১৩শ পর্ব | ২৫শ অধ্যায়: ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [২য় কিস্তি]

নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন
 ▌২৫শ অধ্যায়: ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [২য় কিস্তি]
৮ম বক্তব্য:
ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
السؤال: هل الإخوان المسلمون من أهل السنة؟
الجواب: الإخوان المسلمون منهجهم ليس منهج أهل السنة، أما أفرادهم الملبس عليهم فلا نستطيع أن نطلق على كل فرد منهم أنه ليس بسني، لكن سنيته مزعزعة، أما ديمقراطي وسني فهذا لا يصلح لأن الديمقراطية هي تعطيل الكتاب والسنة، فلا ينبغي أن يطلق عليهم أنهم من أهل السنة، لكن يطلق على بعض أفرادهم الملبس عليه الذي لا يعرف حقيقة دعوة الإخوان المسلمين، ففيهم أناس ملبس عليهم، تسأل أحدهم: أنت من الإخوان المسلمين؟ يقول: نعم أنا من الإخوان المسلمين، ثم يقول لي: لماذا تتكلم يا أبا عبدالرحمن في الإخوان المسلمين وهم واقفون في وجه الشيوعية والبعثية وغيرها؟ فأقول له: هل تعرف شيئاً عن ميثاق الشرف؟ يقول: وما هو ميثاق الشرف؟ فأقول له ميثاق الشرف: عشرة أحزاب تعاهدت والتزمت ألا يتكلم بعضهم في بعض، ولا يكفر بعضهم بعضاً، وبعض الأحزاب كفرية. وهل تعرف التنسيق مع حزب البعث والحزب الناصري؟ يقول: أعوذ بالله هذا كفر، قلت له: قد نشرته الصحف والجرائد، وقد أخرج عبدالمجيد الزنداني شريطين في الدفاع عن هذا وأنت تزعم أنك من جلسائه ولا تدري ما هذا. وهل تعرف اللقاء الودي بين الإصلاح والاشتراكي؟ فيقول: أما هذا فنبرأ إلى الله منه، وغداً يصفق معهم: نفديك يا صدام بالروح والدم، فاين البراءة إلى الله؟!
فالذي هو ملبس عليه ولا يدري حقيقة هذا الأمر لا نستطيع أن نقول: إنه ليس بسني، لكن سنية مخلطة، مثل المخضرية، والمخضرية أنه كان رجل في سوق الملح بصنعاء يبيع الفول، فمرت بجانبه بغلة فذرقت في الفول، ثم التفت يميناً وشمالاً هل يراه أحد، فلم يره أحد، فحرك الفول بيده ثم يدعو الناس: مخضرية، مخضرية. وبعد هذا أحد إخواننا الأفاضل حفظه الله تعالى يسأل عن السرورية فقد أرسل برسالة خاصة عن السرورية؟ فأقول لأخي في الله: السرورية، أنا أعرف الأخ محمد سرور وقد زارنا إلى هنا مرة أو مرتين وقال: لا نكتمك أننا جماعة لكن لا نتعصب، وكانوا في أول أمرهم وفي نشراتهم الأولى مثل البيان على خير، وقد أثنينا على مجلتهم البيان خيراً، وما اتضحت الحقيقة إلا في قضية الخليج.
فحاصل الأمر أن السرورية في العقيدة كعقيدة أهل السنة يؤمنون بأن الله مستوٍ على عرشه، ويؤمنون بأسماء الله وصفاته على ما هي عليه في الكتاب والسنة. وفي المنهج قريب من الإخوان المسلمين، وسيكونون بعد غد مثل الإخوان المسلمين.
وقد ابتلينا نحن هنا بالسرورية جمعية الإحسان التي انتشرت في حضرموت، وكذلك بعض أصحاب جمعية الحكمة، فأصحاب جمعية الحكمة هؤلاء دواهي مثل الحكومات، فالحكومات تنصب واحداً سنياً وواحداً بعثياً، وآخر شيوعاً من الأسرة نفسها، وواحد قبيلياً، وواحد عسكرياً، من أجل أن يضحكوا على الناس ويعرفوا ما الناس عليه.
وقد أخذ هذا أصحاب جمعية الحكمة من أجل أن يأكلوا من الجانبين من ههنا ومن ههنا فتركوا تبعاً لعبدالرحمن عبدالخالق، وجمعية إحياء التراث، والبعض الآخر تبعاً لمحمد سرور. فأنصح إخواني في الله جميعاً أن يقبلوا على العلم النافع.
وأنا أسألكم على الإنصاف أرؤساء هذه الجماعات أحق بالاتباع أم رسول الله - صلى الله عليه وعلى آله وسلم - الذي يقول : ﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الآخِرَ﴾ [ الأحزاب : ٢١ ] ؟ ويقول الله عز وجل في كتابه الكريم : ﴿وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْراً أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالاً مُبِيناً﴾. [ الأحزاب : ٣٦ ]
وأنا أريد منك أن تنظر غلى عمرك كم لك مع هذه الجماعة، وما هي الاستفادة التي استفتها؟ وكم حفظت من القرآن؟ وماذا درست في اللغة العربية؟ وماذا درست في المصطلح؟ وكم انتفع على يديك؟ ونحن نتحدى الإخوان المسلمين، وجمعية الإحسان، وجمعية الحكمة أن يأتوا بواحد قد خرج من عندهم يعتبر مرجعاً. فالمسالة مسألة تلبيس، فإياك أن تضيع وقتك فيجب أن تخلص العمل لله عز وجل.
فما عندك وقت للسمر الذي يضيع في الهوس إلى نصف الليل في قالت الجريدة الفلانية، وقالت المجلة الفلانية.
فيجب عليهم أن يتقوا الله، وأن يرجعوا إلى السنة وإلى العلم والتعليم، وحرام عليهم أن يضيعوا وقتهم في القيل والقال، كما يجب على الطرف الآخر ألا يرميهم بأنهم خوارج، فالخارجي هو الذي يكفر بالعصية.
فيجب أن نوحد صفنا، وأن ندعو إلى كتاب الله والسنة، والذي يدعو إلى الفرقة يخشى أن تنزل عليه صاعقة من السماء، لأن المسلمين أحوج ما يكون إلى جمع الكلمة تحت ظل الكتاب والسنة.
فما كل الناس يهيئون للخير ولطلب العلم لكن تقبل على طلب العلم، وتهب نفسك لله، وتحتسب نفسك لله عز وجل.
وأنا أنصحكم أن تسألوا الشيخ ربيع بن هادي حفظه الله تعالى فقد ذهب عمره الكثير مع الإخوان المسلمين، فهو أعر الناس بهم وبحقيقتهم وحقيقة الجماعات.
وأنا لا أطلب منكم أن تقلدوا الشيخ ربيعاً لكن تستفيدون من علمه، وأنا لم أقل لك تستفتي محمود الحداد، ولا فريداً مالكاً، بل تستفتي رجلاً صالحاً عالماً من العلماء الأفاضل قطع شوطاً كبيراً مع الإخوان المفلسين.
ثم بعد ذلك هذه التسميات والتفرقات، قطبية؛ أذن الله لنا أن يوجد منا قطبية وسرورية ومن تلك الأسماء؟!
فلا تضيع وقتك، الشهيد عبدالله عزام والله أعلم بحاله، ونسأل الله أن يغفر له ويرحمه، لكن مسألة الشهيد وغيرها فإياكم وتلكم الألقاب الضخمة التي يغرون الناس بها، والداعية الكبير، نعم الداعية الكبير ولكن إلى الضياع، والله المستعان.
প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড কি আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত?”
