সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! গাধার ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি
বললেন গাধার ব্যাপারে আমার ওপর কোন হুকুম নাযিল হয়নি। সকল নেক কাজের ব্যাপারে এ
আয়াতটিই যথেষ্ট ’’যে ব্যক্তি এক কণা পরিমাণ নেক ’আমল করবে তা সে দেখতে পাবে। আর যে ব্যক্তি এক কণা পরিমাণ বদ ’আমল করবে তাও সে দেখতে পাবে’’-
[(সূরাহ্ আয্
যিলযাল ৯৯: ৭-৮)। (মুসলিম)[সহীহ : মুসলিম ৯৮৭, সুনানুল কুবরা
লিল বায়হাক্বী ৭৪১৮, সহীহ আত্ তারগীব ৭৫৪, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৭২৯]
আবূ
হুরায়রাহ্(রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে
ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন, অথচ সে ঐ ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করেনি, সে
ধন-সম্পদকে (কিয়ামতের) দিন টাকমাথা সাপে
পরিণত হবে। এ সাপের দু’ চোখের উপর দু’টি
কালো দাগ থাকবে (অর্থাৎ বিষাক্ত সাপ)। এরপর ঐ সাপ গলার মালা হয়ে ব্যক্তির দু’
চোয়াল আঁকড়ে ধরে বলবে, আমিই তোমার সম্পদ,
আমি তোমার সংরক্ষিত ধন-সম্পদ। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ ’’যারা কৃপণতা
করে, তারা যেন মনে না করে এটা তাদের জন্য উত্তম বরং তা তাদের
জন্য মন্দ। কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন অচিরেই যা নিয়ে তারা কৃপণতা করছে তা তাদের
গলার বেড়ী করে পরিয়ে দেয়া হবে’’- (সূরাহ্
আ-লি ’ইমরান ৩: ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
[ সহীহ: বুখারী
১৪০৩, আহমাদ ৮৬৬১, সুনানুল কুবরা লিল
বায়হাক্বী ১৩১১৩, সহীহ আত্ তারগীব ৭৬১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৫৬০]
আবূ যার(রাঃ)
হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির উট, গরু
ও ছাগল থাকবে, আর সে এসবের হক(যাকাত) আদায় করবে না। (কিয়ামতের)
দিন এসব জন্তু খুব তরতাজা মোটাসোটা করে আনা হবে এবং তারা তাদের পা দিয়ে তাকে
পিষবে। তাদের শিং দিয়ে গুতোবে। শেষ দলটি পিষে চলে যাবার পর আবার প্রথম দলটি আসবে
হিসাব-নিকাশ হওয়া পর্যন্ত (এভাবে চলতে থাকবে)।
[ সহীহ: বুখারীঃ ১৪৬০, মুসলিমঃ
৯৯০, আত্ তিরমিযীঃ ৬১৭, নাসায়ীঃ ২৪৪০,
আহমাদঃ ২১৪৯১]
আবূ
হুরায়রাহ্(রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
(কিয়ামতের) দিন তোমাদের ধন-সম্পদ বিষধর সাপের রূপ
ধারণ করবে। মালিক এর থেকে পালিয়ে থাকবে, আর
সে মালিককে খুঁজতে থাকবে। পরিশেষে সে মালিককে পেয়ে যাবে এবং তার আঙ্গুলগুলোকে
লুকমা বানিয়ে মুখে পুরবে।
[সহীহ: বুখারীঃ
৬৯৫৮, আহমাদঃ ১০৮৫৫, ইবনু খুযায়মাহ্ঃ
২২৫৪]
❂৪২. মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনাকারী:
🔘 আল্লাহর নবি
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَن تَحَلَّمَ بحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ كُلِّفَ أنْ يَعْقِدَ بيْنَ شَعِيرَتَيْنِ، ولَنْ يَفْعَلَ
🔘 “যে ব্যক্তি বাস্তবে দেখেনি এরূপ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করে তাকে দু টি চুলে
গিরা বাধতে বলা হবে কিন্তু তা সে পারবে না।” [সহিহ মুসলিম হা/২২৬৩), বুখারী হা/৬৯৮৫]
❂৪৩.নিজেদের কথা অন্য কাউকে শোনাতে আগ্রহী নয় এরূপ
লোকদের কথোপকথন যে ব্যক্তি গোপনে কান লাগিয়ে শোনার চেষ্টা করে:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من استمع إلى حديثِ قومٍ وهم له كارِهونَ صُبَّ في أذنهِ الآنُكُ يومَ القيامةِ
“যে ব্যক্তি এমন লোকদের কথা কান লাগিয়ে শুনে
