নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন sahih-akida.simplesite.com
https://rasikulindia.blogspot.com/
❒ সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর!
----------------------------------------------------------
উত্তর প্রদানে:
বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান বিন ‘আব্দুল্লাহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ)।
.
🔸প্রশ্ন:
প্রশ্নকারী ঐ দলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছেন যারা বর্তমানে মুসলিমদেরকে ত্যাগ করেছে এবং তাদের বিরোধিতা করেছে। তারা বোমা হামলা ঘটায় আর মানুষদেরকে আতঙ্কিত করে যেখানে তারা একসময় নিরাপদ বোধ করত। এরা কি সত্যিই খাওয়ারিজদের অন্তর্ভুক্ত নাকি এরা কাফের?
.
🔸উত্তর:
এই দল মুসলিমদেরকে ত্যাগ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে- এ হচ্ছে আলেমদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখার পরিনাম। এর পরিণতি সম্পর্কে আমি এর আগের লেকচারের শেষভাগে বলেছি। তারা আলেমদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, মুসলিম শাসকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, এবং কাফেররা এবং মুনাফিকেরা এই সমস্ত আদর্শ তাদের মাথায় ঢুকিয়েছে। সুতরাং তারা মুসলিমদের সমাজ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে পরেছে। এরা খারেজী নিঃসন্দেহে। তাদের এই কাজ হচ্ছে খারেজীদের কাজ বরং তারা পূর্বেকার খাওয়ারিজদের থেকেও অধিক হিংস্র আর চরমপন্থি।
আগের দিনের খারেজীরা যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখি এসে দাঁড়াত। ওরা যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করত অজ্ঞতার উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকার পরেও। কিন্তু ওরা সমস্ত বাসিন্দা সহ বাড়িঘর ধসিয়ে দিত না- যেখানে মহিলা, শিশু, নিরপরাধ মানুষ, এবং ঐ সব লোক যারা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করেনি, যাদের সাথে মুসলিমদের সন্ধি আছে, এবং অন্যান্যরা যাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে- এমন সব মানুষজন আছে।
পূর্বেকার খাওয়ারিজরা এরকম করত না, এ হচ্ছে [ বর্তমান খারেজীদের সন্ত্রাসী হামলা ] আরও খারাপ এবং পূর্বেকার খাওয়ারিজরা যা করত তার থেকেও বেশী হিংস্র। এসব কাজ বরং ‘কারামিতাহ’ (একটি অতিমাত্রায় হিংস্র, পথভ্রষ্ট ফিরকা) এর সাথে বেশী মিলে যায়।
তারা [ বর্তমান খারেজীরা ] কারামিতাহদের সাথেই অধিক মিল রাখে কেননা কারামিতাহদের কার্যক্রম হয় গোপনে, তারা গোপনীয়তা আর নিচুতার সাথে তাদের কাজকর্ম করে থাকে আর আজকের এই লোকগুলি যা করে তাও তারা গোপনেই করে। আগেকার দিনের খাওয়ারিজরা- তাদের কাজকর্ম গোপন আর লুকায়িত রাখত না। তারা নিজেদের পরিচয় এবং তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রচার করে বেড়াত, প্রকাশ করে দিত। সুতরাং এই লোকগুলি পূর্বকার খাওয়ারিজদের থেকেও নিকৃষ্ট।
.
🔸প্রশ্ন:
আপনি তরুণদের মধ্যে এমন কয়েকজনকে দেখবেন যারা বোমা হামলা এবং এরকম আরও যা কিছু ঘটেছে সেগুলিকে খারাপ মনে করে না, তারা এগুলোকে সমর্থন করে, অথবা এসব দলের কোন কোন কাজের পক্ষে কথা বলে! এদের হুকুম কি?
.
