Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল।।

আমি যখন তোমাদেরকে কোনো ব্যাপারে নিষেধ করি, তখন তা থেকে বিরত থাক। আর যদি কোনো বিষয়ে আদেশ করি সাধ্যানুসারে তা বাস্তবায়ন কর।

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “আমি যখন তোমাদেরকে কোনো ব্যাপারে নিষেধ করি, তখন তা থেকে বিরত থাক। আর যদি কোনো বিষয়ে আদেশ করি সাধ্যানুসারে তা বাস্তবায়ন কর।

সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, তোমরা আমাকে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাক, যতক্ষন না আমি তোমাদের কিছু বলি। কেননা, তোমাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা তাদের নবীদের অধিক প্রশ্ন করা ও নবীদের সাথে মতবিরোধ করার কারনেই ধ্বংস হয়েছে। তাই আমি যখন তোমাদের কোন বিষয়ে নিষেধ করি তখন তা থেকে বেঁচে থাক। আর যদি কোন বিষয়ে আদেশ করি তাহলে সাধ্যমত পালন কর।
[ সহীহ বুখারী:৭২৮৮, ৬৭৯০; মুসলিম-১৫/৭৩, হাঃ ১৩৩৭, আহমাদ-৯৭৮৭]
ব্যাখ্যা:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে পথ দেখিয়েছেন যে, যদি তিনি আমাদেরকে কোনো বিষয়ে নিষেধ করেন তাহলে আমাদের জন্য তা থেকে বিরত থাকা জরুরী কোনো ইসতেসনা ব্যতীতই। আর যদি কোনো বিষয়ে নির্দেশ দেন তাহলে আমাদের জন্য সাধ্যানুপাতে তা সম্পাদন করা আবশ্যক।
অতঃপর তিনি আমাদেরকে সতর্ক করেছেন; যেন আমরা পূর্ববর্তী কতক জাতির মতো না হই, যারা তাদের নবীগণকে অধিক প্রশ্ন ও তাদের বিরোধিতা করেছে। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের ধ্বংস ও আযাব দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন।
সুতরাং আমাদের উচিৎ তাদের মতো না হওয়া, যেন তারা যেভাবে ধ্বংস হয়েছে আমরাও সেভাবে ধ্বংস না হই।
হাদীসের শিক্ষা:
  1. আদেশসমূহ বাস্তবায়ন করা ও নিষেধসমূহ হতে বিরত থাকা।
  2. নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ করার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নাই। আর আদেশসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সক্ষমতা জরুরি। কারণ, ছেড়ে দেয়ার জন্য কোনো সক্ষমতা লাগে না। আর কোনো কাজ করার জন্য সে কাজটি করতে সক্ষমতার প্রয়োজন আছে।
  3. অধিক হারে প্রশ্ন করা হতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আলেমগণ প্রশ্নকে দুইভাগে ভাগ করেছেন। প্রথমত: দীনের প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ শেখার জন্য প্রশ্ন করা। সাহাবীদের প্রশ্ন এ জাতীয় ছিল। আর দ্বিতীয় প্রকার প্রশ্ন হলো, কৃত্রিম ও অহংকার বশত। এ ধরনের প্রশ্ন করা নিষিদ্ধ।
  4. এ উম্মতকে তাদের নবীর বিরোধিতা করতে নিষেধ করা যেমনটি আগেকার উম্মতদের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল।
  5. নিষিদ্ধ বস্তু কম বেশি সব কিছুকে শামিল করে। কারণ, কম ও বেশি সব কিছু থেকে বিরত থাকা ছাড়া নিষিদ্ধ বস্তু থেকে বিরত থাকা সাব্যস্ত হয় না। যেমন আমাদেরকে সুদ থেকে নিষেধ করেছেন। এটি আমাদের কম ও বেশি সবকিছুকে শামিল করে।
  6. হারামের দিকে ধাবিত করে এমন উপকরণ থেকে বিরত থাকা। কারণ, এটি বিরত থাকার আওতাধীন।
  7. মানুষের অবশ্যই সক্ষমতা ও সামর্থ্য রয়েছে। কারণ, তিনি বলেন, “তোমাদের সক্ষমতানুযায়ী।” এতে রয়েছে জাওয়াব জাবারীয়াহদের জন্য যারা বলে মানুষের কোনো ক্ষমতা নাই। কারণ, তারা তাদের কাজের ওপর বাধ্য। এমনকি যখন কোনো মানুষ কথা বলার সময় হাত নাড়ায় তখন তারা বলে মানুষটির হাত নাড়া তার ক্ষমতা থেকে নয়। বরং সে বাধ্য। এ কথা বাতিল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। বরং এর ওপর অনেক বড় ধরনের খারাবী আরোপিত হয়।
  8. রাসূলের নির্দেশ শোনার পর কোন মানুষের এ কথা বলা উচিত নয় যে, এটি কি ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব। কারণ, আল্লাহ বলেন, তোমরা তা তোমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী পালন করো।
  9. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা পালন করতে আদেশ দিয়েছেন এবং যা করতে নিষেধ করেছেন, তাই শরী‘আত। চাই তা কুরআনে থাকুক বা নাই থাকুক। তখন কুরআনের বাইরে আদেশ-নিষেধ যাই হোক সুন্নাত অনুযায়ী আমল করা হবে।
  10. অধিক প্রশ্ন করা ধ্বংসের কারণ হয়। বিশেষ করে দীনি এমন কোনো বিষয়ে অধিক প্রশ্ন করা, যার হাকীকত জানা সম্ভব না। যেমন, গাইবী বিষয়সমূহের মাসায়েল। আল্লাহর নাম ও সিফাত বিষয়ে এবং কিয়ামাতের বিষয়ে। এ সব বিষয়ে বেশি জানতে চাওয়া উচিত না। তাহলে তুমি হালাক হয়ে যাবে এবং তুমি বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘনকারী হবে।
  11. আগেকার উম্মগণ অধিক প্রশ্ন এবং তাদের নবীদের বিষয়ে অধিক মতানৈক্য করার কারণে ধ্বংস হয়েছে।
@everyone

Post a Comment

0 Comments