তাফসীরঃ ফাতহুল মাজীদ
ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এই. ই.
আর. এফ)
অনুবাদ ও গবেষণা বিভাগ কর্তৃক সংকলিত।ও সম্পাদিত
সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ-আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
সম্পাদনা পরিষদঃ-
প্রফেসর এ.কে.এম শামসুল আলম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ লাকমান হুসেন
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফী |
অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ আল-মাদানী
শায়খ মুস্তফা বিন বাহারুদ্দীন সালাফী
শায়খ ড. হাফিয় রফিকুল আল-মাদানী
শায়খ মাসউদুল আলম উমরী
শায়খ মুফায়যাল হুসাইন আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ঈসা মিয়া আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ ইরফান আলী আব্বাস আল-মাদানী
শায়খ হাবিবুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী |
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী |
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
শায়খ হাফিয় আনিসুর রহমান আল-মাদানী
শায়খ ইব্রাহীম বিন আবদুল হালীম আল-মাদানী
শায়খ আব্দুন নূর আবু সাঈদ আল-মাদানী
শায়খ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ খান আল-মাদানী
পরিবেশনায়ঃ আল খাইর
পাবলিকেশন্ম, নাজির বাজার, | ঢাকা।
সাম্প্রতিককালে সংকলিত অন্যতম কিছু তাফসীরের মধ্যে
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ উল্লেখযোগ্য। এই তাফসীরটি শাইখ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান
মাদানীর তত্ত্বাবধানে সংকলন করা হয়েছে।
খণ্ড সংখ্যাঃ ৩
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৯৮ (৮২৪ + ৯৬০ + ৮১৪)
মুদ্রিত মূল্যঃ ২৫৫০ (৯০০ + ৮৫০ + ৮০০)
তাফসীর ফাতহুল মাজীদ-এর উল্লেখযোগ্য
বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
০১. আরবী আয়াতের পাশাপাশি অতি সহজ - সরল বাংলা
অনুবাদ।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
০২. জটিল ও কঠিন শব্দার্থ।
০৩. গ্রহণযোগ্য বর্ণনার আলোকে শানে নুযুল।
০৪. কুরআনুল কারীম ও স্বহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থের আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংকলন।
০৫. স্বহীহ আক্বীদাহ ও শারয়ী বিধানমূলক আয়াতের শিক্ষা।
০৬. কুরআন ও সহীহ হাদীছের আলোকে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সমাধান।
০৭. ভিত্তিহীন প্রচলিত তাফসীর সম্পর্কে সতর্কীকরণ।
০৮. তাফসীরে ব্যবহৃত আয়াতসমূহ নম্বর ও সূরাসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
০৯. যথাসাধ্য হাদীছের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১০. সাধ্যানুযায়ী স্বহীহ বুখারী, স্বহীহ মুসলিম, সুনান আবূ দাউদ, সুনান তিরমিযি, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তা মালিক ও মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের হাদীসসমূহে মাকতাবাহ শামিলার নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
১১. বাংলাভাষী পাঠকদের সহজ পাঠের জন্য আরবী বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
১২. সর্বোপরি উন্নতমানের কাগজে মুদ্রণ, মজবুত ও আকর্ষণীয় বাইন্ডিং করা হয়েছে।প্রথম খণ্ডে সূরাহ আল ফাতিহাহ থেকে সূরাহ আত তাওবাহ্, দ্বিতীয় খণ্ডে সূরাহ ইউনুস থেকে সূরাহ আল ফাথির এবং তৃতীয় খণ্ডে সূরাহ ইয়াসীন থেকে সূরাহ আন নাসের তাফসীর রয়েছে।
2:1
الٓـمّٓ ۚ﴿۱﴾
সুরার নাম- বাকারা,(বকনা- \বাছুর)
মোট আয়াত- ২৮৬, সুরার ধরনঃ-
মাদানি।
2:234
وَ الَّذِیۡنَ
یُتَوَفَّوۡنَ مِنۡکُمۡ وَ یَذَرُوۡنَ اَزۡوَاجًا یَّتَرَبَّصۡنَ بِاَنۡفُسِہِنَّ
اَرۡبَعَۃَ اَشۡہُرٍ وَّ عَشۡرًا ۚ فَاِذَا بَلَغۡنَ اَجَلَہُنَّ فَلَا جُنَاحَ
عَلَیۡکُمۡ فِیۡمَا فَعَلۡنَ فِیۡۤ اَنۡفُسِہِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ وَ اللّٰہُ
بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۲۳۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৪ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে বিধবা নারীর ইদ্দত পালনের বিষয়ে কথা বলা হয়েছে।
একজন নারীর স্বামী মারা গেলে সে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করবে। এ চার মাস দশ দিন কোনরূপ সাজ-সজ্জা করা বা বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই। তবে বিধবা নারী যদি গর্ভবতী হয় তাহলে সে প্রসব পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ)
“গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব প্রর্যন্ত।”(সূরা তালাক ৬৫:৪)এ চার মাস দশ দিন পর সাজ-সজ্জা করলে ও বাড়ির বাইরে গেলে এবং শরীয়তসম্মত পন্থায় বিয়ে করলে কোন অপরাধ নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. বিধবা নারীর ইদ্দত চার মাস দশ দিন।
২. ইদ্দতকালীন সকল প্রকার সৌন্দর্য্য গ্রহণ ও বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ।
৩. ইদ্দত পালনকারিণী মহিলাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হারাম।
অত্র আয়াতে বিধবা নারীর ইদ্দত পালনের বিষয়ে কথা বলা হয়েছে।
একজন নারীর স্বামী মারা গেলে সে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করবে। এ চার মাস দশ দিন কোনরূপ সাজ-সজ্জা করা বা বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই। তবে বিধবা নারী যদি গর্ভবতী হয় তাহলে সে প্রসব পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ)
“গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব প্রর্যন্ত।”(সূরা তালাক ৬৫:৪)এ চার মাস দশ দিন পর সাজ-সজ্জা করলে ও বাড়ির বাইরে গেলে এবং শরীয়তসম্মত পন্থায় বিয়ে করলে কোন অপরাধ নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. বিধবা নারীর ইদ্দত চার মাস দশ দিন।
২. ইদ্দতকালীন সকল প্রকার সৌন্দর্য্য গ্রহণ ও বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ।
৩. ইদ্দত পালনকারিণী মহিলাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হারাম।
2:235
وَ لَا جُنَاحَ
عَلَیۡکُمۡ فِیۡمَا عَرَّضۡتُمۡ بِہٖ مِنۡ خِطۡبَۃِ النِّسَآءِ اَوۡ اَکۡنَنۡتُمۡ
فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ ؕ عَلِمَ اللّٰہُ اَنَّکُمۡ سَتَذۡکُرُوۡنَہُنَّ وَ لٰکِنۡ
لَّا تُوَاعِدُوۡہُنَّ سِرًّا اِلَّاۤ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا ۬ؕ
وَ لَا تَعۡزِمُوۡا عُقۡدَۃَ النِّکَاحِ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡکِتٰبُ اَجَلَہٗ ؕ وَ
اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا فِیۡۤ اَنۡفُسِکُمۡ فَاحۡذَرُوۡہُ ۚ وَ
اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ حَلِیۡمٌ ﴿۲۳۵﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৫ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতে বিধবা নারী বা তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীর বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এমন নারীদেরকে ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে বিবাহের পয়গাম দেয়া যাবে। যেমন এরূপ বলা যে, আমার বিয়ে করার প্রয়োজন, আমি একজন সৎ নারী খুঁজছি, তোমাকে আমার খুব ভাল লাগে ইত্যাদি। তবে তার নিকট থেকে গোপনে কোন অঙ্গীকার নেবে না এবং ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বিয়ে সম্পন্ন করবে না।
আর মহিলা যদি এক তালাক বা দু’তালাকপ্রাপ্তা হয় তাহলে তাকে ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে ইঙ্গিত দিয়ে বিয়ের পয়গাম দেয়া হারাম। কারণ এখনো সে প্রথম স্বামীর অধীনে আছে।
জেনে রাখুন! আল্লাহ তা‘আলা অন্তরের খবর জানেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَرَبُّكَ يَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُورُهُمْ وَمَا يُعْلِنُونَ)
“আর তোমার প্রতিপালক জানেন এদের অন্তর যা গোপন করে এবং এরা যা প্রকাশ করে।”(সূরা কাসাস ২৮:৬৯)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইদ্দত পালনকারিণীকে ইশারা ইঙ্গিতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া জায়েয।
২. ইদ্দত পালনকালীন বিবাহ সম্পন্ন করা হারাম।
৩. মানুষ মুখে প্রকাশ করুক আর না-ই করুক আল্লাহ তা‘আলা সব জানেন।
এ আয়াতে বিধবা নারী বা তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীর বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এমন নারীদেরকে ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে বিবাহের পয়গাম দেয়া যাবে। যেমন এরূপ বলা যে, আমার বিয়ে করার প্রয়োজন, আমি একজন সৎ নারী খুঁজছি, তোমাকে আমার খুব ভাল লাগে ইত্যাদি। তবে তার নিকট থেকে গোপনে কোন অঙ্গীকার নেবে না এবং ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বিয়ে সম্পন্ন করবে না।
আর মহিলা যদি এক তালাক বা দু’তালাকপ্রাপ্তা হয় তাহলে তাকে ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে ইঙ্গিত দিয়ে বিয়ের পয়গাম দেয়া হারাম। কারণ এখনো সে প্রথম স্বামীর অধীনে আছে।
জেনে রাখুন! আল্লাহ তা‘আলা অন্তরের খবর জানেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَرَبُّكَ يَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُورُهُمْ وَمَا يُعْلِنُونَ)
“আর তোমার প্রতিপালক জানেন এদের অন্তর যা গোপন করে এবং এরা যা প্রকাশ করে।”(সূরা কাসাস ২৮:৬৯)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইদ্দত পালনকারিণীকে ইশারা ইঙ্গিতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া জায়েয।