🔸উত্তর:
এরকম একজন ব্যক্তি দুইটি জিনিসের যেকোনো একটি হবে:
১. হয় সে অজ্ঞ :
জ্ঞানের অভাবের কারণে সে তাদের (সন্ত্রাসীদের) সম্পর্কে সু-ধারণা রাখছে। এবং এরকম ব্যক্তিদের কাছে আপনি তার ভুল ধরিয়ে দিবেন, এবং তার কাছে ব্যাখ্যা করবেন, যতক্ষণ না এদের [সন্ত্রাসীদের] সম্পর্কে তার ভুল ধারণা দূর হয়ে যাবে।
অথবা
২. সে তাদের একজন :
সে তাদের ধারণাগুলিকে সমর্থন করে। সে তাদের মতই একই জিনিস বিশ্বাস করে এবং তাদের ধারণাগুলিই বহন করে। তার কাছেও আপনি সত্যি কথাটা খুলে বলবেন, যাতে করে হয়ত সে ফিরে আসবে। যদি সে ফিরে না আসে (সত্যের দিকে), তাহলে তার অপরাধ তার উপরেই বর্তাবে। যদি না এমনটা প্রতীয়মান হয় যে, সে নিজেই শান্তি এবং নিরাপত্তা বিঘ্ন করতে পারে এবং অপর মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে পারে; সেক্ষেত্রে তার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা বাধ্যতামূলক হবে। যদি তার কাছ থেকে এমন কিছু আঁচ করা যায় যা শান্তি ও নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটাবে অথবা সে হয়তো অন্য মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করবে অথবা সে যদি তরুণদেরকে তার গোমরাহির দিকে আহ্বান করে, তাহলে তাকে অবশ্যই ধরিয়ে দিতে হবে বা তার ব্যাপারে তথ্য দিতে হবে যাতে তাকে থামানো যায়।
.
🔸প্রশ্ন :
সম্মানিত শায়েখ, আল্লাহ্ যেন আপনাকে সাফল্য দান করেন। আমরা হচ্ছি কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং আমরা চাচ্ছিলাম আপনার কাছে একটা প্রশ্ন রাখতে, যেহেতু আমাদেরকে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যারা এই দেশে অশান্তি তৈরি করে এবং শাসকের অবাধ্যতা করে। এবং আমরা একটা ফাতওয়া শুনতে পেয়েছি যা বলে যে এরকম লোকদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো এবং তাদের পিছু নেয়া এবং তাদের সাথে লড়াই করা এসব নিষিদ্ধ কারণ এরা হচ্ছে মুজাহিদীন (যারা জিহাদ করে), এবং এরা ঐসব কাফেরদেরকে বহিস্কার করতে চায় যারা অন্যান্য দেশ যেমন: ইরাকে মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করছে। সুতরাং এই ব্যাপারে সঠিক মতামত কি? আল্লাহ্ আপনাকে সফল করুন।
.
🔸উত্তর:
আল্লাহ্ যেন আপনাদেরকেও সাহায্য করেন। আপনারাই জিহাদ করছেন। আপনারা সবাই, আপনাদের কাজের দ্বারা জিহাদে লিপ্ত। কেননা এই কাজের দ্বারা আপনাদের সংকল্প হচ্ছে বাতিলের অনুসারীদের রোধ করা, শান্তি বজায় রাখা এবং মানুষের জান-মাল ও সম্ভ্রমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সুতরাং আপনারাই জিহাদে লিপ্ত আছেন; আল্লাহ্ যেন আপনাদেরকে সাহায্য করেন। এবং আপনাদের জন্যই (বরং) মুজাহিদীনদের সওয়াব লেখা হবে মুসলিমদের শাসকের প্রতি আপনাদের আনুগত্যের জন্য। আপনাদের এই পেশা হচ্ছে একটি শ্রদ্ধার উপযুক্ত, মর্যাদাপূর্ণ পেশা, অত্যন্ত সম্মানিত। সুতরাং এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ রাখবেন না।
আর যে কিনা ফাতওয়া দেয় যে, "এসব কাজ (যা সন্ত্রাসীরা করে থাকে) হচ্ছে জিহাদ " কে বলে যে এসব জিহাদ? যেসব লোক এমন ফাতওয়া দেয় তারা কি নির্ভরযোগ্য, সম্মানিত নাকি তারা শুধুমাত্র সমর্থক এবং অনুসারী- মূর্খ লোকজন? এরা অবশ্যই আলেম নয়। এসব (সন্ত্রাসীদের কাজ) জিহাদ নয়। বরং এ হচ্ছে আল্লাহ্ এবং তার রাসুলের বিরুদ্ধে অপরাধ করা, মুসলিমরা যা পবিত্র বলে মনে করে তার বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন আর বাড়াবাড়ি এবং মুসলিমদের শাসকের আনুগত্যের ক্ষেত্রে বিদ্রোহ ও বিরুদ্ধাচরণ। এর প্রত্যেকটি জিনিস গুনাহ, কবিরা গুনাহ।
