1) দু'পায়ের মাঝে ফাঁকা রাখার পরিমাণ:
🔵সালাতে দাঁড়ানোর সময় একজন মুসল্লীর দুই পায়ের মাঝে কতটুকু ফাঁকা থাকবে এ বিষয়ে কুরআন সুন্নায় স্পষ্ট কোন বর্ণনা নেই। এ বিষয়ে সরাসরি কোন হাদীস খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রত্যেক মুসল্লি স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াবে। কেউ কেউ দু'পায়ের মাঝে চার আঙুল পরিমাণ ফাঁকা রাখাকে সুন্নাত মনে করে। অথচ চার আঙুল ফাঁকা রাখার কোন কথা হাদীসে নেই।
[মাজমু ফতয়া, উসাইমিন(রহঃ) ১৩/১৮; মিরআতঃ ১০৯২ ]
তবে হাদীসে ইঙ্গিত রয়েছে যে, কাতারে দাঁড়িয়ে শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য অনুযায়ী পায়ে পা ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে যতটুকু ফাঁকা রাখার প্রয়োজন হয়, একজন মুসুল্লি ঠিক ততটুকু ফাঁকা রাখবে।
[ সহীহ বুখারীঃ ৭২৫; আবুদাউদঃ ৬৬২; ফাতয়া লাজনা দায়েমা ৫/৩৫৭]
_______________________________________________________________
2) কাতার সোজা না করা
🔵 জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের প্রথম ধাপই হলো কাতার সোজা করে দাঁড়ানো। কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাদীসে কাতার সোজা না করার জন্যে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে।
🔵১).(রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে) আমাদের একজন তাঁর কাঁধ ও পা তাঁর পাশের ব্যক্তির কাঁধ ও পায়ের গোড়ালি(গোছ) এর সাথে লাগিয়ে রাখতো।”
[ সহিহ বুখারি, অধ্যায়: ৪৭ ]
🔵২).রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন, তোমরা অবশ্যই তোমাদের কাতার সোজা করে দাঁড়াবে, অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মাঝে শত্রুতা ও মতভিন্নতা সৃষ্টি করে দেবেন।
[ বুখারীঃ ৭১৭,৬৭৪,৬৮২; মুসলিমঃ ৪৩৬, ৮৫৪,৮৫৭,৮৫৮,৮৬৪ ]
🔵৩).লাইনগুলো অবশ্যই সোজা করে(দাঁড়াবে) সাজাবে। অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের মুখ-মণ্ডলকে বিকৃত করে দিবেন। [ মুসলিমঃ ৮৭৩,৮৬৪,৮৬০]
🔵 উমর রাযি(রাযিঃ) থেকে বর্ণিত,
🔵৪).তিনি নামাযের কাতারগুলো সোজা ও ঠিকঠাক করার জন্য কিছু লোককে দায়িত্ব দিয়ে রাখতেন, যতক্ষণ না তারা কাতার পুরোপুরি সোজা-সঠিক হয়েছে বলে তাকে অবগত করতেন, ততক্ষণ তিনি তাকবীর বলতেন না।
[ তিরমিযি, পরিচ্ছদ- কাতার সমান্তরাল করা সম্পর্কে; মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদঃ হাদিসঃ ৯৮]
🔵৫ ).হাদীসে সীসা ঢালা প্রাচীরের মত দাঁড়াতে বলা হয়েছে, যেমন একটি ইট আরেকটি ইটের উপর রেখে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। সুতরাং পরস্পরের পায়ের মাঝে কোন ফাঁক থাকবে না।
উল্লেখ্য, অনেক মসজিদে শুধু কনিষ্ঠা আঙ্গুলের সাথে মিলানো হয়। উক্ত মর্মেও কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুক। (আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)।
🔵৬).আনাস বিন মালিক রা. উক্ত আমলটির ব্যাপারে মানুষের অনীহার বিষয়টি এভাবে বলেছেন,
“আমি দেখেছি, আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি তার পাশের ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা লাগিয়ে রাখতো। কিন্তু আজ যদি এমনটি করতে যাও তাহলে দেখবে যে, সে পলায়নপর বন্য খচ্চরের মত পালাচ্ছে!! [মুসান্নাফ ইবনে শায়বা ১/৩৫১, সনদ সহিহ ]