২. ইদ্দত পালনকালীন বিবাহ সম্পন্ন করা হারাম।
৩. মানুষ মুখে প্রকাশ করুক আর না-ই করুক আল্লাহ তা‘আলা সব জানেন।
2:236
لَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ
اِنۡ طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ مَا لَمۡ تَمَسُّوۡہُنَّ اَوۡ تَفۡرِضُوۡا لَہُنَّ
فَرِیۡضَۃً ۚۖ وَّ مَتِّعُوۡہُنَّ ۚ عَلَی الۡمُوۡسِعِ قَدَرُہٗ وَ عَلَی
الۡمُقۡتِرِ قَدَرُہٗ ۚ مَتَاعًۢا بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۚ حَقًّا عَلَی الۡمُحۡسِنِیۡنَ
﴿۲۳۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৬-২৩৭ নং আয়াতের তাফসীর:
দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দিলে তার কোন মোহর দিতে হবে না। শুধু কিছু খরচ দিলেই চলবে। এ খরচ প্রত্যেক স্বামী তার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রদান করবে।
সকল প্রকার তালাকপ্রাপ্তা নারীকে কি খরচ দিতে হবে? না শুধু যে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি এবং মোহরানাও ধার্য করা হয়নি তাকে দিতে হবে। এ বিষয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। ইবনু কাসীর (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে এ তিনটি মত উল্লেখ করেছেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)। সঠিক কথা হলো: কেবল সেসব স্ত্রীদের খরচ দিতে হবে, যাদের মোহরানা ধার্য করা হয়নি এবং দৈহিক সম্পর্কও হয়নি। তবে কতক আলেম সকল তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদেরকে খরচ দেয়া মুস্তাহাব বলেছেন।
পরের আয়াতে সেসব স্ত্রীদের কথা বলা হয়েছে যাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি কিন্তু মোহর ধার্য করা হয়েছে। এমতাবস্থায় তাদেরকে তালাক দিলে ধার্যকৃত মোহরের অর্ধেক দিতে হবে। যদি স্ত্রী মাফ করে দেয় তাহলে স্বামী দিতে বাধ্য নয়।
(بِیَدِھ۪ عُقْدَةُ النِّکَاحِ)
‘যার হাতে বিয়ের বন্ধন’দ্বারা স্বামী উদ্দেশ্য, না স্ত্রীর অভিভাবক উদ্দেশ্য- এ নিয়ে দু’টি মত পাওয়া যায়। তবে সঠিক কথা হলো স্বামী উদ্দেশ্য। কারণ বিবাহ বিচ্ছিন্ন করতে পারে একমাত্র স্বামী, স্ত্রীর অভিভাবকরা নয়। এ ছাড়াও স্ত্রীর অভিভাবকরা স্ত্রীর কোন সম্পদ কাউকে দান বা মাফ করে দেয়ার অধিকার রাখেনা।
তালাকপ্রাপ্তা মহিলা চার প্রকার:
১. যার মোহর নির্ধারিত, স্বামী তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও করেছে, তাকে ধার্যকৃত সম্পূর্ণ মোহর দিতে হবে।
২. যার মোহর নির্ধারিত হয়নি এবং তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও হয়নি তাহলে তাকে কেবল কিছু খরচ দিলেই হবে।
৩. যার মোহর নির্ধারিত, কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়নি তাহলে তাকে অর্ধেক মোহর দিতে হবে।
৪. যার মোহর নির্ধারিত করা হয়নি। কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে তার জন্য মোহর মিসাল দিতে হবে।আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দিলে তার কোন মোহর দিতে হবে না। শুধু কিছু খরচ দিলেই চলবে। এ খরচ প্রত্যেক স্বামী তার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রদান করবে।
সকল প্রকার তালাকপ্রাপ্তা নারীকে কি খরচ দিতে হবে? না শুধু যে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি এবং মোহরানাও ধার্য করা হয়নি তাকে দিতে হবে। এ বিষয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। ইবনু কাসীর (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে এ তিনটি মত উল্লেখ করেছেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)। সঠিক কথা হলো: কেবল সেসব স্ত্রীদের খরচ দিতে হবে, যাদের মোহরানা ধার্য করা হয়নি এবং দৈহিক সম্পর্কও হয়নি। তবে কতক আলেম সকল তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদেরকে খরচ দেয়া মুস্তাহাব বলেছেন।
পরের আয়াতে সেসব স্ত্রীদের কথা বলা হয়েছে যাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি কিন্তু মোহর ধার্য করা হয়েছে। এমতাবস্থায় তাদেরকে তালাক দিলে ধার্যকৃত মোহরের অর্ধেক দিতে হবে। যদি স্ত্রী মাফ করে দেয় তাহলে স্বামী দিতে বাধ্য নয়।
(بِیَدِھ۪ عُقْدَةُ النِّکَاحِ)
‘যার হাতে বিয়ের বন্ধন’দ্বারা স্বামী উদ্দেশ্য, না স্ত্রীর অভিভাবক উদ্দেশ্য- এ নিয়ে দু’টি মত পাওয়া যায়। তবে সঠিক কথা হলো স্বামী উদ্দেশ্য। কারণ বিবাহ বিচ্ছিন্ন করতে পারে একমাত্র স্বামী, স্ত্রীর অভিভাবকরা নয়। এ ছাড়াও স্ত্রীর অভিভাবকরা স্ত্রীর কোন সম্পদ কাউকে দান বা মাফ করে দেয়ার অধিকার রাখেনা।
তালাকপ্রাপ্তা মহিলা চার প্রকার:
১. যার মোহর নির্ধারিত, স্বামী তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও করেছে, তাকে ধার্যকৃত সম্পূর্ণ মোহর দিতে হবে।
২. যার মোহর নির্ধারিত হয়নি এবং তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও হয়নি তাহলে তাকে কেবল কিছু খরচ দিলেই হবে।
৩. যার মোহর নির্ধারিত, কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়নি তাহলে তাকে অর্ধেক মোহর দিতে হবে।
৪. যার মোহর নির্ধারিত করা হয়নি। কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে তার জন্য মোহর মিসাল দিতে হবে।আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তালাকপ্রাপ্তা চার প্রকার মহিলার
অবস্থা জানতে পারলাম।
২. মহিলা স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোহর মাফ করে দিতে পারে। কিন্তু জোর করে মাফ করে নেয়া যাবে না।
২. মহিলা স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোহর মাফ করে দিতে পারে। কিন্তু জোর করে মাফ করে নেয়া যাবে না।
2:237
وَ اِنۡ
طَلَّقۡتُمُوۡہُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡہُنَّ وَ قَدۡ فَرَضۡتُمۡ لَہُنَّ
فَرِیۡضَۃً فَنِصۡفُ مَا فَرَضۡتُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ یَّعۡفُوۡنَ اَوۡ یَعۡفُوَا
الَّذِیۡ بِیَدِہٖ عُقۡدَۃُ النِّکَاحِ ؕ وَ اَنۡ تَعۡفُوۡۤا اَقۡرَبُ لِلتَّقۡوٰی
ؕ وَ لَا تَنۡسَوُا الۡفَضۡلَ بَیۡنَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
بَصِیۡرٌ ﴿۲۳۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৬-২৩৭ নং আয়াতের তাফসীর:
দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দিলে তার কোন মোহর দিতে হবে না। শুধু কিছু খরচ দিলেই চলবে। এ খরচ প্রত্যেক স্বামী তার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রদান করবে।
সকল প্রকার তালাকপ্রাপ্তা নারীকে কি খরচ দিতে হবে? না শুধু যে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি এবং মোহরানাও ধার্য করা হয়নি তাকে দিতে হবে। এ বিষয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। ইবনু কাসীর (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে এ তিনটি মত উল্লেখ করেছেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)। সঠিক কথা হলো: কেবল সেসব স্ত্রীদের খরচ দিতে হবে, যাদের মোহরানা ধার্য করা হয়নি এবং দৈহিক সম্পর্কও হয়নি। তবে কতক আলেম সকল তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদেরকে খরচ দেয়া মুস্তাহাব বলেছেন।
পরের আয়াতে সেসব স্ত্রীদের কথা বলা হয়েছে যাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি কিন্তু মোহর ধার্য করা হয়েছে। এমতাবস্থায় তাদেরকে তালাক দিলে ধার্যকৃত মোহরের অর্ধেক দিতে হবে। যদি স্ত্রী মাফ করে দেয় তাহলে স্বামী দিতে বাধ্য নয়।
(بِیَدِھ۪ عُقْدَةُ النِّکَاحِ)
‘যার হাতে বিয়ের বন্ধন’দ্বারা স্বামী উদ্দেশ্য, না স্ত্রীর অভিভাবক উদ্দেশ্য- এ নিয়ে দু’টি মত পাওয়া যায়। তবে সঠিক কথা হলো স্বামী উদ্দেশ্য। কারণ বিবাহ বিচ্ছিন্ন করতে পারে একমাত্র স্বামী, স্ত্রীর অভিভাবকরা নয়। এ ছাড়াও স্ত্রীর অভিভাবকরা স্ত্রীর কোন সম্পদ কাউকে দান বা মাফ করে দেয়ার অধিকার রাখেনা।
তালাকপ্রাপ্তা মহিলা চার প্রকার:
১. যার মোহর নির্ধারিত, স্বামী তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও করেছে, তাকে ধার্যকৃত সম্পূর্ণ মোহর দিতে হবে।
২. যার মোহর নির্ধারিত হয়নি এবং তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও হয়নি তাহলে তাকে কেবল কিছু খরচ দিলেই হবে।
৩. যার মোহর নির্ধারিত, কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়নি তাহলে তাকে অর্ধেক মোহর দিতে হবে।
৪. যার মোহর নির্ধারিত করা হয়নি। কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে তার জন্য মোহর মিসাল দিতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তালাকপ্রাপ্তা চার প্রকার মহিলার অবস্থা জানতে পারলাম।
২. মহিলা স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোহর মাফ করে দিতে পারে। কিন্তু জোর করে মাফ করে নেয়া যাবে না।
দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। দৈহিক সম্পর্ক ও মোহরানা ধার্য করার পূর্বে স্ত্রীকে তালাক দিলে তার কোন মোহর দিতে হবে না। শুধু কিছু খরচ দিলেই চলবে। এ খরচ প্রত্যেক স্বামী তার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রদান করবে।
সকল প্রকার তালাকপ্রাপ্তা নারীকে কি খরচ দিতে হবে? না শুধু যে স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি এবং মোহরানাও ধার্য করা হয়নি তাকে দিতে হবে। এ বিষয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। ইবনু কাসীর (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে এ তিনটি মত উল্লেখ করেছেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)। সঠিক কথা হলো: কেবল সেসব স্ত্রীদের খরচ দিতে হবে, যাদের মোহরানা ধার্য করা হয়নি এবং দৈহিক সম্পর্কও হয়নি। তবে কতক আলেম সকল তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদেরকে খরচ দেয়া মুস্তাহাব বলেছেন।