আল্লাহ্ যেন আমাদেরকে রক্ষা করেন। সুতরাং, এটা জিহাদের কোন প্রকার না। হ্যাঁ, এটা হচ্ছে শয়তানের জন্য জিহাদ করা, আল্লাহর জন্য নয় কেননা এটা মুসলিমদের ক্ষতি করে।
আর যদি অবিশ্বাসী কাফিরদের বের করে দেয়ার প্রসঙ্গে বলতে হয়- এটা তোমাদের কাজ না। কাফিরদের বহিস্কার করা হচ্ছে শাসকের সিদ্ধান্ত। (শাসক, রাজা, প্রেসিডেন্ট, ইত্যাদি) তিনিই হচ্ছেন সেই লোক যিনি তাদের সাথে চুক্তি করবেন, তাদেরকে কোন দেশের ভিতরে প্রবেশ করতে দিবেন জনগণের কোন সেবা বা উপকারের জন্য, এবং পরবর্তীতে তাদের সাথে চুক্তি সমাপ্ত করবেন যখন তাদের অবস্থান করার বেঁধে দেয়া সময় শেষ হয়ে আসবে। আর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছিলেন:
أَخْرِجُوْا اليَهُوْدَ مِنْ جَزِيْرَةِ العَرَب
“ইয়াহুদিদেরকে আরব ভূখণ্ড থেকে বের করে দাও।
[ বুখারী - ৩০৫৩ এবং মুসলিম - ১৭৬৭)
এই সিদ্ধান্ত ছিল শাসকদের উদ্দেশ্য করে দেয়া (এবং তা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য না) এই কারণে তাদের [সাহাবিদের ] কেউই তাদেরকে [ইয়াহুদীদেরকে ] বহিষ্কার করেননি উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ছাড়া।
এটা জনসাধারণের সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নেই যে, তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে কি না। অতএব, যিনি কাফেরদেরকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি হচ্ছেন কোন দেশের শাসক, ঠিক যেমন তিনি তাদের কাউকে দেশে প্রবেশের অনুমতিও দিতে পারেন; এটা হচ্ছে শাসকের দায়িত্ব। এবং তারা (অমুসলিমরা) আমাদের প্রয়োজন মিটানো ছাড়া অন্য কোন কারণে এখানে আসেনি এবং তারা বৈধ ভিসা নিয়ে এসেছে। তারা আমন্ত্রিত হয়ে এসেছে কোন না কোন কাজ করে দিতে সেটা হোক কোন দূতাবাসে, কোম্পানিতে অথবা অন্য কোথাও। তারা মুসলিমদের কাছে এসেছে তাদের সেবা করার জন্য। তাদেরকে (নিরাপত্তার) আশ্বাস দেয়া হয়েছে- যা এক প্রকারের চুক্তি। এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আইলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنّةِ وَإِنّ رِيْحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا
যে ব্যক্তি এমন কাউকে (অমুসলিমকে) হত্যা করবে যার সাথে নিরাপত্তার চুক্তি ছিল সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না অথচ এর সুঘ্রান চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে। [ বুখারী- ৩১৬৬ ]
এটা এক ভয়ানক হুমকি। সুতরাং যে ব্যক্তি এরকম কোন ফাতওয়া দিবে যে এসব (সন্ত্রাসীদের কাজকর্ম) হচ্ছে জিহাদ- সে কোন আলেম নয়; সে হয় কোন পথভ্রষ্ট আলেম ( যার কোন এক কালে ইলম ছিল) অথবা সে কোন গণ্ডমূর্খ, যে কি না আল্লাহর জন্য জিহাদ করা বলতে কি বুঝায় তা জানেইনা !
.
🔸তথ্যসুত্র:
আল ফাতাওয়া আশ শার'ইয়িয়্যাহ ফীল ক্বাদায়া আল 'আসরিয়্যাহ।[ الفتاوى الشرعية في القضايا العصرية]
🔸ভাষান্তর : ইছলাহ টিম।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
► আপনার যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন ও পরবর্তী আপডেট পেতে পেজটি লাইক দিয়ে রাখুন। কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।” [সহীহ মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪]
► আমাদের পোস্টগুলি কপিরাইট মুক্ত! সুতরাং আপনি চাইলে পেজের কনটেন্টগুলো হুবহু কপি করে ফেসবুক বা যেকোন মাধ্যমে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে পারেন বিনা অনুমতিতে।
জায্বাকুমুল্লাহ।
► ইছলাহ্'র সাথে, আগামীর পথে ...
