Subscribe Us

হে পথিক ভবিষ্যৎ বলে কিছু নাই ,আসোল ভবিষ্যৎ হলো পরোকাল

আখিরাত-সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর পার্ট ০2❓

       আখিরাত-সম্পর্কিত---  
পরকাল বিষয়ক প্রবন্ধ_❓ প্রশ্ন উত্তর পার্ট ০2❓

প্রশ্নঃ কিয়ামত সংঘটিত হবে মাগরিবের ছালাতের সময়সেজন্য মাগরিবের ছালাত এগিয়ে দেওয়া হয়েছে’ -এ বক্তব্যের কোন ভিত্তি আছে কি?
 🎤 ANSWER উক্ত বক্তব্য ভিত্তিহীন। তবে জুমআর দিনে ক্বিয়ামত হবে মর্মে ছহীহ হাদীছ রয়েছে (আবুদাঊদ হা/১০৪৬নাসাঈ হা/১৪৩০)
প্রশ্নঃ শরীআত নির্ধারিত দন্ড যেমন ১০০ বেত্রাঘাতহস্তকর্তন ইত্যাদি শাস্তি দুনিয়াতে হয়ে গেলে পরকালে আল্লাহ তাআলা কি পুনরায় শাস্তি দিবেন?
 🎤 ANSWER ইসলামী আদালত কর্তৃক উক্ত দন্ড কার্যকর লে পরকালীন শাস্তির জন্য তা কাফফারা হয়ে যাবে (বুখারী হা/১৮মুসলিম হা/১৭০৯মিশকাত হা/১৮)
প্রশ্নঃ কিয়ামত দিবসে কে কে শাফাআত করার সুযোগ লাভ করবেন?
 🎤 ANSWER  ক্বিয়ামতের দিন যারা শাফাআত করার সুযোগ লাভ করবেনতারা হলেন (নবী-রাসূলগণ (ফেরেশতাগণ (মুমিনগণ (মুসলিম হা/১৮৩মিশকাত হা/৫৫৭৯) (ছিয়াম (কুরআন (বায়হাক্বীমিশকাত হা/১৯৬৩সনদ ছহীহ)এছাড়া()শহীদগণ নিজ পরিবারের ৭০ জনের জন্য শাফাআত করতে পারবেন(আবুদাঊদ হা/২৫২২) তবে হাজী এবং আলেমগণ শাফাআত করার সুযোগ পাবেন মর্মে বর্ণিত হাদীছগুলি মওযূ‘ (যঈফাহ হা/৫০৯১১৯৭৮২১১১) উল্লেখ্য যেক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামে প্রবেশ করার পর মুসলিম কবীরা গোনাহগারদের জান্নাতে নেওয়ার জন্য শাফাআত হবে ‘যারা শিরক না করে মৃত্যুবরণ করেছেন’ (তিরমিযী হা/২৪৩৫,২৪৪১আবুদাঊদইবনু মাজাহমিশকাত হা/৫৫৯৮-৫৬০০)
প্রশ্নঃ মৃতব্যক্তি দুনিয়ার লোকদের কাজকর্ম দেখতে ও শুনতে পায় কি?
 🎤 ANSWER  মৃতব্যক্তি জীবিতদের কর্মকান্ড দেখতে বা তাদের কথাবার্তা শুনতে পায় না। আল্লাহ স্বীয় রাসূল (ছাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি মৃতদেরকে শুনাতে পারেন না’ (নামল ৮০রূম ৫২) অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আপনি কবরবাসীদেরকে শুনাতে সক্ষম নন’ (ফাত্বির ২২) তবে অনেকে রাসূল (ছাঃ)-এর একটি হাদীছ দ্বারা শুনার উপর দলীল পেশ করেছেনযেখানে তিনি বলেছেনমানুষ যখন দাফন সেরে চলে আসেকবরে মৃত ব্যক্তি তাদের সেন্ডেল বা জুতার আওয়ায শুনতে পায় (বুখারীমুসলিমমিশকাত হা/১২৬ ‘ঈমান’ অধ্যায় ‘কবর আযাব’ অনুচ্ছেদ) এর উত্তরে শায়খ আলবানী (রহঃবলেনযখন ফেরেশতাগণের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য মৃত ব্যক্তিকে জীবিত হয়সেসময় সে জুতার আওয়াজ শুনতে পায়অন্য সময়ে নয় (সিলসিলা যঈফাহ হা/১১৪৭-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)
প্রশ্নঃ যারা সন্তান নষ্ট করে দেয় ক্বিয়ামতের দিন তাদের কী অবস্থা হবে?
 🎤 ANSWER সন্তান হত্যা করা মহাপাপ (ইসরা ১৭/৩১) বাসূল (ছাঃএকে বড় গুনাহ্ সমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছেন (মুসলিম হা/৮৬) সুতরাং তওবা না করে মারা গেলে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে (তাকভীর ৮১/-)
প্রশ্নঃ শিরক এবং বিদআতকারীকে আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামতের দিন কেমন শাস্তি দিবেনশিরক ও বিদআত হতে বাঁচার উপায় কি?
