Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

বিতর নামায কত রাকাত- ১,৩ কিংবা ৫ ?


বিতির নামায কত রাকাত- ,৩ কিংবা ৫
বাংলাদেশে  দেশে  দীর্ঘদিন থেকে বিতিরের নামাজ ৩ রাকাত পড়ানো হয়। এই থেকে বেশীর ভাগ মানুষের ধারনা, বিতরের নামাজ শুধুমাত্র ৩ রাকাত। তবে কুরআন-হাদিসের আলোকে আমাদের ধর্মের সমস্ত জিনিস চিন্তা করা উচিৎ।
 এক রাকাত বিতর নামায
১)  নবী(স:) রাতের তাহাজ্জুদের নামায দুই দুই রাকাত করে আদায় করতেন এবং ১ রাকাত বিতর পড়তেন।                              বুখারী -৯৩৬
২)  আবদুল্লাহ  ইবনে উমর(রা:)  থেকে বর্নিত, রাতের নামায দুদুরাকাত করে।ার যখন তুমি নামায শেষ করতে চাইবে, তখন ১ রাকাত বিতর পড়বে। এতে তোমার আদায়কৃত নামাযে বিতরের নামাযও হয়ে যাবে।  বুখারী-  ৯৩৪
৩)   হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাবা ইবনে সুআইর(রা) থেকে বর্নিত (নবী উনার মাথায় হাত বুলায়ে দিয়েছিলেন), ‘তিনি সাদ বিন আবিওয়াক্কাসকে বিতরের নামায ১ রাকাত পড়তে দেখেছেন                          বুখারী-৬৯১,৯৩২,৯৩৫
৪)    হযরত আয়েশা থেকে বর্নিত, ‘রাসুলুল্লাহ রাতে ১১ রাকাত নামায পড়তেন।তার মধ্যে ১ রাকাত বিতর পড়তেন। নামায শেষ করে তিনি ডান পাশে ফিরে শুতেন।অত:পর
ভোরে আজান হলে, তিনি উঠে, সংক্ষিপ্ত ২ রাকাত(ফজরের সুন্নাত) নামায পড়তেন
মুসলিম ১৫৯৪,১৫৯৫,১৬০৪,১৬২৫,১৬২৬,১৬২৭,১৬২৮,১৬৩৪-১৬৪০
৫)   হযরত ইবনে উমর বলেন, ‘নবী বলেছেন, রাতের নামায(নফল) পড়বে ২ রাকাত করে। আর বিতরের নামায হলো ১ রাকাত।       নাসা্য়ী- ১৬৯৪
১৬৬৮-১৬৭৫,১৬৯০-৯৩,১৬৯৫-৯৭
৬)    হযরত আয়েশা থেকে বর্নিত, রসুলুল্লাহ(স:)  (রাতে নামাযে) প্রতি ২ রাকাতে সালাম ফিরাতেন এবং বিতর নামায ১ রাকাত পড়তেন।  ইবনে মাজাহ-১১৭৪- ১১৭৭
৭)   রসুল(স:)  ১ রাকাত বিতর নামায পড়তেন
তিরমিজীতে- ৪৩৩  (বুখারী ও মুসলিমের উদ্ধৃতি)
৮)    বিতরের নামা ১ রাকাত  আবু দাউদ ১৪২১(মুসলিম ও নাসায়ীর উদ্ধৃতি)
 তিন  কিংবা  ৩-এর  অধিক বে-জোড়  সংখ্যক  বেতরের নামায 
৯)   হযরত ইবনে আব্বাস(রা:) বলেছেন, ‘রসুলুল্লাহ রাতের বেলায় ৮ রাকাত(তাহাজ্জুদ) নামায পড়তেন। ৩ রাকাত বিতরের নামায পড়তেন ও ফজর নামাযের আগে ২ রাকাত(সুন্নাত) নামায পড়তেন।  নাসায়ী -১৬৯৮,১৭০০-১৭০৬,১৭০৮
১০)   হযরত আবু আইয়ুব থেকে বর্নিত, ‘নবী বলেছেন, বিতরের নামায আবশ্যকীয়।যে ব্যাক্তি ৫ রাকাত পড়তে চায় সে ৫ রাকাত পড়বে, যে ৩ রাকাত পড়তে চায় ৩ রাকাত পড়বে এবং যে  ১ রাকাত পড়তে চায় ১ রাকাত পড়বে।
ইবনে মাজাহ-১১৯০,নাসায়ী-১৭১২, আবু দাউদ-১৪১২
১১)   আবু আইয়ুব(রা:) থেকে বর্নিত, নবী(স:) বলেছেন, কিতরের নামায আবশ্যকীয়। অতএব যা ইচ্ছা সে  ৭ রাকাত, ৫ রাকাত, ৩ রাকাত কিংবা ১ রাকাত পড়ুক  নাসায়ী- ১৭১১
বিতরের নামায পড়ার নিয়ম  দুটি     