উত্তর: “মুসলিম ব্রাদারহুডের মানহাজ আহলুস সুন্নাহ’র মানহাজ নয়। পক্ষান্তরে তাদের ‘সংশয়ে পতিত’ সদস্যরা, আমরা তাদের প্রত্যেকের ব্যাপারে এরূপ বলতে পারি না যে, সে সুন্নী নয়। কিন্তু তার সুন্নিয়্যাহ নড়বড়ে। পরন্তু কেউ ‘গণতন্ত্রপন্থি ও সুন্নী’, বিষয়টি সঠিক নয়। কেননা গণতন্ত্র হলো কিতাব ও সুন্নাহকে নিস্ক্রীয়করণ। সুতরাং তাদেরকে আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত বলা উচিত নয়। তবে তাদের কিছু সদস্য রয়েছে, যারা মুসলিম ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াতের প্রকৃতত্ব সম্পর্কে জানে না, তাকে আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত বলা যায়। তাদের মধ্যে বেশ কিছু ব্যক্তি রয়েছে, যারা সংশয়ে পতিত হয়েছে।
তুমি তাদের কাউকে যদি জিজ্ঞেস করো যে, তুমি কি মুসলিম ব্রাদারহুডের অন্তর্ভুক্ত? সে বলবে, হ্যাঁ, আমি মুসলিম ব্রাদারহুডের অন্তর্ভুক্ত। আমি তাদের বিরুদ্ধে বললে সে আমাকে বলে, হে আবূ ‘আব্দুর রহমান, আপনি কেন মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে বলছেন, অথচ তারা কমিউনিজম, বাথিজম প্রভৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে?! আমি তাকে বলি, তুমি ‘মীসাক্বুশ শারফ’ নামক চুক্তির ব্যাপারে কিছু জান? সে বলে, ‘মীসাক্বুশ শারফ’ কী? আমি তাকে বলি, মীসাক্বুশ শারফ একটি চুক্তি, যেখানে দশটি দল এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে যে, তাদের কেউ কারও বিরুদ্ধে বলবে না এবং কেউ কাউকে কাফির ফাতওয়া দিবে না। অথচ এই দলগুলোর মধ্যে কিছু দল কাফির।
তুমি কি বাথ পার্টি এবং নাসের পার্টির সাথে প্ল্যান-প্রোগ্রামের ব্যাপারে জান? সে বলে, আমি আল্লাহ’র কাছে পানাহ চাই। এটা তো কুফর। আমি তাকে বললাম, এটা তো পত্রপত্রিকা প্রকাশ করেছে। আর ‘আব্দুল মাজীদ আয-যিনদানী এই কাজকে ডিফেন্ড করে দুটি অডিয়ো ক্লিপ বের করেছে। তুমি নিজেকে তাদের সাথীদের একজন ধারণা করছ, অথচ এটা জান না?! আল-ইসলাহ পার্টি ও সমাজতন্ত্রী পার্টির মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার সম্পর্কে জান? [আল-ইসলাহ পার্টি ও সমাজতন্ত্রী পার্টি ইয়েমেনের দুটি রাজনৈতিক দল। প্রথম দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হলেন ‘আব্দুল মাজীদ আয-যিনদানী। আর দ্বিতীয় দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হলেন ‘আলী সালিম আল-বীদ্ব। – সংকলক]
সে বলে, আমরা আল্লাহ’র কাছে এ থেকে (নিজেদের) মুক্ত ঘোষণা করছি। অথচ পরদিনই সে তাদের সাথে হাততালি দিয়ে বলে, হে সাদ্দাম, আপনার জন্য আমাদের জান কোরবান! কোথায় গেল আল্লাহ’র কাছে এ থেকে মুক্ত ঘোষণা?!
যে ব্যক্তি সংশয়ে পতিত হয়েছে এবং যে এই বিষয়ের (ব্রাদারহুডের) প্রকৃতত্ব সম্পর্কে জানে না, আমরা তার ব্যাপারে এটা বলতে পারি না যে, সে সুন্নী নয়। কিন্তু তার সুন্নিয়্যাহ নড়বড়ে। ‘এই সবজি, সবজি!’– এর মতো। সানা’র মালিহ বাজারে এক লোক শিম বিক্রি করত। একদিন তার পাশ দিয়ে একটি খচ্চর গেল। যাওয়ার সময় খচ্চরটি শিমের উপর মলত্যাগ করল। তখন বিক্রেতা লোকটি ডানে-বামে তাকিয়ে দেখল, কেউ দেখছে কি না! সে দেখল, কেউ দেখছে না। অমনি সে তার হাত দিয়ে শিম পরিষ্কার করে নিল। তারপর লোকদের ডাকতে লাগল, ‘এই সবজি, সবজি!’
এরপর আমাদের এক সম্মানিত ভাই (আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করুন) সুরূরিয়্যাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন। তিনি সুরূরিয়্যাহ প্রসঙ্গে একটি বিশেষ পুস্তিকা প্রেরণ করেছেন। আমি এই দ্বীনী ভাইকে বলব, সুরূরিয়্যাহ; আমি ভাই মুহাম্মাদ সুরূরকে চিনি। তিনি আমাদের এখানে একবার বা দুইবার এসে আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে গেছেন। আর বলেছেন, আমরা যে একটি দল তা আপনার কাছে গোপন করছি না, কিন্তু আমরা গোঁড়ামি করি না। তারা প্রথম দিকে এবং তাদের প্রথম প্রচারপত্রগুলোতে –যেমন: আল বায়ান– কল্যাণের উপর ছিল। আমরা তাদের আল-বায়ান ম্যাগাজিনের প্রশংসা করেছিলাম। এরপর কেবল উপসাগরের ঘটনাতেই প্রকৃত বিষয় উদ্ভাসিত হয়েছে। মোটকথা, ‘আক্বীদাহর ক্ষেত্রে সুরূরিয়্যাহ মতবাদ আহলুস সুন্নাহ’র ‘আক্বীদাহর মতো। তারা বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর সমুন্নত। তারা আল্লাহর নাম ও গুণাবলির প্রতি সেভাবে বিশ্বাস করে, যেভাবে তা কিতাব ও সুন্নাহ’য় আছে।
আর মানহাজের ক্ষেত্রে তারা মুসলিম ব্রাদারহুডের কাছাকাছি। অচিরেই তারা মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো হবে।
আমরা এখানে সুরূরিয়্যাহ’র মাধ্যমে দুর্যোগে পতিত হয়েছি। যেমন: হাদ্বরামাউতে ছড়িয়ে পড়া জমঈয়তে ইহসান এবং জমঈয়তে হিকমাহ’র কিছু লোক। জমঈয়তে হিকমাহ হুকুমতের (শাসকবর্গ) মতোই ধূর্ত। হুকুমত একজন সুন্নীকে পদ দেয়, বাথিস্টকে দেয়, কমিউনিস্টকে দেয়, নিজের পরিবার থেকে কাউকে দেয়, স্বীয় গোত্রের লোককে দেয়, নিজের খাস লোককে দেয়। যাতে করে তারা লোকদের প্রতারিত করতে পারে এবং জানতে পারে, লোকেরা কীসের উপর রয়েছে।
জমঈয়তে হিকমাহর লোকেরা এই অবস্থান এজন্য গ্রহণ করেছে যে, তারা যেন দুই দিক থেকেই খেতে পারে। এই দিক থেকেও খেতে পারে, আবার ওই দিক থেকেও খেতে পারে। তাদের কেউ কেউ ‘আব্দুর রহমান ‘আব্দুল খালিক্ব এবং জমঈয়তে ইহইয়াউত তুরাসের অনুসরণ করে (এসব কাজ) বর্জন করেছে, আর কেউ কেউ মুহাম্মাদ সুরূরের অনুসরণ করে বর্জন করেছে।
আমি আমার সকল দ্বীনী ভাইকে উপকারী ‘ইলমের দিকে ধাবিত হওয়ার নসিহত করছি। আমি তোমাদেরকে ইনসাফের ভিত্তিতে প্রশ্ন করছি, এই দলগুলোর নেতারা কি অনুসৃত হওয়ার বড়ো হকদার, নাকি আল্লাহ’র রাসূল ﷺ? যাঁর ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, “অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ’র মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ; তাদের জন্য, যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।” (সূরাহ আহযাব: ২১) মহান আল্লাহ আরও বলেছেন, “আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মু’মিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজেদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।” (সূরাহ আহযাব: ৩৬)
