‘সাওম’ বা রোযা সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করুন

সাওমবা রোযা সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করুন

🔘()অনেকে সারা বছর সালাত আদায় করেন না, কিন্তু রমযান মাসে সবাই রোযা রাখেন তারাও সবার দেখাদেখি বা লোক দেখানো না খেয়ে থাকেন, কিন্তু রোযার মাসেও তারা সালাত আদায় করেন নাহ! ক্বুরান, সহীহ হাদীস এবং আলেমদের বিশুদ্ধ মত অনুযায়ীঃ বেনামাযী ব্যক্তি মুসলিম নয়, বেনামাযী কাফের আর কাফেরদের কোন নেক আমল আল্লাহ কবুল করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেঈমানআনে তাই এই সমস্ত ভাই বোনদের উচিতঃ প্রথমে সালাত ত্যাগ করারকুফুরীথেকে তোওবা করেঈমানএনে, সালাত আদায় করে সিয়াম পালন করা আরঈমানএনে থাকলে, পরকালের প্রতি বিশ্বাস থাকলে, একজন বান্দা অবশ্যই রোযার মধ্যে এবং রোযার বাইরে কখনোই ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করবে না

🔘()অনেকে মনে করেন, তারাবীহ না পড়লে রোযা কবুল হবেনা বা রোযা হবেনা এটা মারাত্মক রকমের একটা ভুল কথা রোযা হচ্ছে ফরয ইবাদত এবং ইসলামের পাঁচটি রোকনের একটি, আর তারাবীহ হচ্ছেসুন্নতসালাত সুন্নত সালাত কেউ যদি আদায় করে সে এর সওয়াব পাবে, না করলে এর সওয়াব ফযীলত থেকে বঞ্চিত হবে, কিন্তু তাকে গুনাহগার বলা যাবেনা আর রোযা হচ্ছে সুবহি সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযার হুকুম আহকামগুলো পালন করার নাম, ইফতারের পরে রোযা পূর্ণ হয়ে যায় তারাবীহ পড়ার সাথে রোযা কবুল হবে কি হবেনা, এরকম কোন সম্পর্ক নেই

🔘()অনেকে মনে করে সাহরী না খেলে রোযা রাখা যাবেনা, একথা ঠিকনা সাহরী খাওয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ একটা সুন্নত কিন্তু ঘুমের কারণে উঠতে না পারলে সে কারণে রোযা ভংগ করা যাবেনা সাহরী না খেয়েই রোযা রাখতে হবে তবে না খেয়ে রোযা রাখতে গিয়ে কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, অথবা এমন কষ্টের সম্মুখীন হন যে, রোযা রাখা সম্ভব হচ্ছেনা, তখন তিনি রোযা ভেঙ্গে খেতে পারবেন, এরজন্য পরে রোযার জন্য একটা কাজা রোযা রেখে নিতে হবে রোযা রাখতে গিয়ে সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে, এমন অবস্থায় আল্লাহ রোযা ভাংগার অনুমতি দিয়েছেন, কেউ নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে সাধ্যের বাইরে কষ্ট হয় এমন অবস্থায় রোযা রাখতে আল্লাহ আমাদেরকে আদেশ করেন নি

🔘()অনেকে রোযা রেখে সময় কাটেনা দেখে প্রায় সারা দিনই ঘুমিয়ে কাটায়, এমনও আছে কেউ টিভি দেখে, গান শুনে, ফালতু গল্প করে সময় নষ্ট করে, অন্যের গীবত করে, মিথ্যা কথা বলে বেড়ায়, নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক! এটা মারাত্মক ভুল রোযার উদ্দেশ্য তাক্বওয়া অর্জন করার সম্পূর্ণ বিপরীত রোযার দিনে কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া যাতে পারে, বা যোহরের পরক্বায়লুলাবা দিবানিদ্রা করতে পারে, যাতে করে রাত জেগে সালাত আদায় করতে পারে কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুমিয়ে কাটানো ভুল রোযার সময়টাতে উচিত হচ্ছে ক্বুরান তেলাওয়াত করা, যিকর-আযকার করা, বেশি বেশি করে দুয়া করা, ক্বুরান সহীহ হাদীসের বই পড়া, রোযা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করে তার হক্ক আদায় করতে সচেষ্ট হওয়া, আলেমদের ওয়াজ লেকচার শোনা বা জ্ঞান অর্জন করা আর গান বাজনা শুনে, টিভি দেখে, হারাম কাজ কর্মে যারা লিপ্ত থাকে, আল্লাহ বলেছেন এরা পানাহার করুক আর না খেয়ে থাকুক, তাতে কোন পার্থক্য নাই

