নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন
▌২৫শ অধ্যায়: ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [১ম কিস্তি]·শাইখ পরিচিতি:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) ইয়েমেনের একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ এবং সালাফী দা‘ওয়াতের মুজাদ্দিদ ছিলেন। তিনি ১৩৫৬ হিজরী মোতাবেক ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ইয়েমেনের দাম্মাজে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অসংখ্য ‘আলিমের কাছে পড়ার সৌভাগ্য পেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন—ইমাম মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী, ইমাম ইবনু বায, ইমাম আলবানী, ইমাম তাক্বিউদ্দীন হিলালী, ইমাম বাদী‘উদ্দীন আর-রাশিদী, ইমাম ‘আব্দুল্লাহ বিন হুমাইদ, ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী, ইমাম মুহাম্মাদ আস-সুবাইল, ইমাম ‘আব্দুল মুহসিন ‘আব্বাদ, ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ আস-সূমালী, ‘আল্লামাহ ইয়াহইয়া বিন ‘উসমান আল-মুদার্রিস প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)। [মাজমূ‘উ ফাতাওয়া আল-ওয়াদি‘ঈ, খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১২-১৩; ইমাম রাবী‘ (হাফিযাহুল্লাহ), তাযকীরুন নাবিহীন; পৃষ্ঠা: ৩২০-৩২১; শাইখের ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত সফট কপি]
- ইমাম আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন, “যারা শাইখাইনের তথা দুই শাইখের নিন্দা করে, যেমনটি আমরা উল্লেখ করলাম (অর্থাৎ, শাইখ মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ এবং শাইখ রাবী‘ আল-মাদখালী), সে হয় জাহিল, ফলে তাকে শেখানো হবে, আর না হয় সে বিদ‘আতী, যার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ’র কাছে পানাহ চাওয়া হবে। আমরা মহান আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, হয় তাকে হিদায়াত দিন, আর না হয় তার পিঠ ভেঙে চূর্ণ করে দিন।” [সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, ৮৫১ নং অডিয়ো ক্লিপ]
- ইমাম ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.]’র কাছে ইয়েমেনে ইমাম মুক্ববিলের দা‘ওয়াতের বিস্তৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলে তিনি বলেন, “এটি ইখলাসের ফল, এটি ইখলাসের ফল।” [আল-ইসালাহ ম্যাগাজিন; সংখ্যা: ২৮]
- ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন, “শাইখ মুক্ববিল হলেন ইমাম, শাইখ মুক্ববিল হলেন ইমাম।” [প্রাগুক্ত]
- ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] শাইখ মুক্ববিলের ব্যাপারে বলেছেন, “তিনি এই দেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন এবং তাওহীদ শিখেছেন। এরপর তিনি ইয়েমেনে গমন করেছেন এবং আল্লাহ ও তাওহীদের দিকে আহ্বান করেছেন। তাঁর দা‘ওয়াত খুবই ভালো।” [প্রাগুক্ত]
- ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] বলেছেন, “শাইখ মুক্ববিল বিন হাদী হলেন ‘আল্লামাহ, মুহাদ্দিস, মুজাহিদ এবং ইয়েমেনে সালাফী দা‘ওয়াতের মুজাদ্দিদ।” [তাযকীরুন নাবিহীন; পৃষ্ঠা: ৩১৯]
- বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর অসংখ্য গ্রন্থ ও অডিয়ো ক্লিপস রয়েছে। এই মহান মুহাদ্দিস ১৪২২ হিজরী মোতাবেক ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান। আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন। আমীন। সংগৃহীত: tasfiatarbia.org।
- ·
- ১ম বক্তব্য:
- ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
- السؤال: كيف نعمل إن لم توجد جماعة خاصة حيث يستدل دائمًا بالحديث: «إِذَا كَانَ ثَلَاثَةٌ فِي سَفَرٍ فَلْيُؤَمِّرُوا أَحَدَهُم» وإن كان هذا مطلوب في السفر فالحاجة إليه أشد في الحضر، وفي كل مصر من الأمصار فما قولكم مع الأدلة إن أمكن؟
- الجواب: أما الجماعة فلا بأس أن نعتبر أنفسنا من جماعة المسلمين، فأهل السنة باليمن يعتبرون أنفسهم من جماعة المسلمين، وأهل السنة بمصر يعتبرون أنفسهم من جماعة المسلمين، وأهل السنة بالجزائر، وفي ليبيا والسودان وفي أرض الحرمين ونجد يعتبرون أنفسهم من جماعة المسلمين، فجماعة المسلمين واحدة فهذا الذي ينبغي.
- وأما أن نفرق أو نجزئ المسلمين إلى تجزئه كما يفعل الإخوان المفلسون يقولون: هذه جماعة الشهيد فلان، وهذه جماعة الشهيد فلان، هذه جماعة الشهيد فلان، فهذا توزيع على العقول وضياع للجهود، وقد تقدمت الأدلة في أن ضعف المسلمين يكون بتفرقهم «إِنَّ الْمُؤْمِنَ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا».
- فالمؤمن لا يكون قوياً إلا بإخوانه ﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَىٰ أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَىٰ أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ﴾ [الحجرات: ١١]
- وقال تعالى: ﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ﴾ [الحجرات: ١٣]
- أنا أريد أن تقرأ قصص الأنبياء كلها في القرآن كله، هل هناك نبي وهناك جماعة بجانبه أم كان المسلمون كلهم يتبعون النبي؟ والآن يتبعون علمائهم ويتبعون الدعاة إلى الله.
- فمن دعاهم إلى تفرقة ولو كان سلفياً من أصحاب السلفية المزيَّفة لا يجيبونه؛ لأنه ربما يكون شخص يدعو إلى الحزبية تحت غلاف السلفية. بل تدعو إلى الكتاب والسنة وإلى أصحاب الحديث لكن كما يفعل أبو عثمان الصابوني في كتابه «عقائد السلف» فتارة يعبر بأهل الحديث، وأخرى بأهل السنة، وأخرى يعبر بالسلفية والمعنى واحد.
- وأما أن نوزع المسلمين ونجزأهم فهذا هو سبب ضعفهم.
- ونحن لا نقول: إنه لا يجوز العمل الجماعي الذي يرمي أهل السنة بأنهم لا يقولون بالعمل الجماعي فهو كذاب أشر مفتر عليهم. نحن لا نقبل بالعمل الحزبي، أما العمل الجماعي فالواجب على المسلمين أن يتحدوا وأن يعملوا للإسلام، ولا يستطيع أحد منا أن يحقق للإسلام شيئاً بمفرده، لكن إذا أراد أن يستغل عملك هذا الحزبيون عملت للإسلام في حدود ما تستطيع به والله المستعان.
