১১শ পর্ব | ২৩শ অধ্যায়: ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী (রাহিমাহুল্লাহ) এবং ২৪শ অধ্যায়: ইমাম আহমাদ আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ


    নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন, এই পর্বে থাকছে ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী এবং ইমাম আহমাদ আন-নাজমী’র ফাতাওয়া।
  • ▌২৩শ অধ্যায়: ইমাম হাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-আনসারী (রাহিমাহুল্লাহ)
  • ·
  • শাইখ পরিচিতি:
  • ইমাম হাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-আনসারী (রাহিমাহুল্লাহ) মাদীনাহ’র একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ ছিলেন। তিনি ১৩৪৪ হিজরীতে পশ্চিম আফ্রিকার মালিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর অন্যতম কয়েকজন শিক্ষক হলেন—ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী, ইমাম মুহাম্মাদ হামিদ আল-ফাক্বী, ইমাম ‘উবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)। তাঁর কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ছাত্র হলেন—ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী, গ্র্যান্ড মুফতী ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ, ‘আল্লামাহ বাকার আবূ যাইদ, ‘আল্লামাহ ‘আলী বিন নাসির আল-ফাক্বীহী, ‘আল্লামাহ ‘আব্দুর রাযযাক্ব আল-বদর, ‘আল্লামাহ ‘উমার ফাল্লাতাহ, ‘আল্লামাহ ‘আত্বিয়্যাহ মুহাম্মাদ সালিম, ‘আল্লামাহ সালিহ আল-‘আবূদ প্রমুখ। তিনি শারী‘আহ কলেজে শিক্ষকতা করতেন। পরবর্তীতে তিনি মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছিলেন।
  • শাইখুল মাগরিব ইমাম তাক্বিউদ্দীন আল-হিলালী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪০৭ হি./১৯৮৭ খ্রি.] হাসান আল-‘আলাউয়ী আল-মাগরীবীকে বলেছেন, “যখন তুমি মাদীনাহ’য় গমন করবে, তখন শাইখ হাম্মাদ আল-আনসারীর কাছে যাবে। কেননা তিনি সালাফদের ‘আলিমগণের মধ্যে অন্যতম একজন ‘আলিম এবং সালাফী ‘আক্বীদাহ পোষণকারী। তুমি তাঁর সাহচর্যকে অপরিহার্যরূপে গ্রহণ কোরো।” [শাইখ ‘আব্দুল আওয়্যাল আনসারী (হাফিযাহুল্লাহ), আল-মাজমূ‘ ফী তারজামাতিল ‘আল্লামাতিল মুহাদ্দিস আশ-শাইখ হাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-আনসারী; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৮৫৫; লেখক কর্তৃক প্রকাশিত, মাদীনাহ থেকে; সন: ১৪২২ হি./২০০২ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
  • ইমাম ইসমা‘ঈল আল-আনসারী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪১৭ হি.] ইমাম হাম্মাদের ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “তোমার পিতার পূর্বপুরুষরা সবাই ‘আলিম ছিলেন। তাঁর অধীনে থেকেই (মাদীনাহ) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আলিমগণ বের হয়েছে। তাঁর অধীনে থেকেই রিয়াদের অনেক ‘আলিম বের হয়েছে।” [প্রাগুক্ত]
  • সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সাবেক সদস্য ‘আল্লামাহ ‘আব্দুল্লাহ বাসসাম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি.] বলেছেন, “আমি শাইখ হাম্মাদকে চিনেছি হাদীসশাস্ত্রে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্যের মাধ্যমে। তিনি হাদীসশাস্ত্রে একজন সুদক্ষ ব্যক্তি এবং সকল প্রশ্নের উৎস ছিলেন। আমি তাঁর ব্যাপারে জানি যে, তিনি সালাফদের মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং ‘আক্বীদাহগতভাবে সালাফী। শিক্ষাদান, দারস প্রদান এবং কিতাব তাহক্বীক্বে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা রয়েছে।” [প্রাগুক্ত; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ২২৫]
  • মাদীনাহ’র এই প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ১৪১৮ হিজরীতে মারা যান এবং তাঁকে বাক্বী‘ গোরস্তানে কবর দেওয়া হয়। আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন। আমীন। সংগৃহীত: শাইখ ‘আব্দুল আওয়্যাল আনসারী (হাফিযাহুল্লাহ), আল-মাজমূ‘ ফী তারজামাতিল ‘আল্লামাতিল মুহাদ্দিস আশ-শাইখ হাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-আনসারী।
  • ·
  • ইমাম হাম্মাদের বক্তব্য:
  • বিগত শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪১৮ হি.] মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে বলেছেন যে, তারা আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ, তারা পথভ্রষ্ট দলগুলোর অন্তর্ভুক্ত।
  • ইমাম হাম্মাদের পুত্র শাইখ ‘আব্দুল আওয়্যাল আল-আনসারী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন,
  • سئل الوالد رحمه الله عام ١٤١٤/ه شهر شعبان المبارك في ستة أيام مضت منه عصر يوم الإثنين، والسائل من الكويت قال للوالد: من هم أهل السنة والجماعة؟
  • فأجاب الوالد قائلًا: هم المتمسكون بما كان عليه الصحابة.
