Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

যেমন জনগণ, তেমন শাসক!-------"তোমরা যেমন চরিত্রের মানুষ হবে, তোমাদের শাসকও তেমন হবে"।

যেমন জনগণ, তেমন শাসক!

মানুষ যেই জিনিসকে আমাদের সময়ে ফিতনা মনে করে, ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) তার ব্যাপারে কথা বলে গেছেন, অর্থাৎ তিনি যে সময়ে বসবাস করতেন সেই সময়ের কথা, তবে কথাগুলি আমাদের সমসাময়িক ফিতনার বেলায়ও সমানভাবে প্রযোজ্য।

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু তা’আলা এই সৃষ্টিজগতে শাসক এবং শাসিত এর বেলায় কি রকম আচরণ করে থাকেন, সেই প্রসঙ্গে তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:

“এবং চিন্তা করে দেখ আল্লাহ্‌র প্রজ্ঞা সম্পর্কে, যখন তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকদেরকে তৈরি করলেন, তাদের শাসিত শ্রেণীর প্রতিফলন হিসাবে। যারা শাসিত হচ্ছে তাদেরই আমল যেন শাসকের আকৃতি এবং আমলরূপে আবির্ভূত হয়:

যদি শাসিতরা ন্যায়পরায়ন হয়ে থাকে, তাহলে তাদের শাসকেরাও ন্যায়পরায়ন হবে।

যদি শাসিতরা ন্যায়পরায়নতা থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে তাদের শাসকেরাও তাদের সাথে একই কাজ করবে।

যদি শাসিতরা সীমালঙ্ঘন করে এবং জুলুম করে, তাহলে তাদের শাসকেরাও তাদের সাথে একই কাজ করবে।

যদি শাসিতদের মধ্যে প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্র করার প্রবণতা দেখা দেয়, তাহলে তাদের শাসকদের মধ্যেও একই জিনিস ঘটে।

যদি শাসিতরা মানুষদের অধিকার কেড়ে নেয় এবং অন্যদেরকে তাদের অধিকার দেয়ার ব্যাপারে কার্পণ্য করে, তাহলে তাদের শাসকরাও তাদের সাথে একই কাজ করবে এবং তাদেরকেও তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে।

যদি শাসিতরা নিপীড়িত/দুর্বল মানুষদের কাছ থেকে এমন বস্তু নিয়ে নেয় যা তাদের সাথে লেনদেনের মাধ্যমে প্রাপ্য হয়নি, তাহলে তাদের শাসকেরাও শাসিতদের সম্পদের বেলায় এমনটাই করবে এবং এমন বস্তু নিয়ে নেবে যা তাদের প্রাপ্য নয়, এবং শাসিতদের উপর তারা বাড়তি কর এবং কাজ চাপিয়ে দেবে।

 এবং যখনই শাসিতরা মজলুম এবং দুর্বলদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে কিছু নিবে, তখন তাদের শাসকেরাও তাদের শাসিতদের সাথে ঐ একই আচরণ করবে এবং তাদের জিনিস জোর খাটিয়ে কেড়ে নিবে।

সুতরাং শাসিতদের কাজকর্মই শাসকদের কাজকর্ম হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে, এবং এটা আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু তা’আলা) এর ঐশ্বরিক প্রজ্ঞার সাথে মানানসই নয় যে তিনি অসৎ এবং অবাধ্য প্রকৃতির লোকদের উপর, কেবলমাত্র তাদের সমগোত্রীয় লোক ছাড়া অন্য কাউকে শাসনক্ষমতা দিবেন।

যেহেতু প্রথম প্রজন্মের লোকেরাই ছিল শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম এবং সবচাইতে ন্যায়পরায়ন লোকদের অন্তর্ভুক্ত, … তাই তাদের শাসকেরাও ছিলেন ন্যায়পরায়ন ।

 এটা আল্লাহ্‌র প্রজ্ঞার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় যে আমাদের সময়ে (ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ'র সময়ে) যারা আমাদের উপর শাসনককার্যের ভারপ্রাপ্ত তারা মুয়াবিয়া কিংবা উমার বিন আব্দুল আযিয (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) এর মত হবেন, অথবা আবু বক্কর

কিংবা উমার (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) এর মত হবেন। আমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছেন তারা তাদের অবস্থা এবং মর্যাদা অনুসারেই শাসক পেয়েছিলেন। উভয় ক্ষেত্রেই আল্লাহ্‌র প্রজ্ঞা মোতাবেক সবকিছু হচ্ছে”।

এমনটাই ছিল শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ'র) উপসংহার, তার নিজের সময়কালের সম্পর্কে (অর্থাৎ হিজরী ৮ম শতাব্দী)।

অতএব আমাদের এখনকার সময় সম্পর্কে [ শাসক ও জনগণের কার্যকলাপ দেখে ] আপনার কি মনে হয়?