► https://www.facebook.com/ichlah/
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
----------------------------------------------------------
উত্তর প্রদানে:
বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, ইমাম সালিহ বিন ফাওযান বিন ‘আব্দুল্লাহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ)।
.
🔸প্রশ্ন:
প্রশ্নকারী ঐ দলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছেন যারা বর্তমানে মুসলিমদেরকে ত্যাগ করেছে এবং তাদের বিরোধিতা করেছে। তারা বোমা হামলা ঘটায় আর মানুষদেরকে আতঙ্কিত করে যেখানে তারা একসময় নিরাপদ বোধ করত। এরা কি সত্যিই খাওয়ারিজদের অন্তর্ভুক্ত নাকি এরা কাফের?
.
🔸উত্তর:
এই দল মুসলিমদেরকে ত্যাগ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে- এ হচ্ছে আলেমদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখার পরিনাম। এর পরিণতি সম্পর্কে আমি এর আগের লেকচারের শেষভাগে বলেছি। তারা আলেমদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, মুসলিম শাসকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, এবং কাফেররা এবং মুনাফিকেরা এই সমস্ত আদর্শ তাদের মাথায় ঢুকিয়েছে। সুতরাং তারা মুসলিমদের সমাজ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে পরেছে। এরা খারেজী নিঃসন্দেহে। তাদের এই কাজ হচ্ছে খারেজীদের কাজ বরং তারা পূর্বেকার খাওয়ারিজদের থেকেও অধিক হিংস্র আর চরমপন্থি।
আগের দিনের খারেজীরা যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখি এসে দাঁড়াত। ওরা যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করত অজ্ঞতার উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকার পরেও। কিন্তু ওরা সমস্ত বাসিন্দা সহ বাড়িঘর ধসিয়ে দিত না- যেখানে মহিলা, শিশু, নিরপরাধ মানুষ, এবং ঐ সব লোক যারা মুসলিমদের কোন ক্ষতি করেনি, যাদের সাথে মুসলিমদের সন্ধি আছে, এবং অন্যান্যরা যাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে- এমন সব মানুষজন আছে।
পূর্বেকার খাওয়ারিজরা এরকম করত না, এ হচ্ছে [ বর্তমান খারেজীদের সন্ত্রাসী হামলা ] আরও খারাপ এবং পূর্বেকার খাওয়ারিজরা যা করত তার থেকেও বেশী হিংস্র। এসব কাজ বরং ‘কারামিতাহ’ (একটি অতিমাত্রায় হিংস্র, পথভ্রষ্ট ফিরকা) এর সাথে বেশী মিলে যায়।
তারা [ বর্তমান খারেজীরা ] কারামিতাহদের সাথেই অধিক মিল রাখে কেননা কারামিতাহদের কার্যক্রম হয় গোপনে, তারা গোপনীয়তা আর নিচুতার সাথে তাদের কাজকর্ম করে থাকে আর আজকের এই লোকগুলি যা করে তাও তারা গোপনেই করে। আগেকার দিনের খাওয়ারিজরা- তাদের কাজকর্ম গোপন আর লুকায়িত রাখত না। তারা নিজেদের পরিচয় এবং তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রচার করে বেড়াত, প্রকাশ করে দিত। সুতরাং এই লোকগুলি পূর্বকার খাওয়ারিজদের থেকেও নিকৃষ্ট।
.
🔸প্রশ্ন:
আপনি তরুণদের মধ্যে এমন কয়েকজনকে দেখবেন যারা বোমা হামলা এবং এরকম আরও যা কিছু ঘটেছে সেগুলিকে খারাপ মনে করে না, তারা এগুলোকে সমর্থন করে, অথবা এসব দলের কোন কোন কাজের পক্ষে কথা বলে! এদের হুকুম কি?
.