- প্রশ্ন: “যদি কোনো নির্দিষ্ট দল (জামা‘আহ খাসসাহ) না পাওয়া যায়, তাহলে কীভাবে আমরা এই হাদীসের প্রতি আমল করব—“তিন ব্যক্তি একত্রে সফর করলে তারা যেন তাদের একজনকে আমীর নিযুক্ত করে।” (আবূ দাঊদ, হা/২৬০৯; সনদ: হাসান) আর সর্বদাই এই হাদীস দ্বারা দলিল গ্রহণ করে বলা হয়, সফরেই যদি এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তাহলে গৃহে অবস্থানকালে এবং যাবতীয় ভূখণ্ডে এর প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? সম্ভব হলে দলিল-সহ বলবেন।”
- উত্তর: “জামা‘আত বা দলের ক্ষেত্রে আমরা নিজেদেরকে জামা‘আতুল মুসলিমীন তথা মুসলিমদের জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করব, এতে কোনো সমস্যা নেই। ইয়েমেনের আহলুস সুন্নাহ নিজেদেরকে জামা‘আতুল মুসলিমীনের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করে। মিশরের আহলুস সুন্নাহ নিজেদেরকে জামা‘আতুল মুসলিমীনের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করে। আলজেরিয়া, লিবিয়া, সুদান, মক্কা-মদিনা ও নজদের আহলুস সুন্নাহ নিজেদেরকে জামা‘আতুল মুসলিমীনের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করে। সুতরাং জামা‘আতুল মুসলিমীন একটি হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
- পক্ষান্তরে মুসলিমদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করা এবং তাদেরকে দলে দলে বিভক্ত করা; যেমনটি করেছে আল-ইখওয়ানুল মুফলিসূন (নিঃস্ব ব্রাদারহুড)। তারা বলে—এটা অমুক শহীদের জামা‘আত, এটা অমুক শহীদের জামা‘আত, এটা অমুক শহীদের জামা‘আত। এই কাজ হলো বিভক্তি সৃষ্টি করা, বিবেকের সাথে খেলায় লিপ্ত হওয়া এবং চেষ্টা ও সাধনার ধ্বংস সাধন করা। এ ব্যাপারে দলিলসমূহ গত হয়ে গেছে যে, মুসলিমদের দুর্বলতা তাদের বিভক্তির কারণেই হয়েছে। “একজন মু’মিন আরেকজন মু’মিনের জন্য ইমারতস্বরূপ, যার এক অংশ অপর অংশকে শক্তিশালী করে থাকে।” (সাহীহ বুখারী, হা/৪৮১; সাহীহ মুসলিম, হা/২৫৮৫)
- একজন মু’মিন তার ভাইদেরকে বাদ দিয়ে শক্তিশালী হতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে ঈমানদারগণ, কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম।” (সূরাহ হুজুরাত: ১১)
- মহান আল্লাহ আরও বলেন, “হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি, আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহ’র কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাক্বওয়াসম্পন্ন।” (সূরাহ হুজুরাত: ১৩)
- আমি চাইব, তুমি সম্পূর্ণ ক্বুরআনে নাবীগণের সকল ঘটনা পড়বে। (তুমি লক্ষ করবে,) এমন কোনো নাবী কি আছেন, যার পাশে অন্য একটি জামা‘আত বা দল রয়েছে? নাকি সকল মুসলিম (নিজেদের) নাবীর অনুসরণ করেছে? সুতরাং এখন মুসলিমরা তাদের ‘আলিমদের অনুসরণ করবে এবং আল্লাহ’র দিকে আহ্বানকারী দা‘ঈদের অনুসরণ করবে।
- যে ব্যক্তি তাদেরকে বিভক্তির দিকে আহ্বান করবে, যদি সে ব্যক্তি নামধারী সালাফীও হয়, তবুও তারা তার ডাকে সাড়া দিবে না। কেননা হতে পারে সে সালাফিয়্যাহ’র মোড়কে হিযবিয়্যাহ’র (দলাদলি) দিকে আহ্বান করছে। বরং তুমি কিতাব, সুন্নাহ এবং আসহাবুল হাদীসদের দিকে আহ্বান করবে। যেমনটি করেছেন আবূ ‘উসমান আস-সাবূনী [মৃত: ৪৪৯ হি.] তাঁর ‘আক্বাইদুস সালাফ গ্রন্থে। তিনি কখনো আহলুল হাদীস বলেছেন, কখনো আহলুস সুন্নাহ বলেছেন, আবার কখনো সালাফিয়্যাহ বলেছেন। এগুলোর অর্থ একটাই।
- পক্ষান্তরে মুসলিমদের দলে দলে বিভক্ত করাই তাদের দুর্বলতার কারণ। আমরা এ কথা বলছি না যে, দলবদ্ধভাবে কাজ করা জায়েজ নয়। যে ব্যক্তি আহলুস সুন্নাহ’র লোকদের অপবাদ দিয়ে বলে যে, তারা দলবদ্ধভাবে কাজ করা বৈধ মনে করে না, সে সবচেয়ে খারাপ মিথ্যুক এবং আহলুস সুন্নাহ’র উপর অপবাদদানকারী।
- আমরা দলাদলির কাজকে (আল-‘আমালুল হিযবী) বৈধ বলি না। পক্ষান্তরে দলবদ্ধভাবে কাজ করা, (এ ব্যাপারে আমরা বলি) মুসলিমদের উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং ইসলামের জন্য কাজ করা ওয়াজিব। আমাদের কেউই ইসলামের জন্য কোনো কিছু একাকী করতে সক্ষম নয়। কিন্তু দলবাজরা (হিযবীরা) যখন তোমার কাজের ফল লাভ করতে চায়, তখন তুমি ইসলামের জন্য তোমার সাধ্যানুযায়ী একটা গণ্ডির মধ্যে এসে কাজ করতে শুরু করবে। আল্লাহ সহায় হোন।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), গারাতুল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহলি ওয়াস সাফসাত্বাহ; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ১৯৭-১৯৯; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
- ·
- ২য় বক্তব্য:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
- السؤال: ما هو موقف أهل السنة والجماعة من الإخوان المسلمين وحزب التحرير؟ بينوا لنا وجه انحرافهم وجزاكم الله خيرا.
- الجواب: موقف أهل السنة والجماعة من الإخوان المسلمين أنهم يحكمون على منهجهم بأنه منهج مبتدع، وعلى أفرادهم بأنه من كان يعلم بالمنهج ويلتزم به فإنه مبتدع، ومن كان لا يعلم المنهج وهو يظن أنه ينصر الإسلام والمسلمين فيعتبر مخطئا. وأصل دعوة الإخوان المسلمين دعوة قبورية كما ذكر هذا الأخ الشحي في رسالته «حوار هادئ مع إخواني» وهي رسالة قيمة، فقد ذكر أن حسن البنا كان يطوف بالقبور، وكان يحضر الموالد، وذكر غيره بأن حسن البنا كان يهمه أن يجمع الناس، ويجمع بين المتناقضات يقول في بعض رسائله: دعوتنا سلفية صوفية. وكيف يتأتى هذا! والصوفية بمنأى عن السلفية، وقد قرأت أن سكرتيره الخاص كان نصرانيا، وهناك كتاب طيب بعنوان «التاريخ السري للإخوان المسلمين» لعلي العشماوي أنصح بقراءته.
- فدعوة الإخوان المسلمين تعتبر نكبة على الدعوات لأن أكبر أعدائها هم أهل السنة، فهم يتحالفون مع الشيوعي والبعثي والناصري والعلماني والرافضي، ولكن لا يمكن أن يتعاونوا مع السني فهو خطير وقد قال قائلهم: لو أن لي من الأمر شيئا لبدأنا بكم ياأهل السنة قبل الشيوعية. وشاهد ذلك ما حصل لأهل كنر في أفغانستان الشيخ جميل ومن كان معه -رحمه الله-، وأبادوا الدعوة وأفنوها في كنر وذبحوا رجالها.
