▌মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানি দেওয়ার বিধান
·সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সাবেক সদস্য, বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ, আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১
খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
السؤال: هل تشرع الأضحية عن الأموات؟
الجواب: الأضحية ليست للأموات، الأضحية للأحياء، وليست بسنة للأموات، ودليل ذلك: أن الشرع إنما يأتي من عند الله عز وجل ورسوله - صلى الله عليه وسلم -، والذي جاءت به السنة هي الأضحية عن الأحياء، فالنبي - صلى الله عليه وسلم - مات له أقارب ولم يضحِّ عنهم، كل أولاده توفُّوا قبله عليه الصلاة والسلام، منهم الذي بلغ الحُلُم، ومنهم من لم يبلغ الحلم، فأبناؤه ماتوا قبل أن يبلغوا الحلم، وبناته مِتْنَ بعد أن بلَغْنَ الحُلُم، إلا فاطمة- رضي الله عنها-، فقد بقيت بعده، ومات له زوجتان: خديجة، وزينب بنت خزيمة- رضي الله عنهما-، ولم يضحِّ عنهما، واستشهد عمُّه حمزة بن عبد المطلب- رضي الله عنه- ولم يضحِّ عنه، فهو عليه الصلاة والسلام لم يشرع الأضحية عن الميت، ولم يدعُ أمَّته إلى ذلك.
وعلى هذا فنقول: ليس من السنة أن يُضحَّى عن الميت؟ لأن ذلك لم يرد عن النبي - صلى الله عليه وسلم -، ولا علمته واردًا عن الصحابة أيضًا، نعم إذا أوصى الميت أن يضحَّى عنه فهنا تُتبع وصيته ويَضحى عنه، اتباعًا لوصيته، وكذلك إذا دخل الميت مع الأحياء ضمنًا كأن يضحي الإنسان عنه وعن أهل بيته، وينوي بذلك الأحياء والأموات، وأما أن يُفردَ الميت بأضحية من عنده، فهذا ليس من السنة.
প্রশ্ন: “মৃত
ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে কুরবানি করা কি শরিয়তসম্মত?”
উত্তর:
“কুরবানি মৃতদের জন্য নয়। কুরবানি জীবিতদের জন্য। মৃতদের তরফ থেকে কুরবানি করা
সুন্নাত নয়। এর দলিল হলো—শরিয়ত এসেছে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ﷺ নিকট থেকে, আর রাসূলের
সুন্নাহ’য় কেবল জীবিতের পক্ষ থেকে কুরবানি করার কথা বর্ণিত হয়েছে। নাবী ﷺ এর আত্মীয়স্বজন মারা গেছেন, কিন্তু তাঁদের পক্ষ থেকে কুরবানি করেননি। তিনি মারা যাওয়ার আগেই তাঁর ﷺ সকল সন্তান মারা গেছে। তাঁদের কেউ
কেউ সাবালক হয়েছিলেন, আবার কেউ কেউ সাবালক হওয়ার পূর্বেই মারা গেছেন। তাঁর সকল ছেলে সন্তান সাবালক
হওয়ার পূর্বেই মারা গেছেন।
আর তাঁর সকল
কন্যাসন্তান সাবালিকা হওয়ার পর মারা গেছেন। কেবল ফাত্বিমাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা)
ব্যতীত; তিনি তাঁর ﷺ মৃত্যুর
পরেও জীবিত ছিলেন। তিনি ﷺ তাঁর
জীবদ্দশায় দুজন স্ত্রীকে হারান। তাঁরা হলেন খাদীজাহ ও যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ
(রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)। কিন্তু তিনি তাঁদের দুজনের তরফ থেকে কুরবানি করেননি।
তাঁর চাচা হামযাহ বিন ‘আব্দুল মুত্বত্বালিব (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) শহিদ হয়েছেন
তাঁর জীবদ্দশায়, কিন্তু তিনি তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানি করেননি। আসলে তিনি ﷺ মৃত ব্যক্তির তরফ থেকে কুরবানি
করাকে শরিয়ত হিসেবে প্রণয়ন করেননি এবং স্বীয় উম্মতকে এই কাজের দিকে আহ্বানও করেননি।
এরই ভিত্তিতে
আমরা বলি, মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানি করা সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা এটা নাবী
ﷺ থেকে বর্ণিত হয়নি। আর আমি
সাহাবীদের থেকেও এমন কাজের বর্ণনা আছে বলে জানি না। হ্যাঁ, মৃত ব্যক্তি যদি কুরবানি করার অছিয়ত করে যায়, তাহলে তাঁর
অছিয়ত পালন করা হবে এবং তাঁর অছিয়ত পালন করার জন্য তাঁর তরফ থেকে কুরবানি করা হবে।
অনুরূপভাবে মৃত ব্যক্তি যখন জীবিতদের আওয়াতাভুক্ত হন, তখনও তাঁর তরফ থেকে কুরবানি করা হয়ে যায়। যেমন কোনো ব্যক্তি তার নিজের তরফ
থেকে এবং তার পরিবারের তরফ থেকে কুরবানি করে, আর এর মাধ্যমে
(পরিবারের) জীবিত-মৃত সকল সদস্যের কথা নিয়াত করে। পক্ষান্তরে এককভাবে মৃত ব্যক্তির
পক্ষ থেকে কুরবানি করা সুন্নাহসম্মত নয়।”
·তথ্যসূত্র:
ইমাম ‘উসাইমীন
(রাহিমাহুল্লাহ), মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, খণ্ড: ২৫; পৃষ্ঠা: ১০-১১; দারুস সুরাইয়্যা, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৯ হি./২০০৮ খ্রি. (১ম প্রকাশ)।
অনুবাদক:
মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/SunniSalafiAthari
0 Comments