🔸উত্তর:
এরকম একজন ব্যক্তি দুইটি জিনিসের যেকোনো একটি হবে:
১. হয় সে অজ্ঞ :
জ্ঞানের অভাবের কারণে সে তাদের (সন্ত্রাসীদের) সম্পর্কে সু-ধারণা রাখছে। এবং এরকম ব্যক্তিদের কাছে আপনি তার ভুল ধরিয়ে দিবেন, এবং তার কাছে ব্যাখ্যা করবেন, যতক্ষণ না এদের [সন্ত্রাসীদের] সম্পর্কে তার ভুল ধারণা দূর হয়ে যাবে।
অথবা
২. সে তাদের একজন :
সে তাদের ধারণাগুলিকে সমর্থন করে। সে তাদের মতই একই জিনিস বিশ্বাস করে এবং তাদের ধারণাগুলিই বহন করে। তার কাছেও আপনি সত্যি কথাটা খুলে বলবেন, যাতে করে হয়ত সে ফিরে আসবে। যদি সে ফিরে না আসে (সত্যের দিকে), তাহলে তার অপরাধ তার উপরেই বর্তাবে। যদি না এমনটা প্রতীয়মান হয় যে, সে নিজেই শান্তি এবং নিরাপত্তা বিঘ্ন করতে পারে এবং অপর মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে পারে; সেক্ষেত্রে তার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা বাধ্যতামূলক হবে। যদি তার কাছ থেকে এমন কিছু আঁচ করা যায় যা শান্তি ও নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটাবে অথবা সে হয়তো অন্য মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করবে অথবা সে যদি তরুণদেরকে তার গোমরাহির দিকে আহ্বান করে, তাহলে তাকে অবশ্যই ধরিয়ে দিতে হবে বা তার ব্যাপারে তথ্য দিতে হবে যাতে তাকে থামানো যায়।
.
🔸প্রশ্ন :
সম্মানিত শায়েখ, আল্লাহ্ যেন আপনাকে সাফল্য দান করেন। আমরা হচ্ছি কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং আমরা চাচ্ছিলাম আপনার কাছে একটা প্রশ্ন রাখতে, যেহেতু আমাদেরকে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যারা এই দেশে অশান্তি তৈরি করে এবং শাসকের অবাধ্যতা করে। এবং আমরা একটা ফাতওয়া শুনতে পেয়েছি যা বলে যে এরকম লোকদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো এবং তাদের পিছু নেয়া এবং তাদের সাথে লড়াই করা এসব নিষিদ্ধ কারণ এরা হচ্ছে মুজাহিদীন (যারা জিহাদ করে), এবং এরা ঐসব কাফেরদেরকে বহিস্কার করতে চায় যারা অন্যান্য দেশ যেমন: ইরাকে মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করছে। সুতরাং এই ব্যাপারে সঠিক মতামত কি? আল্লাহ্ আপনাকে সফল করুন।
.
🔸উত্তর:
আল্লাহ্ যেন আপনাদেরকেও সাহায্য করেন। আপনারাই জিহাদ করছেন। আপনারা সবাই, আপনাদের কাজের দ্বারা জিহাদে লিপ্ত। কেননা এই কাজের দ্বারা আপনাদের সংকল্প হচ্ছে বাতিলের অনুসারীদের রোধ করা, শান্তি বজায় রাখা এবং মানুষের জান-মাল ও সম্ভ্রমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সুতরাং আপনারাই জিহাদে লিপ্ত আছেন; আল্লাহ্ যেন আপনাদেরকে সাহায্য করেন। এবং আপনাদের জন্যই (বরং) মুজাহিদীনদের সওয়াব লেখা হবে মুসলিমদের শাসকের প্রতি আপনাদের আনুগত্যের জন্য। আপনাদের এই পেশা হচ্ছে একটি শ্রদ্ধার উপযুক্ত, মর্যাদাপূর্ণ পেশা, অত্যন্ত সম্মানিত। সুতরাং এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ রাখবেন না।
আর যে কিনা ফাতওয়া দেয় যে, "এসব কাজ (যা সন্ত্রাসীরা করে থাকে) হচ্ছে জিহাদ " কে বলে যে এসব জিহাদ? যেসব লোক এমন ফাতওয়া দেয় তারা কি নির্ভরযোগ্য, সম্মানিত নাকি তারা শুধুমাত্র সমর্থক এবং অনুসারী- মূর্খ লোকজন? এরা অবশ্যই আলেম নয়। এসব (সন্ত্রাসীদের কাজ) জিহাদ নয়। বরং এ হচ্ছে আল্লাহ্ এবং তার রাসুলের বিরুদ্ধে অপরাধ করা, মুসলিমরা যা পবিত্র বলে মনে করে তার বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন আর বাড়াবাড়ি এবং মুসলিমদের শাসকের আনুগত্যের ক্ষেত্রে বিদ্রোহ ও বিরুদ্ধাচরণ। এর প্রত্যেকটি জিনিস গুনাহ, কবিরা গুনাহ।