পরের আয়াতে সেসব স্ত্রীদের কথা বলা হয়েছে যাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি কিন্তু মোহর ধার্য করা হয়েছে। এমতাবস্থায় তাদেরকে তালাক দিলে ধার্যকৃত মোহরের অর্ধেক দিতে হবে। যদি স্ত্রী মাফ করে দেয় তাহলে স্বামী দিতে বাধ্য নয়।
(بِیَدِھ۪ عُقْدَةُ النِّکَاحِ)
‘যার হাতে বিয়ের বন্ধন’দ্বারা স্বামী উদ্দেশ্য, না স্ত্রীর অভিভাবক উদ্দেশ্য- এ নিয়ে দু’টি মত পাওয়া যায়। তবে সঠিক কথা হলো স্বামী উদ্দেশ্য। কারণ বিবাহ বিচ্ছিন্ন করতে পারে একমাত্র স্বামী, স্ত্রীর অভিভাবকরা নয়। এ ছাড়াও স্ত্রীর অভিভাবকরা স্ত্রীর কোন সম্পদ কাউকে দান বা মাফ করে দেয়ার অধিকার রাখেনা।
তালাকপ্রাপ্তা মহিলা চার প্রকার:
১. যার মোহর নির্ধারিত, স্বামী তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও করেছে, তাকে ধার্যকৃত সম্পূর্ণ মোহর দিতে হবে।
২. যার মোহর নির্ধারিত হয়নি এবং তার সাথে দৈহিক সম্পর্কও হয়নি তাহলে তাকে কেবল কিছু খরচ দিলেই হবে।
৩. যার মোহর নির্ধারিত, কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়নি তাহলে তাকে অর্ধেক মোহর দিতে হবে।
৪. যার মোহর নির্ধারিত করা হয়নি। কিন্তু দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে তার জন্য মোহর মিসাল দিতে হবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. তালাকপ্রাপ্তা চার প্রকার মহিলার অবস্থা জানতে পারলাম।
২. মহিলা স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোহর মাফ করে দিতে পারে। কিন্তু জোর করে মাফ করে নেয়া যাবে না।
2:238
حٰفِظُوۡا عَلَی
الصَّلَوٰتِ وَ الصَّلٰوۃِ الۡوُسۡطٰی ٭ وَ قُوۡمُوۡا لِلّٰہِ قٰنِتِیۡنَ ﴿۲۳۸﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৮ ও ২৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:
তালাক ও সংশ্লিষ্ট বিধান সম্পর্কে আলোচনা করার পর এখানে সালাতের সংরক্ষণ ও তার প্রতি গুরুত্বারোপের আলোচনা করা হয়েছে।
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) হতে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিপ্রহরে যোহরের সালাত আদায় করতেন। যা তুলনামূলক সাহাবীদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক ছিল। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। এর পূর্বেও দু’টি সালাত রয়েছে, পরেও দু’টি সালাত রয়েছে। (আবূ দাঊদ হা: আসরের সলাতের সময় অধ্যায়, সহীহ)حَافِظُوْا ‘তোমরা সংরক্ষণ কর’এর অর্থ হল: যন্তসহকারে সালাতের রুকন, আরকান ও আহকাম অর্থাৎ বিধিবিধানসহ যথাসময়ে অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন্ আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন:
الصَّلَاةُ لِوَقْتِهَا، وَبِرُّ الوَالِدَيْنِ، ثُمَّ الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ
যথাযথ সময়ে সালাত আদায় করা, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা ও আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৭৫৩৪, সহীহ মুসলিম হা: ১৩৭)
তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে: প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা। (তিরমিযী হা: ১৭০, সহীহ)
(وَالصَّلٰوةِ الْوُسْطٰی)
‘মধ্যবর্তী সালাত’হল আসরের সালাত। যদিও এ ব্যাপারে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল এটাই।
যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الصَّلَاةُ الْوُسْطَي صَلَاةُ الْعَصْرِ
মধ্যবর্তী সালাত হল সালাতুল আসর। (তিরমিযী হা: ১৭৪৩, সহীহ)
(وَقُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِيْنَ)
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন আরকাম (রহঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা সালাতে একজন অন্য জনের সাথে কথা বলতাম। সালাতে আমাদের কেউ তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির সাথে কথা বলত, ফলে এ আয়াতাংশ অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১২০০, সহীহ মুসলিম হা: ৫৩৯)
তারপরের আয়াতে সালাতুল খাওফ বা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় সালাত আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে। ঐ অবস্থায় দাঁড়িয়ে, হাঁটতে হাঁটতে বা বাহনের ওপর আরোহণ করে যেভাবে সম্ভব সালাত আদায় করে নেবে। সূরা নিসার ১০২ নং আয়াতে এর বিস্তারিত বিবরণ আসবে ইনশাআল্লাহ।
আর যদি ভয়ের অবস্থা চলে যায় তাহলে যেভাবে সাধারণ নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে সালাত আদায় করবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতকে হিফাযত করা বিশেষ করে আসরের সালাত।
২. সালাতের মাঝে কথা বলা নিষেধ।
৩. ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়ও সালাত আদায় করতে হবে।
৪. মু’মিনরা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে, কখনো আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয় না।
তালাক ও সংশ্লিষ্ট বিধান সম্পর্কে আলোচনা করার পর এখানে সালাতের সংরক্ষণ ও তার প্রতি গুরুত্বারোপের আলোচনা করা হয়েছে।
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) হতে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিপ্রহরে যোহরের সালাত আদায় করতেন। যা তুলনামূলক সাহাবীদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক ছিল। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। এর পূর্বেও দু’টি সালাত রয়েছে, পরেও দু’টি সালাত রয়েছে। (আবূ দাঊদ হা: আসরের সলাতের সময় অধ্যায়, সহীহ)حَافِظُوْا ‘তোমরা সংরক্ষণ কর’এর অর্থ হল: যন্তসহকারে সালাতের রুকন, আরকান ও আহকাম অর্থাৎ বিধিবিধানসহ যথাসময়ে অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন্ আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন:
الصَّلَاةُ لِوَقْتِهَا، وَبِرُّ الوَالِدَيْنِ، ثُمَّ الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ
যথাযথ সময়ে সালাত আদায় করা, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা ও আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৭৫৩৪, সহীহ মুসলিম হা: ১৩৭)
তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে: প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা। (তিরমিযী হা: ১৭০, সহীহ)
(وَالصَّلٰوةِ الْوُسْطٰی)
‘মধ্যবর্তী সালাত’হল আসরের সালাত। যদিও এ ব্যাপারে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল এটাই।
যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
الصَّلَاةُ الْوُسْطَي صَلَاةُ الْعَصْرِ
মধ্যবর্তী সালাত হল সালাতুল আসর। (তিরমিযী হা: ১৭৪৩, সহীহ)
(وَقُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِيْنَ)
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন আরকাম (রহঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা সালাতে একজন অন্য জনের সাথে কথা বলতাম। সালাতে আমাদের কেউ তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির সাথে কথা বলত, ফলে এ আয়াতাংশ অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১২০০, সহীহ মুসলিম হা: ৫৩৯)
তারপরের আয়াতে সালাতুল খাওফ বা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় সালাত আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে। ঐ অবস্থায় দাঁড়িয়ে, হাঁটতে হাঁটতে বা বাহনের ওপর আরোহণ করে যেভাবে সম্ভব সালাত আদায় করে নেবে। সূরা নিসার ১০২ নং আয়াতে এর বিস্তারিত বিবরণ আসবে ইনশাআল্লাহ।
আর যদি ভয়ের অবস্থা চলে যায় তাহলে যেভাবে সাধারণ নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে সালাত আদায় করবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতকে হিফাযত করা বিশেষ করে আসরের সালাত।
২. সালাতের মাঝে কথা বলা নিষেধ।
৩. ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়ও সালাত আদায় করতে হবে।
৪. মু’মিনরা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে, কখনো আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয় না।
2:239
فَاِنۡ خِفۡتُمۡ
فَرِجَالًا اَوۡ رُکۡبَانًا ۚ فَاِذَاۤ اَمِنۡتُمۡ فَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَمَا
عَلَّمَکُمۡ مَّا لَمۡ تَکُوۡنُوۡا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۳۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৩৮ ও ২৩৯ নং আয়াতের তাফসীর:
তালাক ও সংশ্লিষ্ট বিধান সম্পর্কে আলোচনা করার পর এখানে সালাতের সংরক্ষণ ও তার প্রতি গুরুত্বারোপের আলোচনা করা হয়েছে।
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) হতে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিপ্রহরে যোহরের সালাত আদায় করতেন। যা তুলনামূলক সাহাবীদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক ছিল। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। এর পূর্বেও দু’টি সালাত রয়েছে, পরেও দু’টি সালাত রয়েছে। (আবূ দাঊদ হা: আসরের সলাতের সময় অধ্যায়, সহীহ)حَافِظُوْا ‘তোমরা সংরক্ষণ কর’এর অর্থ হল: যন্তসহকারে সালাতের রুকন, আরকান ও আহকাম অর্থাৎ বিধিবিধানসহ যথাসময়ে অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন্ আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন:الصَّلَاةُ لِوَقْتِهَا، وَبِرُّ الوَالِدَيْنِ، ثُمَّ الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ
যথাযথ সময়ে সালাত আদায় করা, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা ও আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৭৫৩৪, সহীহ মুসলিম হা: ১৩৭)
তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে: প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা। (তিরমিযী হা: ১৭০, সহীহ)
(وَالصَّلٰوةِ الْوُسْطٰی)
‘মধ্যবর্তী সালাত’হল আসরের সালাত। যদিও এ ব্যাপারে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল এটাই।
যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:الصَّلَاةُ الْوُسْطَي صَلَاةُ الْعَصْرِ
মধ্যবর্তী সালাত হল সালাতুল আসর। (তিরমিযী হা: ১৭৪৩, সহীহ)
(وَقُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِيْنَ)
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন আরকাম (রহঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা সালাতে একজন অন্য জনের সাথে কথা বলতাম। সালাতে আমাদের কেউ তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির সাথে কথা বলত, ফলে এ আয়াতাংশ অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১২০০, সহীহ মুসলিম হা: ৫৩৯)
তারপরের আয়াতে সালাতুল খাওফ বা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় সালাত আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে। ঐ অবস্থায় দাঁড়িয়ে, হাঁটতে হাঁটতে বা বাহনের ওপর আরোহণ করে যেভাবে সম্ভব সালাত আদায় করে নেবে। সূরা নিসার ১০২ নং আয়াতে এর বিস্তারিত বিবরণ আসবে ইনশাআল্লাহ।
আর যদি ভয়ের অবস্থা চলে যায় তাহলে যেভাবে সাধারণ নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে সালাত আদায় করবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতকে হিফাযত করা বিশেষ করে আসরের সালাত।
২. সালাতের মাঝে কথা বলা নিষেধ।
৩. ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়ও সালাত আদায় করতে হবে।
৪. মু’মিনরা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে, কখনো আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয় না।
তালাক ও সংশ্লিষ্ট বিধান সম্পর্কে আলোচনা করার পর এখানে সালাতের সংরক্ষণ ও তার প্রতি গুরুত্বারোপের আলোচনা করা হয়েছে।
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন সাবেত (রাঃ) হতে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিপ্রহরে যোহরের সালাত আদায় করতেন। যা তুলনামূলক সাহাবীদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক ছিল। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। এর পূর্বেও দু’টি সালাত রয়েছে, পরেও দু’টি সালাত রয়েছে। (আবূ দাঊদ হা: আসরের সলাতের সময় অধ্যায়, সহীহ)حَافِظُوْا ‘তোমরা সংরক্ষণ কর’এর অর্থ হল: যন্তসহকারে সালাতের রুকন, আরকান ও আহকাম অর্থাৎ বিধিবিধানসহ যথাসময়ে অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন্ আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন:الصَّلَاةُ لِوَقْتِهَا، وَبِرُّ الوَالِدَيْنِ، ثُمَّ الجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللّٰهِ
যথাযথ সময়ে সালাত আদায় করা, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা ও আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী হা: ৭৫৩৪, সহীহ মুসলিম হা: ১৩৭)
তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে: প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায় করা। (তিরমিযী হা: ১৭০, সহীহ)
(وَالصَّلٰوةِ الْوُسْطٰی)
‘মধ্যবর্তী সালাত’হল আসরের সালাত। যদিও এ ব্যাপারে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়, তবে সঠিক কথা হল এটাই।
যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:الصَّلَاةُ الْوُسْطَي صَلَاةُ الْعَصْرِ
মধ্যবর্তী সালাত হল সালাতুল আসর। (তিরমিযী হা: ১৭৪৩, সহীহ)
(وَقُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِيْنَ)
শানে নুযূল:
জায়েদ বিন আরকাম (রহঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা সালাতে একজন অন্য জনের সাথে কথা বলতাম। সালাতে আমাদের কেউ তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির সাথে কথা বলত, ফলে এ আয়াতাংশ অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ১২০০, সহীহ মুসলিম হা: ৫৩৯)
তারপরের আয়াতে সালাতুল খাওফ বা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় সালাত আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে। ঐ অবস্থায় দাঁড়িয়ে, হাঁটতে হাঁটতে বা বাহনের ওপর আরোহণ করে যেভাবে সম্ভব সালাত আদায় করে নেবে। সূরা নিসার ১০২ নং আয়াতে এর বিস্তারিত বিবরণ আসবে ইনশাআল্লাহ।
আর যদি ভয়ের অবস্থা চলে যায় তাহলে যেভাবে সাধারণ নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে সালাত আদায় করবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সালাতকে হিফাযত করা বিশেষ করে আসরের সালাত।
২. সালাতের মাঝে কথা বলা নিষেধ।
৩. ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়ও সালাত আদায় করতে হবে।
৪. মু’মিনরা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করে, কখনো আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ থেকে গাফেল হয় না।
2:240
وَ الَّذِیۡنَ
یُتَوَفَّوۡنَ مِنۡکُمۡ وَ یَذَرُوۡنَ اَزۡوَاجًا ۚۖ وَّصِیَّۃً لِّاَزۡوَاجِہِمۡ
مَّتَاعًا اِلَی الۡحَوۡلِ غَیۡرَ اِخۡرَاجٍ ۚ فَاِنۡ خَرَجۡنَ فَلَا جُنَاحَ
عَلَیۡکُمۡ فِیۡ مَا فَعَلۡنَ فِیۡۤ اَنۡفُسِہِنَّ مِنۡ مَّعۡرُوۡفٍ ؕ وَ اللّٰہُ
عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ ﴿۲۴۰﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪০-২৪২ নং আয়াতের
তাফসীর:
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায়”২৪০ নং আয়াত
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে স্ত্রী রেখে যারা মারা যায়”২৩৪ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
ইবনু আবি মুলাইকাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবাইর (রাঃ) বললেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সূরা বাকারার এ আয়াতটি তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র! আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমায়দ (রহঃ) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৩৬, ৪৫৩০)
২৪১ নং আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সকল তালাকপ্রাপ্তা নারীকে খরচ দিতে হবে।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। সঠিক হল যার জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করা হয়নি এবং যার সাথে সহবাসও করা হয়নি, কেবল তাকে খরচ দিতে হবে। কেননা অন্যান্যদের জন্য তো পূর্ণ/অর্ধেক মোহর আছেই। (আযওয়াউল বায়ান, ১/১৭৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা আয়াত রহিত ও কার্যকরসহ সবকিছু করার অধিকার রাখেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে।
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায়”২৪০ নং আয়াত
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে স্ত্রী রেখে যারা মারা যায়”২৩৪ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
ইবনু আবি মুলাইকাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবাইর (রাঃ) বললেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সূরা বাকারার এ আয়াতটি তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র! আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমায়দ (রহঃ) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৩৬, ৪৫৩০)
২৪১ নং আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সকল তালাকপ্রাপ্তা নারীকে খরচ দিতে হবে।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। সঠিক হল যার জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করা হয়নি এবং যার সাথে সহবাসও করা হয়নি, কেবল তাকে খরচ দিতে হবে। কেননা অন্যান্যদের জন্য তো পূর্ণ/অর্ধেক মোহর আছেই। (আযওয়াউল বায়ান, ১/১৭৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা আয়াত রহিত ও কার্যকরসহ সবকিছু করার অধিকার রাখেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে।
2:241
وَ لِلۡمُطَلَّقٰتِ
مَتَاعٌۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ؕ حَقًّا عَلَی الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۲۴۱﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪০-২৪২ নং আয়াতের
তাফসীর:
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায়”২৪০ নং আয়াত
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে স্ত্রী রেখে যারা মারা যায়”২৩৪ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
ইবনু আবি মুলাইকাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবাইর (রাঃ) বললেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সূরা বাকারার এ আয়াতটি তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র! আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমায়দ (রহঃ) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৩৬, ৪৫৩০)