আমি তোমার কাছে প্রত্যাশা করব, তুমি তোমার বয়সের দিকে লক্ষ করবে। কতদিন হলো তুমি এই দলের সাথে আছ? আর কী ফায়দা তুমি লাভ করেছ? তুমি ক্বুরআনের কতটুকু মুখস্ত করেছ? আরবি ভাষার কী অধ্যয়ন করেছ? হাদীসের পরিভাষাশাস্ত্রের কী পড়েছ? তোমার হাতে কতজন উপকৃত হয়েছে? আমরা মুসলিম ব্রাদারহুড, জমঈয়তে ইহসান এবং জমঈয়তে হিকমাহকে চ্যালেঞ্জ করছি যে, তারা একজনকে নিয়ে আসুক, যে তাদের মধ্য থেকে উৎস বা প্রত্যাবর্তনস্থল (মারজা‘) হিসেবে বের হয়েছে।
এটি সংশয়ের মাসআলাহ (ইস্যু)। তুমি তোমার সময় নষ্ট করা থেকে বেঁচে থাক। আমলকে আল্লাহ’র জন্য একনিষ্ঠ করা তোমার জন্য আবশ্যক। তোমার তো নৈশ আলাপের সময় নেই, যে আলাপ উন্মত্ততার মধ্য দিয়ে মাঝরাত পর্যন্ত সময় নষ্ট করে, স্রেফ ‘অমুক পত্রিকা এই বলেছে, অমুক ম্যাগাজিন এই বলেছে’ এরূপ বলার মাধ্যমে। তাদের জন্য আল্লাহকে ভয় করা এবং সুন্নাহ, ‘ইলম ও তা‘লীমের দিকে প্রত্যাবর্তন করা আবশ্যক। অনর্থক কথাবার্তায় সময় নষ্ট করা তাদের জন্য হারাম। অপরদিকে এদেরকে ‘খারিজী’ অপবাদ দেওয়া থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। খারিজী তো সে, যে পাপকাজ করার কারণে মুসলিমকে কাফির ফাতওয়া দেয়।
[তবে মুসলিম ব্রাদারহুড আধুনিক যুগের খারিজী। এই কথা যুগশ্রেষ্ঠ ‘আলিমদের জবান থেকে সুপ্রমাণিত। কারণ তারা স্রেফ জুলুম তথা পাপকাজ করার কারণে শাসকদেরকে কাফির ফাতওয়া দিয়েছে, মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, এমনকি তাদের আদর্শবিরোধী হওয়ার কারণে গুপ্তঘাতক পাঠিয়ে মুসলিম শাসককে হত্যা করেছে। – সংকলক]
আমাদের কাতারকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং মানুষকে কিতাব ও সুন্নাহ’র দিকে আহ্বান করা ওয়াজিব। যে ব্যক্তি ফের্কাবাজির দিকে মানুষকে আহ্বান করে, আশঙ্কা হয়, তার উপর আসমান থেকে বজ্রনিনাদ বর্ষিত হবে। কেননা মুসলিমরা কিতাব ও সুন্নাহ’র ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মুখাপেক্ষী। সকল মানুষ কল্যাণের জন্য এবং ‘ইলম অন্বেষণের জন্য প্রস্তুত নয়। কিন্তু তুমি ‘ইলম অন্বেষণের দিকে ধাবিত হও, অন্তরে আল্লাহকে ভয় করো এবং আল্লাহ’র কাছে (এর বিনিময়ে) সাওয়াব প্রত্যাশা করো। আমি তোমাদেরকে নসিহত করছি, তোমরা শাইখ রাবী‘ বিন হাদী (হাফিযাহুল্লাহ) কে জিজ্ঞেস করবে। কারণ তাঁর জীবনের এক দীর্ঘ সময় তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে কাটিয়েছেন। তিনি তাদের ব্যাপারে, তাদের প্রকৃতত্ব সম্পর্কে এবং বিভিন্ন দলের প্রকৃতত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জানেন।
আমি তোমাদের কাছে এটা প্রত্যাশা করছি না যে, তোমরা শাইখ রাবী‘র তাক্বলীদ করবে। কিন্তু তোমরা তাঁর ‘ইলম থেকে উপকৃত হবে। আর আমি তোমাকে এটাও বলছি না যে, তুমি মাহমূদ হাদ্দাদের কাছে ফাতওয়া জিজ্ঞেস করবে বা ফারীদ মালিককে ফাতওয়া জিজ্ঞেস করবে। বরং তুমি সম্মানিত ‘আলিমগণের মধ্যে একজন সৎ ‘আলিমের কাছে ফাতওয়া জিজ্ঞেস করবে, যিনি ইখওয়ানুল মুফলিসূনের সাথে দীর্ঘ দফা অতিক্রম করেছেন।
আর এসব নাম ও বিচ্ছিন্নতা, যেমন ক্বুত্বুবিয়্যাহ; আল্লাহ কি আমাদেরকে এই অনুমতি দিয়েছেন যে, আমাদের মধ্যে ক্বুত্বুবিয়্যাহ, সুরূরিয়্যাহ এবং এ জাতীয় নাম থাকবে?! তুমি তোমার সময় নষ্ট কোরো না। শহীদ ‘আব্দুল্লাহ ‘আযযাম, আল্লাহই তাঁর হাল সম্পর্কে ভালো জানেন। আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন তাকে ক্ষমা করেন এবং তার উপর রহম করেন। কিন্তু শহীদ হওয়ার মাসআলাহ অন্য জিনিস। তোমরা এ ধরনের বড়ো বড়ো উপাধী থেকে বেঁচে থাক, যা লোকদেরকে ধোঁকায় ফেলে দেয়। অনেক বড়ো দা‘ঈ। হ্যাঁ, সে অনেক বড়ো দা‘ঈ (আহ্বানকারী)। কিন্তু ধ্বংসের দিকে (আহ্বানকারী)। আল্লাহ সহায় হোন।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), ফাদ্বাইহ ওয়া নাসাইহ; পৃষ্ঠা: ১২৩-১২৭; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৯ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·
৯ম বক্তব্য:
ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
السؤال: قرأنا في فتاوى اللجنة الدائمة إجابة عن سؤال برقم (٦٢٥٠) التالي: أقرب الجماعات الإسلامية إلى الحق وأحرصها على تطبيقه أهل السنة وهم أهل الحديث وجماعة أنصار السنة ثم الإخوان المسلمون، وبالجملة فكل فرقة من هؤلاء فيها خطأ وصواب فعليك بالتعاون معها فيما عندها من الصواب، واجتناب فيما وقعت فيه من أخطاء مع التناصح على البر والتقوى فما تقولون في هذا؟
الجواب: هذا باطل، وهؤلاء ما عرفوا الإخوان المفلسين، فاريد منهم أن يسألوا عن منبع الإخوان المفلسين كيف تعاونوا مع حزب الوفد العلماني بمصر، وحرب العمل الاشتراكي، ثم الآن ميثاق الشرف في اليمن مع عشرة أحزاب بعضها ملحدة ألا يتكلم بعضهم في بعض، والتنسيق مع البعثيين والناصريين، والتعاون الآن مع الاشتراكيين. فأقول: إن هؤلاء ما عرفوا الإخوان المفلسين، والإخوان المفلسين بالسعودية ليسوا كالإخوان المفلسين في مصر وفي اليمن وفي سوريا والسودان، لأن عندهم عقيدة، لكن قوانين الإخوان المسلمين تحكم، فيجب على الإخوان المفلسين أن يتقوا الله سبحانه وتعالى ويرجعوا إلى أهل السنة، فماذا يتنازل عنه أهل السنة من أجل أن يكسب الإخوان المفلسين؟ هل يتنازلون عن النهي عن التمسح بأتربة الموتى، وعن النهي عن دعاء غير الله، وعن النهي عن التصوف المبتدع، وعن التشيع المبتدع.
