Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

সুরা আল ইমরান ১৬৯ থেকে ২০০ পর্যন্ত

 তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই. আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
 সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে তাফসীর ফাতহুল মাজীদ উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর তত্ত্বাবধানে সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারীস্বহীহ মুসলিমসুনান আবূ দাউদসুনান তিরমিযিসুনান নাসাঈসুনান ইবনে মাজাহমুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণমজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱
 সুরার নাম-আল ইমরান_(ইমরানের পরিবার) মোট- ২০০ সুরার ধরন- মাদানি ।

 3:169
وَ لَا تَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ قُتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ اَمۡوَاتًا ؕ بَلۡ اَحۡیَآءٌ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ یُرۡزَقُوۡنَ ﴿۱۶۹﴾ۙ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।
আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।
আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।
আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)
আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)

অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।
২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।

সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:170
فَرِحِیۡنَ بِمَاۤ اٰتٰہُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ ۙ وَ یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ بِالَّذِیۡنَ لَمۡ یَلۡحَقُوۡا بِہِمۡ مِّنۡ خَلۡفِہِمۡ ۙ اَلَّا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۱۷۰﴾ۘ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।

আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।
আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।

আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)
আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)
অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।

২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।
সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:171
یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ بِنِعۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ فَضۡلٍ ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۷۱﴾ۚ٪ۛ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।
আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।

আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।

আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)
আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)

অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।

২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।
সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:172
اَلَّذِیۡنَ اسۡتَجَابُوۡا لِلّٰہِ وَ الرَّسُوۡلِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَصَابَہُمُ الۡقَرۡحُ ؕۛ لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوۡا مِنۡہُمۡ وَ اتَّقَوۡا اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۷۲﴾ۚ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।
আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।
আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।

আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)
আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)
অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।

২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।
সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:173
اَلَّذِیۡنَ قَالَ لَہُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدۡ جَمَعُوۡا لَکُمۡ فَاخۡشَوۡہُمۡ فَزَادَہُمۡ اِیۡمَانًا ٭ۖ وَّ قَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰہُ وَ نِعۡمَ الۡوَکِیۡلُ ﴿۱۷۳
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।

আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।

আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।

আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)
আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)

অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।
২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।
সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:174
فَانۡقَلَبُوۡا بِنِعۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ وَ فَضۡلٍ لَّمۡ یَمۡسَسۡہُمۡ سُوۡٓءٌ ۙ وَّ اتَّبَعُوۡا رِضۡوَانَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ ذُوۡ فَضۡلٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۷۴
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।
আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।

আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।

আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)
আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)

অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।

২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।

সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:175
اِنَّمَا ذٰلِکُمُ الشَّیۡطٰنُ یُخَوِّفُ اَوۡلِیَآءَہٗ ۪ فَلَا تَخَافُوۡہُمۡ وَ خَافُوۡنِ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۷۵
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৬৯-১৭৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, উহুদের দিন তোমাদের যে সকল ভাইগণ শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তা‘আলা তাদের আত্মাকে সবুজ পাখিতে পরিণত করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের নহরসমূহে আসা যাওয়া করে। জান্নাতের ফলমূল খায়। আরশের ছায়ার নীচে আশ্রয় নেয়। তারা যখনই এরূপ উত্তম খাবার, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি পায় তখন তারা বলে, হায় যদি আমাদের ভাইয়েরা জানতে পারত আমাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা কী ব্যবহার করছেন তাহলে কখনো জিহাদ ত্যাগ করত না, যুদ্ধ থেকে পিছপা হত না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের কাছে পৌঁছে দেবো। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:
(
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ أَمْوَاتًا)
(তাফসীর তাবারী পৃঃ ৩৮৮, সহীহ)
(
اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ)
যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশের সাড়া দিয়েছিল” হিশাম তার পিতা উরওয়াহ থেকে বর্ণনা করেন, উরওয়াহকে সম্বোধন করে আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে ভাগ্নে! জানো, যেসব ব্যক্তি আহত হবার পর আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের ডাকে ত্বরিত সাড়া দিয়েছে সেসব নেককার ও আল্লাহভীরুদের জন্য বড় পুরস্কার রয়েছে। আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তোমার পিতা জুবাইর ও নানা আবূ বকর (রাঃ)ও ছিলেন।

উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহত হয়েছিলেন। মুশরিকরা এ অবস্থায় চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তাই আহ্বান জানালেন। কে আছ! তাদের পিছু ধাওয়া করতে যাবে? এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্তরজন লোক প্রস্তুত হলেন। তাদের মধ্যে জুবায়ের ও আবূ বাকরও ছিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪০৭৭)

আয়াতের প্রথম
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা নাঈম বিন মাসউদ উদ্দেশ্য।
আর দ্বিতীয়
النَّاسُ বা মানুষ দ্বারা আবূ সুফিয়ান ও তার সঙ্গীরা।
অর্থাৎ নাঈম বিন মাসউদ (মুসিলম বাহিনীকে) বলল: আবূ সুফিয়ান ও তার বিশাল বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে, অতএব তাদের ভয় কর।

আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ)
আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক” ইবরাহীমকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন তিনি এ কথাটি বলেছিলেন।

আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাই বলেছিলেন যখন লোকজন তাঁকে এসে বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনাদল প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদেরকে ভয় কর। এ কথা শুনে তাদের ঈমান আরো মজবুত হল। তারা বলল: আমাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। আর আমাদের পক্ষ থেকে কাজের জন্য তিনিই উত্তম জিম্মাদার। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৩)

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এরা হল শয়তান। শয়তান তাদের বন্ধুদের ভয় দেখায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তাদেরকে ভয় কর না; বরং আমাকেই ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(
أَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَه۫)

আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার ৩৯:৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّا لَنَنْصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُوْمُ الْأَشْهَادُ)
নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে ও যেদিন সাক্ষীগণ দণ্ডায়মান হবে।” (সূরা মুজাদালাহ ৫৮:২১)
অতএব মু’মিন ব্যক্তি সর্বদাই আল্লাহ তা‘আলার ওপর ভরসা ও আস্থাশীল হবে।
ভয় তিন প্রকার:
১. গোপন ভয়; তা হল আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন মূর্তি বা তাগুতকে ভয় করা যে, সে মূর্তি বা তাগুত আমার কোন অনিষ্ট করবে। অমুক পীর বা ফকীর আমার ক্ষতি করতে পারে অন্তরে এরূপ ভয় করা ইত্যাদি। এ প্রকার ভয় করে তারা যারা মূর্তিপূজারী ও কবর পূজারী। এটা সম্পূর্ণ তাওহীদের বিপরীত, কেউ এরূপ ভয় করলে শির্কে আকবারে লিপ্ত হবে, সমূলে ঈমান হারিয়ে ফেলবে।

২. মানুষের ভয়ে শরীয়তের কোন বিধান বর্জন করা। এটা হারাম, এটাও এক প্রকার শির্ক।
৩. স্বভাবগত ভয়। যেমন শত্র“র ভয়, হিংস্র জন্তুর ভয় ইত্যাদি। এরূপ ভয় করা তাওহীদের ক্ষতিকারক নয়।
সুতরাং মু’মিনরা কখনো শয়তান, তাগুত ইত্যাদিকে ভয় করতে পারে না; বরং তারা ভয় করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তাক্বওয়া ও ইহসানের ফযীলত জানলাম।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরেই এ উম্মাতের অন্যান্য সাধারণ মু’মিনের চেয়ে সাহাবাদের ফযীলত অনেক বেশি।
৩.
حسبنا الله رنعم الواكيل
বাক্যের অনেক ফযীলত রয়েছে।
৪. শয়তান কেবল তার সঙ্গীদেরকেই ভয় দেখায়; মু’মিনদের ভয় দেখাতে পারে না।
3:176
وَ لَا یَحۡزُنۡکَ الَّذِیۡنَ یُسَارِعُوۡنَ فِی الۡکُفۡرِ ۚ اِنَّہُمۡ لَنۡ یَّضُرُّوا اللّٰہَ شَیۡئًا ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ اَلَّا یَجۡعَلَ لَہُمۡ حَظًّا فِی الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۷۶
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৭৬-১৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
نُمْلِيْ لَهُمْ)
আমরা তাদেরকে অবকাশ দিই।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে এ আশা চরমভাবে বিদ্যমান ছিল যে, সমস্ত মানুষ মুসলিম হয়ে যাক। আর এ কারণে তাদের অস্বীকার করায় ও মিথ্যা ভাবায় তিনি বড় কষ্টবোধ করলেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে, তুমি কোন চিন্তা ও দুঃখ করবে না। এরা আল্লাহ তা‘আলার কিছুই করতে পারবে না। তারা তো কেবল নিজেদের আখিরাত নষ্ট করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে আমার বান্দারা তোমরা আমার ক্ষতি করতে পারবে না এবং কোন উপকারও করতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)
(
إِنَّمَا نُمْلِيْ لَهُمْ)
এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সুযোগ ও অবসর দেয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কৌশল ও ইচ্ছা অনুযায়ী কাফিরদেরকে সুযোগ ও অবসর দেন।

সাময়িকভাবে তাদেরকে দুনিয়ার সুখ-সাচ্ছন্দ্য, বিজয় এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করেন। মানুষ মনে করে যে, তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার যাবতীয় নেয়ামত দ্বারা যারা উপকৃত হয়, তারা যদি নেকী ও আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যের রাস্তা অবলম্বন না করে, তাহলে দুনিয়ার এ সমস্ত নেয়ামত তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হবে না বরং তা হবে তাঁর দেয়া অবকাশ।

এ দ্বারা কুফরী ও পাপ আরো বর্ধিত হতে থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত তারা জাহান্নামের চিরন্তন আযাবের উপযুক্ত বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
أَيَحْسَبُوْنَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِه۪ مِنْ مَّالٍ وَّبَنِيْنَ - نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ط بَلْ لَّا يَشْعُرُوْنَ)
তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করি, তা দিয়ে আমি তাদের সকল প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝে না। (সূরা মু’মিনূন ২৩:৫৫-৫৬)
(
مَا كَانَ اللّٰهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তা‘আলা কষ্টি পাথরে ঘষে পরীক্ষা করে নেন কে তাঁর প্রকৃত মু’মিন, আর কে মুনাফিক।
সুতরাং কাফিরের জন্য কোন আফসোস নেই, তারা ইসলাম ও মুসলিমদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। তারা কেবল নিজেদেরই ক্ষতি করছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়ার সাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ ইত্যাদি দ্বারা ক্ষণিক সময়ের জন্য অবকাশ দেন। পরকালে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে তাদের পাপ কাজ বৃদ্ধি পাওয়া এবং শাস্তি কঠিন হওয়ার জন্য অবকাশ দেন।
২. কাফিরদের কুফরী যেন মু’মিনদেরকে চিন্তিত না করে।
৩. আল্লাহ তা‘আলা বিধান দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য যে, কে সত্য মু’মিন আর কে মুনাফিক।
৪. গায়েব কেবল আল্লাহ তা‘আলাই জানেন।
3:177
اِنَّ الَّذِیۡنَ اشۡتَرَوُا الۡکُفۡرَ بِالۡاِیۡمَانِ لَنۡ یَّضُرُّوا اللّٰہَ شَیۡئًا ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۷۷
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৭৬-১৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
نُمْلِيْ لَهُمْ)
আমরা তাদেরকে অবকাশ দিই।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে এ আশা চরমভাবে বিদ্যমান ছিল যে, সমস্ত মানুষ মুসলিম হয়ে যাক। আর এ কারণে তাদের অস্বীকার করায় ও মিথ্যা ভাবায় তিনি বড় কষ্টবোধ করলেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে, তুমি কোন চিন্তা ও দুঃখ করবে না। এরা আল্লাহ তা‘আলার কিছুই করতে পারবে না। তারা তো কেবল নিজেদের আখিরাত নষ্ট করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে আমার বান্দারা তোমরা আমার ক্ষতি করতে পারবে না এবং কোন উপকারও করতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)
(
إِنَّمَا نُمْلِيْ لَهُمْ)
এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সুযোগ ও অবসর দেয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কৌশল ও ইচ্ছা অনুযায়ী কাফিরদেরকে সুযোগ ও অবসর দেন।