- فدعوة الإخوان المسلمين نكبة على الدعوة، دعوة سياسية فهم يأتون السني بالوجه السني إذا احتاجوا إليه، والبعثي بالوجه البعثي إذا احتاجوا إليه، والشيوعي بالوجه الشيوعي.
- والشيء بالشيء يذكر فعند أن كنا في الجامعة الإسلامية يصرخون ويقولون: الشيوعية احتلت البلاد وأنتم تبقون تدرسون هاهنا، ثم إذا قدمتم إلى بلدكم ستؤخذون من المطار. فهم يستغلون الفرص ويستثيرون الناس، ولما جاءت الشيوعية انسدحوا لها وأهلا وسهلا بالأخ علي سالم البيض، وقال الأخ علي سالم البيض كذا وكذا، وأنكروا علي لماذا أقول: إن علي سالم البيض كافر. فهو عندهم في أول الأمر شيوعي ثم بعد ذلك مسلم، وفي وقت الحرب كافر، فهم ليس لهم مبدأ ويمكن أن يتقربوا بالسني إلى الولاة، أما أهل السنة فهم يتحدونهم أن قد شكوهم إلى وال من الولاة، ولكن يردون عليهم في أخطائهم لعل الله أن يهديهم ويرجعوا وبحمد الله فقد رجع كثير من شبابهم.
- أما حزب التحرير فهو حزب منحرف ضال يحرف في العقيدة، ويبيح المحرمات ومصافحة النساء، ويهمه الوثوب على السلطة، فهو أخبث من حزب الإخوان المفلسين -وأخبث أفعل تفضيل يدل على المشاركة وزيادة- فيجب أن يبتعد عنه، وقد قيل للنبهاني الذي كان مؤسسه: لماذا لا تعلمون شبابكم القرآن؟ فقال: أنا لا أريد أن أخرج دراويش، وأجاز للمرأة الدخول في الانتخابات.
- প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড এবং হিযবুত তাহরীরের ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অবস্থান কী? আমাদের কাছে তাদের বিভ্রান্তির কারণ বর্ণনা করুন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।”
- উত্তর: “মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অবস্থান হলো—তারা (আহলুস সুন্নাহ) তাদের মানহাজের ব্যাপারে এই হুকুম দেয় যে, তা একটি বিদ‘আতী মানহাজ। আর তাদের সদস্যদের ব্যাপারে এই হুকুম দেয় যে, তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এই মানহাজ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও তা আঁকড়ে ধরে, সে বিদ‘আতী; আর যে ব্যক্তি এই মানহাজ সম্পর্কে জানে না, বরং মনে করে ব্রাদারহুডের মানহাজ ইসলাম ও মুসলিমদের সাহায্য করছে, সে ভুলকারী হিসেবে পরিগণিত হবে।
- মূলত মুসলিম ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াত হলো কবরপূজারীদের দা‘ওয়াত। যেমনটি ভাই আশ-শিহহী তাঁর লেখা “হিওয়ারুন হাদী’ মা‘আ ইখওয়ানী (একজন ইখওয়ানীর সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা)” শীর্ষক পুস্তিকায় উল্লেখ করেছেন। এটি একটি মূল্যবান পুস্তিকা। তিনি বলেছেন, হাসান আল-বান্না কবরে ত্বাওয়াফ (প্রদক্ষিণ) করত এবং মীলাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতো। অন্য এক ব্যক্তি বলেছেন, হাসান আল-বান্না লোকদেরকে একত্রিত করার প্রতি গুরুত্ব দিতেন। তিনি পরস্পরবিরোধী বিষয়গুলো জমা করতেন। তিনি তাঁর এক পুস্তিকায় বলেছেন, আমাদের দা‘ওয়াত ‘সালাফী ও সূফী’ দা‘ওয়াত (দা‘ওয়াতুনা সালাফিয়্যাতুন সূফিয়্যাহ)। তিনি কীভাবে এটা বলেন! সূফীবাদ সরাসরি সালাফিয়্যাহ’র সাথে সাংঘর্ষিক। আমি এরকমটা পড়েছি যে, তাঁর পার্সোনাল সেক্রেটারি খ্রিষ্টান ছিল। এ ব্যাপারে ‘আলী ‘আশমাউয়ীর “আত-তারীখুস সির্রী লিল ইখওয়ানিল মুসলিমীন (মুসলিম ব্রাদারহুডের গোপন ইতিহাস)” শিরোনামে একটি ভালো গ্রন্থ আছে। আমি গ্রন্থটি পড়ার নসিহত করি।
- মুসলিম ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াত (সালাফী) দা‘ওয়াতের উপর দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত। কেননা ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াতের সবচেয়ে বড়ো শত্রু আহলুস সুন্নাহ। তারা কমিউনিস্ট, বাথিস্ট, নাসেরাবাদী, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী এবং রাফিদ্বী শী‘আর সাথে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু তাদের জন্য সুন্নী’র সাথে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্ভব নয়, কেননা সে (সুন্নী) বিপদজনক। তাদের এক ব্যক্তি বলেছে, “আমাদের যদি ক্ষমতা থাকত, তাহলে অবশ্যই কমিউনিস্টদের আগে আমরা তোমাদেরকে দিয়ে শুরু করতাম, হে আহলুস সুন্নাহ!” আফগানিস্তানে কুনারবাসীদের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তা এটাই প্রমাণ করে; যেমন শাইখ জামীল (রাহিমাহুল্লাহ) ও তাঁর সঙ্গীবর্গ। তারা (ব্রাদারহুড) কুনারে (সালাফী) দা‘ওয়াতকে ধ্বংস ও নির্মূল করেছে এবং সেখানকার লোকদের (সালাফীদের) জবাই করেছে।
- মুসলিম ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াত (সালাফী) দা‘ওয়াতের উপর দুর্যোগস্বরূপ। তাদের দা‘ওয়াত রাজনৈতিক। তারা যখন প্রয়োজন মনে করে, তখন সুন্নী’র কাছে যায় সুন্নী’র রূপ ধরে। তারা যখন প্রয়োজন মনে করে, তখন বাথিস্টের কাছে যায় বাথিস্টের রূপ ধরে, আর কমিউনিস্টের কাছে যায় কমিউনিস্টের রূপ ধরে।
- আমরা যখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম, তখন তারা চিল্লাচিল্লি করছিল আর বলছিল, “কমিউনিজম সকল দেশ দখল করে নিল, আর তোমরা এখানে বসে বসে স্টাডি করছ! যখন তোমরা তোমাদের দেশে যাবে, তখন এয়ারপোর্ট থেকেই তোমাদের পাকড়াও করা হবে।” তারা তাদের সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাল এবং লোকদেরকে উসকানি দিতে থাকল। এরপর যখন কমিউনিজম আসল, তখন তারা তাদের সাথে মিশতে লাগল। তারা অভ্যর্থনা জানাল, “ওয়েলকাম, ব্রাদার ‘আলী সালিম আল-বীদ্ব। ব্রাদার ‘আলী সালিম বীদ্ব এই বলেছেন, ওই বলেছেন।” আর তারা এই মর্মে আমার বিরোধিতা করল যে, আমি কেন বলি—নিশ্চয় ‘আলী সালিম আল-বীদ্ব কাফির। সে তাদের কাছে প্রথমত কমিউনিস্ট, তারপর মুসলিম, আর যুদ্ধের সময় কাফির। তাদের কোনো ভিত্তি নেই। এমনটাও সম্ভব যে, তারা সুন্নী’র মাধ্যমে শাসকবর্গের নৈকট্য অর্জন করবে। পক্ষান্তরে আহলুস সুন্নাহ’র সাথে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাদের ব্যাপারে শাসকের নিকট অভিযোগ করে। কিন্তু তারা (আহলুস সুন্নাহ) তাদের ভুলগুলোর ক্ষেত্রেই তাদেরকে রদ করে। হয়তো আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত দিবেন এবং তারা (বাতিল থেকে) প্রত্যাবর্তন করবে। আল-হামদুলিল্লাহ, তাদের অনেক যুবক (বিপথগামী মানহাজ থেকে) ফিরে এসেছে।
