মাদীনাহ’র প্রখ্যাত ‘আলিম ও মুহাদ্দিস ড. ‘আবদুল্লাহ আল-বুখারী (حفظه
الله) বলেন, “কিছুদিন পূর্বে হাজ্জের সময় আমার নিকট একজন প্রশ্নকারী আসলো
এবং জিজ্ঞেস করলো, ‘হে শাইখ! শাইখ রাবী‘-কে যখন কঠোরপন্থি বলা হয় তখন
আপনারা কেন বিরোধিতা করেন, যেখানে জারহ ওয়াত-তা‘দীলের ইমামদের কঠোরপন্থি
এবং মধ্যমপন্থি বলা হয়েছে, এবং এটি একটি জ্ঞাত বিষয়। ব্যাপারটি তাই নয় কি?’
আমি বলছি: কে বলে যে, শাইখ রাবী‘ (حفظه الله)-কে কঠোরপন্থি বলা হচ্ছে তাঁর ব্যাপারে সমালোচনা? আমরা এই ব্যাপারটি অস্বীকার করি না যে, আহলুল ‘ইলমগণ এই পদ্ধতিতে শ্রেণীকরণ করেছেন, তবে তারা যেমনটা বলে থাকেন, এই ব্যাপারটিতে আমাদের আলোকপাত করা প্রয়োজন। আমাদের শাইখ হাম্মাদ আল-আনসারীর ওপর আল্লাহ রহম করুন, তিনি এই সাংবাদিকধর্মী কথাটি পছন্দ করতেন। এটি তাকে আকৃষ্ট করতো, এবং তিনি প্রায়ই এটি পুনরাবৃত্তি করতেন এবং বলতেন, ‘চলো এই বিষয়টিতে আলোকপাত করি’, যার অর্থ হলো অধিক উন্মোচন ও স্পষ্টকরণের মাধ্যমে বিষয়টিকে দৃষ্টিগোচর করা। তো চলুন এই বিষয়টিতে আমরা আলোকপাত করি।
এখন, যখন জারহ ওয়াত-তা‘দীলের ‘উলামারা রাওয়ীদের ব্যাপারে যারা কথা বলেন তাঁদেরকে কঠোরপন্থি ও মধ্যমপন্থি হিসেবে শ্রেণীকরণ করেছেন, তখন কি আহলুল ‘ইলমদের কেউ ‘কঠোরপন্থি’ শব্দটি দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে নিন্দা হিসেবে বুঝেছেন? কেউ কি এটাকে ওই ‘আলিমের বিরুদ্ধে নিন্দা হিসেবে বুঝেছেন, যেমন ইয়াহইয়া আল-ক্বাত্তান? কখনো নয়! অধিকন্তু, আহলুল ‘ইলমদের মধ্যে কেউ কি এমনটা বুঝেছেন যে একজন কঠোরপন্থি ‘আলিমের সব কথা প্রত্যাখ্যাত হবে? এমনভাবে কেউ বোঝেননি। আহলুল ‘ইলমদের মধ্যে কেউ কি বুঝেছেন বা বলেছেন যে, একজন মধ্যমপন্থি ‘আলিম, যাকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, তাঁর কথা ধরাবাঁধাহীনভাবে গ্রহণ করা হবে, এবং তা সবসময়ই হাক্ব? এমন কি কেউ আছে যে এমনটা বলেছেন? না! এটি কি সম্ভব নয় যে, মধ্যমপন্থি ‘আলিমের কথা (সঠিক হওয়ার ক্ষেত্রে) কম সম্ভাব্য? এটা সম্ভব কি না? যদি তার সব কথাই হাক্ব হতো, তাহলে এই শ্রেণীকরণের কোন প্রয়োজন ছিলো না, এবং সেক্ষেত্রে শুধু একটা বক্তব্যই থাকতো। ব্যতিক্রম ছাড়া, ‘আলিমদের মধ্যে কেউ বলেননি যে মধ্যমপন্থি ‘আলিমের কথা ধরাবাঁধাহীনভাবে গৃহীত হবে। আল-বুখারী কি মধ্যমপন্থি ‘আলিমদের অন্তর্ভুক্ত নন? তিনি কি তাই নন? এবং অনেক রাওয়ীদের ব্যাপারে তিনি অন্য ‘উলামাদের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন, যেমন ইবনু আবি হাতিম কর্তৃক আল-বুখারীর ভুলের খোলাসাকরণ তাঁর ‘আত-তারীখ’ নামক কিতাবে, যেটি ‘আত-তারীখ আল-কাবীর’-এর সাথে প্রকাশিত হয়েছে। তাই নয় কি? এবং আল-হাফিয, আল-খাতীব আল-বাগদাদীও আল-বুখারীর ভুলগুলোকে সম্বোধন করেছেন এবং ইবনু আবি হাতিম করেছেন তার ‘আল-মুদীহ লি আওহাম আল-জাম‘ ওয়াত-তাফরীক্ব’ নামক কিতাবে যেটি দুই খণ্ডে পরিব্যপ্ত। সুতরাং আমি বলছি: এটি কি তাদের গুণ বা মর্যাদা থেকে কিছু কমিয়ে দিয়েছিলো? ‘আলিমদের মধ্যে কেউই দুই দলের (কঠোরপন্থি ও মধ্যমপন্থি) কারো নিন্দা করেননি।
এবং তৃতীয় বিষয়টি যেটিকে আমরা দৃষ্টিগোচর করতে চাই, তা হলো, আমরা কেন ‘উলামাদের শুধু মধ্যমপন্থি এবং কঠোরপন্থি হিসেবে শ্রেণীকরণ করছি, যেখানে সালাফদের অন্তর্ভুক্ত ইমামদের মধ্যে এমন ইমাম ছিলেন যারা শিথিলপন্থি?
আমরা কেন এই পরিভাষাটি বর্তমানে ব্যবহার করি না? আমরা কেন এটিকে উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করেছি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ইচ্ছাকৃতভাবে? ইবনু হিব্বান শিথিলপন্থি ‘আলিমদের একজন হিসেবে পরিগণিত হতেন তাঁর উচ্চ মর্যাদা ও মুখস্থকরণের স্তর সত্ত্বেও। তাঁর ব্যাপারে আপনারা কী বলেন? বর্তমানে কি শিথিলপন্থি ‘উলামারা নেই? মাশাআল্লাহ! লোকদের (‘উলামাদের) কি শুধু দুই শ্রেণীতেই বিভক্ত করা হয়? এবং বর্তমানে শিথিলপন্থি ‘উলামারা নেই? বরং বর্তমানে গাফিলতি রয়েছে, শুধু শিথিলতা না। আপনারা কি জানেন এই ক্ষেত্রে গাফিলতি কী? এটি হলো ‘ইলমের মূলনীতি ও ভিত্তি থেকে মুক্ত হওয়া। এবং একারণেই লোকেরা এধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, যার দ্বারা তারা হাক্বকে কলঙ্কিত, অসম্মান, কটাক্ষ এবং প্রত্যাখ্যান করার উদ্দেশ্য করে, এটি প্রকাশ্য। তাই নয় কি? তাহলে আল্লাহ’র কসম! আপনার রাব্বের কসম করে বলুন! কারা বর্তমানে লোকদের (‘উলামাদের) শ্রেণীকরণ করছে? অমুক এবং অমুক হলেন এটা আর অমুক এবং অমুক হলেন ওটা! ক্ষুদ্র, জাহিল এবং ‘আক্বলহীন ত্বুল্লাবরা কিবারুল ‘উলামাদের শ্রেণীকরণ করছে, ‘ইলম ও সুন্নাহ’র পথে যাদের দাড়ি আর চুল সাদা হয়ে গেছে। এটা কিভাবে গ্রহণযোগ্য হয় হে শাইখ?! আপনি যদি তাদেরকে তালাক্ব, যিহার এবং লেনদেন সম্পর্কে শারী‘আহর হুকুম জিজ্ঞেস করতেন, তারা জবাব দিতে সক্ষম হতো না, কিন্তু তারা শ্রেণীকরণ করে ‘উলামাদের, বিশাল ব্যক্তিদের। যখন একজন লোক তার নিজের স্তর সম্পর্কে জানে, সে নিজের ও অন্যদের প্রতি অনুগ্রহশীল হয়। আপনারা কি বুঝেছেন? বারাকাল্লাহু ফীকুম।”