এটাই দু:খ জনক বাস্তবতা। বর্তমানেও আমাদের সমাজে অধিকাংশ মসজিদে যদি কোনও মুসল্লি সুন্নত পালনার্থে পাশের মুসল্লির পায়ের সাথে পা বা কাঁধের সাথে কাঁধ মিলাতে যায় তাহলে তারা দূরে তো সরবেই বরং সালাত শেষে তাকে বেয়াদব, অশিক্ষিত, অভদ্র ইত্যাদি বলে গালমন্দ করবে এবং মারাত্মক ক্ষিপ্ত হবে। এটা পরীক্ষিত বাস্তবতা। মনে হবে, এটা হয়ত কোনও বিদআত এবং মারাত্মক অন্যায় কাজ! (আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন)[ বুখারিঃ ৭২৩, মুসলিমঃ ৪৩৩; মিসকাতঃ ১০৮৭ ]
🔵উপরোক্ত হাদীস সমূহ জানার পরও কেউ যদি এই সুন্নাতকে প্রত্যাখ্যান করে, তবে সে সরাসরি রাসূল(সাঃ) এর আদেশ লংঘন করবে। এমন ব্যক্তি সম্পর্কে নাবী(সাঃ) ১৫ শত বছর আগে বলে গেছেন যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত হ’তে মুখ ফিরিয়ে নিল, সে আমার দলভুক্ত নয়’।[ বুখারী হা/৫০৬৩, ৪৬৯৩; মুসলিম হা/১৪০১; মিশকাত হা/১৪৫)
হাদিসের শিক্ষাঃযে কোন ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে ‘ইবাদাতের সময়, পরিমাণ, স্থান, অবস্থা ইত্যাদির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আবেগ তাড়িত হয়ে ফারযের মধ্যে যেমন কম বেশি করা যাবে না; তেমনি সুন্নাতের ক্ষেত্রেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ বা তার ‘আমলের পরিবর্তন করা যাবে না। নফল ‘ইবাদাতেও কারো সময় থাকলে বা নিজের খেয়াল খুশি মত করা ইসলাম সমর্থিত নয়।
_______________________________________________________________
3) কাতারের মাঝে ফাঁক রেখে দাঁড়ানো
🔵কাতার সোজা করার পর লক্ষ রাখতে হবে, কাতারের মাঝে যেন কোনো ফাঁক না থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, কাতারের মাঝে অনেক ফাঁক থাকে। যেখানে দুইজন দাঁড়ায়, খুব সহজেই একটু চেপে সেখানে তিনজন দাঁড়াতে পারে। অথচ এক্ষেত্রে মাসআলা হল, জামাত শুরু হওয়ার পরও যদি কেউ এসে দেখে, কাতারের মাঝে ফাঁকা জায়গা রয়েছে, আর সেখানে সে দাঁড়াতে পারবে, তাহলে তাকে সে জায়গাটুকু পূর্ণ করে দাঁড়াতে হবে।
[ফতোয়ায়ে শামী ২/৩১০ ]।
🔵কেননা, হাদীস শরীফে এরকম ফাঁক রাখতে নিষেধ করা হয়েছে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতার সোজা করার প্রতি জোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নাবী(সাঃ) বলেছেন, তোমরা কাতারগুলো সোজা-সঠিক করো, পরস্পরের কাঁধ সমান্তরাল রেখো, ফাঁক-ফোঁকর বন্ধ করো, তোমাদের ভাইদের জন্য হাত নরম করো (কেউ যদি কাতারে প্রবেশ করতে চায় তাহলে হাত শক্ত করে রেখোনা যাতে সে ঢুকতে না পারে বরং হাত নরম করে তাকে কাতারের ফাঁকে প্রবেশের সুযোগ দাও) এবং শয়তানের জন্য ছোট ছোট ফাঁকা জায়গা ছেড়ে দিও না।
যে ব্যক্তি(নামাযে) কাতার মিলিয়ে রাখে(কাতারের ফাঁকা জায়গায় প্রবেশ করে ফাঁক বন্ধ করে কাতার মিলিয়ে রাখে) আল্লাহ তাকে তাঁর(রহমতের) সাথে মিলিয়ে রাখেন, আর যে ব্যক্তি কাতার বিচ্ছিন্ন করে (কাতারের মধ্যে ফাঁকা জায়গা রেখে দেয়, যদ্দরুন দু’জন মুসল্লী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং তদ্বারা কাতারও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়) আল্লাহ তাকে তাঁর(রহমত) থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।
