Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

সুরা আল ইমরান 149 থেকে 168

 তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই. আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
 সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে তাফসীর ফাতহুল মাজীদ উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর তত্ত্বাবধানে সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারীস্বহীহ মুসলিমসুনান আবূ দাউদসুনান তিরমিযিসুনান নাসাঈসুনান ইবনে মাজাহমুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণমজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱

সুরার নাম-আল ইমরান_(ইমরানের পরিবার) মোট- ২০০ সুরার ধরন- মাদানি ।
3:149
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تُطِیۡعُوا الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا یَرُدُّوۡکُمۡ عَلٰۤی اَعۡقَابِکُمۡ فَتَنۡقَلِبُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۱۴۹

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৪৯-১৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করা থেকে সতর্ক করছেন। যদি তাদের অনুসরণ কর তা হলে তোমাদেরকে তারা পশ্চাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলার এ ভবিষ্যতবাণীর বাস্তবতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী সর্বত্র মুমিনরা আজ ক্ষতিগ্রস্ত। এর কারণ হলো তারা মুমিন হওয়া সত্ত্বেও অমুসলিমদের অনুসরণে জীবন যাপন করছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি সর্বত্রই অমুসলিমদের অনুসরণ করার ফলে সর্বত্র ক্ষতিগ্রস্থ। এ অবস্থা হতে মুক্তি পেতে হলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পূর্ণ ইসলামী জীবনে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিপূর্ণভাবে ইসলামের দিকে ফিরে আসার তাওফীক দান করুন, আমীন।

(
سَنُلْقِيْ فِيْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الرُّعْبَ)
যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি অতি সত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করবরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে পাঁচটি জিনিস প্রদান করা হয়েছে যা আমার পূর্ববর্তী কোন নাবীকে প্রদান করা হয়নি। ১. শত্ররা এক মাসের দূর থেকে আমাকে ভয় করবে- এ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। ২. আমার জন্য সারা পৃথিবী মাসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম করে দেয়া হয়েছে। ৩. আমার জন্য গনীমতের মাল বৈধ করে দেয়া হয়েছে। ৪. আমাকে শাফাআত করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ৫. প্রত্যেক নাবীকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ে প্রেরণ করা হয়েছিল আর আমাকে সারা পৃথিবীর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৩৮)

(
وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللّٰهُ وَعْدَه۫)
আর (উহুদের ময়দানে) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন।ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সাহায্যের ওয়াদা দিয়েছিলেন। বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বের হলে আবদুল্লাহ বিন জুবাইরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তীরন্দাজ বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করে এক জায়গায় তাদেরকে মোতায়েন করলেন এবং বললেন, সর্বাবস্থায় তোমরা এখানে অবস্থান করবে। যদি তোমরা দেখ যে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা জয় লাভ করেছি তখনও এখান থেকে নড়বে না। কিংবা যদি দেখো যে, আমাদের ওপর তারা (মুশরিকরা) বিজয়ী হয়েছে তবুও তোমরা আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য এ স্থান ত্যাগ করবে না। অতঃপর তাদের সাথে আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম। তারা পরাজিত হয়ে পালাতে শুরু করল। এমনকি আমরা দেখতে পেলাম মুশরিকদের মেয়েরা দৌড়ে দৌড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছার ওপর থেকে টেনে তোলায় পায়ের নলগুলো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আবুদল্লাহ বিন জুবাইয়ের নেতৃত্ত্বাধীন তীরন্দাজ বাহিনীর লোকেরা ঐ সময় বলতে শুরু করল, হে সাথীরা! চল গনীমত সংগ্রহ করি। আবদুল্লাহ (রাঃ) তীরন্দাজদেরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিলেন। কিন্তু সবাই তা অমান্য করল ফলে বিজয় পরাজয়ে রূপ নিল এবং সত্তরজন শহীদ হলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৭৪১)
إِذْ تُصْعِدُوْنَ
কাফিরদের হঠাৎ আক্রমণের ফলে মুসলিমদের মধ্যে যে ছত্রভঙ্গ অবস্থা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং তাদের অনেকেই যে ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান এখানে করুণ সেই চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।
(
وَّالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ فِيْٓ أُخْرَاكُمْ)
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কিছু সাথীসহ পিছনে ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ডাক দিয়ে বলছিলেন, “আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। কিন্তু সে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে তাঁর ডাক কে শুনে?
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নেতার শরীয়তসম্মত নির্দেশ অমান্য করলে ফলাফল ভাল হয় না; এটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
২. মুশরিকদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা সর্বদা মুমিনদের ভয় বদ্ধমূল করে রেখেছেন।
৩. মুসলিমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের গুরুত্ব না দেয়ার ফলে এ অনাকাক্সিক্ষত অবস্থার সৃষ্টি হয়।
3:150
بَلِ اللّٰہُ مَوۡلٰىکُمۡ ۚ وَ ہُوَ خَیۡرُ النّٰصِرِیۡنَ ﴿۱۵۰

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৪৯-১৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করা থেকে সতর্ক করছেন। যদি তাদের অনুসরণ কর তা হলে তোমাদেরকে তারা পশ্চাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলার এ ভবিষ্যতবাণীর বাস্তবতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী সর্বত্র মুমিনরা আজ ক্ষতিগ্রস্ত। এর কারণ হলো তারা মুমিন হওয়া সত্ত্বেও অমুসলিমদের অনুসরণে জীবন যাপন করছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি সর্বত্রই অমুসলিমদের অনুসরণ করার ফলে সর্বত্র ক্ষতিগ্রস্থ। এ অবস্থা হতে মুক্তি পেতে হলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পূর্ণ ইসলামী জীবনে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিপূর্ণভাবে ইসলামের দিকে ফিরে আসার তাওফীক দান করুন, আমীন।

(
سَنُلْقِيْ فِيْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الرُّعْبَ)
যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি অতি সত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করবরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে পাঁচটি জিনিস প্রদান করা হয়েছে যা আমার পূর্ববর্তী কোন নাবীকে প্রদান করা হয়নি। ১. শত্ররা এক মাসের দূর থেকে আমাকে ভয় করবে- এ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। ২. আমার জন্য সারা পৃথিবী মাসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম করে দেয়া হয়েছে। ৩. আমার জন্য গনীমতের মাল বৈধ করে দেয়া হয়েছে। ৪. আমাকে শাফাআত করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ৫. প্রত্যেক নাবীকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ে প্রেরণ করা হয়েছিল আর আমাকে সারা পৃথিবীর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৩৮)
(
وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللّٰهُ وَعْدَه۫)
আর (উহুদের ময়দানে) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন।ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সাহায্যের ওয়াদা দিয়েছিলেন। বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বের হলে আবদুল্লাহ বিন জুবাইরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তীরন্দাজ বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করে এক জায়গায় তাদেরকে মোতায়েন করলেন এবং বললেন, সর্বাবস্থায় তোমরা এখানে অবস্থান করবে। যদি তোমরা দেখ যে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা জয় লাভ করেছি তখনও এখান থেকে নড়বে না। কিংবা যদি দেখো যে, আমাদের ওপর তারা (মুশরিকরা) বিজয়ী হয়েছে তবুও তোমরা আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য এ স্থান ত্যাগ করবে না। অতঃপর তাদের সাথে আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম। তারা পরাজিত হয়ে পালাতে শুরু করল। এমনকি আমরা দেখতে পেলাম মুশরিকদের মেয়েরা দৌড়ে দৌড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছার ওপর থেকে টেনে তোলায় পায়ের নলগুলো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আবুদল্লাহ বিন জুবাইয়ের নেতৃত্ত্বাধীন তীরন্দাজ বাহিনীর লোকেরা ঐ সময় বলতে শুরু করল, হে সাথীরা! চল গনীমত সংগ্রহ করি। আবদুল্লাহ (রাঃ) তীরন্দাজদেরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিলেন। কিন্তু সবাই তা অমান্য করল ফলে বিজয় পরাজয়ে রূপ নিল এবং সত্তরজন শহীদ হলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৭৪১)

إِذْ تُصْعِدُوْنَ

কাফিরদের হঠাৎ আক্রমণের ফলে মুসলিমদের মধ্যে যে ছত্রভঙ্গ অবস্থা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং তাদের অনেকেই যে ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান এখানে করুণ সেই চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।
(
وَّالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ فِيْٓ أُخْرَاكُمْ)
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কিছু সাথীসহ পিছনে ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ডাক দিয়ে বলছিলেন, “আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। কিন্তু সে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে তাঁর ডাক কে শুনে?
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নেতার শরীয়তসম্মত নির্দেশ অমান্য করলে ফলাফল ভাল হয় না; এটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
২. মুশরিকদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা সর্বদা মুমিনদের ভয় বদ্ধমূল করে রেখেছেন।
৩. মুসলিমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের গুরুত্ব না দেয়ার ফলে এ অনাকাক্সিক্ষত অবস্থার সৃষ্টি হয়।
3:151
سَنُلۡقِیۡ فِیۡ قُلُوۡبِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوا الرُّعۡبَ بِمَاۤ اَشۡرَکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا ۚ وَ مَاۡوٰىہُمُ النَّارُ ؕ وَ بِئۡسَ مَثۡوَی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۵۱