২৪১ নং আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সকল তালাকপ্রাপ্তা নারীকে খরচ দিতে হবে।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। সঠিক হল যার জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করা হয়নি এবং যার সাথে সহবাসও করা হয়নি, কেবল তাকে খরচ দিতে হবে। কেননা অন্যান্যদের জন্য তো পূর্ণ/অর্ধেক মোহর আছেই। (আযওয়াউল বায়ান, ১/১৭৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা আয়াত রহিত ও কার্যকরসহ সবকিছু করার অধিকার রাখেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে।
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায়”২৪০ নং আয়াত
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে স্ত্রী রেখে যারা মারা যায়”২৩৪ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
ইবনু আবি মুলাইকাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবাইর (রাঃ) বললেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সূরা বাকারার এ আয়াতটি তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র! আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমায়দ (রহঃ) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৩৬, ৪৫৩০)
২৪১ নং আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সকল তালাকপ্রাপ্তা নারীকে খরচ দিতে হবে।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। সঠিক হল যার জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করা হয়নি এবং যার সাথে সহবাসও করা হয়নি, কেবল তাকে খরচ দিতে হবে। কেননা অন্যান্যদের জন্য তো পূর্ণ/অর্ধেক মোহর আছেই। (আযওয়াউল বায়ান, ১/১৭৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা আয়াত রহিত ও কার্যকরসহ সবকিছু করার অধিকার রাখেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে।
2:242
کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ
اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۲۴۲﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪০-২৪২ নং আয়াতের
তাফসীর:
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায়”২৪০ নং আয়াত
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে স্ত্রী রেখে যারা মারা যায়”২৩৪ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
ইবনু আবি মুলাইকাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবাইর (রাঃ) বললেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সূরা বাকারার এ আয়াতটি তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র! আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমায়দ (রহঃ) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৩৬, ৪৫৩০)
২৪১ নং আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সকল তালাকপ্রাপ্তা নারীকে খরচ দিতে হবে।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। সঠিক হল যার জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করা হয়নি এবং যার সাথে সহবাসও করা হয়নি, কেবল তাকে খরচ দিতে হবে। কেননা অন্যান্যদের জন্য তো পূর্ণ/অর্ধেক মোহর আছেই। (আযওয়াউল বায়ান, ১/১৭৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা আয়াত রহিত ও কার্যকরসহ সবকিছু করার অধিকার রাখেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে।
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যবরণ করে এবং স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায়”২৪০ নং আয়াত
(وَالَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُوْنَ أَزْوَاجًا)
“আর তোমাদের মধ্যে স্ত্রী রেখে যারা মারা যায়”২৩৪ নং আয়াত দ্বারা মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
ইবনু আবি মুলাইকাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবাইর (রাঃ) বললেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সূরা বাকারার এ আয়াতটি তো অন্য একটি আয়াত রহিত করে দিয়েছে। তারপরও আপনি তা কেন লিখছেন? জবাবে উসমান (রাঃ) বললেন, ভ্রাতুষ্পুত্র! আমরা তা যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। আপন স্থান থেকে কোন কিছুই আমরা সরিয়ে ফেলিনি। হুমায়দ (রহঃ) বললেন, অথবা প্রায় এ রকমই উত্তর দিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৫৩৬, ৪৫৩০)
২৪১ নং আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে সকল তালাকপ্রাপ্তা নারীকে খরচ দিতে হবে।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। সঠিক হল যার জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করা হয়নি এবং যার সাথে সহবাসও করা হয়নি, কেবল তাকে খরচ দিতে হবে। কেননা অন্যান্যদের জন্য তো পূর্ণ/অর্ধেক মোহর আছেই। (আযওয়াউল বায়ান, ১/১৭৭)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা আয়াত রহিত ও কার্যকরসহ সবকিছু করার অধিকার রাখেন।
২. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে।
2:243
اَلَمۡ تَرَ اِلَی
الَّذِیۡنَ خَرَجُوۡا مِنۡ دِیَارِہِمۡ وَ ہُمۡ اُلُوۡفٌ حَذَرَ الۡمَوۡتِ ۪
فَقَالَ لَہُمُ اللّٰہُ مُوۡتُوۡا ۟ ثُمَّ اَحۡیَاہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَذُوۡ
فَضۡلٍ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۲۴۳﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৩-২৪৫ নং আয়াতের
তাফসীর:
২৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত ঘটনা বানী ইসরাঈলের কোন এক জাতির সাথে সম্পৃক্ত। সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসেনি। তারা তাদের বাড়ি থেকে মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করে দিলেন। পরে নাবী হিযক্বীল (আঃ)-এর দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জীবিত করেন। এরা জিহাদে নিহত হওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে প্রথমতঃ এ কথা জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পলায়ন করে তোমরা কোথাও যেতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ এ কথাও জানিয়ে দিলেন যে, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তৃতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় সৃষ্টি করার ওপর ক্ষমতাবান। তিনি সমস্ত মানুষকে সেভাবে জীবিত করবেন যেমন তাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন।
তাই মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা বা পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ মৃত্যু যার যেখানে রয়েছে সেখানেই হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ)
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” (সূরা নিসা ৪:৭৮)
(قَرْضًا حَسَنًا)
‘উত্তম ঋণ’প্রদান করার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ জানের সাথে মাল কুরবানী দিতেও দ্বিধাবোধ কর না।
যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাদের সম্পদ আল্লাহ তা‘আলা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَھُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ کَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۭبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ کُلِّ سُنْۭبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍﺚ وَاللہُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَا۬ئُﺚ وَاللہُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ)
“যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানা যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা থাকে আর আল্লাহ যাকে চান তাকে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী, মহাজ্ঞানী।”(সূরা বাকারাহ ২:২৬১)
এটি মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন যার ফলে তিনি ঋণ চাচ্ছেন। আসলে বিষয়টি এমন নয়। আল্লাহ তা‘আলার কোন ঋণের প্রয়োজন নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ بَاقٍ)
“তোমাদের নিকট যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী।”(সূরা নাহল ১৬:৯৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ)
“আল্লাহ হলেন ধনী (অমুখাপেক্ষী) আর তোমরা হচ্ছ অভাবগ্রস্ত (মুখাপেক্ষী)।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাকে করযে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অসহায় ব্যক্তিদের করযে হাসানা বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া।
আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন আবার যাকে ইচ্ছা রিযিক কমিয়ে দেন। এতে কারো হাত নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন শহর বা এলাকায় মহামারি দেখা দিলে সে এলাকা থেকে বের হওয়া নিষেধ। অনুরূপভাবে বাইরের এলাকা থেকে প্রবেশ করাও নিষেধ।
২. মুসলিম নেতা যখন জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানাবে তখন সকলের জন্য জিহাদ করা ওয়াজিব।
৩. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলাত।
২৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত ঘটনা বানী ইসরাঈলের কোন এক জাতির সাথে সম্পৃক্ত। সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসেনি। তারা তাদের বাড়ি থেকে মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করে দিলেন। পরে নাবী হিযক্বীল (আঃ)-এর দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জীবিত করেন। এরা জিহাদে নিহত হওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে প্রথমতঃ এ কথা জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পলায়ন করে তোমরা কোথাও যেতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ এ কথাও জানিয়ে দিলেন যে, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তৃতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় সৃষ্টি করার ওপর ক্ষমতাবান। তিনি সমস্ত মানুষকে সেভাবে জীবিত করবেন যেমন তাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন।
তাই মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা বা পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ মৃত্যু যার যেখানে রয়েছে সেখানেই হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ)
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” (সূরা নিসা ৪:৭৮)
(قَرْضًا حَسَنًا)
‘উত্তম ঋণ’প্রদান করার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ জানের সাথে মাল কুরবানী দিতেও দ্বিধাবোধ কর না।
যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাদের সম্পদ আল্লাহ তা‘আলা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَھُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ کَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۭبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ کُلِّ سُنْۭبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍﺚ وَاللہُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَا۬ئُﺚ وَاللہُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ)
“যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানা যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা থাকে আর আল্লাহ যাকে চান তাকে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী, মহাজ্ঞানী।”(সূরা বাকারাহ ২:২৬১)
এটি মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন যার ফলে তিনি ঋণ চাচ্ছেন। আসলে বিষয়টি এমন নয়। আল্লাহ তা‘আলার কোন ঋণের প্রয়োজন নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ بَاقٍ)
“তোমাদের নিকট যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী।”(সূরা নাহল ১৬:৯৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ)
“আল্লাহ হলেন ধনী (অমুখাপেক্ষী) আর তোমরা হচ্ছ অভাবগ্রস্ত (মুখাপেক্ষী)।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাকে করযে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অসহায় ব্যক্তিদের করযে হাসানা বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া।
আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন আবার যাকে ইচ্ছা রিযিক কমিয়ে দেন। এতে কারো হাত নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন শহর বা এলাকায় মহামারি দেখা দিলে সে এলাকা থেকে বের হওয়া নিষেধ। অনুরূপভাবে বাইরের এলাকা থেকে প্রবেশ করাও নিষেধ।
২. মুসলিম নেতা যখন জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানাবে তখন সকলের জন্য জিহাদ করা ওয়াজিব।
৩. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলাত।
2:244
وَ قَاتِلُوۡا فِیۡ
سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۴۴﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৩-২৪৫ নং আয়াতের
তাফসীর:
২৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত ঘটনা বানী ইসরাঈলের কোন এক জাতির সাথে সম্পৃক্ত। সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসেনি। তারা তাদের বাড়ি থেকে মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করে দিলেন। পরে নাবী হিযক্বীল (আঃ)-এর দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জীবিত করেন। এরা জিহাদে নিহত হওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে প্রথমতঃ এ কথা জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পলায়ন করে তোমরা কোথাও যেতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ এ কথাও জানিয়ে দিলেন যে, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তৃতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় সৃষ্টি করার ওপর ক্ষমতাবান। তিনি সমস্ত মানুষকে সেভাবে জীবিত করবেন যেমন তাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন।
তাই মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা বা পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ মৃত্যু যার যেখানে রয়েছে সেখানেই হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ)
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” (সূরা নিসা ৪:৭৮)
(قَرْضًا حَسَنًا)
‘উত্তম ঋণ’প্রদান করার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ জানের সাথে মাল কুরবানী দিতেও দ্বিধাবোধ কর না।
যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাদের সম্পদ আল্লাহ তা‘আলা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَھُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ کَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۭبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ کُلِّ سُنْۭبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍﺚ وَاللہُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَا۬ئُﺚ وَاللہُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ)
“যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানা যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা থাকে আর আল্লাহ যাকে চান তাকে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী, মহাজ্ঞানী।”(সূরা বাকারাহ ২:২৬১)
এটি মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন যার ফলে তিনি ঋণ চাচ্ছেন। আসলে বিষয়টি এমন নয়। আল্লাহ তা‘আলার কোন ঋণের প্রয়োজন নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ بَاقٍ)
“তোমাদের নিকট যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী।”(সূরা নাহল ১৬:৯৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ)
“আল্লাহ হলেন ধনী (অমুখাপেক্ষী) আর তোমরা হচ্ছ অভাবগ্রস্ত (মুখাপেক্ষী)।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাকে করযে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অসহায় ব্যক্তিদের করযে হাসানা বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া।
আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন আবার যাকে ইচ্ছা রিযিক কমিয়ে দেন। এতে কারো হাত নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন শহর বা এলাকায় মহামারি দেখা দিলে সে এলাকা থেকে বের হওয়া নিষেধ। অনুরূপভাবে বাইরের এলাকা থেকে প্রবেশ করাও নিষেধ।
২. মুসলিম নেতা যখন জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানাবে তখন সকলের জন্য জিহাদ করা ওয়াজিব।
৩. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলাত।
২৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত ঘটনা বানী ইসরাঈলের কোন এক জাতির সাথে সম্পৃক্ত। সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসেনি। তারা তাদের বাড়ি থেকে মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করে দিলেন। পরে নাবী হিযক্বীল (আঃ)-এর দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জীবিত করেন। এরা জিহাদে নিহত হওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে প্রথমতঃ এ কথা জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পলায়ন করে তোমরা কোথাও যেতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ এ কথাও জানিয়ে দিলেন যে, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তৃতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় সৃষ্টি করার ওপর ক্ষমতাবান। তিনি সমস্ত মানুষকে সেভাবে জীবিত করবেন যেমন তাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন।
তাই মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা বা পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ মৃত্যু যার যেখানে রয়েছে সেখানেই হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ)
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” (সূরা নিসা ৪:৭৮)
(قَرْضًا حَسَنًا)
‘উত্তম ঋণ’প্রদান করার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ জানের সাথে মাল কুরবানী দিতেও দ্বিধাবোধ কর না।
যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাদের সম্পদ আল্লাহ তা‘আলা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَھُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ کَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۭبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ کُلِّ سُنْۭبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍﺚ وَاللہُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَا۬ئُﺚ وَاللہُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ)
“যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানা যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা থাকে আর আল্লাহ যাকে চান তাকে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী, মহাজ্ঞানী।”(সূরা বাকারাহ ২:২৬১)