সাময়িকভাবে তাদেরকে দুনিয়ার সুখ-সাচ্ছন্দ্য, বিজয় এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করেন। মানুষ মনে করে যে, তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার যাবতীয় নেয়ামত দ্বারা যারা উপকৃত হয়, তারা যদি নেকী ও আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যের রাস্তা অবলম্বন না করে, তাহলে দুনিয়ার এ সমস্ত নেয়ামত তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হবে না বরং তা হবে তাঁর দেয়া অবকাশ।

এ দ্বারা কুফরী ও পাপ আরো বর্ধিত হতে থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত তারা জাহান্নামের চিরন্তন আযাবের উপযুক্ত বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
أَيَحْسَبُوْنَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِه۪ مِنْ مَّالٍ وَّبَنِيْنَ - نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ط بَلْ لَّا يَشْعُرُوْنَ)
তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করি, তা দিয়ে আমি তাদের সকল প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝে না। (সূরা মু’মিনূন ২৩:৫৫-৫৬)
(
مَا كَانَ اللّٰهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তা‘আলা কষ্টি পাথরে ঘষে পরীক্ষা করে নেন কে তাঁর প্রকৃত মু’মিন, আর কে মুনাফিক।

সুতরাং কাফিরের জন্য কোন আফসোস নেই, তারা ইসলাম ও মুসলিমদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। তারা কেবল নিজেদেরই ক্ষতি করছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়ার সাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ ইত্যাদি দ্বারা ক্ষণিক সময়ের জন্য অবকাশ দেন। পরকালে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে তাদের পাপ কাজ বৃদ্ধি পাওয়া এবং শাস্তি কঠিন হওয়ার জন্য অবকাশ দেন।
২. কাফিরদের কুফরী যেন মু’মিনদেরকে চিন্তিত না করে।
৩. আল্লাহ তা‘আলা বিধান দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য যে, কে সত্য মু’মিন আর কে মুনাফিক।
৪. গায়েব কেবল আল্লাহ তা‘আলাই জানেন।
3:178
وَ لَا یَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَنَّمَا نُمۡلِیۡ لَہُمۡ خَیۡرٌ لِّاَنۡفُسِہِمۡ ؕ اِنَّمَا نُمۡلِیۡ لَہُمۡ لِیَزۡدَادُوۡۤا اِثۡمًا ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ مُّہِیۡنٌ ﴿۱۷۸
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৭৬-১৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
نُمْلِيْ لَهُمْ)
আমরা তাদেরকে অবকাশ দিই।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে এ আশা চরমভাবে বিদ্যমান ছিল যে, সমস্ত মানুষ মুসলিম হয়ে যাক। আর এ কারণে তাদের অস্বীকার করায় ও মিথ্যা ভাবায় তিনি বড় কষ্টবোধ করলেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে, তুমি কোন চিন্তা ও দুঃখ করবে না। এরা আল্লাহ তা‘আলার কিছুই করতে পারবে না। তারা তো কেবল নিজেদের আখিরাত নষ্ট করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে আমার বান্দারা তোমরা আমার ক্ষতি করতে পারবে না এবং কোন উপকারও করতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)
(
إِنَّمَا نُمْلِيْ لَهُمْ)
এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সুযোগ ও অবসর দেয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কৌশল ও ইচ্ছা অনুযায়ী কাফিরদেরকে সুযোগ ও অবসর দেন।

সাময়িকভাবে তাদেরকে দুনিয়ার সুখ-সাচ্ছন্দ্য, বিজয় এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করেন। মানুষ মনে করে যে, তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার যাবতীয় নেয়ামত দ্বারা যারা উপকৃত হয়, তারা যদি নেকী ও আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যের রাস্তা অবলম্বন না করে, তাহলে দুনিয়ার এ সমস্ত নেয়ামত তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হবে না বরং তা হবে তাঁর দেয়া অবকাশ।

এ দ্বারা কুফরী ও পাপ আরো বর্ধিত হতে থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত তারা জাহান্নামের চিরন্তন আযাবের উপযুক্ত বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
أَيَحْسَبُوْنَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِه۪ مِنْ مَّالٍ وَّبَنِيْنَ - نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ط بَلْ لَّا يَشْعُرُوْنَ)
তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করি, তা দিয়ে আমি তাদের সকল প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝে না। (সূরা মু’মিনূন ২৩:৫৫-৫৬)
(
مَا كَانَ اللّٰهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ)

আল্লাহ তা‘আলা কষ্টি পাথরে ঘষে পরীক্ষা করে নেন কে তাঁর প্রকৃত মু’মিন, আর কে মুনাফিক।

সুতরাং কাফিরের জন্য কোন আফসোস নেই, তারা ইসলাম ও মুসলিমদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। তারা কেবল নিজেদেরই ক্ষতি করছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়ার সাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ ইত্যাদি দ্বারা ক্ষণিক সময়ের জন্য অবকাশ দেন। পরকালে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে তাদের পাপ কাজ বৃদ্ধি পাওয়া এবং শাস্তি কঠিন হওয়ার জন্য অবকাশ দেন।
২. কাফিরদের কুফরী যেন মু’মিনদেরকে চিন্তিত না করে।
৩. আল্লাহ তা‘আলা বিধান দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য যে, কে সত্য মু’মিন আর কে মুনাফিক।
৪. গায়েব কেবল আল্লাহ তা‘আলাই জানেন।
3:179
مَا کَانَ اللّٰہُ لِیَذَرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ عَلٰی مَاۤ اَنۡتُمۡ عَلَیۡہِ حَتّٰی یَمِیۡزَ الۡخَبِیۡثَ مِنَ الطَّیِّبِ ؕ وَ مَا کَانَ اللّٰہُ لِیُطۡلِعَکُمۡ عَلَی الۡغَیۡبِ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَجۡتَبِیۡ مِنۡ رُّسُلِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ ۪ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رُسُلِہٖ ۚ وَ اِنۡ تُؤۡمِنُوۡا وَ تَتَّقُوۡا فَلَکُمۡ اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱۷۹
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৭৬-১৭৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
نُمْلِيْ لَهُمْ)
আমরা তাদেরকে অবকাশ দিই।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে এ আশা চরমভাবে বিদ্যমান ছিল যে, সমস্ত মানুষ মুসলিম হয়ে যাক। আর এ কারণে তাদের অস্বীকার করায় ও মিথ্যা ভাবায় তিনি বড় কষ্টবোধ করলেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে, তুমি কোন চিন্তা ও দুঃখ করবে না। এরা আল্লাহ তা‘আলার কিছুই করতে পারবে না। তারা তো কেবল নিজেদের আখিরাত নষ্ট করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে আমার বান্দারা তোমরা আমার ক্ষতি করতে পারবে না এবং কোন উপকারও করতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫৭৭)
(
إِنَّمَا نُمْلِيْ لَهُمْ)
এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সুযোগ ও অবসর দেয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কৌশল ও ইচ্ছা অনুযায়ী কাফিরদেরকে সুযোগ ও অবসর দেন।

সাময়িকভাবে তাদেরকে দুনিয়ার সুখ-সাচ্ছন্দ্য, বিজয় এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করেন। মানুষ মনে করে যে, তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার যাবতীয় নেয়ামত দ্বারা যারা উপকৃত হয়, তারা যদি নেকী ও আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যের রাস্তা অবলম্বন না করে, তাহলে দুনিয়ার এ সমস্ত নেয়ামত তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ হবে না বরং তা হবে তাঁর দেয়া অবকাশ।

এ দ্বারা কুফরী ও পাপ আরো বর্ধিত হতে থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত তারা জাহান্নামের চিরন্তন আযাবের উপযুক্ত বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(
أَيَحْسَبُوْنَ أَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِه۪ مِنْ مَّالٍ وَّبَنِيْنَ - نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ ط بَلْ لَّا يَشْعُرُوْنَ)
তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করি, তা দিয়ে আমি তাদের সকল প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝে না। (সূরা মু’মিনূন ২৩:৫৫-৫৬)
(
مَا كَانَ اللّٰهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ)
আল্লাহ তা‘আলা কষ্টি পাথরে ঘষে পরীক্ষা করে নেন কে তাঁর প্রকৃত মু’মিন, আর কে মুনাফিক।

সুতরাং কাফিরের জন্য কোন আফসোস নেই, তারা ইসলাম ও মুসলিমদের কোন ক্ষতি করতে পারে না। তারা কেবল নিজেদেরই ক্ষতি করছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়ার সাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ ইত্যাদি দ্বারা ক্ষণিক সময়ের জন্য অবকাশ দেন। পরকালে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে তাদের পাপ কাজ বৃদ্ধি পাওয়া এবং শাস্তি কঠিন হওয়ার জন্য অবকাশ দেন।
২. কাফিরদের কুফরী যেন মু’মিনদেরকে চিন্তিত না করে।
৩. আল্লাহ তা‘আলা বিধান দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য যে, কে সত্য মু’মিন আর কে মুনাফিক।
৪. গায়েব কেবল আল্লাহ তা‘আলাই জানেন।
3:180
وَ لَا یَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ یَبۡخَلُوۡنَ بِمَاۤ اٰتٰہُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖ ہُوَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ بَلۡ ہُوَ شَرٌّ لَّہُمۡ ؕ سَیُطَوَّقُوۡنَ مَا بَخِلُوۡا بِہٖ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ وَ لِلّٰہِ مِیۡرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۱۸۰﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮০ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা সম্পদ জমা করে রাখে কিন্তু তার যাকাত আদায় করে না তারা যেন মনে না করে যে, তাদের গচ্ছিত সম্পদ তাদের উপকারে আসবে। বরং তা হবে তাদের জন্য ক্ষতিকর, কিয়ামাতের দিন সম্পদ তাদের গর্দানে পেঁচিয়ে দেয়া হবে।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে ঐ সম্পদের যাকাত দেয় না, তার মাল কিয়ামাতের দিন টাক মাথাবিশিষ্ট এবং চোখের ওপর দু’টি চিহ্নযুক্ত সাপ বানিয়ে গলাবন্ধের ন্যায় তার গলায় জড়িয়ে দেয়া হবে। অতঃপর তাকে দংশন করতে থাকবে এবং বলতে থাকবে- আমি তোমার মাল, আমি তোমার ধনভাণ্ডার। তারপর এ আয়াতটি তেলাওয়াত করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫৪৬৫)

যারা সম্পদের যাকাত আদায় করে না তাদের শাস্তির ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (দেখুন: ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)

অতএব আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত সম্পদের সদ্ব্যবহারস্বরূপ যাকাত আদায় করে সম্পদ পবিত্র করে নিয়ে পরকালীন শাস্তি থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যাকাত একটি ইবাদত। তা আদায় করলে সম্পদ পবিত্র হয়।
২. যাকাত অনাদায়ে অনেক শাস্তি রয়েছে।
৩. সম্পদ আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ। তাই যাকাত আদায় করে তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দায় পরিণত হওয়া উচিত।
3:181
لَقَدۡ سَمِعَ اللّٰہُ قَوۡلَ الَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ فَقِیۡرٌ وَّ نَحۡنُ اَغۡنِیَآءُ ۘ سَنَکۡتُبُ مَا قَالُوۡا وَ قَتۡلَہُمُ الۡاَنۡۢبِیَآءَ بِغَیۡرِ حَقٍّ ۙ وَّ نَقُوۡلُ ذُوۡقُوۡا عَذَابَ الۡحَرِیۡقِ ﴿۱۸۱
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮১-১৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নূযুল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন
(
مَنْ ذَا الَّذِيْ يُقْرِضُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا.... )
যে ব্যক্তি আল্লাহকে করযে হাসানা দেবে তিনি তাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেবেন” এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন ইয়াহূদীরা বলতে লাগল, হে মুহাম্মাদ! তোমার রব ফকির হয়ে গেছে। তাঁর বান্দাদের কাছে ঋণ চায়। তখন
(
لَقَدْ سَمِعَ اللّٰهُ قَوْلَ الَّذِيْنَ.... )
এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল কাদীর, পৃঃ ৭৯)