১২)   তিনি বিতরের নামায যখন ৩ রাকাত পড়তেন, তখন প্রথমে ২ রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে নিতেন।তারপর ১ রাকাত পড়ে ,সালাম ফিরিয়ে নামায সমাপ্ত  করতেন।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর থেকে বর্নিত, তিনি বিতরের  ২ রাকাত এবং ১ রাকাতের মধ্যে (সালাম ফিরিয়ে) পৃথক করে নিতেন এবং তিনি বলেছেন, নবী(স:)  এরুপই করতেন।        ইবনে হিব্বান-২৪৩০
১৩)  তিনি বিতরের নামাজ যখন ৩ রাকাত পড়তেন, তখন দুই রাকাত পড়ে বসতেন না কিংবা তাশাহহুদও পড়তেন না। বরং একসাথে ৩ রাকাত শেষেই বসতেন।হযরত আয়েশা(রা:)  থেকে বর্নিত, ‘নবী(স:) ৩ রাকাত বিতর পড়তেন, যার শেষ রাকাত ছাড়া তিনি কোথাও বসতেন না  বায়হাকী,হাকেম
১৪)  হযরত আয়েশা(রা:) থেকে বর্নিত,’রাসুলুল্লাহ(স:) রাতের বেলা তের রাকাত নামায পড়তেন। এর মধ্যে ৫ রাকাত পড়তেন বিতর এবং তাতে একবারে শেষে ছাড়া আর কোন বৈঠক করতেন না  মুসলিম- ১৫৯৭, নাসায়ী-১৭১৮
১৫)   উম্মে সালমা(রা:) থেকে বর্নিত,’ রাসুলুল্লাহ(স:) ৭ কিংবা ৫ রাকাত বিতরের নামায পড়তেন এবং মাঝখানে সালামও ফিরাতেন না এবং কোন কথাও বলতেন না
ইবনে মাজাহ-  ১১৯২
১৬)   রাসুলুল্লাহ(স:)  বলতেন,’তোমরা বিতরের ৩  রাকাত নামাজকে, মাগরিবের নামাযের সদৃশ করো না
হযরত আবু হুরায়রা(রা:) থেকে বর্নিত,’ রাসুলুল্লাহ(স:)  বলতেন,’তোমরা মাগরিবের মত  করে  ৩ রাকাত বিতরের নামায পড়ো  না। বরং ৫ রাকাত, ৭ রাকাত, ৯ রাকাত কিংবা ১১ রাকাত দ্বারা বিতর পড়ো
ত্বাহাবী,দারু কুত্বনী,ইবনে হিব্বান,হাকেম      
১৭)     নবী  রাসুলুল্লাহ (স:)  বিতরের নামায ৯,১১  কিংবা  ১৩  রাকাত পড়তেন।তবে এ  সব বর্ননায় সাধারনত:  রাতের  নফল  নামায পড়ার সময় ৮ রাকাতের শেষে ১ রাকাত বিতর, ১০ রাকাতের শেষে ১ রাকাত বিতর কিংবা ১২ রাকাতের শেষে  ১ রাকাত বিতর পড়তেন।
১৮)    রাসুলুল্লাহ(স:)  রাতে  ৮ রাকাত নামায পড়তেন।তারপর ১ রাকাত বিতির পড়তেন। এরপর  বসে বসে ২ রাকাত (শাফিউল বিতরের) নামায পড়তেন
আহমদ,মুসলিম-১৬০১
১৯)    হযরত কায়েস ইবনে তুলক(রা:) বলেন, ‘রমযান মাসে আমার পিতা তুলক ইবনে আলী(রা:)  আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে। তিনি আমাদের সাথে রাতে থাকেন। তিনি ঐ রাতে আমাদের নিয়ে তারাবীর নামায ও বিতরের নামায পড়েন
তারপর তিনি এক মসজিদে যেয়ে তার সাথীদের সাথে নামায পড়েন। শেষে বিতরের নামায বাকী থাকলো। তিনি এক ব্যাক্তিকে সামনে ঠেলে দিয়ে বলেন,তুমি তাদেরকে নিয়ে বিতিরের নামায পড়ো।নিশ্চয় আমি রাসুল্লাহকে(রা:)  বলতে শুনেছি,  এক রাতে ২ বার বিতিরের নামায পড়তে নাই            নাসায়ী-১৬৮০
২০)     হাদিসে রাসুল(স:)   বিতরের নামাযের চিত্র দেখলে বুঝা যায়, বিতরের নামায  ১ রাকাতই ভাল। তবে একাধিক রাকাত পড়লে বে-জোড়  ভাবে পড়তে হবে।হাদিসে বর্নিত  উপায়ে  বিতর পড়তে হবে। নাহলে, বিতর নামায  শুদ্ধ হবে না। 

Post a Comment

0 Comments