 🎤 ANSWER  শিরক  বিদআত দুইটিই জঘন্য অপরাধ। যদি উক্ত পাপ হতে তওবা না করে কেউ মারা যায়তাহলে আল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুনে পুড়িয়ে শাস্তি দিবেন। যেমন শিরক সম্পর্কে আল্লাহ বলেননিশ্চয় যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিবেন। আর তার স্থান হবে জাহান্নামে। আর সীমালংঘনকারীদের জন্য আখেরাতে কোন সাহায্যকারী থাকবে না (মায়েদাহ ৭২) অতঃপর যারা বিদআতী তারা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে পরিত্যাগ করে মানুষের তৈরি বিধানের আনুগত্য করে। যারা আল্লাহ্র রাসূলের বিধান মানবে নাতারা মুমিন হতে পারবে না (নিসা ৬৫) বিদআতীরা হাউয কাওছারের পানি পান করার সুযোগ পাবে না এবং রাসূল (ছাঃ)-এর শাফাআতও পাবে না (মুসলিম হা/৪২৪৩) অবশেষে তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে (নাসাঈ হা/১৫৭৮)
অতএব যাবতীয় কর্ম এবং ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করলে শিরক থেকে বাঁচা সম্ভব। অনুরূপ দলীলবিহীন  জাল-যঈফ হাদীছভিত্তিক আমল ত্যাগ করে শুধু ছহীহ দলীল ভিত্তিক আমল করলে বিদআত থেকে বাঁচা সম্ভব
প্রশ্নঃ পবিত্র কুরআনের হাফেযদেরকে ক্বিয়ামতের দিন যখন কুরআন পড়তে বলা হবেতখন পড়তে পড়তে ভুলে গেলে কোন করণীয় থাকবে কিনা ফেরেশতাগণ বলে দিবেন?
 🎤 ANSWER  যাকে কুরআন পড়তে বলা হবে তিনি পড়তে সক্ষম হবেন। ভুলে যাবেন না 
প্রশ্নঃ যে ব্যক্তির জীবনের প্রথম ও শেষ বাক্য লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ হবে তাকে কোন পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে না। যদিও সে পৃথিবীতে এক হাযার বছর বসবাস করে। উক্ত হাদীছের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাই।
 🎤 ANSWER  উক্ত বর্ণনাটি মিথ্যা বা জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৪৬) বর্ণনাটি ‘তাবলীগী নিছাবে ‘ফাযায়েলে যিকর’ অংশে উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য সেখানেও এটিকে মিথ্যা বলা হয়েছে। কিন্তু মূল উর্দূতে থাকলেও বাংলায় উক্ত অংশের অনুবাদ করা হয়নি (বঙ্গানুবাদ ফাযায়েলে আমলপৃঃ ৪৭৭)
প্রশ্নঃ হাদীছে বর্ণিত আছেমৃত্যুর পরে রূহ ইল্লিয়ীন এবং সিজ্জীনে যায়। সেখানে মানুষ দলবদ্ধভাবে থাকে না এককভাবে থাকে?
 🎤 ANSWER  তাদের মধ্যে পরস্পরে সাক্ষাৎ হবে (হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িমআর-রূহপৃঃ ১৭) সৎ বান্দাদের রূহ ইল্লিয়ীনে এবং পাপীদের রূহ সিজ্জীনে অবস্থান করে। তাদের আমল অনুযায়ী আরাম  শাস্তি ভোগ করে (ফাত্বির -১৮-২১আবুদাঊদ হা/৪৭৫৫মিশকাত হা/১৩১) শহীদদের রূহ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃবলেনতাদের রূহ সবুজ পাখির পেটে থেকে জান্নাতের বিভিন্ন নদী  বাগান থেকে আহার করে (মুসলিম হা/৪৯৯৩)
প্রশ্নঃ ক্বিয়ামতের পূর্বে উল্লেখযোগ্য কী কী নিদর্শন দেখা দিবে?
 🎤 ANSWER  ক্বিয়ামতের পূর্বে প্রকাশিত নিদর্শন সমূহের মধ্যে কিছু ছোট আছে কিছু বড় আছে। ছোট নিদর্শনের সংখ্যা অনেক। কিছু ঘটে গেছে এবং ঘটছে। যেমনশেষ নবী (ছাঃ)-এর আগমনবায়তুল মুক্বাদ্দাস বিজয়ভন্ড নবীদের আবির্ভাবআমানতের খেয়ানতধর্মীয় জ্ঞানের অভাবসূদবাদ্যযন্ত্র  মদ্যপানের বিস্তারবড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতাহত্যাকান্ড বেশি হওয়াশিরকের বিস্তারপ্রতিবেশীর হক নষ্ট করাঅশ্লীলতার ব্যাপকতানীচু লোকদের নেতৃত্ব পাওয়াকাপড় পরিহিতা উলঙ্গ মহিলাদের আবির্ভাবমিথ্যা সাক্ষ্য দেয়াইলম উঠে যাওয়ামূর্খতা  ব্যভিচার বৃদ্ধি পাওয়াপুরুষের স্বল্পতা  নারীদের আধিক্য ইত্যাদি (মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৫৪৩৭বিস্তারিত দ্রঃ মিশকাত ‘ক্বিয়ামতের আলামত সমূহ’ অনুচ্ছেদ)
আর কিছু বড় নিদর্শন আসবে যা এখনো ঘটেনি। যেমনইমাম মাহদীর আগমনদাজ্জালের ফেৎনাঈসা (আঃ)-এর অবতরণইয়াজূজ-মাজূজের ফেৎনাধোঁয়া আসাপশ্চিম দিক থেকে সূর্য উঠাএকটি আলৌকিক পশুর আবির্ভাব ঘটাআগুন মানুষকে হাশরের মাঠে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া (মুসলিমমিশকাত হা/৫৪৬৪)
প্রশ্নঃ  ছহীহ হাদীছে আছেযদি কোন সন্তান শিশু অবস্থায় মারা যায়তাহলে ঐ সন্তান ক্বিয়ামতের দিন পিতা-মাতাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে(মুসলিমমিশকাত হা/১৭৫২)। প্রশ্ন হলঐ পিতা-মাতা যদি ছালাত আদায় না করে এবং শিরক-বিদআতের সাথে জড়িত থাকে তাহলে সেই পিতা-মাতার কী হবে?