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ يَدُ اللّٰهِ مَغْلُوْلَةٌ)
ইয়াহূদীরা বলে, আল্লাহর হাত রুদ্ধ” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাবে বলছেন:
(
غُلَّتْ اَیْدِیْھِمْ وَلُعِنُوْا بِمَا قَالُوْاﺭ بَلْ یَدٰھُ مَبْسُوْطَتٰنِﺫ یُنْفِقُ کَیْفَ یَشَا۬ئُﺚ وَلَیَزِیْدَنَّ کَثِیْرًا)
তারাই রুদ্ধহস্ত এবং এরা যা বলে তজ্জন্য এরা অভিশপ্ত, বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত; যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
(
سَنَكْتُبُ مَا قَالُوْا)
এর সবই আমি লিপিবদ্ধ করব” অর্থাৎ পূর্বে উল্লিখিত আল্লাহ তা‘আলার শানে বেআদবীমূলক উক্তি এবং তাদের পূর্বপুরুষদের অন্যায়ভাবে নাবীদের হত্যা ইত্যাদি যাবতীয় পাপ আল্লাহ তা‘আলার নিকট লিপিবদ্ধ রয়েছে।

পরকালে এসব অপকর্মের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নামে দেবেন।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন যারা বলে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন যে, তোমরা কেবল সে রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে যার দু‘আর ফলে আকাশ থেকে আগুন এসে কুরবানী ও সাদাকাকে জ্বালিয়ে দেয়।

তাই হে মুহাম্মাদ! তুমি যেহেতু এ মু‘জিযাহ নিয়ে আসনি তাই তোমার প্রতি আমরা ঈমান আনতে পারব না। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিয়েছেন, বলে দাও, আমার পূর্বে অনেক রাসূল তোমাদের দাবী অনুযায়ী প্রমাণসহ এসেছেন তার পরেও তোমরা কেন তাদেরকে হত্যা করেছ? তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা সান্ত্বনা দিচ্ছেন যে, তোমার পূর্বে অনেক রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছে। অতএব তোমাকে মিথ্যা বললে তুমি মন খারাপ কর না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সাথে ইয়াহূদীদের বদ আচরণের পরিণাম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
২. ইয়াহূদীরা অনেক নাবীকে হত্যা করেছে।
৩. ইয়াহূদীদের দাবী মিথ্যা প্রমাণিত হল।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধৈর্যের ওপর অটল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
3:182
ذٰلِکَ بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡکُمۡ وَ اَنَّ اللّٰہَ لَیۡسَ بِظَلَّامٍ لِّلۡعَبِیۡدِ ﴿۱۸۲﴾ۚ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮১-১৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নূযুল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন

(
مَنْ ذَا الَّذِيْ يُقْرِضُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا.... )
যে ব্যক্তি আল্লাহকে করযে হাসানা দেবে তিনি তাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেবেন” এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন ইয়াহূদীরা বলতে লাগল, হে মুহাম্মাদ! তোমার রব ফকির হয়ে গেছে। তাঁর বান্দাদের কাছে ঋণ চায়। তখন
(
لَقَدْ سَمِعَ اللّٰهُ قَوْلَ الَّذِيْنَ.... )
এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল কাদীর, পৃঃ ৭৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ يَدُ اللّٰهِ مَغْلُوْلَةٌ)
ইয়াহূদীরা বলে, আল্লাহর হাত রুদ্ধ” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাবে বলছেন:
(
غُلَّتْ اَیْدِیْھِمْ وَلُعِنُوْا بِمَا قَالُوْاﺭ بَلْ یَدٰھُ مَبْسُوْطَتٰنِﺫ یُنْفِقُ کَیْفَ یَشَا۬ئُﺚ وَلَیَزِیْدَنَّ کَثِیْرًا)
তারাই রুদ্ধহস্ত এবং এরা যা বলে তজ্জন্য এরা অভিশপ্ত, বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত; যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
(
سَنَكْتُبُ مَا قَالُوْا)
এর সবই আমি লিপিবদ্ধ করব” অর্থাৎ পূর্বে উল্লিখিত আল্লাহ তা‘আলার শানে বেআদবীমূলক উক্তি এবং তাদের পূর্বপুরুষদের অন্যায়ভাবে নাবীদের হত্যা ইত্যাদি যাবতীয় পাপ আল্লাহ তা‘আলার নিকট লিপিবদ্ধ রয়েছে।

পরকালে এসব অপকর্মের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নামে দেবেন।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন যারা বলে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন যে, তোমরা কেবল সে রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে যার দু‘আর ফলে আকাশ থেকে আগুন এসে কুরবানী ও সাদাকাকে জ্বালিয়ে দেয়।

তাই হে মুহাম্মাদ! তুমি যেহেতু এ মু‘জিযাহ নিয়ে আসনি তাই তোমার প্রতি আমরা ঈমান আনতে পারব না। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিয়েছেন, বলে দাও, আমার পূর্বে অনেক রাসূল তোমাদের দাবী অনুযায়ী প্রমাণসহ এসেছেন তার পরেও তোমরা কেন তাদেরকে হত্যা করেছ? তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা সান্ত্বনা দিচ্ছেন যে, তোমার পূর্বে অনেক রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছে। অতএব তোমাকে মিথ্যা বললে তুমি মন খারাপ কর না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সাথে ইয়াহূদীদের বদ আচরণের পরিণাম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
২. ইয়াহূদীরা অনেক নাবীকে হত্যা করেছে।
৩. ইয়াহূদীদের দাবী মিথ্যা প্রমাণিত হল।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধৈর্যের ওপর অটল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
3:183
اَلَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ عَہِدَ اِلَیۡنَاۤ اَلَّا نُؤۡمِنَ لِرَسُوۡلٍ حَتّٰی یَاۡتِیَنَا بِقُرۡبَانٍ تَاۡکُلُہُ النَّارُ ؕ قُلۡ قَدۡ جَآءَکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡ قَبۡلِیۡ بِالۡبَیِّنٰتِ وَ بِالَّذِیۡ قُلۡتُمۡ فَلِمَ قَتَلۡتُمُوۡہُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۸۳
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮১-১৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নূযুল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন
(
مَنْ ذَا الَّذِيْ يُقْرِضُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا.... )
যে ব্যক্তি আল্লাহকে করযে হাসানা দেবে তিনি তাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেবেন” এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন ইয়াহূদীরা বলতে লাগল, হে মুহাম্মাদ! তোমার রব ফকির হয়ে গেছে। তাঁর বান্দাদের কাছে ঋণ চায়। তখন
(
لَقَدْ سَمِعَ اللّٰهُ قَوْلَ الَّذِيْنَ.... )
এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল কাদীর, পৃঃ ৭৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ يَدُ اللّٰهِ مَغْلُوْلَةٌ)
ইয়াহূদীরা বলে, আল্লাহর হাত রুদ্ধ” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাবে বলছেন:
(
غُلَّتْ اَیْدِیْھِمْ وَلُعِنُوْا بِمَا قَالُوْاﺭ بَلْ یَدٰھُ مَبْسُوْطَتٰنِﺫ یُنْفِقُ کَیْفَ یَشَا۬ئُﺚ وَلَیَزِیْدَنَّ کَثِیْرًا)
তারাই রুদ্ধহস্ত এবং এরা যা বলে তজ্জন্য এরা অভিশপ্ত, বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত; যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
(
سَنَكْتُبُ مَا قَالُوْا)
এর সবই আমি লিপিবদ্ধ করব” অর্থাৎ পূর্বে উল্লিখিত আল্লাহ তা‘আলার শানে বেআদবীমূলক উক্তি এবং তাদের পূর্বপুরুষদের অন্যায়ভাবে নাবীদের হত্যা ইত্যাদি যাবতীয় পাপ আল্লাহ তা‘আলার নিকট লিপিবদ্ধ রয়েছে।
পরকালে এসব অপকর্মের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নামে দেবেন।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন যারা বলে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন যে, তোমরা কেবল সে রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে যার দু‘আর ফলে আকাশ থেকে আগুন এসে কুরবানী ও সাদাকাকে জ্বালিয়ে দেয়।

তাই হে মুহাম্মাদ! তুমি যেহেতু এ মু‘জিযাহ নিয়ে আসনি তাই তোমার প্রতি আমরা ঈমান আনতে পারব না। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিয়েছেন, বলে দাও, আমার পূর্বে অনেক রাসূল তোমাদের দাবী অনুযায়ী প্রমাণসহ এসেছেন তার পরেও তোমরা কেন তাদেরকে হত্যা করেছ? তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা সান্ত্বনা দিচ্ছেন যে, তোমার পূর্বে অনেক রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছে। অতএব তোমাকে মিথ্যা বললে তুমি মন খারাপ কর না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সাথে ইয়াহূদীদের বদ আচরণের পরিণাম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
২. ইয়াহূদীরা অনেক নাবীকে হত্যা করেছে।
৩. ইয়াহূদীদের দাবী মিথ্যা প্রমাণিত হল।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধৈর্যের ওপর অটল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
3:184
فَاِنۡ کَذَّبُوۡکَ فَقَدۡ کُذِّبَ رُسُلٌ مِّنۡ قَبۡلِکَ جَآءُوۡ بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ وَ الۡکِتٰبِ الۡمُنِیۡرِ ﴿۱۸۴
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮১-১৮৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নূযুল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন
(
مَنْ ذَا الَّذِيْ يُقْرِضُ اللّٰهَ قَرْضًا حَسَنًا.... )
যে ব্যক্তি আল্লাহকে করযে হাসানা দেবে তিনি তাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেবেন” এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন ইয়াহূদীরা বলতে লাগল, হে মুহাম্মাদ! তোমার রব ফকির হয়ে গেছে। তাঁর বান্দাদের কাছে ঋণ চায়। তখন
(
لَقَدْ سَمِعَ اللّٰهُ قَوْلَ الَّذِيْنَ.... )
এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (ফাতহুল কাদীর, পৃঃ ৭৯)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ يَدُ اللّٰهِ مَغْلُوْلَةٌ)
ইয়াহূদীরা বলে, আল্লাহর হাত রুদ্ধ” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)

আল্লাহ তা‘আলা তাদের জবাবে বলছেন:
(
غُلَّتْ اَیْدِیْھِمْ وَلُعِنُوْا بِمَا قَالُوْاﺭ بَلْ یَدٰھُ مَبْسُوْطَتٰنِﺫ یُنْفِقُ کَیْفَ یَشَا۬ئُﺚ وَلَیَزِیْدَنَّ کَثِیْرًا)
তারাই রুদ্ধহস্ত এবং এরা যা বলে তজ্জন্য এরা অভিশপ্ত, বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত; যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন।” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৪)
(
سَنَكْتُبُ مَا قَالُوْا)

এর সবই আমি লিপিবদ্ধ করব” অর্থাৎ পূর্বে উল্লিখিত আল্লাহ তা‘আলার শানে বেআদবীমূলক উক্তি এবং তাদের পূর্বপুরুষদের অন্যায়ভাবে নাবীদের হত্যা ইত্যাদি যাবতীয় পাপ আল্লাহ তা‘আলার নিকট লিপিবদ্ধ রয়েছে।

পরকালে এসব অপকর্মের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নামে দেবেন।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন যারা বলে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন যে, তোমরা কেবল সে রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে যার দু‘আর ফলে আকাশ থেকে আগুন এসে কুরবানী ও সাদাকাকে জ্বালিয়ে দেয়।

তাই হে মুহাম্মাদ! তুমি যেহেতু এ মু‘জিযাহ নিয়ে আসনি তাই তোমার প্রতি আমরা ঈমান আনতে পারব না। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিয়েছেন, বলে দাও, আমার পূর্বে অনেক রাসূল তোমাদের দাবী অনুযায়ী প্রমাণসহ এসেছেন তার পরেও তোমরা কেন তাদেরকে হত্যা করেছ? তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা সান্ত্বনা দিচ্ছেন যে, তোমার পূর্বে অনেক রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়েছে। অতএব তোমাকে মিথ্যা বললে তুমি মন খারাপ কর না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সাথে ইয়াহূদীদের বদ আচরণের পরিণাম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
২. ইয়াহূদীরা অনেক নাবীকে হত্যা করেছে।
৩. ইয়াহূদীদের দাবী মিথ্যা প্রমাণিত হল।
৪. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ধৈর্যের ওপর অটল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
3:185
کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ ؕ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ ﴿۱۸۵
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮৫-১৮৬ নং আয়াতের তাফসীর:
زُحْزِحَ যাকে নাজাত দেয়া হল।
আল্লাহ তা‘আলা সারা জাহানের মাখলুকাতকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে, প্রত্যেক আত্মা মৃত্যু বরণ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ)