  • ثم قال السائل: السلفيون هم أهل السنة والجماعة؟
  • قال الوالد: نعم، السلفية هي السنة والجماعة؛ لأن معنى السلفية التمسك بما كان عليه السلف الصالح في الماضي.
  • قال السائل: يا شيخ، جماعة الإخوان والتبليغ هم من أهل السنة؟
  • قال الوالد: كل من كان على فكر مخالف لأهل السنة فليس منهم، فجماعة الإخوان والتبليغ ليسوا من أهل السنة؛ لأنهم على أفكار تخالفهم.
  • “১৪১৪ হিজরীর ৭ই শা‘বান সোমবার বিকেলে পিতাজিকে প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রশ্নকারী কুয়েত থেকে পিতাজিকে বলেন, “আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত কারা?”
  • পিতাজি জবাবে বলেন, “যারা সাহাবীগণের আদর্শকে আঁকড়ে ধরেছে, তারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত।”
  • তারপর প্রশ্নকারী বলেন, “সালাফীরা কি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত?”
  • পিতাজি বলেন, “হ্যাঁ। সালাফিয়্যাহ’ই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত। কেননা সালাফিয়্যাহ’র অর্থ হলো—অতীতে ন্যায়নিষ্ঠ সালাফগণ যে আদর্শের উপরে ছিলেন, সে আদর্শকে আঁকড়ে ধরা।”
  • প্রশ্নকারী বলেন, “শাইখ, ব্রাদারহুড এবং তাবলীগ জামা‘আত কি আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত?”
  • পিতাজি বলেন, “যারাই আহলুস সুন্নাহ বিরোধী মতাদর্শের উপর রয়েছে, তারাই আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত নয়। ব্রাদারহুড এবং তাবলীগ আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা তারা এমন মতাদর্শের উপর রয়েছে, যে মতাদর্শ আহলুস সুন্নাহ’র আদর্শ বিরোধী”।” [শাইখ ‘আব্দুল আওয়্যাল আল-আনসারী (হাফিযাহুল্লাহ), আল-মাজমূ‘ ফী তারজামাতিল ‘আল্লামাতিল মুহাদ্দিস আশ-শাইখ হাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-আনসারী ওয়া সীরাতিহী ওয়া আক্বওয়ালিহী ওয়া রিহলাতিহী; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৭৬২-৭৬৩; লেখক কর্তৃক প্রকাশিত, মাদীনাহ থেকে; সন: ১৪২২ হি./২০০২ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
  • ·
  • ▌২৪শ অধ্যায়: ইমাম আহমাদ বিন ইয়াহইয়া আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ)
  • ·
  • শাইখ পরিচিতি:
  • ইমাম আহমাদ বিন ইয়াহইয়া আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ) একজন শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ, মুসনিদ এবং দক্ষিণ সৌদি আরবের গ্রেট মুফতী ছিলেন। তিনি ১৩৪৬ হিজরী মোতাবেক ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের জাযান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকজন শিক্ষক হলেন—ইমাম ‘আব্দুল্লাহ আল-ক্বার‘আউয়ী, ইমাম হাফিয বিন আহমাদ আল-হাকামী, ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলুশ শাইখ, ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (রাহিমাহুমুল্লাহ)। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ছাত্র হলেন—ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী, ‘আল্লামাহ যাইদ আল-মাদখালী, ‘আল্লামাহ ‘আলী বিন নাসির আল-ফাক্বীহী প্রমুখ।
  • বড়ো বড়ো ‘আলিমের নিকট তাঁর উচ্চ মর্যাদা ও অবস্থান ছিল। ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেছেন, “আমরা মহান আল্লাহ’র কাছে আমাদের ভাই, আমাদের প্রিয়জন শাইখ আহমাদ আন-নাজমীর জন্য সুস্থতা ও নিরাময় কামনা করছি।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=MOMBqy_w3Xc (অডিয়ো ক্লিপ)]
  • ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] বলেছেন, “আমাদের শাইখ জাযান বিভাগে হাদীস, তাওহীদ ও সুন্নাহ’র ঝাণ্ডাবাহী ‘আল্লামাহ আশ-শাইখ আহমাদ আন-নাজমী তাঁর অনবদ্য গ্রন্থ “আল-মাওরিদুল ‘আযবিয যুলাল ফীমা উনতুক্বিদা ‘আলা বা‘দ্বিল মানাহিজিদ দা‘আউয়িয়্যাহ মিনাল ‘আক্বাইদি ওয়াল আ‘মাল”– এ যা লিখেছেন, তা পড়লাম। নিশ্চিতভাবেই আমাদের শাইখ সুন্দর ও ভালো লিখেছেন।” [ইমাম নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ), আল-মাওরিদুল ‘আযবিয যুলাল; পৃষ্ঠা: ১৫]
  • এই মহান ‘আলিম ১৪২৯ হিজরী মোতাবেক ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান। আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন। আমীন। সংগৃহীত: আল-মাওরিদুল ‘আযবিয যুলাল; পৃষ্ঠা: ৩-১৫।
  • ·
  • ১ম বক্তব্য:
  • দক্ষিণ সৌদি আরবের গ্রেট মুফতী আল-ফাক্বীহুল মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম আহমাদ বিন ইয়াহইয়া আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২৯ হি./২০০৮ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
  • السؤال: أعطونا مختصرًا حول المخالفات الموجودة عند الإخوان المسلمين والمخالفات الموجودة عند التبليغ وهل هما من الفرق الهالكة التي أخبر بها النبي ﷺ؟
  • الجواب: هذا يحتاج إلى وقت، عند في الكتب مؤلفة لأخطاء الإخوان المسلمين اقرأها، وعند في الكتب مؤلفة لأخطاء لأخطاء التبليغيين اقرأها، لا شك أنهم من الفرق التي قال عنها النبي ﷺ، لأن ما عندهم شركيات وعندهم بدعة، لكن لا نقول أنهم من المخلدين في النار، ولا نقول أنهم كلهم يدخلون في النار، هذا أمره إلى الله.
  • প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুডের এবং তাবলীগ জামা‘আতের যেসব শরিয়ত বিরোধিতা রয়েছে, সেসবের ব্যাপারে আমাদেরকে সংক্ষেপে কিছু বলুন। আর তারা কি ধ্বংসপ্রাপ্ত দলসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যাদের ব্যাপারে নাবী ﷺ সংবাদ দিয়েছেন?”
  • উত্তর: “এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বরং মুসলিম ব্রাদারহুডের ভুলভ্রান্তির ব্যাপারে যেসব বইপুস্তক রয়েছে, সেসব বই অধ্যয়ন করো। তাবলীগীদের ভুলভ্রান্তির ব্যাপারে যেসব বইপুস্তক রয়েছে, সেসব বই অধ্যয়ন করো। আর নিঃসন্দেহে তারা নাবী ﷺ এর বলা (পথভ্রষ্ট) দলসমূহের অন্তর্ভুক্ত। কেননা তাদের নিকট শির্ক ও বিদ‘আত রয়েছে। কিন্তু আমরা একথা বলব না যে, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত। আমরা এটাও বলব না যে, তাদের প্রত্যেকেই জাহান্নামে যাবে। কেননা এই বিষয় আল্লাহ’র কাছে সোপর্দিত।” [দ্র.: www.alnajmi.net/voices.php?action=save&m=&id=1704 (অডিয়ো লিংক)]
  • ·
  • ২য় বক্তব্য:
  • ইমাম আহমাদ বিন ইয়াহইয়া আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ) মুসলিম ব্রাদারহুডের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন,
  • تعريف الاخوان المسلمون: هم أتباع حسن البنا، ومنهجهم عليه ملاحظات أهمها مايلي: 
  • ١- التهاون في توحيد العبادة، الذي هو أهم شيء في الاسلام، ولا يصح اسلام عبد إلا به. 
  • ٢- سكوتهم و اقر ارهم للناس على الشرك الأكبر، من الدعاء لغير الله و التطوف بالقبور، والنذر لأصحابها، والذبح على أسمائهم وما إلى ذلك.
