সকল নাবীর দ্বীন এবং দা‘ওয়াত কি এক ও অভিন্ন ছিল?
কল নাবীর দ্বীন এবং দা‘ওয়াত কি এক ও অভিন্ন ছিল? হ্যাঁ, অবশ্যই সকল নাবী-রাছূলের (m) দ্বীন এবং তাদের দা‘ওয়াতের মূল বিষয়-বস্তু এক ও অভিন্ন ছিল। এ বিষয়ে ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন:-
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ فَمِنْهُم مَّنْ هَدَى اللّهُ وَمِنْهُم مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلالَةُ فَسِيرُواْ فِي الأَرْضِ فَانظُرُواْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ.১
অর্থাৎ- আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাছূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করো এবং তাগুত (বাত্বিল ও মিথ্যা উপাস্য) থেকে নিরাপদ দূরে থাকো। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন এবং তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যকের জন্য গুমরাহী (ভ্রষ্টতা) অবধারিত হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো মিথ্যাবাদীদের পরিণতি কিরূপ হয়েছিল।২
অন্য আয়াতে আল্লাহ 7 ইরশাদ করেছেন:-
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ.৩
অর্থাৎ- আপনার পূর্বে আমি এমন কোন রাছূল প্রেরণ করিনি যার প্রতি আমি এই বার্তা অবর্তীণ করিনি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই, সুতরাং তোমরা আমারই ‘ইবাদাত করো।৪
ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 কয়েকজন নাবী-রাছূলের (m) ঘটনা বর্ণনার পর ইরশাদ করেছেন:-
إِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُونِ.৫
অর্থাৎ- এই যে তোমাদের জাতি, এরা তো একই জাতি এবং আমিই তোমাদের প্রতিপালক, অতএব আমারই ‘ইবাদাত করো।৬
আল্লাহ 8 আরো ইরশাদ করেছেন:-
يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ. وَإِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُونِ.৭
অর্থাৎ- হে রাছূলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং নেক্কাজ করুন, আপনারা যা করেন সে সম্পর্কে আমি পরিজ্ঞাত। এবং নিশ্চয়ই আপনাদের এই যে জাতি, এরা সকলেই তো একই জাতি এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা, সুতরাং আমাকে ভয় করুন।৮
হাফিজ ইবনে কাছীর o বলেছেন যে, “إن هذه أمتكم أمة واحدة” এই আয়াত সম্পর্কে মুজাহিদ, ছা‘য়ীদ ইবনে জুবাইর, ক্বাতাদাহ এবং ‘আব্দুর রাহ্মান ইবনু যাইদ ইবনু আছলাম বলেছেন যে, এখানে “أمتكم أمة واحدة” (একই উম্মাত বা জাতি) এর অর্থ হচ্ছে – “دينكم واحد” অর্থাৎ- তোমাদের দ্বীন বা ধর্ম এক।
সকল নাবীর (m) দ্বীন এবং দা‘ওয়াত এক ও অভিন্ন, এ সম্পর্কে রাছূল 1 বলেছেন:-
أَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ.৯
অর্থ- আমি মানুষের মধ্যে ‘ঈছা ইবনে মারইয়াম থেকেও দুন্ইয়া ও আখিরাতে শ্রেষ্ঠ। নাবীগণ হলেন পরস্পর বৈমাত্রেয় ভাই (এর মতো), তাদের মা হলেন ভিন্ন ভিন্ন আর তাদের দ্বীন (ধর্ম) হলো এক ও অভিন্ন।১০
আল্লাহ b আমাদের নাবী মুহাম্মাদকে (1) যে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য পাঠিয়েছেন, পূর্ববর্তী নাবী-রাছূলগণকেও (m) সেই একই দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ 0ইরশাদ করেছেন:-
شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاء وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ.১১