ভূপৃষ্টে যা কিছু আছে সমস্তই ধ্বংসশীল।’ (সূরা আর রহমান ৫৫:২৬)
তোমাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে” মু’মিনদের প্রতিদান হলো জান্নাত আর কাফিরদের প্রতিদান হলো জাহান্নাম। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তিকে আনন্দ দেয় যে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে সে যেন সাক্ষ্য দেয়- আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর (বান্দা ও) রাসূল। আর সে যা নিজের জন্য পছন্দ করে তা অপরের জন্যও পছন্দ করবে। (তিরমিযী হা: ৩২৯২, সহীহ)
আয়াতে কয়েকটি বিষয় বর্ণিত হয়েছে:
১. মৃত্যু এমন ধ্র“ব সত্য বিষয় যে, তা থেকে নিস্কৃতির কোন উপায় নেই।
২. দুনিয়াতে ভালমন্দ যে যাই করুক না কেন, তাকে তার পরিপূর্ণ প্রতিদান পরকালে প্রদান করা হবে।
৩. প্রকৃত সফলতা সেই অর্জন করতে পেরেছে যে দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে স্বীয় প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে। যার ফলস্বরূপ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে।
৪. পার্থিব জীবন হল ধোঁকার জীবন। এ ধোঁকা থেকে যে নিজেকে বাঁচিয়ে নিতে পারবে, সেই হবে সবচেয়ে ভাগ্যবান।
অতএব যখন মৃত্যুবরণ করতেই হবে, সকল কর্মের হিসাব দিতেই হবে তখন আমাদের পরকালের নাজাতের যথাযথ পাথেয় অর্জন করা উচিত।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে, মু’মিনদের জানে ও মালে পরীক্ষা করবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَلَنَبْلُوَنَّکُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَالْاَنْفُسِ وَالثَّمَرٰتِﺚ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَ)
এবং নিশ্চয়ই আমি পরীক্ষা করব তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ ও শস্যের ঘাটতি কোন একটি দ্বারা। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর।” (সূরা বাকারাহ ২:১৫৫)

(
وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتٰبَ....)
আহলে কিতাব তথা ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানগণ বিভিন্নভাবে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবাদেরকে নিন্দা ও গালিগালাজ করত। মুশরিকরাও এরূপ জঘন্য কাজে লিপ্ত ছিল। তাছাড়া নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আগমন করলেন মুনাফিকরা বিশেষত তাদের সর্দার আবদুল্লাহ বিন উবাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যাপারে তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করে বেড়াত।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আগমনের পূর্বে মদীনাবাসী তাদের সর্দার ইবনু উবাই এর মাথায় সর্দারীর মুকুট পরানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে নিয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের কারণে তার এ স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। এতে সে চরমভাবে আঘাত পায়। তাই প্রতিশোধ গ্রহণের নিমিত্তে এ লোকটি সুযোগ পেলে তা হাত-ছাড়া করত না। এরূপ পরিস্থিতিতে মুসলিমদেরকে ক্ষমা ও ধৈর্য এবং আল্লাহভীরুতার পথ অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৬)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দুনিয়ার জীবন প্রতিদানের জীবন নয় বরং আমলের জীবন।
২. প্রকৃত সফলতার পরিচয় জানতে পারলাম।
৩. পরীক্ষায় নিপতিত হলে ধৈর্য ধারণ করা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
3:186
لَتُبۡلَوُنَّ فِیۡۤ اَمۡوَالِکُمۡ وَ اَنۡفُسِکُمۡ ۟ وَ لَتَسۡمَعُنَّ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ وَ مِنَ الَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡۤا اَذًی کَثِیۡرًا ؕ وَ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا فَاِنَّ ذٰلِکَ مِنۡ عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ ﴿۱۸۶
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮৫-১৮৬ নং আয়াতের তাফসীর:
زُحْزِحَ যাকে নাজাত দেয়া হল।
আল্লাহ তা‘আলা সারা জাহানের মাখলুকাতকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে, প্রত্যেক আত্মা মৃত্যু বরণ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ)
ভূপৃষ্টে যা কিছু আছে সমস্তই ধ্বংসশীল।’ (সূরা আর রহমান ৫৫:২৬)

তোমাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে” মু’মিনদের প্রতিদান হলো জান্নাত আর কাফিরদের প্রতিদান হলো জাহান্নাম। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তিকে আনন্দ দেয় যে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে সে যেন সাক্ষ্য দেয়- আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর (বান্দা ও) রাসূল। আর সে যা নিজের জন্য পছন্দ করে তা অপরের জন্যও পছন্দ করবে। (তিরমিযী হা: ৩২৯২, সহীহ)
আয়াতে কয়েকটি বিষয় বর্ণিত হয়েছে:
১. মৃত্যু এমন ধ্র“ব সত্য বিষয় যে, তা থেকে নিস্কৃতির কোন উপায় নেই।
২. দুনিয়াতে ভালমন্দ যে যাই করুক না কেন, তাকে তার পরিপূর্ণ প্রতিদান পরকালে প্রদান করা হবে।
৩. প্রকৃত সফলতা সেই অর্জন করতে পেরেছে যে দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে স্বীয় প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে। যার ফলস্বরূপ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে।
৪. পার্থিব জীবন হল ধোঁকার জীবন। এ ধোঁকা থেকে যে নিজেকে বাঁচিয়ে নিতে পারবে, সেই হবে সবচেয়ে ভাগ্যবান।

অতএব যখন মৃত্যুবরণ করতেই হবে, সকল কর্মের হিসাব দিতেই হবে তখন আমাদের পরকালের নাজাতের যথাযথ পাথেয় অর্জন করা উচিত।

তারপর আল্লাহ তা‘আলা হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে, মু’মিনদের জানে ও মালে পরীক্ষা করবেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَلَنَبْلُوَنَّکُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَالْاَنْفُسِ وَالثَّمَرٰتِﺚ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَ)
এবং নিশ্চয়ই আমি পরীক্ষা করব তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ ও শস্যের ঘাটতি কোন একটি দ্বারা। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর।” (সূরা বাকারাহ ২:১৫৫)

(
وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتٰبَ....)
আহলে কিতাব তথা ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানগণ বিভিন্নভাবে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবাদেরকে নিন্দা ও গালিগালাজ করত। মুশরিকরাও এরূপ জঘন্য কাজে লিপ্ত ছিল। তাছাড়া নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আগমন করলেন মুনাফিকরা বিশেষত তাদের সর্দার আবদুল্লাহ বিন উবাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যাপারে তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করে বেড়াত।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আগমনের পূর্বে মদীনাবাসী তাদের সর্দার ইবনু উবাই এর মাথায় সর্দারীর মুকুট পরানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে নিয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের কারণে তার এ স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। এতে সে চরমভাবে আঘাত পায়। তাই প্রতিশোধ গ্রহণের নিমিত্তে এ লোকটি সুযোগ পেলে তা হাত-ছাড়া করত না। এরূপ পরিস্থিতিতে মুসলিমদেরকে ক্ষমা ও ধৈর্য এবং আল্লাহভীরুতার পথ অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৬৬)

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দুনিয়ার জীবন প্রতিদানের জীবন নয় বরং আমলের জীবন।
২. প্রকৃত সফলতার পরিচয় জানতে পারলাম।
৩. পরীক্ষায় নিপতিত হলে ধৈর্য ধারণ করা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
3:187
وَ اِذۡ اَخَذَ اللّٰہُ مِیۡثَاقَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ لَتُبَیِّنُنَّہٗ لِلنَّاسِ وَ لَا تَکۡتُمُوۡنَہٗ ۫ فَنَبَذُوۡہُ وَرَآءَ ظُہُوۡرِہِمۡ وَ اشۡتَرَوۡا بِہٖ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ فَبِئۡسَ مَا یَشۡتَرُوۡنَ ﴿۱۸۷
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮৭-১৮৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
بِمَفَازَةٍ مِّنَ الْعَذَابِ)
আযাব থেকে বেঁচে যাওয়া, আযাবে পাকড়াও না হওয়া।
আলোচ্য আয়াতগুলোতে আহলে কিতাবকে তাদের কৃত অপরাধের কারণে তিরস্কার করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে আল্লাহ তা‘আলা এ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তাঁর কিতাবে (তাওরাত ও ইঞ্জিল) যে কথাগুলো লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং শেষ নাবীর যে গুণাবলী তাতে উল্লেখ হয়েছে সেগুলো তারা মানুষের কাছে বর্ণনা করে দেবে ও তার কোন কিছুই গোপন করবে না। কিন্তু সামান্য পার্থিব স্বার্থের কারণে তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে ফেলে। এখানে আলেম সমাজকেও সতর্ক করা হচ্ছে যে, যে জ্ঞান মানুষের ঈমান ও আকীদাহয় উপকারে আসবে সে জ্ঞান পার্থিব স্বার্থ ও দলের খাতিরে যেন গোপন না করে। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তিকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হল কিন্তু সে তা গোপন করল কিয়ামাতের দিন তাকে জাহান্নামের বেড়ী পরিয়ে দেয়া হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮, তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)

(
لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَفْرَحُوْن....) শানে নুযূল:
সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে অল্প সংখ্যক মুনাফিক ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন যুদ্ধে যেতেন তখন তারা (মুনাফিকরা) তাঁর সাথে যুদ্ধে না গিয়ে পিছনে থেকে যেত। এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে থেকে যেতে পারার কারণে আনন্দিত হত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিরাপদে বিনা যুদ্ধে ফিরে আসলে তারা তাঁর নিকট গিয়ে নানা রকম ওজর-আপত্তি পেশ করত এবং শপথ করত। উপরন্তু তারা চাইত, যে কাজ তারা করেনি তার জন্য তাদের প্রশংসা করা হোক। এ কারণে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৬)

সুতরাং পার্থিব কোন সম্পদের লোভে দীনের সঠিক জ্ঞান গোপন করা কোন মু’মিন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। বরং সর্বদা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
আয়াতের শিক্ষা:
১. সত্য প্রকাশ করার ব্যাপারে আহলে কিতাবের আলেমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলা অঙ্গীকার নিয়েছিলেন।
২. কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য উচিত নয় যে, সে যে কাজ করেনি তার প্রশংসার পাত্র হতে চায়।
৩. জেনে-শুনে সত্য গোপন করা হারাম। এ সত্য যে প্রকারই হোক না কেন।
3:188
لَا تَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ یَفۡرَحُوۡنَ بِمَاۤ اَتَوۡا وَّ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ یُّحۡمَدُوۡا بِمَا لَمۡ یَفۡعَلُوۡا فَلَا تَحۡسَبَنَّہُمۡ بِمَفَازَۃٍ مِّنَ الۡعَذَابِ ۚ وَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۸۸
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮৭-১৮৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
بِمَفَازَةٍ مِّنَ الْعَذَابِ)
আযাব থেকে বেঁচে যাওয়া, আযাবে পাকড়াও না হওয়া।

আলোচ্য আয়াতগুলোতে আহলে কিতাবকে তাদের কৃত অপরাধের কারণে তিরস্কার করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে আল্লাহ তা‘আলা এ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তাঁর কিতাবে (তাওরাত ও ইঞ্জিল) যে কথাগুলো লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং শেষ নাবীর যে গুণাবলী তাতে উল্লেখ হয়েছে সেগুলো তারা মানুষের কাছে বর্ণনা করে দেবে ও তার কোন কিছুই গোপন করবে না। কিন্তু সামান্য পার্থিব স্বার্থের কারণে তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে ফেলে। এখানে আলেম সমাজকেও সতর্ক করা হচ্ছে যে, যে জ্ঞান মানুষের ঈমান ও আকীদাহয় উপকারে আসবে সে জ্ঞান পার্থিব স্বার্থ ও দলের খাতিরে যেন গোপন না করে। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তিকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হল কিন্তু সে তা গোপন করল কিয়ামাতের দিন তাকে জাহান্নামের বেড়ী পরিয়ে দেয়া হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮, তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)

(
لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَفْرَحُوْن....) শানে নুযূল:
সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে অল্প সংখ্যক মুনাফিক ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন যুদ্ধে যেতেন তখন তারা (মুনাফিকরা) তাঁর সাথে যুদ্ধে না গিয়ে পিছনে থেকে যেত। এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে থেকে যেতে পারার কারণে আনন্দিত হত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিরাপদে বিনা যুদ্ধে ফিরে আসলে তারা তাঁর নিকট গিয়ে নানা রকম ওজর-আপত্তি পেশ করত এবং শপথ করত। উপরন্তু তারা চাইত, যে কাজ তারা করেনি তার জন্য তাদের প্রশংসা করা হোক। এ কারণে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৬)