- আর হিযবুত তাহরীর একটি বিপথগামী পথভ্রষ্ট দল। তারা ‘আক্বীদাহর ক্ষেত্রে বিকৃতি সাধন করে, হারাম কাজসমূহকে বৈধ ঘোষণা করে, মহিলাদের সাথে করমর্দন করা বৈধ ঘোষণা করে। তারা শাসকদের উপর আক্রমণ করাকে গুরুত্ব দেয়। এই দল আল-ইখওয়ানুল মুফলিসূনের থেকেও খারাপ। এই দল থেকে দূরে থাকা ওয়াজিব। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা নাবহানীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, আপনারা আপনাদের যুবকদের ক্বুরআন শিক্ষা দেন না কেন? সে জবাবে বলেছে, “আমি (আমার দল থেকে) দরবেশ বের করতে চাইনা!” এছাড়াও সে মহিলাদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছে।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), তুহফাতুল মুজীব ‘আলা আসইলাতিল হাদ্বিরি ওয়াল গারীব; পৃষ্ঠা: ২০৩-২০৪; দারুল আসার, সানা (ইয়েমেন) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]
- ·
- ৩য় বক্তব্য:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
- السؤال: لقد وصفت الإخوان المسلمين بالمفلسين ما هي أسباب الإفلاس؟
- الجواب: هم مفلسون في السياسة، فقد أصبحوا كالكرة فإن جاءهم حزبي أو شيوعي أو بعثي أو ناصري انضموا معه من أجل أن يتوصلوا إلى الكراسي، ولكن الكراسي لا تأتي بالانتخابات والتصويتات، لا تأتي الكراسي إلا بعمل للإسلام. وفي العلم أيضًا مفلسون، ولكن الذي عنيته أنّهم مفلسون في السياسة.
- প্রশ্ন: “আপনি ইখওয়ানুল মুসলিমীনকে (মুসলিম ব্রাদারহুড) ইখওয়ানুল মুফলিসীন তথা নিঃস্ব ব্রাদারহুড বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের নিঃস্ব হওয়ার কারণ কী?”
- উত্তর: “তারা রাজনীতির ক্ষেত্রে নিঃস্ব। তারা গোলাকার বলের মত হয়ে গেছে। তাদের কাছে যদি দলবাজ (হিযবী), বা কমিউনিস্ট, কিংবা বাথিস্ট, বা নাসেরাবাদী আসে, তাহলে তারা মসনদ পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য তাদের সাথেও মিলিত হয়। কিন্তু মসনদ তথা ক্ষমতা ভোটাভুটি ও নির্বাচনের মাধ্যমে আসে না। মসনদ আসে কেবল ইসলাম প্র্যাকটিস করার মাধ্যমে। তারা ‘ইলমের ক্ষেত্রেও নিঃস্ব। কিন্তু আমি উক্ত কথা বলার মাধ্যমে এই উদ্দেশ্য নিয়েছি যে, তারা রাজনীতির ক্ষেত্রে নিঃস্ব।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), মাক্বতালুশ শাইখ জামীলুর রাহমান; পৃষ্ঠা: ৪৯; দারুল আসার, সানা (ইয়েমেন) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২১ হি./২০০০ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]
- ·
- ৪র্থ বক্তব্য:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
- السؤال: هل خلافنا مع جماعة الإخوان المسلمين خلاف حول الانتخابات أو هو خلاف فرعي كما يزعمون أم أن خلافنا معهم خلاف عقدي منهجي؟
- الجواب: سؤال حسن بارك الله فيك، اختلافنا معهم اختلاف عقائدي ومنهجي، ونحن ما نتحامل عليهم لأنه يوجد فيهم من يحلق لحيته ففي المجتمع من هو شر منه، أو فيهم من يلبس الكرفيتة –أخبرت أن حمود هاشم عند أن ذهب إلى أمريكا يدعو الى التجمع لابس الكرفيتة أبو هاشم أبو هاشم لابس الكرفيتة والبنطلون– هذا أيضا ليس النزاع فيه، إنما أذكره لانه متجلد في الدفاع عن الإخوان المفلسين، ما يدريكم إنه هاشمي يريد أن يوقعكم في المتاهات وهاشمي يريد ان يوقعكم في المتاهات والله المستعان.
- القصد أن بعض إخواننا كما يقول الأخ يظن أنه خلاف في العبادات ، وأن مثل وضع اليد اليمنى على اليسرى في الصلاة ، أو مثل «لا وضوء لمن لم يذكر أسم الله عليه» أو غير ذلك كخلاف الفقهاء، يظنون أن خلافنا مع الإخوان المفلسين مثل خلاف الفقهاء! لا، خلافنا معهم يتعلق بالعقيدة:
- ١ - فهم رضوا بوحدة مع الشيوعيين.
- ٢ - وهم أيضا كانوا يؤذون إخوانهم أهل السنة ﴿وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا﴾.
- ٣ - قبل هذا وهم أيضا يتقولون على من لم ينتظم معهم، ويظنون أنهم جماعة المسلمين ، أما الآن الحمدلله هم من جماعة المسلمين، يقولون من قبل عندما جئنا إلى هنا هم جماعة المسلمين! «يد الله مع الجماعة»، «مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ قِيدَ شِبْرٍ فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الإِسْلاَمِ مِنْ عُنُقِه». أو بهذا المعنى، الآن هم من جماعة المسلمين، وبعدها إن شاء الله سيتنازلون ويقولون إن شاء الله نتبع أهل السنة فإنهم على الهدى.
- ٤ - ميثاق الشرف أيضا مع عشرة أحزاب منها ماهو كافر على ألا يتكلم بعضهم في بعض، ولا يكفر بعضهم بعضا.
- ٥ - التنسيق مع البعثيين.
- ٦ - الهرولة بعد مايأتي من قبل أعداء الإسلام يهرولون هرولة.
- فخلافنا معهم في العقيدة ليس كخلاف الفقهاء رحمهم الله تعالى.
- প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে আমাদের বিরোধিতা কি ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে বা তাদের সাথে আমাদের বিরোধিতা কি শাখাগত (মাসআলাহ’র) বিরোধিতা? নাকি তাদের সাথে আমাদের বিরোধিতা ‘আক্বীদাহ ও মানহাজগত বিরোধিতা?”