এটি মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন যার ফলে তিনি ঋণ চাচ্ছেন। আসলে বিষয়টি এমন নয়। আল্লাহ তা‘আলার কোন ঋণের প্রয়োজন নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ بَاقٍ)
“তোমাদের নিকট যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী।”(সূরা নাহল ১৬:৯৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ)
“আল্লাহ হলেন ধনী (অমুখাপেক্ষী) আর তোমরা হচ্ছ অভাবগ্রস্ত (মুখাপেক্ষী)।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাকে করযে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অসহায় ব্যক্তিদের করযে হাসানা বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া।
আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন আবার যাকে ইচ্ছা রিযিক কমিয়ে দেন। এতে কারো হাত নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন শহর বা এলাকায় মহামারি দেখা দিলে সে এলাকা থেকে বের হওয়া নিষেধ। অনুরূপভাবে বাইরের এলাকা থেকে প্রবেশ করাও নিষেধ।
২. মুসলিম নেতা যখন জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানাবে তখন সকলের জন্য জিহাদ করা ওয়াজিব।
৩. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলাত।
2:245
مَنۡ ذَا الَّذِیۡ
یُقۡرِضُ اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا فَیُضٰعِفَہٗ لَہٗۤ اَضۡعَافًا کَثِیۡرَۃً ؕ وَ
اللّٰہُ یَقۡبِضُ وَ یَبۡصُۜطُ ۪ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۲۴۵﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৩-২৪৫ নং আয়াতের
তাফসীর:
২৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত ঘটনা বানী ইসরাঈলের কোন এক জাতির সাথে সম্পৃক্ত। সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসেনি। তারা তাদের বাড়ি থেকে মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করে দিলেন। পরে নাবী হিযক্বীল (আঃ)-এর দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জীবিত করেন। এরা জিহাদে নিহত হওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে প্রথমতঃ এ কথা জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পলায়ন করে তোমরা কোথাও যেতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ এ কথাও জানিয়ে দিলেন যে, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তৃতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় সৃষ্টি করার ওপর ক্ষমতাবান। তিনি সমস্ত মানুষকে সেভাবে জীবিত করবেন যেমন তাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন।
তাই মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা বা পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ মৃত্যু যার যেখানে রয়েছে সেখানেই হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ)
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” (সূরা নিসা ৪:৭৮)
(قَرْضًا حَسَنًا)
‘উত্তম ঋণ’প্রদান করার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ জানের সাথে মাল কুরবানী দিতেও দ্বিধাবোধ কর না।
যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাদের সম্পদ আল্লাহ তা‘আলা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَھُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ کَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۭبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ کُلِّ سُنْۭبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍﺚ وَاللہُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَا۬ئُﺚ وَاللہُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ)
“যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানা যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা থাকে আর আল্লাহ যাকে চান তাকে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী, মহাজ্ঞানী।”(সূরা বাকারাহ ২:২৬১)
এটি মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন যার ফলে তিনি ঋণ চাচ্ছেন। আসলে বিষয়টি এমন নয়। আল্লাহ তা‘আলার কোন ঋণের প্রয়োজন নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ بَاقٍ)
“তোমাদের নিকট যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী।”(সূরা নাহল ১৬:৯৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ)
“আল্লাহ হলেন ধনী (অমুখাপেক্ষী) আর তোমরা হচ্ছ অভাবগ্রস্ত (মুখাপেক্ষী)।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাকে করযে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অসহায় ব্যক্তিদের করযে হাসানা বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া।
আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন আবার যাকে ইচ্ছা রিযিক কমিয়ে দেন। এতে কারো হাত নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন শহর বা এলাকায় মহামারি দেখা দিলে সে এলাকা থেকে বের হওয়া নিষেধ। অনুরূপভাবে বাইরের এলাকা থেকে প্রবেশ করাও নিষেধ।
২. মুসলিম নেতা যখন জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানাবে তখন সকলের জন্য জিহাদ করা ওয়াজিব।
৩. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলাত।
২৪৩ নং আয়াতে বর্ণিত ঘটনা বানী ইসরাঈলের কোন এক জাতির সাথে সম্পৃক্ত। সহীহ হাদীসে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসেনি। তারা তাদের বাড়ি থেকে মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পালিয়েও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পায়নি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহামারি দ্বারা ধ্বংস করে দিলেন। পরে নাবী হিযক্বীল (আঃ)-এর দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলা সকলকে জীবিত করেন। এরা জিহাদে নিহত হওয়ার ভয়ে অথবা মহামারী রোগের ভয়ে নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিল; যাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে প্রথমতঃ এ কথা জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নির্ধারিত মৃত্যু থেকে পলায়ন করে তোমরা কোথাও যেতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ এ কথাও জানিয়ে দিলেন যে, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তৃতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় সৃষ্টি করার ওপর ক্ষমতাবান। তিনি সমস্ত মানুষকে সেভাবে জীবিত করবেন যেমন তাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন।
তাই মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা বা পলায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ মৃত্যু যার যেখানে রয়েছে সেখানেই হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ)
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।” (সূরা নিসা ৪:৭৮)
(قَرْضًا حَسَنًا)
‘উত্তম ঋণ’প্রদান করার অর্থ: আল্লাহ তা‘আলার পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ জানের সাথে মাল কুরবানী দিতেও দ্বিধাবোধ কর না।
যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তাদের সম্পদ আল্লাহ তা‘আলা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَھُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللہِ کَمَثَلِ حَبَّةٍ اَنْۭبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ کُلِّ سُنْۭبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍﺚ وَاللہُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَا۬ئُﺚ وَاللہُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ)
“যারা আল্লাহর পথে তাদের মাল খরচ করে তাদের উদাহরণ হচ্ছে একটি শস্যদানা যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা থাকে আর আল্লাহ যাকে চান তাকে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ প্রশস্তকারী, মহাজ্ঞানী।”(সূরা বাকারাহ ২:২৬১)
এটি মনে করা যাবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন যার ফলে তিনি ঋণ চাচ্ছেন। আসলে বিষয়টি এমন নয়। আল্লাহ তা‘আলার কোন ঋণের প্রয়োজন নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ بَاقٍ)
“তোমাদের নিকট যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী।”(সূরা নাহল ১৬:৯৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاللّٰهُ الْغَنِيُّ وَأَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ)
“আল্লাহ হলেন ধনী (অমুখাপেক্ষী) আর তোমরা হচ্ছ অভাবগ্রস্ত (মুখাপেক্ষী)।”(সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৮)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাকে করযে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অসহায় ব্যক্তিদের করযে হাসানা বা সাহায্য-সহযোগিতা দেয়া।
আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করে দেন আবার যাকে ইচ্ছা রিযিক কমিয়ে দেন। এতে কারো হাত নেই।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কোন শহর বা এলাকায় মহামারি দেখা দিলে সে এলাকা থেকে বের হওয়া নিষেধ। অনুরূপভাবে বাইরের এলাকা থেকে প্রবেশ করাও নিষেধ।
২. মুসলিম নেতা যখন জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানাবে তখন সকলের জন্য জিহাদ করা ওয়াজিব।
৩. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলাত।
2:246
اَلَمۡ تَرَ اِلَی
الۡمَلَاِ مِنۡۢ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مُوۡسٰی ۘ اِذۡ قَالُوۡا
لِنَبِیٍّ لَّہُمُ ابۡعَثۡ لَنَا مَلِکًا نُّقَاتِلۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ قَالَ