সুতরাং পার্থিব কোন সম্পদের লোভে দীনের সঠিক জ্ঞান গোপন করা কোন মু’মিন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। বরং সর্বদা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
আয়াতের শিক্ষা:
১. সত্য প্রকাশ করার ব্যাপারে আহলে কিতাবের আলেমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলা অঙ্গীকার নিয়েছিলেন।
২. কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য উচিত নয় যে, সে যে কাজ করেনি তার প্রশংসার পাত্র হতে চায়।
৩. জেনে-শুনে সত্য গোপন করা হারাম। এ সত্য যে প্রকারই হোক না কেন।
3:189
وَ لِلّٰہِ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۸۹﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৮৭-১৮৯ নং আয়াতের তাফসীর:
(
بِمَفَازَةٍ مِّنَ الْعَذَابِ)
আযাব থেকে বেঁচে যাওয়া, আযাবে পাকড়াও না হওয়া।

আলোচ্য আয়াতগুলোতে আহলে কিতাবকে তাদের কৃত অপরাধের কারণে তিরস্কার করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে আল্লাহ তা‘আলা এ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তাঁর কিতাবে (তাওরাত ও ইঞ্জিল) যে কথাগুলো লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং শেষ নাবীর যে গুণাবলী তাতে উল্লেখ হয়েছে সেগুলো তারা মানুষের কাছে বর্ণনা করে দেবে ও তার কোন কিছুই গোপন করবে না। কিন্তু সামান্য পার্থিব স্বার্থের কারণে তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে ফেলে। এখানে আলেম সমাজকেও সতর্ক করা হচ্ছে যে, যে জ্ঞান মানুষের ঈমান ও আকীদাহয় উপকারে আসবে সে জ্ঞান পার্থিব স্বার্থ ও দলের খাতিরে যেন গোপন না করে। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তিকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হল কিন্তু সে তা গোপন করল কিয়ামাতের দিন তাকে জাহান্নামের বেড়ী পরিয়ে দেয়া হবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৫৮, তিরমিযী হা: ২৬৪৯, সহীহ)
(
لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَفْرَحُوْن....) শানে নুযূল:
সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে অল্প সংখ্যক মুনাফিক ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন যুদ্ধে যেতেন তখন তারা (মুনাফিকরা) তাঁর সাথে যুদ্ধে না গিয়ে পিছনে থেকে যেত। এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে থেকে যেতে পারার কারণে আনন্দিত হত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিরাপদে বিনা যুদ্ধে ফিরে আসলে তারা তাঁর নিকট গিয়ে নানা রকম ওজর-আপত্তি পেশ করত এবং শপথ করত। উপরন্তু তারা চাইত, যে কাজ তারা করেনি তার জন্য তাদের প্রশংসা করা হোক। এ কারণে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৬)

সুতরাং পার্থিব কোন সম্পদের লোভে দীনের সঠিক জ্ঞান গোপন করা কোন মু’মিন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। বরং সর্বদা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
আয়াতের শিক্ষা:
১. সত্য প্রকাশ করার ব্যাপারে আহলে কিতাবের আলেমদের থেকে আল্লাহ তা‘আলা অঙ্গীকার নিয়েছিলেন।
২. কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য উচিত নয় যে, সে যে কাজ করেনি তার প্রশংসার পাত্র হতে চায়।
৩. জেনে-শুনে সত্য গোপন করা হারাম। এ সত্য যে প্রকারই হোক না কেন।
3:190
اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ﴿۱۹۰﴾ۚۙ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯০-১৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা আকাশমণ্ডলী ও জমিনের সৃষ্টি ও বিশ্ব জাহানের অন্যান্য রহস্য এবং গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে তারা বিশ্বের স্রষ্টা এবং তাঁর পরিচালকের পরিচয় সহজেই অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ তা‘আলা এখানে প্রকৃত জ্ঞানীদের পরিচয় তুলে ধরছেন। প্রকৃত জ্ঞানী তারাই যারা বিশ্বাস করে যে, এ বিশাল পৃথিবীর সুনিয়ণ, সুশৃঙ্খল ও সুব্যবস্থাপনা একজন স্রষ্টা ছাড়া হয় না। সে স্রষ্টা হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তিনি অনর্থক আকাশ-জমিন সৃষ্টি করেননি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَا۬ئَ وَالْاَرْضَ وَمَا بَیْنَھُمَا بَاطِلًاﺚ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْاﺆ فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ کَفَرُوْا مِنَ النَّارِ)
আর আমি আসমান, জমিন এবং উভয়ের মধ্যে অবস্থিত কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি; এরূপ ধারণা তো তাদের যারা কাফির। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।” (সূরা সাদ ৩৮:২৭)

তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ তথা তাঁর যিকির করে। এতে অন্তরের যিকির ও মুখের যিকির সবই শামিল। এর অন্তর্ভুক্ত হলো সালাত। কেউ সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করতে না পারলে বসে আদায় করবে, তাতে সক্ষম না হলে শুয়ে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১১১৭)

তারা ঈমান ও সৎ আমলের ওসীলায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে নিজেদের অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাহান্নামের বিভীশিখাময় আগুন থেকে আশ্রয় চায়।

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক বেশি সালাত আদায় করতে থাকলেন। বিলাল আসলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতের জন্য আহ্বান করার জন্য, তিনি এসে দেখেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁদছেন। বিলাল (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলা তো আপনার অগ্র-পশ্চাত সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন (তার পরেও এত সালাত আদায় করেন কেন?) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: হে বিলাল! আমি কি আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হবনা। অথচ এ রাতে আমার ওপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির জন্য দুর্ভোগ যে এ আয়াত তেলাওয়াত করল কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করল না। (সিলসিলা সহীহাহ হা: ৬৮)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাতে আমি আমার খালা মায়মুনার নিকট ছিলাম। রাতের বেলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীর (মায়মুনা) সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে তিনি (ঘুম থেকে) উঠে বসলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন

(
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ.... لَاٰيٰتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ)
তারপর ওযূ ও মিসওয়াক করলেন এবং এগার রাকাআত সালাত আদায় করলেন। পরে বেলাল আযান দিলে দু‘রাকআত সালাত পড়ে মাসজিদে আসেন এবং ফজর সালাত আদায় করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৮)

অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন: আমি স্থির করলাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করা দেখবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল। তিনি সেটার লম্বালম্বি দিকে ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরা আলি-ইমরানের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। ....পূর্ণ হাদীস। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৭০, সহীহ মুসলিম হা: ৭৬৩)

সুতরাং তারাই প্রকৃত জ্ঞানী যারা আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে স্রষ্টাকে চেনার জন্য, যারা সর্বদা স্রষ্টাকে স্মরণ করে, স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনে এবং সৎ আমলের মাধ্যমে কৃত অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।
২. তাহাজ্জুদের সময় এ আয়াত পাঠ করা মুস্তাহাব।
৩. বসে, দাঁড়িয়ে, শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির করা মুস্তাহাব।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া আবশ্যক।
৫. সৎ আমলের ওয়াসীলা করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাওয়া অন্যতম সুন্দর একটি মাধ্যম।
3:191
الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰہَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِہِمۡ وَ یَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ ہٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۱۹۱
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯০-১৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা আকাশমণ্ডলী ও জমিনের সৃষ্টি ও বিশ্ব জাহানের অন্যান্য রহস্য এবং গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে তারা বিশ্বের স্রষ্টা এবং তাঁর পরিচালকের পরিচয় সহজেই অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ তা‘আলা এখানে প্রকৃত জ্ঞানীদের পরিচয় তুলে ধরছেন। প্রকৃত জ্ঞানী তারাই যারা বিশ্বাস করে যে, এ বিশাল পৃথিবীর সুনিয়ণ, সুশৃঙ্খল ও সুব্যবস্থাপনা একজন স্রষ্টা ছাড়া হয় না। সে স্রষ্টা হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তিনি অনর্থক আকাশ-জমিন সৃষ্টি করেননি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَا۬ئَ وَالْاَرْضَ وَمَا بَیْنَھُمَا بَاطِلًاﺚ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْاﺆ فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ کَفَرُوْا مِنَ النَّارِ)
আর আমি আসমান, জমিন এবং উভয়ের মধ্যে অবস্থিত কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি; এরূপ ধারণা তো তাদের যারা কাফির। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।” (সূরা সাদ ৩৮:২৭)

তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ তথা তাঁর যিকির করে। এতে অন্তরের যিকির ও মুখের যিকির সবই শামিল। এর অন্তর্ভুক্ত হলো সালাত। কেউ সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করতে না পারলে বসে আদায় করবে, তাতে সক্ষম না হলে শুয়ে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১১১৭)

তারা ঈমান ও সৎ আমলের ওসীলায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে নিজেদের অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাহান্নামের বিভীশিখাময় আগুন থেকে আশ্রয় চায়।

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক বেশি সালাত আদায় করতে থাকলেন। বিলাল আসলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতের জন্য আহ্বান করার জন্য, তিনি এসে দেখেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁদছেন। বিলাল (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলা তো আপনার অগ্র-পশ্চাত সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন (তার পরেও এত সালাত আদায় করেন কেন?) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: হে বিলাল! আমি কি আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হবনা। অথচ এ রাতে আমার ওপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির জন্য দুর্ভোগ যে এ আয়াত তেলাওয়াত করল কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করল না। (সিলসিলা সহীহাহ হা: ৬৮)

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাতে আমি আমার খালা মায়মুনার নিকট ছিলাম। রাতের বেলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীর (মায়মুনা) সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে তিনি (ঘুম থেকে) উঠে বসলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন
(
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ.... لَاٰيٰتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ)
তারপর ওযূ ও মিসওয়াক করলেন এবং এগার রাকাআত সালাত আদায় করলেন। পরে বেলাল আযান দিলে দু‘রাকআত সালাত পড়ে মাসজিদে আসেন এবং ফজর সালাত আদায় করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৮)

অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন: আমি স্থির করলাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করা দেখবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল। তিনি সেটার লম্বালম্বি দিকে ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরা আলি-ইমরানের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। ....পূর্ণ হাদীস। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৭০, সহীহ মুসলিম হা: ৭৬৩)

সুতরাং তারাই প্রকৃত জ্ঞানী যারা আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে স্রষ্টাকে চেনার জন্য, যারা সর্বদা স্রষ্টাকে স্মরণ করে, স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনে এবং সৎ আমলের মাধ্যমে কৃত অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।
২. তাহাজ্জুদের সময় এ আয়াত পাঠ করা মুস্তাহাব।
৩. বসে, দাঁড়িয়ে, শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির করা মুস্তাহাব।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া আবশ্যক।
৫. সৎ আমলের ওয়াসীলা করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাওয়া অন্যতম সুন্দর একটি মাধ্যম।
3:192
رَبَّنَاۤ اِنَّکَ مَنۡ تُدۡخِلِ النَّارَ فَقَدۡ اَخۡزَیۡتَہٗ ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ ﴿۱۹۲
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯০-১৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা আকাশমণ্ডলী ও জমিনের সৃষ্টি ও বিশ্ব জাহানের অন্যান্য রহস্য এবং গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে তারা বিশ্বের স্রষ্টা এবং তাঁর পরিচালকের পরিচয় সহজেই অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ তা‘আলা এখানে প্রকৃত জ্ঞানীদের পরিচয় তুলে ধরছেন। প্রকৃত জ্ঞানী তারাই যারা বিশ্বাস করে যে, এ বিশাল পৃথিবীর সুনিয়ণ, সুশৃঙ্খল ও সুব্যবস্থাপনা একজন স্রষ্টা ছাড়া হয় না। সে স্রষ্টা হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তিনি অনর্থক আকাশ-জমিন সৃষ্টি করেননি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَا۬ئَ وَالْاَرْضَ وَمَا بَیْنَھُمَا بَاطِلًاﺚ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْاﺆ فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ کَفَرُوْا مِنَ النَّارِ)
আর আমি আসমান, জমিন এবং উভয়ের মধ্যে অবস্থিত কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি; এরূপ ধারণা তো তাদের যারা কাফির। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।” (সূরা সাদ ৩৮:২৭)

তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ তথা তাঁর যিকির করে। এতে অন্তরের যিকির ও মুখের যিকির সবই শামিল। এর অন্তর্ভুক্ত হলো সালাত। কেউ সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করতে না পারলে বসে আদায় করবে, তাতে সক্ষম না হলে শুয়ে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১১১৭)

তারা ঈমান ও সৎ আমলের ওসীলায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে নিজেদের অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাহান্নামের বিভীশিখাময় আগুন থেকে আশ্রয় চায়।

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক বেশি সালাত আদায় করতে থাকলেন। বিলাল আসলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতের জন্য আহ্বান করার জন্য, তিনি এসে দেখেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁদছেন। বিলাল (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলা তো আপনার অগ্র-পশ্চাত সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন (তার পরেও এত সালাত আদায় করেন কেন?) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: হে বিলাল! আমি কি আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হবনা। অথচ এ রাতে আমার ওপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির জন্য দুর্ভোগ যে এ আয়াত তেলাওয়াত করল কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করল না। (সিলসিলা সহীহাহ হা: ৬৮)

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাতে আমি আমার খালা মায়মুনার নিকট ছিলাম। রাতের বেলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীর (মায়মুনা) সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে তিনি (ঘুম থেকে) উঠে বসলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন
(
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ.... لَاٰيٰتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ)
তারপর ওযূ ও মিসওয়াক করলেন এবং এগার রাকাআত সালাত আদায় করলেন। পরে বেলাল আযান দিলে দু‘রাকআত সালাত পড়ে মাসজিদে আসেন এবং ফজর সালাত আদায় করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৮)
অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন: আমি স্থির করলাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করা দেখবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল। তিনি সেটার লম্বালম্বি দিকে ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরা আলি-ইমরানের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। ....পূর্ণ হাদীস। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৭০, সহীহ মুসলিম হা: ৭৬৩)

সুতরাং তারাই প্রকৃত জ্ঞানী যারা আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে স্রষ্টাকে চেনার জন্য, যারা সর্বদা স্রষ্টাকে স্মরণ করে, স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনে এবং সৎ আমলের মাধ্যমে কৃত অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।
২. তাহাজ্জুদের সময় এ আয়াত পাঠ করা মুস্তাহাব।
৩. বসে, দাঁড়িয়ে, শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির করা মুস্তাহাব।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া আবশ্যক।
৫. সৎ আমলের ওয়াসীলা করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাওয়া অন্যতম সুন্দর একটি মাধ্যম।
3:193
رَبَّنَاۤ اِنَّنَا سَمِعۡنَا مُنَادِیًا یُّنَادِیۡ لِلۡاِیۡمَانِ اَنۡ اٰمِنُوۡا بِرَبِّکُمۡ فَاٰمَنَّا ٭ۖ رَبَّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ کَفِّرۡ عَنَّا سَیِّاٰتِنَا وَ تَوَفَّنَا مَعَ الۡاَبۡرَارِ ﴿۱۹۳﴾ۚ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯০-১৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা আকাশমণ্ডলী ও জমিনের সৃষ্টি ও বিশ্ব জাহানের অন্যান্য রহস্য এবং গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে তারা বিশ্বের স্রষ্টা এবং তাঁর পরিচালকের পরিচয় সহজেই অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ তা‘আলা এখানে প্রকৃত জ্ঞানীদের পরিচয় তুলে ধরছেন। প্রকৃত জ্ঞানী তারাই যারা বিশ্বাস করে যে, এ বিশাল পৃথিবীর সুনিয়ণ, সুশৃঙ্খল ও সুব্যবস্থাপনা একজন স্রষ্টা ছাড়া হয় না। সে স্রষ্টা হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তিনি অনর্থক আকাশ-জমিন সৃষ্টি করেননি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَا۬ئَ وَالْاَرْضَ وَمَا بَیْنَھُمَا بَاطِلًاﺚ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْاﺆ فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ کَفَرُوْا مِنَ النَّارِ)
আর আমি আসমান, জমিন এবং উভয়ের মধ্যে অবস্থিত কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি; এরূপ ধারণা তো তাদের যারা কাফির। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।” (সূরা সাদ ৩৮:২৭)

তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ তথা তাঁর যিকির করে। এতে অন্তরের যিকির ও মুখের যিকির সবই শামিল। এর অন্তর্ভুক্ত হলো সালাত। কেউ সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করতে না পারলে বসে আদায় করবে, তাতে সক্ষম না হলে শুয়ে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১১১৭)

তারা ঈমান ও সৎ আমলের ওসীলায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে নিজেদের অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাহান্নামের বিভীশিখাময় আগুন থেকে আশ্রয় চায়।

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক বেশি সালাত আদায় করতে থাকলেন। বিলাল আসলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতের জন্য আহ্বান করার জন্য, তিনি এসে দেখেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁদছেন। বিলাল (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলা তো আপনার অগ্র-পশ্চাত সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন (তার পরেও এত সালাত আদায় করেন কেন?) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: হে বিলাল! আমি কি আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হবনা। অথচ এ রাতে আমার ওপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির জন্য দুর্ভোগ যে এ আয়াত তেলাওয়াত করল কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করল না। (সিলসিলা সহীহাহ হা: ৬৮)

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাতে আমি আমার খালা মায়মুনার নিকট ছিলাম। রাতের বেলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীর (মায়মুনা) সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে তিনি (ঘুম থেকে) উঠে বসলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন
(
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ.... لَاٰيٰتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ)
তারপর ওযূ ও মিসওয়াক করলেন এবং এগার রাকাআত সালাত আদায় করলেন। পরে বেলাল আযান দিলে দু‘রাকআত সালাত পড়ে মাসজিদে আসেন এবং ফজর সালাত আদায় করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৮)

অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন: আমি স্থির করলাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করা দেখবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল। তিনি সেটার লম্বালম্বি দিকে ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরা আলি-ইমরানের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। ....পূর্ণ হাদীস। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৭০, সহীহ মুসলিম হা: ৭৬৩)

সুতরাং তারাই প্রকৃত জ্ঞানী যারা আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে স্রষ্টাকে চেনার জন্য, যারা সর্বদা স্রষ্টাকে স্মরণ করে, স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনে এবং সৎ আমলের মাধ্যমে কৃত অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।
২. তাহাজ্জুদের সময় এ আয়াত পাঠ করা মুস্তাহাব।
৩. বসে, দাঁড়িয়ে, শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির করা মুস্তাহাব।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া আবশ্যক।
৫. সৎ আমলের ওয়াসীলা করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাওয়া অন্যতম সুন্দর একটি মাধ্যম।
3:194
رَبَّنَا وَ اٰتِنَا مَا وَعَدۡتَّنَا عَلٰی رُسُلِکَ وَ لَا تُخۡزِنَا یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اِنَّکَ لَا تُخۡلِفُ الۡمِیۡعَادَ ﴿۱۹۴
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID ১৯০-১৯৪ নং আয়াতের তাফসীর:

যারা আকাশমণ্ডলী ও জমিনের সৃষ্টি ও বিশ্ব জাহানের অন্যান্য রহস্য এবং গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে তারা বিশ্বের স্রষ্টা এবং তাঁর পরিচালকের পরিচয় সহজেই অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ তা‘আলা এখানে প্রকৃত জ্ঞানীদের পরিচয় তুলে ধরছেন। প্রকৃত জ্ঞানী তারাই যারা বিশ্বাস করে যে, এ বিশাল পৃথিবীর সুনিয়ণ, সুশৃঙ্খল ও সুব্যবস্থাপনা একজন স্রষ্টা ছাড়া হয় না। সে স্রষ্টা হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তিনি অনর্থক আকাশ-জমিন সৃষ্টি করেননি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَا۬ئَ وَالْاَرْضَ وَمَا بَیْنَھُمَا بَاطِلًاﺚ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْاﺆ فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ کَفَرُوْا مِنَ النَّارِ)
আর আমি আসমান, জমিন এবং উভয়ের মধ্যে অবস্থিত কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি; এরূপ ধারণা তো তাদের যারা কাফির। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।” (সূরা সাদ ৩৮:২৭)

তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ তথা তাঁর যিকির করে। এতে অন্তরের যিকির ও মুখের যিকির সবই শামিল। এর অন্তর্ভুক্ত হলো সালাত। কেউ সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করতে না পারলে বসে আদায় করবে, তাতে সক্ষম না হলে শুয়ে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী হা: ১১১৭)
তারা ঈমান ও সৎ আমলের ওসীলায় আল্লাহ তা‘আলার কাছে নিজেদের অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাহান্নামের বিভীশিখাময় আগুন থেকে আশ্রয় চায়।

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক বেশি সালাত আদায় করতে থাকলেন। বিলাল আসলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতের জন্য আহ্বান করার জন্য, তিনি এসে দেখেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁদছেন। বিলাল (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলা তো আপনার অগ্র-পশ্চাত সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন (তার পরেও এত সালাত আদায় করেন কেন?) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: হে বিলাল! আমি কি আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হবনা। অথচ এ রাতে আমার ওপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন: ঐ ব্যক্তির জন্য দুর্ভোগ যে এ আয়াত তেলাওয়াত করল কিন্তু তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করল না। (সিলসিলা সহীহাহ হা: ৬৮)

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাতে আমি আমার খালা মায়মুনার নিকট ছিলাম। রাতের বেলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীর (মায়মুনা) সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে তিনি (ঘুম থেকে) উঠে বসলেন এবং আকাশের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেন
(
إِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ.... لَاٰيٰتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ)
তারপর ওযূ ও মিসওয়াক করলেন এবং এগার রাকাআত সালাত আদায় করলেন। পরে বেলাল আযান দিলে দু‘রাকআত সালাত পড়ে মাসজিদে আসেন এবং ফজর সালাত আদায় করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪২০৮)
অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন: আমি স্থির করলাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করা দেখবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য একটি বিছানা বিছানো হল। তিনি সেটার লম্বালম্বি দিকে ঘুমালেন। এরপর জাগ্রত হয়ে মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের প্রভাব মুছতে লাগলেন এবং সূরা আলি-ইমরানের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। ....পূর্ণ হাদীস। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৭০, সহীহ মুসলিম হা: ৭৬৩)

সুতরাং তারাই প্রকৃত জ্ঞানী যারা আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে স্রষ্টাকে চেনার জন্য, যারা সর্বদা স্রষ্টাকে স্মরণ করে, স্রষ্টার প্রতি ঈমান আনে এবং সৎ আমলের মাধ্যমে কৃত অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।
২. তাহাজ্জুদের সময় এ আয়াত পাঠ করা মুস্তাহাব।
৩. বসে, দাঁড়িয়ে, শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার যিকির করা মুস্তাহাব।
৪. আল্লাহ তা‘আলার কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া আবশ্যক।
৫. সৎ আমলের ওয়াসীলা করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে চাওয়া অন্যতম সুন্দর একটি মাধ্যম।
3:195
فَاسۡتَجَابَ لَہُمۡ رَبُّہُمۡ اَنِّیۡ لَاۤ اُضِیۡعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنۡکُمۡ مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی ۚ بَعۡضُکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡضٍ ۚ فَالَّذِیۡنَ ہَاجَرُوۡا وَ اُخۡرِجُوۡا مِنۡ دِیَارِہِمۡ وَ اُوۡذُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِیۡ وَ قٰتَلُوۡا وَ قُتِلُوۡا لَاُکَفِّرَنَّ عَنۡہُمۡ سَیِّاٰتِہِمۡ وَ لَاُدۡخِلَنَّہُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ۚ ثَوَابًا مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ عِنۡدَہٗ حُسۡنُ الثَّوَابِ ﴿۱۹۵
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯৫ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযুল:
উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ তা‘আলাকে হিজরতের ব্যাপারে মহিলাদের কোন কথা উল্লেখ করতে শুনি না। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী হা: ৩০২৩, সহীহ)
কোন পুরুষ অথবা নারী” এখানে পুরুষের সাথে নারীর কথা উল্লেখ করার কারণ হলো- ইসলামে কোন কোন বিষয়ে নর ও নারীর মধ্যে তাদের উভয়ের প্রাকৃতিক গুণাবলীর ভিন্নতার কারণে কিছু পার্থক্য করা হয়েছে। যেমন কর্তৃত্ব ও নেতৃত্বে, জীবিকা উপার্জনের দায়িত্ব এবং জিহাদে অংশ গ্রহণ ও অর্ধেক মিরাস পাওয়ার ক্ষেত্রে। তাই এ পার্থক্যগুলো দেখে যেন মনে না করে যে, নেক আমলের প্রতিদানেও পুরুষ ও মহিলার মধ্যে পার্থক্য করা হবে। না, বরং প্রত্যেক নেকীর যে প্রতিদান একজন পুরুষকে প্রদান করা হবে সে পরিমাণ প্রতিদান একজন নারীকেও প্রদান করা হবে।
فَاسْتَجَابَ
আল্লাহ তা‘আলা তাদের দু‘আ কবূল করলেন। এখানে তিনি তাদের ৫টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন।
১. যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় হিজরত করে।
২. যাদেরকে শত্র“রা তাদের দেশ থেকে ঈমান আনার কারণে বহিষ্কার করেছে।
৩. যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় কষ্ট দেয়া হয়েছে।
৪. যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে কিতাল (যুদ্ধ) করে।
৫. যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে শহীদ হয়।
যারা এসব বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হবে তাদের জন্য রয়েছে অপরাধসমূহের ক্ষমা, জান্নাতে প্রবেশ এবং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে অশেষ প্রতিদান। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এ সব বৈশিষ্ট্য অর্জন করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হিজরত ও জিহাদের ফযীলত জানলাম।
২. মু’মিন নর ও নারী সবাই আমলের প্রতিদান সমান হারে পাবে।
3:196
لَا یَغُرَّنَّکَ تَقَلُّبُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فِی الۡبِلَادِ ﴿۱۹۶﴾ؕ
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯৬-১৯৮ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলা হলেও উম্মাতের সকলেই এতে শামিল।