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৪৯-১৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করা থেকে সতর্ক করছেন। যদি তাদের অনুসরণ কর তা হলে তোমাদেরকে তারা পশ্চাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলার এ ভবিষ্যতবাণীর বাস্তবতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী সর্বত্র মুমিনরা আজ ক্ষতিগ্রস্ত। এর কারণ হলো তারা মুমিন হওয়া সত্ত্বেও অমুসলিমদের অনুসরণে জীবন যাপন করছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি সর্বত্রই অমুসলিমদের অনুসরণ করার ফলে সর্বত্র ক্ষতিগ্রস্থ। এ অবস্থা হতে মুক্তি পেতে হলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পূর্ণ ইসলামী জীবনে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিপূর্ণভাবে ইসলামের দিকে ফিরে আসার তাওফীক দান করুন, আমীন।
(
سَنُلْقِيْ فِيْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الرُّعْبَ)
যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি অতি সত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করবরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে পাঁচটি জিনিস প্রদান করা হয়েছে যা আমার পূর্ববর্তী কোন নাবীকে প্রদান করা হয়নি। ১. শত্ররা এক মাসের দূর থেকে আমাকে ভয় করবে- এ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। ২. আমার জন্য সারা পৃথিবী মাসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম করে দেয়া হয়েছে। ৩. আমার জন্য গনীমতের মাল বৈধ করে দেয়া হয়েছে। ৪. আমাকে শাফাআত করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ৫. প্রত্যেক নাবীকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ে প্রেরণ করা হয়েছিল আর আমাকে সারা পৃথিবীর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৩৮)
(
وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللّٰهُ وَعْدَه۫)
আর (উহুদের ময়দানে) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন।ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সাহায্যের ওয়াদা দিয়েছিলেন। বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বের হলে আবদুল্লাহ বিন জুবাইরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তীরন্দাজ বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করে এক জায়গায় তাদেরকে মোতায়েন করলেন এবং বললেন, সর্বাবস্থায় তোমরা এখানে অবস্থান করবে। যদি তোমরা দেখ যে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা জয় লাভ করেছি তখনও এখান থেকে নড়বে না। কিংবা যদি দেখো যে, আমাদের ওপর তারা (মুশরিকরা) বিজয়ী হয়েছে তবুও তোমরা আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য এ স্থান ত্যাগ করবে না। অতঃপর তাদের সাথে আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম। তারা পরাজিত হয়ে পালাতে শুরু করল। এমনকি আমরা দেখতে পেলাম মুশরিকদের মেয়েরা দৌড়ে দৌড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছার ওপর থেকে টেনে তোলায় পায়ের নলগুলো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আবুদল্লাহ বিন জুবাইয়ের নেতৃত্ত্বাধীন তীরন্দাজ বাহিনীর লোকেরা ঐ সময় বলতে শুরু করল, হে সাথীরা! চল গনীমত সংগ্রহ করি। আবদুল্লাহ (রাঃ) তীরন্দাজদেরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিলেন। কিন্তু সবাই তা অমান্য করল ফলে বিজয় পরাজয়ে রূপ নিল এবং সত্তরজন শহীদ হলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৭৪১)

إِذْ تُصْعِدُوْنَ
কাফিরদের হঠাৎ আক্রমণের ফলে মুসলিমদের মধ্যে যে ছত্রভঙ্গ অবস্থা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং তাদের অনেকেই যে ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান এখানে করুণ সেই চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।
(
وَّالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ فِيْٓ أُخْرَاكُمْ)
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কিছু সাথীসহ পিছনে ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ডাক দিয়ে বলছিলেন, “আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। কিন্তু সে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে তাঁর ডাক কে শুনে?
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নেতার শরীয়তসম্মত নির্দেশ অমান্য করলে ফলাফল ভাল হয় না; এটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
২. মুশরিকদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা সর্বদা মুমিনদের ভয় বদ্ধমূল করে রেখেছেন।
৩. মুসলিমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের গুরুত্ব না দেয়ার ফলে এ অনাকাক্সিক্ষত অবস্থার সৃষ্টি হয়।
3:152
وَ لَقَدۡ صَدَقَکُمُ اللّٰہُ وَعۡدَہٗۤ اِذۡ تَحُسُّوۡنَہُمۡ بِاِذۡنِہٖ ۚ حَتّٰۤی اِذَا فَشِلۡتُمۡ وَ تَنَازَعۡتُمۡ فِی الۡاَمۡرِ وَ عَصَیۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَرٰىکُمۡ مَّا تُحِبُّوۡنَ ؕ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرِیۡدُ الدُّنۡیَا وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرِیۡدُ الۡاٰخِرَۃَ ۚ ثُمَّ صَرَفَکُمۡ عَنۡہُمۡ لِیَبۡتَلِیَکُمۡ ۚ وَ لَقَدۡ عَفَا عَنۡکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ ذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۵۲

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৪৯-১৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:

আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করা থেকে সতর্ক করছেন। যদি তাদের অনুসরণ কর তা হলে তোমাদেরকে তারা পশ্চাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলার এ ভবিষ্যতবাণীর বাস্তবতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী সর্বত্র মুমিনরা আজ ক্ষতিগ্রস্ত। এর কারণ হলো তারা মুমিন হওয়া সত্ত্বেও অমুসলিমদের অনুসরণে জীবন যাপন করছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি সর্বত্রই অমুসলিমদের অনুসরণ করার ফলে সর্বত্র ক্ষতিগ্রস্থ। এ অবস্থা হতে মুক্তি পেতে হলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পূর্ণ ইসলামী জীবনে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিপূর্ণভাবে ইসলামের দিকে ফিরে আসার তাওফীক দান করুন, আমীন।
(
سَنُلْقِيْ فِيْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الرُّعْبَ)
যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি অতি সত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করবরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে পাঁচটি জিনিস প্রদান করা হয়েছে যা আমার পূর্ববর্তী কোন নাবীকে প্রদান করা হয়নি। ১. শত্ররা এক মাসের দূর থেকে আমাকে ভয় করবে- এ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। ২. আমার জন্য সারা পৃথিবী মাসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম করে দেয়া হয়েছে। ৩. আমার জন্য গনীমতের মাল বৈধ করে দেয়া হয়েছে। ৪. আমাকে শাফাআত করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ৫. প্রত্যেক নাবীকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ে প্রেরণ করা হয়েছিল আর আমাকে সারা পৃথিবীর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৩৮)
(
وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللّٰهُ وَعْدَه۫)
আর (উহুদের ময়দানে) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন।ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সাহায্যের ওয়াদা দিয়েছিলেন। বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বের হলে আবদুল্লাহ বিন জুবাইরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তীরন্দাজ বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করে এক জায়গায় তাদেরকে মোতায়েন করলেন এবং বললেন, সর্বাবস্থায় তোমরা এখানে অবস্থান করবে। যদি তোমরা দেখ যে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা জয় লাভ করেছি তখনও এখান থেকে নড়বে না। কিংবা যদি দেখো যে, আমাদের ওপর তারা (মুশরিকরা) বিজয়ী হয়েছে তবুও তোমরা আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য এ স্থান ত্যাগ করবে না। অতঃপর তাদের সাথে আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম। তারা পরাজিত হয়ে পালাতে শুরু করল। এমনকি আমরা দেখতে পেলাম মুশরিকদের মেয়েরা দৌড়ে দৌড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছার ওপর থেকে টেনে তোলায় পায়ের নলগুলো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আবুদল্লাহ বিন জুবাইয়ের নেতৃত্ত্বাধীন তীরন্দাজ বাহিনীর লোকেরা ঐ সময় বলতে শুরু করল, হে সাথীরা! চল গনীমত সংগ্রহ করি। আবদুল্লাহ (রাঃ) তীরন্দাজদেরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিলেন। কিন্তু সবাই তা অমান্য করল ফলে বিজয় পরাজয়ে রূপ নিল এবং সত্তরজন শহীদ হলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৭৪১)

إِذْ تُصْعِدُوْنَ

কাফিরদের হঠাৎ আক্রমণের ফলে মুসলিমদের মধ্যে যে ছত্রভঙ্গ অবস্থা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং তাদের অনেকেই যে ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান এখানে করুণ সেই চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।
(
وَّالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ فِيْٓ أُخْرَاكُمْ)
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কিছু সাথীসহ পিছনে ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ডাক দিয়ে বলছিলেন, “আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। কিন্তু সে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে তাঁর ডাক কে শুনে?