 🎤 ANSWER  আল্লাহ তাআলা অনেক বান্দাকে ক্বিয়ামতের দিন সুফারিশের মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার অনুমতি দিবেন (বুখারী হা/৬৫৬৫) কিন্তু সে সুফারিশ তাদের জন্য হবেযারা শিরক থেকে মুক্ত। সুতরাং মুশরিকবিদআতীছালাত আদায় করে না এমন পিতা-মাতার জন্য শিশু সন্তানের সুফারিশ গ্রহণযোগ্য হবে না (আম্বিয়া ২৮বুখারীকিতাবুত তাওহীদ ৭৪-৭৬ পৃঃ)
প্রশ্নঃ মৃত ব্যক্তি কবরে কতদিন শাস্তি ভোগ করবেজনৈক খতীব বলেনক্বিয়ামত পর্যন্ত শাস্তি হতে থাকবে। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
 🎤 ANSWER  উক্ত বক্তব্য সঠিক। দুনিয়ায়ী আমলের ভাল-মন্দের ফলাফল কবর থেকেই শুরু হয়। রাসূল (ছাঃবলেছেনপ্রতিদিন সকালে  সন্ধ্যায় কবরবাসীকে তার জান্নাত অথবা জাহানণামের ঠিকানা দেখানো হয়। ক্বিয়ামত পর্যন্ত এই রূপ হতে থাকবে(মুত্তাফাক্ব আলাইহবুখারী হা/১৩১৩মিশকাত হা/১২৭) ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃবলেনবারযাখী জীবনে (কবরেভাল মন্দের বদলা দেওয়া ক্বিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে (মাজমূ‘ ফাতাওয়া /৫৬মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনে বায ফাতাওয়া নং ৪২৬২
প্রশ্নঃ ইসলামী সম্মেলনে জনৈক বক্তা বলেনকবরে নবী-রাসূলছাহাবায়ে কেরামপীর-আওলিয়াদের লাশ অক্ষত থাকে। তাঁদের লাশ মাটিতে খায় না। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
 🎤 ANSWER  মুমিনদের মৃত্যুর পর তাদের রূহ আসমানে চলে যায় এবং শরীর মাটিতে খেয়ে নেয়। রাসূল (ছাঃবলেনআদমের সকল সন্তানকে মাটিতে খেয়ে নিবে শুধু তার মেরুদন্ডের সর্বনিম্ন হাড্ডি (عَجْبُ الذَّنَبِব্যতীত। কারণ তা থেকেই তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তা থেকেই তাদের দেহ পুনর্গঠন করা হবে’ (মুসলিমমিশকাত হা/৫৫২১)
কিন্তু নবী-রাসূলের লাশ অক্ষত থাকবে। মাটিতে খাবে না। রাসূল (ছাঃবলেনإِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ আল্লাহ তাআলা নবী-রাসূলদের লাশ খাওয়া মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন’ (ছহীহ আবুদাউদ হা/৯৬২ইবনে মাজাহ হা/১০৮৫মিশকাত হা/১৩৬১৬৬ ‘জুম’ অধ্যায়) তাঁরা ব্যতীত অন্য কারো লাশ মাটিতে খাবে না বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। হতে পারে কারো লাশ দ্রুত খাবেকার দেরিতে। অনেকের লাশ বহুদিন পরেও স্বাভাবিক অবস্থায় পাওয়া যায়। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহ্র ইচ্ছাধীন। উল্লেখ্য যেফেরাঊনের লাশকে আল্লাহ তাআলা মানুষের উপদেশ গ্রহণের জন্য ক্বিয়ামত পর্যন্তত অক্ষুণ্ণ রাখবেন (ইউনুস ৯২)
প্রশ্নঃ কোন্ দুই ব্যক্তি রাসুল (ছাঃ)-এর সুফারিশ ছাড়াই জান্নাতে যাবেতারা দুনিয়াতে কী ধরনের আমল করতেন?
