তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই. আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর
পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে তাফসীর ফাতহুল মাজীদ
উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানীর তত্ত্বাবধানে
সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱﴾
সুরার নাম- বাকারা,(বকনা- \বাছুর)
2:210
ہَلۡ یَنۡظُرُوۡنَ
اِلَّاۤ اَنۡ یَّاۡتِیَہُمُ اللّٰہُ فِیۡ ظُلَلٍ مِّنَ الۡغَمَامِ وَ
الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ قُضِیَ الۡاَمۡرُ ؕ وَ اِلَی اللّٰہِ تُرۡجَعُ الۡاُمُوۡرُ ﴿۲۱۰﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২০৮ থেকে ২১০ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সকল মু’মিনকে ইসলামে পূর্ণভাবে প্রবেশ করতে নির্দেশ দিচ্ছেন-সর্বক্ষেত্রে যাবতীয় বিধান যথাসম্ভব পালন ও সকল নিষেধাজ্ঞা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার মাধ্যমে। এ আয়াতে দীনের নামে বিদআত তৈরি করার বিষয়টি যেমন খণ্ডন করা হয়েছে তেমনি ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসীদের মতবাদও খণ্ডন করা হয়েছে।
যারা ইসলামকে সর্বত্র গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ধর্মকে কেবল ব্যক্তিগত আমল বা মাসজিদ কেন্দ্রীক ইবাদতে সীমাবদ্ধ করতে চায়, সকল ময়দান থেকে ইসলামকে বিসর্জন দিয়ে পাশ্চাত্য সভ্যতা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে রাজনীতি, অর্থনীতি, লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সংসদকে ইসলাম মুক্ত করতে চায় এবং সাধারণ জনগণকেও এরূপ বুঝাতে চেষ্টা করে তাদেরকে শয়তানের পথ অনুসরণ করতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করছেন। তাদেরকে অবশ্যই জেনে রাখা দরকার ইসলাম শুধু মাসজিদেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবন থেকে আন্তর্জাতিক জীবন পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই ইসলাম প্রযোজ্য এবং একজন মুসলিমের জীবনের একমাত্র সংবিধান।
অতএব হে ঈমানদারগণ শয়তান চায় ইসলাম বিরোধী কর্ম ও পন্থাকে লোভনীয় ও শোভনীয় করে তোমাদের কাছে তুলে ধরে ঈমানকে হরণ করে নিতে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(کَمَثَلِ الشَّیْطٰنِ اِذْ قَالَ لِلْاِنْسَانِ اکْفُرْﺆ فَلَمَّا کَفَرَ قَالَ اِنِّیْ بَرِیْ۬ ئٌ مِّنْکَ اِنِّیْٓ اَخَافُ اللہَ رَبَّ الْعٰلَمِیْنَ)
“তাদের দৃষ্টান্ত শয়তানের মত- যে মানুষকে বলে: কুফরী কর। অতঃপর যখন সে কুফরী করে তখন শয়তান বলেঃ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, আমি জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।”(সূরা হাশর ৫৯:১৬)
এসব উপদেশমালা ও সুস্পষ্ট বিধানাবলী আসার পরেও যদি আল্লাহ তা‘আলা দীন ত্যাগ কর, তাহলে জেনে রেখ আল্লাহ তা‘আলা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।
শয়তানের অনুসারীরা অপেক্ষা করে যে, আল্লাহ তা‘আলা ও ফেরেশতাগণ মেঘের ছায়ার সাথে তাদের কাছে এসে ফায়সালা করে দেবেন। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলাই সবকিছু ফায়সালা করে দিয়েছেন। সবকিছু তাঁরই দিকে ফিরে যাবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামের সকল বিধান সম্পূর্ণভাবে মাথা পেতে মেনে নেয়া মুসলিমদের আবশ্যক।
২. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্র“। তাই তাকে শত্র“ হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত।
৩. আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাতের দিন ফায়সালা করার জন্য আসবেন।
৪. তাওবার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা উচিত নয়।
৫. আল্লাহ তা‘আলা ওপরে আছেন, স্ব-স্বত্ত্বায় সবত্র বিরাজমান নয়। সর্বত্র বিরাজমান থাকলে কিয়ামতের দিন ফায়সালা করার জন্য আসার কোন অর্থ হয়না। আল্লাহ তা‘আলা স্ব-স্বত্ত্বায় সর্বত্র বিরাজমান, এটা বাতিল সম্প্রদায়ের আক্বীদাহ।
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সকল মু’মিনকে ইসলামে পূর্ণভাবে প্রবেশ করতে নির্দেশ দিচ্ছেন-সর্বক্ষেত্রে যাবতীয় বিধান যথাসম্ভব পালন ও সকল নিষেধাজ্ঞা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার মাধ্যমে। এ আয়াতে দীনের নামে বিদআত তৈরি করার বিষয়টি যেমন খণ্ডন করা হয়েছে তেমনি ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসীদের মতবাদও খণ্ডন করা হয়েছে।
যারা ইসলামকে সর্বত্র গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ধর্মকে কেবল ব্যক্তিগত আমল বা মাসজিদ কেন্দ্রীক ইবাদতে সীমাবদ্ধ করতে চায়, সকল ময়দান থেকে ইসলামকে বিসর্জন দিয়ে পাশ্চাত্য সভ্যতা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে রাজনীতি, অর্থনীতি, লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সংসদকে ইসলাম মুক্ত করতে চায় এবং সাধারণ জনগণকেও এরূপ বুঝাতে চেষ্টা করে তাদেরকে শয়তানের পথ অনুসরণ করতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করছেন। তাদেরকে অবশ্যই জেনে রাখা দরকার ইসলাম শুধু মাসজিদেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবন থেকে আন্তর্জাতিক জীবন পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই ইসলাম প্রযোজ্য এবং একজন মুসলিমের জীবনের একমাত্র সংবিধান।
অতএব হে ঈমানদারগণ শয়তান চায় ইসলাম বিরোধী কর্ম ও পন্থাকে লোভনীয় ও শোভনীয় করে তোমাদের কাছে তুলে ধরে ঈমানকে হরণ করে নিতে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(کَمَثَلِ الشَّیْطٰنِ اِذْ قَالَ لِلْاِنْسَانِ اکْفُرْﺆ فَلَمَّا کَفَرَ قَالَ اِنِّیْ بَرِیْ۬ ئٌ مِّنْکَ اِنِّیْٓ اَخَافُ اللہَ رَبَّ الْعٰلَمِیْنَ)
“তাদের দৃষ্টান্ত শয়তানের মত- যে মানুষকে বলে: কুফরী কর। অতঃপর যখন সে কুফরী করে তখন শয়তান বলেঃ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, আমি জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।”(সূরা হাশর ৫৯:১৬)
এসব উপদেশমালা ও সুস্পষ্ট বিধানাবলী আসার পরেও যদি আল্লাহ তা‘আলা দীন ত্যাগ কর, তাহলে জেনে রেখ আল্লাহ তা‘আলা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।
শয়তানের অনুসারীরা অপেক্ষা করে যে, আল্লাহ তা‘আলা ও ফেরেশতাগণ মেঘের ছায়ার সাথে তাদের কাছে এসে ফায়সালা করে দেবেন। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলাই সবকিছু ফায়সালা করে দিয়েছেন। সবকিছু তাঁরই দিকে ফিরে যাবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইসলামের সকল বিধান সম্পূর্ণভাবে মাথা পেতে মেনে নেয়া মুসলিমদের আবশ্যক।
২. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্র“। তাই তাকে শত্র“ হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত।
৩. আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাতের দিন ফায়সালা করার জন্য আসবেন।
৪. তাওবার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা উচিত নয়।
৫. আল্লাহ তা‘আলা ওপরে আছেন, স্ব-স্বত্ত্বায় সবত্র বিরাজমান নয়। সর্বত্র বিরাজমান থাকলে কিয়ামতের দিন ফায়সালা করার জন্য আসার কোন অর্থ হয়না। আল্লাহ তা‘আলা স্ব-স্বত্ত্বায় সর্বত্র বিরাজমান, এটা বাতিল সম্প্রদায়ের আক্বীদাহ।
2:211
سَلۡ بَنِیۡۤ
اِسۡرَآءِیۡلَ کَمۡ اٰتَیۡنٰہُمۡ مِّنۡ اٰیَۃٍۭ بَیِّنَۃٍ ؕ وَ مَنۡ یُّبَدِّلۡ
نِعۡمَۃَ اللّٰہِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡہُ فَاِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ
الۡعِقَابِ ﴿۲۱۱﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১১ ও ২১২ নং আয়াতের তাফসীর:
বানী ইরাঈলকে আল্লাহ তা‘আলা কী কী নিদর্শন ও নেয়ামত দ্বারা অনুগ্রহ করেছিলেন সে সম্পর্কে অত্র সূরার ৪৭ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সম্পর্কে জানাচ্ছেন যে, তাদের জন্য দুনিয়াকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। কেননা তাদের সুখ-সম্পদ দুনিয়াতেই শেষ, আখিরাতে তাদের কোন কল্যাণকর অংশ নেই।
কাফিররা দুনিয়াতে মু’মিনদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। কারণ তারা সাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করে আর মু’মিনদের দূরাবস্থা দেখে বলে তারা যদি ভাল মানুষই হত তাহলে তাদের এ অবস্থা কেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ اَجْرَمُوْا کَانُوْا مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یَضْحَکُوْنَﭬﺘ وَاِذَا مَرُّوْا بِھِمْ یَتَغَامَزُوْنَﭭﺘ وَاِذَا انْقَلَبُوْٓا اِلٰٓی اَھْلِھِمُ انْقَلَبُوْا فَکِھِیْنَﭮﺘ وَاِذَا رَاَوْھُمْ قَالُوْٓا اِنَّ ھٰٓؤُلَا۬ئِ لَضَا۬لُّوْنَ)
“যারা অপরাধী তারা মু’মিনদেরকে উপহাস করতো। এবং তারা যখন তাদের নিকট দিয়ে যেতো তখন চোখ টিপে কটাক্ষ করতো। আর যখন তারা আপনজনের নিকট ফিরে আসতো তখন তারা ফিরতো উৎফুল্ল হয়ে, এবং যখন তাদেরকে দেখতো তখন বলতোঃ নিশ্চয়ই এরা পথভ্রষ্ট।”(সূরা মুতাফফিফীন ৮৩:২৯-৩২)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, তাদের কথায়, ঠাট্টায় মনোবল হারানোর কোনই কারণ নেই। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত। আর আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা অপরিমেয় রিযিক দেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাচ্ছন্দ্য দেখে মনোবল হারানো যাবে না। কারণ তাদের দুনিয়াই শেষ, আখিরাতে কোন অংশ নেই।
২. ঈমান ও আমলের ওপর থাকলে প্রতিপক্ষ ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতেই পারে। তাই বলে ঈমান-আমাল ছেড়ে দেয়া যাবে না।
৩. রিযিক দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তাই আল্লাহ তা‘আলার কাছেই রিযিক চাইতে হবে।
বানী ইরাঈলকে আল্লাহ তা‘আলা কী কী নিদর্শন ও নেয়ামত দ্বারা অনুগ্রহ করেছিলেন সে সম্পর্কে অত্র সূরার ৪৭ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সম্পর্কে জানাচ্ছেন যে, তাদের জন্য দুনিয়াকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। কেননা তাদের সুখ-সম্পদ দুনিয়াতেই শেষ, আখিরাতে তাদের কোন কল্যাণকর অংশ নেই।
কাফিররা দুনিয়াতে মু’মিনদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। কারণ তারা সাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করে আর মু’মিনদের দূরাবস্থা দেখে বলে তারা যদি ভাল মানুষই হত তাহলে তাদের এ অবস্থা কেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ اَجْرَمُوْا کَانُوْا مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یَضْحَکُوْنَﭬﺘ وَاِذَا مَرُّوْا بِھِمْ یَتَغَامَزُوْنَﭭﺘ وَاِذَا انْقَلَبُوْٓا اِلٰٓی اَھْلِھِمُ انْقَلَبُوْا فَکِھِیْنَﭮﺘ وَاِذَا رَاَوْھُمْ قَالُوْٓا اِنَّ ھٰٓؤُلَا۬ئِ لَضَا۬لُّوْنَ)
“যারা অপরাধী তারা মু’মিনদেরকে উপহাস করতো। এবং তারা যখন তাদের নিকট দিয়ে যেতো তখন চোখ টিপে কটাক্ষ করতো। আর যখন তারা আপনজনের নিকট ফিরে আসতো তখন তারা ফিরতো উৎফুল্ল হয়ে, এবং যখন তাদেরকে দেখতো তখন বলতোঃ নিশ্চয়ই এরা পথভ্রষ্ট।”(সূরা মুতাফফিফীন ৮৩:২৯-৩২)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, তাদের কথায়, ঠাট্টায় মনোবল হারানোর কোনই কারণ নেই। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত। আর আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা অপরিমেয় রিযিক দেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাচ্ছন্দ্য দেখে মনোবল হারানো যাবে না। কারণ তাদের দুনিয়াই শেষ, আখিরাতে কোন অংশ নেই।
২. ঈমান ও আমলের ওপর থাকলে প্রতিপক্ষ ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতেই পারে। তাই বলে ঈমান-আমাল ছেড়ে দেয়া যাবে না।
৩. রিযিক দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তাই আল্লাহ তা‘আলার কাছেই রিযিক চাইতে হবে।
2:212
زُیِّنَ لِلَّذِیۡنَ
کَفَرُوا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا وَ یَسۡخَرُوۡنَ مِنَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ۘ وَ
الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا فَوۡقَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ یَرۡزُقُ مَنۡ
یَّشَآءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿۲۱۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১১ ও ২১২ নং আয়াতের
তাফসীর:
বানী ইরাঈলকে আল্লাহ তা‘আলা কী কী নিদর্শন ও নেয়ামত দ্বারা অনুগ্রহ করেছিলেন সে সম্পর্কে অত্র সূরার ৪৭ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সম্পর্কে জানাচ্ছেন যে, তাদের জন্য দুনিয়াকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। কেননা তাদের সুখ-সম্পদ দুনিয়াতেই শেষ, আখিরাতে তাদের কোন কল্যাণকর অংশ নেই।
কাফিররা দুনিয়াতে মু’মিনদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। কারণ তারা সাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করে আর মু’মিনদের দূরাবস্থা দেখে বলে তারা যদি ভাল মানুষই হত তাহলে তাদের এ অবস্থা কেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ اَجْرَمُوْا کَانُوْا مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یَضْحَکُوْنَﭬﺘ وَاِذَا مَرُّوْا بِھِمْ یَتَغَامَزُوْنَﭭﺘ وَاِذَا انْقَلَبُوْٓا اِلٰٓی اَھْلِھِمُ انْقَلَبُوْا فَکِھِیْنَﭮﺘ وَاِذَا رَاَوْھُمْ قَالُوْٓا اِنَّ ھٰٓؤُلَا۬ئِ لَضَا۬لُّوْنَ)
“যারা অপরাধী তারা মু’মিনদেরকে উপহাস করতো। এবং তারা যখন তাদের নিকট দিয়ে যেতো তখন চোখ টিপে কটাক্ষ করতো। আর যখন তারা আপনজনের নিকট ফিরে আসতো তখন তারা ফিরতো উৎফুল্ল হয়ে, এবং যখন তাদেরকে দেখতো তখন বলতোঃ নিশ্চয়ই এরা পথভ্রষ্ট।”(সূরা মুতাফফিফীন ৮৩:২৯-৩২)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, তাদের কথায়, ঠাট্টায় মনোবল হারানোর কোনই কারণ নেই। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত। আর আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা অপরিমেয় রিযিক দেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাচ্ছন্দ্য দেখে মনোবল হারানো যাবে না। কারণ তাদের দুনিয়াই শেষ, আখিরাতে কোন অংশ নেই।
২. ঈমান ও আমলের ওপর থাকলে প্রতিপক্ষ ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতেই পারে। তাই বলে ঈমান-আমাল ছেড়ে দেয়া যাবে না।
৩. রিযিক দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তাই আল্লাহ তা‘আলার কাছেই রিযিক চাইতে হবে।
বানী ইরাঈলকে আল্লাহ তা‘আলা কী কী নিদর্শন ও নেয়ামত দ্বারা অনুগ্রহ করেছিলেন সে সম্পর্কে অত্র সূরার ৪৭ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সম্পর্কে জানাচ্ছেন যে, তাদের জন্য দুনিয়াকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। কেননা তাদের সুখ-সম্পদ দুনিয়াতেই শেষ, আখিরাতে তাদের কোন কল্যাণকর অংশ নেই।
কাফিররা দুনিয়াতে মু’মিনদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। কারণ তারা সাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করে আর মু’মিনদের দূরাবস্থা দেখে বলে তারা যদি ভাল মানুষই হত তাহলে তাদের এ অবস্থা কেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِنَّ الَّذِیْنَ اَجْرَمُوْا کَانُوْا مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا یَضْحَکُوْنَﭬﺘ وَاِذَا مَرُّوْا بِھِمْ یَتَغَامَزُوْنَﭭﺘ وَاِذَا انْقَلَبُوْٓا اِلٰٓی اَھْلِھِمُ انْقَلَبُوْا فَکِھِیْنَﭮﺘ وَاِذَا رَاَوْھُمْ قَالُوْٓا اِنَّ ھٰٓؤُلَا۬ئِ لَضَا۬لُّوْنَ)
“যারা অপরাধী তারা মু’মিনদেরকে উপহাস করতো। এবং তারা যখন তাদের নিকট দিয়ে যেতো তখন চোখ টিপে কটাক্ষ করতো। আর যখন তারা আপনজনের নিকট ফিরে আসতো তখন তারা ফিরতো উৎফুল্ল হয়ে, এবং যখন তাদেরকে দেখতো তখন বলতোঃ নিশ্চয়ই এরা পথভ্রষ্ট।”(সূরা মুতাফফিফীন ৮৩:২৯-৩২)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, তাদের কথায়, ঠাট্টায় মনোবল হারানোর কোনই কারণ নেই। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জান্নাত। আর আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা অপরিমেয় রিযিক দেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কাফিরদের সাচ্ছন্দ্য দেখে মনোবল হারানো যাবে না। কারণ তাদের দুনিয়াই শেষ, আখিরাতে কোন অংশ নেই।
২. ঈমান ও আমলের ওপর থাকলে প্রতিপক্ষ ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতেই পারে। তাই বলে ঈমান-আমাল ছেড়ে দেয়া যাবে না।
৩. রিযিক দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তাই আল্লাহ তা‘আলার কাছেই রিযিক চাইতে হবে।
2:213
کَانَ النَّاسُ اُمَّۃً
وَّاحِدَۃً ۟ فَبَعَثَ اللّٰہُ النَّبِیّٖنَ مُبَشِّرِیۡنَ وَ مُنۡذِرِیۡنَ ۪ وَ
اَنۡزَلَ مَعَہُمُ الۡکِتٰبَ بِالۡحَقِّ لِیَحۡکُمَ بَیۡنَ النَّاسِ فِیۡمَا
اخۡتَلَفُوۡا فِیۡہِ ؕ وَ مَا اخۡتَلَفَ فِیۡہِ اِلَّا الَّذِیۡنَ اُوۡتُوۡہُ
مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡہُمُ الۡبَیِّنٰتُ بَغۡیًۢا بَیۡنَہُمۡ ۚ فَہَدَی
اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَا اخۡتَلَفُوۡا فِیۡہِ مِنَ الۡحَقِّ بِاِذۡنِہٖ
ؕ وَ اللّٰہُ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۲۱۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৩ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: আদম ও নূহ (আঃ)-এর মাঝে পার্থক্য দশ শতাব্দি। এ সময়ের সকল মানুষ হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। তারপর তারা মতানৈক্য করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা সুসংবাদ ও ভীতিপ্রদর্শনকারী হিসেবে নাবী রাসূল প্রেরণ করেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(كَانَ النَّاسُ أُمَّةً وَّاحِدَةً)
“মানবজাতি একই সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল” অর্থাৎ সবাই তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল- যে তাওহীদের দাওয়াত আদম (আঃ) দিয়েছিলেন। মুসলিম উম্মাহ যতদিন পর্যন্ত এ তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল ততদিন তাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়নি। যখন তাওহীদ থেকে সরে গেল তখন তাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হল।
(فَهَدَي اللّٰهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا)
“আল্লাহ ঈমানদারদের সৎ পথের হিদায়াত দিলেন” অর্থাৎ পূর্ববর্তী কিতাবধারীরা যে-সকল বিষয়ে মতভেদ করেছে আল্লাহ তা‘আলা সে-সকল বিষয়ে মু’মিনদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। যেমন: জুমুআর দিনের ব্যাপারে আহলে কিতাবরা মতভেদ করেছে। ইয়াহূদীরা শনিবারকে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে, আর খ্রিস্টানরা রবিবারকে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে। আল্লাহ তা‘আলা এ ব্যাপারে আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমরা দুনিয়াতে আগমনের দিক দিয়ে সর্বশেষ, কিন্তু কিয়ামতের দিন ফায়সালার দিক দিয়ে সর্বপ্রথম এবং আমরাই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করব। যদিও অন্যান্য উম্মাতকে আমাদের পূর্বেই কিতাব দেয়া হয়েছে আর আমাদেরকে দেয়া হয়েছে পরে। সত্যের ব্যাপারে তারা যে মতভেদ করেছে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সে ব্যাপারে হিদায়াত দান করেছেন, তারা এ দিনের (জুমুআবার) ব্যাপারে মতভেদ করেছিল। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এ দিনের সঠিক নির্দেশনা দান করেছেন। সুতরাং মানুষ আমাদের অনুসারী। (সহীহ বুখারী হা: ৮৭৬)
তারা ঈসা (আঃ)-এর ব্যাপারে বিরোধিতা করল। ইয়াহূদীরা তাঁকে মিথ্যা জানল এবং (অবৈধ সন্তান বলে) তাঁর মাতা মারইয়াম (আঃ)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ দিল। এদিকে খ্রিস্টানরা ইয়াহূদীদের বিপরীত করল। তারা (ঈসাকে) আল্লাহ তা‘আলার পুত্র বানিয়ে নিল। মহান আল্লাহ মুসলিমদেরকে তাঁর (ঈসার) ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান দান করলেন। তিনি আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর একজন অনুগত বান্দা ছিলেন। ইবরাহীম (আঃ)-এর ব্যাপারেও মতভেদ করেছে, একদল তাঁকে ইয়াহূদী বলে; অপর দল তাকে খ্রিস্টান বলে। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করে বলে দিলেন তিনি ইয়াহূদী ছিলেন না এবং খ্রিস্টানও ছিলেন না বরং তিনি একজন একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। মূলতঃ হিদায়াত কোন দল বা গোষ্ঠির মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, বরং হিদায়াত দানকারী হচ্ছেন আল্লাহ তা‘আলা। তাই সঠিক পথ পাওয়ার জন্য কেবল আল্লাহ তা‘আলার কাছেই প্রার্থনা করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মানুষ মতভেদে লিপ্ত হবার আগে সবাই তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল।
২. আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম জাতিকে সঠিক পথের দিশা দান করেছেন।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: আদম ও নূহ (আঃ)-এর মাঝে পার্থক্য দশ শতাব্দি। এ সময়ের সকল মানুষ হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। তারপর তারা মতানৈক্য করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা সুসংবাদ ও ভীতিপ্রদর্শনকারী হিসেবে নাবী রাসূল প্রেরণ করেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(كَانَ النَّاسُ أُمَّةً وَّاحِدَةً)
“মানবজাতি একই সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল” অর্থাৎ সবাই তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল- যে তাওহীদের দাওয়াত আদম (আঃ) দিয়েছিলেন। মুসলিম উম্মাহ যতদিন পর্যন্ত এ তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল ততদিন তাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়নি। যখন তাওহীদ থেকে সরে গেল তখন তাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হল।
(فَهَدَي اللّٰهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا)
