ডা: জাকির নায়েক, রমজান মাসে কোন কাজগুলোর উপর বেশী গুরুত্ব দেয়া উচিৎ
রমজান মাসের প্রতিটা মুহুর্ত কাজে লাগানোর জন্য আপনাকে মাসের শুরুতেই একটা কাজের পরিকল্পনা নিতে হবে।রোজার সমস্ত সুন্নতগুলো একনিষ্ঠ ভাবে আদায় করতে হবে।
ক) রোযা:- রোযার জন্য নিয়ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। রোযা হবে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য।নিয়ত ছাড়া রোযা কবুল হবে না।আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই রোযা রাখতে হবে।
খ) ইফতার:- ইফতার তাড়াতাড়ি করতে হবে, সেহরী যথাসম্ভব দেরী করে খেতে হবে।
গ) নিষিদ্ধ কাজ:- সব ধরনের হারাম,মাকরুহ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।যেমন সিগারেট খা ওয়া,নেশা করা,দাড়ায়ে পানি পান। দাড়ি রাখা,ঘর থেকে বের হবার,বাথরুমে যাবার,সফরে যাবার,যানবাহনে আরোহন ইত্যাদি দোয়ার চর্চা এই মাসে যদি শুরু করা গেলে, এটা সারা বছর পালন করতে সহজ হবে।
ঘ) নামায:- নামায বেশী করে পড়তে হবে। জামায়াতে নামায পড়ার অভ্যাস না থাকলে,এটা রমজানেই শুরু করতে হবে।
ঙ) তারাবীর নামায:- রমজানে বেশী গুরুত্বপূর্ন হোল তারাবীর নামায।তারাবীর নামায সুন্নত হবার কারনে অনেকে গুরুত্ব দেয় না। ফরজ না হলেও এটা অবশ্যই পড়তে হবে।বহু জায়গায় অত্যন্ত দ্রুতবেগে তারাবী পড়ানো হয়।মূলত: লক্ষ্য হোল, কুরআন শেষ করা।মুসল্লীরা যেন প্রতিটা শব্দ বুঝতে পারে,এভাবে ধীরে পড়তে হবে। তারাবীর নামাজে সুরা ফাতেহার আয়াতগুলো আলাদা আলাদা করে পড়তে হবে। এভাবে পড়লে মহান আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের উত্তর দেন।
চ) ইতিকাফ:- কারো পক্ষে সম্ভব হলে শেষ ১০ রোজা ইতেকাফ করবেন। ইতিকাফ অবস্থায় সমস্ত সামাজিক কাজকর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে।
ছ) দোয়া করা:- বেশী করে দোয়া করতে হবে।আল্লাহকে বেশী করে স্মরন করতে হবে। সবচেয়ে বেশী সময় দিতে হবে এটার পিছে।
জ) কুরআন পড়া:- বেশী কুরআন পড়তে হবে। আরবী না জানলেও, আপনি যে ভাষা জানেন, সেই ভাষায় পড়েন।তাফসীর পড়ুন কুরআনের বিধি-নিষেধগুলো আপনার জানা হবে।প্রতিদিন ১ পারা করে পড়লে, সম্পূর্ন কুরআন পড়া শেষ হবে।
ঝ) হাদিস:- এই মাসে হাদিস পড়ুন।বুখারী,মুসলিম পড়া ভাল। ‘সিয়াহ-সিত্তার’ অণ্য হাদিগুলোও পড়া যেতে পারে। রাসুলের জীবনী পড়ুন।
ঞ) যাকাৎ:- রমজান যাকাৎ আদায় করার উপযুক্ত সময় ও এটা ফরয।যার নিসাব পরিমান অর্থ্যাৎ সাড়ে সাত তোলা পরিমান স্বর্ন আছে, তাকে যাকাৎ অবশ্যই দিতে হবে।
অনেকে আছেন যারা সঠিক ভাবে যাকাৎ আদায় করেন না।বেশী দিলে ক্ষতি নাই কিন্তু কম আদায় করলে, পুরোপুরি যাকাৎ হবেনা। কাজেই এটা সতর্ক ভাবে করতে হবে।
ট) খুশী থাকা:- রমজান মাসে হাসি-খুশী থাকতে হবে।পরিবারকে বেশী সময় দিতে হবে।‘সদ্ব্যবহার’ এই মাসের জন্য গুরুত্বপূর্ন।আত্নীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রাখা,প্রতিবেশীর সাথে ভাল ব্যবহার করা ইত্যাদি।কেউ কোন অন্যায় করে থাকলে, তাকে ক্ষমা করা কিংবা একই ভাবে ক্ষমা পাওয়ার আশা করতে হবে।
ঠ) ইসলাহ বা আত্নসংশোধন:- নিজের কিংবা অন্যের দুভাবেই চিন্তা করা যায়।সামাজিক পর্যায়েও হতে পারে।রমজানে দাওয়াতী(আল্লাহর দিকে আহ্বান করা) কাজ করা সবচেয়ে প্রয়োজন।এটা মুসলিম/অমুসলিম সবার মাঝেই করা যেতে পারে।
0 Comments