- উত্তর: “সুন্দর প্রশ্ন। আল্লাহ তোমার মধ্যে বরকত দিন। আমাদের সাথে তাদের বিরোধিতা ‘আক্বীদাহ ও মানহাজগত বিরোধিতা। আমরা তাদের বিরোধিতা এজন্য করি না যে, তাদের মধ্যে দাড়ি মুণ্ডনকারী লোক রয়েছে। সমাজে এর চেয়েও নিকৃষ্ট ব্যক্তি রয়েছে। অথবা আমরা তাদের বিরোধিতা এজন্য করি না যে, তাদের মধ্যে টাই পরিধানকারী ব্যক্তি রয়েছে। আমি অবহিত হয়েছি যে, হামূদ হাশিম (আবূ হাশিম) আমেরিকা যাওয়ার সময় প্যান্ট ও টাই পরিধান করে। সে লোকদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে আহ্বান করে। আমাদের বিরোধিতা এক্ষেত্রেও নয়। আমি তার কথা উল্লেখ করলাম, কারণ সে ইখওয়ানুল মুফলিসূনকে ডিফেন্ড করার ক্ষেত্রে দৃঢ়চেতা ব্যক্তি। তোমরা কি জান যে, হাশিমী তোমাদেরকে গোলকধাঁধায় নিক্ষেপ করতে চায়? আল্লাহ সহায় হোন।
- আমাদের কিছু ভাই মনে করে, তাদের সাথে আমাদের বিরোধ ইবাদতের ক্ষেত্রে। যেমন: নামাযে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখা, বা যে ‘বিসমিল্লাহ’ বলেনি তার অজু হয়নি প্রভৃতি বিষয়ের মতবিরোধ। অর্থাৎ, তাদের সাথে আমাদের মতবিরোধ ফাক্বীহদের মতবিরোধের মতো। তারা মনে করে, ইখওয়ানুল মুফলিসূনের সাথে আমাদের বিরোধিতা ফাক্বীহদের মধ্যকার বিরোধিতার মতো। না, বরং তাদের সাথে আমাদের বিরোধিতা ‘আক্বীদাহর ক্ষেত্রে। যথা:
- ক. তারা কমিউনিস্টদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে রাজি।
- খ. তারা তাদের আহলুস সুন্নাহ ভাইদের কষ্ট দেয়। অথচ মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর যারা মু’মিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে তাদের কৃত কোনো অন্যায় ছাড়াই কষ্ট দেয়, অবশ্যই তারা বহন করবে অপবাদ ও সুস্পষ্ট পাপ।” (সূরাহ আহযাব: ৫৮)
- গ. ইতঃপূর্বে যারা তাদের প্রত্যাশ্যা করত না বা তাদের সাথে থাকত না, তারা (ব্রাদারহুড) তাদের নামেই মিথ্যাচার করত। তারা ধারণা করত যে, স্রেফ তারাই জামা‘আতুল মুসলিমীন। [হাদীসে যে দলটিকে আঁকড়ে ধরতে বলা হয়েছে এবং যে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যাপারে কঠিনভাবে হুঁশিয়ার করা হয়েছে, সে দলটি জামা‘আতুল মুসলিমীন। (সাহীহ বুখারী, হা/৭০৮৪।) – অনুবাদক] তবে আল-হামদুলিল্লাহ, এখন তারা বলে যে, তারা জামা‘আতুল মুসলিমীনের অন্তর্ভুক্ত। আর ইতঃপূর্বে আমরা যখন এখানে এসেছি, তখন কেবল তারাই ছিল জামা‘আতুল মুসলিমীন! নাবী ﷺ বলেছেন, “জামা‘আতের উপর রয়েছে আল্লাহ’র হাত (সাহায্য)।” (তিরমিযী, হা/২১৬৬; সনদ: সাহীহ) নাবী ﷺ আরও বলেছেন, “যে লোক জামা‘আত হতে এক বিঘত পরিমাণ বিচ্ছিন্ন হল, সে ইসলামের বন্ধন তার ঘাড় হতে ফেলে দিল।” (তিরমিযী, হা/২৮৬৩; সনদ: সাহীহ)
- এখন তারা নিজেদেরকে জামা‘আতুল মুসলিমীনের অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করছে। এরপর আল্লাহ চাইলে অচিরেই তারা আরও নিচে নেমে বলবে, আমরা ইনশাআল্লাহ আহলুস সুন্নাহ’র অনুসরণ করব, কারণ তারাই হিদায়াতের উপর আছে!
- ঘ. ১০ টি দলের সাথে এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হওয়া (মীসাক্বুশ শারফ) যে, তাদের কেউ কারও বিরুদ্ধে কথা বলবে না এবং কেউ কাউকে তাকফীর করবে না; অথচ ওই দলগুলোর মধ্যে কাফির আছে।
- ঙ. বাথিস্টদের সাথে প্ল্যান-প্রোগ্রাম করা।
- চ. ইসলামের শত্রুদের নিকট থেকে কোনো দুর্যোগ আসলে দ্রুত প্রস্থান করা।
- তাদের সাথে আমাদের বিরোধ ফাক্বীহগণের (রাহিমাহুমুল্লাহ) মধ্যকার বিরোধের মতো নয়।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), গারাতুল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহলি ওয়াস সাফসাত্বাহ; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৭৬-১৭৭; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
- ·
- ৫ম বক্তব্য:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
- السؤال: الإخوان المسلمين ينكرون عليكم تسميتهم بالمفلسين ويحتجون بحديث أبي هريرة في مسلم : «أتدرون ما المفلس»؟
- الجواب: هل ما يوجد مفلس إلا يدخل النار ؟! الرسول –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– يقول : «من وجد متاعه عن شخص عند شخص قد أفلس فهو أحق به».
- عجباً عجباً يا إخوان من هذه الأباطيل، ومن هذه التلبيسات على الناس، فهم مفلسون في السياسة، ومفلسون بالدين إفلاساً لا يخرجهم من الدين، مفلسين في الدين يا إخوان، يدعون الناس إلى مجلس النواب الطاغوتي، ويدعون الناس إلى الانتخابات، وإلى الإنضمام معهم ومهاجمة من لم ينضم معهم.
- الله سبحانه وتعالى هو الذي أفلس بهم ليس بحولنا ولا بقوتنا، هو الذي حكم عليهم بالفلاس ﴿فَلَمَّا زَاغُوا أَزَاغَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ﴾، عبدالمجيد الزنداني هو ما يجهل ما يجري في مجلس النواب ولكن الحزبية أعمت قلبه، وحب الدنيا أيضاً أعمى قلبه، فهو أعرف بالبعثية وبدسائسها منّا، وهو أعلم بالعلمانية وبدسائسها منّا، وهو أعرف أيضاً بالديمقراطية ومعانيها ولكن يا إخوان ﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِنَ الأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ﴾، ﴿وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ الَّذِي آتَيْنَاهُ آيَاتِنَا فَانسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنْ الْغَاوِينَ *َ لَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِنْ تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَثْ﴾، بئس المثل يشبه الله سبحانه وتعالى من ترك العلم ظهرياً ومال إلى الدنيا ﴿وَلَا تُطِعْ مَنْ أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا﴾، ﴿فَأَعْرِضْ عَنْ مَنْ تَوَلَّى عَنْ ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا * ذَلِكَ مَبْلَغُهُمْ مِنَ الْعِلْمِ﴾.
- هو مستعد أن يصادق الشيعي والبعثي والصوفي حتى الاشتراكي قال الأخ علي سالم البيض نائب الرئيس والأخ علي سالم البيض بيض الله عيونه وعيون من زعم أنه قد أسلم، كيف مقبل يتكلم في علي سالم البيض وقد رأيناه في التلفزيون يطوف على البيت ويبكي أي نعم يطوف على البيت لأجل أمهات خمس ما ذهب يطوف على البيت لله عز وجل لكن من أجل العملة الغالية والله المستعان يا إخواننا.