 🎤 ANSWER উক্ত মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায় না। বরং দুই শ্রেণীর মানুষ তাঁর শাফাআত লাভ করতে সক্ষম হবে না মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। অত্যাচারী শাসক এবং খিয়ানতকারী ব্যক্তি (ত্বাবারাণীছহীহুল জামে‘ হা/৩৭৯৮)
প্রশ্নঃ প্রায় মসজিদের ইমাম বলে থাকেন, ক্বিয়ামতের দিন মসজিদ ধ্বংস হবে না। মসজিদ প্রত্যেক মুছল্লীকে নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
 🎤 ANSWER উক্ত বক্তব্যটি সঠিক নয়। কারণ আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেনভূ-পৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবই ধ্বংসশীল এবং অবশিষ্ট থাকবে শুধু আপনার প্রতিপালকের মুখমন্ডল যিনি মহিমাময়মহানুভব (রাহমান ২৭) আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেনআল্লাহ্র মুখমন্ডল ব্যতীত সবকিছু ধ্বংসশীল (ক্বাছাছ ৮৮) সুতরাং নিঃসন্দেহে মসজিদসহ বিশ্বজগতের সবকিছুই সেদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে ক্বিয়ামতের দিন যমীন তাঁর উপরে কৃত ভাল-মন্দ সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিবে (যিলযাল ) সে হিসাবে মসজিদের মাটি তার মুছল্লীদের ব্যাপারে সাক্ষী হবে
প্রশ্নঃ শুক্রবারে জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং সেদিন কেউ মারা গেলে বিনা হিসাবে জান্নাতে চলে যায়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
 🎤 ANSWER উক্ত মর্মে কোন ছহীহ দলীল পাওয়া যায় না। তবে কোন মুসলিম ব্যক্তি শুক্রবারে মারা গেলে সে কবরের ফিৎনা তে বেঁচে যাবে মর্মে ছহীহ দলীল রয়েছে(আহমাদতিরমিযী হা/১০৯৫সনদ হাসানমিশকাত হা/১৩৬৭, ‘জুম’ অনুচ্ছেদ) এখানে ‘ফিৎনা’ বলতে সওয়াল-জওয়াব  কবরের আযাব বুঝানো হয়েছে। এটি ব্যতিক্রম বা খাছ বিষয়। এর মধ্যে যুক্তির কোন সুযোগ নেই। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যেস্থান  কালের একটি বিশেষ প্রভাব রয়েছে। (দ্রঃ মিরআত /৪৪০-৪১)
প্রশ্নঃ কবরে সওয়াল-জওয়াবের সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সেখানে কিভাবে দেখানো হবে?
ANSWER
সেখানে রাসূল (ছাঃ)-কে দেখানো হবে বলে কোন প্রমাণ নেই। বরং রাসূল (ছাঃসম্পর্কে তার ধারণা  আক্বীদা কিপ্রশ্নের মাধ্যমে সেটাই যাচাই করা হবে(মিরআতুল মাফাতীহ হা/১৩১-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)
প্রশ্নঃ ক্বিয়ামতের দিন সকল মানুষ কি বস্ত্রহীন অবস্থায় উঠবেসেদিন কারো পরণে কাপড় থাকবে কি?
 🎤 ANSWER  ক্বিয়ামতের দিন সকল মানুষ বস্ত্রহীন নগ্নদেহে উঠবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৫৫৩৬) এদিন ইবরাহীম (আঃ)-কে সর্বপ্রথম কাপড় পরানো হবে(মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৫৫৩৫)
প্রশ্নঃ কবরের আযাব কবরে হয় না আসমানে হয়একজন খত্বীবের বক্তব্যে জানতে পারি যেকবরের আযাব আসমানে হয়। তিনি সূরা বাক্বারাহর ২৮ আয়াত দ্বারা দলীল দিয়েছেন।
 🎤 ANSWER  কবরের আযাব সত্য (আনআম ৯৩মুমিন ৪৬) যা অসংখ্য ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারীমিশকাত হা/১২৬আহমাদমিশকাত হা/১৬৩০সনদ ছহীহ) রাসূল (ছাঃসবসময় কবরের আযাব থেকে পানাহ চাইতে বলেছেন(মুসলিমমিশকাত হা/৯৪০) এক্ষণে কবরের আযাব শারীরিকভাবে কিংবা আত্মিকভাবে হবে  প্রশ্নে ওলামায়ে সালাফের মাঝে মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। তবে সঠিক কথা কবরের আযাব আত্মা  শরীর উভয়ের উপরই হবে। শরীর থেকে রূহ বেরিয়ে যাওয়ার পর তা আযাব কিংবা নেমত ভোগ করতে থাকবে। আর নির্দিষ্ট সময়ে তা শরীরের সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে শরীরও শাস্তির সম্মুখীন হবেযার প্রমাণ হাদীছে পাওয়া যায় এবং যার নিদর্শন বাহ্যতঃই অনেক মৃত ব্যক্তির কবরে লক্ষ্য করা যায়। ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ  জমহূর ওলামায়ে সালাফ অনুরূপ মন্তব্য করেছেন (ইবনু তায়মিয়াহআল-ইখতিয়ারাতুল ফিক্বহিয়াহপৃঃ /৪৪৯) আর প্রশ্নে উল্লেখিত সূরা বাক্বারাহর ২৮ নং আয়াতে মানুষের জীবন-মৃত্যুর পরিক্রমা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কবরের আযাব আসমানে হবে কি না এমন কোন সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। সর্বোপরি  বিষয়ে অধিক আলোচনা অপ্রয়োজনীয়। কারণ এটি গায়েবী বিষয়। অতএব  বিষয়ে কেবল হাদীছে যে বর্ণনা এসেছে তার উপর বিশ্বাস রাখাই যথেষ্ট
প্রশ্নঃ পরকালে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পিতা-মাতার অবস্থান কি হবে?