🔘() রোযার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছেতাক্বওয়াবা আল্লাহভীতি অর্জন করা, যদিও অনেকে মনে করে গরীবদের কষ্ট বোঝার জন্য এই রোযা, যা সম্পূর্ণ ভুল তারপরেও এই মাসে দেখা যায়ঃ দাড়ি চাছা ভাইয়েরা শেইভ করছেন, অনেকের প্যান্ট টাখনুর নিচেই আছে, গান বাজনা ছাড়তে পারছেনা, টিভির সর্বনাশা নেশাতেই ডুবে আছে, নারী-পুরুষ অবৈধ সম্পর্ক ছেড়ে তোওবা করছেনা, বেপর্দা মেয়েরা হিজাব পর্দা শিখতে পারছেনা, রোযার দিনে বেহায়াপনা অর্ধনগ্ন ড্রেস পড়ে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে, স্কুল কলেজ, অফিসে নারী পুরুষ ফ্রী মিক্সিং এর জঘন্য কালচারে লিপ্ত, যদিও তারা রোযার উদ্দেশ্যে না খেয়ে আছেন? আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, রোযার মাসে কতটুকু আল্লাহ ভীতি নৈকট্য অর্জন করতে পারছি শুধু না খেয়ে থাকার নাম রোযা নয়, বরং আল্লাহর হুকুম আহকাম পালন করে জাহান্নাম থেকে বেচে জান্নাতে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করার নাম হচ্ছে রোযা আর এই কাজগুলো যে করতে না পারলো, রোযার মাস পেয়েও নিজের সংশোধন করে রমযানকে নাজাতের উসীলা বানাতে পারলোনা, জিব্রাঈল (আঃ) তার ধ্বংসের জন্য বদদুয়া করেছেন, আর আল্লাহর রাসুল (সাঃ), যাকে স্বয়ং আল্লাহ জগতবাসীর জন্যে রহমত বলেছেন, তিনিও এই বদদুয়ায়আমীনবলে সমর্থন জানিয়েছেন তাহলে, একটু চিন্তা করুন, রোযার মাস পেয়েও সংশোধন করতে না পারাটা কতবড় দুর্ভাগ্যের একটি বিষয়

🔘() সবচাইতে নিকৃষ্ট কাজটা বোধহয় হচ্ছেঃ অনেকে মনে করেইবাদত শুধুমাত্র রমযান মাসেই সীমাবদ্ধ রোযার মাসে ওয়াক্ত নামায পড়ে, এতো কষ্ট করে তারাবীহও পড়ে, কিন্তু রোযার মাস শেষ হতে না হতেই এই বান্দারা মসজিদ থেকে গায়েব হয়ে যায় এরা আসলে আল্লাহর উপাসনা করেনা, এরা হচ্ছে রমযান পূজারী রমযান আসলে ইবাদত করবে, রমযান শেষতো তাদের ইবাদতও শেষ অথচ, আল্লাহ তাআলা নবী করীম (সাঃ) কে সেই সত্ত্বার উপর ভরসা করতে বলেছেন, যিনি চিরজীবি, যিনি কখনোই মৃত্যু বরণ করেন না এছাড়া তিনি আযযা ওয়া যাল তার বান্দাদেরকে আদেশ করেছেনইয়াক্বীননামক মৃত্যু চলে আসা পর্যন্ত তাদের রব্বের ইবাদত করার জন্য তাই প্রিয় দ্বীনি ভাই বোনেরা, যেটা হারাম সেটা যেমন রমযান মাসে হারাম, যিনি হারাম করেছেন সেই মহান সত্ত্বা আল্লাহ তিনি রমযানের পরেও চিরদিন জীবিত থাকবেন, তাই তার নিষিদ্ধ জিনিস রমযানের বাইরেও চালু থাকবে সুতরাং, দাড়ি কাটা, গান শোনা, টিভি দেখা, নারী-পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক রাখা, অশ্লীলতা, সুদ, ঘুষ, যিনা-ব্যভিচার, মিথ্যা গীবত, এইগুলো রমযানের ভেতরে বাইরে সব সময়েই বর্জন করতে হবে, আল্লাহ আমাদের সকলকেই সেই তোওফিক দান করুন, আমিন

🔘() অনেক মা-বোনেরা ঋতুর দিনগুলোতেও না খেয়ে থাকেন এটা ভুল, কারণ ঐদিনে তাদের রোযা রাখা হারাম, তাই তারা শরয়ী কারণেই রোযা ভংগ করছেন সুতরাং তারা স্বাভাবিক পানাহার করতে পারবেন, রোযার দিনের বেলাতে না খেয়ে থাকা তাদের জন্যফরযনয় অনুরূপ, যারা অসুস্থতা, সফর, বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো, গর্ভবতী, এমন উপযুক্ত কারণে রোযা ভংগ করেন, তারা দিনের বেলায় পানাহার করতে পারবেন তবে উত্তম হচ্ছে প্রকাশ্যে পানাহার না করে গোপনে খাওয়া, যাতে করে কেউ দেখে আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারণা না করে

এডিটরঃ রাসিকুল ইসলাম


(ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে📚 এখানে পাবেন🎶প্রচুর অডিও সিরিজ🎶100 এর বেশী শায়খ ভিত্তিক অডিও 90 এর উপর 🎶বিষয় ভিত্তিক অডিও🌎অডিও কুরআন এবং অনলাইনে অডিও শুনুন🎶এছাড়াও বিষয় ভিত্তিক ভিডিও,♂সহীহ-সুন্নাহ-ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল,ইসলামিক পত্রিকা 📚 and অনেক জানা-অজানা-আর্টিকল 📚 বিষয় ভিত্তিক সিরিজ আকারে http://islamicebookandpic.in/ ইসলামিক গালারি 👇বিশেষ দ্রস্টব্যঃ-👇 ওয়েবসাইট sarolpoth.blogspot.com/ ইসলামিক সমস্থ প্রগ্রাম একসাথে পেতে http://salafimp3web.blogspot.com/👉 অডিও সমাহার👈 👉 https://salafi-pdfbooks.blogspot.com/ সমস্ত ইসলামিক বই👆

Post a Comment

0 Comments