📙 ( নিয়তের অর্থ 📙পর্ব ০১)
🔵প্রচলিত সালাতের ভুল গুলি 🔵
🔵মনে মনে সংকল্প বা অন্তরের খেয়াল করা কিন্তু মুখে আস্তে আস্তে বা জোরে উচ্চারণ করা নয় সালাত আদায় করার সময় রাসূল(ﷺ) মুখে নিয়ত ‘নাওয়াইতুয়ান’ উচ্চারণ করেছেন বলে সহীহ হাদীসে কোন প্রমান নেই এটা বানায়োট কথা।★[
‘বিদ’আত’ অর্থ ‘নতুন’, [প্রমানঃ-সহীহ
বুখারী–
হাঃ ১ ]।
১)🔵কোন জিনিষ সম্পন্ন করার ব্যাপারে মনের দৃঢ় সংকল্প এবং অন্তরের গভীর ইচ্ছা পোষণ করাকে শরীয়াতের পরিভাষায় নিয়্যাত বলে। আর উহার স্থান হলো-অন্তর বা কলব, এর সাথে মুখে উচ্চারণ করার কোন সম্পর্ক নেই। [ ইগাছাতুল লুহফান-১/১৫৬ পৃঃ]
🔵নিয়ত করার ‘অর্থ: হচ্ছে
ইচ্ছা করা বা সংকল্প করা। আমরা কোনো কাজ করার ব্যাপারে যখন ইচ্ছা করি সেটাই নিয়ত।
যেমন আমরা যদি চিন্তা করি "এই মাসে একটু বেশি ইনকাম হয়েছে, এই তাই কিছু টাকা দান
করব"। এটাই দানের নিয়ত হয়ে গেল। নিয়ত করার জন্য ঐ আমলের সওয়াব আমাদের
আমলনামায় লেখা হয়ে যায়। দান করার জন্য আমরা কিন্তু মুখে উচ্চারণ করে আবৃত্তি করি
নাই। আমরা বলি নাই "আমি অমুক, বোনাস পাইয়াছি। তাহার জন্য আনন্দিত হইয়া দান করিতে মনস্থির করিলাম"।
🔵আমরা যখন সালাতের জন্য অযু
করি তখন নির্দিষ্ট সালাত পড়ার কথা আমাদের মনে থাকেই। এমন হওয়া মনে হয় অসম্ভব যে
সালাতের আগে সালাতের অন্য উদ্দেশ্যহীন ভাবে অযু করছি। তাই সালাতের নিয়তের জন্য মনে
যে আমাদের ইচ্ছা করা সেটাই যথেষ্ট।
সালাতের
নিয়ত বলে প্রচলিত যেসব আরবি বাক্য বিভিন্ন সালাত শিক্ষা বইতে পাওয়া যায় সেগুলোর
কোনোটিই কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। কোনো হাদীসে পাওয়া যায় না "নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা…" এরকম কোনো বাক্য। আলেমগণ
বা মুহাদ্দীসগণ এমন কোনো হাদীস পান নাই যেখানে রাসূল(সাঃ)এই বাক্যগুলো সাহাবীদেরকে
শিক্ষা দিয়েছেন।
কোনো অজ্ঞ আলেম আরবি ভাষায় এগুলোকে বানিয়েছেন। তাই এই বাক্যগুলোকে দ্বীনের অংশ মনে
করা অনুচিত। এই বাক্যগুলো পড়লে বেশি
সওয়াব হবে এমন মনে করাও ঠিক না। যা বানায়োট পরিত্যাজ্য।
🔵অনেককে দেখা যায় সালাত
শুরু হয়ে গেছে, ইমাম হয়ত রুকুতে চলে গেছেন। এমন অবস্থাতেও দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে আরবি নিয়তের
বাক্যগুলো মুখে তোতা পাখির মত আউড়ে যাচ্ছেন। অর্থ বুঝে আসুক বা না আসুক। রাকাত
ছুটে যাওয়া বা জামাত ছুটে যাওয়ার চেয়েও অনেকের কাছে এই নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা
জরুরি। নিঃসন্দেহে এটা একটা অনুচিত, দ্বীনের মধ্যে নতুন উদ্ভাবন বা বিদআত।