- فإياكم والتلون يا أهل السنة اثبتوا على الحق قال قائل ولا أخبر به من هو وقد سُئل عن الديمقراطية قال : نعم هي قبل أيام عندنا حرام، والآن حلال، الله يصلحه الله يصلحه الله يصلحه، فأنتم إياكم والتلون إياكم والتلون اثبتوا يا أهل السنة اثبتوا بارك الله فيكم اثبتوا على الحق، واقلبلوا على العلم النافع، سابقوا أمريكا واسبقوا أذنابها من الحزبيين ومن الحكام اسبقوهم بارك الله فيكم إلى المسلمين، وعلموا المسلمين دسائس أمريكا وديمقراطية أمريكا.
- প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুডকে যে আপনি ‘মুফলিসূন’ তথা ‘নিঃস্ব’ বলেছেন, ব্রাদারহুডরা এ নিয়ে আপনার বিরোধিতা করছে এবং তারা সাহীহ মুসলিমে বর্ণিত আবূ হুরাইরাহ’র ‘তোমরা কি জান, মুফলিস (নিঃস্ব) কে?’– হাদীসটি দিয়ে দলিল দিচ্ছে।”
- উত্তর: “এমন কোনো মুফলিস (নিঃস্ব) কি আছে, যে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না? রাসূল ﷺ বলেছেন, “কোনো ব্যক্তি মুফলিসের (নিঃস্ব) দখলে অবিকল তার মাল পেয়ে গেলে অন্যের তুলনায় সে-ই তার অগ্রগণ্য হকদার।” (ইবনু মাজাহ, হা/২৩৫৮; সনদ: সাহীহ) [যে ব্যক্তি তার পণ্য সামগ্রী বিক্রি করল, অতঃপর ক্রেতা নিঃস্ব বা দেউলিয়া হয়ে গেল, কিন্তু বিক্রেতার মূল্য সে পরিশোধ করেনি। পরে বিক্রেতা ক্রেতার কাছে তার উক্ত পণ্য সামগ্রী হুবহু পেলে সেই তার সর্বাধিক হকদার। – অনুবাদক]
- হে ভ্রাতৃমণ্ডলী, এই বাতিল কর্মকাণ্ড এবং লোকদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করা খুবই আশ্চর্যজনক। তারা রাজনীতির ক্ষেত্রে নিঃস্ব এবং দ্বীনের ক্ষেত্রেও এমন নিঃস্ব, যে নিঃস্বতা তাদেরকে দ্বীন থেকে বের করে দেয় না।
- হে ভ্রাতৃমণ্ডলী, তারা দ্বীনের ক্ষেত্রে নিঃস্ব। তারা মানুষকে ত্বাগূতী প্রতিনিধি সভার দিকে আহ্বান করে। তারা মানুষকে ভোটাভুটির দিকে, তাদের দলে যোগদানের দিকে এবং যারা তাদের দলে যোগদান করে না তাদেরকে আক্রমণ করার দিকে আহ্বান করে। স্বয়ং আল্লাহ স্বীয় ক্ষমতাবলে তাদেরকে নিঃস্ব করেছেন। তিনিই তাদের নিঃস্ব হওয়ার ফায়সালা করেছেন। তিনি বলেছেন, “তারা যখন বাঁকাপথ অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের হৃদয়গুলোকে বাঁকা করে দিলেন।” (সূরাহ সফ: ৫)
- প্রতিনিধি সভায় যা হয় তা ‘আব্দুল মাজীদ আয-যিনদানীর [‘আব্দুল মাজীদ আয-যিনদানী ইয়েমেন মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতা – সংকলক।] অজানা নয়। কিন্তু হিযবিয়্যাহ (দলবাজি) তার অন্তরকে অন্ধ করে দিয়েছে। দুনিয়ার ভালোবাসাও তার অন্তরকে অন্ধ করে দিয়েছে। সে বাথিজম ও তার চক্রান্তের ব্যাপারে আমাদের চেয়ে ভালো জানে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও তার চক্রান্তের ব্যাপারে সে আমাদের চেয়ে ভালো জানে। গণতন্ত্র ও তার মর্মার্থের ব্যাপারে সে ভালো জানে। কিন্তু হে ভ্রাতৃমণ্ডলী, মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয় পণ্ডিত ও সংসার বিরাগীদের অনেকেই মানুষের ধনসম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, আর আল্লাহ’র পথে বাধা দেয়।” (সূরাহ তাওবাহ: ৩৪)
- তিনি আরও বলেছেন, “আর তুমি তাদের উপর সে ব্যক্তির সংবাদ পাঠ করো, যাকে আমি আমার আয়াতসমূহ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে তা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং শয়তান তার পেছনে লেগেছিল। ফলে সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। আর আমি ইচ্ছা করলে উক্ত নিদর্শনাবলীর মাধ্যমে তাকে অবশ্যই উচ্চ মর্যাদা দিতাম, কিন্তু সে পৃথিবীর প্রতি ঝুঁকে পড়েছে এবং স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে কুকুরের মতো। যদি তার উপর বোঝা চাপিয়ে দাও তাহলে সে জিহ্বা বের করে হাঁপাবে, কিংবা তাকে যদি ছেড়ে দাও তাহলেও সে জিহ্বা বের করে হাঁপাবে।” (সূরাহ আ‘রাফ: ১৭৫-১৭৬) যে ব্যক্তি অবহেলাভরে ‘ইলমকে বর্জন করে এবং দুনিয়ার দিকে ঝুঁকে, তার সাথে মহান আল্লাহ এক নিকৃষ্ট দৃষ্টান্তের তুলনা দিয়েছেন।
- তিনি আরও বলেছেন, “আর ওই ব্যক্তির আনুগত্য কোরো না, যার অন্তরকে আমি আমার যিকির থেকে গাফিল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে এবং যার কর্ম বিনষ্ট হয়েছে।” (সূরাহ কাহাফ: ২৮) তিনি আরও বলেছেন, “অতএব তুমি তাকে উপেক্ষা করে চল, যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয় এবং কেবল দুনিয়ার জীবনই কামনা করে। এটাই তাদের জ্ঞানের শেষ সীমা।” (সূরাহ নাজম: ২৯-৩০)
- ব্রাদারহুড শী‘আ, বাথিস্ট, সূফী, এমনকি সমাজতন্ত্রীর সাথে বন্ধুত্ব করতে প্রস্তুত। তারা বলে, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভাই ‘আলী সালিম আল-বীদ্ব। আল্লাহ তার চোখের পর্দা উন্মোচন করে দিন, আর যারা তাকে (বীদ্বকে) মুসলিম মনে করে, তাদের চোখের পর্দা উন্মোচন করে দিন। (তারা বলে,) মুক্ববিল কীভাবে ‘আলী সালিম বীদ্বের সমালোচনা করেন, অথচ আমরা টিভিতে বীদ্বকে বাইতুল্লাহ ত্বাওয়াফ করতে এবং কাঁদতে দেখেছি?!