“আল্লাহ ঈমানদারদের সৎ পথের হিদায়াত দিলেন” অর্থাৎ পূর্ববর্তী কিতাবধারীরা যে-সকল বিষয়ে মতভেদ করেছে আল্লাহ তা‘আলা সে-সকল বিষয়ে মু’মিনদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। যেমন: জুমুআর দিনের ব্যাপারে আহলে কিতাবরা মতভেদ করেছে। ইয়াহূদীরা শনিবারকে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে, আর খ্রিস্টানরা রবিবারকে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করেছে। আল্লাহ তা‘আলা এ ব্যাপারে আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমরা দুনিয়াতে আগমনের দিক দিয়ে সর্বশেষ, কিন্তু কিয়ামতের দিন ফায়সালার দিক দিয়ে সর্বপ্রথম এবং আমরাই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করব। যদিও অন্যান্য উম্মাতকে আমাদের পূর্বেই কিতাব দেয়া হয়েছে আর আমাদেরকে দেয়া হয়েছে পরে। সত্যের ব্যাপারে তারা যে মতভেদ করেছে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সে ব্যাপারে হিদায়াত দান করেছেন, তারা এ দিনের (জুমুআবার) ব্যাপারে মতভেদ করেছিল। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এ দিনের সঠিক নির্দেশনা দান করেছেন। সুতরাং মানুষ আমাদের অনুসারী। (সহীহ বুখারী হা: ৮৭৬)
তারা ঈসা (আঃ)-এর ব্যাপারে বিরোধিতা করল। ইয়াহূদীরা তাঁকে মিথ্যা জানল এবং (অবৈধ সন্তান বলে) তাঁর মাতা মারইয়াম (আঃ)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ দিল। এদিকে খ্রিস্টানরা ইয়াহূদীদের বিপরীত করল। তারা (ঈসাকে) আল্লাহ তা‘আলার পুত্র বানিয়ে নিল। মহান আল্লাহ মুসলিমদেরকে তাঁর (ঈসার) ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান দান করলেন। তিনি আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর একজন অনুগত বান্দা ছিলেন। ইবরাহীম (আঃ)-এর ব্যাপারেও মতভেদ করেছে, একদল তাঁকে ইয়াহূদী বলে; অপর দল তাকে খ্রিস্টান বলে। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করে বলে দিলেন তিনি ইয়াহূদী ছিলেন না এবং খ্রিস্টানও ছিলেন না বরং তিনি একজন একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। মূলতঃ হিদায়াত কোন দল বা গোষ্ঠির মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, বরং হিদায়াত দানকারী হচ্ছেন আল্লাহ তা‘আলা। তাই সঠিক পথ পাওয়ার জন্য কেবল আল্লাহ তা‘আলার কাছেই প্রার্থনা করতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মানুষ মতভেদে লিপ্ত হবার আগে সবাই তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল।
২. আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম জাতিকে সঠিক পথের দিশা দান করেছেন।
2:214
اَمۡ حَسِبۡتُمۡ اَنۡ
تَدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ وَ لَمَّا یَاۡتِکُمۡ مَّثَلُ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ
قَبۡلِکُمۡ ؕ مَسَّتۡہُمُ الۡبَاۡسَآءُ وَ الضَّرَّآءُ وَ زُلۡزِلُوۡا حَتّٰی
یَقُوۡلَ الرَّسُوۡلُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ مَتٰی نَصۡرُ اللّٰہِ ؕ
اَلَاۤ اِنَّ نَصۡرَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ ﴿۲۱۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৪ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থের আলোকে বুঝা যায় যে, মদীনায় হিজরত করার পর মুসলিমরা যখন ইয়াহূদী, মুনাফিক এবং আরবের মুশরিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পীড়া ও কষ্ট পেতে লাগল, তখন কোন কোন মুসলিম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অভিযোগ করল। তাই মুসলিমদের সান্ত্বনা দেয়ার জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ হয়।
খাব্বাব ইবনু আরাত্ত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এমন এক সময় অভিযোগ করলাম যখন তিনি কাবা ঘরের ছায়ায় চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম: আমাদের জন্য কি সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন না? তিনি বললেন: তোমাদের পূর্বেকার ঈমানদার লোকেদের ধরে এনে জমিনে গর্ত করে তাতে পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তাদের মাথা বরাবর করাত চালিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হত। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে পৃথক করা হত। কিন্তু এ নির্মম অত্যাচারও তাদেরকে তাদের দীন থেকে বিরত করতে পারেনি। আল্লাহ তা‘আলার কসম এ দীন পূর্ণরূপে বিজয়ী হবে। এমন একদিন আসবে যখন কোন ভ্রমণকারী নির্বিঘেœ সানআ থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সে কাউকে ভয় করবে না। আর মেষপালের জন্য বাঘের ভয় বাকি থাকবে। কিন্তু তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ বুখারী হা: ৬৯৪৩)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী “এমনকি যখন রাসূলগণ নিরাশ হয়ে পড়ল এবং ভাবতে লাগল যে, তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে”(সূরা ইউসুফ ১২:১১০)। তখন ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতসহ সূরা বাকারার আয়াতের শরণাপন্ন হন ও তেলাওয়াত করেন। যেমন: ‘এমনকি রাসূল এবং তার সঙ্গে ঈমান আনয়নকারীগণ বলে উঠেছিল, কখন আসবে আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য? হ্যাঁ, আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য নিকটেই।’(সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৪)
রাবী বলেন, এরপর আমি উরওয়াহ ইবনু যুবাইয়ের এর সঙ্গে সাক্ষাত করে তাকে এ সম্পর্কে জানালে তিনি বলেন যে, আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, আল্লাহ তা‘আলার কসম! আল্লাহ তা‘আলা তাঁরপর রাসূলের নিকট যেসব অঙ্গীকার করেছেন, তিনি জানতেন যে, তা তাঁর মৃত্যুর পূর্বেই বাস্তবে পরিণত হবে। কিন্তু রাসূলগণের প্রতি সমূহ বিপদাপদ আসতে থাকবে। এমনকি তারা (মু’মিনরা) আশঙ্কা করবে যে, সঙ্গী-সাথীরা তাঁদেরকে (রাসূলদেরকে) মিথ্যুক সাব্যস্ত করবে। এ প্রসঙ্গে আয়িশাহ (রাঃ) এ আয়াত পাঠ করতেন-
(وَظَنُّوا أَنَّهُمْ قَدْ كُذِّبُوا)
“ভাবল যে, তারা তাদেরকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করবে।”আয়িশাহ (রাঃ) كُذِّبُوا ‘যাল’হরফটি তাশদীদযুক্ত পড়তেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৫)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জান্নাতে দেবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تُتْرَکُوْا وَلَمَّا یَعْلَمِ اللہُ الَّذِیْنَ جٰھَدُوْا مِنْکُمْ وَلَمْ یَتَّخِذُوْا مِنْ دُوْنِ اللہِ وَلَا رَسُوْلِھ۪ وَلَا الْمُؤْمِنِیْنَ وَلِیْجَةًﺚ وَاللہُ خَبِیْرٌۭ بِمَا تَعْمَلُوْنَ)
“তোমরা কি মনে করো যে, তোমাদেরকে এমনিই ছেড়ে দেয়া হবে যে পর্যন্ত আল্লাহ প্রকাশ না করেন তোমাদের মধ্যে কারা মুজাহিদ এবং কারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নেয়? তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।”(সূরা তাওবাহ ৯:১৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّٰهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ)
“তোমরা কি ধারণা করছো যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ যারা জিহাদ করে তোমাদের মধ্য হতে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ অবগত হবেন না? ও ধৈর্যশীলদের তিনি জানবেন না?” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৪২)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(أَحَسِبَ النَّاسُ أَنْ يُتْرَكُوا أَنْ يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ)
“মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি- এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেয়া হবে?” (সূরা আনকাবুত ২৯:২)
তাই যে যত বেশি ঈমানদার তার পরীক্ষাও তত বেশি কঠিন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:أَشَدُّ النَّاسِ بَلَاءً الْأَنْبِيَاءُ
মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয় নাবীগণ। (সহীহ বুখারী ৫৬৪৮ নং হাদীসের বাব)
নাবী-রাসূলগণ সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন কারণ সবচেয়ে বেশি ঈমানদার তাঁরাই।
সুতরাং এত সহজেই জান্নাতে যাওয়া যাবেনা। জান্নাত একটি অতি মূল্যবান স্থান; তা পেতে হলে অনেক বালা-মসিবত, দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হবে, বহু পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। এসব পরীক্ষায় যারা সফল হবে তারাই জান্নাতের আশা করতে পারে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের বিভিন্ন বালা-মসিবত দ্বারা পরীক্ষা করেন যাতে দুনিয়াতেই গুনাহ মোচন করে সহজেই জান্নাতে যেতে পারে।
২. দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হলে যারা আরো বেশি কষ্টে আছে তাদের কথা স্মরণ করা দরকার।
৩. সৎ ব্যক্তিদেরকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করা দরকার।
৪. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে বালা মুসিবতে-সঙ্কটে সহযোগিতা করেন।
শানে নুযূল:
বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থের আলোকে বুঝা যায় যে, মদীনায় হিজরত করার পর মুসলিমরা যখন ইয়াহূদী, মুনাফিক এবং আরবের মুশরিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পীড়া ও কষ্ট পেতে লাগল, তখন কোন কোন মুসলিম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অভিযোগ করল। তাই মুসলিমদের সান্ত্বনা দেয়ার জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ হয়।
খাব্বাব ইবনু আরাত্ত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এমন এক সময় অভিযোগ করলাম যখন তিনি কাবা ঘরের ছায়ায় চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম: আমাদের জন্য কি সাহায্য প্রার্থনা করবেন না, আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন না? তিনি বললেন: তোমাদের পূর্বেকার ঈমানদার লোকেদের ধরে এনে জমিনে গর্ত করে তাতে পুঁতে দেয়া হত। অতঃপর তাদের মাথা বরাবর করাত চালিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হত। লোহার চিরুনী দিয়ে শরীরের গোশত হাড় থেকে পৃথক করা হত। কিন্তু এ নির্মম অত্যাচারও তাদেরকে তাদের দীন থেকে বিরত করতে পারেনি। আল্লাহ তা‘আলার কসম এ দীন পূর্ণরূপে বিজয়ী হবে। এমন একদিন আসবে যখন কোন ভ্রমণকারী নির্বিঘেœ সানআ থেকে হাযরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করবে কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সে কাউকে ভয় করবে না। আর মেষপালের জন্য বাঘের ভয় বাকি থাকবে। কিন্তু তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ। (সহীহ বুখারী হা: ৬৯৪৩)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী “এমনকি যখন রাসূলগণ নিরাশ হয়ে পড়ল এবং ভাবতে লাগল যে, তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে”(সূরা ইউসুফ ১২:১১০)। তখন ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতসহ সূরা বাকারার আয়াতের শরণাপন্ন হন ও তেলাওয়াত করেন। যেমন: ‘এমনকি রাসূল এবং তার সঙ্গে ঈমান আনয়নকারীগণ বলে উঠেছিল, কখন আসবে আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য? হ্যাঁ, আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য নিকটেই।’(সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৪)
রাবী বলেন, এরপর আমি উরওয়াহ ইবনু যুবাইয়ের এর সঙ্গে সাক্ষাত করে তাকে এ সম্পর্কে জানালে তিনি বলেন যে, আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, আল্লাহ তা‘আলার কসম! আল্লাহ তা‘আলা তাঁরপর রাসূলের নিকট যেসব অঙ্গীকার করেছেন, তিনি জানতেন যে, তা তাঁর মৃত্যুর পূর্বেই বাস্তবে পরিণত হবে। কিন্তু রাসূলগণের প্রতি সমূহ বিপদাপদ আসতে থাকবে। এমনকি তারা (মু’মিনরা) আশঙ্কা করবে যে, সঙ্গী-সাথীরা তাঁদেরকে (রাসূলদেরকে) মিথ্যুক সাব্যস্ত করবে। এ প্রসঙ্গে আয়িশাহ (রাঃ) এ আয়াত পাঠ করতেন-
(وَظَنُّوا أَنَّهُمْ قَدْ كُذِّبُوا)
“ভাবল যে, তারা তাদেরকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করবে।”আয়িশাহ (রাঃ) كُذِّبُوا ‘যাল’হরফটি তাশদীদযুক্ত পড়তেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৫)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জান্নাতে দেবেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تُتْرَکُوْا وَلَمَّا یَعْلَمِ اللہُ الَّذِیْنَ جٰھَدُوْا مِنْکُمْ وَلَمْ یَتَّخِذُوْا مِنْ دُوْنِ اللہِ وَلَا رَسُوْلِھ۪ وَلَا الْمُؤْمِنِیْنَ وَلِیْجَةًﺚ وَاللہُ خَبِیْرٌۭ بِمَا تَعْمَلُوْنَ)
“তোমরা কি মনে করো যে, তোমাদেরকে এমনিই ছেড়ে দেয়া হবে যে পর্যন্ত আল্লাহ প্রকাশ না করেন তোমাদের মধ্যে কারা মুজাহিদ এবং কারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নেয়? তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।”(সূরা তাওবাহ ৯:১৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّٰهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ)
“তোমরা কি ধারণা করছো যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ যারা জিহাদ করে তোমাদের মধ্য হতে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ অবগত হবেন না? ও ধৈর্যশীলদের তিনি জানবেন না?” (সূরা আলি-ইমরান ৩:১৪২)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(أَحَسِبَ النَّاسُ أَنْ يُتْرَكُوا أَنْ يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ)
“মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি- এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেয়া হবে?” (সূরা আনকাবুত ২৯:২)
তাই যে যত বেশি ঈমানদার তার পরীক্ষাও তত বেশি কঠিন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:أَشَدُّ النَّاسِ بَلَاءً الْأَنْبِيَاءُ
মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয় নাবীগণ। (সহীহ বুখারী ৫৬৪৮ নং হাদীসের বাব)
নাবী-রাসূলগণ সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন কারণ সবচেয়ে বেশি ঈমানদার তাঁরাই।
সুতরাং এত সহজেই জান্নাতে যাওয়া যাবেনা। জান্নাত একটি অতি মূল্যবান স্থান; তা পেতে হলে অনেক বালা-মসিবত, দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হবে, বহু পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। এসব পরীক্ষায় যারা সফল হবে তারাই জান্নাতের আশা করতে পারে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের বিভিন্ন বালা-মসিবত দ্বারা পরীক্ষা করেন যাতে দুনিয়াতেই গুনাহ মোচন করে সহজেই জান্নাতে যেতে পারে।
২. দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হলে যারা আরো বেশি কষ্টে আছে তাদের কথা স্মরণ করা দরকার।
৩. সৎ ব্যক্তিদেরকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করা দরকার।
৪. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে বালা মুসিবতে-সঙ্কটে সহযোগিতা করেন।
2:215
یَسۡـَٔلُوۡنَکَ مَا ذَا
یُنۡفِقُوۡنَ ۬ؕ قُلۡ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ فَلِلۡوَالِدَیۡنِ وَ
الۡاَقۡرَبِیۡنَ وَ الۡیَتٰمٰی وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ ابۡنِالسَّبِیۡلِ ؕ وَ مَا
تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ فَاِنَّ اللّٰہَ بِہٖ عَلِیۡمٌ ﴿۲۱۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৫ আয়াতের আলোচনা পূর্বে করা হয়েছে।
2:216
کُتِبَ عَلَیۡکُمُ
الۡقِتَالُ وَ ہُوَ کُرۡہٌ لَّکُمۡ ۚ وَ عَسٰۤی اَنۡ تَکۡرَہُوۡا شَیۡئًا وَّ ہُوَ
خَیۡرٌ لَّکُمۡ ۚ وَ عَسٰۤی اَنۡ تُحِبُّوۡا شَیۡئًا وَّ ہُوَ شَرٌّ لَّکُمۡ ؕ وَ
اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۱۶﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৬ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা জিহাদ ফরয করেছেন।
ইমাম জুহুরী (রহঃ) বলেন: প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর জিহাদ ফরয। সে যুদ্ধ করুক বা বসে থাকুক। যে বসে থাকে তার কাছে যখন সাহায্য চাওয়া হয় তখন সাহায্য করবে, যখন সকলের সাথে ময়দানে বের হতে বলা হয়, তখন বের হবে আর বের হওয়ার যদি প্রয়োজন না থাকে তাহলে বসেই থাকবে।
এজন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَغْزُو، وَلَمْ يُحَدِّثْ نَفْسهُ بِالْغَزْوِ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً
যে ব্যক্তি মারা গেল কিন্তু যুদ্ধ করল না এবং যুদ্ধ করার বাসনাও মনে রাখল না সে জাহিলী যুগের মৃত্যু পেল। (সহীহ মুসলিম হা: ১৯১০)
জিহাদ ফরয হওয়া সত্ত্বেও অপছন্দীয়। কারণ, তাতে কষ্ট ও জীবননাশ রয়েছে। কিন্তু এতে রয়েছে প্রভূত কল্যাণ। আল্লাহ তা‘আলা বলছেন:
(فَاِنْ کَرِھْتُمُوْھُنَّ فَعَسٰٓی اَنْ تَکْرَھُوْا شَیْئًا وَّیَجْعَلَ اللہُ فِیْھِ خَیْرًا کَثِیْرًا)
“কেননা হতে পারে তোমরা তাদেরকে অপছন্দ করছ অথচ আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।”। (সূরা নিসা ৪:১২)
অনেক কল্যাণ হল- শত্র“দের ওপর জয় লাভ, দেশ বিজয়, গনীমত লাভসহ আরো অনেক কিছু। আর অনেক বস্তু পছন্দ কর তা হয়তো তোমাদের জন্য খারাপ। যেমন জিহাদে না গিয়ে ঘরে বসে থাকা, এর ফলে তোমাদের ওপর শত্র“রা জয়যুক্ত হবে এবং তোমাদেরকে লাঞ্ছনা ও অবমাননার শিকার হতে হবে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন কোনটি কল্যাণকর আর কোনটি অকল্যাণকর।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কিয়ামত পর্যন্ত জিহাদের বিধান বহাল থাকবে।
২. অজ্ঞতার কারণে মানুষ খারাপকে পছন্দ আর ভালকে অপছন্দ করে।
৩. আল্লাহ তা‘আলার সকল নির্দেশেই রয়েছে কল্যাণ। আর সকল নিষেধাজ্ঞাপূর্ণ কাজে রয়েছে অকল্যাণ।
অত্র আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা জিহাদ ফরয করেছেন।
ইমাম জুহুরী (রহঃ) বলেন: প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর জিহাদ ফরয। সে যুদ্ধ করুক বা বসে থাকুক। যে বসে থাকে তার কাছে যখন সাহায্য চাওয়া হয় তখন সাহায্য করবে, যখন সকলের সাথে ময়দানে বের হতে বলা হয়, তখন বের হবে আর বের হওয়ার যদি প্রয়োজন না থাকে তাহলে বসেই থাকবে।
এজন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَغْزُو، وَلَمْ يُحَدِّثْ نَفْسهُ بِالْغَزْوِ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً
যে ব্যক্তি মারা গেল কিন্তু যুদ্ধ করল না এবং যুদ্ধ করার বাসনাও মনে রাখল না সে জাহিলী যুগের মৃত্যু পেল। (সহীহ মুসলিম হা: ১৯১০)
জিহাদ ফরয হওয়া সত্ত্বেও অপছন্দীয়। কারণ, তাতে কষ্ট ও জীবননাশ রয়েছে। কিন্তু এতে রয়েছে প্রভূত কল্যাণ। আল্লাহ তা‘আলা বলছেন:
(فَاِنْ کَرِھْتُمُوْھُنَّ فَعَسٰٓی اَنْ تَکْرَھُوْا شَیْئًا وَّیَجْعَلَ اللہُ فِیْھِ خَیْرًا کَثِیْرًا)
“কেননা হতে পারে তোমরা তাদেরকে অপছন্দ করছ অথচ আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।”। (সূরা নিসা ৪:১২)
অনেক কল্যাণ হল- শত্র“দের ওপর জয় লাভ, দেশ বিজয়, গনীমত লাভসহ আরো অনেক কিছু। আর অনেক বস্তু পছন্দ কর তা হয়তো তোমাদের জন্য খারাপ। যেমন জিহাদে না গিয়ে ঘরে বসে থাকা, এর ফলে তোমাদের ওপর শত্র“রা জয়যুক্ত হবে এবং তোমাদেরকে লাঞ্ছনা ও অবমাননার শিকার হতে হবে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন কোনটি কল্যাণকর আর কোনটি অকল্যাণকর।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কিয়ামত পর্যন্ত জিহাদের বিধান বহাল থাকবে।
২. অজ্ঞতার কারণে মানুষ খারাপকে পছন্দ আর ভালকে অপছন্দ করে।
৩. আল্লাহ তা‘আলার সকল নির্দেশেই রয়েছে কল্যাণ। আর সকল নিষেধাজ্ঞাপূর্ণ কাজে রয়েছে অকল্যাণ।
2:217
یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ
الشَّہۡرِ الۡحَرَامِ قِتَالٍ فِیۡہِ ؕ قُلۡ قِتَالٌ فِیۡہِ کَبِیۡرٌ ؕ وَ صَدٌّ
عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ کُفۡرٌۢ بِہٖ وَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ٭ وَ اِخۡرَاجُ
اَہۡلِہٖ مِنۡہُ اَکۡبَرُ عِنۡدَ اللّٰہِ ۚ وَ الۡفِتۡنَۃُ اَکۡبَرُ مِنَ
الۡقَتۡلِ ؕ وَ لَا یَزَالُوۡنَ یُقَاتِلُوۡنَکُمۡ حَتّٰی یَرُدُّوۡکُمۡ عَنۡ
دِیۡنِکُمۡ اِنِ اسۡتَطَاعُوۡا ؕ وَ مَنۡ یَّرۡتَدِدۡ مِنۡکُمۡ عَنۡ دِیۡنِہٖ
فَیَمُتۡ وَ ہُوَ کَافِرٌ فَاُولٰٓئِکَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ
الۡاٰخِرَۃِ ۚ وَ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۱۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৭ ও ২১৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতের কয়েকটি শানে নুযূলের বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু সকল বর্ণনা ত্র“টি থেকে মুক্ত নয়। তাই শানে নুযূল উল্লেখ করা অনর্থক। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সকল বর্ণনার সারাংশ হল- রজব, যুলকাদা, যুলহজ্জ এবং মুহাররাম এ চারটি মাস জাহিলী যুগ থেকেই হারাম অর্থাৎ সম্মানিত যাতে কোন প্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ করা পাপের কাজ। ইসলাম এসে এর সম্মান আরো বৃদ্ধি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ বিন জাহাশকে সেনা প্রধান করে একটি বাহিনী প্রেরণ করেন। তারা আমর বিন হাজরামী নামে একজন লোককে হত্যা করে তার সম্পদ নিয়ে নেয়। সেটা ছিল রজব মাস। কাফির ও মুনাফিকগণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াতে লাগল যে, মুসলিমরা হারাম মাসে হত্যা করে, হারাম মাসের সম্মান খেয়াল করে না। এ ব্যাপারেই উক্ত আয়াত নাযিল হয়। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করে, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হারাম মাসে যুদ্ধ করা কি হালাল? আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিচ্ছেন বল: হারাম মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাত হারাম। কিন্তু তোমরা যে মানুষকে ইসলাম গ্রহণে বাধা দাও, আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের সাথে কুফরী কর, মানুষদেরকে মাসজিদে হারামে প্রবেশ করতে বাধা দাও এবং রাসূলকে ও মুহাজিরদেরকে মক্কা থেকে বের করে দিয়েছ তা আরো বেশি গুরুতর অপরাধ। আর তোমরা যে শির্ক কর তা হত্যা করার চেয়েও বেশি পাপ। তাই তোমরা যে যত বড় বড় অপরাধে লিপ্ত রয়েছে, তা বাদ দিয়ে এ হত্যা নিয়ে হাঙ্গামা করার কোন অর্থই হয়না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা যখন নিজেদের অপকর্ম, চক্রান্ত এবং তোমাদের মুরতাদ করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকল না তাহলে হারাম মাসের কারণে তাদের মোকাবেলা করা থেকে তোমরাও বিরত থেকো না?