فأين من يقول نحن نرحب بالديمقراطية، مع من يقول: الديمقراطية كفر، ومن يقول: نحن نقتحم الانتخابات، مع من يقول: الانتخابات طاغوتية، لأن فيها مساومة بالإسلام، ولأن فيها تسوية الرجل الصالح بالفاسق، ورب العزة يقول في كتابه الكريم: ﴿أَفَمَن كَانَ مُؤْمِنًا كَمَن كَانَ فَاسِقًا ۚ لَّا يَسْتَوُونَ﴾ [السجدة : ١٨] ، ولأن فيها تسوية الرجل بالمرأة، ورب العزة يقول: ﴿وَلَيْسَ الذَّكَرُ كَالْأُنْثَى﴾ [آل عمران : ٣٦]، ففرق كبير وظلم أن يقال لأهل السنة : تنازلوا واسكتوا عن الأقدام النجسة أقدام الشوعيين والبعثيين والناصريين التي على بلدنا الطيبة الطاهرة، والنبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– يقول: «لا يجتمع دينان في جزيرة العرب»، ويقول: «أخرجوا اليهود من جزيرة العرب»، ونحن نقول: هؤلاء إخواننا وهؤلاء وهؤلاء، فيجب على الإخوان المفلسين أن يتوبوا إلى الله وأن يرجعوا إلى سنة رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– وأن يحكموا كتاب الله وسنة رسول الله صلى الله عليه وعلى آله وسلم. من فضل الله على أهل السنة أنهم لا يبالون بمن خالفهم إذا كان على باطل، بل يتكلمون بالحق فمن رضي فله الرضا، ومن غضب فغضبه على نفسه، والحمد لله الذي هيأ لنا هذا المكان نقول منه كلمة الحق.
প্রশ্ন: “আমরা স্থায়ী কমিটির (সৌদি ফাতাওয়া বোর্ড) ৬২৫০ নং ফাতওয়ায় পড়েছি—“হকের অধিক নিকটবর্তী এবং আহলুস সুন্নাহ’র সাথে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ দল হচ্ছে আহলুল হাদীস, আনসারুস সুন্নাহ, অতঃপর মুসলিম ব্রাদারহুড। মোটকথা এগুলোর প্রত্যেকটি দলে ভুল আছে, আবার সঠিকও আছে। সুতরাং তাদের সঠিকতায় তাদেরকে সহযোগিতা করা এবং তাদের ভুলগুলোতে কল্যাণ ও আল্লাহভীতির নসিহত-সহ তা (ভুল) থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। এ ব্যাপারে আপনি কী বলছেন?”
[প্রশ্নোল্লিখিত ফাতওয়াটি নিম্নরূপ—
السؤال: في العالم الإسلامي اليوم عدة فرق وطرق الصوفية مثلا: هناك جماعة التبليغ، الإخوان المسلمين، السنيين، الشيعة، فما هي الجماعة التي تطبق كتاب الله وسنة رسوله صلى الله عليه وسلم؟
الجواب: أقرب الجماعات الإسلامية إلى الحق وأحرصها على تطبيقه: أهل السنة: وهم أهل الحديث، وجماعة أنصار السنة، ثم الإخوان المسلمون. وبالجملة فكل فرقة من هؤلاء وغيرهم فيها خطأ وصواب، فعليك بالتعاون معها فيما عندها من الصواب، واجتناب ما وقعت فيه من أخطاء، مع التناصح والتعاون على البر والتقوى. وبالله التوفيق وصلى الله على نبينا محمد وآله وصحبه وسلم.
প্রশ্ন: “বর্তমান মুসলিম বিশ্বে অসংখ্য দল ও সূফিবাদী মতাদর্শ রয়েছে। যেমন: তাবলীগ জামা‘আত, মুসলিম ব্রাদারহুড, সুন্নী সম্প্রদায়, শী‘আ সম্প্রদায় প্রভৃতি। কোন দলটি আল্লাহ’র কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ বাস্তবায়ন করে?”
উত্তর: “হকের অধিক নিকটবর্তী এবং আহলুস সুন্নাহ’র সাথে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ দল হচ্ছে আহলুল হাদীস, আনসারুস সুন্নাহ, অতঃপর মুসলিম ব্রাদারহুড। মোটকথা, এগুলোর প্রত্যেকটি দলেই ভুল আছে, আবার সঠিকও আছে। সুতরাং তোমার জন্য তাদের সঠিকতায় তাদেরকে সহযোগিতা করা এবং তাদের ভুলগুলোতে কল্যাণ ও আল্লাহভীতির ব্যাপারে পারস্পরিক সহযোগিতা ও নসিহত-সহ তা (ভুল) থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।
হে আল্লাহ, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার পরিজন ও সাহাবীগণের উপর আপনি দয়া ও শান্তি বর্ষণ করুন।”
ফাতওয়া প্রদান করেছেন—
চেয়ারম্যান: শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ)
ভাইস চেয়ারম্যান: শাইখ ‘আব্দুর রাযযাক্ব ‘আফীফী (রাহিমাহুল্লাহ)
মেম্বার: শাইখ ‘আব্দুল্লাহ বিন গুদাইয়্যান (রাহিমাহুল্লাহ)
মেম্বার: শাইখ ‘আব্দুল্লাহ বিন ক্বা‘ঊদ (রাহিমাহুল্লাহ)।
দ্র.: ফাতাওয়া লাজনাহ দাইমাহ; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৬২; ফাতওয়া নং: ৬২৫০; প্রশ্ন নং: ১; তারিখ ও প্রকাশনার নামবিহীন সফট কপি – সংকলক।]
উত্তর: “এটা বাতিল। তাঁরা ইখওয়ানুল মুফলিসূন সম্পর্কে জানেন না। আমি তাঁদের কাছে আশা করব, তাঁরা ইখওয়ানুল মুফলিসূনের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন। কীভাবে তারা মিশরের সেক্যুলার ওয়াফদ পার্টি এবং সোশ্যালিস্ট পার্টির সাথে পারস্পরিক সহযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে? তারপর এখন ইয়েমেনে তারা দশটি দলের সাথে ‘মীসাক্বুশ শারফ’ নামক চুক্তিতে এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে যে, তাদের কেউ কারও বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবে না, অথচ তাদের কিছু দল নাস্তিক! তারা বাথিস্ট ও নাসেরাবাদীদের সাথে প্ল্যান-প্রোগ্রাম করেছে এবং বর্তমানে সমাজতন্ত্রীদের সাথে সাহায্য-সহযোগিতা করছে।
আমি বলছি, অবশ্যই তাঁরা ইখওয়ানুল মুফলিসূন সম্পর্কে জানেন না। সৌদি আরবের ইখওয়ানুল মুফলিসূন মিশর, ইয়েমেন, সিরিয়া ও সুদানের ইখওয়ানুল মুফলিসূনের মতো নয়। কেননা তাদের ‘আক্বীদাহ আছে। তথাপি মুসলিম ব্রাদারহুডের নিয়মকানুনকে বিচার করা হবে। ইখওয়ানুল মুফলিসূনের উপর আল্লাহকে ভয় করা এবং আহলুস সুন্নাহ’র দিকে প্রত্যাবর্তন করা ওয়াজিব। আহলুস সুন্নাহ যা পরিত্যাগ করে, তা কি তারা ইখওয়ানুল মুফলিসূনের জন্য করে? তারা কি কবরের মাটি মাসেহ করা, গাইরুল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করা, বিদ‘আতী সূফীবাদ ও বিদ‘আতী শী‘আ মতাদর্শ থেকে নিষেধ করা বাদ দিয়ে দিবে?