দেশে-বিদেশে তাদের (কাফিরদের) অবাধ বিচরণ।” বলতে ব্যবসা-বাণিজ্যর জন্য এক নগরী থেকে অন্য নগরীতে বা এক দেশ হতে অন্য দেশে যাতায়াত করা। এ বাণিজ্য সফর পার্থিব ভোগ্যসামাগ্রী এবং ব্যবসায় প্রসারতার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এগুলো আসলে কিছু দিনের ক্ষণস্থায়ী লাভের সামগ্রী। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: পরকালের তুলনায় দুনিয়া তেমন যেমন তোমাদের কারো আঙ্গুল সাগরে প্রবেশ করালে যতটুকু পরিমাণ পানি আঙ্গুলের মাথায় উঠে, সুতরাং সে কী নিয়ে আসল তা যেন লক্ষ করে। (তিরমিযী হা: ২৩২৩, ইবনু মাযাহ হা: ৪১০৮, সহীহ)

সুতরাং এ ব্যাপারে ঈমানদারদেরকে ধোঁকায় পতিত না হয়ে শেষ পরিণতির প্রতি লক্ষ রাখা উচিত। সে পরিণতি হল ঈমান থেকে বঞ্চিত হলে জাহান্নামের চিরস্থায়ী আযাব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
مَا يُجَادِلُ فِيْٓ اٰيٰتِ اللّٰهِ إِلَّا الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ)
শুধু কাফিররাই আল্লাহর নিদর্শন সম্বন্ধে ঝগড়া করে; সুতরাং শহরগুলোতে তাদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে।” (সূরা মু’মিন ৪০:৪)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(
قُلْ إِنَّ الَّذِيْنَ يَفْتَرُوْنَ عَلَي اللّٰهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُوْنَ - مَتَاعٌ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ إِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ)
বল: ‘যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা সফলকাম হবে না।’ পৃথিবীতে তাদের জন্য আছে কিছু সুখ-সম্ভোগ; পরে আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন।” (সূরা ইউনুস ১০:৬৯-৭০)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(نُمَتِّعُهُمْ قَلِيْلًا ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ إِلٰي عَذَابٍ غَلِيْظٍ)‏
আমি অল্প সময়ের জন্য তাদেরকে সুখ-সম্ভোগ দেব, পুনরায় তাদেরকে বাধ্য করব কঠিন শাস্তি ভোগ করতে।” (সূরা লুকমান ৩১:২৪)
(
الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ)
যারা স্বীয় প্রতিপালককে ভয় করে” কাফিরদের বিপরীতে যদি মু’মিনরা প্রতিপালককে ভয় করে, পরহেযগারী এবং আল্লাহভীরু জীবন যাপন করে, তাঁর সমীপে উপস্থিত হবে- এ বিশ্বাস রাখে, যদিও দুনিয়াতে তাদের কাছে ধন-সম্পদের প্রাচুর্য এবং অঢেল রুযী ছিল না, তবুও তারা সমগ্র বিশ্বের স্রষ্টা এবং তার একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ তা‘আলার মেহমান হবেন এবং যেখানে এ সৎ লোকেরা যে প্রতিদান পাবেন, দুনিয়াতে কাফিররা ক্ষণস্থায়ীভাবে যা পেয়েছে, তাত্থেকে বহুগুণে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ হবে।
لِّلْأَبْرَارِ
বা পুণ্যবানদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত প্রস্তুত করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِيْ نَعِيْمٍ)
নিশ্চয়ই পুণ্যবানগণ নেয়ামতসমূহে অবস্থান করবে” (সূরা ইনফিতার ৮২:১৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّ الْأَبْرَارَ يَشْرَبُوْنَ مِنْ كَأْسٍ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُوْرًا)
নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানীয় যার মিশ্রণ হবে কাফূর (কর্পুর)” (সূরা দাহার ৭৬:৫)

অতএব আমাদের এ গুণে গুণান্বিত হয়ে পরকালীন সফলতা অর্জন করা একান্ত কর্তব্য।
যারা তাদের প্রতিপালককে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় ভয় করতঃ আদেশ পালন ও নিষেধ থেকে বিরত থাকবে তাদের জন্য মেহমানদারীস্বরূপ পরকালে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ বহমান থাকবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিররা যে সুখ ও সাচ্ছন্দে আছে তাতে মু’মিনদের ধোঁকায় পড়া উচিত নয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের জন্য যা তৈরি করে রেখেছেন তা দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সে সব থেকে উত্তম।
3:197
مَتَاعٌ قَلِیۡلٌ ۟ ثُمَّ مَاۡوٰىہُمۡ جَہَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمِہَادُ ﴿۱۹۷
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯৬-১৯৮ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলা হলেও উম্মাতের সকলেই এতে শামিল।
দেশে-বিদেশে তাদের (কাফিরদের) অবাধ বিচরণ।” বলতে ব্যবসা-বাণিজ্যর জন্য এক নগরী থেকে অন্য নগরীতে বা এক দেশ হতে অন্য দেশে যাতায়াত করা। এ বাণিজ্য সফর পার্থিব ভোগ্যসামাগ্রী এবং ব্যবসায় প্রসারতার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এগুলো আসলে কিছু দিনের ক্ষণস্থায়ী লাভের সামগ্রী। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: পরকালের তুলনায় দুনিয়া তেমন যেমন তোমাদের কারো আঙ্গুল সাগরে প্রবেশ করালে যতটুকু পরিমাণ পানি আঙ্গুলের মাথায় উঠে, সুতরাং সে কী নিয়ে আসল তা যেন লক্ষ করে। (তিরমিযী হা: ২৩২৩, ইবনু মাযাহ হা: ৪১০৮, সহীহ)

সুতরাং এ ব্যাপারে ঈমানদারদেরকে ধোঁকায় পতিত না হয়ে শেষ পরিণতির প্রতি লক্ষ রাখা উচিত। সে পরিণতি হল ঈমান থেকে বঞ্চিত হলে জাহান্নামের চিরস্থায়ী আযাব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
مَا يُجَادِلُ فِيْٓ اٰيٰتِ اللّٰهِ إِلَّا الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ)
শুধু কাফিররাই আল্লাহর নিদর্শন সম্বন্ধে ঝগড়া করে; সুতরাং শহরগুলোতে তাদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে।” (সূরা মু’মিন ৪০:৪)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(
قُلْ إِنَّ الَّذِيْنَ يَفْتَرُوْنَ عَلَي اللّٰهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُوْنَ - مَتَاعٌ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ إِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ)
বল: ‘যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা সফলকাম হবে না।’ পৃথিবীতে তাদের জন্য আছে কিছু সুখ-সম্ভোগ; পরে আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন।” (সূরা ইউনুস ১০:৬৯-৭০)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(نُمَتِّعُهُمْ قَلِيْلًا ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ إِلٰي عَذَابٍ غَلِيْظٍ)‏
আমি অল্প সময়ের জন্য তাদেরকে সুখ-সম্ভোগ দেব, পুনরায় তাদেরকে বাধ্য করব কঠিন শাস্তি ভোগ করতে।” (সূরা লুকমান ৩১:২৪)
(
الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ)
যারা স্বীয় প্রতিপালককে ভয় করে” কাফিরদের বিপরীতে যদি মু’মিনরা প্রতিপালককে ভয় করে, পরহেযগারী এবং আল্লাহভীরু জীবন যাপন করে, তাঁর সমীপে উপস্থিত হবে- এ বিশ্বাস রাখে, যদিও দুনিয়াতে তাদের কাছে ধন-সম্পদের প্রাচুর্য এবং অঢেল রুযী ছিল না, তবুও তারা সমগ্র বিশ্বের স্রষ্টা এবং তার একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ তা‘আলার মেহমান হবেন এবং যেখানে এ সৎ লোকেরা যে প্রতিদান পাবেন, দুনিয়াতে কাফিররা ক্ষণস্থায়ীভাবে যা পেয়েছে, তাত্থেকে বহুগুণে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ হবে।
لِّلْأَبْرَارِ
বা পুণ্যবানদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত প্রস্তুত করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِيْ نَعِيْمٍ)
নিশ্চয়ই পুণ্যবানগণ নেয়ামতসমূহে অবস্থান করবে” (সূরা ইনফিতার ৮২:১৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّ الْأَبْرَارَ يَشْرَبُوْنَ مِنْ كَأْسٍ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُوْرًا)
নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানীয় যার মিশ্রণ হবে কাফূর (কর্পুর)” (সূরা দাহার ৭৬:৫)

অতএব আমাদের এ গুণে গুণান্বিত হয়ে পরকালীন সফলতা অর্জন করা একান্ত কর্তব্য।

যারা তাদের প্রতিপালককে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় ভয় করতঃ আদেশ পালন ও নিষেধ থেকে বিরত থাকবে তাদের জন্য মেহমানদারীস্বরূপ পরকালে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ বহমান থাকবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিররা যে সুখ ও সাচ্ছন্দে আছে তাতে মু’মিনদের ধোঁকায় পড়া উচিত নয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের জন্য যা তৈরি করে রেখেছেন তা দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সে সব থেকে উত্তম।
3:198
لٰکِنِ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا رَبَّہُمۡ لَہُمۡ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا نُزُلًا مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ لِّلۡاَبۡرَارِ ﴿۱۹۸
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯৬-১৯৮ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে বলা হলেও উম্মাতের সকলেই এতে শামিল।
দেশে-বিদেশে তাদের (কাফিরদের) অবাধ বিচরণ।” বলতে ব্যবসা-বাণিজ্যর জন্য এক নগরী থেকে অন্য নগরীতে বা এক দেশ হতে অন্য দেশে যাতায়াত করা। এ বাণিজ্য সফর পার্থিব ভোগ্যসামাগ্রী এবং ব্যবসায় প্রসারতার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এগুলো আসলে কিছু দিনের ক্ষণস্থায়ী লাভের সামগ্রী। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: পরকালের তুলনায় দুনিয়া তেমন যেমন তোমাদের কারো আঙ্গুল সাগরে প্রবেশ করালে যতটুকু পরিমাণ পানি আঙ্গুলের মাথায় উঠে, সুতরাং সে কী নিয়ে আসল তা যেন লক্ষ করে। (তিরমিযী হা: ২৩২৩, ইবনু মাযাহ হা: ৪১০৮, সহীহ)

সুতরাং এ ব্যাপারে ঈমানদারদেরকে ধোঁকায় পতিত না হয়ে শেষ পরিণতির প্রতি লক্ষ রাখা উচিত। সে পরিণতি হল ঈমান থেকে বঞ্চিত হলে জাহান্নামের চিরস্থায়ী আযাব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