আল্লাহ্ যেন আমাদেরকে রক্ষা করেন। সুতরাং, এটা জিহাদের কোন প্রকার না। হ্যাঁ, এটা হচ্ছে শয়তানের জন্য জিহাদ করা, আল্লাহর জন্য নয় কেননা এটা মুসলিমদের ক্ষতি করে।
আর যদি অবিশ্বাসী কাফিরদের বের করে দেয়ার প্রসঙ্গে বলতে হয়- এটা তোমাদের কাজ না। কাফিরদের বহিস্কার করা হচ্ছে শাসকের সিদ্ধান্ত। (শাসক, রাজা, প্রেসিডেন্ট, ইত্যাদি) তিনিই হচ্ছেন সেই লোক যিনি তাদের সাথে চুক্তি করবেন, তাদেরকে কোন দেশের ভিতরে প্রবেশ করতে দিবেন জনগণের কোন সেবা বা উপকারের জন্য, এবং পরবর্তীতে তাদের সাথে চুক্তি সমাপ্ত করবেন যখন তাদের অবস্থান করার বেঁধে দেয়া সময় শেষ হয়ে আসবে। আর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছিলেন:
أَخْرِجُوْا اليَهُوْدَ مِنْ جَزِيْرَةِ العَرَب
“ইয়াহুদিদেরকে আরব ভূখণ্ড থেকে বের করে দাও।
[ বুখারী - ৩০৫৩ এবং মুসলিম - ১৭৬৭)
এই সিদ্ধান্ত ছিল শাসকদের উদ্দেশ্য করে দেয়া (এবং তা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য না) এই কারণে তাদের [সাহাবিদের ] কেউই তাদেরকে [ইয়াহুদীদেরকে ] বহিষ্কার করেননি উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ছাড়া।
এটা জনসাধারণের সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নেই যে, তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে কি না। অতএব, যিনি কাফেরদেরকে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি হচ্ছেন কোন দেশের শাসক, ঠিক যেমন তিনি তাদের কাউকে দেশে প্রবেশের অনুমতিও দিতে পারেন; এটা হচ্ছে শাসকের দায়িত্ব। এবং তারা (অমুসলিমরা) আমাদের প্রয়োজন মিটানো ছাড়া অন্য কোন কারণে এখানে আসেনি এবং তারা বৈধ ভিসা নিয়ে এসেছে। তারা আমন্ত্রিত হয়ে এসেছে কোন না কোন কাজ করে দিতে সেটা হোক কোন দূতাবাসে, কোম্পানিতে অথবা অন্য কোথাও। তারা মুসলিমদের কাছে এসেছে তাদের সেবা করার জন্য। তাদেরকে (নিরাপত্তার) আশ্বাস দেয়া হয়েছে- যা এক প্রকারের চুক্তি। এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আইলিহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنّةِ وَإِنّ رِيْحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا
যে ব্যক্তি এমন কাউকে (অমুসলিমকে) হত্যা করবে যার সাথে নিরাপত্তার চুক্তি ছিল সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না অথচ এর সুঘ্রান চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে। [ বুখারী- ৩১৬৬ ]
এটা এক ভয়ানক হুমকি। সুতরাং যে ব্যক্তি এরকম কোন ফাতওয়া দিবে যে এসব (সন্ত্রাসীদের কাজকর্ম) হচ্ছে জিহাদ- সে কোন আলেম নয়; সে হয় কোন পথভ্রষ্ট আলেম ( যার কোন এক কালে ইলম ছিল) অথবা সে কোন গণ্ডমূর্খ, যে কি না আল্লাহর জন্য জিহাদ করা বলতে কি বুঝায় তা জানেইনা !
.
🔸তথ্যসুত্র:
আল ফাতাওয়া আশ শার'ইয়িয়্যাহ ফীল ক্বাদায়া আল 'আসরিয়্যাহ।[ الفتاوى الشرعية في القضايا العصرية]
🔸ভাষান্তর : ইছলাহ টিম।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
► আপনার যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন ও পরবর্তী আপডেট পেতে পেজটি লাইক দিয়ে রাখুন। কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।” [সহীহ মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪]
► আমাদের পোস্টগুলি কপিরাইট মুক্ত! সুতরাং আপনি চাইলে পেজের কনটেন্টগুলো হুবহু কপি করে ফেসবুক বা যেকোন মাধ্যমে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে পারেন বিনা অনুমতিতে।
জায্বাকুমুল্লাহ।
► ইছলাহ্'র সাথে, আগামীর পথে ...
► https://www.facebook.com/ichlah/
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
0 Comments