  • ٣- إن هذا المنهج مؤسسه صوفي، له علاقة في الصوفية، حيث أخذ البيعة من عبد الوهاب الحصافي على طريقته الحصافية الشاذلية.
  • ٤- وجود البدع عندهم، وتعبدهم بها بل إن مؤسس المنهج يقرر بأن النبي صلى الله عليه و سلم يحضر مجالس ذكرهم ويغفر لهم ما قد مضى من ذنوبهم، في قوله:
  • صلى الإله الذي على النور الذي ظهر ~ للعالمين ففاق الشمس و القمرا. 
  • هذا الحبيب مع الأحباب قد حضرا ~ و سامح الكل فيما قد مضى و جرا. 
  • ٥- دعوتهم الى خلافة، وهذا بدعة، فان الرسل و أتباعهم ما كلفوا الا بالدعوة الى التوحيد، قال تعالى: ﴿ولقد بعثنا في كل أمة رسولا أن اعبدوا الله واجتنبوا الطاغوت﴾ [النحل: ٣٦] 
  • ٦- عدم الولاء والبراء عندهم أو ضعفه ويتبين ذلك من دعوتهم للتقريب بين السنة والشيعة وقول المؤسس: نتعاون فيما اتفقنا عليه، ويعذر بعضنا بعضا فيمااختلفنا فيه. 
  • ٧- كراهتهم لأهل التوحيد وأصحاب الطريقة السلفية، وبغضهم لهم ويتبين ذلك من كلامهم في الدولة السعودية التي قامت على التوحيد، وتدرس التوحيد في مدارسها ومعاهدها وجامعتها. 
  • ٨- تتبعهم عثرات الولاة، والتنقيب عن مثالبهم، سواء كانت صدقا أو كذبا ونشرها في الشباب الناشىء ليبغضوهم عندهم, و ليملؤوا قلوبهم حقدا عليهم.
  • ٩- الحزبية الممقوتة التي ينتمون اليها فيوالون من أجل هذا الحزب و يعادون من أجله. 
  • ١٠- أخذ البيعة على العمل للمنهج الاخواني بالشروط العشرة التي ذكرها المؤسس، وهناك ملاحظات أخرى يمكن أن نأخذها فيما بعد.
  • “মুসলিম ব্রাদারহুডের পরিচয়: তারা হাসান আল-বান্না’র অনুসারী। তাদের মানহাজের বেশ কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। তন্মধ্যে প্রধান বিভ্রান্তিগুলো নিম্নরূপ:
  • ১. তাওহীদুল ‘ইবাদাহ তথা তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ’র ক্ষেত্রে শিথিলতা করা। যেই তাওহীদ ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং যেই তাওহীদ ছাড়া কোনো বান্দার ইসলাম বিশুদ্ধ হয় না।
  • ২. বড়ো শির্কের ব্যাপারে তাদের নীরবতা অবলম্বন এবং এই শির্কের ব্যাপারে মানুষকে স্বীকৃতি প্রদান। যেমন: গাইরুল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করা, কবরকে প্রদক্ষিণ করা, কবরবাসীদের উদ্দেশ্যে মানত করা, কবরবাসীদের নামে যবেহ করা প্রভৃতি।
  • ৩. এই মানহাজের প্রতিষ্ঠাতা একজন সূফী। সূফীবাদের সাথে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। এমনকি তিনি ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-হাসাফীর নিকট থেকে তার ‘হাসাফিয়্যাহ শাযিলিয়্যাহ’ তরিকার উপর বাই‘আত নিয়েছেন।
  • ৪. তাদের নিকট বিদ‘আত রয়েছে এবং তারা সেসব বিদ‘আত সহকারে ইবাদত করে। বরং এই মানহাজের প্রতিষ্ঠাতা এই বিশ্বাসের স্বীকৃতি দিয়েছেন যে, নাবী ﷺ তাদের জিকিরের মাজলিসে উপস্থিত হন এবং তাদের পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করেন। তিনি বলেছেন, “আল্লাহ সেই নূরের উপর দয়া বর্ষণ করুন, যেই নূর বিশ্বজগতের কাছে প্রকাশিত হয়েছে এবং চন্দ্র-সূর্যকে ছাড়িয়ে গেছে। এই হাবীব হাবীবদের সাথে উপস্থিত হয়েছেন এবং পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন!”