যারা নিজেদের কথা তাকে শোনাতে চায় না অথবা তারা এর থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে-
কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সে ব্যক্তির কানে সীসা ঢেলে
দিবেন।” [মুসলিম]
❂৪৪. ছবি প্রস্ততকারক:
🔘 রসূল
(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
إنَّ أشدَّ النَّاسِ عذابًا عندَ اللَّهِ المصَوِّرونَ
🔘“ছবি প্রস্তুতকারীদেরকে কেয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি প্রদান করা হবে।”
[মুসলিম]
🔘‘‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ঐ ব্যক্তির চেয়ে বড় যালেম আর কে
হতে পারে, যে আমার সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করতে চায়? তাদের শক্তি থাকলে একটা অণু সৃষ্টি করুক অথবা একটা দানা সৃষ্টি করুক কিংবা
একটি যবের দানা সৃষ্টি করুক’’।
🔘 ‘‘প্রত্যেক চিত্র অঙ্কনকারীই জাহান্নামী। চিত্রকর যতটি চিত্র অঙ্কন করবে,
তার প্রতেকটির বদলে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে। এর মাধ্যমে তাকে
জাহান্নামে শাস্তি দেয়া হবে’’
🔘 ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন প্রাণীর ছবি অঙ্কন করবে, কিয়ামতের
দিন তাকে ঐ ছবিতে রূহ দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে তাতে রূহ দিতে সক্ষম
হবেনা’’
[ 1] [ সহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ ছবিকে পদদলিত করা। হাদীছ নং- ৫৯৫৪। [2] - সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ যে ঘরে ছবি থাকে, তাতে ফেরেশতা প্রবেশ করেনা। হাদীছ নং- ২১১০। [3] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা হারাম। হাদীছ নং- ২১১০]
❂ ৪৫-৪৬. যে হিলা এবং যার জন্যে হিলা করা হয়:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللهُ الْمُحِلَّ والْمُحَلَّلَ لَهُ
“যে হিলা করে এবং যার জন্য করা হয় আল্লাহ
তায়ালা উভয়কে অভিসম্পাত করেছেন।” [আবু
দাউদ, তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ-হা/২০৭৬, হাসান সহিহ]
হিলা অর্থ: তালাক
প্রাপ্তা স্ত্রীকে হালাল করার উদ্দেশ্যে চুক্তি ভিত্তিক বিয়ে করা।
❂৪৭. পোষ্যকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে তার ক্ষতি সাধন করা:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُضَيِّعَ مَنْ يَقُوتُ
“মানুষ পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে,
সে তার পোষ্যকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে তার ক্ষতি সাধন করে।” [আহমদ ৬৪৫৯, ৬৭৮০, আবু দাউদ ১৬৯২]
এ শব্দে হাদিসটি দুর্বল। তবে এর বিকল্প সহিহ হাদিস রয়েছে।
যেমন: সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
كَفَى بِالمَرْءِ إثْمَاً أنْ يحْبِسَ عَمَّنْ يَمْلِكُ قُوتَهُ
“মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে,
সে যার খাদ্যের মালিক, তার খাদ্য সে আটকে
রাখে।” [মুসলিম, হা/২৩৫৯]
❂৪৮. ঘুষ লেনদেন:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي
আবূ মূসা(রাঃ) বর্ণনা করে বলেন, “ঘুষ প্রদানকারী
এবং ঘুষ গ্রহণকারী উভয়ের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অভিসম্পাত করেছেন।”
[আহমদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ-সহিহ] হা/৩৫৮০, সহীহ]
❂৪৯-৫০. বংশ মর্যাদায় আঘাত করা এবং মৃতের উদ্দেশ্যে
উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
اثنتانِ في الناسِ هما بهم كفرٌ : الطعنُ في الأنسابِ ، و النِّياحةُ على الميِّتِ