(
مَا يُجَادِلُ فِيْٓ اٰيٰتِ اللّٰهِ إِلَّا الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ)
শুধু কাফিররাই আল্লাহর নিদর্শন সম্বন্ধে ঝগড়া করে; সুতরাং শহরগুলোতে তাদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে।” (সূরা মু’মিন ৪০:৪)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(
قُلْ إِنَّ الَّذِيْنَ يَفْتَرُوْنَ عَلَي اللّٰهِ الْكَذِبَ لَا يُفْلِحُوْنَ - مَتَاعٌ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ إِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ)
বল: ‘যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা সফলকাম হবে না।’ পৃথিবীতে তাদের জন্য আছে কিছু সুখ-সম্ভোগ; পরে আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন।” (সূরা ইউনুস ১০:৬৯-৭০)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(نُمَتِّعُهُمْ قَلِيْلًا ثُمَّ نَضْطَرُّهُمْ إِلٰي عَذَابٍ غَلِيْظٍ)‏
আমি অল্প সময়ের জন্য তাদেরকে সুখ-সম্ভোগ দেব, পুনরায় তাদেরকে বাধ্য করব কঠিন শাস্তি ভোগ করতে।” (সূরা লুকমান ৩১:২৪)
(
الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ)
যারা স্বীয় প্রতিপালককে ভয় করে” কাফিরদের বিপরীতে যদি মু’মিনরা প্রতিপালককে ভয় করে, পরহেযগারী এবং আল্লাহভীরু জীবন যাপন করে, তাঁর সমীপে উপস্থিত হবে- এ বিশ্বাস রাখে, যদিও দুনিয়াতে তাদের কাছে ধন-সম্পদের প্রাচুর্য এবং অঢেল রুযী ছিল না, তবুও তারা সমগ্র বিশ্বের স্রষ্টা এবং তার একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ তা‘আলার মেহমান হবেন এবং যেখানে এ সৎ লোকেরা যে প্রতিদান পাবেন, দুনিয়াতে কাফিররা ক্ষণস্থায়ীভাবে যা পেয়েছে, তাত্থেকে বহুগুণে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ হবে।
لِّلْأَبْرَارِ
বা পুণ্যবানদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত প্রস্তুত করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِيْ نَعِيْمٍ)
নিশ্চয়ই পুণ্যবানগণ নেয়ামতসমূহে অবস্থান করবে” (সূরা ইনফিতার ৮২:১৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
إِنَّ الْأَبْرَارَ يَشْرَبُوْنَ مِنْ كَأْسٍ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُوْرًا)
নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানীয় যার মিশ্রণ হবে কাফূর (কর্পুর)” (সূরা দাহার ৭৬:৫)
অতএব আমাদের এ গুণে গুণান্বিত হয়ে পরকালীন সফলতা অর্জন করা একান্ত কর্তব্য।

যারা তাদের প্রতিপালককে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় ভয় করতঃ আদেশ পালন ও নিষেধ থেকে বিরত থাকবে তাদের জন্য মেহমানদারীস্বরূপ পরকালে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ বহমান থাকবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিররা যে সুখ ও সাচ্ছন্দে আছে তাতে মু’মিনদের ধোঁকায় পড়া উচিত নয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের জন্য যা তৈরি করে রেখেছেন তা দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সে সব থেকে উত্তম।
3:199
وَ اِنَّ مِنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ لَمَنۡ یُّؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡہِمۡ خٰشِعِیۡنَ لِلّٰہِ ۙ لَا یَشۡتَرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ثَمَنًا قَلِیۡلًا ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ اَجۡرُہُمۡ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ ﴿۱۹۹
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯৯-২০০ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতে আহলে কিতাবের সেই দলের কথা বলা হচ্ছে, যে দল আল্লাহ তা‘আলার প্রতি তাদের কাছে আগত রাসূল ও রিসালাতের প্রতি এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাতের ওপর ঈমান এনে ধন্য হয়েছে। তাদের ঈমান এবং ঈমানী গুণাবলীর কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এমন সব আহলে কিতাব থেকে পৃথক করে দিলেন, যাদের কাজই ছিল ইসলাম, পয়গাম্বর এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা, আল্লাহ তা‘আলার আয়াতের পরিবর্তন ও তার অপব্যাখ্যা করা এবং দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সম্পদ লাভের জন্য দীনকে পরিবর্তন ও প্রকৃত জ্ঞানকে গোপন করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
لَيْسُوْا سَوَا۬ءً ط مِنْ أَهْلِ الْكِتٰبِ أُمَّةٌ قَا۬ئِمَةٌ يَّتْلُوْنَ اٰيٰتِ اللّٰهِ اٰنَا۬ءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ)
তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবের মধ্যে একটি দল রয়েছেন দীনের ওপর অটল। তারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াত তেলাওয়াত করে এবং সিজদা করে।” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১১৩)

ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ আয়াতে আহলে কিতাবের যে সকল মু’মিনদের কথা উল্লিখিত হয়েছে ইয়াহূদীদের মধ্য থেকে তাদের সংখ্যা দশ জনও হবে না, তবে খ্রিস্টানদের মধ্যে বহু সংখ্যক লোক ইসলাম গ্রহণ করে সত্য দীনের অনুসারী হয়েছে। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)

আব্বাদ বিন মানসূর বলেন: এ আয়াত সম্পর্কে হাসান বাসরী (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি বলেন: তারা হল আহলে কিতাব যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পূর্বে ছিল। তারা ইসলাম গ্রহণ করে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণ করছে। তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন।

যে সকল আহলে কিতাবগণ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের অনেক ফযীলত সহীহ হাদীসে প্রমাণিত আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তিন শ্রেণির মানুষকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেয়া হবে। তার মধ্যে একশ্রেণি হল যে সকল আহলে কিতাবগণ তাদের নাবীর ওপর ঈমান এনেছে অতঃপর আমার প্রতি ঈমান এনেছে। (সহীহ বুখারী হা: ৯৭)

اصْبِرُوْا ধৈর্যধারণ করা, অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশ বাস্তবায়নে এবং তাদের নিষেধ পরিত্যাগ করার ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করা।

صَابِرُوْاধৈর্য ধারণে প্রতিযোগিতা কর” যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে শত্র“র মোকাবেলায় অনড় থাকা। এটা হল ধৈর্যের কঠিনতম অবস্থা। এ জন্যই এটাকে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

رَابِطُوْا যুদ্ধের ময়দানে অথবা প্রতিপক্ষের সামনে সংঘবদ্ধভাবে সব সময় সতর্ক ও জিহাদের জন্য প্রস্তুত থাকা। এটাও উচ্চ সাহসিকতা ও বড় উদ্দীপনার কাজ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার পথে একদিন প্রতিরক্ষার কাজে নিযুক্ত থাকা দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম। (সহীহ বুখারী হা: ২৮৯২)
এ ছাড়াও হাদীসে কষ্টের সময়ে সুন্দরভাবে ওযু করা, মাসজিদের দিকে বেশি বেশি পদক্ষেপ ফেলা এবং এক সালাতের পর অপর সালাতের জন্য অপেক্ষা করাকেও রিবাত (জিহাদে প্রতিরক্ষার কাজের ন্যায়) বলা হয়েছে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫১)

আল্লামা জাযায়েরী (রহঃ) বলেন: সৈন্যদলের সাথে সর্বদা ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকা যাতে শত্র“বাহিনী কোনক্রমেই মুসলিম দেশে প্রবেশ করতে না পারে। (আইসারুত তাফাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)

সুতরাং আহলে কিতাবের সবাই সমান নয়, কেউ কেউ তাদের কাছে আগত কিতাবের প্রতি ও রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে এবং শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতিও ঈমান এনেছে। তাদের জন্য সুসংবাদ।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আহলে কিতাবের মধ্যে যারা তাদের নাবী ও শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান এনেছে তাদের মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. ধৈর্য ধারণ ও আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় পাহারা দেয়া ফযীলতের কাজ।
৩. মু’মিনরা সর্বদা শত্র“দের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকবে।
3:200
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اصۡبِرُوۡا وَ صَابِرُوۡا وَ رَابِطُوۡا ۟ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۲۰۰﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ-লাম-মীম।
FATHUL MAJID
১৯৯-২০০ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতে আহলে কিতাবের সেই দলের কথা বলা হচ্ছে, যে দল আল্লাহ তা‘আলার প্রতি তাদের কাছে আগত রাসূল ও রিসালাতের প্রতি এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাতের ওপর ঈমান এনে ধন্য হয়েছে। তাদের ঈমান এবং ঈমানী গুণাবলীর কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এমন সব আহলে কিতাব থেকে পৃথক করে দিলেন, যাদের কাজই ছিল ইসলাম, পয়গাম্বর এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা, আল্লাহ তা‘আলার আয়াতের পরিবর্তন ও তার অপব্যাখ্যা করা এবং দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সম্পদ লাভের জন্য দীনকে পরিবর্তন ও প্রকৃত জ্ঞানকে গোপন করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(
لَيْسُوْا سَوَا۬ءً ط مِنْ أَهْلِ الْكِتٰبِ أُمَّةٌ قَا۬ئِمَةٌ يَّتْلُوْنَ اٰيٰتِ اللّٰهِ اٰنَا۬ءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ)
তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবের মধ্যে একটি দল রয়েছেন দীনের ওপর অটল। তারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াত তেলাওয়াত করে এবং সিজদা করে।” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১১৩)

ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ আয়াতে আহলে কিতাবের যে সকল মু’মিনদের কথা উল্লিখিত হয়েছে ইয়াহূদীদের মধ্য থেকে তাদের সংখ্যা দশ জনও হবে না, তবে খ্রিস্টানদের মধ্যে বহু সংখ্যক লোক ইসলাম গ্রহণ করে সত্য দীনের অনুসারী হয়েছে। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)

আব্বাদ বিন মানসূর বলেন: এ আয়াত সম্পর্কে হাসান বাসরী (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি বলেন: তারা হল আহলে কিতাব যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পূর্বে ছিল। তারা ইসলাম গ্রহণ করে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসরণ করছে। তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন।

যে সকল আহলে কিতাবগণ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের অনেক ফযীলত সহীহ হাদীসে প্রমাণিত আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তিন শ্রেণির মানুষকে দ্বিগুণ প্রতিদান দেয়া হবে। তার মধ্যে একশ্রেণি হল যে সকল আহলে কিতাবগণ তাদের নাবীর ওপর ঈমান এনেছে অতঃপর আমার প্রতি ঈমান এনেছে। (সহীহ বুখারী হা: ৯৭)
اصْبِرُوْا ধৈর্যধারণ করা, অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশ বাস্তবায়নে এবং তাদের নিষেধ পরিত্যাগ করার ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করা।

صَابِرُوْاধৈর্য ধারণে প্রতিযোগিতা কর” যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে শত্র“র মোকাবেলায় অনড় থাকা। এটা হল ধৈর্যের কঠিনতম অবস্থা। এ জন্যই এটাকে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
رَابِطُوْا যুদ্ধের ময়দানে অথবা প্রতিপক্ষের সামনে সংঘবদ্ধভাবে সব সময় সতর্ক ও জিহাদের জন্য প্রস্তুত থাকা। এটাও উচ্চ সাহসিকতা ও বড় উদ্দীপনার কাজ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার পথে একদিন প্রতিরক্ষার কাজে নিযুক্ত থাকা দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম। (সহীহ বুখারী হা: ২৮৯২)

এ ছাড়াও হাদীসে কষ্টের সময়ে সুন্দরভাবে ওযু করা, মাসজিদের দিকে বেশি বেশি পদক্ষেপ ফেলা এবং এক সালাতের পর অপর সালাতের জন্য অপেক্ষা করাকেও রিবাত (জিহাদে প্রতিরক্ষার কাজের ন্যায়) বলা হয়েছে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৫১)
আল্লামা জাযায়েরী (রহঃ) বলেন: সৈন্যদলের সাথে সর্বদা ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকা যাতে শত্র“বাহিনী কোনক্রমেই মুসলিম দেশে প্রবেশ করতে না পারে। (আইসারুত তাফাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)

সুতরাং আহলে কিতাবের সবাই সমান নয়, কেউ কেউ তাদের কাছে আগত কিতাবের প্রতি ও রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে এবং শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতিও ঈমান এনেছে। তাদের জন্য সুসংবাদ।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আহলে কিতাবের মধ্যে যারা তাদের নাবী ও শেষ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান এনেছে তাদের মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. ধৈর্য ধারণ ও আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় পাহারা দেয়া ফযীলতের কাজ।
৩. মু’মিনরা সর্বদা শত্র“দের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকবে।
 আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite

Post a Comment

0 Comments