 🎤 ANSWER মুশরিক অবস্থায় মারা যাওয়ার কারণে তারা জাহান্নামী হবে। রাসূল (ছাঃ)-কে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি (তওবাহ ১১৩মুসলিমমিশকাত হা/১৭৬৩) রাসূল (ছাঃতাঁর পিতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত লে উত্তরে বলেনআমার পিতা জাহান্নামী (মুসলিম হা/৫২১ইবনু মাজাহ হা/১৫৭৩সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৮)
প্রশ্নঃ ক্বিয়ামতের দিন সূর্য ও চন্দ্র কি অবস্থায় থাকবেতারা কি জাহান্নামে থাকবে?
 🎤 ANSWER সূর্য  চন্দ্র উভয়কে ক্বিয়ামতের দিন আলোহীন করা হবে (বুখারীমিশকাত হা/৫৫২৬) সূর্য মাত্র এক মাইল দূরে থাকবে (মুসলিমমিশকাত হা/৫৫৪০) তারপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১২৪/১২৩ পৃঃ)
উল্লেখ্যসূর্য  চন্দ্রকে শাস্তি দেওয়ার জন্য জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে নাবরং এগুলিকে যারা পূজা করেছে তাদেরকে অপদস্থ করার জন্য এটা করা হবে। মাবূদের অবস্থা যদি এরূপ হয় তাহলে তাদের যারা পূজা করেছে তাদের অবস্থা কেমন তে পারে?
প্রশ্নঃ শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে কবর আযাব মাফ হয় কিদলীল ভিত্তিক জানিয়ে বাধিত করবেন।
 🎤 ANSWER রাসূলুল্লাহ (ছাঃবলেন, ‘কোন মুসলমান যদি জুমআর দিনে অথবা জুমআর রাতে মারা যায়আল্লাহ তাকে কবরের ফিৎনা হতে রক্ষা করেন’ (আহমাদতিরমিযীমিশকাত হা/১৩৬৭) ইমাম সুয়ূত্বী বলেনকেননা জুমআর দিন জাহান্নাম উত্তপ্ত করা হয় না। এর দরজা বন্ধ থাকে। জাহান্নামের দারোগার এদিন অন্য দিনের ন্যায় কাজ থাকে না।  দিন আল্লাহ যদি কোন বান্দার মৃত্যু ঘটানতাহলে  বান্দা  সুযোগ লাভে ধন্য হয় (মিরআত /৪৪১ পৃঃ) তবে এর অর্থ এটা নয় যেমুশরিক  মুনাফিকরা স্থায়ীভাবে কবর আযাব তে মুক্তি পাবে
প্রশ্নঃ জনৈক বক্তা বলেছেনক্বিয়ামতের দিন মানুষের সর্বপ্রথম হিসাব ছালাত সম্পর্কে হবেআবার কেউ বলেনখুন সম্পর্কে হবে। কোন্টি সঠিক জানিয়ে বাধিত করবেন।
 🎤 ANSWER উপরোক্ত দুটি বর্ণনাই সঠিক। এর অর্থ  : সর্বপ্রথম ছালাতের হিসাব নেওয়া হবে আল্লাহর হক হিসাবে। আর বান্দার হক হিসাবে সর্বপ্রথম খুনের হিসাব নেওয়া হবে (বুলূগুল মারাম হা/১১৫৮-এর ব্যাখ্যা)
প্রশ্নঃ যাদের নেকী ও গুনাহ সমান হবে তারা জান্নাতে যাবে না জাহান্নামে যাবে?
 🎤 ANSWER তারা জান্নাত  জাহান্নামের মাঝখানে একটি উঁচু জায়গায় অবস্থান করবে। তারাই হবে রাফবাসী (তাফসীরে ইবনে কাছীর /২২৫ পৃঃসূরা রাফ ৪৬  ৪৭ নং আয়াতের আলোচনা দ্রঃ)
প্রশ্নঃ মানুষ ও জিন যে বয়সে মারা যায় ক্বিয়ামতের দিন কি সেই বয়সেই উঠানো হবে?