কোথায় একজন বলছে, ‘আমরা গণতন্ত্রকে অভ্যর্থনা জানাই’, আর একজন বলছে, ‘গণতন্ত্র কুফর!’ কোথায় একজন বলছে, ‘আমরা ভোটাভুটিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি’, আর একজন বলছে, ‘ভোটাভুটি ত্বাগূতী সিস্টেম!’ যেহেতু গণতন্ত্রে ইসলামকে নিয়ে দরকষাকষি করা হয় এবং এতে ফাসিক্ব লোককে ভালো মানুষের সমতুল্য গণ্য করা হয়। মহান আল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যক্তি মু’মিন সে কি ফাসিক্ব ব্যক্তির মতো? তারা সমান নয়।” (সূরাহ সাজদাহ: ১৮) আর যেহেতু গণতন্ত্রে পুরুষকে নারীর সমতুল্য গণ্য করা হয়। মহান আল্লাহ বলেছেন, “আর পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানের মতো নয়।” (সূরাহ আলে ‘ইমরান: ৩৬) সুতরাং দুই দলের মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।
আর আহলুস সুন্নাহকে এ কথা বলা জুলুম যে, তোমরা চুপ থাক। চুপ থাক, আমাদের পবিত্র দেশে কমিউনিস্ট, বাথিস্ট, নাসেরাবাদী প্রমুখের অপবিত্র পদক্ষেপের ব্যাপারে! অথচ নাবী ﷺ বলেছেন, “আরব উপদ্বীপে দুটি ধর্ম একত্রিত হতে পারবে না।” [মাজমা‘উয যাওয়াইদ, খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ১২৪; মুসনাদে বাযযার, খণ্ড: ১৪; পৃষ্ঠা: ২২১; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: ইবনু বায)] তিনি আরও বলেছেন, “তোমরা আরব উপদ্বীপ থেকে ইহুদিদের বের করে দাও।” [মাজমা‘উয যাওয়াইদ, খণ্ড: ৫; পৃষ্ঠা: ৩২৮; সামান্য শব্দের পরিবর্তনে– সাহীহুল জামি‘, হা/২৩২; সনদ: সাহীহ]
অথচ আমরা বলি, ওরা আমাদের ভাই, ওরা এই এবং ওরা ওই। ইখওয়ানুল মুফলিসূনের জন্য আল্লাহ’র কাছে তাওবাহ করা, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ’র দিকে প্রত্যাবর্তন করা এবং আল্লাহ’র কিতাব ও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহকে ফায়সালাকারী বানানো ওয়াজিব। আহলুস সুন্নাহ’র উপর আল্লাহ’র অনুগ্রহের কারণে তারা তাদের বিরোধীদের পরোয়া করে না, যখন বিরোধীরা বাতিলের উপর থাকে। বরং তারা হক কথা বলে। যে ব্যক্তি তাতে খুশি হয়, তার জন্যই সন্তুষ্টি। আর যে ব্যক্তি ক্রোধান্বিত হয়, তার ক্রোধ তার নিজের উপরেই। যাবতীয় প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ’র জন্য, যিনি আমাদেরকে এই অবস্থান দিয়েছেন যে, আমরা হক কথা বলতে পারছি।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), গারাতুল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহলি ওয়াস সাফসাত্বাহ; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৪১-৪৩; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
·
১০ম বক্তব্য:
ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
السؤال: ما حكم الدراسة في كلية الإيمان لأن بعض الأخوة يظن أنها جامعة سلفية، فهل تنصحون بالدراسة فيها؟
الجواب: الحمد لله، وصلى الله وسلم على نبينا محمد وعلى آله وأصحابه ومن والاه، وأشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له، وأشهد أن محمدا عبده ورسوله. أما بعد:
فقد سألني غير أخ من اليمنيين عن الدراسة بكلية الإيمان، ففي الغالب أنني أتهرب عن الجواب عمداً، وربما أفتيت بعضهم بما ستسمعونه، والسبب في هذا أن اليمني ما يتحمل المشاق ويأتي من بلدة بعيدة ، أما أخ يأتي من أمريكا إلى كلية الإيمان ، ثم بعد ذلك يصدم فلا بد أن يبين له.
والغالب على المؤسسات التي يقوم بها الإخوان المسلمون، أنهم يقومون بها من أجل أنه إذا حصلت انتخابات ينتخبهم أولئك، ويدعون إلى انتخاباتهم، وقد عرفنا أن الانتخابات طاغوتية ، وذكرنا هذا في غير ما شريط وهو بحمد الله في كتبنا المطبوعة مثل «قمع المعاند وزجر الحاقد الحاسد»، ومثل «المصارعة» ومثل «المخرج من الفتنة» وغيرها من الكتب، فقد بينا أن الانتخابات تعتبر طاغوتية، وأيضا غرض آخر من أجل جمع الأموال لهذه الكلية وغيرها.
كلية الإيمان لو كانت كلية إيمان، أو كلية سنية سلفية ما طُرد بعض إخواننا الجزائريين منها بسبب أنهم تظاهروا بسنة رسول الله صلى الله عليه وعلى آله وسلم.
ولما قام عبدالمجيد الزنداني بطلبة كلية الإيمان بل ذهب لهم بالفعل إلى جماعة التبليغ ليتعلموا منهم الآداب، ويتعلموا منهم الدعوة، وذهب بهم إلى الحديدة، جماعة التبليغ الذين جمعوا بين التصوف والجهل، يقوم أحدهم ويتكلم ويضيع الساعات على المستمعين، بكلام جهل وأحاديث ضعيفة وموضوعة، يأخذهم عبد المجيد الزنداني إلى جماعة التبيلغ من أجل أن يتعلموا منهم الآداب.
فالقصد أننا لا ننصح بالالتحاق بها، ورب العزة يقول في كتابه الكريم: ﴿فلولا نفر من كل فرقة منهم طائفة ليتفقهوا في الدين ولينذروا قومهم إذا رجعوا إليهم لعلهم يحذرون﴾، ﴿ليتفقهوا في الدين﴾.
طالب العلم يجب أن يكون همه هو التفقه في دين الله، وفي «الصحيحين» عن معاوية -رضي الله عنه- قال: قال رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم–: «من يرد الله به خيرا يفقهه في الدين».
والنبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– يخبر عن ارتفاع العلم النافع ، علم من أعلام النبوة فالنبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– يقول : «إن الله لا يقبض العلم انتزاعا ينتزعه ، ولكن يقبض العلم بقبض العلماء، حتى إذا لم يبق عالما اتخذ الناس رءوسا جهالا، فسئلوا فأفتوا بغير علم فضلوا وأضلوا»، متفق عليه من حديث عبدالله بن عمرو رضي الله تعالى عنه.
ورب العزة يقول في كتابه الكريم : ﴿فأعرض عن من تولى عن ذكرنا ولم يرد إلا الحياة الدنيا * ذلك مبلغهم من العلم﴾، ويقول: ﴿يعلمون ظاهرا من الحياة الدنيا وهم عن الآخرة هم غافلون﴾. فينبغي أن نهتم بالتفقه في دين الله.
والتعلم في المساجد فيه خير وبركة، وهل تخرج من تخرج من صحابة رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– إلا من المساجد، «وما اجتمع قوم في بيت من بيوت الله، يتلون كتاب الله، ويتدارسونه فيما بينهم، إلا نزلت عليهم السكينة، وحفتهم الملائكة، وغشيتهم الرحمة، وذكرهم الله فيمن عنده».
ورحم الله مالكا إذ يقول: «لا يصلح آخر هذه الأمة، إلا ما أصلح أولها».
أسألكم يا إخواننا أكان في علمائنا المتقدمين من يتقدم ويحدث وهو حالق اللحية، وثوبه يسحب الأرض، وهو لا يعرف إلا طبعاً ويعني وصدقني، قد أهلته شهادته لذلك المنصب، وليس لديه من العلم ما يؤهله لذلكم المنصب.
أنصحك أن تنظر لمن يدرسك كتاب الله، وسنة رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم–، ورب العزة يقول لنبيه محمد –صلى الله عليه وعلى آله وسلم–: ﴿واصبر نفسك مع الذين يدعون ربهم بالغداة والعشي يريدون وجهه ولا تعد عيناك عنهم تريد زينة الحياة الدنيا ولا تطع من أغفلنا قلبه عن ذكرنا واتبع هواه وكان أمره فرطا﴾.