অর্থাৎ- তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই প্রবর্তন করেছেন, যার আদেশ তিনি দিয়েছিলেন নূহ্কে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূছা ও ‘ঈছাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে বিভক্তি-বিচ্ছিন্নতা অবলম্বন করো না। আপনি মুশরিকদের যে বিষয়ে প্রতি আহবান জানান, তা তাদের নিকট অত্যন্ত কষ্টকর বলে মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে নিজের জন্যে মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয় তাকে তিনি তাঁর পথে পরিচালিত করেন।১২
নাবীগণ (m) সংখ্যায় ছিলেন প্রায় এক লক্ষ চব্বিশ হাজার। সকল নাবী-রাছূল m একই পন্থায় দা‘ওয়াত পরিচালনা করে গেছেন এবং একই স্থান থেকে তথা একই বিষয় দিয়ে তারা তাঁদের দা‘ওয়াতী কার্যক্রম শুরু করেছেন। আর তা ছিল তাওহীদ। এই তাওহীদই হলো সকল নাবী-রাছূলের (m) দ্বীনের মূল ভিত্তি এবং তাদের দা‘ওয়াতের মূল প্রতিপাদ্য। তাওহীদ প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁদের রিছালাতের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
সূত্র:- ১। মানহাজুল আম্বিয়া ফিদ্ দা‘ওয়াহ ইলাল্লাহ- লিল ‘আল্লামা আশ্ শাইখ রাবী‘ ইবনু হাদী আল মাদখালী c।
১. سورة النحل- ٣٦
২. ছুরা আন্ নাহ্ল- ৩৬
৩. سورة الأنبياء- ٢٥
৪. ছূরা আল-আম্বিয়া- ২৫
৫. سورة الأنبياء- ٩٢
৬. ছূরা আল আম্বিয়া- ৯২
৭. سورة المؤمنون- ٥١-٥٢
৮. ছূরা আল মু‘মিনূন- ৫১-৫২
৯. متفق عليه
১০. সাহীহ্ বুখারী ও সাহীহ্ মুছলিম
১১. سورة الشورى- ١٣
১২. ছূরা আশ্শুরা- ১৩
Overview
কল নাবীর দ্বীন এবং দা‘ওয়াত কি এক ও অভিন্ন ছিল? হ্যাঁ, অবশ্যই সকল নাবী-রাছূলের (m) দ্বীন এবং তাদের দা‘ওয়াতের মূল বিষয়-বস্তু এক ও অভিন্ন ছিল। এ বিষয়ে ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 ইরশাদ করেছেন:-
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ فَمِنْهُم مَّنْ هَدَى اللّهُ وَمِنْهُم مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلالَةُ فَسِيرُواْ فِي الأَرْضِ فَانظُرُواْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ.১
অর্থাৎ- আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাছূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করো এবং তাগুত (বাত্বিল ও মিথ্যা উপাস্য) থেকে নিরাপদ দূরে থাকো। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন এবং তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যকের জন্য গুমরাহী (ভ্রষ্টতা) অবধারিত হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো মিথ্যাবাদীদের পরিণতি কিরূপ হয়েছিল।২
অন্য আয়াতে আল্লাহ 7 ইরশাদ করেছেন:-
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ.৩
অর্থাৎ- আপনার পূর্বে আমি এমন কোন রাছূল প্রেরণ করিনি যার প্রতি আমি এই বার্তা অবর্তীণ করিনি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই, সুতরাং তোমরা আমারই ‘ইবাদাত করো।৪
ক্বোরআনে কারীমে আল্লাহ 0 কয়েকজন নাবী-রাছূলের (m) ঘটনা বর্ণনার পর ইরশাদ করেছেন:-
إِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُونِ.৫
অর্থাৎ- এই যে তোমাদের জাতি, এরা তো একই জাতি এবং আমিই তোমাদের প্রতিপালক, অতএব আমারই ‘ইবাদাত করো।৬