 🎤 ANSWER   সময় জান্নাতীদের বয়স ৩০ অথবা ৩৩ হবে (তিরমিযী হা/২৫৪৫মিশকাত হা/৫৬৩৯ ‘ক্বিয়ামতের অবস্থা’ অধ্যায় ‘জান্নাত  জান্নাতবাসীদের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-) অনুরূপ বয়স হবে জাহান্নামীদের। তবে উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ(তিরমিযী হা/২৫৬২মিশকাত হা/৫৬৪৮) জিনদের বয়স কত হবে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। তবে একই রূপ হবে বলে অনুমতি হয়। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত। রাসূল (ছাঃবলেনক্বিয়ামতের দিন যখন ইসরাফীল (আঃদ্বিতীয় ফুঁৎকার দিবেন তখন মানুষকে নগ্নপদেনগ্নদেহে  খাতনা বিহীন অবস্থায় উঠানো হবে (সূরা আম্বিয়া ১০৪মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৫৫৩৫  ৫৫৩৬)
প্রশ্নঃ হাদীছে বর্ণিত হয়েছেমানুষ মারা গেলে সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অন্য হাদীছে রয়েছেমৃত্যুর পর তার পক্ষ থেকে হজ্জ ও ছাদাক্বা করলে তাও পৌঁছে। এই দুই হাদীছের সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
 🎤 ANSWER  উক্ত হাদীছে তার নিজস্ব আমল বন্ধ হওয়ার কথা বলা হয়েছে (মুসলিমমিশকাত হা/২০৩) কিন্তু তার নামে কেউ হজ্জ বা ছাদাক্বা করলে তা তার কাছে পৌঁছবে। কারণ এটা তার করা আমল নয় (মুসলিমমিশকাত হা/১৯৫০)
প্রশ্নঃ মৃত পিতা-মাতার মাগফেরাতের জন্য কী কী আমল করা যেতে পারে?
 🎤 ANSWER  মৃত পিতা-মাতার জন্য দো করতে হবে (ইসরা ২৪এবং তাদের নামে ছাদাক্বা করতে হবে (বুখারী হা/২৭৭০, ‘অছিয়ত’ অধ্যায়অনুচ্ছেদ-২৭)
প্রশ্নঃ আগুনে পুড়েপানিতে ডুবে এবং গাড়ী দুর্ঘটনায় মারা গেলে তাদের হিসাব হবে কিঅনেকে বলে তাদের হিসাব হবে না। তারা শহীদ।
 🎤 ANSWER  হিসাব হবে। হিসাব হবে না মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে আগুনে পুড়েপানিতে ডুবেদেয়াল চাপা পড়ে মারা গেলে শহীদের মর্যাদা পাবে মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে (ছহীহ আবূদাঊদ হা/৩১১১ছহীহ নাসাঈ হা/১৮৪৬) বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবেন ৭০ হাযার মুমিনযারা ঝাড়-ফুঁক নেননিযারা অশুভ লক্ষণকে গ্রাহ্য করেননি এবং যারা সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করেছেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৫২৯৫, ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায়অনুচ্ছেদ-)
প্রশ্নঃ ক্বিয়ামতের মাঠে সর্বপ্রথম কাকে কবর থেকে উঠানো হবে?
 🎤 ANSWER  শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)- কে সর্বপ্রথম কবর থেকে উঠানো হবে (মুসলিমমিশকাত হা/৫৭৪১ ‘ফাযায়েল  শামায়েল’ অধ্যায়)
প্রশ্নঃ এমন কোন আমল আছে কি যা করলে আমি কবরের চাপ থেকে মুক্তি পাব?
 🎤 ANSWER এজন্য সর্বাগ্রে শিরক মুক্ত তে হবে এবং শরীআত অনুমোদিত নেক আমল করতে হবে (কাহফ ১১০) কবরের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য নির্দিষ্ট কোন আমল নেই। নবী করীম (ছাঃকবরের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দো পড়তেন। আয়েশা (রাঃবলেননবী করীম (ছাঃছালাত তে সালাম ফেরানোর পূর্বে চারটি বস্ত্ত তে পরিত্রাণ চাইতেন। তার একটি হচ্ছে কবরের শাস্তি (মুত্তাফাক্ব 
প্রশ্নঃ আল্লাহ তাআলা রামাযান মাসে কোন ধরনের জাহান্নামীকে মুক্তি দেনএটা কি তাকদীর অনুসারে হয়ে থাকেএ মাসে সকল মুমিনের কবর আযাব ক্ষমা করে দেওয়া হয় কিকবর আযাব ক্ষমা করা হলে তাকি কেবল রামাযানের ৩০ দিনের জন্যনা ক্বিয়ামত পর্যন্ত?
 🎤 ANSWER ছিয়াম পালন  তওবা করার কারণে জাহান্নাম মুখী ব্যক্তিকে আল্লাহ মুক্তি দান করেন। এটা অবশ্যই তাকদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে। প্রকৃত মুমিন সৎকর্মশীল ব্যক্তিকে কবরে কোন মাসেই আযাব দেয়া হবে না।  মাসে কবরের আযাব মাফ করে দেওয়া হয়  কথা সঠিক নয়।  মাসে মারা গেলে কবরে আযাব হবে না  কথাটিও সঠিক নয়
প্রশ্নঃ ক্বিয়ামতের দিন হাশরের মাঠে প্রত্যেক মানুষ তার নিজ পাপের সমপরিমাণ ঘামের মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে। এ হাদীছটি কি ছহীহ?