فهذا حاصل ما أنصح به الإخوة؛ أن يرحلوا إلى الأماكن التي يدرس فيها كتاب الله وسنة رسول الله –صلى الله عليه وعلى آله وسلم–. والإمام البخاري رحمه الله تعالى يبوب في «صحيحه» ويقول : «باب الرحلة في طلب العلم»، وذكر حديث عقبة بن الحارث أنه رحل إلى النبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– وقال : إن امرأة سوداء تخبر أنها أرضعتني وأرضعت امرأتي، فسكت النبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم– حتى قالها ثلاث مرات أو أربع، ثم قال له النبي –صلى الله عليه وعلى آله وسلم–: كيف وقد قيل؟
প্রশ্ন: “আল-ঈমান ইউনিভার্সিটিতে [আল-ঈমান ইউনিভার্সিটি ইয়েমেনের সানা’য় অবস্থিত। এটি একটি ব্রাদারহুড পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এর প্রতিষ্ঠাতা ‘আব্দুল মাজীদ আয-যিনদানী। – সংকলক] পড়াশুনা করার বিধান কী? কেননা কিছু ভাই এটাকে সালাফী ইউনিভার্সিটি মনে করছে। আপনি কি এই ভার্সিটিতে পড়ার নসিহত করেন?”
উত্তর: “যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহ’র জন্য। মহান আল্লাহ দয়া ও শান্তি বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবীবর্গ ও পরবর্তী অনুসারীদের উপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। অতঃপর: আমার কাছে একাধিক ইয়েমেনী ভাই ঈমান ভার্সিটিতে পড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন। আমি অধিকাংশ সময়েই এই প্রশ্নের জবাব দেওয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছিলাম। কখনো কখনো আমি তাদের কতিপয়কে ফাতওয়া দিয়েছি বিশেষ পরিস্থিতিতে। এর কারণ হলো একজন ইয়েমেনীকে কষ্ট করতে হয় না। কিন্তু যে দূর দেশ থেকে এসেছে, যেমন কেউ আমেরিকা থেকে আসে ঈমান ভার্সিটিতে পড়ার জন্য, তারপর ধাক্কা খায়! অবশ্যই এর কাছে প্রকৃত বিষয় বর্ণনা করতে হবে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুসলিম ব্রাদারহুড যেসব প্রতিষ্ঠান তৈরি করে, তারা তা এজন্য করে যে, যখন নির্বাচন হবে, তখন যেন ওরা তাদেরকে ভোট দেয়। আমরা জেনেছি যে, ভোটাভুটি ত্বাগূতী সিস্টেম। আমি একাধিক অডিয়ো ক্লিপে (ক্যাসেট/টেপ) এ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আল-হামদুলিল্লাহ, এখন তা আমাদের প্রকাশিত গ্রন্থাবলীতে বিদ্যমান রয়েছে। যেমন: ক্বাম‘উল মু‘আনিদ ওয়া যাজরুল হাক্বিদিল হাসিদ, আল-মুসারা‘আহ, আল-মাখরাজ মিনাল ফিতনাহ, ফাতওয়া ফী ওয়াহদাতিল মুসলিমীনা মা‘আল কুফফার প্রভৃতি। আমরা বর্ণনা করেছি যে, ভোটাভুটি ত্বাগূতী সিস্টেম হিসেবে পরিগণিত।
প্রতিষ্ঠান নির্মাণের আরেকটি উদ্দেশ্যও আছে, আর তা হলো এই ভার্সিটি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ জমা করা। ঈমান ভার্সিটি যদি সত্যিকারার্থেই ‘ঈমান ভার্সিটি’ হতো তথা সুন্নী বা সালাফী ভার্সিটি হতো, তাহলে সেখান থেকে আমাদের আলজেরীয় ভাইদেরকে স্রেফ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ জাহির করার কারণে বহিষ্কার করা হতো না। আর ‘আব্দুল মাজীদ আয-যিনদানীও ঈমান ভার্সিটির ছাত্রদেরকে নিয়ে হাদীদাহ’র তাবলীগ জামা‘আতের কাছে শিষ্টাচার ও দা‘ওয়াতের পদ্ধতি শিখতে যেত না! তাবলীগ জামা‘আত, যারা সূফীবাদ ও মূর্খতাকে একত্রিত করেছে। তাদের কেউ কেউ দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেয় এবং মূর্খতাপূর্ণ কথা বলে, আর দ্ব‘ঈফ-জাল হাদীস বর্ণনা করে শ্রোতাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে।
আমরা এই ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার নসিহত করি না। মহান আল্লাহ তাঁর সম্মানিত কিতাবে বলেছেন, “আর মু’মিনদের জন্য সংগত নয় যে, তারা সকলে একসঙ্গে অভিযানে বের হবে। অতঃপর তাদের প্রতিটি দল থেকে কিছু লোক কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের গভীর জ্ঞান আহরণ করতে পারে এবং স্বজাতিকে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা প্রত্যাবর্তন করবে? যাতে তারা (গুনাহ থেকে) বেঁচে থাকে।” (সূরাহ তাওবাহ: ১২২)
ত্বালিবুল ‘ইলমের জন্য আল্লাহ’র দ্বীনের ক্ষেত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জন করার স্পৃহা থাকা আবশ্যক। বুখারী-মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন।” (সাহীহ বুখারী, হা/৭১; সাহীহ মুসলিম, হা/১০৩৭)
নাবী ﷺ ‘ইলম উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সংবাদ দিয়েছেন। এটাকে নবুওতের একটি নিদর্শন গণ্য করা হয়। তিনি ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তর থেকে ‘ইলম উঠিয়ে নিবেন না। কিন্তু তিনি ‘আলিমদের উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ‘ইলম উঠিয়ে নিবেন। যখন কোনো ‘আলিম অবশিষ্ট থাকবে না, তখন লোকেরা মূর্খদেরকেই নেতা বানিয়ে নিবে। তাদের জিজ্ঞেস করা হলে, তারা না জানলেও ফাতওয়া প্রদান করবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে।” (সাহীহ বুখারী, হা/১০০; সাহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৩)
মহান আল্লাহ তাঁর সম্মানিত কিতাবে বলেছেন, “অতএব তুমি তাকে উপেক্ষা করে চল, যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয় এবং কেবল দুনিয়ার জীবনই কামনা করে। এটাই তাদের জ্ঞানের শেষ সীমা।” (সূরাহ নাজম: ২৯-৩০) তিনি আরও বলেছেন, “তারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিক সম্পর্কে জানে, আর আখেরাত সম্পর্কে তারা উদাসীন।” (সূরাহ রূম: ৯) সুতরাং আল্লাহ’র দ্বীনে ব্যুৎপত্তি অর্জন করাকে গুরুত্ব দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
মাসজিদে ‘ইলম অর্জনের মধ্যে কল্যাণ ও বরকত রয়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যেসব সাহাবী ‘ইলম অর্জন করে জ্ঞানী হিসেবে বের হয়েছেন, তাঁরা মাসজিদ থেকে বের হয়েছেন। নাবী ﷺ বলেছেন, “যখন কোনো সম্প্রদায় আল্লাহ’র গৃহসমূহের কোনো একটি গৃহে একত্রিত হয়ে আল্লাহ’র কিতাব পাঠ করে এবং একে অপরের সাথে মিলে (ক্বুরআন) অধ্যয়নে লিপ্ত থাকে, তখন তাদের উপর শান্তিধারা অবতীর্ণ হয়। রহমত তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে এবং ফেরেশতাগণ তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখেন। আর আল্লাহ তা’আলা তার নিকটবর্তীদের (ফেরেশতাগণের) মধ্যে তাদের কথা আলোচনা করেন।” (সাহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৯; ‘যিকর ও দুআ’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ১১)
আল্লাহ ইমাম মালিকের ওপর রহম করুন। তিনি বলেছেন, “উম্মাহ’র প্রথম যুগের লোকদেরকে যা সংশোধন করেছে, কেবল সেটাই এই উম্মাহ’র শেষের লোকদের সংশোধন করতে পারবে।” সুতরাং আমি তোমাকে এদিকে লক্ষ রাখতে নসিহত করব যে, কে তোমাকে আল্লাহ’র কিতাব এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ পড়াচ্ছে। মহান আল্লাহ তাঁর নাবী মুহাম্মাদ ﷺ কে বলেছেন, “আর তুমি নিজকে ধৈর্যশীল রাখ তাদের সাথে, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের রবকে ডাকে, তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এবং দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তোমার দু’চোখ যেন তাদের থেকে ঘুরে না যায়। আর ওই ব্যক্তির আনুগত্য কোরো না, যার অন্তরকে আমি আমার জিকির থেকে গাফিল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে এবং যার কর্ম বিনষ্ট হয়েছে।” (সূরাহ কাহাফ: ২৮)