আল্লাহ 8 আরো ইরশাদ করেছেন:-
يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ. وَإِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُونِ.৭
অর্থাৎ- হে রাছূলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং নেক্কাজ করুন, আপনারা যা করেন সে সম্পর্কে আমি পরিজ্ঞাত। এবং নিশ্চয়ই আপনাদের এই যে জাতি, এরা সকলেই তো একই জাতি এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা, সুতরাং আমাকে ভয় করুন।৮
হাফিজ ইবনে কাছীর o বলেছেন যে, “إن هذه أمتكم أمة واحدة” এই আয়াত সম্পর্কে মুজাহিদ, ছা‘য়ীদ ইবনে জুবাইর, ক্বাতাদাহ এবং ‘আব্দুর রাহ্মান ইবনু যাইদ ইবনু আছলাম বলেছেন যে, এখানে “أمتكم أمة واحدة” (একই উম্মাত বা জাতি) এর অর্থ হচ্ছে – “دينكم واحد” অর্থাৎ- তোমাদের দ্বীন বা ধর্ম এক।
সকল নাবীর (m) দ্বীন এবং দা‘ওয়াত এক ও অভিন্ন, এ সম্পর্কে রাছূল 1 বলেছেন:-
أَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَالْأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلَّاتٍ أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ.৯
অর্থ- আমি মানুষের মধ্যে ‘ঈছা ইবনে মারইয়াম থেকেও দুন্ইয়া ও আখিরাতে শ্রেষ্ঠ। নাবীগণ হলেন পরস্পর বৈমাত্রেয় ভাই (এর মতো), তাদের মা হলেন ভিন্ন ভিন্ন আর তাদের দ্বীন (ধর্ম) হলো এক ও অভিন্ন।১০
আল্লাহ b আমাদের নাবী মুহাম্মাদকে (1) যে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য পাঠিয়েছেন, পূর্ববর্তী নাবী-রাছূলগণকেও (m) সেই একই দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ 0ইরশাদ করেছেন:-
شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاء وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ.১১
অর্থাৎ- তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই প্রবর্তন করেছেন, যার আদেশ তিনি দিয়েছিলেন নূহ্কে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূছা ও ‘ঈছাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে বিভক্তি-বিচ্ছিন্নতা অবলম্বন করো না। আপনি মুশরিকদের যে বিষয়ে প্রতি আহবান জানান, তা তাদের নিকট অত্যন্ত কষ্টকর বলে মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে নিজের জন্যে মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয় তাকে তিনি তাঁর পথে পরিচালিত করেন।১২
নাবীগণ (m) সংখ্যায় ছিলেন প্রায় এক লক্ষ চব্বিশ হাজার। সকল নাবী-রাছূল m একই পন্থায় দা‘ওয়াত পরিচালনা করে গেছেন এবং একই স্থান থেকে তথা একই বিষয় দিয়ে তারা তাঁদের দা‘ওয়াতী কার্যক্রম শুরু করেছেন। আর তা ছিল তাওহীদ। এই তাওহীদই হলো সকল নাবী-রাছূলের (m) দ্বীনের মূল ভিত্তি এবং তাদের দা‘ওয়াতের মূল প্রতিপাদ্য। তাওহীদ প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁদের রিছালাতের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
সূত্র:- ১। মানহাজুল আম্বিয়া ফিদ্ দা‘ওয়াহ ইলাল্লাহ- লিল ‘আল্লামা আশ্ শাইখ রাবী‘ ইবনু হাদী আল মাদখালী c।
১. سورة النحل- ٣٦
২. ছুরা আন্ নাহ্ল- ৩৬
৩. سورة الأنبياء- ٢٥
৪. ছূরা আল-আম্বিয়া- ২৫
৫. سورة الأنبياء- ٩٢
৬. ছূরা আল আম্বিয়া- ৯২
৭. سورة المؤمنون- ٥١-٥٢
৮. ছূরা আল মু‘মিনূন- ৫১-৫২
৯. متفق عليه
১০. সাহীহ্ বুখারী ও সাহীহ্ মুছলিম
১১. سورة الشورى- ١٣
১২. ছূরা আশ্শুরা- ১৩
Overview