 🎤 ANSWER হাদীছটি ছহীহ (মুসলিম হা/২৮৬৪মিশকাত হা/৫৫৪০ ‘কিয়ামতের অবস্থা’ অধ্যায় ‘হাশর’ অনুচ্ছেদ)
প্রশ্নঃ শিশু সন্তান মারা গেলে তারা কি ক্বিয়ামতের দিন পিতা-মাতার জন্য সুফারিশ করবে?
 🎤 ANSWER শিশু অবস্থায় কোন ছেলে-মেয়ে মারা গেলে তারা ক্বিয়ামতের দিন তাদের মুসলিম পিতা-মাতাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আবু হুরায়রা (রাঃবলেনআমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যেমুসলিম শিশু সন্তানেরা জান্নাতের ‘শিশু খাদেম’ হবে। তাদের কেউ পিতা-মাতা কাউকে পেলে তার কাপড় ধরে টেনে জান্নাতে না নেওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না’ (মুসলিমমিশকাত হা/১৭৫২) অবশ্য যদি আল্লাহ তাদেরকে সুফারিশের অনুমতি দেনতাহলেই কেবল সেটা সম্ভব হবে’ (বাক্বারাহ /২৫৫)
প্রশ্নঃ স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই যদি নেক আমল করে তাহলে মৃত্যুর পর তাদের দুজনের সাক্ষাৎ হবে কি?
 🎤 ANSWER স্বামী-স্ত্রী উভয়ে জান্নাতী লে আল্লাহ তাদেরকে একত্রে জান্নাতে প্রবেশের নির্দেশ দিবেন’ (যুখরুফ ৪৩/৭০) রাসূলুল্লাহ (ছাঃআয়েশা (রাঃ)-কে বলেনতুমি কি সন্তুষ্ট নও যেতুমি দুনিয়া  আখেরাতে আমার স্ত্রী হয়ে থাকবেতিনি বললেনজি হ্যাঁ। তখন নবী করীম (ছাঃবললেনতুমি ইহকালে  পরকালে আমার স্ত্রী’ (হাকেমসিলসিলা ছাহীহাহ হা/২২৫৫) মুআবিয়া (রাঃআবুদ্দারদার বিধবা স্ত্রীকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তিনি তা নাকচ করে বলেনআমি আবুদ্দারদাকে বলতে শুনেছিরাসূলুল্লাহ (ছাঃবলেছেনমহিলা তার শেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে (বাগাভীত্বাবারাণীসিলসিলা ছাহীহাহ হা/১২৮১) শুধু নেককার স্বামী-স্ত্রী নননেককার সন্তানেরাও পিতা-মাতার সঙ্গে জান্নাতে থাকবে (তূর ৫২/২১) [আল্লাহ আমাদেরকে সপরিবারে জান্নাতুল ফেরদৌসে স্থান দান করুনআমীন!]
প্রশ্নঃ মৃত্যু যন্ত্রণা ও কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায় জানিয়ে বাধিত করবেন।
 🎤  ANSWER  মুসলিম ব্যক্তি শরীআতের যথাযথ অনুসারী হয়ে সার্বিক জীবন পরিচালনা করলে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাবে ইনশাআল্লাহ। সেই সাথে নিয়মিতভাবে ‘সূরা মুলক’ প্রতিদিন তেলাওয়াত করলেও কবরের আযাব থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার আশা করা যায় (হাকেমসিলসিলা ছহীহাহ হা/১১৪০) অন্যত্র রাসূল (ছাঃবলেনদান কবরের শাস্তিকে মিটিয়ে দেয় এবং ক্বিয়ামতের দিন মুমিন তার দানের ছায়াতলে আশ্রয় পাবে’(ত্বাবারাণীসিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৪৮৪) এছাড়া মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃপ্রত্যেক ছালাতে জাহান্নাম  কবরের আযাব থেকে পরিত্রাণ চাইতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৯৩৯)
প্রশ্নঃ জনৈক আলেম বলেনখাদীজা (রাঃ)-এর দাফনের সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অশ্রু ফোঁটায় তাঁর কবর সিক্ত হলে আল্লাহ মুনকার-নাকীর কে ক্বিয়ামত পর্যন্ত সওয়াল-জওয়াব করতে নিষেধ করে দেন। এ বিবরণ কি সত্য?
 🎤 ANSWER উক্ত বক্তব্য ভিত্তিহীন  বানোয়াট
প্রশ্নঃ অত্যাচারের শিকার এমন ব্যক্তি প্রতিশোধ না নিয়ে ক্ষমা করে দিলে সে কেমন প্রতিদান লাভ করবে?