ہَلۡ عَسَیۡتُمۡ اِنۡ کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الۡقِتَالُ اَلَّا تُقَاتِلُوۡا ؕ
قَالُوۡا وَ مَا لَنَاۤ اَلَّا نُقَاتِلَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ قَدۡ
اُخۡرِجۡنَا مِنۡ دِیَارِنَا وَ اَبۡنَآئِنَا ؕ فَلَمَّا کُتِبَ عَلَیۡہِمُ
الۡقِتَالُ تَوَلَّوۡا اِلَّا قَلِیۡلًا مِّنۡہُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ
بِالظّٰلِمِیۡنَ ﴿۲۴۶﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৬-২৫২ নং আয়াতের
তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
2:247
وَ قَالَ لَہُمۡ
نَبِیُّہُمۡ اِنَّ اللّٰہَ قَدۡ بَعَثَ لَکُمۡ طَالُوۡتَ مَلِکًا ؕ قَالُوۡۤا
اَنّٰی یَکُوۡنُ لَہُ الۡمُلۡکُ عَلَیۡنَا وَ نَحۡنُ اَحَقُّ بِالۡمُلۡکِ مِنۡہُ
وَ لَمۡ یُؤۡتَ سَعَۃً مِّنَ الۡمَالِ ؕ قَالَ اِنَّ اللّٰہَ اصۡطَفٰىہُ
عَلَیۡکُمۡ وَ زَادَہٗ بَسۡطَۃً فِی الۡعِلۡمِ وَ الۡجِسۡمِ ؕ وَ اللّٰہُ یُؤۡتِیۡ
مُلۡکَہٗ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۴۷﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৬-২৫২ নং আয়াতের
তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
2:248
وَ قَالَ لَہُمۡ
نَبِیُّہُمۡ اِنَّ اٰیَۃَ مُلۡکِہٖۤ اَنۡ یَّاۡتِیَکُمُ التَّابُوۡتُ فِیۡہِ
سَکِیۡنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ بَقِیَّۃٌ مِّمَّا تَرَکَ اٰلُ مُوۡسٰی وَ اٰلُ
ہٰرُوۡنَ تَحۡمِلُہُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لَّکُمۡ اِنۡ
کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲۴۸﴾٪
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৬-২৫২ নং আয়াতের
তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
2:249
فَلَمَّا فَصَلَ
طَالُوۡتُ بِالۡجُنُوۡدِ ۙ قَالَ اِنَّ اللّٰہَ مُبۡتَلِیۡکُمۡ بِنَہَرٍ ۚ فَمَنۡ
شَرِبَ مِنۡہُ فَلَیۡسَ مِنِّیۡ ۚ وَ مَنۡ لَّمۡ یَطۡعَمۡہُ فَاِنَّہٗ مِنِّیۡۤ
اِلَّا مَنِ اغۡتَرَفَ غُرۡفَۃًۢ بِیَدِہٖ ۚ فَشَرِبُوۡا مِنۡہُ اِلَّا قَلِیۡلًا
مِّنۡہُمۡ ؕ فَلَمَّا جَاوَزَہٗ ہُوَ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ ۙ قَالُوۡا
لَا طَاقَۃَ لَنَا الۡیَوۡمَ بِجَالُوۡتَ وَ جُنُوۡدِہٖ ؕ قَالَ الَّذِیۡنَ
یَظُنُّوۡنَ اَنَّہُمۡ مُّلٰقُوا اللّٰہِ ۙ کَمۡ مِّنۡ فِئَۃٍ قَلِیۡلَۃٍ غَلَبَتۡ
فِئَۃً کَثِیۡرَۃًۢ بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۲۴۹﴾
FATHUL MAJID
আলিফ, লা-ম, মী-ম।
FATHUL MAJID
২৪৬-২৫২ নং আয়াতের
তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
আপনি চাইলে -Whatapps-Facebook-Twitter-ব্লগ- আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking-ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন-মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]-:-admin by rasikul islam নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিটকরুন -এই ওয়েবসাইটে -https://sarolpoth.blogspot.com/(জানা অজানা ইসলামিক জ্ঞান পেতে runing update)< -https://rasikulindia.blogspot.com (ইসলামিক বিশুদ্ধ শুধু বই পেতে, পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারবেন). Main Websaite- esoislamerpothe.in , comming soon my best world websaiteএ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-এর পরবর্তী যুগের একটি জাতির ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সাগরডুবি থেকে নাজাত পেয়ে মূসা ও হারূন (আঃ) বানী ইসরাঈলের নিয়ে শামে এসে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পিতৃভূমি ফিলিস্তীন ফিরে গিয়ে আমালেকা জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হল, সাথে এ ওয়াদাও দেয়া হল- যুদ্ধ করলেই বিজয় দান করা হবে (সূরা মায়িদাহ ৫:২৩)। কিন্তু তারা মূসা (আঃ)-কে পরিস্কার জানিয়ে দিল- ‘তুমি ও তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে রইলাম’(সূরা মায়িদাহ ৫:২৪)। ফলে শাস্তিস্বরূপ তারা তীহ ময়দানে ৪০ বছর উ™£ান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকল। পরে ইউশা বিন নূনের নেতৃত্বে ফিলিস্তীন দখল করা হলেও বানী ইসরাঈল পুনরায় বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয় এবং নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত হয়। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর পুনরায় আমালেকা জাতি চাপিয়ে দেন। বানী ইসরাঈলরা আবার নিগৃহীত হতে থাকে। এভাবে বহু দিন কেটে যায়। এক সময় শামাবীল (شمويل) নাবীর যুগ আসে। তারা এ নাবীর কাছে একজন বাদশা নির্ধারণের দাবি জানাল যাতে তার নেতৃত্বে পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে এবং বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের দাবি মতে নেতা হিসেবে তালূতকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তারা তালূতকে মেনে নেয়নি। কারণ তালূত ঐ বংশের ছিল না যে বংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে বানী ইসরাঈলের নেতৃত্বের আগমন ঘটেছে। তিনি একজন দরিদ্র ও সাধারণ সৈনিক ছিলেন। তাই তারা আয়াতে বর্ণিত অভিযোগ আনল।
বিষয়টি হল- বানী ইসরাঈলের নিকট একটি সিন্দুক ছিল। যার মধ্যে তাদের নাবী মূসা ও হারূন (আঃ) এবং তাদের পরিবারের ব্যবহৃত কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী ছিল। তারা এটাকে খুবই বরকতময় মনে করত এবং যুদ্ধকালে একে সম্মুকে রাখত। একবার আমালেকাদের সাথে যুদ্ধের সময় বানী ইসরাঈল পরাজিত হলে আমালেকাদের বাদশা জালূত উক্ত সিন্দুকটি নিয়ে যায়। এক্ষণে যখন বানী ইসরাঈলগণ পুনরায় জিহাদের সংকল্প করল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে উক্ত সিন্দুক ফিরিয়ে দিতে মনস্থ করলেন। অতঃপর এ সিন্দুকটির মাধ্যমে তাদের মধ্যকার নেতৃত্ব নিয়ে ঝগড়ার নিসরন করেন। সিন্দুকটি তালূতের বাড়িতে আগমনের ঘটনা এই যে, জালূতের নির্দেশে কাফিররা যেখানেই সিন্দুকটি রাখে, সেখানেই দেখা দেয় মহামারী ও অন্যান্য বিপদাপদ শুরু হয়ে যায়। এমনিভাবে তাদের পাঁচটি শহর ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে অতিষ্ট হয়ে তারা একে তার প্রকৃত মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল এবং গরুর গাড়িতে উঠিয়ে হাঁকিয়ে দিল। তখন ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশক্রমে গরুর গাড়িটি তাড়িয়ে এনে তালূতের ঘরের সম্মুখে রেখে দিল। বানী ইসরাঈল এ দৃশ্য দেখে সবাই একবাক্যে তালূতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করল। অতঃপর তালূত আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার প্রস্তুতি নেন। সকল প্রস্তুতি শেষ হলে কথিত মতে ৮০,০০০ হাজার সেনা নিয়ে রওনা হন। অল্প বয়স্ক তরুণ দাউদ (আঃ) ছিলেন উক্ত সেনা দলের সদস্য। পথিমধ্যে সেনাপতি তালূত তাদের পরীক্ষা করতে চাইলেন। সম্মুখেই ছিল এক নদী। মৌসুম ছিল প্রচণ্ড গরমের। পিপাসায় ছিল সবাই কাতর। তাই তিনি বললেন,
(مُبْتَلِيْكُمْ بِنَهَرٍ)
‘তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন’এ নদীটি হল জর্ডান ও প্যালেস্টাইনের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বস্তুত নদী পার হওয়া অল্প সংখ্যক ঈমানদার ব্যতীত সকলেই পানি পান করেছিল, যাদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন, যা বদর যুদ্ধে মুসলিম যুদ্ধাদের সংখ্যা ছিল। যারা পানি পান করেছিল তারা আলস্যে ঘুমিয়ে পড়ে। এ স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তালূত শৌর্য-বীর্যের প্রতীক আমালেকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চললেন। বস্তুবাদীদের হিসেবে এটা ছিল নিতান্তই আত্মহননের শামিল, একটি অসম যুদ্ধ।
(وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِه)
‘আর যখন তারা জালূত ও তার সৈন্যদের মুখোমুুখি হল’জালূত ছিল শত্র“দলের সেনাপতি। তালূত ও তাঁর সঙ্গীরা জালূতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এরা ছিল আমালিকা জাতি। তৎকালীন সময়ে তারা বড় দুর্ধর্ষ ও যুদ্ধবাজ ছিল। তাই এ যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে নিল। আল্লাহ তা‘আলার সহযোগিতায় তারা সংখ্যায় অল্প হলেও জয় লাভ করল।
(وَقَتَلَ دَاو۫دُ جَالُوْتَ)
‘দাঊদ (আঃ) জালূতকে হত্যা করল’তখন দাঊদ (আঃ) নাবী ছিলেন না। তালূতের একজন সাধারণ সৈন্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুওয়াত ও রাজত্ব উভয়টি দান করলেন।
এসব ঘটনা বর্ণনা করার দু’টি উদ্দেশ্য:
(১) শিক্ষা গ্রহণ, (২) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কেননা; তিনি এ সব ঘটনা কোন কিতাবে পড়েননি এবং কারো কাছে শোনেননি। বরং অতীতের এসব ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে ওয়াহীর মাধ্যমে অবগত করেছেন। সেজন্য শেষে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ)
“নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্যতম একজন।”(সূরা ইয়াসীন ৩৬:২)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শরীয়তসম্মত জিহাদের শর্ত হল শরীয়তসম্মত ইমাম থাকতে হবে।
২. রাসূলদের ব্যবহৃত জিনিস দ্বারা বরকত নেয়া জায়েয। তবে কোন পীর-ফকির বাবা ইত্যাদি ব্যক্তির থেকে নয়। এটা শুধু রাসূলদের সাথে সীমাবদ্ধ।
৩. ঈমানদার যুদ্ধে গেলে পিছপা হয় না।
৪. মুনাফিকরা যুদ্ধের জন্য খুব আগ্রহ দেখাবে কিন্তু ফরয হলে বা সরাসরি মোকাবেলার সময় হলে পালাবে।
0 Comments