[আবু দাউদঃ ৬৬৬ নাসায়ীঃ ৮১৯]
🔴রাসুল(সাঃ)বলেছেন, ঘন ঘন করে কাতার বাঁধ এবং কাতারগুলিকে পরস্পরের কাছাকাছি রাখ।
ঘাড় সমূহ একে অপরের বরাবর করো। সেই মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ আছে, কাতারের মধ্যেকার ফাঁকে শয়তানকে আমি প্রবেশ করতে দেখতে পাই, যেন তা কালো ছাগোলের ছানা।
[ রিয়াদুস সালেহীনঃ ১০৯৮-১০৯৯, সহীহুল বুখারীঃ ৪১৯,৪৭৮,৭২৩,৬৪৬৮; মুসলিমঃ ৪২৫,নাসায়িঃ ৮১৩, ৮১৫]
_______________________________________________________________
4) সামনের কাতারে জায়গা খালি রেখে পেছনে দাঁড়ানো
🔵সামনের কাতারে জায়গা ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ানো ঠিক নয়।
বরং নিয়ম হলো, প্রথমে সামনের কাতার পূর্ণ করবে। এরপর পেছনে নতুন কাতার করবে।
জাবির ইবনু সামুরাহ(রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-
একদিন রাসূল(সাঃ) বেরিয়ে এসে আমাদেরকে বললেন, ফেরেশতারা যেভাবে তাদের পালনকর্তার সামনে সারিবদ্ধ হন তোমরা কেন সেভাবে সারিবদ্ধ হও না?
আমরা বললাম,হে নাবি(সাঃ)! ফেরেশতারা কিভাবে তাদের পালনকর্তার সামনে সারিবদ্ধ হন? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তারা (প্রথমে) সামনের কাতারগুলো পূরণ করেন এবং শীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ফাঁক-ফোঁকর বন্ধ করে কাতারে দাঁড়ান। [মুসলিমঃ ৪৩০]
🔵কখনো দেখা যায়, জামাত শুরু হয়ে যাওয়ার পর কেউ মসজিদে এল এবং তাকবিরে উলা কিংবা রুকু পাওয়ার জন্যে তাড়াহুড়ো করে পেছনে দাঁড়িয়ে গেল। অথচ তখনো সামনের কাতারে দাঁড়ানোর জায়গা ছিল। কেউ কেউ আবার একটু শারীরিক আরামের জন্যে সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ায়।।
অথচ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
তোমরা সামনের কাতার আগে সম্পূর্ণরূপে পূরণ করো, তারপর এর পিছনের কাতার (এভাবে পর্যায়ক্রমে কাতারগুলো) পূরণ করো। যাতে করে অপূর্ণতা যদি থাকে, সেটা যেন সর্বশেষ কাতারেই থাকে।
[ আবু দাউদঃ ৪৭১]
📙 কাতার সোজা করা আর কিছু হাদিস দেখুন📙
সোজা হয়ে দাঁড়াও কতবার বলবেন?
আনাস(রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্র রাসূল(সাঃ) বলতেনঃতোমরা বরাবর হয়ে দাঁড়াও, বরাবর হয়ে দাঁড়াও, বরাবর হয়ে দাঁড়াও। যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! আমি তোমাদের দেখছি আমার পেছন থেকে যেভাবে আমি তোমাদের দেখছি আমার সম্মুখ থেকে।
[ মিশকাত হাঃ ১০০, সুনান আন-নাসায়ী: ৮১৪ ] হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih),
👉[প্রমান-সহীহ বুখারীঃ হাঃ ৭১৮,৭১৯,৭২৫; ইফাঃ ৬৮৩; মুসলিমঃ ৮৬০,৪৩৪, ১২৩৫৩]
🔴বর্তমান সমাজে দেখা যায় সালাতে ফাঁক ফাঁক করে দাঁড়ায়। বলে কিনা পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়ালে ছোট ও বড়দের অসন্মান ও বেয়াদবি হয়। অজ্ঞদের কথা যা হয়।
মাজহাবী গোঁড়ামি থাকলে বা হাদিস না পড়লে যা হয় আর কি।
এইদিকে রাসূল(সাঃ) এর সাহাবিরা পায়ের সাথে পা মিলিয়ে, কাধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে সালাতে দাঁড়িয়েছেন। আমরা সাহাবাদের চেয়ে কি বেশি বুঝে ফেললাম? আফসোস!