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নেতার শরীয়তসম্মত নির্দেশ অমান্য করলে ফলাফল ভাল হয় না; এটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
২. মুশরিকদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা সর্বদা মুমিনদের ভয় বদ্ধমূল করে রেখেছেন।
৩. মুসলিমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের গুরুত্ব না দেয়ার ফলে এ অনাকাক্সিক্ষত অবস্থার সৃষ্টি হয়।
3:153
اِذۡ تُصۡعِدُوۡنَ وَ لَا تَلۡوٗنَ عَلٰۤی اَحَدٍ وَّ الرَّسُوۡلُ یَدۡعُوۡکُمۡ فِیۡۤ اُخۡرٰىکُمۡ فَاَثَابَکُمۡ غَمًّۢا بِغَمٍّ لِّکَیۡلَا تَحۡزَنُوۡا عَلٰی مَا فَاتَکُمۡ وَ لَا مَاۤ اَصَابَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۵۳

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৪৯-১৫৩ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কাফির ও মুনাফিকদের অনুসরণ করা থেকে সতর্ক করছেন। যদি তাদের অনুসরণ কর তা হলে তোমাদেরকে তারা পশ্চাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।

আল্লাহ তাআলার এ ভবিষ্যতবাণীর বাস্তবতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী সর্বত্র মুমিনরা আজ ক্ষতিগ্রস্ত। এর কারণ হলো তারা মুমিন হওয়া সত্ত্বেও অমুসলিমদের অনুসরণে জীবন যাপন করছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি সর্বত্রই অমুসলিমদের অনুসরণ করার ফলে সর্বত্র ক্ষতিগ্রস্থ। এ অবস্থা হতে মুক্তি পেতে হলে কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পূর্ণ ইসলামী জীবনে ফিরে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিপূর্ণভাবে ইসলামের দিকে ফিরে আসার তাওফীক দান করুন, আমীন।

(
سَنُلْقِيْ فِيْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الرُّعْبَ)
যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি অতি সত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করবরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে পাঁচটি জিনিস প্রদান করা হয়েছে যা আমার পূর্ববর্তী কোন নাবীকে প্রদান করা হয়নি। ১. শত্ররা এক মাসের দূর থেকে আমাকে ভয় করবে- এ দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। ২. আমার জন্য সারা পৃথিবী মাসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম করে দেয়া হয়েছে। ৩. আমার জন্য গনীমতের মাল বৈধ করে দেয়া হয়েছে। ৪. আমাকে শাফাআত করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ৫. প্রত্যেক নাবীকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ে প্রেরণ করা হয়েছিল আর আমাকে সারা পৃথিবীর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৩৮)
(
وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللّٰهُ وَعْدَه۫)
আর (উহুদের ময়দানে) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন।ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সাহায্যের ওয়াদা দিয়েছিলেন। বারা বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের দিন আমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বের হলে আবদুল্লাহ বিন জুবাইরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তীরন্দাজ বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করে এক জায়গায় তাদেরকে মোতায়েন করলেন এবং বললেন, সর্বাবস্থায় তোমরা এখানে অবস্থান করবে। যদি তোমরা দেখ যে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা জয় লাভ করেছি তখনও এখান থেকে নড়বে না। কিংবা যদি দেখো যে, আমাদের ওপর তারা (মুশরিকরা) বিজয়ী হয়েছে তবুও তোমরা আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য এ স্থান ত্যাগ করবে না। অতঃপর তাদের সাথে আমরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হলাম। তারা পরাজিত হয়ে পালাতে শুরু করল। এমনকি আমরা দেখতে পেলাম মুশরিকদের মেয়েরা দৌড়ে দৌড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছার ওপর থেকে টেনে তোলায় পায়ের নলগুলো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আবুদল্লাহ বিন জুবাইয়ের নেতৃত্ত্বাধীন তীরন্দাজ বাহিনীর লোকেরা ঐ সময় বলতে শুরু করল, হে সাথীরা! চল গনীমত সংগ্রহ করি। আবদুল্লাহ (রাঃ) তীরন্দাজদেরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ স্মরণ করিয়ে দিলেন। কিন্তু সবাই তা অমান্য করল ফলে বিজয় পরাজয়ে রূপ নিল এবং সত্তরজন শহীদ হলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩৭৪১)
إِذْ تُصْعِدُوْنَ
কাফিরদের হঠাৎ আক্রমণের ফলে মুসলিমদের মধ্যে যে ছত্রভঙ্গ অবস্থা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং তাদের অনেকেই যে ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান এখানে করুণ সেই চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।

(
وَّالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ فِيْٓ أُخْرَاكُمْ)
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কিছু সাথীসহ পিছনে ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ডাক দিয়ে বলছিলেন, “আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। আল্লাহর বান্দারাআমার দিকে ফিরে এসো। কিন্তু সে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে তাঁর ডাক কে শুনে?

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. নেতার শরীয়তসম্মত নির্দেশ অমান্য করলে ফলাফল ভাল হয় না; এটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
২. মুশরিকদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা সর্বদা মুমিনদের ভয় বদ্ধমূল করে রেখেছেন।
৩. মুসলিমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের গুরুত্ব না দেয়ার ফলে এ অনাকাক্সিক্ষত অবস্থার সৃষ্টি হয়।
3:154
ثُمَّ اَنۡزَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ الۡغَمِّ اَمَنَۃً نُّعَاسًا یَّغۡشٰی طَآئِفَۃً مِّنۡکُمۡ ۙ وَ طَآئِفَۃٌ قَدۡ اَہَمَّتۡہُمۡ اَنۡفُسُہُمۡ یَظُنُّوۡنَ بِاللّٰہِ غَیۡرَ الۡحَقِّ ظَنَّ الۡجَاہِلِیَّۃِ ؕ یَقُوۡلُوۡنَ ہَلۡ لَّنَا مِنَ الۡاَمۡرِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ قُلۡ اِنَّ الۡاَمۡرَ کُلَّہٗ لِلّٰہِ ؕ یُخۡفُوۡنَ فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ مَّا لَا یُبۡدُوۡنَ لَکَ ؕ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ کَانَ لَنَا مِنَ الۡاَمۡرِ شَیۡءٌ مَّا قُتِلۡنَا ہٰہُنَا ؕ قُلۡ لَّوۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ بُیُوۡتِکُمۡ لَبَرَزَ الَّذِیۡنَ کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقَتۡلُ اِلٰی مَضَاجِعِہِمۡ ۚ وَ لِیَبۡتَلِیَ اللّٰہُ مَا فِیۡ صُدُوۡرِکُمۡ وَ لِیُمَحِّصَ مَا فِیۡ قُلُوۡبِکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۱۵۴

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৪-১৫৫ নং আয়াতের তাফসীর:

অত্র আয়াতসমূহে আল্লাহ তাআলা উহুদের ময়দানে মুসলিম মুজাহিদদের ওপর যে অনুগ্রহ করেছিলেন তার দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন।

মুসলিম মুজাহিদদের চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির পর আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর তন্দ্রাভাব সৃষ্টি করে দিলেন। এ তন্দ্রা ছিল আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রশান্তি এবং সাহায্য। আবূ তালহা (রাঃ) বলেন, আমিও তাদের মধ্যে একজন যাদের ওপর উহুদের দিন তন্দ্রা ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি আমার তরবারী কয়েকবার আমার হাত থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আর আমি তা ধরে রেখেছিলাম। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৬৮)
(
وَطَا۬ئِفَةٌ أخري)
অন্য আরেকটি দল’, এর দ্বারা মুনাফিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, কঠিন পরিস্থিতিতে তারা কেবল নিজেদের প্রাণ নিয়েই চিন্তিত ছিল।
(
ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِ)
জাহিলী ধারণা, যেমন তারা ধারণা করত যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যাপারটাই সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে দীনের প্রতি আহ্বান করেন, তার ভবিষ্যৎ আশঙ্কাজনক। তিনি তো আল্লাহ তাআলার সহযোগিতা থেকেই বঞ্চিত ইত্যাদিকে বুঝানো হয়েছে।

জুবাইর (রাঃ) বলেন, যখন আমাদের কঠিন ভয় ছিল তখনও আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ তাআলা আমাদের ওপর তন্দ্রা দিলেন। এ তন্দ্রার ফলে আমাদের প্রত্যেকেরই চিবুকগুলো বক্ষের সাথে লেগে যায়।

জুবাইর (রাঃ) বলেন, আমি সে অবস্থায় মুতআব বিন কুশাইবের নিম্নের উক্তি শুনতে পাই, যদি আমার সামান্য কিছু অধিকার থাকত তবে এখানে নিহত হতাম না। তখন এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন:

(
لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ مَّا قُتِلْنَا هٰهُنَا)
আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিলেন: বলে দাও! যদি তোমরা বাড়িতে অবস্থান কর আর যদি তোমাদের ভাগ্যে মৃত্যু অবধারিত থাকে তাহলে সেখানেই মৃত্যু পৌঁছবে।
(
إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَلَّوْا مِنْكُمْ يَوْمَ الْتَقَي الْجَمْعٰنِ)
নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যারা দুদলের সম্মুখীন হবার দিন পশ্চাদবর্তিত হয়েছিলদুদলের সম্মুখীন হবার দিন বলতে বদরের দিনকে বুঝানো হয়েছে।