•
http://salafidawah.com.pk/…/The-Precise-Understanding-of-Ca…
•
অনুবাদক: রিফাত রাহমান সিয়াম
আমি বলছি: কে বলে যে, শাইখ রাবী‘ (حفظه الله)-কে কঠোরপন্থি বলা হচ্ছে তাঁর ব্যাপারে সমালোচনা? আমরা এই ব্যাপারটি অস্বীকার করি না যে, আহলুল ‘ইলমগণ এই পদ্ধতিতে শ্রেণীকরণ করেছেন, তবে তারা যেমনটা বলে থাকেন, এই ব্যাপারটিতে আমাদের আলোকপাত করা প্রয়োজন। আমাদের শাইখ হাম্মাদ আল-আনসারীর ওপর আল্লাহ রহম করুন, তিনি এই সাংবাদিকধর্মী কথাটি পছন্দ করতেন। এটি তাকে আকৃষ্ট করতো, এবং তিনি প্রায়ই এটি পুনরাবৃত্তি করতেন এবং বলতেন, ‘চলো এই বিষয়টিতে আলোকপাত করি’, যার অর্থ হলো অধিক উন্মোচন ও স্পষ্টকরণের মাধ্যমে বিষয়টিকে দৃষ্টিগোচর করা। তো চলুন এই বিষয়টিতে আমরা আলোকপাত করি।
এখন, যখন জারহ ওয়াত-তা‘দীলের ‘উলামারা রাওয়ীদের ব্যাপারে যারা কথা বলেন তাঁদেরকে কঠোরপন্থি ও মধ্যমপন্থি হিসেবে শ্রেণীকরণ করেছেন, তখন কি আহলুল ‘ইলমদের কেউ ‘কঠোরপন্থি’ শব্দটি দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে নিন্দা হিসেবে বুঝেছেন? কেউ কি এটাকে ওই ‘আলিমের বিরুদ্ধে নিন্দা হিসেবে বুঝেছেন, যেমন ইয়াহইয়া আল-ক্বাত্তান? কখনো নয়! অধিকন্তু, আহলুল ‘ইলমদের মধ্যে কেউ কি এমনটা বুঝেছেন যে একজন কঠোরপন্থি ‘আলিমের সব কথা প্রত্যাখ্যাত হবে? এমনভাবে কেউ বোঝেননি। আহলুল ‘ইলমদের মধ্যে কেউ কি বুঝেছেন বা বলেছেন যে, একজন মধ্যমপন্থি ‘আলিম, যাকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, তাঁর কথা ধরাবাঁধাহীনভাবে গ্রহণ করা হবে, এবং তা সবসময়ই হাক্ব? এমন কি কেউ আছে যে এমনটা বলেছেন? না! এটি কি সম্ভব নয় যে, মধ্যমপন্থি ‘আলিমের কথা (সঠিক হওয়ার ক্ষেত্রে) কম সম্ভাব্য? এটা সম্ভব কি না? যদি তার সব কথাই হাক্ব হতো, তাহলে এই শ্রেণীকরণের কোন প্রয়োজন ছিলো না, এবং সেক্ষেত্রে শুধু একটা বক্তব্যই থাকতো। ব্যতিক্রম ছাড়া, ‘আলিমদের মধ্যে কেউ বলেননি যে মধ্যমপন্থি ‘আলিমের কথা ধরাবাঁধাহীনভাবে গৃহীত হবে। আল-বুখারী কি মধ্যমপন্থি ‘আলিমদের অন্তর্ভুক্ত নন? তিনি কি তাই নন? এবং অনেক রাওয়ীদের ব্যাপারে তিনি অন্য ‘উলামাদের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন, যেমন ইবনু আবি হাতিম কর্তৃক আল-বুখারীর ভুলের খোলাসাকরণ তাঁর ‘আত-তারীখ’ নামক কিতাবে, যেটি ‘আত-তারীখ আল-কাবীর’-এর সাথে প্রকাশিত হয়েছে। তাই