🎤নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে(কাতার বাঁধার সময়) আমাদের কাঁধে হাত বুলিয়ে বলতেন,
“তোমরা সোজা হয়ে দাঁড়াও, তোমরা(কাতার বাঁধার সময়ে) পরস্পরের বিরোধিতা করো না;
নচেৎ তোমাদের অন্তরের মধ্যে বিরোধিতা সৃষ্টি হবে, তা না হলে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করে দিবে। তোমাদের মধ্যে যারা বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী তারা যেন আমার নিকটবর্তী থাকে। তারপর যারা (জ্ঞান ও যোগ্যতায়) তাদের কাছাকাছি হবে(তারা দাঁড়াবে)।”
👉প্রমান-মুসলিমঃ ৮৫৬, ৮৬২; সহীহ বুখারীঃ তাওঃ হাদীস নং ৭১৭; ইফাঃ ৬৮২, আধুঃ ৬৭৪;আহমাদঃ ১৮৪১৭ ]
🎤একদা রাসূলু(সাঃ) (নামাযে দাঁড়িয়ে) বললেন, “তোমরা কাতার সোজা কর। কেননা, কাতার সোজা করা নামাযের পরিপূর্ণতার অংশ বিশেষ।”
👉[সহীহ বুখারীঃ ৭২২-৭২৩, মুসলিমঃ ৪১৪,৪৩৩,৮৫৯,আবূদাউদ ৬৬৮নং) হাদিসের মান –সহীহ
🔴কাতার সোজা করা এর অর্থ- মুসলমানদের মধ্যে পারস্পারিক ভালো বাসা ও ঐক্য সৃষ্টি করা। হিংসা ও বিদ্বেষ দূর করা। যাতে করে ‘আল্লাহর’ রহমত পাওয়া যায়। রাসূল(সাঃ) কাতার সোজা ও ঠিক ঠাক না হওয়া পর্যন্ত নামাযই শুরু করতেন না।👉[আবুদাউদ-৫৬৬ ]
🔴রাসূল সাঃ জামায়াতে নামায শুরু করার আগে একাধিকবার সাহাবা কিরামকে শীসাঢালা প্রাচীরের মত ন্যায় ফাঁক-ফোঁকর বন্ধ করে একে ওপরের সাথে মিলিত হয়ে সোজা করে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিতেন। কাতার সোজা করার জন্য প্রয়োজনে লাঠিয়ও ব্যবহার করতেন।
👉[মুআত্তা ইমাম মালিক, মুসান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ,তিরমিযি। ]
🔴নিয়ম হচ্ছে পরস্পরের কাঁধ সমান্তরাল রেখে একে ওপরের পায়ের গোড়ালির সাথে গোড়ালি মিলিয়ে ফাঁক ফোকর বন্ধ কর। 👉[ আহমদ (৪/২৭৬), ইবনু খুজাইমাহ ১৬০, বুখারিঃ৭২৫ মুসলিম। ]
🎤আনাস(রাযিঃ বলেনঃ তোমরা প্রত্যেকেই তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম। 👉 [ বুখারীঃ ৭২৫, ইফাঃ ৬৮৯],আবুদাউদঃ ৬৬২]
🔴কাতার সোজা না করলে অন্তর বাকা হয়ে যায়। কাতার সোজা করলে আল্লাহর রহমত ও ফিরিশতাগণ তাদের জন্য দোয়া করতে থাকেন। একবার চিন্তা করুন কেনো আমরা ঠিক ঠাক কাতার সোজা করি না বলে আমাদের অন্তরের মধ্যে বিভেদ, হিংসে। আপনি মুমিন ব্যক্তি হলে অবশ্যই কাতার সোজা করবেন। 👉[ সহীহ মুসলিম- ২৩৪, এছাড়াও আবুদাউদ এর হাদিস দেখে নিতে পারেন ।
পদ্ধতিঃ পায়ের গোড়ালির সাথে গোড়ালি মিলিয়ে এবং কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে একে ওপরে দাঁড়াতে হবে। তবে স্বাভাবিক ভাবে দাঁড়াবে যার যতোটুকু যায়গা প্রয়োজন নিজের শরিরের গঠন অনুযায়ী (কেউ হতে পারে পাতলা, মোটা) ইত্যাদি সেই ভাবে দাঁড়াবে যাতে করে ওপর ভাইয়ের কষ্ট না হয়। কাতারের ফাঁকা যেন না থাকে এটা খেয়াল করবে।
কাতারে শয়তান প্রবেশ করা সম্পর্কে
🔴কাতারের মধ্যে ফাঁক থাকলে যা হয়, শয়তান সেই ছোট ছোট ফাকের ভিতরের ঢুকে পড়ে।
👉সহীহ: আবুদাউদঃ ৬৬৭, ৬৬৭, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৫৪৫, ইবনু হিব্বান ৬৩৩৯, সহীহ আত্ তারগীব-৪৯৪।
