Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

ন্যায়নিষ্ঠ সালাফগণ (رحمهم الله) বিদ‘আতীদের কথাবার্তা শোনার ক্ষেত্রে খুবই কঠোর ছিলেন

ন্যায়নিষ্ঠ সালাফগণ (رحمهم الله) বিদ‘আতীদের কথাবার্তা শোনার ক্ষেত্রে খুবই কঠোর ছিলেন। নিম্নোক্ত আসার তিনটি বিদ‘আতীদের ব্যাপারে তাঁদের কঠোর অবস্থান এবং দ্বীনের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র শিথিল না হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করবে, ইনশাআল্লাহ।

১. আসমা বিন ‘উবাইদ (رحمه الله) [মৃত: ১৪১ হি.] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

دخل رجلان من أصحاب الأهواء على ابن سيرين فقالا: يا أبا بكر نحدثك بحديث؟ قال: لا، قالا: فنقرأ عليك آية من كتاب الله؟ قال: لا، لتقومان عني أو لأقومن. قال: فخرجا، فقال بعض القوم: يا أبا بكر، ما كان عليك أن يقرآ عليك آية من كتاب الله تعالى؟ قال: إني خشيت أن يقرآ علي آية فيحرفانها، فيقر ذلك في قلبي.

“দুজন বিদ‘আতী (তাবি‘ঈ বিদ্বান) ইবনু সীরীন (রাহিমাহুল্লাহ)’র [মৃত: ১১০ হি.] নিকট প্রবেশ করে বলল, ‘হে আবূ বাকার, আমরা আপনার কাছে একটি হাদীস বর্ণনা করি?’ তিনি বললেন, ‘না।’ তখন তারা দুজন বলল, ‘তাহলে আমরা আপনাকে আল্লাহ’র কিতাব থেকে একটি আয়াত পড়ে শোনাই?’ তিনি বললেন, ‘না; হয় তোমরা আমার নিকট থেকে উঠে চলে যাবে, অথবা আমি উঠে চলে যাব।’ বর্ণনাকারী বলছেন, তারা দুজন প্রস্থান করল। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, ‘হে আবূ বাকার, আপনার কী (ক্ষতি) হতো, যদি তারা দুজন আপনাকে আল্লাহ’র কিতাব থেকে একটি আয়াত পড়ে শোনাত?’ তিনি (ইবনু সীরীন) বললেন, ‘নিশ্চয় আমি আশঙ্কা করেছি যে, তারা দুজন আমার কাছে একটি আয়াত পড়বে, অতঃপর তারা সে আয়াতে বিকৃতি (তাহরীফ) সাধন করবে, ফলে তা আমার অন্তরে গেঁথে যাবে’।” [দারিমী, হা/৪১১; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: হুসাইন সালীম আসাদ); ইবনু বাত্বত্বাহ, আল-ইবানাহ; আসার নং: ৩৯৮; লালাকাঈ, শারহু উসূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ; আসার নং: ২৪২; আজুর্রী, আশ-শারী‘আহ; আসার নং: ৬২]

২. ইমাম সাল্লাম বিন আবূ মুত্বী‘ (رحمه الله) [মৃত: ১৭৩ হি.] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أن رجلا من أهل الأهواء قال لأيوب: يا أبا بكر، أسألك عن كلمة؟ قال: فولى وهو يشير بأصبعه ولا نصف كلمة. وأشار لنا سعيد بخنصره اليمنى.

“একজন বিদ‘আতী (তাবি‘ঈ বিদ্বান) আইয়ূব (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৩১ হি.] কে বলল, হে আবূ বাকার, আমি আপনাকে একটি শব্দ সম্পর্কে প্রশ্ন করি? বর্ণনাকারী বলছেন, তখন তিনি দ্রুত প্রস্থান করলেন। এমতাবস্থায় তিনি তাঁর আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলছিলেন, আধা শব্দও নয়। বর্ণনকারী সা‘ঈদ আমাদেরকে তাঁর ডান কনিষ্ঠা দিয়ে ইশারা করে দেখিয়েছেন।” [দারিমী, হা/৪১২; সনদ: সাহীহ (তাহক্বীক্ব: হুসাইন সালীম আসাদ); ইবনু বাত্বত্বাহ, আল-ইবানাহ; আসার নং: ৪০২; লালাকাঈ, শারহু উসূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ; আসার নং: ২৯১]

৩. শাইখুল ইসলাম ইমাম মা‘মার (رحمه الله) [মৃত: ১৫৩ হি.] বলেছেন,

كان ابن طاوس جالسًا فجاء رجل من المعتزلة فجعل يتكلم، قال فأدخل ابن طاوس أصبعيه في أذنيه، قال: وقال لإبنه: أي بني، أدخل أصبعيك في أذنيك وتشدد، ولا تسمع من كلامه شيئًا. قال معمر: يعني أن القلب ضعيف.

“একদা (তাবি‘ঈ বিদ্বান) ইবনু ত্বাউস [মৃত: ১৩২ হি.] উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক মু‘তাযিলী এসে কথা বলা শুরু করল। বর্ণনকারী বলছেন, তখন ইবনু ত্বাউস তাঁর দু’কানে দুই আঙুল প্রবেশ করালেন এবং তাঁর ছেলেকে বললেন, “হে বৎস, তুমি তোমার দু’কানে দুই আঙুল প্রবেশ করাও এবং চেপে ধরে থাকো, তুমি তাঁর সামান্য কথাও শুনো না।” মা‘মার (তাঁর এই কাজের ব্যাখ্যা দিয়ে) বলেছেন, ‘অর্থাৎ অন্তর খুবই দুর্বল (আমরা তার কথা শুনলে আমাদের অন্তরে তা গেঁথে যেতে পারে)’।” [ইবনু বাত্বত্বাহ, আল-ইবানাহ; আসার নং: ৪০০; লালাকাঈ, শারহু উসূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ; আসার নং: ২৪৮]

প্রিয় পাঠক, একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন। সালাফগণ বিদ‘আতীদের কথায় প্রভাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তাঁদের কথা শোনেননি। যাঁরা ছিলেন উম্মাহ’র শ্রেষ্ঠ ইমাম। তাঁরাই বিদ‘আতীদের কথায় প্রভাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন, তাহলে আমাদের অবস্থান কোথায়?! এরপরেও কি আমাদের এটা বলা সমীচীন হবে যে, আমরা বিদ‘আতীদের বইপুস্তক পড়ে এবং তাদের লেকচার ক্লিপস শুনে শুধু ভালোটাই নিব, মন্দটা নিব না?
·অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/SunniSalafiAthari

Post a Comment

0 Comments