উসমান বিন মাওহাব (রহঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: হাজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে একজন ব্যক্তি বাইতুল্লাহয় এসে সেখানে একদল লোককে উপবিষ্ট অবস্থায় দেখে জিজ্ঞাসা করলেন: এ উপবিষ্ট লোকগুলো কারা? তারা বললেন: এরা হচ্ছেন কুরাইশ গোত্রের লোক। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন: এ বৃদ্ধ লোকটি কে? তারা বললেন: ইনি হচ্ছেন ইবনু উমার (রাঃ)। তখন লোকটি তাঁর কাছে গিয়ে বললেন; আমি আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করব, আপনি আমাকে বলে দেবেন কি? এরপর লোকটি বললেন: আমি আপনাকে এ ঘরের রবের কসম দিয়ে বলছি উহুদের দিন উসমান বিন আফফান (রাঃ) পালিয়েছিলেন- এ কথা আপনি কি জানেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ। লোকটি বললেন: তিনি বদরে অনুপস্থিত ছিলেন, যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি- এ কথাও জানেন? তিনি বললেন হ্যাঁ। লোকটি বললেন: তিনি বাইআতে রিদওয়ানে অনুপস্থিত ছিলেন- এ কথা আপনি জানেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন: লোকটি তখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করল। তখন ইবনু উমার (রাঃ) বললেন: এসো, এখন আমি তোমাকে সব ব্যাপার জানিয়ে দিই এবং তোমার প্রশ্নগুলোর উত্তর বলে দিই। ১. উহুদের দিন তাঁর পালানো সম্বন্ধে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ২. বদরের দিন অনুপস্থিতির কারণ হলো তাঁর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা অসুস্থ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেন: যারা বদরের যুদ্ধে উপস্থিত হয়েছে তাদের মত একজনের প্রতিদান ও গনীমত তুমিও পাবে। ৩. বাইয়াতে রিদওয়ানে অনুপস্থিতির কারণ হলো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসমানকে মক্কাবাসীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন, যদি মক্কাবাসীর সাথে উসমানের চেয়ে কারো বেশি সম্পর্ক থাকত তাহলে তাকেই পাঠাতেন। বাইয়াতে রিদওয়ান হয়েছিলো উসমান (রাঃ) যাওয়ার পর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডান হাত বাম হাতের ওপর রেখে বললেন: এটা উসমানের হাত। ইবনু উমার (রাঃ) বললেন: এখন তুমি যেতে পার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৬০)

সুতরাং বদরের যুদ্ধে পলায়নকারীদের মধ্যে উসমান (রাঃ) ছিলেন না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে শত্রদের ওপর সর্বদা বিজয় দান করেন।
২. আল্লাহ তাআলা তার শত্রদের অপমানিত করেন পরাজয়ের মাধ্যমে।
৩. তাকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখা আবশ্যক।
৪. আল্লাহ তাআলার প্রতিটি কাজ হিকমাতপূর্ণ।
৫. উসমান (রাঃ) এর ব্যাপারে কারো কোন খারাপ ধারণা রাখার সুযোগ নেই।
3:155
اِنَّ الَّذِیۡنَ تَوَلَّوۡا مِنۡکُمۡ یَوۡمَ الۡتَقَی الۡجَمۡعٰنِ ۙ اِنَّمَا اسۡتَزَلَّہُمُ الشَّیۡطٰنُ بِبَعۡضِ مَا کَسَبُوۡا ۚ وَ لَقَدۡ عَفَا اللّٰہُ عَنۡہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ حَلِیۡمٌ ﴿۱۵۵﴾٪

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৪-১৫৫ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতসমূহে আল্লাহ তাআলা উহুদের ময়দানে মুসলিম মুজাহিদদের ওপর যে অনুগ্রহ করেছিলেন তার দৃশ্যপট তুলে ধরেছেন।

মুসলিম মুজাহিদদের চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির পর আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর তন্দ্রাভাব সৃষ্টি করে দিলেন। এ তন্দ্রা ছিল আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রশান্তি এবং সাহায্য। আবূ তালহা (রাঃ) বলেন, আমিও তাদের মধ্যে একজন যাদের ওপর উহুদের দিন তন্দ্রা ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি আমার তরবারী কয়েকবার আমার হাত থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আর আমি তা ধরে রেখেছিলাম। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৬৮)
(
وَطَا۬ئِفَةٌ أخري)
অন্য আরেকটি দল’, এর দ্বারা মুনাফিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, কঠিন পরিস্থিতিতে তারা কেবল নিজেদের প্রাণ নিয়েই চিন্তিত ছিল।
(
ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِ)
জাহিলী ধারণা, যেমন তারা ধারণা করত যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যাপারটাই সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে দীনের প্রতি আহ্বান করেন, তার ভবিষ্যৎ আশঙ্কাজনক। তিনি তো আল্লাহ তাআলার সহযোগিতা থেকেই বঞ্চিত ইত্যাদিকে বুঝানো হয়েছে।

জুবাইর (রাঃ) বলেন, যখন আমাদের কঠিন ভয় ছিল তখনও আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ তাআলা আমাদের ওপর তন্দ্রা দিলেন। এ তন্দ্রার ফলে আমাদের প্রত্যেকেরই চিবুকগুলো বক্ষের সাথে লেগে যায়।

জুবাইর (রাঃ) বলেন, আমি সে অবস্থায় মুতআব বিন কুশাইবের নিম্নের উক্তি শুনতে পাই, যদি আমার সামান্য কিছু অধিকার থাকত তবে এখানে নিহত হতাম না। তখন এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন:
(
لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ مَّا قُتِلْنَا هٰهُنَا)
আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিলেন: বলে দাও! যদি তোমরা বাড়িতে অবস্থান কর আর যদি তোমাদের ভাগ্যে মৃত্যু অবধারিত থাকে তাহলে সেখানেই মৃত্যু পৌঁছবে।
(
إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَلَّوْا مِنْكُمْ يَوْمَ الْتَقَي الْجَمْعٰنِ)
নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যারা দুদলের সম্মুখীন হবার দিন পশ্চাদবর্তিত হয়েছিলদুদলের সম্মুখীন হবার দিন বলতে বদরের দিনকে বুঝানো হয়েছে।

উসমান বিন মাওহাব (রহঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: হাজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে একজন ব্যক্তি বাইতুল্লাহয় এসে সেখানে একদল লোককে উপবিষ্ট অবস্থায় দেখে জিজ্ঞাসা করলেন: এ উপবিষ্ট লোকগুলো কারা? তারা বললেন: এরা হচ্ছেন কুরাইশ গোত্রের লোক। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন: এ বৃদ্ধ লোকটি কে? তারা বললেন: ইনি হচ্ছেন ইবনু উমার (রাঃ)। তখন লোকটি তাঁর কাছে গিয়ে বললেন; আমি আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করব, আপনি আমাকে বলে দেবেন কি? এরপর লোকটি বললেন: আমি আপনাকে এ ঘরের রবের কসম দিয়ে বলছি উহুদের দিন উসমান বিন আফফান (রাঃ) পালিয়েছিলেন- এ কথা আপনি কি জানেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ। লোকটি বললেন: তিনি বদরে অনুপস্থিত ছিলেন, যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি- এ কথাও জানেন? তিনি বললেন হ্যাঁ। লোকটি বললেন: তিনি বাইআতে রিদওয়ানে অনুপস্থিত ছিলেন- এ কথা আপনি জানেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন: লোকটি তখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করল। তখন ইবনু উমার (রাঃ) বললেন: এসো, এখন আমি তোমাকে সব ব্যাপার জানিয়ে দিই এবং তোমার প্রশ্নগুলোর উত্তর বলে দিই। ১. উহুদের দিন তাঁর পালানো সম্বন্ধে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ২. বদরের দিন অনুপস্থিতির কারণ হলো তাঁর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা অসুস্থ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেন: যারা বদরের যুদ্ধে উপস্থিত হয়েছে তাদের মত একজনের প্রতিদান ও গনীমত তুমিও পাবে। ৩. বাইয়াতে রিদওয়ানে অনুপস্থিতির কারণ হলো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসমানকে মক্কাবাসীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন, যদি মক্কাবাসীর সাথে উসমানের চেয়ে কারো বেশি সম্পর্ক থাকত তাহলে তাকেই পাঠাতেন। বাইয়াতে রিদওয়ান হয়েছিলো উসমান (রাঃ) যাওয়ার পর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডান হাত বাম হাতের ওপর রেখে বললেন: এটা উসমানের হাত। ইবনু উমার (রাঃ) বললেন: এখন তুমি যেতে পার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৬০)

সুতরাং বদরের যুদ্ধে পলায়নকারীদের মধ্যে উসমান (রাঃ) ছিলেন না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে শত্রদের ওপর সর্বদা বিজয় দান করেন।
২. আল্লাহ তাআলা তার শত্রদের অপমানিত করেন পরাজয়ের মাধ্যমে।
৩. তাকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখা আবশ্যক।
৪. আল্লাহ তাআলার প্রতিটি কাজ হিকমাতপূর্ণ।
৫. উসমান (রাঃ) এর ব্যাপারে কারো কোন খারাপ ধারণা রাখার সুযোগ নেই।
3:156
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَکُوۡنُوۡا کَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ قَالُوۡا لِاِخۡوَانِہِمۡ اِذَا ضَرَبُوۡا فِی الۡاَرۡضِ اَوۡ کَانُوۡا غُزًّی لَّوۡ کَانُوۡا عِنۡدَنَا مَا مَاتُوۡا وَ مَا قُتِلُوۡا ۚ لِیَجۡعَلَ اللّٰہُ ذٰلِکَ حَسۡرَۃً فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۱۵۶