(وَمَنْ يَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ)
‘যে ব্যক্তি দীন ইসলাম থেকে ফিরে যাবে’অর্থাৎ মুরতাদ হয়ে যাবে তাওবা না করলে তার পার্থিব শাস্তি হল হত্যা বা মৃত্যুদণ্ড।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি তার দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। (সহীহ বুখারী হা: ৩০১৭) আর এ আয়াতে পরলৌকিক শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
এ থেকে বুঝা যায় সারা জীবন সৎ আমল করে অবশেষে মুরতাদ হয়ে গেলে তার সব সৎ আমাল বরবাদ হয়ে যায়। যেমন ঈমান আনার পর পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।
মুরতাদ যদি তাওবা করে তাহলে তাকে হত্যা করা যাবে না এবং শর্ত অনুযায়ী তাওবাহ করলে আল্লাহ তা‘আলা তা কবূল করেন। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ব্যক্তিদের কথা বলছেন-১. যারা ঈমান আনে,
২. যারা হিজরত করে,
৩. যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করে। প্রকৃতপক্ষে তারাই আল্লাহ তা‘আলার রহমাতের আশাবাদী।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হারাম মাস ও হারাম শহরের মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. হারাম মাসে যুদ্ধ-জিহাদের নিষেধাজ্ঞা রহিত হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাওয়াজেন ও সাকিফ গোত্রের বিরুদ্ধে শাওয়াল ও যুলকাদা মাসে যুদ্ধ করেছেন।
৩. কাফিররা মুসিলমদের মুরতাদ না বানানো পর্যন্ত যুদ্ধের অপচেষ্টা চালাতে থাকবে।
৪. ঈমান, হিজরত ও জিহাদের ফযীলত জানতে পারলাম।
অত্র আয়াতের কয়েকটি শানে নুযূলের বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু সকল বর্ণনা ত্র“টি থেকে মুক্ত নয়। তাই শানে নুযূল উল্লেখ করা অনর্থক। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সকল বর্ণনার সারাংশ হল- রজব, যুলকাদা, যুলহজ্জ এবং মুহাররাম এ চারটি মাস জাহিলী যুগ থেকেই হারাম অর্থাৎ সম্মানিত যাতে কোন প্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ করা পাপের কাজ। ইসলাম এসে এর সম্মান আরো বৃদ্ধি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ বিন জাহাশকে সেনা প্রধান করে একটি বাহিনী প্রেরণ করেন। তারা আমর বিন হাজরামী নামে একজন লোককে হত্যা করে তার সম্পদ নিয়ে নেয়। সেটা ছিল রজব মাস। কাফির ও মুনাফিকগণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াতে লাগল যে, মুসলিমরা হারাম মাসে হত্যা করে, হারাম মাসের সম্মান খেয়াল করে না। এ ব্যাপারেই উক্ত আয়াত নাযিল হয়। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করে, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হারাম মাসে যুদ্ধ করা কি হালাল? আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিচ্ছেন বল: হারাম মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাত হারাম। কিন্তু তোমরা যে মানুষকে ইসলাম গ্রহণে বাধা দাও, আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের সাথে কুফরী কর, মানুষদেরকে মাসজিদে হারামে প্রবেশ করতে বাধা দাও এবং রাসূলকে ও মুহাজিরদেরকে মক্কা থেকে বের করে দিয়েছ তা আরো বেশি গুরুতর অপরাধ। আর তোমরা যে শির্ক কর তা হত্যা করার চেয়েও বেশি পাপ। তাই তোমরা যে যত বড় বড় অপরাধে লিপ্ত রয়েছে, তা বাদ দিয়ে এ হত্যা নিয়ে হাঙ্গামা করার কোন অর্থই হয়না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা যখন নিজেদের অপকর্ম, চক্রান্ত এবং তোমাদের মুরতাদ করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকল না তাহলে হারাম মাসের কারণে তাদের মোকাবেলা করা থেকে তোমরাও বিরত থেকো না?
(وَمَنْ يَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ)
‘যে ব্যক্তি দীন ইসলাম থেকে ফিরে যাবে’অর্থাৎ মুরতাদ হয়ে যাবে তাওবা না করলে তার পার্থিব শাস্তি হল হত্যা বা মৃত্যুদণ্ড।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি তার দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। (সহীহ বুখারী হা: ৩০১৭) আর এ আয়াতে পরলৌকিক শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
এ থেকে বুঝা যায় সারা জীবন সৎ আমল করে অবশেষে মুরতাদ হয়ে গেলে তার সব সৎ আমাল বরবাদ হয়ে যায়। যেমন ঈমান আনার পর পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।
মুরতাদ যদি তাওবা করে তাহলে তাকে হত্যা করা যাবে না এবং শর্ত অনুযায়ী তাওবাহ করলে আল্লাহ তা‘আলা তা কবূল করেন। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ব্যক্তিদের কথা বলছেন-১. যারা ঈমান আনে,
২. যারা হিজরত করে,
৩. যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করে। প্রকৃতপক্ষে তারাই আল্লাহ তা‘আলার রহমাতের আশাবাদী।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হারাম মাস ও হারাম শহরের মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. হারাম মাসে যুদ্ধ-জিহাদের নিষেধাজ্ঞা রহিত হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাওয়াজেন ও সাকিফ গোত্রের বিরুদ্ধে শাওয়াল ও যুলকাদা মাসে যুদ্ধ করেছেন।
৩. কাফিররা মুসিলমদের মুরতাদ না বানানো পর্যন্ত যুদ্ধের অপচেষ্টা চালাতে থাকবে।
৪. ঈমান, হিজরত ও জিহাদের ফযীলত জানতে পারলাম।
2:218
اِنَّ الَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡا وَ الَّذِیۡنَ ہَاجَرُوۡا وَ جٰہَدُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ۙ
اُولٰٓئِکَ یَرۡجُوۡنَ رَحۡمَتَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۲۱۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৭ ও ২১৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতের কয়েকটি শানে নুযূলের বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু সকল বর্ণনা ত্র“টি থেকে মুক্ত নয়। তাই শানে নুযূল উল্লেখ করা অনর্থক। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সকল বর্ণনার সারাংশ হল- রজব, যুলকাদা, যুলহজ্জ এবং মুহাররাম এ চারটি মাস জাহিলী যুগ থেকেই হারাম অর্থাৎ সম্মানিত যাতে কোন প্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ করা পাপের কাজ। ইসলাম এসে এর সম্মান আরো বৃদ্ধি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ বিন জাহাশকে সেনা প্রধান করে একটি বাহিনী প্রেরণ করেন। তারা আমর বিন হাজরামী নামে একজন লোককে হত্যা করে তার সম্পদ নিয়ে নেয়। সেটা ছিল রজব মাস। কাফির ও মুনাফিকগণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াতে লাগল যে, মুসলিমরা হারাম মাসে হত্যা করে, হারাম মাসের সম্মান খেয়াল করে না। এ ব্যাপারেই উক্ত আয়াত নাযিল হয়। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করে, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হারাম মাসে যুদ্ধ করা কি হালাল? আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিচ্ছেন বল: হারাম মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাত হারাম। কিন্তু তোমরা যে মানুষকে ইসলাম গ্রহণে বাধা দাও, আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের সাথে কুফরী কর, মানুষদেরকে মাসজিদে হারামে প্রবেশ করতে বাধা দাও এবং রাসূলকে ও মুহাজিরদেরকে মক্কা থেকে বের করে দিয়েছ তা আরো বেশি গুরুতর অপরাধ। আর তোমরা যে শির্ক কর তা হত্যা করার চেয়েও বেশি পাপ। তাই তোমরা যে যত বড় বড় অপরাধে লিপ্ত রয়েছে, তা বাদ দিয়ে এ হত্যা নিয়ে হাঙ্গামা করার কোন অর্থই হয়না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা যখন নিজেদের অপকর্ম, চক্রান্ত এবং তোমাদের মুরতাদ করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকল না তাহলে হারাম মাসের কারণে তাদের মোকাবেলা করা থেকে তোমরাও বিরত থেকো না?
(وَمَنْ يَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ)
‘যে ব্যক্তি দীন ইসলাম থেকে ফিরে যাবে’অর্থাৎ মুরতাদ হয়ে যাবে তাওবা না করলে তার পার্থিব শাস্তি হল হত্যা বা মৃত্যুদণ্ড।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি তার দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। (সহীহ বুখারী হা: ৩০১৭) আর এ আয়াতে পরলৌকিক শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
এ থেকে বুঝা যায় সারা জীবন সৎ আমল করে অবশেষে মুরতাদ হয়ে গেলে তার সব সৎ আমাল বরবাদ হয়ে যায়। যেমন ঈমান আনার পর পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।
মুরতাদ যদি তাওবা করে তাহলে তাকে হত্যা করা যাবে না এবং শর্ত অনুযায়ী তাওবাহ করলে আল্লাহ তা‘আলা তা কবূল করেন। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ব্যক্তিদের কথা বলছেন
-১. যারা ঈমান আনে,
২. যারা হিজরত করে,
৩. যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করে। প্রকৃতপক্ষে তারাই আল্লাহ তা‘আলার রহমাতের আশাবাদী।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হারাম মাস ও হারাম শহরের মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. হারাম মাসে যুদ্ধ-জিহাদের নিষেধাজ্ঞা রহিত হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাওয়াজেন ও সাকিফ গোত্রের বিরুদ্ধে শাওয়াল ও যুলকাদা মাসে যুদ্ধ করেছেন।
৩. কাফিররা মুসিলমদের মুরতাদ না বানানো পর্যন্ত যুদ্ধের অপচেষ্টা চালাতে থাকবে।
৪. ঈমান, হিজরত ও জিহাদের ফযীলত জানতে পারলাম।
অত্র আয়াতের কয়েকটি শানে নুযূলের বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু সকল বর্ণনা ত্র“টি থেকে মুক্ত নয়। তাই শানে নুযূল উল্লেখ করা অনর্থক। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
সকল বর্ণনার সারাংশ হল- রজব, যুলকাদা, যুলহজ্জ এবং মুহাররাম এ চারটি মাস জাহিলী যুগ থেকেই হারাম অর্থাৎ সম্মানিত যাতে কোন প্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ করা পাপের কাজ। ইসলাম এসে এর সম্মান আরো বৃদ্ধি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ বিন জাহাশকে সেনা প্রধান করে একটি বাহিনী প্রেরণ করেন। তারা আমর বিন হাজরামী নামে একজন লোককে হত্যা করে তার সম্পদ নিয়ে নেয়। সেটা ছিল রজব মাস। কাফির ও মুনাফিকগণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াতে লাগল যে, মুসলিমরা হারাম মাসে হত্যা করে, হারাম মাসের সম্মান খেয়াল করে না। এ ব্যাপারেই উক্ত আয়াত নাযিল হয়। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করে, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হারাম মাসে যুদ্ধ করা কি হালাল? আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দিচ্ছেন বল: হারাম মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাত হারাম। কিন্তু তোমরা যে মানুষকে ইসলাম গ্রহণে বাধা দাও, আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের সাথে কুফরী কর, মানুষদেরকে মাসজিদে হারামে প্রবেশ করতে বাধা দাও এবং রাসূলকে ও মুহাজিরদেরকে মক্কা থেকে বের করে দিয়েছ তা আরো বেশি গুরুতর অপরাধ। আর তোমরা যে শির্ক কর তা হত্যা করার চেয়েও বেশি পাপ। তাই তোমরা যে যত বড় বড় অপরাধে লিপ্ত রয়েছে, তা বাদ দিয়ে এ হত্যা নিয়ে হাঙ্গামা করার কোন অর্থই হয়না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা যখন নিজেদের অপকর্ম, চক্রান্ত এবং তোমাদের মুরতাদ করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকল না তাহলে হারাম মাসের কারণে তাদের মোকাবেলা করা থেকে তোমরাও বিরত থেকো না?
(وَمَنْ يَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ)
‘যে ব্যক্তি দীন ইসলাম থেকে ফিরে যাবে’অর্থাৎ মুরতাদ হয়ে যাবে তাওবা না করলে তার পার্থিব শাস্তি হল হত্যা বা মৃত্যুদণ্ড।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি তার দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। (সহীহ বুখারী হা: ৩০১৭) আর এ আয়াতে পরলৌকিক শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
এ থেকে বুঝা যায় সারা জীবন সৎ আমল করে অবশেষে মুরতাদ হয়ে গেলে তার সব সৎ আমাল বরবাদ হয়ে যায়। যেমন ঈমান আনার পর পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।
মুরতাদ যদি তাওবা করে তাহলে তাকে হত্যা করা যাবে না এবং শর্ত অনুযায়ী তাওবাহ করলে আল্লাহ তা‘আলা তা কবূল করেন। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ব্যক্তিদের কথা বলছেন
-১. যারা ঈমান আনে,
২. যারা হিজরত করে,
৩. যারা আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করে। প্রকৃতপক্ষে তারাই আল্লাহ তা‘আলার রহমাতের আশাবাদী।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. হারাম মাস ও হারাম শহরের মর্যাদা জানতে পারলাম।
২. হারাম মাসে যুদ্ধ-জিহাদের নিষেধাজ্ঞা রহিত হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাওয়াজেন ও সাকিফ গোত্রের বিরুদ্ধে শাওয়াল ও যুলকাদা মাসে যুদ্ধ করেছেন।
৩. কাফিররা মুসিলমদের মুরতাদ না বানানো পর্যন্ত যুদ্ধের অপচেষ্টা চালাতে থাকবে।
৪. ঈমান, হিজরত ও জিহাদের ফযীলত জানতে পারলাম।
2:219
یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ
الۡخَمۡرِ وَ الۡمَیۡسِرِؕ قُلۡ فِیۡہِمَاۤ اِثۡمٌ کَبِیۡرٌ وَّ مَنَافِعُ
لِلنَّاسِ ۫ وَ اِثۡمُہُمَاۤ اَکۡبَرُ مِنۡ نَّفۡعِہِمَا ؕ وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ مَا
ذَا یُنۡفِقُوۡنَ ۬ؕ قُلِ الۡعَفۡوَؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمُ الۡاٰیٰتِ
لَعَلَّکُمۡ تَتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۲۱۹﴾ۙ
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২১৯ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
যখন মদ হারাম হওয়া প্রসঙ্গে আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন উমার (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহ! মদের ব্যাপারে আমাদেরকে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিন। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
তারপর উমার (রাঃ)-কে ডেকে আনা হয় এবং এ আয়াতটি পাঠ করে শোনান হয়। উমার (রাঃ) পুনরায় বললেন, হে আল্লাহ! মদের ব্যাপারে আমাদেরকে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিন। তখন সূরা নিসার ৪৩ নং আয়াত অবতীর্ণ হয়। সালাতের সময় হলে মুয়াযযিন বলে দিত কেউ যেন নেশাগ্রস্ত হয়ে সালাতে না আসে। উমার (রাঃ)-কে ডেকে আনা হল। তাঁর কাছে সূরা নিসার উক্ত আয়াত পাঠ করা হল। তখন তিনি পুনরায় সে কথাই বললেন। তখন সূরা মায়িদার ৯০ নং আয়াত অবতীর্ণ হয়। তারপর উমার (রাঃ)-কে ডেকে আনা হল এবং এ আয়াতটি পাঠ করা হল, এমনকি আয়াতের শেষাংশ “তোমরা কি বিরত থাকলে” এ পর্যন্ত পঠিত হল তখন উমার (রাঃ) বললেন: বিরত থাকলাম। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৭০, তিরমিযী হা: ৩০৪৯, সহীহ)
শানে নুযূল থেকে বুঝা যায় মদ পর্যায়ক্রমে তিনবারে হারাম হয়েছে।
শেষবারে সম্পূর্ণ হারাম হয়েছে সূরা মায়িদার ৯০ নং আয়াত দ্বারা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یٰٓاَیُّھَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْٓا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَیْسِرُ وَالْاَنْصَابُ وَالْاَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّیْطٰنِ فَاجْتَنِبُوْھُ لَعَلَّکُمْ تُفْلِحُوْنَ)
“হে মু’মিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর- যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৯০)
(وَإِثْمُهُمَآ أَكْبَرُ مِنْ نَّفْعِهِمَا)
‘এ দু’টির মধ্যে বড় গুনাহ রয়েছে আর তা মানুষের জন্য কিছুটা উপকারী’অর্থাৎ মদপান শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে মহাপাপ। যেহেতু এর ফলে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, গালি-গালাজ ও অশ্লীলতা সৃষ্টি হয়। ইবাদত পালনে বাধা সৃষ্টি হয়, অর্থের অপচয় ঘটে এবং বিদ্বেষ, দারিদ্র ও লাঞ্ছনার আগমন ঘটে।
আর উপকারিতার সম্পর্ক দুনিয়ার সাথে। যেমন মদপানে সাময়িকভাবে শরীরিক স্ফূর্তি-আনন্দ উদ্যম ও কারো কারো মস্তিষ্কে তেজস্ক্রিয়তাও আসে, যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে, বিক্রয় করে অনেক অর্থ উপার্জন করা যায়। এ ছাড়াও আরো কিছু উপকার রয়েছে। কিন্তু এ উপকার ক্ষতির তুলনায় অতি নগণ্য।
যেহেতু এ আয়াত দ্বারা সর্বপ্রথম মদ হারাম হবার প্রক্রিয়া শুরু হয় তাই প্রথমেই সম্পূর্ণভাবে হারাম করা হয়নি। ফলে ভাল-মন্দ উভয়ের অবকাশ থাকে। সর্বশেষ সূরা মায়েদার ৯০ নং আয়াত দ্বারা মদ সম্পূর্ণভাবে হারাম হয়েছে।
মদ নির্দিষ্ট কোন পানীয় বা নেশার নাম নয়, বরং প্রত্যেক ঐ বস্তু বা পানীয় যা জ্ঞানকে বিকৃত করে তাই মদ। তা কম হোক বা বেশি হোক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যা বেশি (খেলে বা পান করলে) নেশাগ্রস্থ হয় তার কমও হারাম। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৮১, তিরমিযী হা: ১৮৬৫, হাসান সহীহ)
(مَاذَا یُنْفِقُوْنَ) ‘কী ব্যয় করবে?’অর্থাৎ তারা কী পরিমাণ ব্যয় করবে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে? বল: اَلْعَفْوُ এর অর্থ হল- প্রয়োজনের অতিরিক্ত যা তা ব্যয় কর। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কী তার তাফসীর হাদীসে এসেছে:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: সর্বোত্তম ব্যয় হলো যা সচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করা হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৪২৬)
তবে এ ব্যয় নিকটাত্মীয়গণ পাওয়ার বেশি হকদার। যেমন হাদীসে এসেছে: এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে একটি দিনার আছে (আমি কোথায় ব্যয় করব)? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমার নিজের জন্য ব্যয় কর। সে ব্যক্তি বলল: আরেকটি আছে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় কর। লোকটি বলল: আমার কাছে আরেকটি আছে? তিনি বললেন: তোমার সন্তানের জন্য ব্যয় কর। লোকটি বলল: আমার কাছে আরেকটি দিনার আছে? তিনি বললেন: তুমি ভাল জান কোথায় ব্যয় করা প্রয়োজন। (আবু দাঊদ হা: ১৬৯১, হাসান)
এভাবে আল্লাহ তা‘আলা বিধি-বিধান বিশদভাবে বর্ণনা করেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মদ, জুয়া এসব হারাম। এগুলো শয়তানের কাজ।
২. সচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করা উত্তম, এটাই হল প্রয়োজনের অতিরিক্ত।
৩. শরীয়তের বিধান ক্রমান্বয়ে অবতীর্ণ হবার হেকমত জানলাম।
শানে নুযূল:
যখন মদ হারাম হওয়া প্রসঙ্গে আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন উমার (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহ! মদের ব্যাপারে আমাদেরকে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিন। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
তারপর উমার (রাঃ)-কে ডেকে আনা হয় এবং এ আয়াতটি পাঠ করে শোনান হয়। উমার (রাঃ) পুনরায় বললেন, হে আল্লাহ! মদের ব্যাপারে আমাদেরকে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিন। তখন সূরা নিসার ৪৩ নং আয়াত অবতীর্ণ হয়। সালাতের সময় হলে মুয়াযযিন বলে দিত কেউ যেন নেশাগ্রস্ত হয়ে সালাতে না আসে। উমার (রাঃ)-কে ডেকে আনা হল। তাঁর কাছে সূরা নিসার উক্ত আয়াত পাঠ করা হল। তখন তিনি পুনরায় সে কথাই বললেন। তখন সূরা মায়িদার ৯০ নং আয়াত অবতীর্ণ হয়। তারপর উমার (রাঃ)-কে ডেকে আনা হল এবং এ আয়াতটি পাঠ করা হল, এমনকি আয়াতের শেষাংশ “তোমরা কি বিরত থাকলে” এ পর্যন্ত পঠিত হল তখন উমার (রাঃ) বললেন: বিরত থাকলাম। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৭০, তিরমিযী হা: ৩০৪৯, সহীহ)
শানে নুযূল থেকে বুঝা যায় মদ পর্যায়ক্রমে তিনবারে হারাম হয়েছে।
শেষবারে সম্পূর্ণ হারাম হয়েছে সূরা মায়িদার ৯০ নং আয়াত দ্বারা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یٰٓاَیُّھَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْٓا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَیْسِرُ وَالْاَنْصَابُ وَالْاَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّیْطٰنِ فَاجْتَنِبُوْھُ لَعَلَّکُمْ تُفْلِحُوْنَ)
“হে মু’মিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর- যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৯০)
(وَإِثْمُهُمَآ أَكْبَرُ مِنْ نَّفْعِهِمَا)
‘এ দু’টির মধ্যে বড় গুনাহ রয়েছে আর তা মানুষের জন্য কিছুটা উপকারী’অর্থাৎ মদপান শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে মহাপাপ। যেহেতু এর ফলে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, গালি-গালাজ ও অশ্লীলতা সৃষ্টি হয়। ইবাদত পালনে বাধা সৃষ্টি হয়, অর্থের অপচয় ঘটে এবং বিদ্বেষ, দারিদ্র ও লাঞ্ছনার আগমন ঘটে।
আর উপকারিতার সম্পর্ক দুনিয়ার সাথে। যেমন মদপানে সাময়িকভাবে শরীরিক স্ফূর্তি-আনন্দ উদ্যম ও কারো কারো মস্তিষ্কে তেজস্ক্রিয়তাও আসে, যৌনশক্তি বৃদ্ধি করে, বিক্রয় করে অনেক অর্থ উপার্জন করা যায়। এ ছাড়াও আরো কিছু উপকার রয়েছে। কিন্তু এ উপকার ক্ষতির তুলনায় অতি নগণ্য।
যেহেতু এ আয়াত দ্বারা সর্বপ্রথম মদ হারাম হবার প্রক্রিয়া শুরু হয় তাই প্রথমেই সম্পূর্ণভাবে হারাম করা হয়নি। ফলে ভাল-মন্দ উভয়ের অবকাশ থাকে। সর্বশেষ সূরা মায়েদার ৯০ নং আয়াত দ্বারা মদ সম্পূর্ণভাবে হারাম হয়েছে।
মদ নির্দিষ্ট কোন পানীয় বা নেশার নাম নয়, বরং প্রত্যেক ঐ বস্তু বা পানীয় যা জ্ঞানকে বিকৃত করে তাই মদ। তা কম হোক বা বেশি হোক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যা বেশি (খেলে বা পান করলে) নেশাগ্রস্থ হয় তার কমও হারাম। (আবূ দাঊদ হা: ৩৬৮১, তিরমিযী হা: ১৮৬৫, হাসান সহীহ)
(مَاذَا یُنْفِقُوْنَ) ‘কী ব্যয় করবে?’অর্থাৎ তারা কী পরিমাণ ব্যয় করবে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে? বল: اَلْعَفْوُ এর অর্থ হল- প্রয়োজনের অতিরিক্ত যা তা ব্যয় কর। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কী তার তাফসীর হাদীসে এসেছে:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: সর্বোত্তম ব্যয় হলো যা সচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করা হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১৪২৬)
তবে এ ব্যয় নিকটাত্মীয়গণ পাওয়ার বেশি হকদার। যেমন হাদীসে এসেছে: এক ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে একটি দিনার আছে (আমি কোথায় ব্যয় করব)? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমার নিজের জন্য ব্যয় কর। সে ব্যক্তি বলল: আরেকটি আছে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় কর। লোকটি বলল: আমার কাছে আরেকটি আছে? তিনি বললেন: তোমার সন্তানের জন্য ব্যয় কর। লোকটি বলল: আমার কাছে আরেকটি দিনার আছে? তিনি বললেন: তুমি ভাল জান কোথায় ব্যয় করা প্রয়োজন। (আবু দাঊদ হা: ১৬৯১, হাসান)