নয় কি? এবং আল-হাফিয, আল-খাতীব আল-বাগদাদীও আল-বুখারীর ভুলগুলোকে সম্বোধন করেছেন এবং ইবনু আবি হাতিম করেছেন তার ‘আল-মুদীহ লি আওহাম আল-জাম‘ ওয়াত-তাফরীক্ব’ নামক কিতাবে যেটি দুই খণ্ডে পরিব্যপ্ত। সুতরাং আমি বলছি: এটি কি তাদের গুণ বা মর্যাদা থেকে কিছু কমিয়ে দিয়েছিলো? ‘আলিমদের মধ্যে কেউই দুই দলের (কঠোরপন্থি ও মধ্যমপন্থি) কারো নিন্দা করেননি।
এবং তৃতীয় বিষয়টি যেটিকে আমরা দৃষ্টিগোচর করতে চাই, তা হলো, আমরা কেন ‘উলামাদের শুধু মধ্যমপন্থি এবং কঠোরপন্থি হিসেবে শ্রেণীকরণ করছি, যেখানে সালাফদের অন্তর্ভুক্ত ইমামদের মধ্যে এমন ইমাম ছিলেন যারা শিথিলপন্থি?
আমরা কেন এই পরিভাষাটি বর্তমানে ব্যবহার করি না? আমরা কেন এটিকে উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করেছি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ইচ্ছাকৃতভাবে? ইবনু হিব্বান শিথিলপন্থি ‘আলিমদের একজন হিসেবে পরিগণিত হতেন তাঁর উচ্চ মর্যাদা ও মুখস্থকরণের স্তর সত্ত্বেও। তাঁর ব্যাপারে আপনারা কী বলেন? বর্তমানে কি শিথিলপন্থি ‘উলামারা নেই? মাশাআল্লাহ! লোকদের (‘উলামাদের) কি শুধু দুই শ্রেণীতেই বিভক্ত করা হয়? এবং বর্তমানে শিথিলপন্থি ‘উলামারা নেই? বরং বর্তমানে গাফিলতি রয়েছে, শুধু শিথিলতা না। আপনারা কি জানেন এই ক্ষেত্রে গাফিলতি কী? এটি হলো ‘ইলমের মূলনীতি ও ভিত্তি থেকে মুক্ত হওয়া। এবং একারণেই লোকেরা এধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, যার দ্বারা তারা হাক্বকে কলঙ্কিত, অসম্মান, কটাক্ষ এবং প্রত্যাখ্যান করার উদ্দেশ্য করে, এটি প্রকাশ্য। তাই নয় কি? তাহলে আল্লাহ’র কসম! আপনার রাব্বের কসম করে বলুন! কারা বর্তমানে লোকদের (‘উলামাদের) শ্রেণীকরণ করছে? অমুক এবং অমুক হলেন এটা আর অমুক এবং অমুক হলেন ওটা! ক্ষুদ্র, জাহিল এবং ‘আক্বলহীন ত্বুল্লাবরা কিবারুল ‘উলামাদের শ্রেণীকরণ করছে, ‘ইলম ও সুন্নাহ’র পথে যাদের দাড়ি আর চুল সাদা হয়ে গেছে। এটা কিভাবে গ্রহণযোগ্য হয় হে শাইখ?! আপনি যদি তাদেরকে তালাক্ব, যিহার এবং লেনদেন সম্পর্কে শারী‘আহর হুকুম জিজ্ঞেস করতেন, তারা জবাব দিতে সক্ষম হতো না, কিন্তু তারা শ্রেণীকরণ করে ‘উলামাদের, বিশাল ব্যক্তিদের। যখন একজন লোক তার নিজের স্তর সম্পর্কে জানে, সে নিজের ও অন্যদের প্রতি অনুগ্রহশীল হয়। আপনারা কি বুঝেছেন? বারাকাল্লাহু ফীকুম।”
•
http://salafidawah.com.pk/…/The-Precise-Understanding-of-Ca…
•
অনুবাদক: রিফাত রাহমান সিয়াম
0 Comments