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৬-১৫৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে মুনাফিকদের ভ্রান্ত বিশ্বাসে বিশ্বাসী হতে নিষেধ করছেন। তাদের বিশ্বাস ছিল আমরা যুদ্ধে না গেলে মারা যাব না। তাই তারা তাদের ভাই তথা অন্যান্য মুনাফিকদের সম্বন্ধে বলেছিল, যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে যদি তারা আমাদের কথা শুনে যুদ্ধে না যেত তাহলে মারা যেত না।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
اَلَّذِيْنَ قَالُوْا لِإِخْوَانِهِمْ وَقَعَدُوْا لَوْ أَطَاعُوْنَا مَا قُتِلُوْا)
যারা গৃহে বসে স্বীয় ভাইদের সম্পর্কে বলছিল, যদি তারা আমাদের কথা মান্য করত তবে নিহত হত না।” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৬৮)
পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, যদি তোমরা মৃত্যু বরণ কর অথবা শহীদ হও উভয় অবস্থাতেই তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
إِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰي مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ط يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ فَيَقْتُلُوْنَ وَيُقْتَلُوْنَ)
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে তার বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়।” (সূরা তাওবাহ ৯:১১১)

সুতরাং মুনাফিকদের মত মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ থেকে পিছনে থাকার কোন সুযোগ নেই। বরং একজন মুমিন সর্বদা বিশ্বাস করবে আল্লাহ তাআলা জীবন-মৃত্যুর মালিক, আমার ভাগ্যে মৃত্যু থাকলে ঘরে থাকলেও হবে, জিহাদে গেলেও হবে। অতএব মৃত্যুর ভয় না করে মুসলিম দলনেতা জিহাদে আহ্বান করলে তাতে শরীক হওয়া আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাথে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সকল অবস্থায় সাদৃশ্য রাখা হারাম।
২. অতীতের বিষয়ে অনুশোচনা কেবল দুঃখ-কষ্ট বৃদ্ধি করে, সুতরাং ভবিষ্যত জীবনে কল্যাণের চেষ্টা করবে এবং আল্লাহ তাআলার সাহায্য চাইবে।
৩. শহীদদের অনেক মর্যাদা রয়েছে, অন্যতম হল প্রথমেই তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।
3:157
وَ لَئِنۡ قُتِلۡتُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَوۡ مُتُّمۡ لَمَغۡفِرَۃٌ مِّنَ اللّٰہِ وَ رَحۡمَۃٌ خَیۡرٌ مِّمَّا یَجۡمَعُوۡنَ ﴿۱۵۷

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৬-১৫৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে মুনাফিকদের ভ্রান্ত বিশ্বাসে বিশ্বাসী হতে নিষেধ করছেন। তাদের বিশ্বাস ছিল আমরা যুদ্ধে না গেলে মারা যাব না। তাই তারা তাদের ভাই তথা অন্যান্য মুনাফিকদের সম্বন্ধে বলেছিল, যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে যদি তারা আমাদের কথা শুনে যুদ্ধে না যেত তাহলে মারা যেত না।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
اَلَّذِيْنَ قَالُوْا لِإِخْوَانِهِمْ وَقَعَدُوْا لَوْ أَطَاعُوْنَا مَا قُتِلُوْا)
যারা গৃহে বসে স্বীয় ভাইদের সম্পর্কে বলছিল, যদি তারা আমাদের কথা মান্য করত তবে নিহত হত না।” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৬৮)
পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, যদি তোমরা মৃত্যু বরণ কর অথবা শহীদ হও উভয় অবস্থাতেই তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
إِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰي مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ط يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ فَيَقْتُلُوْنَ وَيُقْتَلُوْنَ)
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে তার বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়।” (সূরা তাওবাহ ৯:১১১)

সুতরাং মুনাফিকদের মত মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ থেকে পিছনে থাকার কোন সুযোগ নেই। বরং একজন মুমিন সর্বদা বিশ্বাস করবে আল্লাহ তাআলা জীবন-মৃত্যুর মালিক, আমার ভাগ্যে মৃত্যু থাকলে ঘরে থাকলেও হবে, জিহাদে গেলেও হবে। অতএব মৃত্যুর ভয় না করে মুসলিম দলনেতা জিহাদে আহ্বান করলে তাতে শরীক হওয়া আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাথে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সকল অবস্থায় সাদৃশ্য রাখা হারাম।
২. অতীতের বিষয়ে অনুশোচনা কেবল দুঃখ-কষ্ট বৃদ্ধি করে, সুতরাং ভবিষ্যত জীবনে কল্যাণের চেষ্টা করবে এবং আল্লাহ তাআলার সাহায্য চাইবে।
৩. শহীদদের অনেক মর্যাদা রয়েছে, অন্যতম হল প্রথমেই তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।
3:158
وَ لَئِنۡ مُّتُّمۡ اَوۡ قُتِلۡتُمۡ لَاِالَی اللّٰہِ تُحۡشَرُوۡنَ ﴿۱۵۸

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৬-১৫৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে মুনাফিকদের ভ্রান্ত বিশ্বাসে বিশ্বাসী হতে নিষেধ করছেন। তাদের বিশ্বাস ছিল আমরা যুদ্ধে না গেলে মারা যাব না। তাই তারা তাদের ভাই তথা অন্যান্য মুনাফিকদের সম্বন্ধে বলেছিল, যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে যদি তারা আমাদের কথা শুনে যুদ্ধে না যেত তাহলে মারা যেত না।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
اَلَّذِيْنَ قَالُوْا لِإِخْوَانِهِمْ وَقَعَدُوْا لَوْ أَطَاعُوْنَا مَا قُتِلُوْا)
যারা গৃহে বসে স্বীয় ভাইদের সম্পর্কে বলছিল, যদি তারা আমাদের কথা মান্য করত তবে নিহত হত না।” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৬৮)
পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, যদি তোমরা মৃত্যু বরণ কর অথবা শহীদ হও উভয় অবস্থাতেই তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
إِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰي مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ط يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ فَيَقْتُلُوْنَ وَيُقْتَلُوْنَ)
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে তার বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়।” (সূরা তাওবাহ ৯:১১১)
সুতরাং মুনাফিকদের মত মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ থেকে পিছনে থাকার কোন সুযোগ নেই। বরং একজন মুমিন সর্বদা বিশ্বাস করবে আল্লাহ তাআলা জীবন-মৃত্যুর মালিক, আমার ভাগ্যে মৃত্যু থাকলে ঘরে থাকলেও হবে, জিহাদে গেলেও হবে। অতএব মৃত্যুর ভয় না করে মুসলিম দলনেতা জিহাদে আহ্বান করলে তাতে শরীক হওয়া আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাথে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সকল অবস্থায় সাদৃশ্য রাখা হারাম।
২. অতীতের বিষয়ে অনুশোচনা কেবল দুঃখ-কষ্ট বৃদ্ধি করে, সুতরাং ভবিষ্যত জীবনে কল্যাণের চেষ্টা করবে এবং আল্লাহ তাআলার সাহায্য চাইবে।
৩. শহীদদের অনেক মর্যাদা রয়েছে, অন্যতম হল প্রথমেই তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।
3:159
فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ لِنۡتَ لَہُمۡ ۚ وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ۪ فَاعۡفُ عَنۡہُمۡ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ وَ شَاوِرۡہُمۡ فِی الۡاَمۡرِ ۚ فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ ﴿۱۵۹

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেসব উত্তম চরিত্র দান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল কোমল হৃদয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কঠিন হৃদয়ের হতে তাহলে মানুষ তোমার ধারে-কাছে আসত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
لَقَدْ جَا۬ءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)
অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।” (সূরা তাওবাহ ৯:১২৮)

অতএব সকল মানুষকে ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোমল হৃদয়ের হওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান করে তাদের জন্য এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।
(
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ)
অর্থাৎ কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার পর সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হবে। কেননা কোন কাজ করবে বললেই করতে পারবে না যদি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা না হয়। যে কোন কাজে আল্লাহ তাআলার ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ)
এ আয়াতে পরামর্শ করার গুরুত্ব, উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শাসকদের জন্য আবশ্যক হল তারা যেন এমন সব ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে, যে ব্যাপারে তাদের জ্ঞান নেই অথবা যে ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারে।

ইমাম ইবনে আতিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, এমন শাসকদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই, যারা আলিম ও দীনদারদের সাথে কোন পরামর্শ করে না। আর এ পরামর্শ সেইসব বিষয়ের মধ্যে সীমিত থাকবে যেসব ব্যাপারে শরীয়ত নীরব। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَّغُلَّ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে যেসব গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল তন্মধ্যে একটি লাল রঙের চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগল: সম্ভবত এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই নিয়েছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ৩৯৭১, তিরমিযী হা: ৩০০৯, সহীহ)
(
يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
গনীমতের মাল চুরি করা কাবীরাহ গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যে ব্যক্তি গনীমতের মাল চুরি করবে সে কিয়ামাতের দিন সে মাল নিয়ে উঠবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩০৭৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৮৩১)
(
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্য থেকে রাসূল প্রেরণ করেছেন, এটা মানব জাতির জন্য অনুগ্রহ; কেননা যদি রাসূল মানব জাতি থেকে না এসে অন্য জাতি থেকে আসতেন তা হলে মানুষের সমস্যা তারা বুঝতে পারত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ)
তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” (সূরা ফুরকান ২৫:২০)