🔵আল্লাহর রাসূল(সাঃ) সালাতের
শুরুতে একটা বাক্য উচ্চারণ করতেন তা হচ্ছে ‘আল্লাহু আকবর’
বা তাকবীরে তাহরিমা। আমাদেরও উচিত নবী(সাঃ) কে অনুসরণ
করা।
আল্লাহ
আমাদেরকে ইসলামের সৌন্দর্য বুঝার ও এর মধ্যপন্থী অবস্থান বুঝার তাওফিক দান করুন। [ মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ, হাদিস নংঃ
১০০], মুসনাদে আবু হানিফাঃ ০১]
🔵‘বিদ’আত’ হচ্ছে রাসূল(সাঃ) বলেন নি, করেন নি, অনুমোদন দেন নি, যেটাকে মানুষ নেকির আশায় এবং দ্বীনের অংশ হিসাবে ভেবে থাকে,করে থাকে তাকে
বলে ‘বিদ’আত’। এর পরিনাম জাহান্নাম। বিদ’আত হছে গণ্ডির বাইরের আমোল যা কুরআন ও হাদিসে পাওয়া যায় না আর সুন্নাত হচ্ছে ভিতরের আমল যা কুরআন ও সুন্নাহ্ তে রয়েছে।
🔵নবী সাঃ যেই ভাবে যতোটুকু বলেছেন ততোটুকু করবেন এটাই রাসূল(সাঃ) এর অনুকরন,
অনুসরণ।
🔵আল্লামা মোল্লা কারী হানাফী বলেন,
রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) ত্রিশ হাজার সলাত পড়েছেন। তথাপি তাঁর থেকে একথা বর্ণিত নেই যে, আমি অমুক অমুক সলাতের নিয়্যাত করছি। তাঁর এই নিয়্যাত না পড়াটা সুন্নাত।
[ মিশকাত- ১/৩৭ পৃঃ]
তিনি অন্যত্র বলেন, শব্দ উচ্চারণ করে নিয়্যাত করা নাজায়িয। কারণ এটা বিদ’আত। অতএব, যে কাজ নাবী(সাঃ) করেন নি সে কাজ সর্বদা যে করে সে বিদআতী।
★ আল্লামা ইবনুল হূমাম হানাফি রহঃ-বলেন সহীহ ও জঈফ হাদিসেও নেই তাই বিদআত [ প্রমান ফাতহুল
কাদীর ১/৩৮৬, কাবীরী পেজ নং ২৫২ ]।
★ আব্দুল হাই লাখনউভী হানাফি রহঃ-বলেন মুখে নিয়ত করা ‘বিদআত’।[ প্রমান সিরাতুল
মুস্তাকীম ]।
★আব্দুল হক দেহলভি হানাফি রহ” বলেন এই রকম কোন নিয়ত পড়ার শব্দ হাদিসে নেই এটা বিদআত।👉 [ প্রমান ফাতহুল,
মাদারিজুন নাবুওয়্যাত ]।
এছাড়াও আরও আছে- আল্লামা শাফী হানাফী রহঃ [ ফতোয়া শামী, ১/৩৮৬; বাহরুর রায়িক ১/২৭৮]।
★ ইমাম মালেকী রহঃ বলেন ‘বিদআত’। [ মির’কাত ১/৩৬ ]
★ ইমাম হাম্বলি রহঃ বলেন ‘বিদআত’। [ মির’কাত ১/৩৬ ]
★ হাফেজ ইবনুল কাইউম রহঃ বলেন ‘বিদআত’। [ ইগাসাতুল লুহফান
১/১৩৬, যাদুল মা’আদ ১/৫১]।
★ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন ‘বিদআত’। [ মাজমুআহ ফতোয়া ]।
★ইমাম কুদূরী(রহঃ) বলেনঃ নিয়ত অর্থ ইচ্ছা, তবে শর্ত হলোঃ নিজ অন্তরে জ্ঞাত হতে হবে। যে কোন নামায পড়ছি মুখে উচ্চারণ করা ধর্তব্য নয়। [ আল হিদায়াঃ পেজ নং- ৩১৪]
★এছাড়াও সোদি আরবের
বড় বড় আলেম বলেছেন ইত্যাদি।
👉এই ভাবে করবেঃ- মনে মনে ভাব্ববে যে আমি এই নামাজ টা পড়ছি, ব্যাস এইটুকু।
👉সহীহ ইবনু খুজাই মাহঃ হাদিসঃ নং ৪৫৫]
সংকলনেঃ rasikul islam
0 Comments