এই নিবন্ধের সংকলক ড. সালেহ আস সালেহ হাফিয্বাহুল্লাহ বলেন -

"আল্লাহ্‌র জ্ঞান তার বৈশিষ্ট্যসমূহের সাথে সম্পৃক্ত! তিনি তার হিকমাহ অনুসারে প্রতিটি জিনিসকে তার নিজ জায়গায় বসান, যেখানে যেটা উপযুক্ত হয় সেই অনুযায়ী। আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলা'র জ্ঞানের এক মহান উদ্দেশ্য রয়েছে যা ত্রুটি বিচ্যুতির ঊর্ধ্বে। আর তাদের কথা যদি বলতে হয় যারা “মুক্তি” এর পথ বের করতে তাড়াহুড়া করে, এবং যারা শাসকদেরকে বিতাড়িত করাকেই তাদের সমস্যার সমাধান বলে মনে করে, তারা অসুখের লক্ষণকে অসুখ ভেবে ভুল করছে।

শুধুমাত্র শাসকদেরকে সমস্যার কারণ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে; যেখানে তারা [শাসকরা ] হচ্ছে শুধুমাত্র লক্ষণ। সত্যিকারের অসুখ হল শাসিত শ্রেণীর ভেতর।

এজন্যই, সমাধানে পৌঁছানোর সকল প্রচেষ্টা হওয়া উচিৎ যারা শাসিত হচ্ছে তাদেরকে কেন্দ্র করে। শাসিতদের আমল প্রতিফলিত হয় তাদের উপর ক্ষমতাপ্রাপ্ত শাসকদের আমলের মধ্যে। যেখানে লোকেরাই প্রস্তুত নয় এবং তারা আল্লাহ্‌র দ্বীন থেকে বহু দূরে সরে গিয়েছে, তখন আপনি তাদের শাসক হিসাবে কাকে প্রত্যাশা করবেন"?

গৃহীত :

http://turntoislam.com/.../blame-ourselves-or-blame-the.../

আমাদের রব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন -

"নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আর যখন আল্লাহ কোন জাতির মন্দ চান, তখন তা প্রতিহত করা যায় না এবং তাদের জন্য তিনি ছাড়া কোন অভিভাবক নেই।"

--[ সূরাঃ আর-রাদ, আয়াতঃ ১১ ]

অন্যত্র বলেন -

"এই শাস্তির কারণ এই যে, আল্লাহ যদি কোন জাতির উপর নি‘আমাত দান করেন সেই নি‘আমাত ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেননা, যতক্ষণ পর্যন্ত সেই জাতি নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।" -

--- [ সূরাঃ আল্-আনফাল, আয়াতঃ ৫৩ ]

অর্থাৎ যখন মানুষ নিজেদের অবস্থা অবাধ্যতা ও নাফরমানীতে পরিবর্তিত করে নেয়, তখন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লাও স্বীয় কর্মপন্থা পরিবর্তন করে দেন। এই পরিবর্তন হয় তারা নিজেরা করে, অথবা তাদের উপর যারা কর্তৃত্বশীল তারা করে, নতুবা তাদেরই মধ্যকার অন্যদের কারণে সেটা সংঘটিত হয়।

তাইতো বহুদিন পূর্বে বর্তমান জামানার শ্রেষ্ঠ ফ্বাকীহ, আশ শাইখুল আল্লামাহ, ইমাম সালিহ আল ফাউযান হাফিয্বাহুল্লাহ বলেছেন -

"তোমরা যেমন চরিত্রের মানুষ হবে, তোমাদের শাসকও তেমন হবে"।

অনুবাদক : আবু আবরার।

সম্পাদনা : আখতার বিন আমীর।

Editor by rasikulindia

হাদিস:

======

জাহান্নামের অধিবাসী হচ্ছে প্রত্যেক যারা শক্তিশালী, কঠোর, কর্কশ ভাষী ও অহংকারী।

[সিলসিলা ছাহীহাহ: ১৪৪৪]

আবু সা‘ঈদ খুদরী  (রা:)  বলেন, রাসূল(সা.)  বলেছেন:

ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নাম থেকে একটি গ্রীবা বা গলা বের হবে, সে কথা বলবে। সে বলবে, আজ তিন শ্রেণীর মানুষকে আমার নিকট সমর্পণ করা হয়েছে।

১. প্রত্যেক অহংকারী, স্বেচ্ছাচারী, অবাধ্য ও জেদী মানুষকে।

২. আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে মা‘বুদ হিসাবে গ্রহণ করত অর্থাৎ শিরক করত এবং

৩. আর যে ব্যক্তি মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল। তারপর জাহান্নাম তাদেরকে ঘিরে ধরবে এবং জাহান্নামের গভীরতায় নিক্ষেপ করবে।

[সিলসিলা ছাহীহাহ: ১৫২৩]

জাহান্নাম উক্ত তিন শ্রেণীর মানুষের সাথে কথা বলবে এবং তাদের ঘিরে ধরে জাহান্নামের গভীরতায় নিক্ষেপ করবে।

'জাহান্নামীরা হলো অবাধ্য/কুখ্যাত, বদমেজাজী/রূঢ় স্বভাবের, কঠিন হৃদয়ের ও অহংকারী।

[সহীহুল বুখারী: ৪৯১৮, ৬৬৫৭, ৬০৭১; সহীহ মুসলিম: ৭০৭৯, ৭০৮১]

অহংকারীরা চিরকালের জন্য জাহান্নামী:

============================

ইলম-আমল, জ্ঞান-গরিমা, অর্থ-সম্পদ, ইজ্জত-সম্মান, প্রভাব-প্রতিপত্তি, বংশমর্যাদা, ইবাদত-উপাসনা ইত্যাদি যে কোনো বিষয়ে নিজেকে বড় মনে করা এবং অন্যকে তুচ্ছ ও নগণ্য মনে করাকে অহংকার বলা হয়।

মহান আল্লাহ বলেছেনঃ

‘অহংকারকারীদের বলা হবে, তোমরা জাহান্নামে প্রবেশ করো; চিরকাল অবস্থানের জন্য। কতই না নিকৃষ্ট অহংকারীদের আবাস্থল।’

[সূরা যুমার; আয়াত: ৩৯:৭২; লো

Post a Comment

0 Comments