- হ্যাঁ। সে বাইতুল্লাহ ত্বাওয়াফ করেছে। কিন্তু সে আল্লাহ’র জন্য ত্বাওয়াফ করতে যায়নি। বরং সে গেছে বহুমূল্য মুদ্রার জন্য। হে আমাদের ভাইয়েরা, আল্লাহ সহায় হোন।
- হে আহলুস সুন্নাহ, তোমরা বহুরূপী (বা অস্থিত) হওয়া থেকে বেঁচে থাক। তোমরা হকের উপর অটল থাক। এক ব্যক্তি বলেছে –আমি তার পরিচয় দিচ্ছি না– তাকে যখন গণতন্ত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “হ্যাঁ, কিছুদিন পূর্বেও এটা আমাদের কাছে হারাম ছিল। কিন্তু এখন হালাল।” আল্লাহ তাকে সংশোধন করুন, আল্লাহ তাকে সংশোধন করুন, আল্লাহ তাকে সংশোধন করুন। তোমরা বহুরূপী হওয়া থেকে বেঁচে থাক, তোমরা বহুরূপী হওয়া থেকে বেঁচে থাক। তোমরা স্থিত হও, হে আহলুস সুন্নাহ, তোমরা স্থিত হও। আল্লাহ তোমাদের মধ্যে বরকত দান করুন। তোমরা হকের উপর স্থিত হও।
- তোমরা উপকারী ‘ইলমের দিকে ধাবিত হও। তোমরা আমেরিকার সাথে প্রতিযোগিতা করো। আর হিযবী (দলবাজ) ও শাসকদের মধ্যে যারা আমেরিকার চামচা, তোমরা তাদের ছাড়িয়ে যাও। আল্লাহ তোমাদের মধ্যে বরকত দান করুন, তোমরা তাদের অতিক্রম করো। তোমরা মুসলিমদেরকে আমেরিকার চক্রান্ত এবং আমেরিকার গণতন্ত্র সম্পর্কে জানাও।” [“আল-জাওয়াবুল ওয়াসীক্ব ফী আজউয়িবাতি শাবাবি মাসজিদিত তাওফীক্ব”– শীর্ষক অডিয়ো ক্লিপ থেকে; গৃহীত: www.muqbel.net/fatwa.php?fatwa_id=2165.]
- ·
- ৬ষ্ঠ বক্তব্য:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
- السؤال: ما معنى كلمة الإفلاس لأنك كثيراً ما تقول الإخوان المفلسين؟
- الجواب: أنا أظنّ أنّها اتّضحت الحقيقة، وما بقي لبس ففي هذا الزمن بعد تنسيقهم من الحزب الإشتراكي، وبمصر مع حزب الوفد ، ومع حزب العمل الإشتراكي، فنحن فقط استغربنا لأنّهم كانوا يقولون لنا: نحن أهل سنّة، ولا تؤاخذونا بما فعل المصريّون، وبما فعل السّوريّون، فنحن في اليمن أهل سنّة، صدّقناهم أنّهم أهل سنّة ثمّ اتّضحت الحقيقة، وستتضح في المستقبل أكثر وأكثر والله المستعان.
- প্রশ্ন: “আল-ইফলাস (নিঃস্ব হওয়া) শব্দের অর্থ কী? কেননা আপনি অধিকাংশ সময়ই বলেন আল-ইখওয়ানুল মুফলিসূন (নিঃস্ব ব্রাদারহুড)।”
- উত্তর: “আমি ধারণা করি প্রকৃত বিষয় উদ্ভাসিত হয়েছে। বর্তমান যুগে সমাজতান্ত্রিক দলের সাথে, মিশরে ওয়াফদ পার্টির সাথে তাদের প্ল্যান-প্রোগ্রামের পর আর কোনো সংশয় অবশিষ্ট নেই। আমরা শুধু বিস্মিত হয়েছিলাম। কেননা তারা বলেছিল, “আমরা আহলুস সুন্নাহ। মিশরবাসী ও সিরিয়াবাসীদের কৃতকর্মের ব্যাপারে আমাদেরকে দোষারোপ করবেন না। ইয়েমেনের আমরা আহলুস সুন্নাহ।” আমরা তাদেরকে বিশ্বাস করেছিলাম যে, তারা আহলুস সুন্নাহ। তারপর প্রকৃত বিষয় উদ্ভাসিত হয়ে গেল। অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি স্পষ্ট হবে। আল্লাহ সহায় হোন।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), গারাতুল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহলি ওয়াস সাফসাত্বাহ; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৩৭৯; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
- ·
- ৭ম বক্তব্য:
- ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
- السؤال: بجوارنا مسجد إمامه إخواني عنده مخالفات شرعية وإذا صلينا في هذا المسجد يستهزئون بنا وينفرون عنا فهل نبقى ندعو في هذا المسجد مع وجود هذا الأذى علماً بأن المسجد السلفي بعيد؟
- الجواب: إن كنتم تستطيعون الذهاب إلى المسجد السلفي فأنا أنصحكم بذلك، وتستفيدون أداء الصلاة على سنة رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– وتستفيدون الأنس بإخوانكم والفضيلة، فقد جاء في «صحيح مسلم» من حديث جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ خَلَتِ الْبِقَاعُ حَوْلَ الْمَسْجِدِ فَأَرَادَ بَنُو سَلِمَةَ أَنْ يَنْتَقِلُوا إِلَى قُرْبِ الْمَسْجِدِ فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُمْ: إِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّكُمْ تُرِيدُونَ أَنْ تَنْتَقِلُوا قُرْبَ الْمَسْجِدِ. قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ أَرَدْنَا ذَلِكَ . فَقَالَ: يَا بَنِي سَلِمَةَ دِيَارَكُمْ تُكْتَبْ آثَارُكُمْ دِيَارَكُمْ تُكْتَبْ آثَارُكُمْ. أي: الزموا دياركم التي هي بعيدة عن المسجد من أجل أن تكتب آثاركم.
- وفي «الصحيحين» عن أبي هريرة –رضي الله عنه– عن النبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– أنه قال: «إذا توضأ العبد في بيته ثن أتى المسجد لا يخرجه إلا الصلاة، لا ينهزه إلا الصلاة، لم يخط خطوة إلا رفعت له بها درجة، وحط عنه بها خطيئة، فإذا دخل المسجد لم تزل الملائكة تصلي عليه، ما دام في مصلاه: اللهم اغفر له، اللهم ارحمه، اللهم تب عليه، ولا يزال في صلاة ما انتظر الصلاة».
- فإذا استطاعوا أن يحضروا في المسجد السلفي، فهذا أمر طيب، وإلا فأنصحهم أن يتخذوا لهم مسجداً يكون سهل التكاليف، فإن النبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– يقول: «ما أمرت بتشييد المساجد». ويقول أيضا : «لا تقوم الساعة حتى يتباهى الناس في المساجد».
- فالسنة أن يكون المسجد متواضعا، وإن استطعت أن يكون المسجد كمسجد رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– فعلت، وإن لم تستطع فلا تتكلف، ولا تتأنق في بناء المساجد فإنه مخالف للسنة، وكذلك الزخرفة والمنارة، وكذا ما يسمونه بالمحراب، وما ينصبونه على أرباع المسجد والتي تسمى بالشرفات، هذا لم يرد في مسجد رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– عندما بنى في ذلك الوقت، وكذلك المنبر الطويل الزائد على ثلاث درجات.
- ولا إله إلا الله ما أتاني آت سواء أكان من إرتيريا، أو من إندونيسيا ، أو من السودان، ومن غيرها من البلاد الإسلامية إلا وهو يشكو من أذية الإخوان المفلسين لأهل السنة. فأنا أقول: إلى الله المشتكى، فهم مستعدون أن يصطلحوا مع الشيوعي ومع الملحد، والعلماني، ومع البعثي، ومع الناصري، ومع الصوفي، ومع الشيعي، وليسوا مستعدين أن يصطلحوا مع السني إلا في حالة واحدة إذا قربت الانتخابات، فإنهم يقولون: اسكتوا عنا، ونسكت عنكم.