এভাবে আল্লাহ তা‘আলা বিধি-বিধান বিশদভাবে বর্ণনা করেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মদ, জুয়া এসব হারাম। এগুলো শয়তানের কাজ।
২. সচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করা উত্তম, এটাই হল প্রয়োজনের অতিরিক্ত।
৩. শরীয়তের বিধান ক্রমান্বয়ে অবতীর্ণ হবার হেকমত জানলাম।
2:220
فِی الدُّنۡیَا وَ
الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡیَتٰمٰی ؕ قُلۡ اِصۡلَاحٌ لَّہُمۡ
خَیۡرٌ ؕ وَ اِنۡ تُخَالِطُوۡہُمۡ فَاِخۡوَانُکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ
الۡمُفۡسِدَ مِنَ الۡمُصۡلِحِ ؕ وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ لَاَعۡنَتَکُمۡ ؕ اِنَّ
اللّٰہَ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ ﴿۲۲۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২০ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
সাহাবী ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সূরা আনআমের ১৫২ ও সূরা নিসার ১০ নং আয়াতদ্বয় অবতীর্ণ হয় তখন যারা ইয়াতিমের দায়িত্বশীল ছিল তারা ইয়াতীমদের খাবার পানীয় সম্পূর্ণরূপে আলাদা করে দেয়। তখন ঐ ইয়াতীমদের রান্না করা খাবার বেঁচে গেলে অন্য সময় তাদেরকেই খেতে হত নয়তো নষ্ট হয়ে যেত। ফলে একদিকে যেমন ইয়াতীমদের ক্ষতি হত অন্যদিকে ইয়াতিমের দায়িত্বশীলদের সমস্যা হত। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বিষয়টি তুলে ধরল, তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ২৮৭১, নাসাঈ হা: ৩৬৭১, হাসান, ইবনু কাসীর ১/৫৫৭)
সমাজে ইয়াতীম বলতে সাধারণত তাদেরকে বুঝানো হয়ে থাকে যাদের পিতা-মাতা বা পিতা মারা গেছে, তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে গেলেও। মূলত ইয়াতীম বলা হয়- যে অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পিতা মারা গেছে। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে সে আর ইয়াতীম থাকবে না।
ইয়াতীমদের প্রতিপালন একদিকে যেমন গুরুত্বের দাবীদার অন্যদিকে রয়েছে বিশেষ ফযীলত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি ও ইয়াতিমের দায়িত্ব বহনকারী ব্যক্তি জান্নাতে এরকম পাশাপাশি থাকব, এ কথা বলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুল উঁচু করে দেখালেন এবং একটু পার্থক্য করলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫৩০৪)
এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর ইয়াদিমের দায়িত্বশীলরা তাদের সম্পদের সাথে ইয়াতীমদের সম্পদ মিশ্রণ করতে লাগল এবং কোন সংকোচ না রেখে আপন গতিতে জীবন-যাপন করতে লাগল।
আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে তোমাদের ওপর কঠিন ও সঙ্কীর্ণতা আরোপ করতে পারতেন অর্থাৎ সংমিশ্রণ করার অনুমতি দিতেন না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াতীমদের সম্পদ নিজের সম্পদের সাথে মিশ্রণ করা জায়েয আছে। তবে অন্যায়ভাবে তাদের সম্পদ খাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করেন- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
শানে নুযূল:
সাহাবী ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন সূরা আনআমের ১৫২ ও সূরা নিসার ১০ নং আয়াতদ্বয় অবতীর্ণ হয় তখন যারা ইয়াতিমের দায়িত্বশীল ছিল তারা ইয়াতীমদের খাবার পানীয় সম্পূর্ণরূপে আলাদা করে দেয়। তখন ঐ ইয়াতীমদের রান্না করা খাবার বেঁচে গেলে অন্য সময় তাদেরকেই খেতে হত নয়তো নষ্ট হয়ে যেত। ফলে একদিকে যেমন ইয়াতীমদের ক্ষতি হত অন্যদিকে ইয়াতিমের দায়িত্বশীলদের সমস্যা হত। তাই তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বিষয়টি তুলে ধরল, তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (আবূ দাঊদ হা: ২৮৭১, নাসাঈ হা: ৩৬৭১, হাসান, ইবনু কাসীর ১/৫৫৭)
সমাজে ইয়াতীম বলতে সাধারণত তাদেরকে বুঝানো হয়ে থাকে যাদের পিতা-মাতা বা পিতা মারা গেছে, তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে গেলেও। মূলত ইয়াতীম বলা হয়- যে অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পিতা মারা গেছে। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে সে আর ইয়াতীম থাকবে না।
ইয়াতীমদের প্রতিপালন একদিকে যেমন গুরুত্বের দাবীদার অন্যদিকে রয়েছে বিশেষ ফযীলত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি ও ইয়াতিমের দায়িত্ব বহনকারী ব্যক্তি জান্নাতে এরকম পাশাপাশি থাকব, এ কথা বলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুল উঁচু করে দেখালেন এবং একটু পার্থক্য করলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫৩০৪)
এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর ইয়াদিমের দায়িত্বশীলরা তাদের সম্পদের সাথে ইয়াতীমদের সম্পদ মিশ্রণ করতে লাগল এবং কোন সংকোচ না রেখে আপন গতিতে জীবন-যাপন করতে লাগল।
আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে তোমাদের ওপর কঠিন ও সঙ্কীর্ণতা আরোপ করতে পারতেন অর্থাৎ সংমিশ্রণ করার অনুমতি দিতেন না।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াতীমদের সম্পদ নিজের সম্পদের সাথে মিশ্রণ করা জায়েয আছে। তবে অন্যায়ভাবে তাদের সম্পদ খাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করেন- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
2:221
وَ لَا تَنۡکِحُوا
الۡمُشۡرِکٰتِ حَتّٰی یُؤۡمِنَّ ؕ وَ لَاَمَۃٌ مُّؤۡمِنَۃٌ خَیۡرٌ مِّنۡ
مُّشۡرِکَۃٍ وَّ لَوۡ اَعۡجَبَتۡکُمۡ ۚ وَ لَا تُنۡکِحُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَتّٰی
یُؤۡمِنُوۡا ؕ وَ لَعَبۡدٌ مُّؤۡمِنٌ خَیۡرٌ مِّنۡ مُّشۡرِکٍ وَّ لَوۡ
اَعۡجَبَکُمۡ ؕ اُولٰٓئِکَ یَدۡعُوۡنَ اِلَی النَّارِ ۚۖ وَ اللّٰہُ یَدۡعُوۡۤا
اِلَی الۡجَنَّۃِ وَ الۡمَغۡفِرَۃِ بِاِذۡنِہٖ ۚ وَ یُبَیِّنُ اٰیٰتِہٖ لِلنَّاسِ
لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۲۲۱﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২১ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের জন্য মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করা হারাম করে দিয়েছেন। এ আয়াতে সকল মুশরিক নারী শামিল। সে আহলে কিতাবের হোক বা মূর্তি পূজারী হোক। অন্য আয়াতে আহলে কিতাবের নারীদের বিবাহ করার বৈধতা দেয়া হয়েছে তবে শর্ত হল তাদের দীনের ওপর বহাল থাকতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالْمُحْصَنٰتُ مِنَ الْمُؤْمِنٰتِ وَالْمُحْصَنٰتُ مِنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِکُمْ اِذَآ اٰتَیْتُمُوْھُنَّ اُجُوْرَھُنَّ مُحْصِنِیْنَ غَیْرَ مُسٰفِحِیْنَ)
“এবং মু’মিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হল যদি তোমরা বিবাহের জন্য তাদের মোহর প্রদান কর।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৫)
অবশ্য উমার (রাঃ) সৎ উদ্দেশ্যেও আহলে কিতাব মহিলাদেরকে বিবাহ করা অপছন্দ করতেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, পৃঃ ৫৫৮)
ইবনু উমার (রাঃ) আহলে কিতাব নারীদের বিবাহ করা অপছন্দ করতেন। কারণ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন: ইবনু উমার (রাঃ) বলেন: যারা বলে ঈসা (আঃ) হলেন আল্লাহ তা‘আলা- এর চেয়ে বড় কোন শির্ক আছে কিনা আমি জানি না। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৮৫)
মূলতঃ তাদেরকে বিবাহ না করাই ভাল। কারণ এতে সংসারে সমস্যা সৃষ্টি হবে ও সন্তান-সন্ততির সমস্যা হবে। সর্বপরি দীনের সমস্যা হবে।
অনুরূপভাবে কোন মু’মিনা মহিলা কোন মুশরিক পুরুষকে বিবাহ করবে না ঈমান না আনা পর্যন্ত। মুশরিক মহিলাদেরকে বিবাহ করার চেয়ে বা মুশরিক পুরুষদেরকে বিবাহ করার চেয়ে মু’মিন দাস-দাসীদের বিবাহ করা উত্তম। যদিও মুশরিক মহিলা বা পুরুষের সম্পদ সৌন্দর্য তোমাদেরকে আকৃষ্ট করে এবং মু’মিন দাস-দাসী গরীব বা কদাকার হওয়ায় বাহ্যিক অপছন্দের হয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মহিলাদেরকে সাধারণত তাদের সম্পদ, সৌন্দর্য, বংশ ও দীনদারীত্ব দেখে বিবাহ করা হয়। তোমরা দীনদার মহিলাদের বিবাহের জন্য নিবার্চন কর। (সহীহ বুখারী হা: ৫০৯০, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৬৬) মূলত: দীনদারিত্বকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, কারণ দীন না থাকলে দাম্পত্য জীবন শান্তিময় হওয়া খুবই কঠিন।
(وَلَا تُنْكِحُوا)
‘তোমরা বিবাহ দেবে না’এ অংশ প্রমাণ করে ওলী ছাড়া বিবাহ হবে না। হাদীসেও বিবাহের ক্ষেত্রে ওলীর ওপর খুব গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এমনকি বলা হয়েছে: যে মহিলা অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করল তার বিবাহ বাতিল। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা তিনবার বললেন। (সহীহুল জামে হা: ২৭০৯) অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে: যে মহিলা নিজেকে নিজেই বিবাহ দেয় সে ব্যভিচারিণী। (সহীহ মুসলিম হা: ১৪২১)
অতএব অভিভাকের অনুমতি ছাড়া মেয়েদের বিবাহ শুদ্ধ হবে না।
মুশরিক পুরুষ-মহিলা সবাই জাহান্নামের দিকে ডাকে। আর আল্লাহ তা‘আলা তিনি জান্নাত ও ক্ষমার দিকে ডাকেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুশরিক মহিলাদেরকে মু’মিন পুরুষের বিবাহ করা কিংবা মুশরিক পুরুষদের সাথে মু’মিনা নারীদের বিবাহ দেয়া হারাম।
২. মহিলাগণ অভিভাবক ছাড়া বিবাহ করতে পারবে না।
৩. মুশরিকদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক বা ওঠাবসা থেকে বেঁচে থাকা উচিত।
৪. বিবাহের ক্ষেত্রে নারীদের দীনদারীত্বকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।
এ আয়াত দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের জন্য মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করা হারাম করে দিয়েছেন। এ আয়াতে সকল মুশরিক নারী শামিল। সে আহলে কিতাবের হোক বা মূর্তি পূজারী হোক। অন্য আয়াতে আহলে কিতাবের নারীদের বিবাহ করার বৈধতা দেয়া হয়েছে তবে শর্ত হল তাদের দীনের ওপর বহাল থাকতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالْمُحْصَنٰتُ مِنَ الْمُؤْمِنٰتِ وَالْمُحْصَنٰتُ مِنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِکُمْ اِذَآ اٰتَیْتُمُوْھُنَّ اُجُوْرَھُنَّ مُحْصِنِیْنَ غَیْرَ مُسٰفِحِیْنَ)
“এবং মু’মিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হল যদি তোমরা বিবাহের জন্য তাদের মোহর প্রদান কর।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৫)
অবশ্য উমার (রাঃ) সৎ উদ্দেশ্যেও আহলে কিতাব মহিলাদেরকে বিবাহ করা অপছন্দ করতেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর ১ম খণ্ড, পৃঃ ৫৫৮)
ইবনু উমার (রাঃ) আহলে কিতাব নারীদের বিবাহ করা অপছন্দ করতেন। কারণ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন: ইবনু উমার (রাঃ) বলেন: যারা বলে ঈসা (আঃ) হলেন আল্লাহ তা‘আলা- এর চেয়ে বড় কোন শির্ক আছে কিনা আমি জানি না। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৮৫)
মূলতঃ তাদেরকে বিবাহ না করাই ভাল। কারণ এতে সংসারে সমস্যা সৃষ্টি হবে ও সন্তান-সন্ততির সমস্যা হবে। সর্বপরি দীনের সমস্যা হবে।
অনুরূপভাবে কোন মু’মিনা মহিলা কোন মুশরিক পুরুষকে বিবাহ করবে না ঈমান না আনা পর্যন্ত। মুশরিক মহিলাদেরকে বিবাহ করার চেয়ে বা মুশরিক পুরুষদেরকে বিবাহ করার চেয়ে মু’মিন দাস-দাসীদের বিবাহ করা উত্তম। যদিও মুশরিক মহিলা বা পুরুষের সম্পদ সৌন্দর্য তোমাদেরকে আকৃষ্ট করে এবং মু’মিন দাস-দাসী গরীব বা কদাকার হওয়ায় বাহ্যিক অপছন্দের হয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মহিলাদেরকে সাধারণত তাদের সম্পদ, সৌন্দর্য, বংশ ও দীনদারীত্ব দেখে বিবাহ করা হয়। তোমরা দীনদার মহিলাদের বিবাহের জন্য নিবার্চন কর। (সহীহ বুখারী হা: ৫০৯০, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৬৬) মূলত: দীনদারিত্বকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, কারণ দীন না থাকলে দাম্পত্য জীবন শান্তিময় হওয়া খুবই কঠিন।
(وَلَا تُنْكِحُوا)
‘তোমরা বিবাহ দেবে না’এ অংশ প্রমাণ করে ওলী ছাড়া বিবাহ হবে না। হাদীসেও বিবাহের ক্ষেত্রে ওলীর ওপর খুব গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এমনকি বলা হয়েছে: যে মহিলা অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করল তার বিবাহ বাতিল। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা তিনবার বললেন। (সহীহুল জামে হা: ২৭০৯) অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে: যে মহিলা নিজেকে নিজেই বিবাহ দেয় সে ব্যভিচারিণী। (সহীহ মুসলিম হা: ১৪২১)
অতএব অভিভাকের অনুমতি ছাড়া মেয়েদের বিবাহ শুদ্ধ হবে না।
মুশরিক পুরুষ-মহিলা সবাই জাহান্নামের দিকে ডাকে। আর আল্লাহ তা‘আলা তিনি জান্নাত ও ক্ষমার দিকে ডাকেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুশরিক মহিলাদেরকে মু’মিন পুরুষের বিবাহ করা কিংবা মুশরিক পুরুষদের সাথে মু’মিনা নারীদের বিবাহ দেয়া হারাম।
২. মহিলাগণ অভিভাবক ছাড়া বিবাহ করতে পারবে না।
৩. মুশরিকদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক বা ওঠাবসা থেকে বেঁচে থাকা উচিত।
৪. বিবাহের ক্ষেত্রে নারীদের দীনদারীত্বকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।
2:222
وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ
الۡمَحِیۡضِ ؕ قُلۡ ہُوَ اَذًی ۙ فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ۙ وَ
لَا تَقۡرَبُوۡہُنَّ حَتّٰی یَطۡہُرۡنَ ۚ فَاِذَا تَطَہَّرۡنَ فَاۡتُوۡہُنَّ مِنۡ
حَیۡثُ اَمَرَکُمُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ
الۡمُتَطَہِّرِیۡنَ ﴿۲۲۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২২ ও ২২৩ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা ঋতুবতী স্ত্রীলোকদেরকে তাদের সাথে খেতে দিত না এবং তাদের পার্শ্বে রাখত না। সাহাবীগণ এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, স্ত্রীদের সাথে সহবাস ছাড়া সবকিছু করতে পার। (সহীহ মুসলিম হা: ৩০২)
ইকরিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁর ঋতুবর্তী স্ত্রীর সাথে থাকতে চাইতেন তাহলে স্ত্রীর নিম্নার্ধে ভাল ভাবে কাপড় বেঁধে নিতেন। (আবূ দাঊদ হা: ২৭২, সহীহ)
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর মাথা ধৌত করে দিতে বললেন- আমি তার মাথা ধৌত করে দিলাম তখন আমি ঋতুবতী ছিলাম এবং আমার ঋতুকালীন অবস্থায় তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৫, ২৯৭)
মেয়েদের ঋতুস্রাব তিন প্রকার:
১. হায়িয: মেয়েরা সাবালিকা হলে তাদের জরায়ু হতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিন স্বাভাবিকভাবে যে রক্তস্রাব হয় তাকে হায়িয বলে। এর নিম্ন সময় ও উর্ধ্ব সময় সহীহ হাদীসে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। তবে অধিকাংশদের ছয় বা সাত দিন হয়ে থাকে।
২. নিফাস: সন্তান প্রসবের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে। এর নিম্ন কোন সময় নেই তবে ঊর্ধ্ব সময় হলো ৪০দিন। (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১১২ -১১৩)
হায়িয ও নিফাস চলাকালীন সময় সালাত পড়া যাবে না এবং তা পরে আদায়ও করতে হবে না। রোযা রাখা যাবে না, তবে পবিত্র হয়ে আদায় করতে হবে। কাবায় তাওয়াফ করা যাবে না। মাসজিদে অবস্থান করা যাবে না। কুরআন মাজিদ গিলাফ ছাড়া স্পর্শ করা যাবে না। স্বামী-স্ত্রীর সহবাস করা যাবে না।
৩. ইস্তিহাযা: হায়িয ও নিফাস এর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যে রক্তস্রাব হতে থাকে তাকে ইস্তিহাযা বলা হয়। এমন অবস্থায় প্রতি ওয়াক্তে গুপ্তাঙ্গ ধৌত করে নতুনভাবে ওযূ করে সালাত আদায় করবে এবং রোযাও রাখবে। স্বামী-স্ত্রী সহবাসও করতে পারবে।
(قُلْ هُوَ أَذًي)
‘তুমি বল, তা কষ্টদায়ক’অর্থাৎ ঋতুস্রাব মহিলাদের জন্য কষ্টদায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: এটা আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর কন্যাদের ওপর আবশ্যক করে দিয়েছেন। (সুনান ইবনু মাযাহ হা: ৬৩৭ হাসান)
(فَاِذَا تَطَھَّرْنَ)
‘পবিত্র হওয়ার’দু’টি অর্থ হতে পারে: ১. রক্ত আসা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু গোসল করেনি। কারো কারো মতে এ অবস্থায় সহবাস জায়েয তবে সঠিক কথা হল নাজায়েয।
হাফিজ ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ ব্যাপারে আলেমগণ এক মত পোষণ করেছেন যে, ঋতুর রক্ত আসা বন্ধ হওয়ার পর গোসলের পূর্বে সহবাস করা বৈধ হবে না। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/৫৬৫)
২. গোসল করার পর পবিত্র হওয়া।
(مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّٰهُ)
‘আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায়’অর্থাৎ যোনি পথে। কারণ মাসিক অবস্থায় এ যোনি পথই ব্যবহার করা নিষেধ করা হয়েছে। তাই পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:لَا يَنْظُرُ اللّٰهُ إِلَي رَجُلٍ جَامَعَ اِمْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে কুকর্ম করার জন্য কোন পুরুষের কাছে যায় বা স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করে। (তিরমিযী হা: ১১৬৫, নাসাঈ হা: ৯০১১, সহীহ)
আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।
(نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ)
শানে নুযূল:
জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা বলত- যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান টেরা হবে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৩৫)
অন্য বর্ণনায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: একদা উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? তিনি বলেন, রাতে আমি আমার সোয়ারী উল্টা করেছি অর্থাৎ পিছন দিক থেকে সহবাস করেছি। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী হা: ২৯৮০, হাসান)
(اَنّٰی شِئْتُمْ) ‘যেভাবে ইচ্ছা’অর্থাৎ যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে স্ত্রীদের সাথে দৈহিক মিলন কর। কোন বিধি-নিষেধ নেই তবে শর্ত হল পথ একটাই হবে আর তা হল যোনিপথ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:مُقْبِلَةً وَمُدْبِرَةً إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي الْفَرْجِ. وفي رواية: إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي صِمَامٍ وَاحِدٍ
সামনের দিক থেকে সহবাস কর বা পিছন দিক থেকে সহবাস কর তবে যোনিপথে হতে হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন স্থান হবে একটিই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর, ইমাম হাকেম সহীহ বলেছেন ২/১৯৫)
এছাড়াও অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে যেখানে স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করা হারাম করা হয়েছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মাসিক বা ঋতু অবস্থায় স্ত্রী সহবাস হারাম।
২. মাসিক বা ঋতু থেকে মুক্ত হয়ে গোসল না করা পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস নিষেধ।
৩. স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার হারাম।
৪. সর্বদা সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
৫. সকলকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।
৬. আল্লাহ তা‘আলা “ভালবাসেন’’- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
৭. হায়িয, নিফাস ও ইস্তিহাযা অবস্থায় কঅ করণীয় তা জানতে পেলাম।
শানে নুযূল:
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা ঋতুবতী স্ত্রীলোকদেরকে তাদের সাথে খেতে দিত না এবং তাদের পার্শ্বে রাখত না। সাহাবীগণ এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, স্ত্রীদের সাথে সহবাস ছাড়া সবকিছু করতে পার। (সহীহ মুসলিম হা: ৩০২)
ইকরিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁর ঋতুবর্তী স্ত্রীর সাথে থাকতে চাইতেন তাহলে স্ত্রীর নিম্নার্ধে ভাল ভাবে কাপড় বেঁধে নিতেন। (আবূ দাঊদ হা: ২৭২, সহীহ)
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর মাথা ধৌত করে দিতে বললেন- আমি তার মাথা ধৌত করে দিলাম তখন আমি ঋতুবতী ছিলাম এবং আমার ঋতুকালীন অবস্থায় তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৫, ২৯৭)
মেয়েদের ঋতুস্রাব তিন প্রকার:
১. হায়িয: মেয়েরা সাবালিকা হলে তাদের জরায়ু হতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিন স্বাভাবিকভাবে যে রক্তস্রাব হয় তাকে হায়িয বলে। এর নিম্ন সময় ও উর্ধ্ব সময় সহীহ হাদীসে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। তবে অধিকাংশদের ছয় বা সাত দিন হয়ে থাকে।
২. নিফাস: সন্তান প্রসবের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে। এর নিম্ন কোন সময় নেই তবে ঊর্ধ্ব সময় হলো ৪০দিন। (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১১২ -১১৩)
হায়িয ও নিফাস চলাকালীন সময় সালাত পড়া যাবে না এবং তা পরে আদায়ও করতে হবে না। রোযা রাখা যাবে না, তবে পবিত্র হয়ে আদায় করতে হবে। কাবায় তাওয়াফ করা যাবে না। মাসজিদে অবস্থান করা যাবে না। কুরআন মাজিদ গিলাফ ছাড়া স্পর্শ করা যাবে না। স্বামী-স্ত্রীর সহবাস করা যাবে না।
৩. ইস্তিহাযা: হায়িয ও নিফাস এর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যে রক্তস্রাব হতে থাকে তাকে ইস্তিহাযা বলা হয়। এমন অবস্থায় প্রতি ওয়াক্তে গুপ্তাঙ্গ ধৌত করে নতুনভাবে ওযূ করে সালাত আদায় করবে এবং রোযাও রাখবে। স্বামী-স্ত্রী সহবাসও করতে পারবে।
(قُلْ هُوَ أَذًي)
‘তুমি বল, তা কষ্টদায়ক’অর্থাৎ ঋতুস্রাব মহিলাদের জন্য কষ্টদায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: এটা আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর কন্যাদের ওপর আবশ্যক করে দিয়েছেন। (সুনান ইবনু মাযাহ হা: ৬৩৭ হাসান)
(فَاِذَا تَطَھَّرْنَ)
‘পবিত্র হওয়ার’দু’টি অর্থ হতে পারে: ১. রক্ত আসা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু গোসল করেনি। কারো কারো মতে এ অবস্থায় সহবাস জায়েয তবে সঠিক কথা হল নাজায়েয।
হাফিজ ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ ব্যাপারে আলেমগণ এক মত পোষণ করেছেন যে, ঋতুর রক্ত আসা বন্ধ হওয়ার পর গোসলের পূর্বে সহবাস করা বৈধ হবে না। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/৫৬৫)
২. গোসল করার পর পবিত্র হওয়া।
(مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّٰهُ)
‘আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায়’অর্থাৎ যোনি পথে। কারণ মাসিক অবস্থায় এ যোনি পথই ব্যবহার করা নিষেধ করা হয়েছে। তাই পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:لَا يَنْظُرُ اللّٰهُ إِلَي رَجُلٍ جَامَعَ اِمْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে কুকর্ম করার জন্য কোন পুরুষের কাছে যায় বা স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করে। (তিরমিযী হা: ১১৬৫, নাসাঈ হা: ৯০১১, সহীহ)
আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।
(نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ)
শানে নুযূল:
জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা বলত- যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান টেরা হবে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৩৫)
অন্য বর্ণনায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: একদা উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? তিনি বলেন, রাতে আমি আমার সোয়ারী উল্টা করেছি অর্থাৎ পিছন দিক থেকে সহবাস করেছি। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী হা: ২৯৮০, হাসান)
(اَنّٰی شِئْتُمْ) ‘যেভাবে ইচ্ছা’অর্থাৎ যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে স্ত্রীদের সাথে দৈহিক মিলন কর। কোন বিধি-নিষেধ নেই তবে শর্ত হল পথ একটাই হবে আর তা হল যোনিপথ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:مُقْبِلَةً وَمُدْبِرَةً إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي الْفَرْجِ. وفي رواية: إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي صِمَامٍ وَاحِدٍ
সামনের দিক থেকে সহবাস কর বা পিছন দিক থেকে সহবাস কর তবে যোনিপথে হতে হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন স্থান হবে একটিই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর, ইমাম হাকেম সহীহ বলেছেন ২/১৯৫)
এছাড়াও অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে যেখানে স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করা হারাম করা হয়েছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মাসিক বা ঋতু অবস্থায় স্ত্রী সহবাস হারাম।
২. মাসিক বা ঋতু থেকে মুক্ত হয়ে গোসল না করা পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস নিষেধ।
৩. স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার হারাম।
৪. সর্বদা সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
৫. সকলকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।
৬. আল্লাহ তা‘আলা “ভালবাসেন’’- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
৭. হায়িয, নিফাস ও ইস্তিহাযা অবস্থায় কঅ করণীয় তা জানতে পেলাম।
2:223
نِسَآؤُکُمۡ حَرۡثٌ
لَّکُمۡ ۪ فَاۡتُوۡا حَرۡثَکُمۡ اَنّٰی شِئۡتُمۡ ۫ وَ قَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ ؕ
وَ اتَّقُوا اللّٰہَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّکُمۡ مُّلٰقُوۡہُ ؕ وَ بَشِّرِ
الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲۲۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২২ ও ২২৩ নং আয়াতের তাফসীর:
শানে নুযূল:
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা ঋতুবতী স্ত্রীলোকদেরকে তাদের সাথে খেতে দিত না এবং তাদের পার্শ্বে রাখত না। সাহাবীগণ এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, স্ত্রীদের সাথে সহবাস ছাড়া সবকিছু করতে পার। (সহীহ মুসলিম হা: ৩০২)
ইকরিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁর ঋতুবর্তী স্ত্রীর সাথে থাকতে চাইতেন তাহলে স্ত্রীর নিম্নার্ধে ভাল ভাবে কাপড় বেঁধে নিতেন। (আবূ দাঊদ হা: ২৭২, সহীহ)
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর মাথা ধৌত করে দিতে বললেন- আমি তার মাথা ধৌত করে দিলাম তখন আমি ঋতুবতী ছিলাম এবং আমার ঋতুকালীন অবস্থায় তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৫, ২৯৭)
মেয়েদের ঋতুস্রাব তিন প্রকার:
১. হায়িয: মেয়েরা সাবালিকা হলে তাদের জরায়ু হতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিন স্বাভাবিকভাবে যে রক্তস্রাব হয় তাকে হায়িয বলে। এর নিম্ন সময় ও উর্ধ্ব সময় সহীহ হাদীসে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। তবে অধিকাংশদের ছয় বা সাত দিন হয়ে থাকে।
২. নিফাস: সন্তান প্রসবের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে। এর নিম্ন কোন সময় নেই তবে ঊর্ধ্ব সময় হলো ৪০দিন। (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১১২ -১১৩)
হায়িয ও নিফাস চলাকালীন সময় সালাত পড়া যাবে না এবং তা পরে আদায়ও করতে হবে না। রোযা রাখা যাবে না, তবে পবিত্র হয়ে আদায় করতে হবে। কাবায় তাওয়াফ করা যাবে না। মাসজিদে অবস্থান করা যাবে না। কুরআন মাজিদ গিলাফ ছাড়া স্পর্শ করা যাবে না। স্বামী-স্ত্রীর সহবাস করা যাবে না।
৩. ইস্তিহাযা: হায়িয ও নিফাস এর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যে রক্তস্রাব হতে থাকে তাকে ইস্তিহাযা বলা হয়। এমন অবস্থায় প্রতি ওয়াক্তে গুপ্তাঙ্গ ধৌত করে নতুনভাবে ওযূ করে সালাত আদায় করবে এবং রোযাও রাখবে। স্বামী-স্ত্রী সহবাসও করতে পারবে।
(قُلْ هُوَ أَذًي)
‘তুমি বল, তা কষ্টদায়ক’অর্থাৎ ঋতুস্রাব মহিলাদের জন্য কষ্টদায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: এটা আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর কন্যাদের ওপর আবশ্যক করে দিয়েছেন। (সুনান ইবনু মাযাহ হা: ৬৩৭ হাসান)
(فَاِذَا تَطَھَّرْنَ)
‘পবিত্র হওয়ার’দু’টি অর্থ হতে পারে: ১. রক্ত আসা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু গোসল করেনি। কারো কারো মতে এ অবস্থায় সহবাস জায়েয তবে সঠিক কথা হল নাজায়েয।
হাফিজ ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ ব্যাপারে আলেমগণ এক মত পোষণ করেছেন যে, ঋতুর রক্ত আসা বন্ধ হওয়ার পর গোসলের পূর্বে সহবাস করা বৈধ হবে না। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/৫৬৫)
২. গোসল করার পর পবিত্র হওয়া।
(مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّٰهُ)
‘আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায়’অর্থাৎ যোনি পথে। কারণ মাসিক অবস্থায় এ যোনি পথই ব্যবহার করা নিষেধ করা হয়েছে। তাই পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:لَا يَنْظُرُ اللّٰهُ إِلَي رَجُلٍ جَامَعَ اِمْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে কুকর্ম করার জন্য কোন পুরুষের কাছে যায় বা স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করে। (তিরমিযী হা: ১১৬৫, নাসাঈ হা: ৯০১১, সহীহ)
আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।
(نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ)
শানে নুযূল:
জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা বলত- যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান টেরা হবে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৩৫)
অন্য বর্ণনায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: একদা উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? তিনি বলেন, রাতে আমি আমার সোয়ারী উল্টা করেছি অর্থাৎ পিছন দিক থেকে সহবাস করেছি। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী হা: ২৯৮০, হাসান)
(اَنّٰی شِئْتُمْ) ‘যেভাবে ইচ্ছা’অর্থাৎ যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে স্ত্রীদের সাথে দৈহিক মিলন কর। কোন বিধি-নিষেধ নেই তবে শর্ত হল পথ একটাই হবে আর তা হল যোনিপথ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مُقْبِلَةً وَمُدْبِرَةً إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي الْفَرْجِ. وفي رواية: إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي صِمَامٍ وَاحِدٍ
সামনের দিক থেকে সহবাস কর বা পিছন দিক থেকে সহবাস কর তবে যোনিপথে হতে হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন স্থান হবে একটিই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর, ইমাম হাকেম সহীহ বলেছেন ২/১৯৫)
এছাড়াও অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে যেখানে স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করা হারাম করা হয়েছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মাসিক বা ঋতু অবস্থায় স্ত্রী সহবাস হারাম।
২. মাসিক বা ঋতু থেকে মুক্ত হয়ে গোসল না করা পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস নিষেধ।
৩. স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার হারাম।
৪. সর্বদা সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
৫. সকলকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।
৬. আল্লাহ তা‘আলা “ভালবাসেন’’- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
৭. হায়িয, নিফাস ও ইস্তিহাযা অবস্থায় কঅ করণীয় তা জানতে পেলাম।
শানে নুযূল:
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা ঋতুবতী স্ত্রীলোকদেরকে তাদের সাথে খেতে দিত না এবং তাদের পার্শ্বে রাখত না। সাহাবীগণ এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, স্ত্রীদের সাথে সহবাস ছাড়া সবকিছু করতে পার। (সহীহ মুসলিম হা: ৩০২)
ইকরিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাঁর ঋতুবর্তী স্ত্রীর সাথে থাকতে চাইতেন তাহলে স্ত্রীর নিম্নার্ধে ভাল ভাবে কাপড় বেঁধে নিতেন। (আবূ দাঊদ হা: ২৭২, সহীহ)
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর মাথা ধৌত করে দিতে বললেন- আমি তার মাথা ধৌত করে দিলাম তখন আমি ঋতুবতী ছিলাম এবং আমার ঋতুকালীন অবস্থায় তিনি আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। (সহীহ বুখারী হা: ২৯৫, ২৯৭)
মেয়েদের ঋতুস্রাব তিন প্রকার:
১. হায়িয: মেয়েরা সাবালিকা হলে তাদের জরায়ু হতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কয়েকদিন স্বাভাবিকভাবে যে রক্তস্রাব হয় তাকে হায়িয বলে। এর নিম্ন সময় ও উর্ধ্ব সময় সহীহ হাদীসে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। তবে অধিকাংশদের ছয় বা সাত দিন হয়ে থাকে।
২. নিফাস: সন্তান প্রসবের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে। এর নিম্ন কোন সময় নেই তবে ঊর্ধ্ব সময় হলো ৪০দিন। (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১১২ -১১৩)
হায়িয ও নিফাস চলাকালীন সময় সালাত পড়া যাবে না এবং তা পরে আদায়ও করতে হবে না। রোযা রাখা যাবে না, তবে পবিত্র হয়ে আদায় করতে হবে। কাবায় তাওয়াফ করা যাবে না। মাসজিদে অবস্থান করা যাবে না। কুরআন মাজিদ গিলাফ ছাড়া স্পর্শ করা যাবে না। স্বামী-স্ত্রীর সহবাস করা যাবে না।
৩. ইস্তিহাযা: হায়িয ও নিফাস এর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যে রক্তস্রাব হতে থাকে তাকে ইস্তিহাযা বলা হয়। এমন অবস্থায় প্রতি ওয়াক্তে গুপ্তাঙ্গ ধৌত করে নতুনভাবে ওযূ করে সালাত আদায় করবে এবং রোযাও রাখবে। স্বামী-স্ত্রী সহবাসও করতে পারবে।
(قُلْ هُوَ أَذًي)
‘তুমি বল, তা কষ্টদায়ক’অর্থাৎ ঋতুস্রাব মহিলাদের জন্য কষ্টদায়ক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: এটা আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-এর কন্যাদের ওপর আবশ্যক করে দিয়েছেন। (সুনান ইবনু মাযাহ হা: ৬৩৭ হাসান)
(فَاِذَا تَطَھَّرْنَ)
‘পবিত্র হওয়ার’দু’টি অর্থ হতে পারে: ১. রক্ত আসা বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু গোসল করেনি। কারো কারো মতে এ অবস্থায় সহবাস জায়েয তবে সঠিক কথা হল নাজায়েয।
হাফিজ ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: এ ব্যাপারে আলেমগণ এক মত পোষণ করেছেন যে, ঋতুর রক্ত আসা বন্ধ হওয়ার পর গোসলের পূর্বে সহবাস করা বৈধ হবে না। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/৫৬৫)
২. গোসল করার পর পবিত্র হওয়া।
(مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّٰهُ)
‘আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায়’অর্থাৎ যোনি পথে। কারণ মাসিক অবস্থায় এ যোনি পথই ব্যবহার করা নিষেধ করা হয়েছে। তাই পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:لَا يَنْظُرُ اللّٰهُ إِلَي رَجُلٍ جَامَعَ اِمْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে কুকর্ম করার জন্য কোন পুরুষের কাছে যায় বা স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করে। (তিরমিযী হা: ১১৬৫, নাসাঈ হা: ৯০১১, সহীহ)
আল্লাহ তা‘আলা তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।
(نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ)
শানে নুযূল:
জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ইয়াহূদীরা বলত- যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পিছন দিক থেকে সহবাস করে তাহলে সন্তান টেরা হবে। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫২৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৩৫)
অন্য বর্ণনায় ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: একদা উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিসে তোমাকে ধ্বংস করল? তিনি বলেন, রাতে আমি আমার সোয়ারী উল্টা করেছি অর্থাৎ পিছন দিক থেকে সহবাস করেছি। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী হা: ২৯৮০, হাসান)
(اَنّٰی شِئْتُمْ) ‘যেভাবে ইচ্ছা’অর্থাৎ যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে স্ত্রীদের সাথে দৈহিক মিলন কর। কোন বিধি-নিষেধ নেই তবে শর্ত হল পথ একটাই হবে আর তা হল যোনিপথ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مُقْبِلَةً وَمُدْبِرَةً إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي الْفَرْجِ. وفي رواية: إِذَا كَانَ ذَلِكَ فِي صِمَامٍ وَاحِدٍ
সামনের দিক থেকে সহবাস কর বা পিছন দিক থেকে সহবাস কর তবে যোনিপথে হতে হবে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যখন স্থান হবে একটিই। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর, ইমাম হাকেম সহীহ বলেছেন ২/১৯৫)
এছাড়াও অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে যেখানে স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার করা হারাম করা হয়েছে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মাসিক বা ঋতু অবস্থায় স্ত্রী সহবাস হারাম।
২. মাসিক বা ঋতু থেকে মুক্ত হয়ে গোসল না করা পর্যন্ত স্ত্রী সহবাস নিষেধ।
৩. স্ত্রীর পিছনদ্বার ব্যবহার হারাম।
৪. সর্বদা সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
৫. সকলকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যেতে হবে।
৬. আল্লাহ তা‘আলা “ভালবাসেন’’- এ গুণের প্রমাণ পেলাম।
৭. হায়িয, নিফাস ও ইস্তিহাযা অবস্থায় কঅ করণীয় তা জানতে পেলাম।
2:224
وَ لَا تَجۡعَلُوا اللّٰہَ
عُرۡضَۃً لِّاَیۡمَانِکُمۡ اَنۡ تَبَرُّوۡا وَ تَتَّقُوۡا وَ تُصۡلِحُوۡا بَیۡنَ
النَّاسِ ؕ وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۲۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৪ ও ২২৫ নং আয়াতের তাফসীর:
মু’মিনেরা আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে সৎ ও ভাল কাজ থেকে বিরত থাকবে এমন বিষয় অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। যেমন এরূপ বলা: আল্লাহ তা‘আলার শপথ আমি তাকে দান করব না, তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَا یَاْتَلِ اُولُوا الْفَضْلِ مِنْکُمْ وَالسَّعَةِ اَنْ یُّؤْتُوْٓا اُولِی الْقُرْبٰی وَالْمَسٰکِیْنَ وَالْمُھٰجِرِیْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللہِﺖ وَلْیَعْفُوْا وَلْیَصْفَحُوْاﺚ اَلَا تُحِبُّوْنَ اَنْ یَّغْفِرَ اللہُ لَکُمْﺚ وَاللہُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)
“তোমাদের মধ্যে যারা সম্মান ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা এমন প্রতিজ্ঞা না করে যে, আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর রাস্তায় যারা হিজরত করেছে তাদেরকে কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? আর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নূর ২৪:২২)
যদি কেউ ভুলবশত বা রাগবশত এরূপ কসম করে ফেলে তবে তা ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে দেবে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার শপথ, যদি আমি কোন শপথ করি এবং তা ভেঙ্গে দেয়াতে মঙ্গল দেখতে পাই, তাহলে আমি অবশ্যই তা ভেঙ্গে কাফফারা আদায় করে দেই এবং কল্যাণটা গ্রহণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৩১৩৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন: আদম সন্তান যার মালিক নয় তার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না এবং আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না। যদি কেউ কোন শপথ করে আর দেখে তার বিপরীতটা উত্তম, তাহলে উত্তমটাই গ্রহণ করবে এবং শপথ ভঙ্গের বিনিময়ে কাফফারা দিয়ে দেবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩২৭৪, ইবনু মাযাহ হা: ২১১১, সহীহ)اليمين বা শপথ তিন প্রকার:
১. যা কথায় কথায় বলা হয় মূলত অন্তরে শপথের নিয়্যত নেই, এমন শপথকে লাগবু বা অনর্থক শপথ বলা হয়। যেমন আরবরা এরূপ কথায় কথায় বলে থাকে
‘‘لَا وَاللّٰهِ, بَلٰي وَاللّٰهِ
‘‘ ইত্যাদি। এরূপ শপথের জন্য আল্লাহ তা‘আলা পাকড়াও করবেন না।
২. ভবিষ্যতের কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে শপথ করা। এমন শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবে, আর শপথের বিপরীত বিষয়ে কল্যাণ থাকলে ভঙ্গ করাই উত্তম। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাজ এরূপই ছিল। এরূপ শপথকে মুনআকেদ বা স্বেচ্ছায় কোন শপথ করা বলা হয়।
৩. অতীতের কোন বিষয়ে মিথ্যা শপথ করা। যেমন বলা আমি এ কাজ করিনি অথচ সে করেছে। এরূপ শপথকে গামুছ বা মিথ্যা শপথ বলা হয়। এ শপথের তাওবাহ ব্যতীত কোন কাফফারা নেই।
শপথের কাফফারা হলো: নিজের পরিবারকে যে মানের খাদ্য খাওয়ানো হয় এমন খাদ্য দশজন মিসকিনকে খাওয়াবে, অথবা তাদেরকে পোশাক দেবে, অথবা একজন দাস আযাদ করবে। এগুলোর কোন একটি সক্ষম না হলে তিনদিন রোযা রাখবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শপথ করে কল্যাণকর কাজ থেকে বিরত থাকা অপছন্দনীয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা শোনেন ও জানেন এ দু’টি গুণ প্রমাণিত হল।
৩. কেউ কোন বিষয়ে শপথ করার পর যদি তার বিপরীতটা কল্যণকর মনে হয় তাহলে শপথ ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে কল্যণকর বস্তু গ্রহণ করবে।
মু’মিনেরা আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে সৎ ও ভাল কাজ থেকে বিরত থাকবে এমন বিষয় অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। যেমন এরূপ বলা: আল্লাহ তা‘আলার শপথ আমি তাকে দান করব না, তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَا یَاْتَلِ اُولُوا الْفَضْلِ مِنْکُمْ وَالسَّعَةِ اَنْ یُّؤْتُوْٓا اُولِی الْقُرْبٰی وَالْمَسٰکِیْنَ وَالْمُھٰجِرِیْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللہِﺖ وَلْیَعْفُوْا وَلْیَصْفَحُوْاﺚ اَلَا تُحِبُّوْنَ اَنْ یَّغْفِرَ اللہُ لَکُمْﺚ وَاللہُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)
“তোমাদের মধ্যে যারা সম্মান ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা এমন প্রতিজ্ঞা না করে যে, আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর রাস্তায় যারা হিজরত করেছে তাদেরকে কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? আর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নূর ২৪:২২)
যদি কেউ ভুলবশত বা রাগবশত এরূপ কসম করে ফেলে তবে তা ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে দেবে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার শপথ, যদি আমি কোন শপথ করি এবং তা ভেঙ্গে দেয়াতে মঙ্গল দেখতে পাই, তাহলে আমি অবশ্যই তা ভেঙ্গে কাফফারা আদায় করে দেই এবং কল্যাণটা গ্রহণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৩১৩৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন: আদম সন্তান যার মালিক নয় তার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না এবং আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না। যদি কেউ কোন শপথ করে আর দেখে তার বিপরীতটা উত্তম, তাহলে উত্তমটাই গ্রহণ করবে এবং শপথ ভঙ্গের বিনিময়ে কাফফারা দিয়ে দেবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩২৭৪, ইবনু মাযাহ হা: ২১১১, সহীহ)اليمين বা শপথ তিন প্রকার:
১. যা কথায় কথায় বলা হয় মূলত অন্তরে শপথের নিয়্যত নেই, এমন শপথকে লাগবু বা অনর্থক শপথ বলা হয়। যেমন আরবরা এরূপ কথায় কথায় বলে থাকে
‘‘لَا وَاللّٰهِ, بَلٰي وَاللّٰهِ
‘‘ ইত্যাদি। এরূপ শপথের জন্য আল্লাহ তা‘আলা পাকড়াও করবেন না।
২. ভবিষ্যতের কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে শপথ করা। এমন শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবে, আর শপথের বিপরীত বিষয়ে কল্যাণ থাকলে ভঙ্গ করাই উত্তম। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাজ এরূপই ছিল। এরূপ শপথকে মুনআকেদ বা স্বেচ্ছায় কোন শপথ করা বলা হয়।
৩. অতীতের কোন বিষয়ে মিথ্যা শপথ করা। যেমন বলা আমি এ কাজ করিনি অথচ সে করেছে। এরূপ শপথকে গামুছ বা মিথ্যা শপথ বলা হয়। এ শপথের তাওবাহ ব্যতীত কোন কাফফারা নেই।
শপথের কাফফারা হলো: নিজের পরিবারকে যে মানের খাদ্য খাওয়ানো হয় এমন খাদ্য দশজন মিসকিনকে খাওয়াবে, অথবা তাদেরকে পোশাক দেবে, অথবা একজন দাস আযাদ করবে। এগুলোর কোন একটি সক্ষম না হলে তিনদিন রোযা রাখবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শপথ করে কল্যাণকর কাজ থেকে বিরত থাকা অপছন্দনীয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা শোনেন ও জানেন এ দু’টি গুণ প্রমাণিত হল।
৩. কেউ কোন বিষয়ে শপথ করার পর যদি তার বিপরীতটা কল্যণকর মনে হয় তাহলে শপথ ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে কল্যণকর বস্তু গ্রহণ করবে।
2:225
لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ
بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا کَسَبَتۡ
قُلُوۡبُکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ حَلِیۡمٌ ﴿۲۲۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৪ ও ২২৫ নং আয়াতের তাফসীর:
মু’মিনেরা আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে সৎ ও ভাল কাজ থেকে বিরত থাকবে এমন বিষয় অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। যেমন এরূপ বলা: আল্লাহ তা‘আলার শপথ আমি তাকে দান করব না, তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَا یَاْتَلِ اُولُوا الْفَضْلِ مِنْکُمْ وَالسَّعَةِ اَنْ یُّؤْتُوْٓا اُولِی الْقُرْبٰی وَالْمَسٰکِیْنَ وَالْمُھٰجِرِیْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللہِﺖ وَلْیَعْفُوْا وَلْیَصْفَحُوْاﺚ اَلَا تُحِبُّوْنَ اَنْ یَّغْفِرَ اللہُ لَکُمْﺚ وَاللہُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)