 🎤 ANSWER  (আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামতের দিন তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন (মুসলিম হা/২৫৮৮মিশকাত হা/১৮৮৯ছহীহ তারগীব হা/৮১৪) (রাগ প্রয়োগ না করে ধৈর্যধারণ করলে ক্বিয়ামতের দিন তাকে পসন্দমত হূর গ্রহণের স্বাধীনতা প্রদান করা হবে(আবুদাঊদতিরমিযীমিশকাত হা/৫০৮৮সনদ হাসানএবং (মাযলূম যালেমের প্রতিবাদ না করে ধৈর্যধারণ করলে আল্লাহ তাকে ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করেন (আহমাদমিশকাত হা/৫১০২ছহীহাহ হা/২২৩১) এছাড়া রাসূল (ছাঃআল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ক্রোধ দমন করাকে সর্বাধিক বীরত্ব হিসাবে উল্লেখ করেছেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহমিশকাত হা/৫১০৫)
প্রশ্নঃ যে ব্যক্তি মক্কার পথে মৃত্যুবরণ করবে কিয়ামতের দিন তার হিসাব গ্রহণ করা হবে না মর্মে বর্ণিত হাদীছটি কি ছহীহ?
 🎤 ANSWER হাদীছটি মওযূ‘ বা জাল। এটি বায়হাক্বী শুআবুল ঈমানমুসনাদে হারেছ  ইবনু ‘আদী সহ কয়েকটি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছ। হাদীছটি হযরত জাবের  আয়েশা (রাঃতে মরফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। প্রথম সূত্রে ইসহাক বিন বিশ্র আল-কাহেলী নামে একজন রাবী আছেনযিনি ‘মিথ্যাবাদী’ হিসাবে অভিযুক্ত এবং দ্বিতীয় সূত্রে ‘আয়েয বিন নুসাইর নামে একজন রাবী আছেনযিনি ‘অধিক ভুলকারী’ হিসাবে দুর্বল (দ্রঃ সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮০৪)
প্রশ্নঃ জনৈক ব্যক্তি বলেনএকদল আলেম ক্বিয়ামতের দিন তাদের নাড়িভুঁড়ির চারপাশে ঘুরতে থাকবেযারা জনগণকে যা উপদেশ দিত নিজেরা তা মেনে চলত না। উক্ত বক্তব্যের সত্যতা আছে কি?
 🎤 ANSWER উক্ত বক্তব্য সঠিক। রাসূলুল্লাহ (ছাঃবলেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে এনে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। আগুনে তার নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে যাবে। তখন সে  নাড়িভুঁড়ির চতুষ্পার্শ্বে ঘুরতে থাকবে। যেমনভাবে গাধা ঘানির চতুষ্পার্শ্বে ঘুরে থাকে। এহেন অবস্থাদৃষ্টে জাহান্নামবাসীরা তার চারপাশে একত্রিত হবে  তাকে লক্ষ্য করে বলবেহে অমুকতোমার  কী দশাতুমি না সর্বদা আমাদেরকে ভাল কাজের উপদেশ দিতে  মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতেতখন লোকটি বলবেআমি তোমাদেরকে ভাল কাজের উপদেশ দিতামকিন্তু নিজে তা করতাম না। আমি তোমাদেরকে মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতামকিন্তু আমি নিজে সে কাজ করতাম’ (বুখারীমুসলিমমিশকাত হা/৫১৩৯ ‘সৎ কাজের নির্দেশ’ অনুচ্ছেদ)
প্রশ্নঃ জনৈক আলেম বলেনযে ব্যক্তি সারা জীবন আমল করেছেকিন্তু অন্য মানুষকে কখনো দ্বীনের দাওয়াত দেয়নি। ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। উক্ত বক্তব্যের কোন সত্যতা আছে কি?
 🎤 ANSWER ইসলামের মূল দর্শন  তাওহীদের প্রচার  প্রতিষ্ঠা দান। মানব সমাজে আল্লাহ্র দ্বীনের বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কুরআন  হাদীছে মুসলিম উম্মাহকে জোরালো নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এমনকি যদি একটি আয়াতও কেউ জানেতা প্রচার করার জন্য রাসূল (ছাঃনির্দেশ দিয়েছেন (বুখারীমিশকাত হা/১৯৮) সুতরাং দাওয়াত  তাবলীগের কাজ থেকে কারো পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। বরং কেউ যদি শারঈ ওযর ব্যতীত দৈনন্দিন ব্যস্ততার অজুহাতে বা অলসতাবশতঃ তাবলীগ বা দ্বীনের প্রচার না করেতাহলে সে নিঃসন্দেহে গোনাহগার হবে (তিরমিযীমিশকাত হা/৫১৪০সনদ হাসান) তবে এর জন্য আল্লাহ তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন এমনটি নয়। কেননা একদিন ছাহাবায়ে কেরাম রাসূল (ছাঃ)-কে সর্বোত্তম মুমিন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনযে মুমিন আল্লাহ রাস্তায় জান  মাল দ্বারা জিহাদ করে। ছাহাবীগণ বললেনঅতঃপর কেতিনি বললেনযে মুমিন আল্লাহ্র ভয়ে পাহাড়ের কোন গুহায় আশ্রয় নিয়ে আল্লাহ্র ইবাদত করে এবং স্বীয় অনিষ্ট থেকে লোকদেরকে নিরাপদ রাখে (বুখারী হা/২৭৮৬মুসলিম হা/১৮৮৮)
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite

Post a Comment

0 Comments