সুতরাং আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে অনুগ্রহ করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করা আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম।
২. দাওয়াতী কাজে কোমলতা প্রদর্শন করা দাঈর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মানুষ ও আদম সন্তান, নূরের তৈরী নন। পার্থক্য হল তাঁর কাছে ওয়াহী আসে, আর আমাদের কাছে ওয়াহী আসে না।
৪. কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞানের অনেক মর্যাদা রয়েছে।
৫. পরামর্শের মাধ্যমে কাজ করা ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য।
3:160
اِنۡ یَّنۡصُرۡکُمُ اللّٰہُ فَلَا غَالِبَ لَکُمۡ ۚ وَ اِنۡ یَّخۡذُلۡکُمۡ فَمَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَنۡصُرُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِہٖ ؕ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۶۰

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেসব উত্তম চরিত্র দান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল কোমল হৃদয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কঠিন হৃদয়ের হতে তাহলে মানুষ তোমার ধারে-কাছে আসত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
لَقَدْ جَا۬ءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)
অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।” (সূরা তাওবাহ ৯:১২৮)

অতএব সকল মানুষকে ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোমল হৃদয়ের হওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান করে তাদের জন্য এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।
(
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ)
অর্থাৎ কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার পর সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হবে। কেননা কোন কাজ করবে বললেই করতে পারবে না যদি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা না হয়। যে কোন কাজে আল্লাহ তাআলার ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ)
এ আয়াতে পরামর্শ করার গুরুত্ব, উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শাসকদের জন্য আবশ্যক হল তারা যেন এমন সব ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে, যে ব্যাপারে তাদের জ্ঞান নেই অথবা যে ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারে।

ইমাম ইবনে আতিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, এমন শাসকদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই, যারা আলিম ও দীনদারদের সাথে কোন পরামর্শ করে না। আর এ পরামর্শ সেইসব বিষয়ের মধ্যে সীমিত থাকবে যেসব ব্যাপারে শরীয়ত নীরব। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَّغُلَّ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে যেসব গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল তন্মধ্যে একটি লাল রঙের চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগল: সম্ভবত এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই নিয়েছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ৩৯৭১, তিরমিযী হা: ৩০০৯, সহীহ)
(
يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
গনীমতের মাল চুরি করা কাবীরাহ গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যে ব্যক্তি গনীমতের মাল চুরি করবে সে কিয়ামাতের দিন সে মাল নিয়ে উঠবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩০৭৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৮৩১)
(
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্য থেকে রাসূল প্রেরণ করেছেন, এটা মানব জাতির জন্য অনুগ্রহ; কেননা যদি রাসূল মানব জাতি থেকে না এসে অন্য জাতি থেকে আসতেন তা হলে মানুষের সমস্যা তারা বুঝতে পারত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ)
তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” (সূরা ফুরকান ২৫:২০)
সুতরাং আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে অনুগ্রহ করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করা আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম।
২. দাওয়াতী কাজে কোমলতা প্রদর্শন করা দাঈর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মানুষ ও আদম সন্তান, নূরের তৈরী নন। পার্থক্য হল তাঁর কাছে ওয়াহী আসে, আর আমাদের কাছে ওয়াহী আসে না।
৪. কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞানের অনেক মর্যাদা রয়েছে।
৫. পরামর্শের মাধ্যমে কাজ করা ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য।
3:161
وَ مَا کَانَ لِنَبِیٍّ اَنۡ یَّغُلَّ ؕ وَ مَنۡ یَّغۡلُلۡ یَاۡتِ بِمَا غَلَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ۚ ثُمَّ تُوَفّٰی کُلُّ نَفۡسٍ مَّا کَسَبَتۡ وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۱۶۱

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেসব উত্তম চরিত্র দান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল কোমল হৃদয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কঠিন হৃদয়ের হতে তাহলে মানুষ তোমার ধারে-কাছে আসত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
لَقَدْ جَا۬ءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)
অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।” (সূরা তাওবাহ ৯:১২৮)

অতএব সকল মানুষকে ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোমল হৃদয়ের হওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান করে তাদের জন্য এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।
(
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ)
অর্থাৎ কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার পর সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হবে। কেননা কোন কাজ করবে বললেই করতে পারবে না যদি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা না হয়। যে কোন কাজে আল্লাহ তাআলার ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ)
এ আয়াতে পরামর্শ করার গুরুত্ব, উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শাসকদের জন্য আবশ্যক হল তারা যেন এমন সব ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে, যে ব্যাপারে তাদের জ্ঞান নেই অথবা যে ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারে।

ইমাম ইবনে আতিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, এমন শাসকদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই, যারা আলিম ও দীনদারদের সাথে কোন পরামর্শ করে না। আর এ পরামর্শ সেইসব বিষয়ের মধ্যে সীমিত থাকবে যেসব ব্যাপারে শরীয়ত নীরব। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَّغُلَّ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে যেসব গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল তন্মধ্যে একটি লাল রঙের চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগল: সম্ভবত এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই নিয়েছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ৩৯৭১, তিরমিযী হা: ৩০০৯, সহীহ)
(
يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
গনীমতের মাল চুরি করা কাবীরাহ গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যে ব্যক্তি গনীমতের মাল চুরি করবে সে কিয়ামাতের দিন সে মাল নিয়ে উঠবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩০৭৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৮৩১)
(
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্য থেকে রাসূল প্রেরণ করেছেন, এটা মানব জাতির জন্য অনুগ্রহ; কেননা যদি রাসূল মানব জাতি থেকে না এসে অন্য জাতি থেকে আসতেন তা হলে মানুষের সমস্যা তারা বুঝতে পারত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ)
তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” (সূরা ফুরকান ২৫:২০)

সুতরাং আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে অনুগ্রহ করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করা আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম।
২. দাওয়াতী কাজে কোমলতা প্রদর্শন করা দাঈর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মানুষ ও আদম সন্তান, নূরের তৈরী নন। পার্থক্য হল তাঁর কাছে ওয়াহী আসে, আর আমাদের কাছে ওয়াহী আসে না।
৪. কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞানের অনেক মর্যাদা রয়েছে।
৫. পরামর্শের মাধ্যমে কাজ করা ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য।
3:162
اَفَمَنِ اتَّبَعَ رِضۡوَانَ اللّٰہِ کَمَنۡۢ بَآءَ بِسَخَطٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ مَاۡوٰىہُ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۱۶۲

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেসব উত্তম চরিত্র দান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল কোমল হৃদয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কঠিন হৃদয়ের হতে তাহলে মানুষ তোমার ধারে-কাছে আসত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
لَقَدْ جَا۬ءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)
অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।” (সূরা তাওবাহ ৯:১২৮)

অতএব সকল মানুষকে ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোমল হৃদয়ের হওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান করে তাদের জন্য এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।
(
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ)
অর্থাৎ কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার পর সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হবে। কেননা কোন কাজ করবে বললেই করতে পারবে না যদি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা না হয়। যে কোন কাজে আল্লাহ তাআলার ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ)
এ আয়াতে পরামর্শ করার গুরুত্ব, উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শাসকদের জন্য আবশ্যক হল তারা যেন এমন সব ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে, যে ব্যাপারে তাদের জ্ঞান নেই অথবা যে ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারে।

ইমাম ইবনে আতিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, এমন শাসকদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই, যারা আলিম ও দীনদারদের সাথে কোন পরামর্শ করে না। আর এ পরামর্শ সেইসব বিষয়ের মধ্যে সীমিত থাকবে যেসব ব্যাপারে শরীয়ত নীরব। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَّغُلَّ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে যেসব গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল তন্মধ্যে একটি লাল রঙের চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগল: সম্ভবত এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই নিয়েছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ৩৯৭১, তিরমিযী হা: ৩০০৯, সহীহ)
(
يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
গনীমতের মাল চুরি করা কাবীরাহ গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যে ব্যক্তি গনীমতের মাল চুরি করবে সে কিয়ামাতের দিন সে মাল নিয়ে উঠবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩০৭৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৮৩১)

(
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্য থেকে রাসূল প্রেরণ করেছেন, এটা মানব জাতির জন্য অনুগ্রহ; কেননা যদি রাসূল মানব জাতি থেকে না এসে অন্য জাতি থেকে আসতেন তা হলে মানুষের সমস্যা তারা বুঝতে পারত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ)
তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” (সূরা ফুরকান ২৫:২০)

সুতরাং আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে অনুগ্রহ করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করা আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম।
২. দাওয়াতী কাজে কোমলতা প্রদর্শন করা দাঈর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মানুষ ও আদম সন্তান, নূরের তৈরী নন। পার্থক্য হল তাঁর কাছে ওয়াহী আসে, আর আমাদের কাছে ওয়াহী আসে না।
৪. কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞানের অনেক মর্যাদা রয়েছে।
৫. পরামর্শের মাধ্যমে কাজ করা ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য।
3:163
ہُمۡ دَرَجٰتٌ عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ بَصِیۡرٌۢ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶۳

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেসব উত্তম চরিত্র দান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল কোমল হৃদয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কঠিন হৃদয়ের হতে তাহলে মানুষ তোমার ধারে-কাছে আসত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
لَقَدْ جَا۬ءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)
অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।” (সূরা তাওবাহ ৯:১২৮)