“তোমাদের মধ্যে যারা সম্মান ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা এমন প্রতিজ্ঞা না করে যে, আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর রাস্তায় যারা হিজরত করেছে তাদেরকে কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? আর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নূর ২৪:২২)
যদি কেউ ভুলবশত বা রাগবশত এরূপ কসম করে ফেলে তবে তা ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে দেবে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার শপথ, যদি আমি কোন শপথ করি এবং তা ভেঙ্গে দেয়াতে মঙ্গল দেখতে পাই, তাহলে আমি অবশ্যই তা ভেঙ্গে কাফফারা আদায় করে দেই এবং কল্যাণটা গ্রহণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৩১৩৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন: আদম সন্তান যার মালিক নয় তার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না এবং আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না। যদি কেউ কোন শপথ করে আর দেখে তার বিপরীতটা উত্তম, তাহলে উত্তমটাই গ্রহণ করবে এবং শপথ ভঙ্গের বিনিময়ে কাফফারা দিয়ে দেবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩২৭৪, ইবনু মাযাহ হা: ২১১১, সহীহ)اليمين বা শপথ তিন প্রকার:
১. যা কথায় কথায় বলা হয় মূলত অন্তরে শপথের নিয়্যত নেই, এমন শপথকে লাগবু বা অনর্থক শপথ বলা হয়। যেমন আরবরা এরূপ কথায় কথায় বলে থাকে
‘‘لَا وَاللّٰهِ, بَلٰي وَاللّٰهِ
‘‘ ইত্যাদি। এরূপ শপথের জন্য আল্লাহ তা‘আলা পাকড়াও করবেন না।
২. ভবিষ্যতের কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে শপথ করা। এমন শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবে, আর শপথের বিপরীত বিষয়ে কল্যাণ থাকলে ভঙ্গ করাই উত্তম। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাজ এরূপই ছিল। এরূপ শপথকে মুনআকেদ বা স্বেচ্ছায় কোন শপথ করা বলা হয়।
৩. অতীতের কোন বিষয়ে মিথ্যা শপথ করা। যেমন বলা আমি এ কাজ করিনি অথচ সে করেছে। এরূপ শপথকে গামুছ বা মিথ্যা শপথ বলা হয়। এ শপথের তাওবাহ ব্যতীত কোন কাফফারা নেই।
শপথের কাফফারা হলো: নিজের পরিবারকে যে মানের খাদ্য খাওয়ানো হয় এমন খাদ্য দশজন মিসকিনকে খাওয়াবে, অথবা তাদেরকে পোশাক দেবে, অথবা একজন দাস আযাদ করবে। এগুলোর কোন একটি সক্ষম না হলে তিনদিন রোযা রাখবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শপথ করে কল্যাণকর কাজ থেকে বিরত থাকা অপছন্দনীয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা শোনেন ও জানেন এ দু’টি গুণ প্রমাণিত হল।
৩. কেউ কোন বিষয়ে শপথ করার পর যদি তার বিপরীতটা কল্যণকর মনে হয় তাহলে শপথ ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে কল্যণকর বস্তু গ্রহণ করবে।
মু’মিনেরা আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে সৎ ও ভাল কাজ থেকে বিরত থাকবে এমন বিষয় অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। যেমন এরূপ বলা: আল্লাহ তা‘আলার শপথ আমি তাকে দান করব না, তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখব না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَا یَاْتَلِ اُولُوا الْفَضْلِ مِنْکُمْ وَالسَّعَةِ اَنْ یُّؤْتُوْٓا اُولِی الْقُرْبٰی وَالْمَسٰکِیْنَ وَالْمُھٰجِرِیْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللہِﺖ وَلْیَعْفُوْا وَلْیَصْفَحُوْاﺚ اَلَا تُحِبُّوْنَ اَنْ یَّغْفِرَ اللہُ لَکُمْﺚ وَاللہُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)
“তোমাদের মধ্যে যারা সম্মান ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা এমন প্রতিজ্ঞা না করে যে, আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তকে এবং আল্লাহর রাস্তায় যারা হিজরত করেছে তাদেরকে কিছুই দেবে না। তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্র“টি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? আর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নূর ২৪:২২)
যদি কেউ ভুলবশত বা রাগবশত এরূপ কসম করে ফেলে তবে তা ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে দেবে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার শপথ, যদি আমি কোন শপথ করি এবং তা ভেঙ্গে দেয়াতে মঙ্গল দেখতে পাই, তাহলে আমি অবশ্যই তা ভেঙ্গে কাফফারা আদায় করে দেই এবং কল্যাণটা গ্রহণ করি। (সহীহ বুখারী হা: ৩১৩৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন: আদম সন্তান যার মালিক নয় তার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না এবং আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শপথ করতে ও নযর মানতে পারে না। যদি কেউ কোন শপথ করে আর দেখে তার বিপরীতটা উত্তম, তাহলে উত্তমটাই গ্রহণ করবে এবং শপথ ভঙ্গের বিনিময়ে কাফফারা দিয়ে দেবে। (আবূ দাঊদ হা: ৩২৭৪, ইবনু মাযাহ হা: ২১১১, সহীহ)اليمين বা শপথ তিন প্রকার:
১. যা কথায় কথায় বলা হয় মূলত অন্তরে শপথের নিয়্যত নেই, এমন শপথকে লাগবু বা অনর্থক শপথ বলা হয়। যেমন আরবরা এরূপ কথায় কথায় বলে থাকে
‘‘لَا وَاللّٰهِ, بَلٰي وَاللّٰهِ
‘‘ ইত্যাদি। এরূপ শপথের জন্য আল্লাহ তা‘আলা পাকড়াও করবেন না।
২. ভবিষ্যতের কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে শপথ করা। এমন শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবে, আর শপথের বিপরীত বিষয়ে কল্যাণ থাকলে ভঙ্গ করাই উত্তম। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাজ এরূপই ছিল। এরূপ শপথকে মুনআকেদ বা স্বেচ্ছায় কোন শপথ করা বলা হয়।
৩. অতীতের কোন বিষয়ে মিথ্যা শপথ করা। যেমন বলা আমি এ কাজ করিনি অথচ সে করেছে। এরূপ শপথকে গামুছ বা মিথ্যা শপথ বলা হয়। এ শপথের তাওবাহ ব্যতীত কোন কাফফারা নেই।
শপথের কাফফারা হলো: নিজের পরিবারকে যে মানের খাদ্য খাওয়ানো হয় এমন খাদ্য দশজন মিসকিনকে খাওয়াবে, অথবা তাদেরকে পোশাক দেবে, অথবা একজন দাস আযাদ করবে। এগুলোর কোন একটি সক্ষম না হলে তিনদিন রোযা রাখবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শপথ করে কল্যাণকর কাজ থেকে বিরত থাকা অপছন্দনীয়।
২. আল্লাহ তা‘আলা শোনেন ও জানেন এ দু’টি গুণ প্রমাণিত হল।
৩. কেউ কোন বিষয়ে শপথ করার পর যদি তার বিপরীতটা কল্যণকর মনে হয় তাহলে শপথ ভঙ্গ করে কাফফারা দিয়ে কল্যণকর বস্তু গ্রহণ করবে।
2:226
لِلَّذِیۡنَ یُؤۡلُوۡنَ
مِنۡ نِّسَآئِہِمۡ تَرَبُّصُ اَرۡبَعَۃِ اَشۡہُرٍ ۚ فَاِنۡ فَآءُوۡ فَاِنَّ
اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۲۲۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৬ ও ২২৭ নং আয়াতের
তাফসীর:
আলোচ্য আয়াতে ইসলামের অন্যতম বিধান ‘ইলা” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ইলা অর্থ:
শপথ করা, তবে এ শপথ স্ত্রীর সাথে সীমাবদ্ধ। স্বামী শপথ করে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করতঃ বলবে, “আমি এতদিন আমার স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক রাখব না- এটাকে ইলা বলা হয়। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ: ৩/৩৬১)
ইলার দু’টি অবস্থা:
১. চার মাসের কম সময় উল্লেখ করতঃ শপথ করে বলবে, আমি এতদিন স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করব না।
২. অথবা চার মাসের বেশি সময়ের জন্য শপথ করবে।
চার মাসের কম সময়ের জন্য শপথ করলে স্বামী সময় অতিক্রম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর স্ত্রীও ততদিন ধৈর্র্র্য ধারণ করবে। অতঃপর সময় অতিক্রম হয়ে গেলে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতে পারবে। স্ত্রী কোন অভিযোগ জানাতে পারবে না। যেমন আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের সাথে একমাস ইলা করলেন। অতঃপর ২৯ দিন অতিক্রম হলে স্ত্রীর কাছে চলে এলেন এবং বললেন মাস ২৯ দিনেও হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৯১)
আর যদি চার মাসের বেশি সময়ের জন্য ইলা করে তাহলে চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্বামীর কাছে স্ত্রী আবেদন জানাবে- হয় স্বামী তাকে স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। চার মাসের বেশি যাওয়ার সুযোগ নেই। এটাই আয়াতে বলা হয়েছে। স্ত্রীর সাথে ইলা করা হলে সে স্ত্রী চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর স্বামী হয় স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। এখান থেকে বুঝা গেল চার মাস পূর্ণ হয়ে গেলেই তালাক হয়ে যাবে না। এটাই সঠিক মত। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/ ৫৮৫)
যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শপথ করেছে তা পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই যদি স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় তাহলে শপথের কাফফারা দিতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইলা শরীয়তসম্মত। তবে তাতে স্ত্রীর ওপর জুলুম করতে পারবে না।
২. ইলার সর্বোচ্চ সময় চার মাস।
৩. শুধু ইলার দ্বারা চার মাস পূর্ণ হলেই স্ত্রী তালাক হয়ে যায় না।
আলোচ্য আয়াতে ইসলামের অন্যতম বিধান ‘ইলা” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ইলা অর্থ:
শপথ করা, তবে এ শপথ স্ত্রীর সাথে সীমাবদ্ধ। স্বামী শপথ করে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করতঃ বলবে, “আমি এতদিন আমার স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক রাখব না- এটাকে ইলা বলা হয়। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ: ৩/৩৬১)
ইলার দু’টি অবস্থা:
১. চার মাসের কম সময় উল্লেখ করতঃ শপথ করে বলবে, আমি এতদিন স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করব না।
২. অথবা চার মাসের বেশি সময়ের জন্য শপথ করবে।
চার মাসের কম সময়ের জন্য শপথ করলে স্বামী সময় অতিক্রম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর স্ত্রীও ততদিন ধৈর্র্র্য ধারণ করবে। অতঃপর সময় অতিক্রম হয়ে গেলে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতে পারবে। স্ত্রী কোন অভিযোগ জানাতে পারবে না। যেমন আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের সাথে একমাস ইলা করলেন। অতঃপর ২৯ দিন অতিক্রম হলে স্ত্রীর কাছে চলে এলেন এবং বললেন মাস ২৯ দিনেও হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৯১)
আর যদি চার মাসের বেশি সময়ের জন্য ইলা করে তাহলে চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্বামীর কাছে স্ত্রী আবেদন জানাবে- হয় স্বামী তাকে স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। চার মাসের বেশি যাওয়ার সুযোগ নেই। এটাই আয়াতে বলা হয়েছে। স্ত্রীর সাথে ইলা করা হলে সে স্ত্রী চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর স্বামী হয় স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। এখান থেকে বুঝা গেল চার মাস পূর্ণ হয়ে গেলেই তালাক হয়ে যাবে না। এটাই সঠিক মত। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/ ৫৮৫)
যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শপথ করেছে তা পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই যদি স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় তাহলে শপথের কাফফারা দিতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইলা শরীয়তসম্মত। তবে তাতে স্ত্রীর ওপর জুলুম করতে পারবে না।
২. ইলার সর্বোচ্চ সময় চার মাস।
৩. শুধু ইলার দ্বারা চার মাস পূর্ণ হলেই স্ত্রী তালাক হয়ে যায় না।
2:227
وَ اِنۡ عَزَمُوا
الطَّلَاقَ فَاِنَّ اللّٰہَ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۲۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৬ ও ২২৭ নং আয়াতের
তাফসীর:
আলোচ্য আয়াতে ইসলামের অন্যতম বিধান ‘ইলা” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।ইলা অর্থ:
শপথ করা, তবে এ শপথ স্ত্রীর সাথে সীমাবদ্ধ। স্বামী শপথ করে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করতঃ বলবে, “আমি এতদিন আমার স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক রাখব না- এটাকে ইলা বলা হয়। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ: ৩/৩৬১)ইলার দু’টি অবস্থা:
১. চার মাসের কম সময় উল্লেখ করতঃ শপথ করে বলবে, আমি এতদিন স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করব না।
২. অথবা চার মাসের বেশি সময়ের জন্য শপথ করবে।
চার মাসের কম সময়ের জন্য শপথ করলে স্বামী সময় অতিক্রম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর স্ত্রীও ততদিন ধৈর্র্র্য ধারণ করবে। অতঃপর সময় অতিক্রম হয়ে গেলে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতে পারবে। স্ত্রী কোন অভিযোগ জানাতে পারবে না। যেমন আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের সাথে একমাস ইলা করলেন। অতঃপর ২৯ দিন অতিক্রম হলে স্ত্রীর কাছে চলে এলেন এবং বললেন মাস ২৯ দিনেও হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৯১)
আর যদি চার মাসের বেশি সময়ের জন্য ইলা করে তাহলে চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্বামীর কাছে স্ত্রী আবেদন জানাবে- হয় স্বামী তাকে স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। চার মাসের বেশি যাওয়ার সুযোগ নেই। এটাই আয়াতে বলা হয়েছে। স্ত্রীর সাথে ইলা করা হলে সে স্ত্রী চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর স্বামী হয় স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। এখান থেকে বুঝা গেল চার মাস পূর্ণ হয়ে গেলেই তালাক হয়ে যাবে না। এটাই সঠিক মত। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/ ৫৮৫)
যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শপথ করেছে তা পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই যদি স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় তাহলে শপথের কাফফারা দিতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইলা শরীয়তসম্মত। তবে তাতে স্ত্রীর ওপর জুলুম করতে পারবে না।
২. ইলার সর্বোচ্চ সময় চার মাস।
৩. শুধু ইলার দ্বারা চার মাস পূর্ণ হলেই স্ত্রী তালাক হয়ে যায় না।
আলোচ্য আয়াতে ইসলামের অন্যতম বিধান ‘ইলা” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।ইলা অর্থ:
শপথ করা, তবে এ শপথ স্ত্রীর সাথে সীমাবদ্ধ। স্বামী শপথ করে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করতঃ বলবে, “আমি এতদিন আমার স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক রাখব না- এটাকে ইলা বলা হয়। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ: ৩/৩৬১)ইলার দু’টি অবস্থা:
১. চার মাসের কম সময় উল্লেখ করতঃ শপথ করে বলবে, আমি এতদিন স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করব না।
২. অথবা চার মাসের বেশি সময়ের জন্য শপথ করবে।
চার মাসের কম সময়ের জন্য শপথ করলে স্বামী সময় অতিক্রম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর স্ত্রীও ততদিন ধৈর্র্র্য ধারণ করবে। অতঃপর সময় অতিক্রম হয়ে গেলে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতে পারবে। স্ত্রী কোন অভিযোগ জানাতে পারবে না। যেমন আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের সাথে একমাস ইলা করলেন। অতঃপর ২৯ দিন অতিক্রম হলে স্ত্রীর কাছে চলে এলেন এবং বললেন মাস ২৯ দিনেও হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৯১)
আর যদি চার মাসের বেশি সময়ের জন্য ইলা করে তাহলে চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্বামীর কাছে স্ত্রী আবেদন জানাবে- হয় স্বামী তাকে স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। চার মাসের বেশি যাওয়ার সুযোগ নেই। এটাই আয়াতে বলা হয়েছে। স্ত্রীর সাথে ইলা করা হলে সে স্ত্রী চার মাস অপেক্ষা করবে। অতঃপর স্বামী হয় স্ত্রী হিসেবে রাখবে, না হয় তালাক দেবে। এখান থেকে বুঝা গেল চার মাস পূর্ণ হয়ে গেলেই তালাক হয়ে যাবে না। এটাই সঠিক মত। (তাফসীর ইবনে কাসীর, ১/ ৫৮৫)
যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শপথ করেছে তা পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই যদি স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় তাহলে শপথের কাফফারা দিতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইলা শরীয়তসম্মত। তবে তাতে স্ত্রীর ওপর জুলুম করতে পারবে না।
২. ইলার সর্বোচ্চ সময় চার মাস।
৩. শুধু ইলার দ্বারা চার মাস পূর্ণ হলেই স্ত্রী তালাক হয়ে যায় না।
2:228
وَ الۡمُطَلَّقٰتُ
یَتَرَبَّصۡنَ بِاَنۡفُسِہِنَّ ثَلٰثَۃَ قُرُوۡٓءٍ ؕ وَ لَا یَحِلُّ لَہُنَّ اَنۡ
یَّکۡتُمۡنَ مَا خَلَقَ اللّٰہُ فِیۡۤ اَرۡحَامِہِنَّ اِنۡ کُنَّ یُؤۡمِنَّ
بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ وَ بُعُوۡلَتُہُنَّ اَحَقُّ بِرَدِّہِنَّ فِیۡ
ذٰلِکَ اِنۡ اَرَادُوۡۤا اِصۡلَاحًا ؕ وَ لَہُنَّ مِثۡلُ الَّذِیۡ عَلَیۡہِنَّ
بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۪ وَ لِلرِّجَالِ عَلَیۡہِنَّ دَرَجَۃٌ ؕ وَ اللّٰہُ عَزِیۡزٌ
حَکِیۡمٌ ﴿۲۲۸﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষের বংশধারা সংরক্ষণের জন্য একটি সুন্দর বিধান দিয়েছেন। আর তা হল- যদি কোন স্ত্রীকে তার স্বামী তালাক দেয় তাহলে সে তিন তুহুর বা তিন ঋতু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, এর মাঝে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ বসবে না।
যাতে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে, তার গর্ভে কোন সন্তান আছে কিনা? কেননা যদি যাচাই-বাছাই না করে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিবাহ বসে এমতাবস্থায় পূর্ব স্বামীর সন্তান তার গর্ভে, তাহলে সন্তান জন্ম নিল দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে অথচ সন্তান প্রথম স্বামীর। এতে মানুষের বংশনামায় সমস্যা সৃষ্টি হবে। সন্তান হল পূর্ব স্বামীর আর পিতা বলে ডাকবে মায়ের দ্বিতীয় স্বামীকে যেন এমনটি না হয়, এ জন্য তিন ঋতু অপেক্ষা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।قروء শব্দ দ্বারা দু’টি অর্থ নেয়া হয়েছে:
১. ঋতু। অতএব তিন ঋতু অতিক্রম না হলে অন্যত্র বিবাহ বৈধ হবে না। এটা ইমাম আবূ হানিফার মত।
২. তুহুর বা ঋতু পরবর্তী পবিত্রতার সময়। এটা অন্যান্য ইমামদের মত। প্রথমটাই বেশি সঠিক। তবে দু’টি মতই গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
(وَلَا يَحِلُّ لَهُنَّ أَنْ يَكْتُمْنَ)
এ থেকে মাসিক ও গর্ভ উভয়টাই উদ্দেশ্য। মাসিক গোপন করার অর্থ হল তালাকের পর স্ত্রী বলবে, আমার একবার বা দু’বার মাসিক হয়েছে। আসলে তার তিন মাসিক পার হয়ে গেছে। এরূপ বলার কারণ হল, প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা।
আর যদি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা না থাকে তাহলে বলবে, আমার তিন মাসিক চলে গেছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে এ রকম হয়নি যাতে স্বামী ফিরিয়ে নিতে না পারে।
অনুরূপভাবে গর্ভে যা আছে তা গোপন করা বৈধ নয়। কারণ এতে বংশের সংমিশ্রণ ঘটে যায়।
(وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ)
“তবে তাদের স্বামীরা ঐ সময়ের মধ্যে (ইদ্দতের মধ্যে) তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে অধিক হকদার” অর্থাৎ স্বামীর ফিরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য যদি সংকীর্ণতা সৃষ্টি করা না হয়, তাহলে তার ফিরিয়ে নেয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। স্ত্রীর অভিভাবকদের ঐ অধিকারে অন্তরায় সৃষ্টি করার অনুমতি নেই।
(وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ)
“মহিলাদের জন্যও ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে যেমন তাদের ওপর পুরুষদের অধিকার রয়েছে” অর্থাৎ উভয়ের অধিকারগুলো একে অপরের মতই। আর এগুলো আদায় করার ব্যাপারে উভয়েই শরীয়ত কর্তৃক বাধ্য। তবে মহিলাদের ওপর পুরুষের বেশি মর্যাদা রয়েছে। যেমন গঠনশক্তি, জিহাদের অনুমতি, দ্বিগুণ ওয়ারিস, অভিভাবকত্ব ও নেতৃত্ব এবং তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার ইত্যাদির ব্যাপারে।
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষের বংশধারা সংরক্ষণের জন্য একটি সুন্দর বিধান দিয়েছেন। আর তা হল- যদি কোন স্ত্রীকে তার স্বামী তালাক দেয় তাহলে সে তিন তুহুর বা তিন ঋতু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, এর মাঝে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ বসবে না।
যাতে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে, তার গর্ভে কোন সন্তান আছে কিনা? কেননা যদি যাচাই-বাছাই না করে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিবাহ বসে এমতাবস্থায় পূর্ব স্বামীর সন্তান তার গর্ভে, তাহলে সন্তান জন্ম নিল দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে অথচ সন্তান প্রথম স্বামীর। এতে মানুষের বংশনামায় সমস্যা সৃষ্টি হবে। সন্তান হল পূর্ব স্বামীর আর পিতা বলে ডাকবে মায়ের দ্বিতীয় স্বামীকে যেন এমনটি না হয়, এ জন্য তিন ঋতু অপেক্ষা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।قروء শব্দ দ্বারা দু’টি অর্থ নেয়া হয়েছে:
১. ঋতু। অতএব তিন ঋতু অতিক্রম না হলে অন্যত্র বিবাহ বৈধ হবে না। এটা ইমাম আবূ হানিফার মত।
২. তুহুর বা ঋতু পরবর্তী পবিত্রতার সময়। এটা অন্যান্য ইমামদের মত। প্রথমটাই বেশি সঠিক। তবে দু’টি মতই গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
(وَلَا يَحِلُّ لَهُنَّ أَنْ يَكْتُمْنَ)
এ থেকে মাসিক ও গর্ভ উভয়টাই উদ্দেশ্য। মাসিক গোপন করার অর্থ হল তালাকের পর স্ত্রী বলবে, আমার একবার বা দু’বার মাসিক হয়েছে। আসলে তার তিন মাসিক পার হয়ে গেছে। এরূপ বলার কারণ হল, প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা।
আর যদি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা না থাকে তাহলে বলবে, আমার তিন মাসিক চলে গেছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে এ রকম হয়নি যাতে স্বামী ফিরিয়ে নিতে না পারে।
অনুরূপভাবে গর্ভে যা আছে তা গোপন করা বৈধ নয়। কারণ এতে বংশের সংমিশ্রণ ঘটে যায়।
(وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ)
“তবে তাদের স্বামীরা ঐ সময়ের মধ্যে (ইদ্দতের মধ্যে) তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে অধিক হকদার” অর্থাৎ স্বামীর ফিরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য যদি সংকীর্ণতা সৃষ্টি করা না হয়, তাহলে তার ফিরিয়ে নেয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। স্ত্রীর অভিভাবকদের ঐ অধিকারে অন্তরায় সৃষ্টি করার অনুমতি নেই।
(وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ)
“মহিলাদের জন্যও ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে যেমন তাদের ওপর পুরুষদের অধিকার রয়েছে” অর্থাৎ উভয়ের অধিকারগুলো একে অপরের মতই। আর এগুলো আদায় করার ব্যাপারে উভয়েই শরীয়ত কর্তৃক বাধ্য। তবে মহিলাদের ওপর পুরুষের বেশি মর্যাদা রয়েছে। যেমন গঠনশক্তি, জিহাদের অনুমতি, দ্বিগুণ ওয়ারিস, অভিভাবকত্ব ও নেতৃত্ব এবং তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার ইত্যাদির ব্যাপারে।
2:229
اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ۪
فَاِمۡسَاکٌۢ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ تَسۡرِیۡحٌۢ بِاِحۡسَانٍ ؕ وَ لَا یَحِلُّ لَکُمۡ
اَنۡ تَاۡخُذُوۡا مِمَّاۤ اٰتَیۡتُمُوۡہُنَّ شَیۡئًا اِلَّاۤ اَنۡ یَّخَافَاۤ
اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰہِ ؕ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ
اللّٰہِ ۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡہِمَا فِیۡمَا افۡتَدَتۡ بِہٖ ؕ تِلۡکَ حُدُوۡدُ
اللّٰہِ فَلَا تَعۡتَدُوۡہَا ۚ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰہِ فَاُولٰٓئِکَ
ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۲۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৯ ও ২৩০ নং আয়াতের তাফসীর:
তালাকের পরিচয়:
তালাক অর্থ বন্ধন মুক্ত করা, ছেড়ে দেয়া। শরীয়তের পরিভাষায় তালাক বলা হয়- তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা।
তালাকের শর্তসমূহ:
প্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী তার বৈধ স্ত্রীকে সুস্থ বিবেকে তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদ করবে। স্বামীকে যদি তালাক দিতে বাধ্য করা হয় অথবা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তালাক দেয় তাহলে তালাক হবে না।
তালাক দু’প্রকার:
(১) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে এমন স্ত্রীকে ঐ পবিত্র অবস্থায় তালাক দেয়া যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়নি। এটাই হলো সুন্নাতী পদ্ধতি।
তালাকের পরিচয়:
তালাক অর্থ বন্ধন মুক্ত করা, ছেড়ে দেয়া। শরীয়তের পরিভাষায় তালাক বলা হয়- তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা।
তালাকের শর্তসমূহ:
প্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী তার বৈধ স্ত্রীকে সুস্থ বিবেকে তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদ করবে। স্বামীকে যদি তালাক দিতে বাধ্য করা হয় অথবা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তালাক দেয় তাহলে তালাক হবে না।
তালাক দু’প্রকার:
(১) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে এমন স্ত্রীকে ঐ পবিত্র অবস্থায় তালাক দেয়া যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়নি। এটাই হলো সুন্নাতী পদ্ধতি।
(২) যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে অথবা ঋতু অবস্থায় তালাক দেয়াকে বিদআতী
তালাক বলা হয়। এরূপ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক কার্যকর হবে না। (সহীহ বুখারী হা:
৫২৫১)
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
‘তালাক দু’বার’বলতে সে তালাককে বুঝানো হয়েছে যে তালাকে স্বামী ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে। আর তার সংখ্যা দু’টি। প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেয়ার পরও স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। তবে তৃতীয়বার তালাক দিলে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে না।
জাহিলী যুগে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার কোন নির্ধারিত সময়সীমা ছিল না। ফলে নারীর ওপর অত্যাচার করা হত। মানুষ বার বার স্ত্রীকে তালাক দিত আবার মন চাইলে ফিরিয়ে নিত। এভাবে না তাকে রাখত, না ছেড়ে দিত।
আল্লাহ তা‘আলা নারীদের ওপর জুলুমের এ পথ বন্ধ করে দিলেন। অপর পক্ষে প্রথমবার ও দ্বিতীয়বারে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেননি। তা না হলে যদি প্রথম তালাকেই চির দিনের জন্য বিচ্ছেদের নির্দেশ দিতেন, তাহলে এ থেকে পারিবারিক যেসব সমস্যার সৃষ্টি হত তা কল্পনাতীত। অনেক স্বামী রাগবশতঃ তালাক দিয়ে দেয়, পরে অনুধাবন করতে পারে। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা দ্বিতীয়বার পর্যন্ত স্বামীদের চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছেন।
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা (طلقتان) (দু’তালাক) বলেননি বরং বলেছেন:
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
তালাক দুইবার। এর দ্বারা বুঝা যায়, একই সময়ে দুই বা তিন তালাক দেয়া এবং তা কার্যকরী করা আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের পরিপন্থী। আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের দাবি হল- একবার তালাক দেয়ার পর প্রথম মাসিক ইদ্দত পূর্ণ করবে এমতাবস্থায় চিন্তা-ভাবনা করবে ফিরিয়ে নেয়া যায় কিনা। যদি ফিরিয়ে না নেয় তারপর অনুরূপ দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী চিন্তা ভাবনা করার এবং ত্বরান্বিত ও রাগান্বিত অবস্থায় কৃতকর্ম সম্বন্ধে পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ পাবে। আর এ হিকমত এক মজলিসে তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করার মধ্যেও বিদ্যমান থাকে। একই সময়ে দেয়া তিন তালাককে কার্যকরী করে দিলে চিন্তা-ভাবনা করার এবং ভুল সংশোধনের সুযোগ দেয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হিকমাতও অবশিষ্ট থাকে না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন- হয় তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে তার সাথে ভালভাবে সাংসারিক জীবন-যাপন করবে অথবা তৃতীয়বার তালাক দিয়ে সুন্দরভাবে বিদায় করে দেবে।
অতঃপর খোলা তালাকের কথা বলা হচ্ছে- খোলা তালাক হল স্ত্রী স্বামী থেকে পৃথক হতে চাইলে স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত মোহরানা ফিরিয়ে দেবে। তবে তা অবশ্যই শরীয়তসম্মত কোন কারণ থাকতে হবে। যেমন স্বামী সালাত আদায় করে না, স্ত্রীকে বেপর্দা হয়ে চলতে বাধ্য করে ইত্যাদি। এমতাবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে পৃথক করে দিতে না চায়, তাহলে আদালত স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। যদি তালাক না দেয় তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেবে। অর্থাৎ খোলা তালাকের মাধ্যমে হতে পারে বা বিবাহ বিচ্ছেদ করার মাধ্যমেও হতে পারে। উভয় অবস্থায় ইদ্দত হল এক মাস। (তিরমিযী হা: ১১৮৫, আবূ দাঊদ হা: ২২৩৯, সহীহ)
মহিলাকে এ অধিকার দেয়ার সাথে সাথে এ কথার ওপর শক্ত তাকীদ দেয়া হয়েছে যে, কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া সে যেন তার স্বামীর কাছে তালাক কামনা না করে। যদি সে রকম হয় তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلاَقًا فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ
যে মহিলা তার স্বামীর কাছে কোন সমস্যা ছাড়া তালাক চাইবে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি পর্যন্ত হারাম। (তিরমিযী হা: ১১৮৭, আবূ দাঊদ হা: ২২২৬, সহীহ)
তারপর ২৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় তালাকের আলোচনা করেছেন। তৃতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, আর পুনরায় বিবাহও করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, স্ত্রী যদি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে পুরুষ স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দেয় অথবা স্বামী মারা যায় আর মহিলা যদি প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চায় তাহলে ঐ প্রথম স্বামী বিবাহ করতে পারবে।
কিন্তু আমাদের দেশে তথাকথিত এক বৈঠকে তিন তালাককে তিন তালাক গণ্য করতঃ হারাম কৌশলের (হিল্লা পদ্ধতির) আশ্রয় গ্রহণ করে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। এ প্রথা সম্পূর্ণ হারাম। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُحَلَّ والمُحَلَلَ لَهُ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা‘নত করেছেন হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয় ব্যক্তিকে। (তিরমিযী হা: ৮৯৩-৯৪, মিশকাত হা: ৩২৯৬-৯৭, সহীহ)
এ পরিকল্পিত অবৈধ বিবাহের মাধ্যমে মহিলা প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে না। এসব আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত সীমারেখা; অতএব কেউ যেন সীমালঙ্ঘন না করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. এক শব্দে বা এক বৈঠকে তিন তালাক দেয়া বিদআত, যা বৈধ নয়।
২. এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে এক তালাক বলে গণ্য হবে।
৩. তিন তুহুরে অর্থাৎ তিন পবিত্রাবস্থায় সঠিকভাবে তিন তালাক দিলে স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম।
৪. খোলা তালাক শরীয়তসম্মত। তবে তা ন্যায়সঙ্গত কারণে হতে হবে।
৫. হিল্লা বিবাহ হারাম, যে করে এবং যার জন্য করা হয় উভয়ে অভিশপ্ত।
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
‘তালাক দু’বার’বলতে সে তালাককে বুঝানো হয়েছে যে তালাকে স্বামী ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে। আর তার সংখ্যা দু’টি। প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেয়ার পরও স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। তবে তৃতীয়বার তালাক দিলে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে না।
জাহিলী যুগে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার কোন নির্ধারিত সময়সীমা ছিল না। ফলে নারীর ওপর অত্যাচার করা হত। মানুষ বার বার স্ত্রীকে তালাক দিত আবার মন চাইলে ফিরিয়ে নিত। এভাবে না তাকে রাখত, না ছেড়ে দিত।
আল্লাহ তা‘আলা নারীদের ওপর জুলুমের এ পথ বন্ধ করে দিলেন। অপর পক্ষে প্রথমবার ও দ্বিতীয়বারে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেননি। তা না হলে যদি প্রথম তালাকেই চির দিনের জন্য বিচ্ছেদের নির্দেশ দিতেন, তাহলে এ থেকে পারিবারিক যেসব সমস্যার সৃষ্টি হত তা কল্পনাতীত। অনেক স্বামী রাগবশতঃ তালাক দিয়ে দেয়, পরে অনুধাবন করতে পারে। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা দ্বিতীয়বার পর্যন্ত স্বামীদের চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছেন।
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা (طلقتان) (দু’তালাক) বলেননি বরং বলেছেন:
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
তালাক দুইবার। এর দ্বারা বুঝা যায়, একই সময়ে দুই বা তিন তালাক দেয়া এবং তা কার্যকরী করা আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের পরিপন্থী। আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের দাবি হল- একবার তালাক দেয়ার পর প্রথম মাসিক ইদ্দত পূর্ণ করবে এমতাবস্থায় চিন্তা-ভাবনা করবে ফিরিয়ে নেয়া যায় কিনা। যদি ফিরিয়ে না নেয় তারপর অনুরূপ দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী চিন্তা ভাবনা করার এবং ত্বরান্বিত ও রাগান্বিত অবস্থায় কৃতকর্ম সম্বন্ধে পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ পাবে। আর এ হিকমত এক মজলিসে তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করার মধ্যেও বিদ্যমান থাকে। একই সময়ে দেয়া তিন তালাককে কার্যকরী করে দিলে চিন্তা-ভাবনা করার এবং ভুল সংশোধনের সুযোগ দেয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হিকমাতও অবশিষ্ট থাকে না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন- হয় তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে তার সাথে ভালভাবে সাংসারিক জীবন-যাপন করবে অথবা তৃতীয়বার তালাক দিয়ে সুন্দরভাবে বিদায় করে দেবে।
অতঃপর খোলা তালাকের কথা বলা হচ্ছে- খোলা তালাক হল স্ত্রী স্বামী থেকে পৃথক হতে চাইলে স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত মোহরানা ফিরিয়ে দেবে। তবে তা অবশ্যই শরীয়তসম্মত কোন কারণ থাকতে হবে। যেমন স্বামী সালাত আদায় করে না, স্ত্রীকে বেপর্দা হয়ে চলতে বাধ্য করে ইত্যাদি। এমতাবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে পৃথক করে দিতে না চায়, তাহলে আদালত স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। যদি তালাক না দেয় তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেবে। অর্থাৎ খোলা তালাকের মাধ্যমে হতে পারে বা বিবাহ বিচ্ছেদ করার মাধ্যমেও হতে পারে। উভয় অবস্থায় ইদ্দত হল এক মাস। (তিরমিযী হা: ১১৮৫, আবূ দাঊদ হা: ২২৩৯, সহীহ)
মহিলাকে এ অধিকার দেয়ার সাথে সাথে এ কথার ওপর শক্ত তাকীদ দেয়া হয়েছে যে, কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া সে যেন তার স্বামীর কাছে তালাক কামনা না করে। যদি সে রকম হয় তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلاَقًا فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ
যে মহিলা তার স্বামীর কাছে কোন সমস্যা ছাড়া তালাক চাইবে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি পর্যন্ত হারাম। (তিরমিযী হা: ১১৮৭, আবূ দাঊদ হা: ২২২৬, সহীহ)
তারপর ২৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় তালাকের আলোচনা করেছেন। তৃতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, আর পুনরায় বিবাহও করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, স্ত্রী যদি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে পুরুষ স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দেয় অথবা স্বামী মারা যায় আর মহিলা যদি প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চায় তাহলে ঐ প্রথম স্বামী বিবাহ করতে পারবে।
কিন্তু আমাদের দেশে তথাকথিত এক বৈঠকে তিন তালাককে তিন তালাক গণ্য করতঃ হারাম কৌশলের (হিল্লা পদ্ধতির) আশ্রয় গ্রহণ করে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। এ প্রথা সম্পূর্ণ হারাম। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُحَلَّ والمُحَلَلَ لَهُ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা‘নত করেছেন হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয় ব্যক্তিকে। (তিরমিযী হা: ৮৯৩-৯৪, মিশকাত হা: ৩২৯৬-৯৭, সহীহ)
এ পরিকল্পিত অবৈধ বিবাহের মাধ্যমে মহিলা প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে না। এসব আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত সীমারেখা; অতএব কেউ যেন সীমালঙ্ঘন না করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. এক শব্দে বা এক বৈঠকে তিন তালাক দেয়া বিদআত, যা বৈধ নয়।
২. এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে এক তালাক বলে গণ্য হবে।
৩. তিন তুহুরে অর্থাৎ তিন পবিত্রাবস্থায় সঠিকভাবে তিন তালাক দিলে স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম।
৪. খোলা তালাক শরীয়তসম্মত। তবে তা ন্যায়সঙ্গত কারণে হতে হবে।
৫. হিল্লা বিবাহ হারাম, যে করে এবং যার জন্য করা হয় উভয়ে অভিশপ্ত।
2:230
فَاِنۡ طَلَّقَہَا فَلَا
تَحِلُّ لَہٗ مِنۡۢ بَعۡدُ حَتّٰی تَنۡکِحَ زَوۡجًا غَیۡرَہٗ ؕ فَاِنۡ طَلَّقَہَا
فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡہِمَاۤ اَنۡ یَّتَرَاجَعَاۤ اِنۡ ظَنَّاۤ اَنۡ یُّقِیۡمَا
حُدُوۡدَ اللّٰہِ ؕ وَ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰہِ یُبَیِّنُہَا لِقَوۡمٍ
یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২২৯ ও ২৩০ নং আয়াতের তাফসীর:
তালাকের পরিচয়:
তালাক অর্থ বন্ধন মুক্ত করা, ছেড়ে দেয়া। শরীয়তের পরিভাষায় তালাক বলা হয়- তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা।
তালাকের শর্তসমূহ:
প্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী তার বৈধ স্ত্রীকে সুস্থ বিবেকে তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদ করবে। স্বামীকে যদি তালাক দিতে বাধ্য করা হয় অথবা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তালাক দেয় তাহলে তালাক হবে না।
তালাক দু’প্রকার:
(১) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে এমন স্ত্রীকে ঐ পবিত্র অবস্থায় তালাক দেয়া যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়নি। এটাই হলো সুন্নাতী পদ্ধতি।
(২) যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে অথবা ঋতু অবস্থায় তালাক দেয়াকে বিদআতী তালাক বলা হয়। এরূপ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক কার্যকর হবে না। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৫১)
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
‘তালাক দু’বার’বলতে সে তালাককে বুঝানো হয়েছে যে তালাকে স্বামী ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে। আর তার সংখ্যা দু’টি। প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেয়ার পরও স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। তবে তৃতীয়বার তালাক দিলে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে না।
জাহিলী যুগে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার কোন নির্ধারিত সময়সীমা ছিল না। ফলে নারীর ওপর অত্যাচার করা হত। মানুষ বার বার স্ত্রীকে তালাক দিত আবার মন চাইলে ফিরিয়ে নিত। এভাবে না তাকে রাখত, না ছেড়ে দিত।
আল্লাহ তা‘আলা নারীদের ওপর জুলুমের এ পথ বন্ধ করে দিলেন। অপর পক্ষে প্রথমবার ও দ্বিতীয়বারে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেননি। তা না হলে যদি প্রথম তালাকেই চির দিনের জন্য বিচ্ছেদের নির্দেশ দিতেন, তাহলে এ থেকে পারিবারিক যেসব সমস্যার সৃষ্টি হত তা কল্পনাতীত। অনেক স্বামী রাগবশতঃ তালাক দিয়ে দেয়, পরে অনুধাবন করতে পারে। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা দ্বিতীয়বার পর্যন্ত স্বামীদের চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছেন।
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা (طلقتان) (দু’তালাক) বলেননি বরং বলেছেন:
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
তালাক দুইবার। এর দ্বারা বুঝা যায়, একই সময়ে দুই বা তিন তালাক দেয়া এবং তা কার্যকরী করা আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের পরিপন্থী। আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের দাবি হল- একবার তালাক দেয়ার পর প্রথম মাসিক ইদ্দত পূর্ণ করবে এমতাবস্থায় চিন্তা-ভাবনা করবে ফিরিয়ে নেয়া যায় কিনা। যদি ফিরিয়ে না নেয় তারপর অনুরূপ দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী চিন্তা ভাবনা করার এবং ত্বরান্বিত ও রাগান্বিত অবস্থায় কৃতকর্ম সম্বন্ধে পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ পাবে। আর এ হিকমত এক মজলিসে তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করার মধ্যেও বিদ্যমান থাকে। একই সময়ে দেয়া তিন তালাককে কার্যকরী করে দিলে চিন্তা-ভাবনা করার এবং ভুল সংশোধনের সুযোগ দেয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হিকমাতও অবশিষ্ট থাকে না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন- হয় তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে তার সাথে ভালভাবে সাংসারিক জীবন-যাপন করবে অথবা তৃতীয়বার তালাক দিয়ে সুন্দরভাবে বিদায় করে দেবে।
অতঃপর খোলা তালাকের কথা বলা হচ্ছে- খোলা তালাক হল স্ত্রী স্বামী থেকে পৃথক হতে চাইলে স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত মোহরানা ফিরিয়ে দেবে। তবে তা অবশ্যই শরীয়তসম্মত কোন কারণ থাকতে হবে। যেমন স্বামী সালাত আদায় করে না, স্ত্রীকে বেপর্দা হয়ে চলতে বাধ্য করে ইত্যাদি। এমতাবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে পৃথক করে দিতে না চায়, তাহলে আদালত স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। যদি তালাক না দেয় তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেবে। অর্থাৎ খোলা তালাকের মাধ্যমে হতে পারে বা বিবাহ বিচ্ছেদ করার মাধ্যমেও হতে পারে। উভয় অবস্থায় ইদ্দত হল এক মাস। (তিরমিযী হা: ১১৮৫, আবূ দাঊদ হা: ২২৩৯, সহীহ)
মহিলাকে এ অধিকার দেয়ার সাথে সাথে এ কথার ওপর শক্ত তাকীদ দেয়া হয়েছে যে, কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া সে যেন তার স্বামীর কাছে তালাক কামনা না করে। যদি সে রকম হয় তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:يُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلاَقًا فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ
যে মহিলা তার স্বামীর কাছে কোন সমস্যা ছাড়া তালাক চাইবে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি পর্যন্ত হারাম। (তিরমিযী হা: ১১৮৭, আবূ দাঊদ হা: ২২২৬, সহীহ)
তারপর ২৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় তালাকের আলোচনা করেছেন। তৃতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, আর পুনরায় বিবাহও করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, স্ত্রী যদি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে পুরুষ স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দেয় অথবা স্বামী মারা যায় আর মহিলা যদি প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চায় তাহলে ঐ প্রথম স্বামী বিবাহ করতে পারবে।
কিন্তু আমাদের দেশে তথাকথিত এক বৈঠকে তিন তালাককে তিন তালাক গণ্য করতঃ হারাম কৌশলের (হিল্লা পদ্ধতির) আশ্রয় গ্রহণ করে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। এ প্রথা সম্পূর্ণ হারাম। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُحَلَّ والمُحَلَلَ لَهُ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা‘নত করেছেন হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয় ব্যক্তিকে। (তিরমিযী হা: ৮৯৩-৯৪, মিশকাত হা: ৩২৯৬-৯৭, সহীহ)
এ পরিকল্পিত অবৈধ বিবাহের মাধ্যমে মহিলা প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে না। এসব আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত সীমারেখা; অতএব কেউ যেন সীমালঙ্ঘন না করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. এক শব্দে বা এক বৈঠকে তিন তালাক দেয়া বিদআত, যা বৈধ নয়।
২. এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে এক তালাক বলে গণ্য হবে।
