প্রশ্ন :-- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি সালাত ও সালামের অর্থ কি? উত্তম দুরুদ কোনটি?


প্রশ্ন :-- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি সালাত ও সালামের অর্থ কি? উত্তম দুরুদ কোনটি?
~~~
{আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।
সূরা আল আহযাব:56 }
শাইখ এ কথাটার অর্থ কি? সব চেয়ে ছোটো দরুদ কোনটা যা কিনা সব সময় পরা সহজ হবে।
================================
উত্তর : আল্লাহ বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا 
নিশ্চয় আল্লাহ ও ফিরিশতাগণ নবীর প্রতি সলাত পেশ করে। হে ঈমানদারগণ তোমরা তার প্রতি সালাত ও সালাম পেশ করো। (সূরা আহযাব: ৩৩)
শাব্দিক দৃষ্টিকোন থেকে সালাম অর্থ: শান্তি, আর সালাত অর্থ: রহমত।
কিন্তু উক্ত আয়াতে উল্লেখিত সালাতের অর্থের ব্যাপারে দুটি মত পাওয়া যায়:
🔵 ১) একদল আলিমের মতে:
🔶 আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীর প্রতি সালাত পেশ করার অর্থ: তার প্রতি রহমত বর্ষণ করা
🔶 ফেরেশতা মণ্ডলীর পক্ষ থেকে এর অর্থ: আল্লাহর নিক ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা।
🔶 মানব মণ্ডলীর পক্ষ থেকে এর অর্থ: (রহমত বর্ষণ ও ক্ষমার জন্য) দুয়া করা।
🔵 তবে অন্য একটি অর্থ বর্ণনা করেছন অন্য আলেমগণ। তা হল, 
আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীর প্রতি সালাত অর্থ: নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাদের উচ্চ পরিষদে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রশংসা করা
আর ফেরেশতা ও সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে এর অর্থ: দুয়া করা। অর্থাৎ এই দুয়া করা যে, আল্লাহ তাআলা যেন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাদের উচ্চ পরিষদে তার নবীর প্রশংসা করেন।
(এই মত ব্যক্ত করেছেন পূর্ববর্তীদের থেকে আবুল আলিয়া আর পরবর্তীদের থেকে ইবনুল কায়্যেম, উসাইমীন প্রমুখ)
👉 আমাদের উচিৎ সংক্ষিপ্ত দুরুদ না খুঁজে উত্তম দুরুদ খোঁজা। আর সবচেয়ে উত্তম দুরুদ দুরুদে ইবরাহীম। যেমন 
*ইমাম বুখারী (রহঃ) কা’ব ইবনে উযরাহ (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আপনাকে সালাম করতে তো আমরা জানি কিন্তু আপনার উপর সালাত বা দুরুদ পাঠ কেমন? তখন রাসুল (সাঃ) সাহাবাদের দুরুদ শিক্ষা দিলেনঃ*
*আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া’আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া’আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া’আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া’আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”। (বুখারী, মিশকাত পৃঃ ৮৬, হা/৯১৯)*
অর্থ: “ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত সম্মানিত।”
★একসাথে একই বাক্যের মধ্যে সালাত ও সালাম উভয়টি উল্লেখিত হয়েছে এমন কোন হাদীস বর্ণিত হয় নি (আমার জানা মতে)। কিন্তু যুগে যুগে আলিমগণ একসাথে বিভিন্ন বাক্যে রাসূল সা. এর প্রতি সালাত ও সালাম পেশ করেছেন। যেমন, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা আসসালাতু আস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ...ইত্যাদি। সুতরাং একসাথে আমরাও এগুলো বলতে পারি। ইনশাআল্লাহ এতে কোন সমস্যা নেই।
উত্তর দিয়েছেন শাইখ Abdullahil Hadi

Post a Comment

0 Comments