আমি ভাইদেরকে যেসব নসিহত করি, এটা তার সারসংক্ষেপ যে, তারা ওইসব জায়গায় সফর করবে, যেখানে আল্লাহ’র কিতাব ও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ শেখানো হয়। ইমাম বুখারী তাঁর “আস-সাহীহ” গ্রন্থে একটি পরিচ্ছেদ রচনা করেছেন—পরিচ্ছেদ: ‘ইলম অন্বেষণের জন্য সফর করা। তারপর তিনি ‘উক্ববাহ বিন হারিসের একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (‘উক্ববাহ) নাবী ﷺ এর কাছে সফর করেছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন, ‘আমার কাছে একজন কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা এসেছিল, যে এই ধারণা করছে যে, সে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে দুধপান করিয়েছে।’ নাবী ﷺ এর কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলে, তিনি বিমুখ হলেন। এরপর নাবী ﷺ মুচকি হেসে বললেন, ‘এ কথার পর তুমি কীভাবে তার সঙ্গে সংসার করবে?’ (সাহীহ বুখারী, হা/৮৮)” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), তুহফাতুল মুজীব ‘আলা আসইলাতিল হাদ্বিরি ওয়াল গারীব; পৃষ্ঠা: ১২৫-১২৮; দারুল আসার, সানা (ইয়েমেন) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]
·
১১শ বক্তব্য:
ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
السؤال: هل جماعة الإخوان المسلمين والتبيلغ والقطبيين من أهل السنة والجماعة أم لا وهل يجوز التعاون معهم وهل يجوز لنا هجرهم وعدم السلام عليهم؟
الجواب: جماعة الإخوان المسلمين والتبليغ والقطبيين فالأولى أن يُحكم على مناهجهم، فمناهجهم ليست بمناهج أهل السنة والجماعة. أما الأفراد فبعض الناس يكون ملبساً عليه ويكون سلفياً، ويأتون إليه من باب نصر دين الله ويمشي معهم ولا يدري ما هم عليه. فالأفراد خليط لا يستطاع أن يحكم عليهم بحكم عام، لكن المناهج ليست مناهج أهل السنة.
وأما مسألة التعاون معهم، فأنا أنصح أهل السنة أن يستعينوا بالله ويقومون بواجبهم نحو الدعوة إلى الله، والواقع أننا لم نستطع أن نتعاون مع إخواننا أهل السنة في اليمن، وبالسودان، وبأرض الحرمين، ونجد، وبمصر، وفي الأردن، فلماذا تذهب ونتعاون مع أناس يرون أهل السنة أعدى الأعداء؟ فإذا ذهبت فمن أجل أن يقتنصوا بعدك الشباب، فتلقي المحاضرة ثم يأخذون الشباب بعدك، والكتب قد ألفت وبينت فساد منهج هؤلاء وأولئك، ومن أبصر الناس بالجماعات في هذا العصر وبدخل ودخن الجماعات الأخ ربيع بن هادي حفظه الله، فمن قال له الأخ ربيع : إنه حزبي فسينكشف لك بعد أيام أنه حزبي، لأن الشخص يكون في أول أمره متستراً ولا يحب أن ينكشف، لكن إذا قوي وصار له أتباع ولا يضره الكلام فيه أظهر ما عنده، فأنا أنصح باقتناء كتبه وقراءتها والاستفادة منها حفظه الله تعالى، والناس ربما يغترون بالمظاهر، وفلان يحضر حلقته ألفان، وفلان يحضر حلقته خمسة آلاف أو عشرة آلاف، أو أمة لا يعلم عددهم إلا الله سبحانه وتعالى. ولو محصت أولئك الحاضرين لما أخرجت منهم إلا قدر مائة شخص الذين هم من أهل السنة.
প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড, তাবলীগ এবং ক্বুত্বুবীরা কি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত, নাকি না? তাদের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতায় লিপ্ত হওয়া কি জায়েজ? আমাদের জন্য কি তাদেরকে বয়কট করা এবং তাদেরকে সালাম না দেওয়া জায়েয?”
উত্তর: “মুসলিম ব্রাদারহুড, তাবলীগ এবং ক্বুত্বুবীদের ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো হবে তাদের মানহাজের উপর হুকুম লাগানো। তাদের মানহাজ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজ নয়। পক্ষান্তরে তাদের সদস্যদের কেউ হয়তো সংশয়ে পতিত হয়েছে, অথচ সে সালাফী। তারা (ব্রাদারহুড) তার কাছে আসে, আল্লাহ’র দ্বীনকে সাহায্য করার দিক থেকে। আর সে তাদের সাথে চলে, অথচ সে জানে না যে, তারা কোন মতাদর্শের উপর রয়েছে।
সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লোক রয়েছে। তাদের ব্যাপারে ব্যাপক হুকুম দেওয়া সম্ভব নয়।
কিন্তু তাদের মানহাজ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজ নয়। পক্ষান্তরে তাদের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতায় লিপ্ত হওয়ার মাসআলাহ’য় আমি আহলুস সুন্নাহকে নসিহত করছি, তারা যেন আল্লাহ’র কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে এবং আল্লাহ’র দিকে দা‘ওয়াত দানের ক্ষেত্রে তাদের আবশ্যকীয় দায়িত্ব পালন করে। বাস্তবতা হলো, আমরা ইয়েমেন, সুদান, মক্কা-মদিনা, নজদ, মিসর ও জর্ডানে আমাদের আহলুস সুন্নাহ ভাইদেরকেই সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারি না। তাহলে কেন আমরা ওইসব লোককে সাহায্য করতে যাব, যারা আহলুস সুন্নাহকে সবচেয়ে বড়ো শত্রু মনে করে?! তুমি যদি যাও, তাহলে তারা তোমার পশ্চাতে (সালাফী) যুবকদেরকে শিকার করবে। তুমি বক্তব্য দিবে, আর তোমার পশ্চাতে যুবকদেরকে পাকড়াও করবে।
বেশকিছু গ্রন্থ রয়েছে, যেগুলো এদের মানহাজের অনিষ্টতা বর্ণনা করেছে। বর্তমান যুগে দলসমূহের ব্যাপারে এবং দলসমূহের দোষত্রুটি ও বিশৃঙ্খলার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি জানেন ভাই রাবী‘ বিন হাদী (হাফিযাহুল্লাহ)। ভাই রাবী‘ যাকে দলবাজ (হিযবী) বলেন, কিছুদিন পর দেখা যাবে, সে আসলেই দলবাজ (হিযবী)। কেননা ব্যক্তি প্রথম দিকে নিজেকে আড়ালে রাখে। [অর্থাৎ, ছুপা রুস্তম হয়ে থাকে – অনুবাদক] কিন্তু যখনই সে শক্তিশালী হয়, আর তার কিছু অনুসারী জুটে যায় এবং অন্যের কথাবার্তা তার কোনো ক্ষতি করবে না বলে সে মনে করে, তখনই সে তার আসল রূপ জাহির করে। আমি তাঁর (শাইখ রাবী‘র) কিতাবসমূহ সংগ্রহ করে তা অধ্যয়ন করার এবং তা থেকে ফায়দা গ্রহণ করার নসিহত করছি। আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করুন।
মানুষ কখনো কখনো বাহ্যিক দিক দেখে ধোঁকাগ্রস্ত হয়। মানুষ দেখে, অমুক ব্যক্তির বৈঠকে দুই হাজার লোক উপস্থিত হয়েছে, অমুক ব্যক্তির বৈঠকে পাঁচ হাজার বা দশ হাজার লোক উপস্থিত হয়েছে এবং অগণিত লোক উপস্থিত হয়েছে, যার প্রকৃত সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তুমি যদি ওই উপস্থিত ব্যক্তিবর্গকে পরীক্ষা করো, তাহলে তাদের মধ্য থেকে (হয়তো) স্রেফ একশজন লোক বের করতে পারবে, যারা আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত।” [ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), গারাতুল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহলি ওয়াস সাফসাত্বাহ; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৮-৯; দারুল হারামাইন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৯ হি./১৯৯৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
বয়কট করা এবং সালাম দেওয়ার বিষয়টি শাইখ এখানে আলোচনা করেননি। সামনের ফাতওয়ায় এ সম্পর্কে আলোচনা আসছে।
১২শ বক্তব্য:
ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত আরেকটি ফাতওয়া—
السؤال: هل الإخوان المسلمون من الفرق الضالة وهل أحد أحصى هذه الفرقة وهل هذا الإحصاء صحيح؟
الجواب: أما الإخوان المفلسون فلا يُستطاع الحكم على أفرادهم، فيه من هو مُلبس عليه، لكن المنهج منهج ضال، ومنهج فرقة من الفرق الزائغة، أنا أرجو أن تقرأوا عن حسن البنا الذي كنت أعتبره مجدداً صحيح كنت مخطئاً، وبعد ذلك اتضح بأنه رجل صوفي، يريد التوفيق بين الشيعة والسنة، رجل جويهل، عنده حماسة للدين على غير بصيرة.