৩. তিন তুহুরে অর্থাৎ তিন পবিত্রাবস্থায় সঠিকভাবে তিন তালাক দিলে স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম।
৪. খোলা তালাক শরীয়তসম্মত। তবে তা ন্যায়সঙ্গত কারণে হতে হবে।
৫. হিল্লা বিবাহ হারাম, যে করে এবং যার জন্য করা হয় উভয়ে অভিশপ্ত।
তালাকের পরিচয়:
তালাক অর্থ বন্ধন মুক্ত করা, ছেড়ে দেয়া। শরীয়তের পরিভাষায় তালাক বলা হয়- তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা।
তালাকের শর্তসমূহ:
প্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী তার বৈধ স্ত্রীকে সুস্থ বিবেকে তালাক ও অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদ করবে। স্বামীকে যদি তালাক দিতে বাধ্য করা হয় অথবা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তালাক দেয় তাহলে তালাক হবে না।
তালাক দু’প্রকার:
(১) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে এমন স্ত্রীকে ঐ পবিত্র অবস্থায় তালাক দেয়া যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়নি। এটাই হলো সুন্নাতী পদ্ধতি।
(২) যে পবিত্র অবস্থায় দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে অথবা ঋতু অবস্থায় তালাক দেয়াকে বিদআতী তালাক বলা হয়। এরূপ অবস্থায় তালাক দিলে তালাক কার্যকর হবে না। (সহীহ বুখারী হা: ৫২৫১)
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
‘তালাক দু’বার’বলতে সে তালাককে বুঝানো হয়েছে যে তালাকে স্বামী ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে। আর তার সংখ্যা দু’টি। প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেয়ার পরও স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। তবে তৃতীয়বার তালাক দিলে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে না।
জাহিলী যুগে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার কোন নির্ধারিত সময়সীমা ছিল না। ফলে নারীর ওপর অত্যাচার করা হত। মানুষ বার বার স্ত্রীকে তালাক দিত আবার মন চাইলে ফিরিয়ে নিত। এভাবে না তাকে রাখত, না ছেড়ে দিত।
আল্লাহ তা‘আলা নারীদের ওপর জুলুমের এ পথ বন্ধ করে দিলেন। অপর পক্ষে প্রথমবার ও দ্বিতীয়বারে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেননি। তা না হলে যদি প্রথম তালাকেই চির দিনের জন্য বিচ্ছেদের নির্দেশ দিতেন, তাহলে এ থেকে পারিবারিক যেসব সমস্যার সৃষ্টি হত তা কল্পনাতীত। অনেক স্বামী রাগবশতঃ তালাক দিয়ে দেয়, পরে অনুধাবন করতে পারে। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা দ্বিতীয়বার পর্যন্ত স্বামীদের চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছেন।
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা (طلقتان) (দু’তালাক) বলেননি বরং বলেছেন:
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
তালাক দুইবার। এর দ্বারা বুঝা যায়, একই সময়ে দুই বা তিন তালাক দেয়া এবং তা কার্যকরী করা আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের পরিপন্থী। আল্লাহ তা‘আলার হিকমতের দাবি হল- একবার তালাক দেয়ার পর প্রথম মাসিক ইদ্দত পূর্ণ করবে এমতাবস্থায় চিন্তা-ভাবনা করবে ফিরিয়ে নেয়া যায় কিনা। যদি ফিরিয়ে না নেয় তারপর অনুরূপ দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী চিন্তা ভাবনা করার এবং ত্বরান্বিত ও রাগান্বিত অবস্থায় কৃতকর্ম সম্বন্ধে পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ পাবে। আর এ হিকমত এক মজলিসে তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করার মধ্যেও বিদ্যমান থাকে। একই সময়ে দেয়া তিন তালাককে কার্যকরী করে দিলে চিন্তা-ভাবনা করার এবং ভুল সংশোধনের সুযোগ দেয়া থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং হিকমাতও অবশিষ্ট থাকে না।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন- হয় তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে তার সাথে ভালভাবে সাংসারিক জীবন-যাপন করবে অথবা তৃতীয়বার তালাক দিয়ে সুন্দরভাবে বিদায় করে দেবে।
অতঃপর খোলা তালাকের কথা বলা হচ্ছে- খোলা তালাক হল স্ত্রী স্বামী থেকে পৃথক হতে চাইলে স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত মোহরানা ফিরিয়ে দেবে। তবে তা অবশ্যই শরীয়তসম্মত কোন কারণ থাকতে হবে। যেমন স্বামী সালাত আদায় করে না, স্ত্রীকে বেপর্দা হয়ে চলতে বাধ্য করে ইত্যাদি। এমতাবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে পৃথক করে দিতে না চায়, তাহলে আদালত স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করবে। যদি তালাক না দেয় তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেবে। অর্থাৎ খোলা তালাকের মাধ্যমে হতে পারে বা বিবাহ বিচ্ছেদ করার মাধ্যমেও হতে পারে। উভয় অবস্থায় ইদ্দত হল এক মাস। (তিরমিযী হা: ১১৮৫, আবূ দাঊদ হা: ২২৩৯, সহীহ)
মহিলাকে এ অধিকার দেয়ার সাথে সাথে এ কথার ওপর শক্ত তাকীদ দেয়া হয়েছে যে, কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়া সে যেন তার স্বামীর কাছে তালাক কামনা না করে। যদি সে রকম হয় তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:يُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلاَقًا فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ
যে মহিলা তার স্বামীর কাছে কোন সমস্যা ছাড়া তালাক চাইবে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি পর্যন্ত হারাম। (তিরমিযী হা: ১১৮৭, আবূ দাঊদ হা: ২২২৬, সহীহ)
তারপর ২৩০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তৃতীয় তালাকের আলোচনা করেছেন। তৃতীয় তালাক দেয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, আর পুনরায় বিবাহও করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, স্ত্রী যদি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে পুরুষ স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দেয় অথবা স্বামী মারা যায় আর মহিলা যদি প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চায় তাহলে ঐ প্রথম স্বামী বিবাহ করতে পারবে।
কিন্তু আমাদের দেশে তথাকথিত এক বৈঠকে তিন তালাককে তিন তালাক গণ্য করতঃ হারাম কৌশলের (হিল্লা পদ্ধতির) আশ্রয় গ্রহণ করে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। এ প্রথা সম্পূর্ণ হারাম। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন:
لَعَنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُحَلَّ والمُحَلَلَ لَهُ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা‘নত করেছেন হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয় ব্যক্তিকে। (তিরমিযী হা: ৮৯৩-৯৪, মিশকাত হা: ৩২৯৬-৯৭, সহীহ)
এ পরিকল্পিত অবৈধ বিবাহের মাধ্যমে মহিলা প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে না। এসব আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত সীমারেখা; অতএব কেউ যেন সীমালঙ্ঘন না করে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. এক শব্দে বা এক বৈঠকে তিন তালাক দেয়া বিদআত, যা বৈধ নয়।
২. এক বৈঠকে তিন তালাক দিলে এক তালাক বলে গণ্য হবে।
৩. তিন তুহুরে অর্থাৎ তিন পবিত্রাবস্থায় সঠিকভাবে তিন তালাক দিলে স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম।
৪. খোলা তালাক শরীয়তসম্মত। তবে তা ন্যায়সঙ্গত কারণে হতে হবে।
৫. হিল্লা বিবাহ হারাম, যে করে এবং যার জন্য করা হয় উভয়ে অভিশপ্ত।
2:231
وَ اِذَا طَلَّقۡتُمُ
النِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ اَجَلَہُنَّ فَاَمۡسِکُوۡہُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ
سَرِّحُوۡہُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ ۪ وَ لَا تُمۡسِکُوۡہُنَّ ضِرَارًا لِّتَعۡتَدُوۡا ۚ
وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَہٗ ؕ وَ لَا تَتَّخِذُوۡۤا اٰیٰتِ
اللّٰہِ ہُزُوًا ۫ وَّ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ وَ مَاۤ اَنۡزَلَ
عَلَیۡکُمۡ مِّنَ الۡکِتٰبِ وَ الۡحِکۡمَۃِ یَعِظُکُمۡ بِہٖ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ
وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ ﴿۲۳۱﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩১ নং আয়াতের তাফসীর:
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
আয়াতে বলা হয়েছিল দু’বার তালাক দেয়ার পরেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে। এ আয়াতে সে কথাই বলা হয়েছে। কেউ স্ত্রীকে দু’বার তালাক দিয়ে থাকলে এখন সে স্ত্রীকে ইদ্দত শেষের পূর্বে ইচ্ছা করলে ফিরিয়ে নেবে অথবা তৃতীয় তালাক দিয়ে বিদায় করে দেবে। তবে সাবধান স্ত্রীকে কষ্ট দেয়ার জন্য ফিরিয়ে নেবে না। যে ব্যক্তি এরূপ করে সে নিজের ওপর জুলুম করল।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আয়াতকে ঠাট্টার পাত্র হিসেবে মনে করতে নিষেধ করেছেন। ঠাট্টা করে কেউ বলল, আমি স্ত্রী তালাক দিলাম বা বিবাহ করলাম বা ফিরিয়ে নিলাম। আর বলল, আমি ঠাট্টা করেছি, মহান আল্লাহ তা‘আলা এটাকে তাঁর আয়াতের সাথে ঠাট্টা বলে গণ্য করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ
তিনটি কাজ সঠিক করে করলেও সঠিক এবং উপহাস করে করলেও সঠিক হয়। তালাক, বিবাহ এবং তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া। (আবূ দাঊদ হা: ১৯০৪, হাসান)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরঈ বিধান নিয়ে ঠাট্টা করা হারাম।
৩. প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
(الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ)
আয়াতে বলা হয়েছিল দু’বার তালাক দেয়ার পরেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকে। এ আয়াতে সে কথাই বলা হয়েছে। কেউ স্ত্রীকে দু’বার তালাক দিয়ে থাকলে এখন সে স্ত্রীকে ইদ্দত শেষের পূর্বে ইচ্ছা করলে ফিরিয়ে নেবে অথবা তৃতীয় তালাক দিয়ে বিদায় করে দেবে। তবে সাবধান স্ত্রীকে কষ্ট দেয়ার জন্য ফিরিয়ে নেবে না। যে ব্যক্তি এরূপ করে সে নিজের ওপর জুলুম করল।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আয়াতকে ঠাট্টার পাত্র হিসেবে মনে করতে নিষেধ করেছেন। ঠাট্টা করে কেউ বলল, আমি স্ত্রী তালাক দিলাম বা বিবাহ করলাম বা ফিরিয়ে নিলাম। আর বলল, আমি ঠাট্টা করেছি, মহান আল্লাহ তা‘আলা এটাকে তাঁর আয়াতের সাথে ঠাট্টা বলে গণ্য করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ
তিনটি কাজ সঠিক করে করলেও সঠিক এবং উপহাস করে করলেও সঠিক হয়। তালাক, বিবাহ এবং তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া। (আবূ দাঊদ হা: ১৯০৪, হাসান)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর ফিরিয়ে নেয়া হারাম।
২. শরঈ বিধান নিয়ে ঠাট্টা করা হারাম।
৩. প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা আবশ্যক।
2:232
وَ اِذَا طَلَّقۡتُمُ
النِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ اَجَلَہُنَّ فَلَا تَعۡضُلُوۡہُنَّ اَنۡ یَّنۡکِحۡنَ
اَزۡوَاجَہُنَّ اِذَا تَرَاضَوۡا بَیۡنَہُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ ذٰلِکَ یُوۡعَظُ
بِہٖ مَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ یُؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ ذٰلِکُمۡ
اَزۡکٰی لَکُمۡ وَ اَطۡہَرُ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۲﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩২ নং আয়াতের
তাফসীর:
শানে নুযূল:
মা‘কাল বিন ইয়াসার (রাঃ) বলেন: আমার নিকট আমার বোনের বিয়ের প্রস্তাব আসলে আমি বিবাহ দিয়ে দেই। তার স্বামী কিছুদিন পর তাকে তালাক দেয়। ইদ্দত অতিক্রান্ত হবার পরও সে তাকে ফিরিয়ে নেয়নি। পরে একে অপরের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। আমার বোনকে সে স্বামী একজন প্রস্তাবকারী দ্বারা প্রস্তাব দেয়। তিনি (মা‘কাল) তখন তাকে বললেন: হে লোক! তোমার সাথে আমার বোনকে বিবাহ দিয়ে তোমাকে সম্মানিত করেছিলাম। কিন্তু তুমি তালাক দিয়েছ। আল্লাহ তা‘আলার শপথ কখনো আমার বোন তোমার কাছে ফিরে যাবে না। তোমার কাছে যতদিন ছিল তাই শেষ।
বর্ণনাকারী বলেন: আল্লাহ তা‘আলা জানেন যে, তারা একজন অন্যজনের প্রতি মুখাপেক্ষী। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। মা‘কাল এ আয়াত শুনে বলল, আমি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। অতঃপর তার ভগ্নিপতিকে ডেকে এনে পুনরায় তার সাথে বিবাহ দেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৩০)
অত্র আয়াতে তালাকপ্রাপ্তা মহিলার ব্যাপারে তৃতীয় আরেকটি নির্দেশ দেয়া হয়েছে- তা হল ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর তারা (প্রথম বা দ্বিতীয় তালাকের পর স্বামী ও স্ত্রী) উভয়ই সন্তুষ্টচিত্তে পুনরায় যদি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় তাহলে তোমরা অভিভাবক হয়ে তাদেরকে বাধা দিও না।
যেহেতু অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না, তাই মহান আল্লাহ তা‘আলা অভিভাবকদেরকে তাদের অভিভাবকত্বের অধিকারকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস দ্বারা এ কথার আরো সমর্থন পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:لاَ نِكَاحَ إِلاَّ بِوَلِيٍّ
অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না। (আবূ দাঊদ হা: ২০৮৭, সহীহ)
যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকাল দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, তাদের জন্য এটা উপদেশ। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা অবগত করেছেন যে, তালাক প্রাপ্তা নারীদেরকে তাদের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে বাধা না দেয়া তোমাদের জন্য কল্যাণকর।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে তার পূর্ব স্বামীর কাছে ফিরে যেতে বাধা দেয়া নিষেধ।
২. অভিভাবক ছাড়া মহিলাদের বিবাহ বৈধ নয়।
৩. উপদেশ ঈমানদারদের উপকারে আসে।
শানে নুযূল:
মা‘কাল বিন ইয়াসার (রাঃ) বলেন: আমার নিকট আমার বোনের বিয়ের প্রস্তাব আসলে আমি বিবাহ দিয়ে দেই। তার স্বামী কিছুদিন পর তাকে তালাক দেয়। ইদ্দত অতিক্রান্ত হবার পরও সে তাকে ফিরিয়ে নেয়নি। পরে একে অপরের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। আমার বোনকে সে স্বামী একজন প্রস্তাবকারী দ্বারা প্রস্তাব দেয়। তিনি (মা‘কাল) তখন তাকে বললেন: হে লোক! তোমার সাথে আমার বোনকে বিবাহ দিয়ে তোমাকে সম্মানিত করেছিলাম। কিন্তু তুমি তালাক দিয়েছ। আল্লাহ তা‘আলার শপথ কখনো আমার বোন তোমার কাছে ফিরে যাবে না। তোমার কাছে যতদিন ছিল তাই শেষ।
বর্ণনাকারী বলেন: আল্লাহ তা‘আলা জানেন যে, তারা একজন অন্যজনের প্রতি মুখাপেক্ষী। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। মা‘কাল এ আয়াত শুনে বলল, আমি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। অতঃপর তার ভগ্নিপতিকে ডেকে এনে পুনরায় তার সাথে বিবাহ দেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫১৩০)
অত্র আয়াতে তালাকপ্রাপ্তা মহিলার ব্যাপারে তৃতীয় আরেকটি নির্দেশ দেয়া হয়েছে- তা হল ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর তারা (প্রথম বা দ্বিতীয় তালাকের পর স্বামী ও স্ত্রী) উভয়ই সন্তুষ্টচিত্তে পুনরায় যদি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় তাহলে তোমরা অভিভাবক হয়ে তাদেরকে বাধা দিও না।
যেহেতু অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না, তাই মহান আল্লাহ তা‘আলা অভিভাবকদেরকে তাদের অভিভাবকত্বের অধিকারকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস দ্বারা এ কথার আরো সমর্থন পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:لاَ نِكَاحَ إِلاَّ بِوَلِيٍّ
অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না। (আবূ দাঊদ হা: ২০৮৭, সহীহ)
যারা আল্লাহ তা‘আলা ও পরকাল দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, তাদের জন্য এটা উপদেশ। অবশেষে আল্লাহ তা‘আলা অবগত করেছেন যে, তালাক প্রাপ্তা নারীদেরকে তাদের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে বাধা না দেয়া তোমাদের জন্য কল্যাণকর।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে তার পূর্ব স্বামীর কাছে ফিরে যেতে বাধা দেয়া নিষেধ।
২. অভিভাবক ছাড়া মহিলাদের বিবাহ বৈধ নয়।
৩. উপদেশ ঈমানদারদের উপকারে আসে।
2:233
وَ الۡوَالِدٰتُ
یُرۡضِعۡنَ اَوۡلَادَہُنَّ حَوۡلَیۡنِ کَامِلَیۡنِ لِمَنۡ اَرَادَ اَنۡ یُّتِمَّ
الرَّضَاعَۃَ ؕ وَ عَلَی الۡمَوۡلُوۡدِ لَہٗ رِزۡقُہُنَّ وَ کِسۡوَتُہُنَّ
بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ لَا تُکَلَّفُ نَفۡسٌ اِلَّا وُسۡعَہَا ۚ لَا تُضَآرَّ
وَالِدَۃٌۢ بِوَلَدِہَا وَ لَا مَوۡلُوۡدٌ لَّہٗ بِوَلَدِہٖ ٭ وَ عَلَی الۡوَارِثِ
مِثۡلُ ذٰلِکَ ۚ فَاِنۡ اَرَادَا فِصَالًا عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡہُمَا وَ تَشَاوُرٍ
فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡہِمَا ؕ وَ اِنۡ اَرَدۡتُّمۡ اَنۡ تَسۡتَرۡضِعُوۡۤا
اَوۡلَادَکُمۡ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ اِذَا سَلَّمۡتُمۡ مَّاۤ اٰتَیۡتُمۡ
بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ بِمَا
تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۲۳۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৩ নং আয়াতের তাফসীর:
তালাকের বিধি-বিধান আলোচনার সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা শিশুদের দুধপানের বিষয়ে আলোচনা নিয়ে এসেছেন। কারণ অনেক সময় গর্ভবতী মহিলাকে তালাক দেয়া হয়। গর্ভবর্তী মহিলা তালাক প্রাপ্তা হলে প্রসবের পর বাচ্চার দায়-দায়িত্ব ও দুধপানের বিধান কী হবে, এখানে সে সম্পর্কে আলোচনা স্থান পেয়েছে।
দুধ পান করার সর্বোচ্চ সময়সীমা দু’বছর। এর কম পান করালেও চলবে। তবে তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যতদিন দুধ পান করাবে ততদিন বাচ্চার পিতা ভালভাবে মহিলার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لِیُنْفِقْ ذُوْ سَعَةٍ مِّنْ سَعَتِھ۪ﺚ وَمَنْ قُدِرَ عَلَیْھِ رِزْقُھ۫ فَلْیُنْفِقْ مِمَّآ اٰتٰٿھُ اللہُﺚ لَا یُکَلِّفُ اللہُ نَفْسًا اِلَّا مَآ اٰتٰٿھَاﺚ سَیَجْعَلُ اللہُ بَعْدَ عُسْرٍ یُّسْرًا)ا
“সামর্থ্যবান নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত সে আল্লাহ যা দান করেছেন তা হতে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন তদপেক্ষা অতিরিক্ত বোঝা তিনি তার ওপর চাপান না। আল্লাহ কষ্টের পর সহজ করে দেবেন।” (সূরা তালাক ৬৫:৭)
(وَلَا مَوْلُوْدٌ لَّھ۫)
‘মাউলূদ লাহু’বলতে বাচ্চার পিতাকে বুঝানো হয়েছে।
অতঃপর বলা হচ্ছে- পিতা-মাতা কাউকে সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। অর্থাৎ মাতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা বা কষ্ট দেয়া। যেমন মা শিশুকে নিজের কাছে রাখতে চায় কিন্তু মায়ের মমতার কোন পরওয়া না করে শিশুকে জোর করে তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া অথবা তার কোন ব্যয়ভার বহন না করে তাকে দুধ পান করাতে বাধ্য করা। আর পিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা বা কষ্ট দেয়া যেমন মা দুধ পান করাতে অস্বীকার করা কিংবা (শিশুর পিতার) কাছ থেকে সাধ্যের বাইরে খরচ চাওয়া।
যদি শিশুর পিতা মারা যায় তাহলে মায়ের অধিকার সঠিকভাবে আদায় করবে যাতে মায়ের কোন কষ্ট না হয় এবং শিশুর লালন-পালনেও যেন কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
আর যদি শিশুর মাকে বাদ দিয়ে অন্য কোন মহিলা দ্বারা দুধ পান করানোর প্রয়োজন হয় তাহলে শরীয়তের অনুমতি রয়েছে। তবে শর্ত হল, মহিলাকে যথাযথ পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শিশুকে মায়ের দুধ পান করানো আবশ্যক।
২. দুধ পান করানোর সর্বোচ্চ সময় অবগত হলাম।
৩. দুধ পান করার ফলে পারিশ্রমিক গ্রহণ জায়েয।
৪. তালাকপ্রাপ্তা মহিলা দুধ পান করালে তার ব্যয়ভার গ্রহণ করা শিশুর পিতার ওপর ওয়াজিব।
৫. দু’বছর পর দুধ পান করলে হারাম সাব্যস্ত হবে না।
তালাকের বিধি-বিধান আলোচনার সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা শিশুদের দুধপানের বিষয়ে আলোচনা নিয়ে এসেছেন। কারণ অনেক সময় গর্ভবতী মহিলাকে তালাক দেয়া হয়। গর্ভবর্তী মহিলা তালাক প্রাপ্তা হলে প্রসবের পর বাচ্চার দায়-দায়িত্ব ও দুধপানের বিধান কী হবে, এখানে সে সম্পর্কে আলোচনা স্থান পেয়েছে।
দুধ পান করার সর্বোচ্চ সময়সীমা দু’বছর। এর কম পান করালেও চলবে। তবে তালাকপ্রাপ্তা মহিলা যতদিন দুধ পান করাবে ততদিন বাচ্চার পিতা ভালভাবে মহিলার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لِیُنْفِقْ ذُوْ سَعَةٍ مِّنْ سَعَتِھ۪ﺚ وَمَنْ قُدِرَ عَلَیْھِ رِزْقُھ۫ فَلْیُنْفِقْ مِمَّآ اٰتٰٿھُ اللہُﺚ لَا یُکَلِّفُ اللہُ نَفْسًا اِلَّا مَآ اٰتٰٿھَاﺚ سَیَجْعَلُ اللہُ بَعْدَ عُسْرٍ یُّسْرًا)ا
“সামর্থ্যবান নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত সে আল্লাহ যা দান করেছেন তা হতে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন তদপেক্ষা অতিরিক্ত বোঝা তিনি তার ওপর চাপান না। আল্লাহ কষ্টের পর সহজ করে দেবেন।” (সূরা তালাক ৬৫:৭)
(وَلَا مَوْلُوْدٌ لَّھ۫)
‘মাউলূদ লাহু’বলতে বাচ্চার পিতাকে বুঝানো হয়েছে।
অতঃপর বলা হচ্ছে- পিতা-মাতা কাউকে সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। অর্থাৎ মাতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা বা কষ্ট দেয়া। যেমন মা শিশুকে নিজের কাছে রাখতে চায় কিন্তু মায়ের মমতার কোন পরওয়া না করে শিশুকে জোর করে তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া অথবা তার কোন ব্যয়ভার বহন না করে তাকে দুধ পান করাতে বাধ্য করা। আর পিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা বা কষ্ট দেয়া যেমন মা দুধ পান করাতে অস্বীকার করা কিংবা (শিশুর পিতার) কাছ থেকে সাধ্যের বাইরে খরচ চাওয়া।
যদি শিশুর পিতা মারা যায় তাহলে মায়ের অধিকার সঠিকভাবে আদায় করবে যাতে মায়ের কোন কষ্ট না হয় এবং শিশুর লালন-পালনেও যেন কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
আর যদি শিশুর মাকে বাদ দিয়ে অন্য কোন মহিলা দ্বারা দুধ পান করানোর প্রয়োজন হয় তাহলে শরীয়তের অনুমতি রয়েছে। তবে শর্ত হল, মহিলাকে যথাযথ পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শিশুকে মায়ের দুধ পান করানো আবশ্যক।
২. দুধ পান করানোর সর্বোচ্চ সময় অবগত হলাম।
৩. দুধ পান করার ফলে পারিশ্রমিক গ্রহণ জায়েয।
৪. তালাকপ্রাপ্তা মহিলা দুধ পান করালে তার ব্যয়ভার গ্রহণ করা শিশুর পিতার ওপর ওয়াজিব।
৫. দু’বছর পর দুধ পান করলে হারাম সাব্যস্ত হবে না।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaite
0 Comments