অতএব সকল মানুষকে ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোমল হৃদয়ের হওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান করে তাদের জন্য এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।
(
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ)
অর্থাৎ কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার পর সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হবে। কেননা কোন কাজ করবে বললেই করতে পারবে না যদি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা না হয়। যে কোন কাজে আল্লাহ তাআলার ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ)
এ আয়াতে পরামর্শ করার গুরুত্ব, উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শাসকদের জন্য আবশ্যক হল তারা যেন এমন সব ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে, যে ব্যাপারে তাদের জ্ঞান নেই অথবা যে ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারে।
ইমাম ইবনে আতিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, এমন শাসকদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই, যারা আলিম ও দীনদারদের সাথে কোন পরামর্শ করে না। আর এ পরামর্শ সেইসব বিষয়ের মধ্যে সীমিত থাকবে যেসব ব্যাপারে শরীয়ত নীরব। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَّغُلَّ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে যেসব গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল তন্মধ্যে একটি লাল রঙের চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগল: সম্ভবত এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই নিয়েছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ৩৯৭১, তিরমিযী হা: ৩০০৯, সহীহ)

(
يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
গনীমতের মাল চুরি করা কাবীরাহ গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যে ব্যক্তি গনীমতের মাল চুরি করবে সে কিয়ামাতের দিন সে মাল নিয়ে উঠবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩০৭৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৮৩১)
(
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্য থেকে রাসূল প্রেরণ করেছেন, এটা মানব জাতির জন্য অনুগ্রহ; কেননা যদি রাসূল মানব জাতি থেকে না এসে অন্য জাতি থেকে আসতেন তা হলে মানুষের সমস্যা তারা বুঝতে পারত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ)
তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” (সূরা ফুরকান ২৫:২০)
সুতরাং আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে অনুগ্রহ করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করা আবশ্যক।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম।
২. দাওয়াতী কাজে কোমলতা প্রদর্শন করা দাঈর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মানুষ ও আদম সন্তান, নূরের তৈরী নন। পার্থক্য হল তাঁর কাছে ওয়াহী আসে, আর আমাদের কাছে ওয়াহী আসে না।
৪. কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞানের অনেক মর্যাদা রয়েছে।
৫. পরামর্শের মাধ্যমে কাজ করা ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য।
3:164
لَقَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ بَعَثَ فِیۡہِمۡ رَسُوۡلًا مِّنۡ اَنۡفُسِہِمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَ یُزَکِّیۡہِمۡ وَ یُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ ۚ وَ اِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۱۶۴

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তাআলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যেসব উত্তম চরিত্র দান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হল কোমল হৃদয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি যদি কঠিন হৃদয়ের হতে তাহলে মানুষ তোমার ধারে-কাছে আসত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
لَقَدْ جَا۬ءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْمٌ)
অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।” (সূরা তাওবাহ ৯:১২৮)

অতএব সকল মানুষকে ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোমল হৃদয়ের হওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান করে তাদের জন্য এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।
(
فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ)
অর্থাৎ কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার পর সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হবে। কেননা কোন কাজ করবে বললেই করতে পারবে না যদি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা না হয়। যে কোন কাজে আল্লাহ তাআলার ওপর তাওয়াক্কুল করা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ)
এ আয়াতে পরামর্শ করার গুরুত্ব, উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, শাসকদের জন্য আবশ্যক হল তারা যেন এমন সব ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে, যে ব্যাপারে তাদের জ্ঞান নেই অথবা যে ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারে।

ইমাম ইবনে আতিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, এমন শাসকদের বরখাস্ত করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই, যারা আলিম ও দীনদারদের সাথে কোন পরামর্শ করে না। আর এ পরামর্শ সেইসব বিষয়ের মধ্যে সীমিত থাকবে যেসব ব্যাপারে শরীয়ত নীরব। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(
وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَّغُلَّ)
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধে যেসব গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল তন্মধ্যে একটি লাল রঙের চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করতে লাগল: সম্ভবত এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই নিয়েছেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ৩৯৭১, তিরমিযী হা: ৩০০৯, সহীহ)
(
يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ)
গনীমতের মাল চুরি করা কাবীরাহ গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। যে ব্যক্তি গনীমতের মাল চুরি করবে সে কিয়ামাতের দিন সে মাল নিয়ে উঠবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩০৭৩, সহীহ মুসলিম হা: ১৮৩১)
(
لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্য থেকে রাসূল প্রেরণ করেছেন, এটা মানব জাতির জন্য অনুগ্রহ; কেননা যদি রাসূল মানব জাতি থেকে না এসে অন্য জাতি থেকে আসতেন তা হলে মানুষের সমস্যা তারা বুঝতে পারত না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(
وَمَآ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ إِلَّآ إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُوْنَ الطَّعَامَ وَيَمْشُوْنَ فِي الْأَسْوَاقِ)
তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” (সূরা ফুরকান ২৫:২০)
সুতরাং আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা যে অনুগ্রহ করেছেন তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করা আবশ্যক।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম।
২. দাওয়াতী কাজে কোমলতা প্রদর্শন করা দাঈর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত মানুষ ও আদম সন্তান, নূরের তৈরী নন। পার্থক্য হল তাঁর কাছে ওয়াহী আসে, আর আমাদের কাছে ওয়াহী আসে না।
৪. কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞানের অনেক মর্যাদা রয়েছে।
৫. পরামর্শের মাধ্যমে কাজ করা ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য।
3:165
اَوَ لَمَّاۤ اَصَابَتۡکُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ قَدۡ اَصَبۡتُمۡ مِّثۡلَیۡہَا ۙ قُلۡتُمۡ اَنّٰی ہٰذَا ؕ قُلۡ ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اَنۡفُسِکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۶۵

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৬৫-১৬৮ নং আয়াতের তাফসীর:
উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের যেমন সত্তরজন সাহাবী শহীদ হয়েছিল, তেমনি বদর যুদ্ধে মুসলিমরাও সত্তরজন কাফিরকে হত্যা এবং সত্তরজন বন্দী করেছিলেন।
(
هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ)
ওটা তোমাদের নিজেদের নিকট থেকেই এসেছেঅর্থাৎ তোমাদের নিজেদের ভুলের কারণে এ বিপদ এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে পাহাড়ের গিরিপথ ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন; কিন্তু তোমরা নির্দেশ ভঙ্গ করে সেখান থেকে চলে এসেছিলে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মুসলিমরা যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ মোতাবেক না চলে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনুসরণ না করে তা হলে তারা কোন দিন সফলকাম হতে পারবে না।
(
يَوْمَ الْتَقَي)
সম্মুখীন হবার দিন বলতে উহুদের দিনকে বুঝানো হয়েছে। এ দিন মুসলিম ও কাফির দুদল মুখোমুখি হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।
(
وَلِيَعْلَمَ الَّذِيْنَ نَافَقُوْا)
অর্থাৎ উহুদে তোমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা আল্লাহ তাআলারই নির্দেশে হয়েছে। (যাতে তোমরা আগামীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনুগত্যের প্রতি যত
œবান হও) এ ছাড়াও এর আরো একটি উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তাআলা জানতে চান কারা প্রকৃত মুমিন আর কারা মুনাফিক।
(
لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا)
আমরা যদি যুদ্ধ হবে জানতামএর অর্থ হল, যদি বাস্তবিকই তুমি যুদ্ধ করতে যেতে, তাহলে আমরাও তোমার সাথে থাকতাম। কিন্তু তুমি তো নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিতে যাচ্ছ, অতএব এ রকম ভুল কাজে আমরা তোমার সাথে কিভাবে থাকতে পারি? এ ধরণের কথা আবদুল্লাহ বিন উবাই ও তার সাথী মুনাফিকরা বলেছিল। কারণ যুদ্ধে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। তারা মুখে যা বলে অন্তরে তা নেই। যেমন আমরা যুদ্ধ জানলে তোমাদের অনুসরণ করতাম।

এ সকল মুনাফিকরাই তাদের সঙ্গীদের বলে, তারা যদি আমাদের কথা শুনত তাহলে মারা যেত না। এসকল মুনাফিকদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দুনিয়ার অনেক বিপদ-আপদ মানুষের পাপের কারণেই আসে, অধিকাংশই আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।
২. পৃথিবীতে যা কিছু হয় সবকিছু আল্লাহ তাআলা কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত।
৩. মুনাফিকরা মুমিনদের জন্য কাফিরদের থেকে ভয়ানক।
3:166
وَ مَاۤ اَصَابَکُمۡ یَوۡمَ الۡتَقَی الۡجَمۡعٰنِ فَبِاِذۡنِ اللّٰہِ وَ لِیَعۡلَمَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۶۶﴾ۙ