  • ৫. তারা খেলাফতের দিকে দা‘ওয়াত দেয়। এটা বিদ‘আত। কেননা রাসূলগণ ও তাঁদের অনুসারীবৃন্দকে স্রেফ তাওহীদের দিকে দা‘ওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর আমি অবশ্যই প্রত্যেক জাতিতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি (এই নির্দেশ দিয়ে) যে, তোমরা আল্লাহ’র ইবাদাত করো এবং পরিহার করো ত্বাগূতকে।” (সূরাহ নাহল: ৩৬)
  • ৬. তাদের কাছে কোন ওয়ালা (মিত্রতা) ও বারা (বৈরিতা) নেই, অথবা থাকলেও তা খুবই দুর্বল। আর এটা তাদের “শী‘আ ও সুন্নীদেরকে পরস্পরের কাছে আনয়ন”–এর দা‘ওয়াত থেকে স্পষ্ট হয়। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, “আমরা যে ব্যাপারে একমত, সে ব্যাপারে পরস্পরকে সাহায্য করব। আর আমরা যে ব্যাপারে একমত নই, সে ব্যাপারে পরস্পরকে মার্জনা করব।”
  • ৭. তারা তাওহীদবাদীদের এবং সালাফীদের ঘৃণা করে। আর এটা সৌদি আরবের ব্যাপারে তাদের কথা থেকে সুস্পষ্ট। যেই সৌদি আরব তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং তার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাওহীদ শিক্ষা দিচ্ছে। সালাফীদের প্রতি তাদের ঘৃণা প্রমাণিত হয় এ থেকে যে, তারা জামীলুর রহমান আল-আফগানীকে হত্যা করেছে। কারণ তিনি তাওহীদের দিকে আহ্বান করতেন, এবং তাঁর মাদরাসাহগুলোতে তাওহীদ শিক্ষা দেওয়া হতো।
  • ৮. তারা শাসকদের ভুলত্রুটির সমালোচনা করে এবং শাসকদের ব্যর্থতা নিয়ে গবেষণা করে, চাই সেসব ভুলত্রুটি সত্য হোক বা মিথ্যা হোক। আর সেসব ত্রুটিবিচ্যুতি তারা যুবকদের মধ্যে প্রচার করে, যাতে করে যুবকেরা শাসকদের ঘৃণা করে এবং তারা শাসকদের বিরুদ্ধে যুবকদের অন্তরসমূহ বিদ্বেষ দিয়ে পরিপূর্ণ করতে পারে।
  • ৯. তারা ঘৃণ্য দলবাজিতে যোগদান করে। তারা এই দলের জন্যই মিত্রতা পোষণ করে এবং এই দলের জন্যই বৈরিতা পোষণ করে।
  • ১০. তারা দলের প্রতিষ্ঠাতা কর্তৃক আরোপিত দশটি শর্ত মেনে নিয়ে ইখওয়ানী মানহাজ অনুযায়ী কাজ করার উপর বাই‘আত গ্রহণ করে। এরকম আরও বিভ্রান্তি রয়েছে, যেগুলো আমরা পরবর্তীতে বর্ণনা করতে পারি।” [ইমাম আহমাদ আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ), আল-ফাতাওয়া আল-জালিয়্যাহ ‘আনিল মানাহিজিদ দা‘আউয়িয়্যাহ; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৭৮-৭৯; তাহক্বীক্ব: শাইখ হাসান আদ-দাগরীরী; দারুল মিনহাজ কর্তৃক প্রকাশিত; সন-তারিখ বিহীন সফট কপি]
  • এছাড়াও ইমাম আহমাদ আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর “আল-মাওরিদুল আযবিয যুলাল ফীমানতুক্বিদা ‘আলা বা‘দ্বিল মানাহিজিদ দা‘আউয়িয়্যাতি মিনাল ‘আক্বাইদি ওয়াল আ‘মাল” গ্রন্থে ১২২ পৃষ্ঠা থেকে ২৩৩ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মুসলিম ব্রাদারহুড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং তাদের ২৫ টি বিভ্রান্তি উল্লেখপূর্বক সেগুলোর খণ্ডন করেছেন। অনুরূপভাবে তিনি তাঁর লেখা ১৫৬ পৃষ্ঠার গ্রন্থ “আর-রাদ্দুশ শার‘ঈ আল-মা‘ক্বূল ‘আলাল মুত্তাসিলিল মাজহূল” এর মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং ব্রাদারহুডের বিভিন্ন বিভ্রান্তির অপনোদন করেছেন।
  • ·
  • অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
  • পরিবেশনায়: www.facebook.com/SunniSalafiAthari (সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে)

Post a Comment

0 Comments