🔴রাসুল(সাঃ)বলেছেন, ঘন ঘন করে কাতার বাঁধ এবং কাতারগুলিকে পরস্পরের কাছাকাছি রাখ। ঘাড় সমূহ একে অপরের বরাবর করো। সেই মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ আছে, কাতারের মধ্যেকার ফাঁকে শয়তানকে আমি প্রবেশ করতে দেখতে পাই, যেন তা কালো ছাগোলের ছানা।
[ রিয়াদুস সালেহীনঃ ১০৯৮-১০৯৯, সহীহুল বুখারীঃ ৪১৯,৪৭৮,৭২৩,৬৪৬৮; মুসলিমঃ ৪২৫ ,নাসায়িঃ ৮১৩, ৮১৫]
সমাজের বুকে দেখা যায় চার আঙুল পরিমান ফাঁক রেখে দাঁড়ায়, বা ফাঁক রেখে দাঁড়াতে বলে আসলে এটা সুন্নাহ মোতাবেক নয় সব বানায়ট কথা। আবুহানিফা(রহঃ) কি বলে দেখুন..
পরিচ্ছেদ: কাতার মিলানোর ফযীল
🔴আবুসাঈদ খুদরী(রাঃ) থেকে বর্ণিত,
রাসূল(সাঃ) বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ্ তা’য়ালা এবং ফিরিশতাগন ঐ সমস্থ লোকের উপর দুরুদ পাঠ করেন যারা(সালাতে) কাতার বরাবর রাখে (কাতারের) মাঝে ফাঁক ও খোলা না রাখে।
[ মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ হাদিস-১৩২, ইবনে মাজাহ ]
হাদীসের ব্যাখ্যাঃআয়েসা থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি ফাঁকা জায়গা পূরণ করে,আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।" আহমাদ, ইবনে হিব্বান, হাকিম অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ এই রিওয়াত করেছেন।
মোট কথা কাতার মিলানোর ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীসে জোর তাকীদ ও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অবহেলা করার জন্য কঠোর শাস্তির কথা বর্ণিত আছে।
ইবনে উমর(রাযিঃ) থেকে বর্নিত করেন যে, কাতার মিলানোর অর্থ হলো এই যে, দু;জনের মধ্যে কোন ফাঁক রাখবে না, বরং কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে। খলীফা চতুষ্টয় তাদের খিলাফত আমলে এর উপর অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করতেন। হযরত আলী(রাযিঃ) মুক্তাদিদের কে কাউকে বলতেন,তুমি সামনে যাও এবং কাউকে বলতেন পিছনে যাও এই ভাবে লাইন সোজা করতেন।
🎤আবূ হূরাইরাহ রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেনঃ- পুরুষদের জন্য নামাযের প্রথম কাতার হচ্ছে উত্তম এবং পিছনের সারি হচ্ছে মন্দ সারি আর মহিলাদের মন্দ কাতার হচ্ছে প্রথম কাতার আর তাদের জন্য পিছনের কাতার হলো উত্তম সারি। 👉[মুসলিমঃ ৪০৪]
(ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে📚 এখানে পাবেন🎶প্রচুর অডিও সিরিজ🎶100 এর বেশী শায়খ ভিত্তিক অডিও 90 এর উপর 🎶বিষয় ভিত্তিক অডিও🌎অডিও কুরআন এবং অনলাইনে অডিও শুনুন🎶এছাড়াও বিষয় ভিত্তিক ভিডিও,♂সহীহ-সুন্নাহ-ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল,ইসলামিক পত্রিকা 📚 and অনেক জানা-অজানা-আর্টিকল 📚 বিষয় ভিত্তিক সিরিজ আকারে http://islamicebookandpic.in/ ইসলামিক গালারি 👇বিশেষ দ্রস্টব্যঃ-👇 ওয়েবসাইট sarolpoth.blogspot.com/ ইসলামিক সমস্থ প্রগ্রাম একসাথে পেতে http://salafimp3web.blogspot.com/👉 অডিও সমাহার👈 👉 https://salafi-pdfbooks.blogspot.com/ সমস্ত ইসলামিক বই👆
0 Comments