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৬৫-১৬৮ নং আয়াতের তাফসীর:
উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের যেমন সত্তরজন সাহাবী শহীদ হয়েছিল, তেমনি বদর যুদ্ধে মুসলিমরাও সত্তরজন কাফিরকে হত্যা এবং সত্তরজন বন্দী করেছিলেন।
(
هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ)
ওটা তোমাদের নিজেদের নিকট থেকেই এসেছেঅর্থাৎ তোমাদের নিজেদের ভুলের কারণে এ বিপদ এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে পাহাড়ের গিরিপথ ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন; কিন্তু তোমরা নির্দেশ ভঙ্গ করে সেখান থেকে চলে এসেছিলে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মুসলিমরা যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ মোতাবেক না চলে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনুসরণ না করে তা হলে তারা কোন দিন সফলকাম হতে পারবে না।
(
يَوْمَ الْتَقَي)
সম্মুখীন হবার দিন বলতে উহুদের দিনকে বুঝানো হয়েছে। এ দিন মুসলিম ও কাফির দুদল মুখোমুখি হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।
(
وَلِيَعْلَمَ الَّذِيْنَ نَافَقُوْا)
অর্থাৎ উহুদে তোমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা আল্লাহ তাআলারই নির্দেশে হয়েছে। (যাতে তোমরা আগামীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনুগত্যের প্রতি যত
œবান হও) এ ছাড়াও এর আরো একটি উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তাআলা জানতে চান কারা প্রকৃত মুমিন আর কারা মুনাফিক।
(
لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا)
আমরা যদি যুদ্ধ হবে জানতামএর অর্থ হল, যদি বাস্তবিকই তুমি যুদ্ধ করতে যেতে, তাহলে আমরাও তোমার সাথে থাকতাম। কিন্তু তুমি তো নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিতে যাচ্ছ, অতএব এ রকম ভুল কাজে আমরা তোমার সাথে কিভাবে থাকতে পারি? এ ধরণের কথা আবদুল্লাহ বিন উবাই ও তার সাথী মুনাফিকরা বলেছিল। কারণ যুদ্ধে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। তারা মুখে যা বলে অন্তরে তা নেই। যেমন আমরা যুদ্ধ জানলে তোমাদের অনুসরণ করতাম।

এ সকল মুনাফিকরাই তাদের সঙ্গীদের বলে, তারা যদি আমাদের কথা শুনত তাহলে মারা যেত না। এসকল মুনাফিকদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দুনিয়ার অনেক বিপদ-আপদ মানুষের পাপের কারণেই আসে, অধিকাংশই আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।
২. পৃথিবীতে যা কিছু হয় সবকিছু আল্লাহ তাআলা কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত।
৩. মুনাফিকরা মুমিনদের জন্য কাফিরদের থেকে ভয়ানক।
3:167
وَ لِیَعۡلَمَ الَّذِیۡنَ نَافَقُوۡا ۚۖ وَ قِیۡلَ لَہُمۡ تَعَالَوۡا قَاتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَوِ ادۡفَعُوۡا ؕ قَالُوۡا لَوۡ نَعۡلَمُ قِتَالًا لَّا تَّبَعۡنٰکُمۡ ؕ ہُمۡ لِلۡکُفۡرِ یَوۡمَئِذٍ اَقۡرَبُ مِنۡہُمۡ لِلۡاِیۡمَانِ ۚ یَقُوۡلُوۡنَ بِاَفۡوَاہِہِمۡ مَّا لَیۡسَ فِیۡ قُلُوۡبِہِمۡ ؕ وَ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا یَکۡتُمُوۡنَ ﴿۱۶۷﴾ۚ

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৬৫-১৬৮ নং আয়াতের তাফসীর:
উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের যেমন সত্তরজন সাহাবী শহীদ হয়েছিল, তেমনি বদর যুদ্ধে মুসলিমরাও সত্তরজন কাফিরকে হত্যা এবং সত্তরজন বন্দী করেছিলেন।
(
هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ)
ওটা তোমাদের নিজেদের নিকট থেকেই এসেছেঅর্থাৎ তোমাদের নিজেদের ভুলের কারণে এ বিপদ এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে পাহাড়ের গিরিপথ ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন; কিন্তু তোমরা নির্দেশ ভঙ্গ করে সেখান থেকে চলে এসেছিলে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মুসলিমরা যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ মোতাবেক না চলে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনুসরণ না করে তা হলে তারা কোন দিন সফলকাম হতে পারবে না।
(
يَوْمَ الْتَقَي)

সম্মুখীন হবার দিন বলতে উহুদের দিনকে বুঝানো হয়েছে। এ দিন মুসলিম ও কাফির দুদল মুখোমুখি হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।
(
وَلِيَعْلَمَ الَّذِيْنَ نَافَقُوْا)
অর্থাৎ উহুদে তোমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা আল্লাহ তাআলারই নির্দেশে হয়েছে। (যাতে তোমরা আগামীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনুগত্যের প্রতি যত
œবান হও) এ ছাড়াও এর আরো একটি উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তাআলা জানতে চান কারা প্রকৃত মুমিন আর কারা মুনাফিক।
(
لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا)
আমরা যদি যুদ্ধ হবে জানতামএর অর্থ হল, যদি বাস্তবিকই তুমি যুদ্ধ করতে যেতে, তাহলে আমরাও তোমার সাথে থাকতাম। কিন্তু তুমি তো নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিতে যাচ্ছ, অতএব এ রকম ভুল কাজে আমরা তোমার সাথে কিভাবে থাকতে পারি? এ ধরণের কথা আবদুল্লাহ বিন উবাই ও তার সাথী মুনাফিকরা বলেছিল। কারণ যুদ্ধে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। তারা মুখে যা বলে অন্তরে তা নেই। যেমন আমরা যুদ্ধ জানলে তোমাদের অনুসরণ করতাম।

এ সকল মুনাফিকরাই তাদের সঙ্গীদের বলে, তারা যদি আমাদের কথা শুনত তাহলে মারা যেত না। এসকল মুনাফিকদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দুনিয়ার অনেক বিপদ-আপদ মানুষের পাপের কারণেই আসে, অধিকাংশই আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।
২. পৃথিবীতে যা কিছু হয় সবকিছু আল্লাহ তাআলা কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত।
৩. মুনাফিকরা মুমিনদের জন্য কাফিরদের থেকে ভয়ানক।
3:168
اَلَّذِیۡنَ قَالُوۡا لِاِخۡوَانِہِمۡ وَ قَعَدُوۡا لَوۡ اَطَاعُوۡنَا مَا قُتِلُوۡا ؕ قُلۡ فَادۡرَءُوۡا عَنۡ اَنۡفُسِکُمُ الۡمَوۡتَ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۶۸

FATHUL MAJID

আলিফ-লাম-মীম।

FATHUL MAJID

১৬৫-১৬৮ নং আয়াতের তাফসীর:
উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের যেমন সত্তরজন সাহাবী শহীদ হয়েছিল, তেমনি বদর যুদ্ধে মুসলিমরাও সত্তরজন কাফিরকে হত্যা এবং সত্তরজন বন্দী করেছিলেন।
(
هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ)
ওটা তোমাদের নিজেদের নিকট থেকেই এসেছেঅর্থাৎ তোমাদের নিজেদের ভুলের কারণে এ বিপদ এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে পাহাড়ের গিরিপথ ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন; কিন্তু তোমরা নির্দেশ ভঙ্গ করে সেখান থেকে চলে এসেছিলে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মুসলিমরা যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ মোতাবেক না চলে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনুসরণ না করে তা হলে তারা কোন দিন সফলকাম হতে পারবে না।
(
يَوْمَ الْتَقَي)
সম্মুখীন হবার দিন বলতে উহুদের দিনকে বুঝানো হয়েছে। এ দিন মুসলিম ও কাফির দুদল মুখোমুখি হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।
(
وَلِيَعْلَمَ الَّذِيْنَ نَافَقُوْا)
অর্থাৎ উহুদে তোমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা আল্লাহ তাআলারই নির্দেশে হয়েছে। (যাতে তোমরা আগামীতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনুগত্যের প্রতি যত
œবান হও) এ ছাড়াও এর আরো একটি উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তাআলা জানতে চান কারা প্রকৃত মুমিন আর কারা মুনাফিক।
(
لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا)
আমরা যদি যুদ্ধ হবে জানতামএর অর্থ হল, যদি বাস্তবিকই তুমি যুদ্ধ করতে যেতে, তাহলে আমরাও তোমার সাথে থাকতাম। কিন্তু তুমি তো নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিতে যাচ্ছ, অতএব এ রকম ভুল কাজে আমরা তোমার সাথে কিভাবে থাকতে পারি? এ ধরণের কথা আবদুল্লাহ বিন উবাই ও তার সাথী মুনাফিকরা বলেছিল। কারণ যুদ্ধে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। তারা মুখে যা বলে অন্তরে তা নেই। যেমন আমরা যুদ্ধ জানলে তোমাদের অনুসরণ করতাম।

এ সকল মুনাফিকরাই তাদের সঙ্গীদের বলে, তারা যদি আমাদের কথা শুনত তাহলে মারা যেত না। এসকল মুনাফিকদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দুনিয়ার অনেক বিপদ-আপদ মানুষের পাপের কারণেই আসে, অধিকাংশই আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।
২. পৃথিবীতে যা কিছু হয় সবকিছু আল্লাহ তাআলা কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত।
৩. মুনাফিকরা মুমিনদের জন্য কাফিরদের থেকে ভয়ানক।

 আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite

Post a Comment

0 Comments