- প্রশ্ন: “আমাদের নিকটস্থ একটি মাসজিদের ইমাম ইখওয়ানী, তার বেশ কিছু শরিয়ত বিরোধী কর্ম রয়েছে। আমরা যখন এই মাসজিদে সালাত আদায় করি, তখন তারা আমাদের ঠাট্টাবিদ্রুপ করে এবং আমাদেরকে এড়িয়ে চলে। আমরা কি এরূপ কষ্টের পরও এই মাসজিদে থেকেই দা‘ওয়াত দিব? জ্ঞাতব্য যে, সালাফী মাসজিদ অনেক দূরে অবস্থিত।”
- উত্তর: “তোমরা যদি সালাফী মাসজিদে যেতে সক্ষম হও, তাহলে আমি তোমাদেরকে সেখানে যাওয়ার নসিহত করব। তোমরা আল্লাহ’র রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ অনুযায়ী সালাত আদায়ের ফায়দা নিতে পারবে, আর তোমাদের ভাইদের সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরির এবং (হাদীসে বর্ণিত) ফজিলত প্রাপ্তির ফায়দা নিতে পারবে। সাহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, জাবির বিন ‘আব্দুল্লাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, “মাসজিদে নাবাউয়ীর পাশে কিছু জায়গা খালি হলে বানূ সালিমাহ গোত্র সেখানে এসে বসতি স্থাপন করতে মনস্থ করল। বিষয়টি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে পৌঁছলে তিনি তাদের (বানূ সালিমাহ গোত্রের লোকদের) উদ্দেশ্যে বললেন, ‘আমি জানতে পেরেছি যে, তোমরা মাসজিদের কাছে চলে আসতে চাও।’ তারা বলল, ‘হে আল্লাহ’র রাসূল! আমরা তাই মনস্থ করেছি।’ এ কথা শুনে তিনি ﷺ বললেন, ‘হে বানূ সালিমাহ গোত্রের লোকেরা! তোমরা তোমাদের ওই বাড়ীতেই থাক। কারণ তোমাদের সালাতের জন্য মাসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপ লিপিবদ্ধ করা হয়’।” (সাহীহ মুসলিম, হা/৬৬৫; ‘মাসজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ৫০) অর্থাৎ, তোমরা তোমাদের ওই বাড়ীতেই থাক, যা মাসজিদ থেকে দূরে অবস্থিত। কারণ তোমাদের সালাতের জন্য মাসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপ লিপিবদ্ধ করা হয়।
- বুখারী-মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, আবূ হুরাইরাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) কর্তৃক বর্ণিত, নাবী ﷺ বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি ভালো করে অজু করে নিঃস্বার্থভাবে সালাত আদায় করার জন্যই মাসজিদে আসে, তখন তার প্রতি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার একটি মর্যাদা বেড়ে যায়, আর একটি গুনাহ কমে যায়। এভাবে মাসজিদে পৌঁছা পর্যন্ত (চলতে থাকে)। সালাত আদায় শেষ করে যখন সে মুসাল্লায় বসে থাকে, ফেরেশতারা অনবরত এ দু‘আ করতে থাকে, ‘হে আল্লাহ! তুমি তাকে মাফ করে দাও। হে আল্লাহ! তুমি তার ওপর রহমত বর্ষণ করো।’ আর যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের কেউ সালাতের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, সে সময়টা তার সালাতের সময়ের মধ্যেই পরিগণিত হবে।” (সাহীহ বুখারী, হা/২১১৯; সাহীহ মুসলিম, হা/৬৪৭; শব্দগুচ্ছ মুসলিমের)
- তারা যদি সালাফী মাসজিদে আসতে সক্ষম হয়, তাহলে তা খুবই ভালো। নতুবা আমি তাদেরকে নিজেদের জন্য একটি মাসজিদ গ্রহণ (নির্মাণ) করার নসিহত করব, যা (তাদের জন্য) সহজসাধ্য হবে। নাবী ﷺ বলেছেন, “আমাকে জাঁকজমকপূর্ণ মাসজিদ বানানোর নির্দেশ দেয়া হয়নি।” (আবূ দাঊদ, হা/৪৪৮; সনদ: সাহীহ) নাবী ﷺ বলেছেন, “লোকেরা মাসজিদ নিয়ে পরস্পর গর্ব ও অহংকারে মেতে না ওঠা পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না।” (আবূ দাঊদ, হা/৪৪৯; সনদ: সাহীহ)
- মাসজিদ অহমিকাপূর্ণ না হওয়াই সুন্নাত। তুমি যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মাসজিদের মতো মাসজিদ বানাতে পার, তাহলে সেটাই করো। আর যদি না পার, তাহলে কষ্ট করতে যেও না। আর মাসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে রুচিবাগীশ হয়ো না। কেননা তা সুন্নাহ পরিপন্থি। অনুরূপভাবে কারুকার্য, মিনার, কথিত মিহরাব এবং মাসজিদের (উপরিভাগের) চার কোণে লম্বা লম্বা পিলার [অর্থাৎ, উপরিভাগের যে পিলারগুলো মূল মাসজিদ কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত নয়, কিন্তু তা বহুল প্রচলিত। – সংকলক] স্থাপন করা—এগুলোর কিছুই রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সেই মাসজিদে ছিল না, যেই মাসজিদ সেসময় নির্মিত হয়েছিল। একইভাবে তিনের অধিক ধাপবিশিষ্ট লম্বা মিম্বার।
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! আমার কাছে যখনই কেউ (সালাফী) আসে, চাই সে ইরিত্রিয়া থেকেই আসুক, বা ইন্দোনেশিয়া, সুদান, কিংবা অন্য কোনো মুসলিম রাষ্ট্র থেকে আসুক, তখনই সে ইখওয়ানুল মুফলিসূন কর্তৃক আহলুস সুন্নাহকে কষ্টদানের অভিযোগ করে। আমি আল্লাহ’র কাছে অভিযোগ করে বলছি, তারা কমিউনিস্ট, নাস্তিক, সেক্যুলার, বাথিস্ট, নাসেরাবাদী, সূফী এবং শী‘আর সাথে সন্ধি করতে প্রস্তুত। কিন্তু তারা আহলুস সুন্নাহ’র সাথে সন্ধি করতে প্রস্তুত নয়। তবে যখন নির্বাচন নিকটবর্তী হয়, তখন ছাড়া। তখন তারা বলে, তোমরা আমাদের ব্যাপারে চুপ থাক, আমরাও তোমাদের ব্যাপারে চুপ থাকব [অর্থাৎ, তোমরা বোলো না যে, গণতন্ত্র হারাম, ভোটাভুটি হারাম – সংকলক]।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), তুহফাতুল মুজীব ‘আলা আসইলাতিল হাদ্বিরি ওয়াল গারীব; পৃষ্ঠা: ১২৯-১৩১; দারুল আসার, সানা (ইয়েমেন) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]
- [এই অধ্যায় সামনে চলবে, ইনশাআল্লাহ।]
- ·
- অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
- পরিবেশনায়: www.facebook.com/SunniSalafiAthari (সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে)
0 Comments