فالقصد أن هذه الدعوة من حيث هي ضررها أكثر من نفعها، وقد تكلمت عليهم في غير ما شريط، وفي «المخرج من الفتنة»، وما كنت أعرف حقيقتهم مثل الآن عند أن كتبت «المخرج من الفتنة»، وما قد اتضحت حقيقتهم مثل الآن، وهكذا أيضاً في «السيوف الباترة»، وفي «المصارعة»، وفي «قمع المعاند وزجر الحاقد الحاسد»، وفي كتاب «غارة الأشرطة على أهل الجهل والسفسطة»، فعُلمت الحمد لله أحوالهم على أحسن ما يُرام والله المستعان، وقد أعطيناهم قسطهم.
والذي أنصح به في شأنهم: ألا تحضر محاضراتهم، ولا يُسمع قولهم، لكن مسألة الهجر لا تهجرهم تسلم عليهم باعتبار أنهم مسلمون مبتدعة والله المستعان.
هل أحد أحصى هذه الفرق؟ نعم العلماء المتقدمون أحصوا وزادت لعلهم عنوا رؤوس الفرق وإلا فالمعتزلة وإلا كم تنقسم المعتزلة إلى فرق شتى، الرافضة تنقسم إلى فرق شتى، الشيعة تنقسم إلى فرق شتى، وهكذا أيضاً الكرامية وغيرها من فرق الضلال، فجمعها العلماء المتقدمون وزادت، فبعد أن زادت قالوا : لعله يعني رؤوس أهل البدع.
وهل هذا الإحصاء صحيح؟ الذي أحصاه العلماء المتقدمون في شأن الفرق المتقدمة ما نظن بهم إلا خيراً.
প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড কি পথভ্রষ্ট দলসমূহের অন্তর্ভুক্ত? কেউ কি পথভ্রষ্ট দলগুলোকে গণনা করতে পারে? আর এই গণনা কি সঠিক?”
উত্তর: “ইখওয়ানুল মুফলিসূনের সদস্যদের উপর (ব্যাপকভাবে) হুকুম লাগানো সম্ভব নয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সংশয়ে পতিত হয়েছে (অর্থাৎ, প্রকৃত বিষয় জানে না)। কিন্তু তাদের মানহাজ পথভ্রষ্ট মানহাজ, বিপথগামী দলসমূহের একটি দলের মানহাজ। আমি আশা করব, তোমরা হাসান আল-বান্না’র ব্যাপারে পড়াশুনা করবে। এই লোককে আমি মুজাদ্দিদ গণ্য করেছিলাম। সঠিক কথা হলো, আমি ভুল করেছিলাম। পরবর্তীতে স্পষ্ট হয়েছে যে, সে একজন সূফী। সে শী‘আ মতাদর্শ এবং সুন্নী মতাদর্শের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে চায়। সে একজন জুওয়াইহিল তথা পিচ্চি মূর্খ। [ইমাম মুক্ববিল (রাহিমাহুল্লাহ) বান্নাকে ‘জুওয়াইহিল’ বলেছেন, তুচ্ছার্থে। – সংকলক] না জেনেই দ্বীনের দা‘ওয়াত দেওয়ার ব্যাপারে তার উদ্যমতা রয়েছে।
এই দা‘ওয়াতে কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই বেশি। আমি তাদের ব্যাপারে একাধিক অডিয়ো ক্লিপে আলোচনা করেছি। যেমন: আল-মাখরাজ মিনাল ফিতনাহ। আমি যখন আল-মাখরাজ মিনাল ফিতনাহ লিখেছি, তখন তাদের প্রকৃতত্ব সম্পর্কে এখনকার মতো জানতাম না। অনুরূপভাবে তাদের ব্যাপারে আলোচনা রয়েছে এমন বই—আস-সুয়ূফুল বাতিরাহ, আল-মুসারা‘আহ, ক্বাম‘উল মু‘আনিদ ওয়া যাজরুল হাক্বিদিল হাসিদ, গারাতুল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহলি ওয়াস সাফসাত্বাহ। আল-হামদুলিল্লাহ, তাদের হালহকিকত উত্তমরূপে জানা গেছে। আল্লাহ সহায় হোন। আমরা তাদেরকে তাদের অংশ দিয়েছি।
আমি তাদের ব্যাপারে যে নসিহত করি তা হলো—তাদের বক্তৃতায় উপস্থিত হবে না এবং তাদের কথাবার্তা শুনবে না। কিন্তু বয়কটের মাসআলাহ’য় বলছি, তুমি তাদের বয়কট কোরে না। তুমি তাদেরকে মুসলিম বিদ‘আতী হিসেবে সালাম দিবে। আল্লাহ সহায় হোন।
কেউ কি এই দলগুলোকে গণনা করতে পারে? হ্যাঁ, পূর্ববর্তী ‘আলিমগণ গণনা করেছেন, তবে দলের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্ভবত তাঁরা এর দ্বারা প্রধান দলগুলো উদ্দেশ্য করেছেন। নতুবা মু‘তাযিলাহ তো বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, রাফিদ্বী’রা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, শী‘আরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, অনুরূপভাবে কাররামিয়্যাহ এবং অন্যান্য পথভ্রষ্ট দল বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত হয়েছে। পূর্ববর্তী ‘আলিমগণ এদের নাম একত্রিত করেছেন, তবে দলের সংখ্যা পরে বৃদ্ধি পেয়েছে। দলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পর ‘আলিমগণ বলেছেন, তাঁরা (পূর্ববর্তীগণ) সম্ভবত শীর্ষস্থানীয় বিদ‘আতীদের উদ্দেশ্য করেছেন।
এই গণনা কি সঠিক? (আমি বলছি,) পূর্ববর্তী ‘আলিমগণ পূর্ববর্তী দলসমূহের ব্যাপারে যে গণনা করেছেন, সে ব্যাপারে আমরা কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই ধারণা করি না।” [“আল-আসইলাতুল হাদ্বরামিয়্যাহ ‘আলা মাসাইলা দা‘উয়িয়্যাহ”– শীর্ষক অডিয়ো ক্লিপ থেকে; গৃহীত: www.muqbel.net/fatwa.php?fatwa_id=1232.]
[এই অধ্যায় আগামী পর্বে সমাপ্য, ইনশাআল্লাহ।]
·
অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
পরিবেশনায়: www.facebook.com/SunniSalafiAthari (সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে)
১৩শ পর্ব | ২৫শ অধ্যায়: ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [২য় কিস্তি]

Post a Comment

0 Comments