“মানুষের মাঝে দু টি কাজ কুফরি: বংশ মর্যাদায়
আঘাত হানা এবং মৃতের জন্য উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা।” [সহিহ মুসলিম]
❂৫১. মুসলিম জামাত থেকে বের হয়ে যাওয়া:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من فارق الجماعةَ قَيْدَ شِبرٍ فقد خلع رِبقةَ الإسلامِ من عُنُقِهِ وَمَنْ دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ فَهُوَ مِنْ جُثَى جَهَنَّمَ وَإِنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِمٌ
“যে ব্যক্তি মুসলিম জামাত থেকে এক বিঘত
পরিমাণ বের হয়ে গেল সে ইসলামের রশি তার গলা থেকে খুলে ফেলে দিল এবং যে ব্যক্তি
জাহেলিয়াত (তথা বিজাতীয় মতবাদ)-এর প্রতি আহবান জানাল সে নামাজ-রোজা করলেও
জাহান্নামের ইন্ধন হবে।” [আহমদ, ইবনে
খুযায়মা, তিরমিযি]
❂৫২. জুয়া ও মদ:
মহান আল্লাহ বলেন,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا
“তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাস
করে। বলুন, এ দুটি বড় পাপের কাজ।” [বাকারা:
২১৯]
❂ ৫৩. কোনও মুসলিমকে গালি দেওয়া অথবা তার সাথে লড়াই বা
মারামারিতে লিপ্ত হওয়া:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ، وقِتَالُهُ كُفْرٌ
“মুসলিমকে গালাগালি করা ফাসেকি এবং তার সাথে
লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া কুফরি কাজ।” [বুখারি]
❂ ৫৪. রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নামে মিথ্যা হাদিস
বর্ণনা করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
من كذب عليَّ مُتعمِّدًا ، فلْيتبوَّأْ مقعدَه من النَّارِ
“যে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার নামে মিথ্যা কথা
বর্ণনা করল সে জাহান্নামে তার আবাসস্থল নির্ধারণ করে নিলো।” [বুখারি]
❂ ৫৫. চুরি করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ السَّارِقَ، يَسْرِقُ البَيْضَةَ فَتُقْطَعُ يَدُهُ
“চোরের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত। একটা ডিম
চুরির অপরাধে যার হাত কাটা হয়।” [মুসলিম]
❂ ৫৬. খেলার ছলে কোন প্রাণীকে নিক্ষেপণ যোগ্য অস্ত্রের লক্ষ্য
বস্তু বানানো:
রসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لعن من اتَّخَذ شيئًا فيه الرُّوحُ غَرَضًا
“যে ব্যক্তি কোন প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানাল
তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।” [মুসলিম]
❂ ৫৭. কোন অপরাধীকে আশ্রয় দানকারী:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ولعنَ اللَّهُ مَن آوى مُحدِثًا
“যে ব্যক্তি কোন অপরাধী বা দুষ্কৃতিকারীকে
আশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]
المحدث هو فاعل الجريمة
‘মুহদিস’ অর্থ: অপরাধ
কারী।
❂ ৫৮. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَعنَ اللَّهُ مَن ذبحَ لغيرِ اللَّهِ
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু
জবেহ করে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ।” [মুসলিম]
❂ ৫৯-৬০. নিজের পিতা ব্যতিরেকে অন্যকে পিতা বলে দাবী করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ ادَّعَى إلى غَيْرِ أَبيهِ ، أوْ تَوَلَّى غيرَ مَوَالِيهِ ؛ فَعليهِ لَعْنَةُ اللهِ والملائكةِ والناسِ أجمعينَ
“যে ব্যক্তি অন্য কাউকে পিতা বলে দাবি করে
অথবা তার মনিবকে ছেড়ে দিয়ে অন্য মনিবের নিকট পালিয়ে যায় তার উপর আল্লাহ,
ফিরিশতাগণ এবং সকল মানুষের অভিশাপ।” [সহিহ
বুখারি ও মুসলিম]
0 Comments